01-01-2019, 04:32 PM
ধর্মের কল বাতাসে নরে। আমি ভাবতেও পারিনি যে তুলি এসব জেনে যাবে। তার মানে অর্পিতা আমার সাথে হওয়া সব কথা ওর বরকে বলেছে। আমার ধারনা ভুল ছিলো যে ও একাকিত্বে ভুগছে, আমার মতনই ও জীবনে বৈচিত্র খুঁজছে।
আমি তুলিকে বোঝানোর অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু তুলিএ এইরকম একরোখা ভাব আমি কখনো দেখিনি। কিছুতেই ও আমার কথা শুনতে চাইছেনা।
ছেলেটা নাকি বলেছে যে দরকার হলে প্রমান দিয়ে দেবে। সেটাই তুলির কাছে বেদবাক্য। এই মুহুর্তে ও ঘরের লোককে ভরসা না করে বাইরের অচেনা একটা লোককে ভরসা করছে।
তুলির এই অবজ্ঞা আমার বুকের ভিতরে কাঁপ ধরিয়ে দিচ্ছে। এতদিনের ভালো ছেলের মুখোশটা আজ খসে পড়তে চলেছে।
অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম। দেওয়ালে মাথা ঠুকলাম, তুলি কিছুই শুনছে না। পিয়াল ঘুমিয়ে পড়তে আমি আবার তুলিকে বোঝাতে শুরু করলাম।
‘তুলি প্লিজ, তুমি অন্যের কথায় ঝাল খেয়োনা। তুমি বুঝতে পারছোনা ওর চরিত্র। ও তোমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার আর তোমার মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করে তোমাকে নিয়ে এঞ্জয় করতে চাইছে। তুমি আমাকে দুদিন দাও, আমি বম্বে থেকে ঘুরে এসে তোমাকে সব খুলে বলবো।’
‘কি খুলে বলবে। তুমি এরকম আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। ছিঃ ছিঃ ছিঃ’
‘তুলি মানুষ তো ভুল করেই। তুমিও তো করেছো, আমি কি তোমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি, কিন্তু তুমি আমাকে আমার কথা বলতে দেবে তো। ফাঁসির আসামিও তো নিজের জন্যে উকিল পায়, সঠিক বিচার যাতে সে পায়...।’
‘তুমি খুন করেছো অভি। তুমি আমার বিশ্বাসকে খুন করেছো। আমি ইচ্ছে করলে অনেক ছেলের হাত ধরতে পারতাম জীবনে কিন্তু আমি তোমাকে বেছে নিয়েছিলাম, জানতাম তুমি সবার থেকে আলাদা। আমার গর্ব হোতো তোমাকে নিয়ে। আমার অনেক মন খারাপের সময়ও আমি ভাবতাম তোমার মত কেউ আছে আমার জীবনে, সেটাই তো কত আনন্দের। সবাই তো জীবনের কয়েকদিন সুখে কাটায়, আমি তো সুখের সমুদ্রে রয়েছি তোমাকে পেয়ে। সেগুলো ভুল ভাবতাম আমি। তুমি আমার সমস্ত স্বপ্ন ভেঙ্গে চুর চুর করে দিয়েছো।’
‘তুলি এরকম ভাবে বোলোনা। হ্যাঁ আমি ভুল করেছি যে, তোমাকে না জানিয়ে তোমার ফোন নাম্বার ওকে দিয়েছি, আর মিথ্যের আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু উদ্দেশ্য তো তোমাকে দলে টানা, যাতে এই সুখটা তুমি আমি দুজনেই পাই...।’
‘তুমি আমার জন্যে না, তোমার জন্যে করেছো সব... নাহলে ওর বৌকে তুমি তোমার সবকিছু দেখিয়ে উত্তেজিত করতে চাও কেন? কেন ওকে আলাদা করে দেখা করতে বলো’
‘তুলি তুমি বিশ্বাস করো, চ্যাটে কি বলছি সেটার মানে আমি সিরিয়াস ভাবে বলছিনা। আমি ওর বৌটাকে বোঝার চেষ্টা করছিলাম যে কিরকম, ওর বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক হলে ও না ঝামেলা পাকায় সেটাই বোঝার চেষ্টা করছিলাম।’
‘তার অর্থ কি এই যে ওকে তুমি তোমার ল্যাংটো দেখাবে? তুমি ওদের লিখেছো যে ওরা নিয়ম ভেঙ্গেছে, নিয়ম তো তুমি ভেঙ্গেছো...।’
‘শোন ওর বৌয়েরও চুলকানি কম না। ওর বৌয়ের দেখার ইচ্ছে না থাকলে এরকম হ্যাংলামি করলো কেন? কেন জিজ্ঞেস করতো যে তোমার সাথে আমি কি ভাবে করি?’
‘তুমি তো দেখিয়েছোওকে। ছিঃ। আমি ওর সাথে কথা না বললে জানতেই পারতাম না যে তুমি এত নোংরা, অন্য মেয়েমানুষকে তুমি তোমার বৌয়ের সাথে করা দেখিয়ে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছিলে...ছিঃ ছিঃ অভি, আমি ভাবতেই পারিনা, চুলকানি তো তোমারই, তুমি আবার ওর বৌয়ের দোষ দিচ্ছো।’
এক একটা ঘটনা শুনে আমি আকাশ থেকে পরছি। শালা খানকী মাগি, আমাকে টোপ দিয়ে ফাঁসিয়েছে। সব ওর বরকে বলে দিয়েছে।
আমি চুপ করে রইলাম। তুলির চোখ ছলছল করছে।
‘এই জন্যে তুমি এত চাপ দিচ্ছিলে আমাকে এসব করার জন্যে। নিজের বৌকে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে নিজে অন্য মেয়েমানুষ নিয়ে ফুর্তি করার জন্যে। আমাকে ভালো না লাগলে তুমি বলে দিতে আমি তোমার জীবন থেকে সরে যেতাম...।’
‘তুলি আমি কোন ভুল করিনি। তুমি যানোনা যে ইন্টারনেটে এসব কথার বলা মানে মনের কথা না। ওর বৌও তো বলেছিলো যে ও একা ফিল করে, ঘুরিয়ে জানতে চেয়েছিলো যে আমার অবর্তমানে তোমার সাথে ওর বর করলে আমি কিভাবে নেবো। এসবের মানে কি? মানে তো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ও আমার সঙ্গ চেয়েছিলো ওর বরের অজান্তেই।’
‘ওর বর তোমার মতন না। ওর বৌ আর ওর মধ্যে কোনকিছু লুকানো থাকেনা। ওর বরের সামনেই ও সবসময় তোমার সাথে কথা বলতো। এমন কি আমাদের করাটাও ওরা নাকি সেভ করে রেখেছে। আর তুমি আমাকে লুকিয়ে আমার ইজ্জত দিয়ে দিলে...। কি বলবো তোমাকে আমার আর কিছু বলার নেই।’
এর মধ্যেই দেখছি তুলির মোবাইল বাজছে। ওই ছেলেটা ফোন করছে।
আমি তুলিকে বললাম। ‘তুমি আর ওর সাথে কথা বলবে না। আমি ঘুরে আসি তারপর সব খুলে বলবো তোমাকে...।’
‘কেন বলবো না। বললে তোমার স্বরুপ বেরিয়ে আসবে তাই...।’
‘তুমি ধরেই নাও না আমি ওর বৌয়ের সাথে আলাদা দেখে করতে চেয়েছি, এমনকি হোটেলে নিয়ে যেতে চেয়েছি। সব তো জেনেই গ্যাছো, আর নতুন করে কি শুনবে তুমি?’
‘আমি সব কিছু দেখতে চাই। কি প্রমান ও দিতে চাইছে সেটা দেখতে চাই...। ও বাড়িতে এসে দিয়ে যেতে চাইছে। বাবা বাড়িতে আছে বলে আমি বারন করেছি।’
‘তুলি তুমি কি উন্মাদ হয়ে গেছো? তুমি আমার কথা ন শুনে একটা পরপুরুষের কথা শুনতে চাইছো? তাকে বেশী ভরসা করছো?’ আমি চিৎকার করে উঠলাম। ছেলেটা জানে যে আমি বাড়িতে আছি তাও তুলিকে ফোন করার সাহস দেখাচ্ছে।
‘তুমি যতই চিৎকার করো না কেন আমি এর শেষ দেখেই ছারবো...।’
‘তুলি এটা কিন্তু খুব বাড়াবাড়ি হচ্ছে। আমি তোমাকে বলছি আমাকে দুদিন সময় দাও, আমি ফিরে আসি।। তুমি ওর সাথে একা দেখা করবে না... দোহায় তোমার। তুমি বুঝতে পারছোনা কি যে ও কি চাইছে? ও তোমাকে, আমার নামে ভরকাতে চাইছে, যাতে করে ও তোমার সাথে এঞ্জয় করতে পারে।’
‘মোটেও না। ওই বরঞ্চ বলেছে, শরীরের ব্যাপার পরে...’
‘তার অর্থ কি? তুমি যে কবে বুঝবে!! ওফঃ ভগবান আমি হাঁপিয়ে যাচ্ছি তুলি’
‘আমিতো বোকাই, সেই জন্যে তোমাকে এত বিশ্বাস করেছি। আর বোকামো আমি করবো না’
‘তুলি প্লিজ। প্লিজ তুলি। তুমি, আমি ফিরে আসা পর্যন্ত আমাকে সময় দাও। তুমি ওর সাথে দেখা কোরো না... তোমার বিপদ হতে পারে।’
‘আমার আর নতুন করে কি বিপদ হবে? আর তুমি এত ভয় পাচ্ছো কেন?’
‘আমি ভয় পাচ্ছি না। আমি ভয় পাচ্ছি তোমাকে নিয়ে। তুমি যেরকম সিন ক্রিয়েট করছো, যে তিল থেকে তাল হয়ে যাচ্ছে। নেটে কার সাথে কি বললাম সেটা ধরে বসে আছো।’
‘নেট থেকেই তো এত কিছু। এটা কেন বাদ যাবে?’
‘দেখো তুলি, আমি ভালো ভাবে বলছি, তুমি ওর সাথে দেখা করবে না। আর যদি করো তাহলে আমার সাথে আজ রাতেই তোমার শেষ দেখা। আমি বলছি আমি অন্যায় করেছি, সেটার শাস্তি যা দেবে তাই মাথা পেতে নেবো। কিন্তু যদি তুমি মনে করো যে বাইরের লোকের সাহায্য নিয়ে তুমি আমাকে টাইট করবে তাহলে এখানে তোমার কোন স্থান নেই।’
তুলি রীতিমত গোয়ার্তুমি করছে ‘সে তুমি যাই করো না আমি এর শেষ দেখবোই, আমাকে দেখতে হবে তুমি ওর বৌয়ের সাথে কি কি কথা বলেছো?’
‘আমি তোমাকে বলছি, যে আমার কাছেও সব আছে, কিন্তু আমাকে আমার অফিসের কাজটা শেষ করে আসতে দাও, আমি নিজে তোমাকে সব দেখাবো...।’
তুলি চুপ করে রইলো। চোখ দিয়ে জল গরিয়ে পরছে। আমি মুছে দিতে গেলাম। তুলি একঝটকায় আমার হাত সরিয়ে দিলো।
আমি কোথাও গেলে তুলি সবসময় বারান্দায় দাড়ায়। আজ আর ও এলোনা। ঘরের মধ্যেই রইলো। আমাকে চা করে দেবে কিনা জিজ্ঞেস করেছিলো, আমি না বলাতে ও গিয়ে আবার শুয়ে পরে। সারারাত আমি দুচোখের পাতা এক করতে পারিনি। এতদিনের সযত্নে রাখা আমার ইমেজ আজ ভেঙ্গে পরার মুখে।
আমার বসের আবার চলমান কিছুতেই প্রচুর ঘুম হয়। নিজেই বলেন যে এদিকে চাকা গড়াবে আর ওদিকে আমার চোখ বুজবে।
চিন্তাক্লান্ত আমি অচিরেই ঘুমের মধ্যে ঢলে পরলাম। উইণ্ডো শেডটা নামিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুমিয়ে আর থাকি কি করে। এর মধ্যেই স্বপ্ন দেখলাম ছেলেটা তুলিকে ভোগ করছে। স্বপ্নের মধ্যেই দেখলাম। সেই শুয়োরের বাচ্চাটা হাফ প্যান্ট পরে সোফায় বসে আছে, পিয়াল ওর কোলে।
ধরফর করে উঠে বসলাম। কখন তুলিকে ফোন করবো সেতার অপেক্ষায় রইলাম।
মুম্বাইয়ে নেমে তুলিকে ফোন করলাম। দুবার রিং হতেই তুলি ফোন ধরলো।
‘আমি পৌছে গেছি।’
সংক্ষিপ্ত উত্তর ‘হুঁ’। এর আগে তুলিকে বলতে হোতো যে ‘রাখো পরে সন্ধ্যেবেলায় আবার কথা হবে, হোটেলে ঢুকে ফ্রী হয়ে গিয়ে।’
‘ছেলে কলেজে গেছে?’
আবার ‘হুঁ’
‘আমার খুব মন খারাপ লাগছে।’
‘পরে কথা বলবো, এখন অনেক কাজ পরে আছে।’ তুলি ফোনটা কেটে দিলো।
হোটেলে ঢুকে ফ্রেশ হয়েই চলে গেলাম অফিসে। কনফারেন্স আর কিছুক্ষনের মধ্যে শুরু হবে। আমার সাথে একজন দক্ষিন ভারতীয় রুম শেয়ার করছে। এটাই নিয়ম। কনফারেন্সে সবাইকে রুম শেয়ার করতে হয়, যাতে বিভিন্ন রিজিয়নের ছেলেদের নিজেদের মধ্যে ভাবভালোবাসা হয়। সহযোগিতার আবহ তৈরি হয়।
মনের মধ্যে গতরাতের তিক্ত অভিজ্ঞতা যাবর কেটে চলেছি। অনেক প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে মনে, কাল রাতে চিন্তা করে যা সন্দেহ হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে যে অসিম আর অর্পিতা দুইজন না বরঞ্চ একজনই। হ্যাঁ মেয়ের গলায় কথা? সেটা প্রথমে আমারও খটকা লেগেছিলো যেরকম তুলির লেগেছিলো। মানে অর্পিতা সেজে অসিম আমার দুর্বলতা বের করে এনেছে, যাতে করে ও তুলির কাছে আমার স্বরুপ প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু এর পিছনে কি রয়েছে। আমিই তো ওকে নক করেছিলাম। ও আমাকে আগে থেকে চেনে সেটা হতে পারেনা।
অর্পিতার ছবি দেখেছি। কিন্তু ক্যামে ওদের দুজনকে কখনোই দেখিনি।
আমি একবার দুবার কথা বলেই নিজের সব উগরে দিয়েছি ওকে, মাথায় আসেনি যে কেউ এভাবে আমাকে মুরগি করতে পারে। অর্পিতা ইচ্ছে করেই আমার কাছে নিজের দুর্বলতার ইঙ্গিত দিয়েছিলো, যাতে আমি নিজের কামেচ্ছা ওর কাছে প্রকাশ করি। আমার বারা দেখতে (ইঙ্গিতে হলেও) আমাকে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলো। আমার নোংরা নোংরা কথায় ও কোনদিন আপত্তি করেনি, উদ্দেশ্য এইযে আমার এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আমাকেই ব্ল্যাক্মেল করা। তার মানে মালটা এরকম করে স্বামিদের ট্র্যাপে ফেলে।
ধীরে ধীরে আমার ধারনাগুলো দৃঢ় হতে থাকলো। তুলিও ওর বৌয়ের সাথে কথা বলতে চেয়ে পায়নি। যেই মাত্র তুলির ফোন নাম্বার আমি ওকে দিলাম, অর্পিতা প্রায় উধাও হয়ে গেলো, আর অসিম বেপরোয়া ভাবে তুলির সাথে প্রেম বিনিময় করতে শুরু করলো।
শেষদিন ওর সন্দেহ হয়েছিলো যে তুলির ওকে সেরকম পছন্দ না, তাই আবার অর্পিতা হয়েই আমাকে মেসেজ করে। অর্পিতার হাতেই যখন ফোন ছিলো তখন সেই ফোন থেকে অসিম প্রায় একই সময়ে ফোন করলো কি করে।
আমার খুব রাগ আর দুঃখ হচ্ছে যে ও এরকম ভাবে আমাকে মুরগি করলো। আরো রাগ হচ্ছে যে তুলি ওকে এতোটাই প্রশ্রয় দিয়েছে যে ও আমি থাকাকালিনই তুলিকে ফোন করছে। ও প্রথম থেকেই এইরকম মতলব এঁটেছিলো, না হলে ক্যামে দেখানো কেন সেভ করে রাখবে?
এখন আমি তুলিকে বোঝাবো কি করে? আর তুলির হাতে যদি আমার চ্যাটের সবকিছু চলে আসে তো কি যে করবে ও ভগবান জানে।
কেন এরকম ভুল করলাম। অতি উৎসাহের বশে দুটো কথায় ভরসা করে নিলাম, একবার যদি দেখা করতে চাইতাম হয়তো এই সমস্যা হোতো না।
বারোটা নাগাদ একবার চা এলো। এই সময় একটা ব্রেক। আমি আড়াল খুজে নিয়ে তুলিকে ফোন করলাম। বলার উদ্দ্যেশ্য যে ছেলেটাকে ফোন করে বলতে যে ওর সাথে না ওর বৌয়ের সাথে দেখা করা, ওর বোউয়ের মুখ থেকেই তো আরো ভালো জানা যাবে। দরকার হলে ওর বৌয়ের ফোন নাম্বার নিয়ে ওর সাথে কথা বলা। তাহলেই দুধ কা দুধ পানি কা পানি নিকাল যায়েগা।
তুলির ফোন এনগেজ। তাহলে কি ... আবার ... এতো বারন করা স্বতেও?
ওই শালাটার ফোনে ফোন করবো?
হ্যাঁ শালা এটাও এনগেজ। তুলিকে এত বারন করলাম তাও...।
কয়েক ঘন্টা ধরে আমি চেষ্টা করে গেলাম তুলির ফোন হয় বেজে যাচ্ছে। নাহয় ব্যাস্ত আসছে।
ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেলো। তুলিকে ফোন করলাম। ফোন সুইচ অফ।
ল্যান্ডলাইনে ফোন করলাম। কয়েকবার বেজে যাওয়ার পরে সুমিতা মাসি ফোন ধরলো। সুমিতা মাসি আমাদের বাড়িতে খাওয়া পড়া কাজ করে। পিয়ালের দেখাশোনা করে। খুব দরদি মহিলা।
ফোন ধরে জানালেন যে তুলি সন্ধ্যেবেলা বেরিয়েছে পিয়ালকে নিয়ে এখনো ফেরেনি।
রাত নটা বাজে ও কোথায় গেছে?
কে উত্তর দেবে।
তাহলে তুলি আমার কথা না শুনেই ওই শুয়োরের বাচ্চাটার সাথে দেখা করতে গেছে। ল্যাংটা যখন হয়েই গেছি তুলিকে আমি এই জন্যে ছেড়ে কথা বলবো না। যা হয় হবে। আমি সত্যি ওকে সব খুলে বলতাম। কিন্তু ও আমাকে সুযোগ না দিয়ে নিজের মতন চললো। সাথে আমার ছেলেটাকেও টেনে নিয়ে গেলো।
আমি তুলিকে বোঝানোর অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু তুলিএ এইরকম একরোখা ভাব আমি কখনো দেখিনি। কিছুতেই ও আমার কথা শুনতে চাইছেনা।
ছেলেটা নাকি বলেছে যে দরকার হলে প্রমান দিয়ে দেবে। সেটাই তুলির কাছে বেদবাক্য। এই মুহুর্তে ও ঘরের লোককে ভরসা না করে বাইরের অচেনা একটা লোককে ভরসা করছে।
তুলির এই অবজ্ঞা আমার বুকের ভিতরে কাঁপ ধরিয়ে দিচ্ছে। এতদিনের ভালো ছেলের মুখোশটা আজ খসে পড়তে চলেছে।
অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম। দেওয়ালে মাথা ঠুকলাম, তুলি কিছুই শুনছে না। পিয়াল ঘুমিয়ে পড়তে আমি আবার তুলিকে বোঝাতে শুরু করলাম।
‘তুলি প্লিজ, তুমি অন্যের কথায় ঝাল খেয়োনা। তুমি বুঝতে পারছোনা ওর চরিত্র। ও তোমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার আর তোমার মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করে তোমাকে নিয়ে এঞ্জয় করতে চাইছে। তুমি আমাকে দুদিন দাও, আমি বম্বে থেকে ঘুরে এসে তোমাকে সব খুলে বলবো।’
‘কি খুলে বলবে। তুমি এরকম আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। ছিঃ ছিঃ ছিঃ’
‘তুলি মানুষ তো ভুল করেই। তুমিও তো করেছো, আমি কি তোমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি, কিন্তু তুমি আমাকে আমার কথা বলতে দেবে তো। ফাঁসির আসামিও তো নিজের জন্যে উকিল পায়, সঠিক বিচার যাতে সে পায়...।’
‘তুমি খুন করেছো অভি। তুমি আমার বিশ্বাসকে খুন করেছো। আমি ইচ্ছে করলে অনেক ছেলের হাত ধরতে পারতাম জীবনে কিন্তু আমি তোমাকে বেছে নিয়েছিলাম, জানতাম তুমি সবার থেকে আলাদা। আমার গর্ব হোতো তোমাকে নিয়ে। আমার অনেক মন খারাপের সময়ও আমি ভাবতাম তোমার মত কেউ আছে আমার জীবনে, সেটাই তো কত আনন্দের। সবাই তো জীবনের কয়েকদিন সুখে কাটায়, আমি তো সুখের সমুদ্রে রয়েছি তোমাকে পেয়ে। সেগুলো ভুল ভাবতাম আমি। তুমি আমার সমস্ত স্বপ্ন ভেঙ্গে চুর চুর করে দিয়েছো।’
‘তুলি এরকম ভাবে বোলোনা। হ্যাঁ আমি ভুল করেছি যে, তোমাকে না জানিয়ে তোমার ফোন নাম্বার ওকে দিয়েছি, আর মিথ্যের আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু উদ্দেশ্য তো তোমাকে দলে টানা, যাতে এই সুখটা তুমি আমি দুজনেই পাই...।’
‘তুমি আমার জন্যে না, তোমার জন্যে করেছো সব... নাহলে ওর বৌকে তুমি তোমার সবকিছু দেখিয়ে উত্তেজিত করতে চাও কেন? কেন ওকে আলাদা করে দেখা করতে বলো’
‘তুলি তুমি বিশ্বাস করো, চ্যাটে কি বলছি সেটার মানে আমি সিরিয়াস ভাবে বলছিনা। আমি ওর বৌটাকে বোঝার চেষ্টা করছিলাম যে কিরকম, ওর বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক হলে ও না ঝামেলা পাকায় সেটাই বোঝার চেষ্টা করছিলাম।’
‘তার অর্থ কি এই যে ওকে তুমি তোমার ল্যাংটো দেখাবে? তুমি ওদের লিখেছো যে ওরা নিয়ম ভেঙ্গেছে, নিয়ম তো তুমি ভেঙ্গেছো...।’
‘শোন ওর বৌয়েরও চুলকানি কম না। ওর বৌয়ের দেখার ইচ্ছে না থাকলে এরকম হ্যাংলামি করলো কেন? কেন জিজ্ঞেস করতো যে তোমার সাথে আমি কি ভাবে করি?’
‘তুমি তো দেখিয়েছোওকে। ছিঃ। আমি ওর সাথে কথা না বললে জানতেই পারতাম না যে তুমি এত নোংরা, অন্য মেয়েমানুষকে তুমি তোমার বৌয়ের সাথে করা দেখিয়ে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছিলে...ছিঃ ছিঃ অভি, আমি ভাবতেই পারিনা, চুলকানি তো তোমারই, তুমি আবার ওর বৌয়ের দোষ দিচ্ছো।’
এক একটা ঘটনা শুনে আমি আকাশ থেকে পরছি। শালা খানকী মাগি, আমাকে টোপ দিয়ে ফাঁসিয়েছে। সব ওর বরকে বলে দিয়েছে।
আমি চুপ করে রইলাম। তুলির চোখ ছলছল করছে।
‘এই জন্যে তুমি এত চাপ দিচ্ছিলে আমাকে এসব করার জন্যে। নিজের বৌকে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে নিজে অন্য মেয়েমানুষ নিয়ে ফুর্তি করার জন্যে। আমাকে ভালো না লাগলে তুমি বলে দিতে আমি তোমার জীবন থেকে সরে যেতাম...।’
‘তুলি আমি কোন ভুল করিনি। তুমি যানোনা যে ইন্টারনেটে এসব কথার বলা মানে মনের কথা না। ওর বৌও তো বলেছিলো যে ও একা ফিল করে, ঘুরিয়ে জানতে চেয়েছিলো যে আমার অবর্তমানে তোমার সাথে ওর বর করলে আমি কিভাবে নেবো। এসবের মানে কি? মানে তো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ও আমার সঙ্গ চেয়েছিলো ওর বরের অজান্তেই।’
‘ওর বর তোমার মতন না। ওর বৌ আর ওর মধ্যে কোনকিছু লুকানো থাকেনা। ওর বরের সামনেই ও সবসময় তোমার সাথে কথা বলতো। এমন কি আমাদের করাটাও ওরা নাকি সেভ করে রেখেছে। আর তুমি আমাকে লুকিয়ে আমার ইজ্জত দিয়ে দিলে...। কি বলবো তোমাকে আমার আর কিছু বলার নেই।’
এর মধ্যেই দেখছি তুলির মোবাইল বাজছে। ওই ছেলেটা ফোন করছে।
আমি তুলিকে বললাম। ‘তুমি আর ওর সাথে কথা বলবে না। আমি ঘুরে আসি তারপর সব খুলে বলবো তোমাকে...।’
‘কেন বলবো না। বললে তোমার স্বরুপ বেরিয়ে আসবে তাই...।’
‘তুমি ধরেই নাও না আমি ওর বৌয়ের সাথে আলাদা দেখে করতে চেয়েছি, এমনকি হোটেলে নিয়ে যেতে চেয়েছি। সব তো জেনেই গ্যাছো, আর নতুন করে কি শুনবে তুমি?’
‘আমি সব কিছু দেখতে চাই। কি প্রমান ও দিতে চাইছে সেটা দেখতে চাই...। ও বাড়িতে এসে দিয়ে যেতে চাইছে। বাবা বাড়িতে আছে বলে আমি বারন করেছি।’
‘তুলি তুমি কি উন্মাদ হয়ে গেছো? তুমি আমার কথা ন শুনে একটা পরপুরুষের কথা শুনতে চাইছো? তাকে বেশী ভরসা করছো?’ আমি চিৎকার করে উঠলাম। ছেলেটা জানে যে আমি বাড়িতে আছি তাও তুলিকে ফোন করার সাহস দেখাচ্ছে।
‘তুমি যতই চিৎকার করো না কেন আমি এর শেষ দেখেই ছারবো...।’
‘তুলি এটা কিন্তু খুব বাড়াবাড়ি হচ্ছে। আমি তোমাকে বলছি আমাকে দুদিন সময় দাও, আমি ফিরে আসি।। তুমি ওর সাথে একা দেখা করবে না... দোহায় তোমার। তুমি বুঝতে পারছোনা কি যে ও কি চাইছে? ও তোমাকে, আমার নামে ভরকাতে চাইছে, যাতে করে ও তোমার সাথে এঞ্জয় করতে পারে।’
‘মোটেও না। ওই বরঞ্চ বলেছে, শরীরের ব্যাপার পরে...’
‘তার অর্থ কি? তুমি যে কবে বুঝবে!! ওফঃ ভগবান আমি হাঁপিয়ে যাচ্ছি তুলি’
‘আমিতো বোকাই, সেই জন্যে তোমাকে এত বিশ্বাস করেছি। আর বোকামো আমি করবো না’
‘তুলি প্লিজ। প্লিজ তুলি। তুমি, আমি ফিরে আসা পর্যন্ত আমাকে সময় দাও। তুমি ওর সাথে দেখা কোরো না... তোমার বিপদ হতে পারে।’
‘আমার আর নতুন করে কি বিপদ হবে? আর তুমি এত ভয় পাচ্ছো কেন?’
‘আমি ভয় পাচ্ছি না। আমি ভয় পাচ্ছি তোমাকে নিয়ে। তুমি যেরকম সিন ক্রিয়েট করছো, যে তিল থেকে তাল হয়ে যাচ্ছে। নেটে কার সাথে কি বললাম সেটা ধরে বসে আছো।’
‘নেট থেকেই তো এত কিছু। এটা কেন বাদ যাবে?’
‘দেখো তুলি, আমি ভালো ভাবে বলছি, তুমি ওর সাথে দেখা করবে না। আর যদি করো তাহলে আমার সাথে আজ রাতেই তোমার শেষ দেখা। আমি বলছি আমি অন্যায় করেছি, সেটার শাস্তি যা দেবে তাই মাথা পেতে নেবো। কিন্তু যদি তুমি মনে করো যে বাইরের লোকের সাহায্য নিয়ে তুমি আমাকে টাইট করবে তাহলে এখানে তোমার কোন স্থান নেই।’
তুলি রীতিমত গোয়ার্তুমি করছে ‘সে তুমি যাই করো না আমি এর শেষ দেখবোই, আমাকে দেখতে হবে তুমি ওর বৌয়ের সাথে কি কি কথা বলেছো?’
‘আমি তোমাকে বলছি, যে আমার কাছেও সব আছে, কিন্তু আমাকে আমার অফিসের কাজটা শেষ করে আসতে দাও, আমি নিজে তোমাকে সব দেখাবো...।’
তুলি চুপ করে রইলো। চোখ দিয়ে জল গরিয়ে পরছে। আমি মুছে দিতে গেলাম। তুলি একঝটকায় আমার হাত সরিয়ে দিলো।
আমি কোথাও গেলে তুলি সবসময় বারান্দায় দাড়ায়। আজ আর ও এলোনা। ঘরের মধ্যেই রইলো। আমাকে চা করে দেবে কিনা জিজ্ঞেস করেছিলো, আমি না বলাতে ও গিয়ে আবার শুয়ে পরে। সারারাত আমি দুচোখের পাতা এক করতে পারিনি। এতদিনের সযত্নে রাখা আমার ইমেজ আজ ভেঙ্গে পরার মুখে।
আমার বসের আবার চলমান কিছুতেই প্রচুর ঘুম হয়। নিজেই বলেন যে এদিকে চাকা গড়াবে আর ওদিকে আমার চোখ বুজবে।
চিন্তাক্লান্ত আমি অচিরেই ঘুমের মধ্যে ঢলে পরলাম। উইণ্ডো শেডটা নামিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুমিয়ে আর থাকি কি করে। এর মধ্যেই স্বপ্ন দেখলাম ছেলেটা তুলিকে ভোগ করছে। স্বপ্নের মধ্যেই দেখলাম। সেই শুয়োরের বাচ্চাটা হাফ প্যান্ট পরে সোফায় বসে আছে, পিয়াল ওর কোলে।
ধরফর করে উঠে বসলাম। কখন তুলিকে ফোন করবো সেতার অপেক্ষায় রইলাম।
মুম্বাইয়ে নেমে তুলিকে ফোন করলাম। দুবার রিং হতেই তুলি ফোন ধরলো।
‘আমি পৌছে গেছি।’
সংক্ষিপ্ত উত্তর ‘হুঁ’। এর আগে তুলিকে বলতে হোতো যে ‘রাখো পরে সন্ধ্যেবেলায় আবার কথা হবে, হোটেলে ঢুকে ফ্রী হয়ে গিয়ে।’
‘ছেলে কলেজে গেছে?’
আবার ‘হুঁ’
‘আমার খুব মন খারাপ লাগছে।’
‘পরে কথা বলবো, এখন অনেক কাজ পরে আছে।’ তুলি ফোনটা কেটে দিলো।
হোটেলে ঢুকে ফ্রেশ হয়েই চলে গেলাম অফিসে। কনফারেন্স আর কিছুক্ষনের মধ্যে শুরু হবে। আমার সাথে একজন দক্ষিন ভারতীয় রুম শেয়ার করছে। এটাই নিয়ম। কনফারেন্সে সবাইকে রুম শেয়ার করতে হয়, যাতে বিভিন্ন রিজিয়নের ছেলেদের নিজেদের মধ্যে ভাবভালোবাসা হয়। সহযোগিতার আবহ তৈরি হয়।
মনের মধ্যে গতরাতের তিক্ত অভিজ্ঞতা যাবর কেটে চলেছি। অনেক প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে মনে, কাল রাতে চিন্তা করে যা সন্দেহ হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে যে অসিম আর অর্পিতা দুইজন না বরঞ্চ একজনই। হ্যাঁ মেয়ের গলায় কথা? সেটা প্রথমে আমারও খটকা লেগেছিলো যেরকম তুলির লেগেছিলো। মানে অর্পিতা সেজে অসিম আমার দুর্বলতা বের করে এনেছে, যাতে করে ও তুলির কাছে আমার স্বরুপ প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু এর পিছনে কি রয়েছে। আমিই তো ওকে নক করেছিলাম। ও আমাকে আগে থেকে চেনে সেটা হতে পারেনা।
অর্পিতার ছবি দেখেছি। কিন্তু ক্যামে ওদের দুজনকে কখনোই দেখিনি।
আমি একবার দুবার কথা বলেই নিজের সব উগরে দিয়েছি ওকে, মাথায় আসেনি যে কেউ এভাবে আমাকে মুরগি করতে পারে। অর্পিতা ইচ্ছে করেই আমার কাছে নিজের দুর্বলতার ইঙ্গিত দিয়েছিলো, যাতে আমি নিজের কামেচ্ছা ওর কাছে প্রকাশ করি। আমার বারা দেখতে (ইঙ্গিতে হলেও) আমাকে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলো। আমার নোংরা নোংরা কথায় ও কোনদিন আপত্তি করেনি, উদ্দেশ্য এইযে আমার এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আমাকেই ব্ল্যাক্মেল করা। তার মানে মালটা এরকম করে স্বামিদের ট্র্যাপে ফেলে।
ধীরে ধীরে আমার ধারনাগুলো দৃঢ় হতে থাকলো। তুলিও ওর বৌয়ের সাথে কথা বলতে চেয়ে পায়নি। যেই মাত্র তুলির ফোন নাম্বার আমি ওকে দিলাম, অর্পিতা প্রায় উধাও হয়ে গেলো, আর অসিম বেপরোয়া ভাবে তুলির সাথে প্রেম বিনিময় করতে শুরু করলো।
শেষদিন ওর সন্দেহ হয়েছিলো যে তুলির ওকে সেরকম পছন্দ না, তাই আবার অর্পিতা হয়েই আমাকে মেসেজ করে। অর্পিতার হাতেই যখন ফোন ছিলো তখন সেই ফোন থেকে অসিম প্রায় একই সময়ে ফোন করলো কি করে।
আমার খুব রাগ আর দুঃখ হচ্ছে যে ও এরকম ভাবে আমাকে মুরগি করলো। আরো রাগ হচ্ছে যে তুলি ওকে এতোটাই প্রশ্রয় দিয়েছে যে ও আমি থাকাকালিনই তুলিকে ফোন করছে। ও প্রথম থেকেই এইরকম মতলব এঁটেছিলো, না হলে ক্যামে দেখানো কেন সেভ করে রাখবে?
এখন আমি তুলিকে বোঝাবো কি করে? আর তুলির হাতে যদি আমার চ্যাটের সবকিছু চলে আসে তো কি যে করবে ও ভগবান জানে।
কেন এরকম ভুল করলাম। অতি উৎসাহের বশে দুটো কথায় ভরসা করে নিলাম, একবার যদি দেখা করতে চাইতাম হয়তো এই সমস্যা হোতো না।
বারোটা নাগাদ একবার চা এলো। এই সময় একটা ব্রেক। আমি আড়াল খুজে নিয়ে তুলিকে ফোন করলাম। বলার উদ্দ্যেশ্য যে ছেলেটাকে ফোন করে বলতে যে ওর সাথে না ওর বৌয়ের সাথে দেখা করা, ওর বোউয়ের মুখ থেকেই তো আরো ভালো জানা যাবে। দরকার হলে ওর বৌয়ের ফোন নাম্বার নিয়ে ওর সাথে কথা বলা। তাহলেই দুধ কা দুধ পানি কা পানি নিকাল যায়েগা।
তুলির ফোন এনগেজ। তাহলে কি ... আবার ... এতো বারন করা স্বতেও?
ওই শালাটার ফোনে ফোন করবো?
হ্যাঁ শালা এটাও এনগেজ। তুলিকে এত বারন করলাম তাও...।
কয়েক ঘন্টা ধরে আমি চেষ্টা করে গেলাম তুলির ফোন হয় বেজে যাচ্ছে। নাহয় ব্যাস্ত আসছে।
ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেলো। তুলিকে ফোন করলাম। ফোন সুইচ অফ।
ল্যান্ডলাইনে ফোন করলাম। কয়েকবার বেজে যাওয়ার পরে সুমিতা মাসি ফোন ধরলো। সুমিতা মাসি আমাদের বাড়িতে খাওয়া পড়া কাজ করে। পিয়ালের দেখাশোনা করে। খুব দরদি মহিলা।
ফোন ধরে জানালেন যে তুলি সন্ধ্যেবেলা বেরিয়েছে পিয়ালকে নিয়ে এখনো ফেরেনি।
রাত নটা বাজে ও কোথায় গেছে?
কে উত্তর দেবে।
তাহলে তুলি আমার কথা না শুনেই ওই শুয়োরের বাচ্চাটার সাথে দেখা করতে গেছে। ল্যাংটা যখন হয়েই গেছি তুলিকে আমি এই জন্যে ছেড়ে কথা বলবো না। যা হয় হবে। আমি সত্যি ওকে সব খুলে বলতাম। কিন্তু ও আমাকে সুযোগ না দিয়ে নিজের মতন চললো। সাথে আমার ছেলেটাকেও টেনে নিয়ে গেলো।