01-01-2019, 04:33 PM
মেয়েরা এরকম নির্মম, এরকম কঠোর, বিশেষ করে তুলির মত মেয়ে যে এরকম হতে পারে জানতাম না। আমি না হয় নিজের বিকৃত কামনার স্বার্থেই হোক বা যৌন জীবনে বৈচিত্রতার খোজেই হোক, তুলির সাথে রাজুর শারীরিক সম্পর্ক মেনে নিয়েছি। তাও তুল সেটা আমার সাথে সম্পর্ক থাকাকালিনই করেছে। খেলোয়ারসুলভ মনোভাব দেখিয়ে কোন স্বামি মেনে নিতো এটা। আর তুলি এইটুকু মেনে নিতে পারলো না। ঘরের লোককে, নিজের সন্তানের জন্মদাতাকে অবজ্ঞা করে ও পরের মুখের কথার ওপর ভরসা করলো। জানিনা ও অক্ষত আছে কিনা। অসিমের ফোনও সুইচ অফ। পিয়াল কি করছে?
তুলি বাড়ি ফেরেনি। না সেদিন রাতে তো নয়ই, পরের দিনও না।
আমি মনের কথা কাউকে বুঝতে দিচ্ছি না। খুব ভালো বুঝতে পারছি আমার যুদ্ধক্ষেত্র এখন কলকাতা। কখন কলকাতায় ফিরবো সেই অপেক্ষায় আছি। বাবাও বাড়িতে নেই। সবিতা দি, ফোন ধরেছিলো। সেই আমাকে তুলির না ফেরার কথা জানালো। ওরা বুঝতে পারছে না কি করবে, আমার আসার অপেক্ষা করছে।
মনের মধ্যে তুফান চলছে। একবার রাগ উঠে যাচ্ছে এই ভেবে যে তুলি আমাকে সুযোগ দিলো না, সময় দিলো না। একবার মনে হচ্ছে, তুলিকে ছাড়া, পিয়ালকে ছাড়া আমার জীবনের মানে কি? একবার ভাবছি আমার সাথে একবার কথা বললে তুলিকে সব ভুলিয়ে দেবো, সব ভুল স্বীকার করে নিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করবো। একবার ভাবছি তুলির মতো সহজ সরল মেয়ে, এত শক্তি পেল কি করে যে নিশ্চিন্ত নিরাপদ সংসার ছেড়ে আগন্তুক একজনের কথা বিশ্বাস করে, ঘর ছেড়ে চলে যাবে, ভাবছি তুলি কোথায় যেতে পারে। যাওয়ার মধ্যে তো একমাত্র ওর বাড়ি, এছারা ও কোথায় যেতে পারে? তাও পিয়াল্কে সঙ্গে নিয়ে। আমি গিয়ে ওর রাগ ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আসবো। আজকে রাতে সব কথা খুলে বলবো ওকে। কিছু লুকাবো না। তুলি কি আমার পাসওয়ার্ড মনে রেখেছে? ওকি কম্পুটার খুলে দেখতে পারবে আমার চ্যাটগুলো। না না, ও এত কিছু জানেনা। আমিই আজকে ওকে সব দেখাবো যাতে ওর মনে আর কোন সন্দেহ না থাকে। তাতে আমার অনেক দোষ বেরিয়ে আসবে আমি জানি। তুলি এসব দেখে খুব দুঃখ পাবে, কিন্তু ভুল তো মানুষেরই হয়। আমি যেমন ওকে ক্ষমা করে দিয়েছি, ও নিশ্চয় আমাকে ক্ষমা করে দেবে। আর জীবনে আমি অন্য মেয়েছেলের দিকে তাকাবো না।
সত্যি বলতে কি এই মাগিটা (জানিনা সত্যিই ও মাগি কিনা) আমাকে এমন টোপ দিলো আকারে ইঙ্গিতে যে আমি লোভ সামলাতে পারলাম না। নাহলে ছেলে হওয়ার পর থেকে আমি তো আর কোন মেয়ের সাথে শুইনি। এর সাথে করাটা দরকারি ছিলো, সেটা তো আর তুলি পারমিশান দিচ্ছিলো না, তাই ওকে লুকিয়েই আমাকে অর্পিতার সাথে করতে হোতো, যদি সত্যি সত্যি ব্যাপারগুলো ঠিকঠাক চলতো। সেতো আর কিছুই ঠিক থাকেনি। এই খানকির ছেলেটা এমন বাড়াবাড়ি শুরু করলো যে কন্ট্রোল করা মুশকিল হয়ে গেলো। পুরোপুরি ফাঁসিয়েছে আমাকে, হয় নিজেই মেয়ে সেজে আমার পেট থেকে কথা বের , না হয় সত্যি ওর বউকে লেলিয়ে দিয়ে। এর উদ্দ্যেশ্যটা কি তাই এখনো আমার কাছে পরিস্কার না। ওকি তুলির প্রেমে পরে গেছিলো? সেটা অস্বাভাবিক না। কিন্তু ও তো জানে যে তুলি বিবাহিত। আর হিসেব মতো ও নিজেও বিবাহিত। তাহলে তুলিকে আমার থেকে ভাঙ্গানোর কি দরকার ছিলো? আজকের দিনে কেউ কাউকে রাখেল করে রাখবে এটা নিশ্চয় ভাবা যায়না। যা মুল্যবৃদ্ধি চলছে তাতে লোকে একটা সংসারই ঠিক মতন চালাতে পারছেনা তো গাই বাছুর নিয়ে আরেকটা সংসার। তারপর ও কি এতোই বোকা যে বোঝেনি একটা মেয়ের পক্ষে স্বামি ছাড়া সম্ভব হলেও সন্তানকে ছেড়ে থাকা অসম্ভব, অন্তত তুলির মতন মেয়ের।
বাড়িতে ঢুকতেই বোঝা গেলো তুলির অনুপস্থিতি। এর আগে ট্যুর থেকে ফেরার সময় তুলিকে বারান্দায় দাড়িয়ে আমার জন্যে অপেক্ষা করতে দেখতাম, সাথে পিয়ালের উত্তেজনা বাবাকে দেখতে পেয়ে, অনেক আশা যে বাবা এবার কি নিয়ে এসেছে ওর জন্যে। খেলনা পেয়ে ছেলে খুশি, মা আমাকে পেয়ে। সারারাত মনের দুঃখ উগরে দিত, একদিন ওর কত মন খারাপ করেছে। সারারাত জেগে থেকেছে, একা থাকলে ও ঘুমাতে পারেনা। আমি থাকলে যেন ও নিশ্চিন্ত।
আজকে সিড়ির লাইটটাও জ্বালানো হয়নি। মনে হচ্ছে শ্মশানে এসেছি। কোনরকমে অন্ধকার নিস্তব্ধ ঘরে এসে পৌছুলাম। কাজের লোকদের ডাকিনি। আমার কাছে এক্সট্রা চাবি থাকে সেটা দিয়েই খুলে নিলাম দরজা।
বিছানায় সেই চাদরটাই পাতা রয়েছে, যেটা আমার ঘরে বিরল। তুলি একই চাদর দুদিন পাতেনা। বুকের মধ্যে একটা চাপা যন্ত্রনা নিয়ে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এলাম।
অভ্যেস বশত রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে মনে পরলো তুলি নেই। চাও চাওয়া যাবেনা। ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখছি। কে বলবে আমি এত নোংরা। এত সুপুরুষ একজন এরকম দ্বিচারিতা করে, সাধারন লোক ভাবতেও পারেনা। দেওয়ালে আমার আর তুলির বিয়ের একটা ফটো ঝুলছে। মন বলছে, তুলি এতটা কঠোর হতে পারবেনা, কতক্ষন আর রাগ করে থাকবে। নিশ্চয় আশেপাশে আছে।
আমি পোষাক বদলে নিলাম। যাই পাগলিটার রাগ ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আসি।
বাইকটা স্টার্ট দিয়ে চিন্তা করে নিলাম তুলি কোথায় কোথায় যেতে পারে।
তুলিদের বাড়ি থেকে শুরু করে ওর সব বন্ধুর কাছে খোঁজ নিলাম। তুলির সাথে ওদের অনেকদিন ধরেই যোগাযোগ নেই।
আমার মনের মধ্যে ঝড় বয়ে চলেছে। কোথায় যেতে পারে। তাহলে কি অসিমের সাথেই ...। পিয়াল কি করছে?
অনেক কৈফিয়ত দিতে হোলো এত রাতে তুলিকে খোঁজ করার জন্যে।
আমি এখন কি করবো? কোথায় যাবো? থানায় খবর দেবো না অপেক্ষা করবো। তুলি তো জানে যে আমি বাড়ি ফিরে আসবো আজকে। যেখানেই থাক ও নিশ্চয় বুঝতে পারছে যে আমি ওকে মিস করছি। ওকে ছাড়া আমার কি হচ্ছে, আমি কত দুশ্চিন্তায় আছি। নিশ্চয় ও ফোন করবে। ও নাহলে তো আমি নিজেও জানিনা যে আমার সবকিছু কোথায় আছে।
বাড়িতে ফিরে মোবাইলটা হাতে নিয়ে চুপ করে শুয়ে রয়েছি সোফার মধ্যে, তুলির ফোনের অপেক্ষায়। অন্য সময় এইভাবে শুলে তো রক্ষে ছিলো না। মাথার নোংরা নাকি সোফার হাতলে চলে যাবে। আমার মাথায় যেন নোংরা ভর্তি থাকে। আর পিয়াল যদি আমাকে এ ভাবে শুয়ে থাকতে দেখে তাহলে তো সোজা গায়ের ওপর উঠে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যেতো। ওর মার কত অভিযোগ “আমি বাড়িতে থাকলেই নাকি ছেলের বাদরামি বেরে যায়”।
বা রে কি আবদার। আমার ছেলে যদি আমাকে দেখে সাহস পায় দুষ্টুমি করার তাহলে কি আমার দোষ?
কোথায় ওরা? কি করছে? তুলির মনের অবস্থা কি? এরকম তিল থেকে তাল করে ফেললো কি ভাবে?
মানসিক ক্লান্তিতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি বুঝতেও পারিনি। সোফার হাতলে মাথা রাখাতে ঘার ব্যাথা করছিলো, তাই ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ঘুম ভেঙ্গে মনে হোলো আমি বিছানায় যেমন শুয়ে থাকি সেরকম শুয়ে আছি, সব যেন ঠিক আছে। মুহুর্তের মধ্যে সব মনে পরে গেলো আবার। তুলি কি ফোন করেছিলো?
নাঃ তুলিতো ফোন করেনি। মোবাইলে একটা ব্যাঙ্কের এসএমএস এসেছে শুধু। আর কিছু নেই।
আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। তুলি এত জেদ কেন করছে। এতদিনের ভালবাসা, সম্পর্ক, সন্তান, সংসার, এসব কি কেউ এইভাবে ছেড়ে যেতে পারে? বিশেষ করে মেয়েরা। এরকম ভুল তো কতজনই করে, সবার কি সংসার ভেঙ্গে যায়। ভুলটাকে অতীত করে দিয়ে, ভুলে গিয়ে, দুঃস্বপ্ন ভেবে নিয়ে কি এগিয়ে যাওয়া যায় না?
আমার খুব চিন্তা হচ্ছে তুলিকে নিয়ে। ও কোথায়? কোন বিপদ হয়নি তো? সাথে পিয়ালও তো আছে। ও কি সেই অসিম খানকির ছেলের কাছেই আছে?
আমি অসিমকে ফোন লাগালাম। ফোন বন্ধ। কি করি আমি। দুহাতে মুখ ঢেকে বসে পরলাম। নিজের অজান্তেই চোখে জল চলে এলো। এরকম নিঃসঙ্গ এর আগে আমি মাকে হারিয়ে হয়েছিলাম। মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করে বাড়িতে ঢুকে যখন মনে হোলো মা আর কোনদিন এখানে ফিরে আসবেনা। বুক মুচড়ে জল চলে এসেছিলো। আমি জীবনে সেই প্রথম কেঁদেছিলাম। নিজেকে খুব অপরাধি মনে হয়েছিলো আমার। কোন বিপদে পরলেই মাকে স্মরন করতাম আমি। ঠাকুর দেবতা মানতাম না, কিন্তু দেখতাম মাকে মনে করে কোন কাজে হাত দিলে সেটাতে আমি সফল হবোই। সেটাই হয়তো মার জীবনীশক্তিটাকে কমিয়ে দিয়েছিলো।
আজকে আমার চোখে জল এলো আমার নিজের সংসারের লোককে কাছে না পেয়ে।
পায়ে পায়ে মায়ের হাসিমুখের ফটোটার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। মন বলছে এবারও মা আমাকে এই বিপদের হাত থেকে উদ্ধার করবে। “মা মাগো যা করেছি অন্যায় করেছি, আর জীবনে আমি এ পথে পা বাড়াবো না, দয়া করে তুলি আর পিয়ালকে ফিরিয়ে দাও।”
বারবার করে তুলির ফোনে চেষ্টা করে চলেছি। কিন্তু সুইচড অফ আসছে প্রতিবার।
কি করবো আমি। কি করা উচিৎ আমার। থানায় যাবো? যদি একথা সেকথায়, আসল কারন বেরিয়ে পরে? পুলিশে ছুলে আঠারো ঘাঁ।
সারারাত ধরে ঘরের মধ্যে ছটফট করলাম। সকাল হওয়ার অপেক্ষায় আছি। ভোরের আলোয় মানুষ নতুন দিশা পায়। নতুন আশা জাগে মনে। রাতের পাপ সকালে ধুয়ে যায়। দুনিয়ার সিংহভাগ অপরাধ রাতের বেলায় হয়। অতিবড় অপরাধিও ভোরের আলোকে সন্মান দেয়। আমার আশা, আমি বাড়িতে আছি জেনে তুলি নিশ্চয় কাল সকালে আমার কাছে ফিরে আসবে। আজ রাতে ফোন না করে ও আমাকে শাস্তি দিলো হয়তো। আমাকে শাস্তি দিতে গিয়ে কি ও নিজেও শাস্তি পাচ্ছে না? ওর সাথে পিয়ালও বাবাকে ছেড়ে থাকতে কষ্ট পাচ্ছে না?
কিন্তু তুলি গেছে কোথায়?
সেই অসিমের কাছে? যাবো অসিমের আর অর্পিতার ছবি নিয়ে ওরা যেখানে থাকে বলেছিলো সেখানে? আমার মনে হয় না তুলি ওর কাছে গিয়ে উঠবে। কারন তুলি জানে যে সেটা হলে ওর সংসারে ফেরার পথ সঙ্কির্ন হয়ে যাবে। আমি ওকে বারবার করে অনুরোধ করেছিলাম, যে ওই শুয়োরের বাচ্চার কাছে না যেতে।
তাহলে তুলি কোথায় গেছে। এমন তো কাউকে আমি চিনিনা যেখানে তুলি অন্তত ঘন্টা খানেক কাটাতে পারে।
আর চিন্তা না করে আমি কম্পিউটারে গিয়ে বসলাম। এই সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।
কম্পিউটারটা স্ট্যান্ড বাই হয়ে আছে। আমি তো বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তাহলে তুলি কি খুলেছিলো?
চালু করতেই দেখলাম চ্যাট সাইটটা অন হয়েছিলো। তাহলে তুলি আমার পাশওয়ার্ড মনে রেখেছিলো। রাখবে নাই বা কেন। খুবই তো সোজা। পিয়ালের জন্মদিন, তুলির জন্মমাস, আর আমার জন্ম বছর। আমিও নিজেকে বেশী শেয়ানা ভাবি। লেখাপরা জানা মেয়ের কাছে কম্পিউটার যে এমন কিছু ব্যাপার না, সেটা আমার ভাবা উচিৎ ছিলো। আমি ভাবাতাম তুলি এত কিছু বোঝেনা, ঘর গৃহস্থালি সামলে, এসবের ওপর ওর কোন আকর্ষন নেই। আকর্ষন নেই মানে এই না যে ও পারবে না।
ইন্টারনেট চালু করতেই চ্যাট সাইট টা অন হয়ে গেলো। মুহুর্তের মধ্যে অসিমের অনেকগুলো অফলাইনার ভেসে এলো।
তার মানে তুলি অসিমের সাথে চ্যাট করেছে।
আচ্ছা এখানে দেখছি। অর্পিতা তুলির সাথে চ্যাট করেছে।
হে ভগবান এত মিথ্যে কথা লিখেছে? একটা মেয়ে হয়ে মেয়ের ঘর ভাঙ্গাচ্ছে। এ নিশ্চয় অর্পিতা সেজে ওই শুয়োরের বাচ্চাটার কাজ।
কি না বলেছে তুলিকে।
প্রথম থেকে পরে যা বুঝলাম তাতে ওরা স্বামি আর স্ত্রী দুজন মিলে তুলিকে বোঝাতে চাইছে যে আমি কত খারাপ। আমার নাকি তুলিকে দিয়ে বেশ্যাবৃত্তি করানোর মত ইচ্ছে ছিলো। আমি নাকি অসিম কে বলেছি যে প্রথম বার ফ্রীতে কিন্তু পরের বার আর ফ্রী না। তাও প্রথম বার তুলির বদলে অর্পিতার সাথে আমি করবো। অর্পিতাকে প্রায় পায়ে ধরেছি তুলিকে এই খেলায় রাজী করানোর জন্যে। তুলি একবার অন্য কারো সাথে করলে, সেই সুযোগে আমি নাকি তুলিকে রাজী করিয়ে নিতাম বিভিন্ন মেয়েছেলের সাথে সম্ভোগ করার জন্যে। অর্পিতাকে প্রায় জোর করে নিজের লিঙ্গ দেখিয়ে উত্তেজিত করতে চেয়েছি, যদিও অর্পিতা দেখেনি, বরঞ্চ অসিমকে ডেকে আমার কান্ডকারখানা দেখিয়েছিলো। আমি এতই বিকৃত কামের পুরুষ যে মেয়েদের শারীরিক সৌন্দর্য আমি খুজে পাই মেয়েদের গুহ্যদ্বারে, সেখানে চুমু খেতে লেহন করতে আমার ঘেন্না হয়না। প্রথম দিন থেকেই আমি এধরনের কথা বলতে শুরু করি ওকে। ওরা না চাইলেও আমি নোংরা নোংরা কথা বলতাম। এমন কি অর্পিতাকেও জিজ্ঞেস করেছি ওকে করলে ওর কেমন লাগবে। অর্পিতার সাথে আমি আলাদা করে হোটেলে যেতে চেয়েছি। তার বদলে তুলি অসিমের সাথে যেমন খুশি করতে পারে।
কিছু সত্যি কিছু মিথ্যে, মানে সব মিলিয়ে অর্ধসত্যি। যেটা মিথ্যের থেকেও ভয়ঙ্কর। মিথ্যে প্রমান করা যায়, অর্ধসত্যি প্রমান করা যায় না। জীবন থেকে শিখেছি এটা।
মাথায় রক্তের স্রোত প্রবল হচ্ছে। আমি বুঝতে পারছিনা এসব করে ওর কি লাভ? তুলিকে কি ও বিয়ে করবে। করুক। আমার মত সন্মান দেবে তো। আমি তো কামুক, চিটীংবাজ তো না। পারবে তো ও পিয়ালের কাছে আমার বিকল্প হয়ে উঠতে। পারবে তুলিকে আমার মত ভালবাসায় ভাসিয়ে দিতে। আমি তো নোংরা। কিন্তু তুলিকে তো আমি নিজের বুকের টুকরোর থেকেও ভালোবাসি। সেই জন্যেই এসব কান্ড ঘটালাম। নাহলে তো আমি চুপচাপ ফুলে ছাপ দেওয়ার মত করে বিভিন্ন নারীর সঙ্গ পেতেই থাকতাম, না তুলি সেটা জানতে পারতো, না লাঠি ভাঙ্গতো।
পিয়াল হওয়ার পর থেকে তো আমার মনের মধ্যে অন্য কোন নারী আসেনি। প্রলোভন তো কত ছিলো। আমার অফিসেই তো একটা অবাঙ্গালি মেয়ে আছে যে আমাকে দেখলেই সব খুলে দিতে রাজী। আমি তো কোনদিন ওর মুখের দিকেও তাকিয়ে দেখিনি।
হ্যাঁ আমি অনেক নোংরামো করেছি। ঝুমরির মত ম্যাথরানিকেও এই বিছানায় তুলেছি। কিন্তু এর প্রভাব তো কিছুই আমার স্বাভাবিক জীবনে পরেনি। তাহলে...।
আমি অসিম আর অর্পিতার একটা ছবি প্রিন্ট নেবো বলে, ড্রয়ার থেকে কাগজ নিতে গেলাম, ড্র্ইয়ার টেনে থমকে গেলাম। তুলির ফোন, ঘরের চাবি, আর তুলির হাতে লেখা লম্বা একটা চিঠি রয়েছে তাতে।
তুলি বাড়ি ফেরেনি। না সেদিন রাতে তো নয়ই, পরের দিনও না।
আমি মনের কথা কাউকে বুঝতে দিচ্ছি না। খুব ভালো বুঝতে পারছি আমার যুদ্ধক্ষেত্র এখন কলকাতা। কখন কলকাতায় ফিরবো সেই অপেক্ষায় আছি। বাবাও বাড়িতে নেই। সবিতা দি, ফোন ধরেছিলো। সেই আমাকে তুলির না ফেরার কথা জানালো। ওরা বুঝতে পারছে না কি করবে, আমার আসার অপেক্ষা করছে।
মনের মধ্যে তুফান চলছে। একবার রাগ উঠে যাচ্ছে এই ভেবে যে তুলি আমাকে সুযোগ দিলো না, সময় দিলো না। একবার মনে হচ্ছে, তুলিকে ছাড়া, পিয়ালকে ছাড়া আমার জীবনের মানে কি? একবার ভাবছি আমার সাথে একবার কথা বললে তুলিকে সব ভুলিয়ে দেবো, সব ভুল স্বীকার করে নিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করবো। একবার ভাবছি তুলির মতো সহজ সরল মেয়ে, এত শক্তি পেল কি করে যে নিশ্চিন্ত নিরাপদ সংসার ছেড়ে আগন্তুক একজনের কথা বিশ্বাস করে, ঘর ছেড়ে চলে যাবে, ভাবছি তুলি কোথায় যেতে পারে। যাওয়ার মধ্যে তো একমাত্র ওর বাড়ি, এছারা ও কোথায় যেতে পারে? তাও পিয়াল্কে সঙ্গে নিয়ে। আমি গিয়ে ওর রাগ ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আসবো। আজকে রাতে সব কথা খুলে বলবো ওকে। কিছু লুকাবো না। তুলি কি আমার পাসওয়ার্ড মনে রেখেছে? ওকি কম্পুটার খুলে দেখতে পারবে আমার চ্যাটগুলো। না না, ও এত কিছু জানেনা। আমিই আজকে ওকে সব দেখাবো যাতে ওর মনে আর কোন সন্দেহ না থাকে। তাতে আমার অনেক দোষ বেরিয়ে আসবে আমি জানি। তুলি এসব দেখে খুব দুঃখ পাবে, কিন্তু ভুল তো মানুষেরই হয়। আমি যেমন ওকে ক্ষমা করে দিয়েছি, ও নিশ্চয় আমাকে ক্ষমা করে দেবে। আর জীবনে আমি অন্য মেয়েছেলের দিকে তাকাবো না।
সত্যি বলতে কি এই মাগিটা (জানিনা সত্যিই ও মাগি কিনা) আমাকে এমন টোপ দিলো আকারে ইঙ্গিতে যে আমি লোভ সামলাতে পারলাম না। নাহলে ছেলে হওয়ার পর থেকে আমি তো আর কোন মেয়ের সাথে শুইনি। এর সাথে করাটা দরকারি ছিলো, সেটা তো আর তুলি পারমিশান দিচ্ছিলো না, তাই ওকে লুকিয়েই আমাকে অর্পিতার সাথে করতে হোতো, যদি সত্যি সত্যি ব্যাপারগুলো ঠিকঠাক চলতো। সেতো আর কিছুই ঠিক থাকেনি। এই খানকির ছেলেটা এমন বাড়াবাড়ি শুরু করলো যে কন্ট্রোল করা মুশকিল হয়ে গেলো। পুরোপুরি ফাঁসিয়েছে আমাকে, হয় নিজেই মেয়ে সেজে আমার পেট থেকে কথা বের , না হয় সত্যি ওর বউকে লেলিয়ে দিয়ে। এর উদ্দ্যেশ্যটা কি তাই এখনো আমার কাছে পরিস্কার না। ওকি তুলির প্রেমে পরে গেছিলো? সেটা অস্বাভাবিক না। কিন্তু ও তো জানে যে তুলি বিবাহিত। আর হিসেব মতো ও নিজেও বিবাহিত। তাহলে তুলিকে আমার থেকে ভাঙ্গানোর কি দরকার ছিলো? আজকের দিনে কেউ কাউকে রাখেল করে রাখবে এটা নিশ্চয় ভাবা যায়না। যা মুল্যবৃদ্ধি চলছে তাতে লোকে একটা সংসারই ঠিক মতন চালাতে পারছেনা তো গাই বাছুর নিয়ে আরেকটা সংসার। তারপর ও কি এতোই বোকা যে বোঝেনি একটা মেয়ের পক্ষে স্বামি ছাড়া সম্ভব হলেও সন্তানকে ছেড়ে থাকা অসম্ভব, অন্তত তুলির মতন মেয়ের।
বাড়িতে ঢুকতেই বোঝা গেলো তুলির অনুপস্থিতি। এর আগে ট্যুর থেকে ফেরার সময় তুলিকে বারান্দায় দাড়িয়ে আমার জন্যে অপেক্ষা করতে দেখতাম, সাথে পিয়ালের উত্তেজনা বাবাকে দেখতে পেয়ে, অনেক আশা যে বাবা এবার কি নিয়ে এসেছে ওর জন্যে। খেলনা পেয়ে ছেলে খুশি, মা আমাকে পেয়ে। সারারাত মনের দুঃখ উগরে দিত, একদিন ওর কত মন খারাপ করেছে। সারারাত জেগে থেকেছে, একা থাকলে ও ঘুমাতে পারেনা। আমি থাকলে যেন ও নিশ্চিন্ত।
আজকে সিড়ির লাইটটাও জ্বালানো হয়নি। মনে হচ্ছে শ্মশানে এসেছি। কোনরকমে অন্ধকার নিস্তব্ধ ঘরে এসে পৌছুলাম। কাজের লোকদের ডাকিনি। আমার কাছে এক্সট্রা চাবি থাকে সেটা দিয়েই খুলে নিলাম দরজা।
বিছানায় সেই চাদরটাই পাতা রয়েছে, যেটা আমার ঘরে বিরল। তুলি একই চাদর দুদিন পাতেনা। বুকের মধ্যে একটা চাপা যন্ত্রনা নিয়ে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এলাম।
অভ্যেস বশত রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে মনে পরলো তুলি নেই। চাও চাওয়া যাবেনা। ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখছি। কে বলবে আমি এত নোংরা। এত সুপুরুষ একজন এরকম দ্বিচারিতা করে, সাধারন লোক ভাবতেও পারেনা। দেওয়ালে আমার আর তুলির বিয়ের একটা ফটো ঝুলছে। মন বলছে, তুলি এতটা কঠোর হতে পারবেনা, কতক্ষন আর রাগ করে থাকবে। নিশ্চয় আশেপাশে আছে।
আমি পোষাক বদলে নিলাম। যাই পাগলিটার রাগ ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আসি।
বাইকটা স্টার্ট দিয়ে চিন্তা করে নিলাম তুলি কোথায় কোথায় যেতে পারে।
তুলিদের বাড়ি থেকে শুরু করে ওর সব বন্ধুর কাছে খোঁজ নিলাম। তুলির সাথে ওদের অনেকদিন ধরেই যোগাযোগ নেই।
আমার মনের মধ্যে ঝড় বয়ে চলেছে। কোথায় যেতে পারে। তাহলে কি অসিমের সাথেই ...। পিয়াল কি করছে?
অনেক কৈফিয়ত দিতে হোলো এত রাতে তুলিকে খোঁজ করার জন্যে।
আমি এখন কি করবো? কোথায় যাবো? থানায় খবর দেবো না অপেক্ষা করবো। তুলি তো জানে যে আমি বাড়ি ফিরে আসবো আজকে। যেখানেই থাক ও নিশ্চয় বুঝতে পারছে যে আমি ওকে মিস করছি। ওকে ছাড়া আমার কি হচ্ছে, আমি কত দুশ্চিন্তায় আছি। নিশ্চয় ও ফোন করবে। ও নাহলে তো আমি নিজেও জানিনা যে আমার সবকিছু কোথায় আছে।
বাড়িতে ফিরে মোবাইলটা হাতে নিয়ে চুপ করে শুয়ে রয়েছি সোফার মধ্যে, তুলির ফোনের অপেক্ষায়। অন্য সময় এইভাবে শুলে তো রক্ষে ছিলো না। মাথার নোংরা নাকি সোফার হাতলে চলে যাবে। আমার মাথায় যেন নোংরা ভর্তি থাকে। আর পিয়াল যদি আমাকে এ ভাবে শুয়ে থাকতে দেখে তাহলে তো সোজা গায়ের ওপর উঠে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যেতো। ওর মার কত অভিযোগ “আমি বাড়িতে থাকলেই নাকি ছেলের বাদরামি বেরে যায়”।
বা রে কি আবদার। আমার ছেলে যদি আমাকে দেখে সাহস পায় দুষ্টুমি করার তাহলে কি আমার দোষ?
কোথায় ওরা? কি করছে? তুলির মনের অবস্থা কি? এরকম তিল থেকে তাল করে ফেললো কি ভাবে?
মানসিক ক্লান্তিতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি বুঝতেও পারিনি। সোফার হাতলে মাথা রাখাতে ঘার ব্যাথা করছিলো, তাই ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ঘুম ভেঙ্গে মনে হোলো আমি বিছানায় যেমন শুয়ে থাকি সেরকম শুয়ে আছি, সব যেন ঠিক আছে। মুহুর্তের মধ্যে সব মনে পরে গেলো আবার। তুলি কি ফোন করেছিলো?
নাঃ তুলিতো ফোন করেনি। মোবাইলে একটা ব্যাঙ্কের এসএমএস এসেছে শুধু। আর কিছু নেই।
আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। তুলি এত জেদ কেন করছে। এতদিনের ভালবাসা, সম্পর্ক, সন্তান, সংসার, এসব কি কেউ এইভাবে ছেড়ে যেতে পারে? বিশেষ করে মেয়েরা। এরকম ভুল তো কতজনই করে, সবার কি সংসার ভেঙ্গে যায়। ভুলটাকে অতীত করে দিয়ে, ভুলে গিয়ে, দুঃস্বপ্ন ভেবে নিয়ে কি এগিয়ে যাওয়া যায় না?
আমার খুব চিন্তা হচ্ছে তুলিকে নিয়ে। ও কোথায়? কোন বিপদ হয়নি তো? সাথে পিয়ালও তো আছে। ও কি সেই অসিম খানকির ছেলের কাছেই আছে?
আমি অসিমকে ফোন লাগালাম। ফোন বন্ধ। কি করি আমি। দুহাতে মুখ ঢেকে বসে পরলাম। নিজের অজান্তেই চোখে জল চলে এলো। এরকম নিঃসঙ্গ এর আগে আমি মাকে হারিয়ে হয়েছিলাম। মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করে বাড়িতে ঢুকে যখন মনে হোলো মা আর কোনদিন এখানে ফিরে আসবেনা। বুক মুচড়ে জল চলে এসেছিলো। আমি জীবনে সেই প্রথম কেঁদেছিলাম। নিজেকে খুব অপরাধি মনে হয়েছিলো আমার। কোন বিপদে পরলেই মাকে স্মরন করতাম আমি। ঠাকুর দেবতা মানতাম না, কিন্তু দেখতাম মাকে মনে করে কোন কাজে হাত দিলে সেটাতে আমি সফল হবোই। সেটাই হয়তো মার জীবনীশক্তিটাকে কমিয়ে দিয়েছিলো।
আজকে আমার চোখে জল এলো আমার নিজের সংসারের লোককে কাছে না পেয়ে।
পায়ে পায়ে মায়ের হাসিমুখের ফটোটার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। মন বলছে এবারও মা আমাকে এই বিপদের হাত থেকে উদ্ধার করবে। “মা মাগো যা করেছি অন্যায় করেছি, আর জীবনে আমি এ পথে পা বাড়াবো না, দয়া করে তুলি আর পিয়ালকে ফিরিয়ে দাও।”
বারবার করে তুলির ফোনে চেষ্টা করে চলেছি। কিন্তু সুইচড অফ আসছে প্রতিবার।
কি করবো আমি। কি করা উচিৎ আমার। থানায় যাবো? যদি একথা সেকথায়, আসল কারন বেরিয়ে পরে? পুলিশে ছুলে আঠারো ঘাঁ।
সারারাত ধরে ঘরের মধ্যে ছটফট করলাম। সকাল হওয়ার অপেক্ষায় আছি। ভোরের আলোয় মানুষ নতুন দিশা পায়। নতুন আশা জাগে মনে। রাতের পাপ সকালে ধুয়ে যায়। দুনিয়ার সিংহভাগ অপরাধ রাতের বেলায় হয়। অতিবড় অপরাধিও ভোরের আলোকে সন্মান দেয়। আমার আশা, আমি বাড়িতে আছি জেনে তুলি নিশ্চয় কাল সকালে আমার কাছে ফিরে আসবে। আজ রাতে ফোন না করে ও আমাকে শাস্তি দিলো হয়তো। আমাকে শাস্তি দিতে গিয়ে কি ও নিজেও শাস্তি পাচ্ছে না? ওর সাথে পিয়ালও বাবাকে ছেড়ে থাকতে কষ্ট পাচ্ছে না?
কিন্তু তুলি গেছে কোথায়?
সেই অসিমের কাছে? যাবো অসিমের আর অর্পিতার ছবি নিয়ে ওরা যেখানে থাকে বলেছিলো সেখানে? আমার মনে হয় না তুলি ওর কাছে গিয়ে উঠবে। কারন তুলি জানে যে সেটা হলে ওর সংসারে ফেরার পথ সঙ্কির্ন হয়ে যাবে। আমি ওকে বারবার করে অনুরোধ করেছিলাম, যে ওই শুয়োরের বাচ্চার কাছে না যেতে।
তাহলে তুলি কোথায় গেছে। এমন তো কাউকে আমি চিনিনা যেখানে তুলি অন্তত ঘন্টা খানেক কাটাতে পারে।
আর চিন্তা না করে আমি কম্পিউটারে গিয়ে বসলাম। এই সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।
কম্পিউটারটা স্ট্যান্ড বাই হয়ে আছে। আমি তো বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তাহলে তুলি কি খুলেছিলো?
চালু করতেই দেখলাম চ্যাট সাইটটা অন হয়েছিলো। তাহলে তুলি আমার পাশওয়ার্ড মনে রেখেছিলো। রাখবে নাই বা কেন। খুবই তো সোজা। পিয়ালের জন্মদিন, তুলির জন্মমাস, আর আমার জন্ম বছর। আমিও নিজেকে বেশী শেয়ানা ভাবি। লেখাপরা জানা মেয়ের কাছে কম্পিউটার যে এমন কিছু ব্যাপার না, সেটা আমার ভাবা উচিৎ ছিলো। আমি ভাবাতাম তুলি এত কিছু বোঝেনা, ঘর গৃহস্থালি সামলে, এসবের ওপর ওর কোন আকর্ষন নেই। আকর্ষন নেই মানে এই না যে ও পারবে না।
ইন্টারনেট চালু করতেই চ্যাট সাইট টা অন হয়ে গেলো। মুহুর্তের মধ্যে অসিমের অনেকগুলো অফলাইনার ভেসে এলো।
তার মানে তুলি অসিমের সাথে চ্যাট করেছে।
আচ্ছা এখানে দেখছি। অর্পিতা তুলির সাথে চ্যাট করেছে।
হে ভগবান এত মিথ্যে কথা লিখেছে? একটা মেয়ে হয়ে মেয়ের ঘর ভাঙ্গাচ্ছে। এ নিশ্চয় অর্পিতা সেজে ওই শুয়োরের বাচ্চাটার কাজ।
কি না বলেছে তুলিকে।
প্রথম থেকে পরে যা বুঝলাম তাতে ওরা স্বামি আর স্ত্রী দুজন মিলে তুলিকে বোঝাতে চাইছে যে আমি কত খারাপ। আমার নাকি তুলিকে দিয়ে বেশ্যাবৃত্তি করানোর মত ইচ্ছে ছিলো। আমি নাকি অসিম কে বলেছি যে প্রথম বার ফ্রীতে কিন্তু পরের বার আর ফ্রী না। তাও প্রথম বার তুলির বদলে অর্পিতার সাথে আমি করবো। অর্পিতাকে প্রায় পায়ে ধরেছি তুলিকে এই খেলায় রাজী করানোর জন্যে। তুলি একবার অন্য কারো সাথে করলে, সেই সুযোগে আমি নাকি তুলিকে রাজী করিয়ে নিতাম বিভিন্ন মেয়েছেলের সাথে সম্ভোগ করার জন্যে। অর্পিতাকে প্রায় জোর করে নিজের লিঙ্গ দেখিয়ে উত্তেজিত করতে চেয়েছি, যদিও অর্পিতা দেখেনি, বরঞ্চ অসিমকে ডেকে আমার কান্ডকারখানা দেখিয়েছিলো। আমি এতই বিকৃত কামের পুরুষ যে মেয়েদের শারীরিক সৌন্দর্য আমি খুজে পাই মেয়েদের গুহ্যদ্বারে, সেখানে চুমু খেতে লেহন করতে আমার ঘেন্না হয়না। প্রথম দিন থেকেই আমি এধরনের কথা বলতে শুরু করি ওকে। ওরা না চাইলেও আমি নোংরা নোংরা কথা বলতাম। এমন কি অর্পিতাকেও জিজ্ঞেস করেছি ওকে করলে ওর কেমন লাগবে। অর্পিতার সাথে আমি আলাদা করে হোটেলে যেতে চেয়েছি। তার বদলে তুলি অসিমের সাথে যেমন খুশি করতে পারে।
কিছু সত্যি কিছু মিথ্যে, মানে সব মিলিয়ে অর্ধসত্যি। যেটা মিথ্যের থেকেও ভয়ঙ্কর। মিথ্যে প্রমান করা যায়, অর্ধসত্যি প্রমান করা যায় না। জীবন থেকে শিখেছি এটা।
মাথায় রক্তের স্রোত প্রবল হচ্ছে। আমি বুঝতে পারছিনা এসব করে ওর কি লাভ? তুলিকে কি ও বিয়ে করবে। করুক। আমার মত সন্মান দেবে তো। আমি তো কামুক, চিটীংবাজ তো না। পারবে তো ও পিয়ালের কাছে আমার বিকল্প হয়ে উঠতে। পারবে তুলিকে আমার মত ভালবাসায় ভাসিয়ে দিতে। আমি তো নোংরা। কিন্তু তুলিকে তো আমি নিজের বুকের টুকরোর থেকেও ভালোবাসি। সেই জন্যেই এসব কান্ড ঘটালাম। নাহলে তো আমি চুপচাপ ফুলে ছাপ দেওয়ার মত করে বিভিন্ন নারীর সঙ্গ পেতেই থাকতাম, না তুলি সেটা জানতে পারতো, না লাঠি ভাঙ্গতো।
পিয়াল হওয়ার পর থেকে তো আমার মনের মধ্যে অন্য কোন নারী আসেনি। প্রলোভন তো কত ছিলো। আমার অফিসেই তো একটা অবাঙ্গালি মেয়ে আছে যে আমাকে দেখলেই সব খুলে দিতে রাজী। আমি তো কোনদিন ওর মুখের দিকেও তাকিয়ে দেখিনি।
হ্যাঁ আমি অনেক নোংরামো করেছি। ঝুমরির মত ম্যাথরানিকেও এই বিছানায় তুলেছি। কিন্তু এর প্রভাব তো কিছুই আমার স্বাভাবিক জীবনে পরেনি। তাহলে...।
আমি অসিম আর অর্পিতার একটা ছবি প্রিন্ট নেবো বলে, ড্রয়ার থেকে কাগজ নিতে গেলাম, ড্র্ইয়ার টেনে থমকে গেলাম। তুলির ফোন, ঘরের চাবি, আর তুলির হাতে লেখা লম্বা একটা চিঠি রয়েছে তাতে।