01-01-2019, 03:40 PM
বারান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছি। তুলি পিয়ালকে শান্ত করে ওর পাশে ঘুমিয়ে পরেছে। নিজের মনের মধ্যে ঝড় চলছে। তুলির এই শরীর আরেকজনও ভোগ করেছে। ভাবতে কেন এত কষ্ট হচ্ছে। বিচারক হিসেবে আমি কখোনো পক্ষপাত করিনি। আজ কেন তুলির বেলায় আমি দ্বিধায় আছি।
তুলির না হয় একজনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু আমি কি করেছি। ছেলে জন্মের দিনও বাড়ির ম্যাথরানিকে খাটে তুলেছি। আমার মতন নোংরা কেউ হতে পারে নাকি।
তবুও আমার মন মানতে চাইছেনা। তুলি হয়তো বিয়ের আগে বললে আমি তুলিকে বিয়েই করতাম না। কিন্তু কেন? এই কেনটাই আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। এত লিলাখেলা করলাম, আর ও যদি করে তাহলে দোষ।
মন বলছে, আমি তো শুধু শরীর ভোগ করেছি, সেই শরীরগুলো আমার কাছে মাংসের তাল ছিলো। শুধু ছিলো চামরায় চামড়ায় যুদ্ধ। কিন্তু আমি তো তুলিকেই ভালোবেসেছি। একটা মেয়ে কি করে পারে একজনের সাথে সম্পর্ক থাকতে থাকতে আরেকজনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে। একটা মেয়ে যখন আরেকটা পুরুষের সাথে সেচ্ছায় সজ্জা করে তখন তার মনের অবস্থা কি থাকে। তুলি যতই বলুক যে ও আরেকটা পুরুষকে দেহ দিয়েছে, ওযে দুঃসচরিত্র না সেটা পেপারে লেখা বেরোলেও আমি মানতে পারবো না। তাহলে সেটা কি সেচ্ছায় না অনিচ্ছায়? ওকে কি ''. করা হয়েছিলো। কে করেছিলো? কে ছিলো সেই পুরুষ। যাকে মুহুর্তের দুর্বলতায় তুলি শরীর দিয়ে দিলো। সেকি আমার থেকে থেকেও সুপুরুষ, আমার থেকে ভালোবেসেছিলো তুলিকে? আমার থেকেও যৌন ক্ষমতা তার বেশী, আমার থেকেও তার পুরুষাঙ্গ অনেক পুরুষালী। তুলির মন কি বলছিলো সেই সময়? যখন সেই পুরুষটা তুলির শরীর মন্থন করছিলো। তুলি কি আমার মত করে ওর গলা জড়িয়ে ধরেছিলো? দুপা দিয়ে সেই পুরুষের কোমর জড়িয়ে ধরে তার গতি নিয়ন্ত্রন করছিলো। তাকে উত্তেজিত করার জন্যে তার পুরুষাঙ্গ মুখে নিয়েছিলো?
জানিনা। সিগেরেটের পর সিগেরেট জলে যাচ্ছে। ঘরের ভিতর যেতে ইচ্ছে করছেনা। পিয়ালের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছেনা। ভয় লাগছে আমার, এই ঘটনা বিস্তারিত ভাবে শুনতে।
মনের চিন্তা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। মনও তো আমার পরিষ্কার নয়, বিজয়ার ওপরও তো ক্ষনিকের দুর্বলতা গ্রাস করেছিলো। সেই বেলা। আমি তো রিতু বোউদির সাথে যতটা রোমান্টিক ভাবে করেছি তা তুলির সাথে আজ পর্যন্ত করিনি। আজকের দিনটা ছাড়া। রিতুর গুদে মুখ দিলে, ঠোঁটে কিস করলে যদি আমার দোষ না হয় তাহলে তুলির কেন দোষ হবে অন্য পুরুষাঙ্গ মুখে নিলে। অন্য পুরুষের ঠোঁটে ঠোঁট রাখলে। তাহলে আমার বিচার কি এই দাঁড়ালো যে কি মেয়েরা পরকিয়া করুক, নিজের শরীরের ক্ষিদে অন্য পুরুষকে দিয়ে মেটাক ক্ষতি নেই, কিন্তু তাতে রোমান্স থাকতে পারবে না, ঠিক হয় যদি পিছন ঘুরে বসে অন্য পুরুষকে নিলে। তুলি কি ওই ভাবে করেছিলো ছেলেটার সাথে। মাথা ঘুরছে আমার। আমি বেতের চেয়ারের ওপর বসে পরলাম।
চিন্তা আমার সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
আসলে ব্যাপারটা সেরকম না, আবার ভাবতে শুরু করেছি। একটা মেয়ে কি পুরুষকে ভোগ করে? আমাদের সমাজে, পুরুষরাই মেয়েদের ভোগ করে। একটা পুরুষ বহুগামি হলেও সে সংসারি হতে পারে, বৌ বাচ্চাকে নিঃশর্ত ভালবাসতে পারে। কিন্তু একটা নারী বহুগামি হলে সে বেশ্যায় পরিনত হয়। সে পারেনা বহুপুরুষের প্রভাব থেকে ঘর সংসারকে আলাদা করতে। তার নিত্তনৈমিত্তিক জীবনে এই বহুগামিতার প্রভাব পরবেই। অথচ বহুগামি পুরুষ অতি সহজেই বাইরের জীবন দরজার বাইরে ফেলে আস্তে পারে।
পুরুষ ভোগ করে, নারী ভোগ্যপন্য। পুরুষ নারীকে ভোগ করে নিজের পুরুষাকার প্রকাশ করে, নিজের আধিপত্য কায়েম করে। নারী সেখানে ভোগ্যবস্তু হয়েই রয়ে যায় (ব্যাতিক্রম বহু থাকা স্বতেও) নিজেকে নিবেদন করা ছাড়া তার কিছু করার থাকেনা। এখানেই আমার আপত্তি। মেয়েদের বহুগামিতা আমি মেনে নিতে পারিনা। এই যে রিতুর থেকে দূরে সরে থাকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু একবার শরীর দিয়ে ও আমাকে ভুলতে পারেনি, আবার আমাকে ডেকে নিয়েছে। ও কি পারতো না অন্য কোন পুরুষের সাথে সঙ্গম করতে? এটাই পুরুষ আর নারীর মধ্যে মূল পার্থক্য। নারী শরীরের সাথে নিজের আত্মাটাও দেয়, আর পুরুষ শুধু শারীরিক অনুভুতির দাস। তাই পুরুষ, একটা মেয়ের সাথে সঙ্গম করে, বন্ধুমহলে অবলীলায় বলতে পারে “মালটা কি জিনিস রে মাইরি, এমন দেয় না মামা ...।’ পতিতাদের ব্যাপারটা আলাদা। ওদের কাছে যৌনতা সুখ না বরঞ্চ নিদারুন যন্ত্রনা।
তুলির সাথে এ কদিন কথা হয়নি। যদিও একসাথে পিয়ালকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছি আর সবকিছুই স্বাভাবিক ভাবেই এসেছে জীবনে এ কদিন। কিন্তু তুলির সাথে আমার কোন কথা হয়নি সেই স্বিকারোক্তির পরে। আজকে সেই বিস্তারিত বর্ননা শোনার দিন। পিয়াল সুস্থ হয়ে উঠেছে। আবার ওর আমাকে আর তুলিকে দেখে ফোকলা হাসি ফিরে এসেছে।
অন্ধকার বারান্দায় নিস্তব্ধ বসে আছি। মনের মধ্যে উথালপাথাল চলছে। তাহলে সুদিপা কি ঠিক বলেছিলো? কিন্তু এত মেয়ের খবর রাখি, তুলির বহুগামিতার খবর তো আমার কাছে আসিনি। আসবেই বা কি করে। কেউ কি সাহস পেত, আমাকে তুলির সন্মন্ধে বলার? পাপ্পুও না।
কি হবে আজ ভাবছি। শুনতে না চাইলেও আমাকে শুনতে হবে আমার স্ত্রীর ব্যভিচারের কথা। ও বলবে, কাঁদবে, নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত চাইবে, ক্ষমা চাইবে। আমাকে শুনতে হবে। ও বলে হাল্কা হবে কিন্তু সারাজিবন আমি এই যন্ত্রনা নিয়ে বেঁচে থাকবো। তুলিকে পাশে নিয়ে হাঁটতে আমার ভয় লাগবে, কখোন ওর আরেক দেহসঙ্গির মুখোমুখি হয়ে পরি। হয়তো আমি জানতেও পারবোনা যে আমার সামনেই দুজনের দেখা হোলো। তুলির মনে হয়তো সেই মুহুর্তগুলো আবার ভেসে উঠবে। সেই ছেলেটার হয়তো সেই মুহুর্তগুলো মনে পরে লিঙ্গোত্থান হবে। কিংবা ছেলেটা মনে মনে তুলির উলঙ্গ শরীরটা যাবর কাটবে, আর ওর যৌনাঙ্গগুলোর কথা মনে করে আমাকে করুনার চোখে, ব্যঙ্গের চোখে দেখবে যে ওর এঁঠো মাল আমি নিয়ে ঘুরছি।
কি করবো আমি? তুলিকে শাস্তি দেওয়ার যোগ্যতা কি আমার আছে? সময়ের সাথে সব ক্ষতেরই প্রলেপ পরে। এই ক্ষত কি মেরামত হবে?
বুঝতে পারলাম তুলি এসে বারান্দায় দারিয়েছে। চুপ করে আছে। কিছু বলার সাহস পাচ্ছেনা হয়তো। সারাদিন বাবার নজরদারির সামনে আমরা স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেছি এই কদিন। কিন্তু রাতের বেলা দুজন দুদিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি। পিয়ালের দেখভালে আমিও হাত লাগাই। তাই পিয়ালির অসুস্থতার সুবাদে তিক্ততাটা আর প্রকট হয়ে ওঠেনি এই কদিন। কিন্তু আজ দুজনকেই এই তিক্ত অভিজ্ঞতার সন্মুখিন হতে হবে।
‘ঘুমাবে না?’ তুলি প্রায় কাঁদো গলায় জিজ্ঞেস করলো।
‘তুমি ঘুমোও আমি ঘুম পেলে ঠিক ঘুমিয়ে পরবো।’
‘এরকম ভাবে কথা বলছো কেন?’
‘কি ভাবে তুমি আশা করো?’
‘অভি মানুষের জীবনে তো অনেক ভুল হয়, আমিও সেরকম করেছি, আমি জানি এর ক্ষমা হয় না, তবুও আমি তোমার সন্তানের মা, স্ত্রী হিসেবে আমাকে না দেখো কিন্তু একটা মা হয়ে আমি আমার অতিতের ক্রিতকর্মের জন্যে ক্ষমা চাইছি তোমার কাছে...।’ তুলির গলা কান্নায় বুজে এলো।
‘আমার জায়গায় তুমি হলে মেনে নিতে পারতে ব্যাপারটা? আচ্ছা তুমি বলোতো তোমাকে কি রেপ করা হয়েছিলো?’
তুলি চুপ করে রইলো। মাঝে মাঝে ফোঁপানোর আওয়াজ পাচ্ছি।
‘আমি কি করবো অভি তুমি বলে দাও, তুমি যদি বলো আমি এই মুহুর্তে তোমার জীবন থেকে সরে যাবো...।’
আমার বুকটা দুমরে মুচড়ে উঠলো। কি করবো আমি। এতটাও আমি চাইনা। কিন্তু অন্যপুরুষের ভোগের বস্তুকে আমি কিভাবে নিজের অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে মেনে নি। আমি চুপ করে রইলাম।
তুলি এসে আমার পা জড়িয়ে ধরলো। ওর চোখের জল আমার পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিচ্ছে।
নিজেকে খুব ছোট লাগছে। আমার সত্যিই যোগ্যতা নেই ওকে শাস্তি দেওয়ার। হে ভগবান আমাকে শক্তি দাও আজকের রাতটা।
‘আমাকে তুমি সব খুলে বলো’
‘আমি পারবো না...।’
‘তুলি আমার জানার দরকার তুমি কি পরিস্থিতিতে কার সাথে এসব করেছো?’
‘প্লিজ অভি তুমি জিজ্ঞেস কোরো না... আমি বলতে পারবোনা।’
আমি বিরক্ত হয়েই বললাম ‘তুমি করতে পেরেছো আর বলতে বাঁধা?’
তুলি চুপ করে রইলো কিছুক্ষন। তারপর বললো ‘রাজু... রাজুর সাথে’
আমি চুপ করে রইলাম। রাজু আর অন্য পুরুষের মধ্যে আমার পার্থক্য করার দরকার নেই, সে যেই হোক না কেন সে আমার বিবাহিতা স্ত্রীর শরীরটা ভোগ করেছে। তার কাছে আমি করুনার পাত্র, ব্যঙ্গের পাত্র।
‘শেষ পর্যন্ত সেই রাজু? তার মানে আমার সাথে সম্পর্ক থাকাকালিনই তুমি করেছো। এত লড়াই আমার ওর বিরুদ্ধে আর তুমি ওর কাছে ধরা দিলে?’
‘বিশ্বাস করো আমি চাইনি ...।’
‘তাহলে কি তোমাকে রেপ করেছে শুয়োরের বাচ্চাটা?’ আমি দাঁতে দাঁত চেপে গর্জন করলাম। তুলি কেঁপে উঠলো থরথর করে।
‘বলো বলো। এক্ষুনি আমি ওর গাঁঢ় মেরে ছেড়ে দেবো’
তুলি হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলো।
তুলির না হয় একজনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু আমি কি করেছি। ছেলে জন্মের দিনও বাড়ির ম্যাথরানিকে খাটে তুলেছি। আমার মতন নোংরা কেউ হতে পারে নাকি।
তবুও আমার মন মানতে চাইছেনা। তুলি হয়তো বিয়ের আগে বললে আমি তুলিকে বিয়েই করতাম না। কিন্তু কেন? এই কেনটাই আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। এত লিলাখেলা করলাম, আর ও যদি করে তাহলে দোষ।
মন বলছে, আমি তো শুধু শরীর ভোগ করেছি, সেই শরীরগুলো আমার কাছে মাংসের তাল ছিলো। শুধু ছিলো চামরায় চামড়ায় যুদ্ধ। কিন্তু আমি তো তুলিকেই ভালোবেসেছি। একটা মেয়ে কি করে পারে একজনের সাথে সম্পর্ক থাকতে থাকতে আরেকজনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে। একটা মেয়ে যখন আরেকটা পুরুষের সাথে সেচ্ছায় সজ্জা করে তখন তার মনের অবস্থা কি থাকে। তুলি যতই বলুক যে ও আরেকটা পুরুষকে দেহ দিয়েছে, ওযে দুঃসচরিত্র না সেটা পেপারে লেখা বেরোলেও আমি মানতে পারবো না। তাহলে সেটা কি সেচ্ছায় না অনিচ্ছায়? ওকে কি ''. করা হয়েছিলো। কে করেছিলো? কে ছিলো সেই পুরুষ। যাকে মুহুর্তের দুর্বলতায় তুলি শরীর দিয়ে দিলো। সেকি আমার থেকে থেকেও সুপুরুষ, আমার থেকে ভালোবেসেছিলো তুলিকে? আমার থেকেও যৌন ক্ষমতা তার বেশী, আমার থেকেও তার পুরুষাঙ্গ অনেক পুরুষালী। তুলির মন কি বলছিলো সেই সময়? যখন সেই পুরুষটা তুলির শরীর মন্থন করছিলো। তুলি কি আমার মত করে ওর গলা জড়িয়ে ধরেছিলো? দুপা দিয়ে সেই পুরুষের কোমর জড়িয়ে ধরে তার গতি নিয়ন্ত্রন করছিলো। তাকে উত্তেজিত করার জন্যে তার পুরুষাঙ্গ মুখে নিয়েছিলো?
জানিনা। সিগেরেটের পর সিগেরেট জলে যাচ্ছে। ঘরের ভিতর যেতে ইচ্ছে করছেনা। পিয়ালের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছেনা। ভয় লাগছে আমার, এই ঘটনা বিস্তারিত ভাবে শুনতে।
মনের চিন্তা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। মনও তো আমার পরিষ্কার নয়, বিজয়ার ওপরও তো ক্ষনিকের দুর্বলতা গ্রাস করেছিলো। সেই বেলা। আমি তো রিতু বোউদির সাথে যতটা রোমান্টিক ভাবে করেছি তা তুলির সাথে আজ পর্যন্ত করিনি। আজকের দিনটা ছাড়া। রিতুর গুদে মুখ দিলে, ঠোঁটে কিস করলে যদি আমার দোষ না হয় তাহলে তুলির কেন দোষ হবে অন্য পুরুষাঙ্গ মুখে নিলে। অন্য পুরুষের ঠোঁটে ঠোঁট রাখলে। তাহলে আমার বিচার কি এই দাঁড়ালো যে কি মেয়েরা পরকিয়া করুক, নিজের শরীরের ক্ষিদে অন্য পুরুষকে দিয়ে মেটাক ক্ষতি নেই, কিন্তু তাতে রোমান্স থাকতে পারবে না, ঠিক হয় যদি পিছন ঘুরে বসে অন্য পুরুষকে নিলে। তুলি কি ওই ভাবে করেছিলো ছেলেটার সাথে। মাথা ঘুরছে আমার। আমি বেতের চেয়ারের ওপর বসে পরলাম।
চিন্তা আমার সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
আসলে ব্যাপারটা সেরকম না, আবার ভাবতে শুরু করেছি। একটা মেয়ে কি পুরুষকে ভোগ করে? আমাদের সমাজে, পুরুষরাই মেয়েদের ভোগ করে। একটা পুরুষ বহুগামি হলেও সে সংসারি হতে পারে, বৌ বাচ্চাকে নিঃশর্ত ভালবাসতে পারে। কিন্তু একটা নারী বহুগামি হলে সে বেশ্যায় পরিনত হয়। সে পারেনা বহুপুরুষের প্রভাব থেকে ঘর সংসারকে আলাদা করতে। তার নিত্তনৈমিত্তিক জীবনে এই বহুগামিতার প্রভাব পরবেই। অথচ বহুগামি পুরুষ অতি সহজেই বাইরের জীবন দরজার বাইরে ফেলে আস্তে পারে।
পুরুষ ভোগ করে, নারী ভোগ্যপন্য। পুরুষ নারীকে ভোগ করে নিজের পুরুষাকার প্রকাশ করে, নিজের আধিপত্য কায়েম করে। নারী সেখানে ভোগ্যবস্তু হয়েই রয়ে যায় (ব্যাতিক্রম বহু থাকা স্বতেও) নিজেকে নিবেদন করা ছাড়া তার কিছু করার থাকেনা। এখানেই আমার আপত্তি। মেয়েদের বহুগামিতা আমি মেনে নিতে পারিনা। এই যে রিতুর থেকে দূরে সরে থাকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু একবার শরীর দিয়ে ও আমাকে ভুলতে পারেনি, আবার আমাকে ডেকে নিয়েছে। ও কি পারতো না অন্য কোন পুরুষের সাথে সঙ্গম করতে? এটাই পুরুষ আর নারীর মধ্যে মূল পার্থক্য। নারী শরীরের সাথে নিজের আত্মাটাও দেয়, আর পুরুষ শুধু শারীরিক অনুভুতির দাস। তাই পুরুষ, একটা মেয়ের সাথে সঙ্গম করে, বন্ধুমহলে অবলীলায় বলতে পারে “মালটা কি জিনিস রে মাইরি, এমন দেয় না মামা ...।’ পতিতাদের ব্যাপারটা আলাদা। ওদের কাছে যৌনতা সুখ না বরঞ্চ নিদারুন যন্ত্রনা।
তুলির সাথে এ কদিন কথা হয়নি। যদিও একসাথে পিয়ালকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছি আর সবকিছুই স্বাভাবিক ভাবেই এসেছে জীবনে এ কদিন। কিন্তু তুলির সাথে আমার কোন কথা হয়নি সেই স্বিকারোক্তির পরে। আজকে সেই বিস্তারিত বর্ননা শোনার দিন। পিয়াল সুস্থ হয়ে উঠেছে। আবার ওর আমাকে আর তুলিকে দেখে ফোকলা হাসি ফিরে এসেছে।
অন্ধকার বারান্দায় নিস্তব্ধ বসে আছি। মনের মধ্যে উথালপাথাল চলছে। তাহলে সুদিপা কি ঠিক বলেছিলো? কিন্তু এত মেয়ের খবর রাখি, তুলির বহুগামিতার খবর তো আমার কাছে আসিনি। আসবেই বা কি করে। কেউ কি সাহস পেত, আমাকে তুলির সন্মন্ধে বলার? পাপ্পুও না।
কি হবে আজ ভাবছি। শুনতে না চাইলেও আমাকে শুনতে হবে আমার স্ত্রীর ব্যভিচারের কথা। ও বলবে, কাঁদবে, নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত চাইবে, ক্ষমা চাইবে। আমাকে শুনতে হবে। ও বলে হাল্কা হবে কিন্তু সারাজিবন আমি এই যন্ত্রনা নিয়ে বেঁচে থাকবো। তুলিকে পাশে নিয়ে হাঁটতে আমার ভয় লাগবে, কখোন ওর আরেক দেহসঙ্গির মুখোমুখি হয়ে পরি। হয়তো আমি জানতেও পারবোনা যে আমার সামনেই দুজনের দেখা হোলো। তুলির মনে হয়তো সেই মুহুর্তগুলো আবার ভেসে উঠবে। সেই ছেলেটার হয়তো সেই মুহুর্তগুলো মনে পরে লিঙ্গোত্থান হবে। কিংবা ছেলেটা মনে মনে তুলির উলঙ্গ শরীরটা যাবর কাটবে, আর ওর যৌনাঙ্গগুলোর কথা মনে করে আমাকে করুনার চোখে, ব্যঙ্গের চোখে দেখবে যে ওর এঁঠো মাল আমি নিয়ে ঘুরছি।
কি করবো আমি? তুলিকে শাস্তি দেওয়ার যোগ্যতা কি আমার আছে? সময়ের সাথে সব ক্ষতেরই প্রলেপ পরে। এই ক্ষত কি মেরামত হবে?
বুঝতে পারলাম তুলি এসে বারান্দায় দারিয়েছে। চুপ করে আছে। কিছু বলার সাহস পাচ্ছেনা হয়তো। সারাদিন বাবার নজরদারির সামনে আমরা স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেছি এই কদিন। কিন্তু রাতের বেলা দুজন দুদিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি। পিয়ালের দেখভালে আমিও হাত লাগাই। তাই পিয়ালির অসুস্থতার সুবাদে তিক্ততাটা আর প্রকট হয়ে ওঠেনি এই কদিন। কিন্তু আজ দুজনকেই এই তিক্ত অভিজ্ঞতার সন্মুখিন হতে হবে।
‘ঘুমাবে না?’ তুলি প্রায় কাঁদো গলায় জিজ্ঞেস করলো।
‘তুমি ঘুমোও আমি ঘুম পেলে ঠিক ঘুমিয়ে পরবো।’
‘এরকম ভাবে কথা বলছো কেন?’
‘কি ভাবে তুমি আশা করো?’
‘অভি মানুষের জীবনে তো অনেক ভুল হয়, আমিও সেরকম করেছি, আমি জানি এর ক্ষমা হয় না, তবুও আমি তোমার সন্তানের মা, স্ত্রী হিসেবে আমাকে না দেখো কিন্তু একটা মা হয়ে আমি আমার অতিতের ক্রিতকর্মের জন্যে ক্ষমা চাইছি তোমার কাছে...।’ তুলির গলা কান্নায় বুজে এলো।
‘আমার জায়গায় তুমি হলে মেনে নিতে পারতে ব্যাপারটা? আচ্ছা তুমি বলোতো তোমাকে কি রেপ করা হয়েছিলো?’
তুলি চুপ করে রইলো। মাঝে মাঝে ফোঁপানোর আওয়াজ পাচ্ছি।
‘আমি কি করবো অভি তুমি বলে দাও, তুমি যদি বলো আমি এই মুহুর্তে তোমার জীবন থেকে সরে যাবো...।’
আমার বুকটা দুমরে মুচড়ে উঠলো। কি করবো আমি। এতটাও আমি চাইনা। কিন্তু অন্যপুরুষের ভোগের বস্তুকে আমি কিভাবে নিজের অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে মেনে নি। আমি চুপ করে রইলাম।
তুলি এসে আমার পা জড়িয়ে ধরলো। ওর চোখের জল আমার পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিচ্ছে।
নিজেকে খুব ছোট লাগছে। আমার সত্যিই যোগ্যতা নেই ওকে শাস্তি দেওয়ার। হে ভগবান আমাকে শক্তি দাও আজকের রাতটা।
‘আমাকে তুমি সব খুলে বলো’
‘আমি পারবো না...।’
‘তুলি আমার জানার দরকার তুমি কি পরিস্থিতিতে কার সাথে এসব করেছো?’
‘প্লিজ অভি তুমি জিজ্ঞেস কোরো না... আমি বলতে পারবোনা।’
আমি বিরক্ত হয়েই বললাম ‘তুমি করতে পেরেছো আর বলতে বাঁধা?’
তুলি চুপ করে রইলো কিছুক্ষন। তারপর বললো ‘রাজু... রাজুর সাথে’
আমি চুপ করে রইলাম। রাজু আর অন্য পুরুষের মধ্যে আমার পার্থক্য করার দরকার নেই, সে যেই হোক না কেন সে আমার বিবাহিতা স্ত্রীর শরীরটা ভোগ করেছে। তার কাছে আমি করুনার পাত্র, ব্যঙ্গের পাত্র।
‘শেষ পর্যন্ত সেই রাজু? তার মানে আমার সাথে সম্পর্ক থাকাকালিনই তুমি করেছো। এত লড়াই আমার ওর বিরুদ্ধে আর তুমি ওর কাছে ধরা দিলে?’
‘বিশ্বাস করো আমি চাইনি ...।’
‘তাহলে কি তোমাকে রেপ করেছে শুয়োরের বাচ্চাটা?’ আমি দাঁতে দাঁত চেপে গর্জন করলাম। তুলি কেঁপে উঠলো থরথর করে।
‘বলো বলো। এক্ষুনি আমি ওর গাঁঢ় মেরে ছেড়ে দেবো’
তুলি হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলো।