01-01-2019, 04:40 PM
রাত কত হয়েছে খেয়াল নেই। সন্তান শোকেও মানুষের ঘুম পায়, খিদে পায়। এটা জৈব প্রক্রিয়া। নিজেকে কিছুটা সামলে নিতে পারলাম, মনের মধ্যে ক্ষিন আশা তুলি হয়তো এইভাবেই আমার বিচার করছে, এটা হয়তো শাস্তি না। আমার অপরাধের উত্তর ও হয়তো এইভাবেই দিতে চায়। মানুষকে ফাঁসিকাঠের দোরগোরা থেকে ফিরিয়ে আনলে সে আর জিবনের অপরাধের ছায়া মাড়াবে না। তুলিও হয়তো সেই পদ্ধতি অবলম্বন করেছে।
অনেকগুলো মিসড কল দেখছি।
আমি রাজুর নাম্বার আমার ডিজিটাল ডায়েরি থেকে খুজে বের করে কল করলাম। নাম্বারের অস্তিত্ব নেই।
মিসড কলগুলোতে ট্রাই করলাম। সবই বেজে চলেছে। সবই অফিসের নাম্বার একটাও মোবাইল নাম্বার নেই।
কি করে পাই?
একটাই উপায়। ওদের ওয়েব সাইটে যদি থাকে।
সেখানে যার নাম্বার দেওয়া সে রাজু না। কিন্তু তার কাছে রাজুর মোবাইল নাম্বার থাকতে পারে। কাল বিলম্ব না করে ফোন লাগালাম। তারপর কিছু অভিনয় আর মিথ্যে কথা বলে রাজুর ফোন নাম্বার উদ্ধার করলাম। এমন কিছু ব্যাপার না এটা আমার কাছে।
হাত কাঁপছে, অজানা আশঙ্কায়।
গলাও কাপছে।
কোনোরকমে প্রথম হ্যালোটা বলতে পারলাম। আমার নাম্বার ওর কাছে সেভ করায় ছিলো, বুঝতেই পারলাম,
-হ্যাঁ বলো অভিষেক...
-আমি তুলির সাথে কথা বলতে চাই...।
-তুলি তো এখানে নেই...।
-কোথায়? সেখানকার নাম্বার দাও।
-সেটা তো আমি তোমাকে বলতে পারবো না। ওরা যখন আমার কাছে ওদের দায়িত্বও আমার।
-বাঁশের থেকে কঞ্চির দর বেশি দেখছি।
-তুলির কাছে কে বাঁশ আর কে কঞ্চি সেটা এখন পরিস্কার। শুধু যা সময় লেগেছে ওর বুঝতে।
-তুমি আমাকে মিথ্যে কথা বলে বিভ্রান্ত করছো, তুলি আদৌ তোমার কাছে নেই।
-ওসব কায়দা ছারো, এসব বলে কোন লাভ নেই, আমি জানি তুলি কোথায়, সুতরাং আমার প্রমান করার কিছু নেই।
-তুমি জানো তোমাকে আমি এখুনি পুলিশে তুলিয়ে দিতে পারি।
-কাঁচের ঘরে থেকে কেউ ঢিল নিয়ে খেলে না। তুমি আমাকে যা করতে পারো আমি তার কয়েকগুন বেশি করতে পারি। সেসব কাজ আমি আগেই করে নিয়েছি। তুলির নিজের হাতে সব ঘটনা লেখা কপি আছে। জানোতো মেয়েদের পক্ষেই আইন। সোজা ৪৯৮ আর শ্রীঘর। তারপর আরো কত কি? তোমার চরিত্রের কাটাছেরা হবে কোর্টে সবার সামনে। আমার আর কি হবে। আমি তো তুলিকে ডেকে আনিনি। ও নিজে আমার কাছে সাহাজ্য চেয়েছে। আর গুপ্তা ইন্ডাস্ট্রিজের মালিককে ধরতে পুলিশকে তো দুয়ার ভাবতেই হবে। ভেবে দেখো পুলিশের কাছে কোনটা বেশি গুরুত্ব পাবে।
-তুলি সব লিখে দিয়েছে?তাও তোমাকে? আমি বিশ্বাস করিনা। আমার ছেলে আমাকে ছেরে এতদিন রয়েছে, বা থাকতে পারছে কি করে? তুমি নিশ্চয় কিছু ছক করেছো? তুলি নাহয় আমাকে ভুলে যেতে পারে। কিন্তু আমার ছেলে কি করে ভুলে যাবে।
-তুলির হাতের লেখা তুমি নিশ্চয় চেনো। তাহলে আমি তোমাকে স্ক্যান করে পাঠিয়ে দিচ্ছি। দেখে নাও।
-আমার দরকার নেই দেখার। সেটা আসল না তুমি জালী করেছো আমি কি করে বুঝতে পারবো? আজকাল তো কতকিছু হয়, এটা কম্পিউটারের যুগ। যতক্ষন না আমি তুলির সাথে দেখা করছি ততক্ষন আমি বিশ্বাস করছিনা।
-তুমি বিশ্বাস না করলে আমার কিছু এসে জায়না। যেটা বলার দরকার তোমাকে সেটা এই যে তুলি ডিভোর্স চাইছে, তুমি সেটা মিউচুয়ালি করলে ভালো, আমি আমার এডভোকেটকে পাঠিয়ে দেবো। আর না হলে তোমাকে কোর্ট দেখতে হবে। সেখানে সব কথায় উঠবে। ভেবে নাও।
-আমি কোন কিছুই করবো না যতক্ষন না আমি তুলির সাথে কথা বলতে পারছি। আমি ওর সাথে সামনা সামনি দেখা করবো, বুঝবো যে তুমি কোন ছক করোনি, তারপর ও যদি বলে, আমি অন দা স্পট সব সই করে দেবো।
-তখন থেকে ছক করছি বলে চলেছো। কে কার সাথে ছক করছিলো। তুলির মতন মেয়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে তুমি কি না করেছো?
-ওই যে বললাম, বাঁশের থেকে কঞ্চির দর বেশি হয়ে গেছে। তুমি এখন আমার থেকেও বেশি দরদি হয়ে গেছো। বাপের পয়সার জোরে যত ফুটানি তাও বেশির ভাগই লোক ঠকানো, নিজের তো সিকি আনা মুরোদ নেই, তুমি হয়ে গেলে কোম্পানির মালিক। অন্য ক্ষেত্রে হলে বলতাম তোমার মত কোম্পানির মালিক আমার পিছে পিছে ঘোরে দেখে করার জন্যে। কজনের নাম বলবো।
-সে ভাই তুমি ইন্ডাস্ট্রিতে মসিহা। আমি চুহা। তাতে কি তোমার অধিকার জন্মে গেলো যা খুশি তাই করার। এসবের প্রশ্ন আসছে কেন এখানে।
-আসছে তার একটাই কারন তুমি ছক করে তুলিকে কিছু করেছো। বহুদিন ধরেই পিছে পরে রয়েছো। তুলির সাথে একবার আমার দেখা হোক তারপর দেখবো তোমার কি হাল হয় আর তোমার কোম্পানির কি হাল হয়।
-আমি বোকা না অভিষেক। যে উত্তেজিত হয়ে আমি বলে দেবো যে তুলি কোথায়। আমার অতিথিদের নিরাপত্তাও আমার দায়িত্ব। তুমি নিজেকে অতি চালাক ভাবো।
-তোমার কথায় চালাক, কিন্তু আমার মনে হয় আমার নুন্যতম ইন্টেলিজেন্স আছে। কেউ আমাকে বোকা বানিয়ে চলে যাবে এটা আজ পর্যন্ত হয়নি।
-বললাম তো তুমি মসিহা। আমি তো নিজেকে কিছু ঘোষনা করিনা। কিন্তু অনেক গল্প হয়েছে। এবার কাজের কথায় আসি। তুমি তো কাজেরই লোক তাই গল্প না করে কাজের কথা বলায় ভালো। কি করবে? তুমি কি সই করে দেবে না, তুলি কোর্টে এপ্লাই করবে?
-উত্তর তো আগেই দিয়ে দিয়েছি। তুলির সাথে দেখা না করে আমি কিছু করবো না।
-তাহলে কোর্টেই দেখা হবে তোমাদের। তবুও বলছি একবার ভেবে দেখো।
-তুমি ভেবো। আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। আর এই জন্যেই আমি অভিষেক। পুরুষ মানুশ যাকে বলে।
-হা হা হা ......।
আমি লাইন কেটে দিলাম।
রাজু কি এতোটা কি মিথ্যে কথা বলবে? তুলি কি স্বেচ্ছায় ওর কাছে গিয়েছে। না ও আমার পিছনে লোক লাগিয়েছিলো। নজরদারি করছিলো, হতে পারে যে ফোনও ট্যাপ করছিলো। কিন্তু তুলি তো যা জেনেছে সব বিজয়ার মাধ্যমে। তুলি কি করে ওর কাছে যেতে পারে, যাকে ও পুরুষ মানুষ হিসেবেই গন্য করেনা। তাহলে কি বিজয়াকে ও সেটাই ইঙ্গিত দিয়েছিলো? যে ওকে ভালোবাসে তার কাছেই ও সেফ। এটা কি দুয়ে দুয়ে চার হোলো। তুলির কথা ছেরেই দিলাম, রাগে অভিমানে ও অনেক কিছু করতে পারে। আমিও করে ফেলি। কিন্তু পিয়াল কি করে আমাকে ছেরে এতদিন রয়েছে। ওর তো আমার ফোন নাম্বারও মুখস্ত। মাঝেই মাঝেই তো আমাকে ফোন করতো। নানান বায়না। টিভিতে কার্টুন দেখতো আর সেগুলোর খেলনা আমাকে এনে দিতে হবে বলে বায়না করতো। সে কি বাবার কথা ভুলে গেলো। শিশু কি রক্তের টান ভুলে যায়? ওদের জোর করে কিছু করানো হচ্ছে নাতো? আমি কি করে জানতে পারবো?
কবিরদার হেল্প নেবো? কবিরদা তো এখন অনেক উঁচু পজিশানে আছে। কিন্তু কি বলবো? সত্যি কথা জানলে কি আমাকে সাহাজ্য করবে, যদি সাহাজ্য না করতে চায় এসব কথা শুনে?
তাহলে কি বলবো? তাহলে তো অর কাছেও আমি ছোট হয়ে যাবো?
কি করবো আমি বুঝে উঠতে পারছিনা। নিজের সন্মান একদিকে আর একদিকে আমার ভালোবাসা আর রক্তের টান।
নাঃ এটা মনে হয় সেফ হবেনা।
রাজুরই বিশ্বস্ত কোন লোককে খুজে বের করতে হবে। যে আমাকে সঠিক খবর দেবে।
কাকে ধরতে পারি? এসব খবর বেয়ারা, কাজের লোক এরাই ভালো রাখে। কিন্তু কিভাবে কাউকে খুজে বের করবো? আদৌ পারবো কি?
সানি কি পারবে? ওতো অনেক খোজখবর রাখে। অনেকের সাথে মেলামেশা, বিশেষ করে নিচুতলার লোকজনের সাথে।
সঙ্গে সঙ্গে সানিকে ফোন করলাম।
ফোন ধরেই দেখি বাচ্চার গলা।
আমি বললাম ‘বাবাকে দাও তো?’
‘মা মা দেখো কে ফোন করেছে?’
এই শালা!! সানি আবার বিয়ে করলো নাকি? ছেলে মানুষ করার জন্যে করলেও করতে পারে।
মুহুর্তের মধ্যে ভুল বুঝতে পারলাম। সানিই বাচ্চাটার বাবা আর মা। কিন্তু সানি ওকে মা বলেই ডাকতে শিখিয়েছে। এই বাচ্চাটা সেই সুদিপার। সানি এদিক দিয়ে একটা মহৎ কাজ করেছে। তাই ওর ওপর আগের সেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য ভাবটা আমার নেই। আর ওকে ভরসা করা যায় কারন ওর যাগতিক জগতে কোথায় কি হচ্ছে তা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই।
আমি ওকে সব খুলে বললাম, কি হয়েছে আর কেন হয়েছে সেটা নিজের ঘারে নিয়েও সবটা বললাম না। শুধু বললাম, একটা মেয়ে আমাকে খুব বিরক্ত করতো। তাই আমি একদিন ওকে একটা রেস্টুরেন্টে ডেকেছিলাম, সেখানে তুলির এক বান্ধবি আমাকে দেখে তুলিকে বলে দেয় যে আমি অন্য কারো সাথে প্রেম করি।
সানি যা বললো তাতে মনে হোলো যে ওর পক্ষেও কাজটা সহজ হবেনা। কিন্তু চেষ্টা করবে।
অনেকগুলো মিসড কল দেখছি।
আমি রাজুর নাম্বার আমার ডিজিটাল ডায়েরি থেকে খুজে বের করে কল করলাম। নাম্বারের অস্তিত্ব নেই।
মিসড কলগুলোতে ট্রাই করলাম। সবই বেজে চলেছে। সবই অফিসের নাম্বার একটাও মোবাইল নাম্বার নেই।
কি করে পাই?
একটাই উপায়। ওদের ওয়েব সাইটে যদি থাকে।
সেখানে যার নাম্বার দেওয়া সে রাজু না। কিন্তু তার কাছে রাজুর মোবাইল নাম্বার থাকতে পারে। কাল বিলম্ব না করে ফোন লাগালাম। তারপর কিছু অভিনয় আর মিথ্যে কথা বলে রাজুর ফোন নাম্বার উদ্ধার করলাম। এমন কিছু ব্যাপার না এটা আমার কাছে।
হাত কাঁপছে, অজানা আশঙ্কায়।
গলাও কাপছে।
কোনোরকমে প্রথম হ্যালোটা বলতে পারলাম। আমার নাম্বার ওর কাছে সেভ করায় ছিলো, বুঝতেই পারলাম,
-হ্যাঁ বলো অভিষেক...
-আমি তুলির সাথে কথা বলতে চাই...।
-তুলি তো এখানে নেই...।
-কোথায়? সেখানকার নাম্বার দাও।
-সেটা তো আমি তোমাকে বলতে পারবো না। ওরা যখন আমার কাছে ওদের দায়িত্বও আমার।
-বাঁশের থেকে কঞ্চির দর বেশি দেখছি।
-তুলির কাছে কে বাঁশ আর কে কঞ্চি সেটা এখন পরিস্কার। শুধু যা সময় লেগেছে ওর বুঝতে।
-তুমি আমাকে মিথ্যে কথা বলে বিভ্রান্ত করছো, তুলি আদৌ তোমার কাছে নেই।
-ওসব কায়দা ছারো, এসব বলে কোন লাভ নেই, আমি জানি তুলি কোথায়, সুতরাং আমার প্রমান করার কিছু নেই।
-তুমি জানো তোমাকে আমি এখুনি পুলিশে তুলিয়ে দিতে পারি।
-কাঁচের ঘরে থেকে কেউ ঢিল নিয়ে খেলে না। তুমি আমাকে যা করতে পারো আমি তার কয়েকগুন বেশি করতে পারি। সেসব কাজ আমি আগেই করে নিয়েছি। তুলির নিজের হাতে সব ঘটনা লেখা কপি আছে। জানোতো মেয়েদের পক্ষেই আইন। সোজা ৪৯৮ আর শ্রীঘর। তারপর আরো কত কি? তোমার চরিত্রের কাটাছেরা হবে কোর্টে সবার সামনে। আমার আর কি হবে। আমি তো তুলিকে ডেকে আনিনি। ও নিজে আমার কাছে সাহাজ্য চেয়েছে। আর গুপ্তা ইন্ডাস্ট্রিজের মালিককে ধরতে পুলিশকে তো দুয়ার ভাবতেই হবে। ভেবে দেখো পুলিশের কাছে কোনটা বেশি গুরুত্ব পাবে।
-তুলি সব লিখে দিয়েছে?তাও তোমাকে? আমি বিশ্বাস করিনা। আমার ছেলে আমাকে ছেরে এতদিন রয়েছে, বা থাকতে পারছে কি করে? তুমি নিশ্চয় কিছু ছক করেছো? তুলি নাহয় আমাকে ভুলে যেতে পারে। কিন্তু আমার ছেলে কি করে ভুলে যাবে।
-তুলির হাতের লেখা তুমি নিশ্চয় চেনো। তাহলে আমি তোমাকে স্ক্যান করে পাঠিয়ে দিচ্ছি। দেখে নাও।
-আমার দরকার নেই দেখার। সেটা আসল না তুমি জালী করেছো আমি কি করে বুঝতে পারবো? আজকাল তো কতকিছু হয়, এটা কম্পিউটারের যুগ। যতক্ষন না আমি তুলির সাথে দেখা করছি ততক্ষন আমি বিশ্বাস করছিনা।
-তুমি বিশ্বাস না করলে আমার কিছু এসে জায়না। যেটা বলার দরকার তোমাকে সেটা এই যে তুলি ডিভোর্স চাইছে, তুমি সেটা মিউচুয়ালি করলে ভালো, আমি আমার এডভোকেটকে পাঠিয়ে দেবো। আর না হলে তোমাকে কোর্ট দেখতে হবে। সেখানে সব কথায় উঠবে। ভেবে নাও।
-আমি কোন কিছুই করবো না যতক্ষন না আমি তুলির সাথে কথা বলতে পারছি। আমি ওর সাথে সামনা সামনি দেখা করবো, বুঝবো যে তুমি কোন ছক করোনি, তারপর ও যদি বলে, আমি অন দা স্পট সব সই করে দেবো।
-তখন থেকে ছক করছি বলে চলেছো। কে কার সাথে ছক করছিলো। তুলির মতন মেয়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে তুমি কি না করেছো?
-ওই যে বললাম, বাঁশের থেকে কঞ্চির দর বেশি হয়ে গেছে। তুমি এখন আমার থেকেও বেশি দরদি হয়ে গেছো। বাপের পয়সার জোরে যত ফুটানি তাও বেশির ভাগই লোক ঠকানো, নিজের তো সিকি আনা মুরোদ নেই, তুমি হয়ে গেলে কোম্পানির মালিক। অন্য ক্ষেত্রে হলে বলতাম তোমার মত কোম্পানির মালিক আমার পিছে পিছে ঘোরে দেখে করার জন্যে। কজনের নাম বলবো।
-সে ভাই তুমি ইন্ডাস্ট্রিতে মসিহা। আমি চুহা। তাতে কি তোমার অধিকার জন্মে গেলো যা খুশি তাই করার। এসবের প্রশ্ন আসছে কেন এখানে।
-আসছে তার একটাই কারন তুমি ছক করে তুলিকে কিছু করেছো। বহুদিন ধরেই পিছে পরে রয়েছো। তুলির সাথে একবার আমার দেখা হোক তারপর দেখবো তোমার কি হাল হয় আর তোমার কোম্পানির কি হাল হয়।
-আমি বোকা না অভিষেক। যে উত্তেজিত হয়ে আমি বলে দেবো যে তুলি কোথায়। আমার অতিথিদের নিরাপত্তাও আমার দায়িত্ব। তুমি নিজেকে অতি চালাক ভাবো।
-তোমার কথায় চালাক, কিন্তু আমার মনে হয় আমার নুন্যতম ইন্টেলিজেন্স আছে। কেউ আমাকে বোকা বানিয়ে চলে যাবে এটা আজ পর্যন্ত হয়নি।
-বললাম তো তুমি মসিহা। আমি তো নিজেকে কিছু ঘোষনা করিনা। কিন্তু অনেক গল্প হয়েছে। এবার কাজের কথায় আসি। তুমি তো কাজেরই লোক তাই গল্প না করে কাজের কথা বলায় ভালো। কি করবে? তুমি কি সই করে দেবে না, তুলি কোর্টে এপ্লাই করবে?
-উত্তর তো আগেই দিয়ে দিয়েছি। তুলির সাথে দেখা না করে আমি কিছু করবো না।
-তাহলে কোর্টেই দেখা হবে তোমাদের। তবুও বলছি একবার ভেবে দেখো।
-তুমি ভেবো। আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। আর এই জন্যেই আমি অভিষেক। পুরুষ মানুশ যাকে বলে।
-হা হা হা ......।
আমি লাইন কেটে দিলাম।
রাজু কি এতোটা কি মিথ্যে কথা বলবে? তুলি কি স্বেচ্ছায় ওর কাছে গিয়েছে। না ও আমার পিছনে লোক লাগিয়েছিলো। নজরদারি করছিলো, হতে পারে যে ফোনও ট্যাপ করছিলো। কিন্তু তুলি তো যা জেনেছে সব বিজয়ার মাধ্যমে। তুলি কি করে ওর কাছে যেতে পারে, যাকে ও পুরুষ মানুষ হিসেবেই গন্য করেনা। তাহলে কি বিজয়াকে ও সেটাই ইঙ্গিত দিয়েছিলো? যে ওকে ভালোবাসে তার কাছেই ও সেফ। এটা কি দুয়ে দুয়ে চার হোলো। তুলির কথা ছেরেই দিলাম, রাগে অভিমানে ও অনেক কিছু করতে পারে। আমিও করে ফেলি। কিন্তু পিয়াল কি করে আমাকে ছেরে এতদিন রয়েছে। ওর তো আমার ফোন নাম্বারও মুখস্ত। মাঝেই মাঝেই তো আমাকে ফোন করতো। নানান বায়না। টিভিতে কার্টুন দেখতো আর সেগুলোর খেলনা আমাকে এনে দিতে হবে বলে বায়না করতো। সে কি বাবার কথা ভুলে গেলো। শিশু কি রক্তের টান ভুলে যায়? ওদের জোর করে কিছু করানো হচ্ছে নাতো? আমি কি করে জানতে পারবো?
কবিরদার হেল্প নেবো? কবিরদা তো এখন অনেক উঁচু পজিশানে আছে। কিন্তু কি বলবো? সত্যি কথা জানলে কি আমাকে সাহাজ্য করবে, যদি সাহাজ্য না করতে চায় এসব কথা শুনে?
তাহলে কি বলবো? তাহলে তো অর কাছেও আমি ছোট হয়ে যাবো?
কি করবো আমি বুঝে উঠতে পারছিনা। নিজের সন্মান একদিকে আর একদিকে আমার ভালোবাসা আর রক্তের টান।
নাঃ এটা মনে হয় সেফ হবেনা।
রাজুরই বিশ্বস্ত কোন লোককে খুজে বের করতে হবে। যে আমাকে সঠিক খবর দেবে।
কাকে ধরতে পারি? এসব খবর বেয়ারা, কাজের লোক এরাই ভালো রাখে। কিন্তু কিভাবে কাউকে খুজে বের করবো? আদৌ পারবো কি?
সানি কি পারবে? ওতো অনেক খোজখবর রাখে। অনেকের সাথে মেলামেশা, বিশেষ করে নিচুতলার লোকজনের সাথে।
সঙ্গে সঙ্গে সানিকে ফোন করলাম।
ফোন ধরেই দেখি বাচ্চার গলা।
আমি বললাম ‘বাবাকে দাও তো?’
‘মা মা দেখো কে ফোন করেছে?’
এই শালা!! সানি আবার বিয়ে করলো নাকি? ছেলে মানুষ করার জন্যে করলেও করতে পারে।
মুহুর্তের মধ্যে ভুল বুঝতে পারলাম। সানিই বাচ্চাটার বাবা আর মা। কিন্তু সানি ওকে মা বলেই ডাকতে শিখিয়েছে। এই বাচ্চাটা সেই সুদিপার। সানি এদিক দিয়ে একটা মহৎ কাজ করেছে। তাই ওর ওপর আগের সেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য ভাবটা আমার নেই। আর ওকে ভরসা করা যায় কারন ওর যাগতিক জগতে কোথায় কি হচ্ছে তা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই।
আমি ওকে সব খুলে বললাম, কি হয়েছে আর কেন হয়েছে সেটা নিজের ঘারে নিয়েও সবটা বললাম না। শুধু বললাম, একটা মেয়ে আমাকে খুব বিরক্ত করতো। তাই আমি একদিন ওকে একটা রেস্টুরেন্টে ডেকেছিলাম, সেখানে তুলির এক বান্ধবি আমাকে দেখে তুলিকে বলে দেয় যে আমি অন্য কারো সাথে প্রেম করি।
সানি যা বললো তাতে মনে হোলো যে ওর পক্ষেও কাজটা সহজ হবেনা। কিন্তু চেষ্টা করবে।