27-12-2025, 06:04 PM
।। এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান।।
জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে যে নিজের একান্ত ব্যাক্তিগত চাওয়াগুলো হঠাৎই সামনে চলে আসে। নিজের কোন প্রচেষ্টা ছাড়াই। অনামিকার সাথেও বোধহয় এমনি হলো...... জাস্ট মিরাকেল। এভাবে যে ও রাজুকে আবিষ্কার করবে সেটা ভাবে নি। নিজের আবিষ্কার নিয়ে ওর নিজেরই সন্দেহ হচ্ছিলো...... সত্যি কি এভাবেই রাজুকে আবিষ্কার করার কথা ছিলো? কত জটিল পথ ভেবেছিলো ও। এতোটা সরল তো ভাবে নি।
আজ রবিবার, ছুটি ছিলো। ফুলমণিই ওকে বলে, " দিদি, চল তুকে একটা ভালো জায়গার থিকে ঘুরায় লিয়ে আসি। "
এখানে আসার পর কাজ আর বাড়ির বাইরে খুব বেশী কোথাও যায় নি অনামিকা। যাওয়ার কথা মনেও হয় নি। এই পাহাড়ী ছোট্ট গ্রামের সৌন্দর্য্য, এখানকার মানুষের সরল জীবনযাত্রা সব অভাব পুরোণ করে দেয়।তবুও ফুলমনির প্রস্তাব খারাপ লাগে নি। এমনিতে এখন শীত পড়তে শুরু করে দিয়েছে। চারিদিক রোদ ঝলমলে।এর মধ্যে একটু বেড়াতে যেতে মন্দ লাগবে না৷
" কোথায় যাবি? " চায়ের কাপে চুমুক মেরে বলে অনামিকা।
" হুই যে স্কু*লের মাঠে দাঁড়ায়ে দূরে পাহাড়টা দেখা যায়...... উখানে একটা মন্দির আছে....অনেক লোক আসে..... " ফুলমনি উৎসাহের সাথে বলে।
স্কু*লের মাঠে দাঁড়িয়ে বেশ কটা পাহাড় দেখা যায়, কাছে দূরে, এর মধ্যে কোনটার কথা বলছে সেটা বুঝতে পারে না অনামিকা। তবে ঘোরা নিয়ে কথা। হবে কোন একটা।
অনামিকারো ভালো লাগে শুনে। আজকের দিনটা একটু অন্যভাবে কাটানো যাবে। সকালে রুটি আর আলু দিয়ে তরকারী খেয়ে দুজনে বেরিয়ে পড়ে। জায়গাটা খুব একটা কম দূর না। গাড়িতে আঁকা বাঁকা পথ বেয়ে প্রায় আধ ঘন্টা পর পাহাড়ের নীচে এসে উপস্থিত হয়। এটা বোধহয় সদ্য টুরিস্ট স্পট হিসাবে যুক্ত হয়েছে। অনেক গাড়ী আর শহুরে লোক দেখা গেলো। শীতের শুরুতেই পিকনিকের আমেজ নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে সবাই। ফোনে ছবি তুলতে ব্যাস্ত। নীচে অনেক দোকানপাট হয়েছে। সেখানে চা, সিগারেট, প্যাকেট খাবার এর দোকান সারি সারি। সেসব পেরিয়ে পাহাড়ের গা কেটে সিঁড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় উপরে। যদিও সিঁড়িগুলো বেশ এবড়ো খেবড়ো, পাথরের সিঁড়ি অবশ্য এমনি হয়। সাবধানে না উঠলে পা পিছলাতে টাইম লাগবে না। বর্ষাতে একটু বিপজ্জনক হলেও এখন শুকনো। তবুও ভয় একটা থেকেই যায়।
অনামিকা আজ একটা সাদা সিল্কের শাড়ী পড়েছে। যদিও শাড়ী পড়ে সিঁড়ি ভাঙা কঠিন। কিন্তু আগে মনে নেই। এখন এভাবেই যেতে হবে। কুর্তি পাজামা পরে আসলে ভালো হতো কিংবা চুড়িদার। এমনিতেও ও সাজে না এখন। খোলা চুল আর কপালে একটা টিপ ছাড়া আর কিছু নেই। তাতেও ওর দিকে তাকানোর লোকের অভাব নেই চারিদিকে।
সিঁড়ি যেখানে শুরু হয়েছে সেখানে সাইবোর্ডে বড়ো বড়ো করে লেখা.... " যোগীশ্বর শিব মন্দির " নীচে সিঁড়ির ধাপের সং্খ্যা দেওয়া.... ৬৩০ সিঁড়ি ভাঙলে পৌছানো যাবে ওই মন্দিরে। তার মানে খুব একটা কম সময়ের ব্যাপার না। যতটা সোজা ভেবেছিলো তার থেকে অনেক বেশী।
গাড়ির টাকা মিটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতেই অনামিকার চোখ স্থির হয়ে যায়। দোকানগুলোতে অনেক লোকের ভীড়। সেই ভীড়ের মধ্যে একজনের দিকে চোখ আটকে যায়। স্বল্প সময়ের জন্য নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারে না। একটা কালো ট্রাউজার, সাদা গেঞ্জি আর কালো জ্যাকেটে রাজু সামনের একটা দোকানে সিগারেট কিনছে। ওর থেকে বেশী দূরে না কিন্তু অন্যদিকে তাকিয়ে থাকায় রাজু ওকে দেখতে পাচ্ছে না। অনামিকা থমকে যায়। পা যেনো আটকে যায় ওর....... রাজুর সাথে চেনা কাউকে দেখে না, পল্লবীকে কোথাও খুঁজে পায় না। অনামিকা কি করবে ভেবে পায় না। ইচ্ছা করছে এক ছুটে গিয়ে রাজুকে জড়িয়ে ধরতে.....কতো মাস..... কতোগুলো দিন পর ওকে দেখছে। একবার ভাবে ঠিক দেখছে তো? না..... ওটা রাজুই, দ্বিধার কোন জায়গা নেই এখানে। কি করবে ও? ছুটে যাবে রাজুর কাছে?
কিন্তু কোথায় যেনো বাধা আসছে। অনামিকা চেয়েও পারছে না রাজুর কাছে ছুটে যেতে। ফুলমনি অনামিকাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়। দিদি দোকানে একটা ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে। ফুলমনি ব্যাপারটা বুঝতে পারে না, ও ডাক দেয়...
" দিদিমনি...... দাঁড়ায় গেলি যে? আয়..... উদিকে কি দেখিস? "
ফুলমনীর গলা তুলে এমন ভাবে বলে যে আশে পাশের লোক ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। রাজুও সিগারেট ঠোঁটে চেপে ধরে ঘাড় ঘোরায়। সাথে সাথে সিগারেটটা খসে পড়ে ওর মুখ থেকে। যেনো ভুত দেখেছে এমন ভাবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। অনামিকার চোখ ফেটে জল আসছে। অভিমানে..... না ভালোবাসায় সেটা জানে না। রাজুর চোখে চোখ। দুজনার মধ্যে ২০ ফুটের দূরত্ব। দুজনেই নিশ্চুপ। কে আগে এগোবে জানা নেই। বাকরুদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে দুজনে।
রাজুর হৃদয়ে জোয়ার। রক্ত যেনো সমুদ্র তরঙ্গের মত ছলাৎ ছলাৎ শব্দে আছড়ে পড়ছে। অভিমান, রাগ, সব ধুলোয় গড়াগড়ি খাচ্ছে। যে ভয়ে ও এতোদিন একটা ফোনও করে নি, সেইদিন যে এমন হঠাৎ করে ওর সামনে এসে আঁড়াবে সেটা বুঝতে পারে নি। অনামিকা স্থির চোখে তাকিয়ে ওর দিকে। চোখ ভেজা। সেখানে কোন ঘৃণা নেই, প্রশ্ন নেই, রাগ নেই...... আছে একটা অভিমান......
ফুলমনি অবামিকার কনুই ধরে টানে, " আরে আয়....., উদিকে দের হয়ে যাবে,। "
সম্বিৎ ফেরে অনামিকার। রাজুর থেকে চোখ সরিয়ে নেয়। ফুলমনির হাত ধরে সিঁড়ি ভাঙতে থাকে। মন চাইছে একবার ওকে ডাকুক রাজু। একবার থামাক অনামিকাকে। সব রাগ, সব অভিমান ভুলে যাবে ও। সামনে উঠতে গিয়ে হোঁচট খায় অনামিকা..... জলে ঝাপসা দৃষ্টি। পাথরের তেলতেলে গায়ে পা পড়ে হুমড়ি খেয়ে ব্যালেন্স হারায়। পাশে পড়ে যেতে গিয়েই কেউ ওকে ধরে নেয়। কনুই ধরে অনামিকার সম্ভাব্য পতন রোধ করে।
ফুলমনি ওর আগে উঠছিলো। ও চেঁচিয়ে ওঠে, " আহা..... দেখে.... দেখ.... এখোনি হাত পা ভাঙতি তুই.... ভাগ্যি, দাদাবাবু তুকে সামলিয়ে লিলো। "
অনামিকা " থ্যানক ইউ " বলে ঘুরে তাকায়। কখন যে রাজু ওর পিছু নিয়েছে বুঝতে পারে নি। করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাজু। ওর চোখের ভাষা সব অপরাধের ক্ষমা চাইছে। কিন্তু ও জানে না অনামিকা কবেই ওকে ক্ষমা করে দিয়ে বসে আছে।
" তুমি এখানে? " কাঁপা ঠোঁটে রাজুর কন্ঠ থেকে শব্দ বেরিয়ে আসে।
" কেনো? আসতে নেই? " অনামিকা চোখ সরিয়ে নেয়।
রাজু উত্তর খুঁজে পায় না। ওর কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না। শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে। যে মায়ার বাঁধন থেকে এই কমাসে নিজেকে দূরে সরিয়ে ভেবেছিলো ও মুক্ত হয়ে গেছে। মাত্র দুই মিনিটের সাক্ষাৎ ওকে আবার সেই নাগপাশে আষ্টে পিষ্টে বেঁধে ফেলেছে। অনামিকার সেই হরিনীর মতো চোখ, মায়াভরা দৃষ্টি, পাতলা ঠোঁট, কুমোরের হাতে বানানো মাটির মূর্তির মত নিঁখুত শরীরি বক্রতা...... সর্বপরি দুই চোখে সেই অকৃত্তিম ভালোবাসা রাজুকে বেঁধে ফেলেছে।
ফুলমনী অবাক চোখে অনামিকা আর রাজুকে দেখছিলো। এবার ও আর না বলে থাকতে পারে না, " তুই এই দাদাবাবুকে চিনিস বটে? "
অনামিকা কথার উত্তর দেয় না। অনেক কথা বলতে যেয়েও ঠোঁট নড়ে না। শুধু বলে, " কোথায় আছিস এখন? আমার কাছে এতো কষ্ট হচ্ছিলো তোর? "
রাজু মাথা নীচু করে। কোন একদিন এইসব কথা ওকে শুনতে হবে সেটা জানতো।
" আমি তো তোমার কষ্টের কথা ভেবেই ছেড়ে গেছিলাম...... তুমি তো ভালোই ছিলে, আমি আসার পরেই তো তোমাকে শুধু শুধু কষ্ট দিতাম..... " রাজু কোনোমতে বলে।
" খুব পাকা হয়ে গেছিস বল? সব বুঝে গেছিস? তাহলে এটা কেনো বুঝিস নি কে তোকে নিজের প্রাণের থেকেও ভালোবাসে? ..... বল? " অনামিকা রাজুর গালে হাত রাখে।
" আমি জানি না কাকিমা, কোনটা ঠিক আর ভুল...... এটুকুই জানি যে তোমার কাছে থাকলে আমি তোমাকে ভাগ করতে পারি না........ কারো সাথেই না, সেটা সম্ভব না বলেই কষ্ট হয়...... তাই তো পালিয়ে বাঁচি। "
" এখানে আর বেশী কথা না....... শুধু এটুকু শোন, তুই ছাড়া আর কারো জন্যে আমার ছিঁটেফোঁটাও ভালোবাসা নেই...... আমি সব কষ্ট মেনে নিতে পারবো, শুধু আমার থেকে দূরে চলে যাস না। " অনামিকা রাজুর আরো কাছ ঘেঁষে আসে।
রাজু কিছু বলে না। শুধু সজল চোখে তাকিয়ে কাকিমার হাত চেপে ধরে।
" আরে আচ্ছা লোক আছিস তুরা..... ইখানে মাঝপথে দাঁড়ায়ে কেউ কথা বলে বটে? " ফুলমনি বিরক্তিনপ্রকাশ করে।
ওদের দুজনেরই জ্ঞান ফেরে। তাই তো,....... সিঁড়ির মাঝে দাঁড়িয়ে ওরা।
" কিরে, উপরে যাবি তো? নাকি কারো জন্যে অপেক্ষা করছিস? " অনামিকার কথায় রাজু মাথা নাড়ে। কারো জন্যে অপেক্ষা করচগে না ও।
মাঝের কয়েক মাসের বিরহ যেনো একেবারে ভ্যানিস হয়ে গেছে। অনামিকার মনে আর কোন দ্বিধা দ্বন্দ নেই। সব জড়তা কেটে গিয়ে সাবলিল হয়ে উঠেছে ও। রাজুর হাত চেপে ধরে ধীরে ধীরে পা বাড়ায় উপরের দিকে।
" জানিস, কত ভেবেছি, তোর সাথে দেখা হলে কিভাবে কথা বলবো? আদৌ বলবো কিনা..... আর আজ দেখ, অভিমান ধরেই রাখতে পারলাম না....... " হেসে ওঠে অনামিকা।
রাজু কিছু না বলে শক্ত করে অনামিকার হাত চেপে ধরে। কাকিমা স্বছ্বন্দ হলেও দুজনের মাঝে এখনো হাজার প্রশ্ন...... রাজুর মনে তো বটেই..... কাকিমা এভাবে এখানে কেনো? কাকুই বা কোথায়? রাজুর জীবনে যেমন এর মধ্যে অনেক কিছু ঘটে গেছে তেমন কি অনামিকার জীবনো উথাল পাথাল হয়ছে? অনামিকা নিজে থেকে না বললে কি জিজ্ঞেস করা ঠিক?
কদিন ধরেই মন ভালো না রাজুর। সেই সাথে পল্লবীরও। এখানে কাজ প্রায় শেষ পল্লবীর। আর কয়েকদিনের মধ্যেই ট্রান্সফার হয়ে যাবে। মন খারাপ লালীরও। এমন দিদি আর কোথায় পাবে ও? রাজু আর পল্লবীকেও আলাদা হতে হবে। কোথায় যাবে রাজু? জানে না। কাকিমার কাছে ফিরে যাবে? যাওয়ার মতো আর কেউ তো নেই ওর। আর সেখানেই বা কোন মুখ নিয়ে ফিরবে? নিজেই তো এতোদিন ধরে পাথর ফেলে ফেলে সেই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে? তাহলে কি একাকী আবার ফিরে যাবে কলকাতার সেই ফ্লাটে? ইচ্ছা না থাকলেও সেটাই একমাত্র পথ।
আজ সকালে কাজে বেরোনোর আগে পোষাক পাল্টাচ্ছিলো পল্লবী। লালী বাড়িতে ছিলো না। রাজু বাইরে থেকে ভেজানো দরজা খুলে ভিতরে ঢোকে। ওর দিকে পিছন দিয়ে আয়নায় দেখে নিজের ব্রা আর প্যান্টি ঠিক করছে পল্লবী। রাজু আয়নায় পল্লবীর অর্ধনগ্ন রুপ দেখতে পায়। রাজুকে দেখার পরেও নিজেকে ঢাকে না পল্লবী। দুজনের মাঝে এখন আর কোন গোপনীয়তা নেই। ওর শরীরের কোনা কোনা রাজুর মুখস্ত। তেমনি রাজুর শরীরের প্রতিটি অংশ চেনে প্পল্লবী।
রাজু ওর দিকে না তাকিয়ে সোফায় বসে পড়ে।
" কিরে, কি হলো? মন খারাপ? " পল্লবী বলে।
" তোমার কি খুব ভালো? " রাজু তীর্যক ভাবে উত্তর দেয়।
" দেখ রাজু, জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না..... তোকে এবার নিজের পড়াশোনাটা শেষ করতে হবে, তারপর আমি তোর জন্য কিছু করতে পারবো..... আমরা দূরে যাচ্ছি কিন্তু সারা জীবনের জন্য হারিয়ে তো যাচ্ছি না। " পল্লবীর গলা ধরে আসে। কষ্ট ওর অনেক বেশী হচ্ছে। কিন্তু ও বড়ো হয়ে ভেঙে পড়তে পারে না। সেটা শোভনীয় না। মনের কষ্ট চেপে রাজুকেই স্বান্তনা দিতে হবে। এই পৃথীবিতে কেউ নেই রাজুর। পল্লবীর আশ্রয় ছেড়ে যেতে হবে এবার। এই একাকীত্ত ছেলেটাকে পালটে দেবে না তো? ভয় করে পল্লবীর।
" আমি পারি না তোমাদের সংস্থায় যোগ দিতে? ...... কি হবে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে? সরকারী চাকুরে হয়ে? আমার ভালো লাগে না। '
" পাগল ছেলে...... এখানে ঢুকতেও মিনিমান কোয়ালিফিকেশন লাগে রে..... আমি সেটাই করতে বলছি তোকে। "পল্লবী হেসে ফেলে"
রাজু উঠে আসে। পিছন থেকে পল্লবীকে হড়িয়ে ধরে। ওর খোলা পেটে দুই হাত রাখে। তারপর কাঁধে চিবুক রেখে বলে.... " একুবার দূরে চলে গেলে আর যদি দেখা না হয় কোনদিন? "
থমকে যায় পল্লবী, বুকের মধ্যে ধড়াস করে ওঠে.... ও তো রাজুকে পড়তে পাঠাচ্ছে নিজের কষ্ট চাপা দিয়ে, এটা তো ভাবে নি সেখানে যদি রাজু নতুন কারো প্রেমে পড়ে ওকে ভুলে যায়? আর না ফেরে ওর কাছে? এতোবছর কাউকে ছেড়ে তো এমন উথাল পাথাল হয় নি। আজ কেনো হচ্ছে? ও কি রাজুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে বিবাহিত জীবন কাটানোর? সেটা কি সম্ভব? রাজু ওর থেকে কত ছোট...... ওর যদি কাল ভুলে যায়? কতই বা বয়স ওর? এখন যে আবেগ আছে সেটা কি দুই তিন বছর পরেও থাকবে? কেনো এভাবে ওকে নিজের সাথে জড়াতে গেলো পল্ললবী? না জড়ালেই ভালো হতো।
রাজুর হাত চেপে ধরে ওর দিকে ঘাড় ঘোরায় পল্লবী, " তাহলে এইকটা দিন মনে রাখিস....... আর মনে রাখিস পল্লবীদি সারা জীবনের জন্য তোর, যেদিন চাইবি সেদিনই আসবি...... আমি রাগ করবো না। "
রাজুর মনটা দূর্বল হয়ে আসে। ও পল্লবীর গলায় ঘাড়ে মুখ ঘষতে থাকে। পল্লবীদির শরীর ওর শরীরের সাথে মিশে গেলেই নিজের মধ্যে এই দ্রুতো জেগে ওঠার উপরে কোন নিয়ন্ত্রন নেই ওর। পল্লবীর গায়ের গন্ধেই ওর স্নায়ু উদ্দীপীত হয়ে ওঠে৷ রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়। এখন এটাই জ্বালা। যখন তখন পল্লবীর শরীরকে চায়। বাধা দেয় না পল্লবী বেশীরভাগ সময়েই। নিজের শরীর না চাইলেও রাজুর এই পাগলামীর কাছে সঁপে দেয় নিজেকে। মেয়েদের চাওয়া পাওয়া নিয়ে রাজু এখনো অনভিজ্ঞ। ও ভাবে ওর মতই পল্লবীও যেকোন সময় সেক্স চাইতে পারে। এই ব্যাপারগুলো বুঝতে সময় লাগবে।
" কি করছিস? এখন না...... কাজের চাপ আছে, লক্ষিটি। " পল্লবী ওর হাত নিজের পেটের সাথে চেপে রেখে বলে। সরিয়ে দেয় না।
রাজু শুনেও শোনে না। পল্লবীর ঘাড়ে ঠোঁট ঘষে চলে। ডানহাত পল্লবীর পেট থেকে নেমে যায় প্যান্টির ভিতরে। পল্লবীর আলগা বাধা কাজ করে না। বাঁ হাতে ব্রেসিয়ার তুলে তালুবন্দী করে ওর একটা স্তন। পল্লবীর নিতম্বের খাঁজে রাজুর শিথিল লিঙ্গ ধীরে ধীরে শক্ত হচ্ছে। পল্লবী খুব ভালো লাগে এই সময়টা উপলব্ধি করতে। নিজের স্পর্শে কারো এভাবে জেগে ওঠে অনুভব করতে বেশ রোমাঞ্চ লাগে। নিজের ব্যাস্ততার মাঝেও রাজুকে সরাতে ইচ্ছা করছে না। রাজুর ওর যোনীর ভিতরে পৌছে গেছে....... দ্রুতো নিপুণ হয়ে উঠছে ওর হাত। বাঁ স্তন ওর হাতের চাপে নিজের উত্তেজনাকে সারা শরীরে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
চোখ বুজে ফেলে পল্লবী। এতো ভালো লাগা কেনো আগে পায় নি? সেক্স করার ইচ্ছা এখন না থাকলেও রাজুর এই শরীর ঘাঁটাটা বেশ তৃপ্তিদায়ক। ও বাধা দেয় না।
" রাজু....."
" হুঁ" নিজের আঁটে পল্লবীর কানের নীচে আলতো কামড় দিতে দিতে বলে।
" তুই আমাকে ভালোবাসিস? না শুধু আমার শরীর কে? "
এটা কেমন প্রশ্ন? শরীর ছাড়া আবার মানুষ হয় নাকি? শরীর থাকলে তবেই তো মনের ব্যাপার আসছে। পল্লবীদি সেক্সি আর সুন্দরী....... যৌনতার ব্যাপারে কোন লুকোচুরি নেই...... রাজুর যৌনতার পাঠ তো পল্লবীদির কাছেই......
ও কিছু না বলে চুপ থাকে।
" জানিস মেয়েরা যাকে ভালোবাসে তাকে ছাড়া তৃপ্ত হয় না....... এই দেখ না তোকে আমি ফেরাতে পারি না, তোর একটু ছোঁয়াতেই আমার শরীর সাড়া দেয়...... বুঝলি কিছু? " পল্লবী নিজের শরীরে উত্তেজনার জোয়ারে ভাসতে ভাসতে বলে।
রাজুর কোন কথায় মন নেই। ও পল্লবীকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ওর একটা স্তনের বোঁটা মুখে নিয়ে নেয়। পল্লবীর হাত খুঁজে বেড়াচ্ছে রাজুর লিঙ্গ....... পাজামার আড়ালে থাকা কঠিন লিঙ্গ সহজেই ধরা দেয় প্ললবীর হাতে।
রাজুকে থামায় পল্লবী, " দাঁড়া..... "
রাজু থমকে যায়। পল্লবী ওর পায়ের কাছে বসে রাজুর পাজামা নামিয়ে আনে গোড়ালির কাছে। সামনে ফনা তুলে আছে রাজুর উত্তেজিত লিঙ্গ..... হালকা নড়ছে। পল্লবী দ্রুতো সেটার গোড়া মুঠ করে ধরে মাথাটা ঢুকিয়ে নেয় নিজের মুখে। একেবারে বাচ্চা মেয়ের ললিপপ চোষার মত করে মাথা নাড়িয়ে নিজের মুখের ভিতর লালায় ভিজিয়ে ফেলে। পল্লবীর গরম লালার স্পর্শে রাজুর শরীরের সব রক্ত যেনো জমা হয় ওর লিঙ্গে। এক আদিম স্বর্গীর অনুভূতি। এর কোন বিকল্প নেই।
রাজু নিজের অজান্তেই পল্লবীর মাথা চেপে ধরে। চোখ বন্ধ করে পল্লবীর মুখে নিজেকে অনুভব করে। পল্লবীর জীভের ক্রমাগত সঞ্চালনে শরীর শিহরিত হয়ে উঠছে... বীর্য্য ধারা ক্রমশ এগিয়ে আসছে.....।
কে বলেছে শুধু যোনীতেই সব সুখ? পল্লবীর এই মুখ মেহন কোনভাবেই যোনীতে সঙ্গমের থেকে কম উতেজক না।
সশব্দে পল্লবীর ফোনটা বেজে উঠতেই প্পল্লবী ছিটকে ওঠে, " ইশ.....আজ কলকাতা থেকে সিনিয়ার অফিসার আসবে..... মনে হয় চলে এসেছে। "
চুড়ান্ত পর্যায়ে থেমে গিয়ে রাজু নগ্ন অবস্থাতেই সোফায় বিসে পড়ে। পল্লবী ফোনটা ধরে কারো কাছে একটু সময় চায়। তাড়াতারী পোষাক পরে রাজুকে কাছে টেনে নেয়, " সরি..... তোলে এভাবে মাঝপথে ছাড়ার ইচ্ছা ছিলো না..... উপায় নেই। "
পল্লবী বেরিয়ে যায়। রাজু পোষাক পরে বাইরে আসে। মাথাটা খুব ধরে আছে। লালীর কোন পাত্তা নেই কোথাও। ঘড়িতে সাড়ে নটা বাজে। চারিদিকে প্রাক শীতের আমেজ।
" এ দাদাবাবু...... কোথাও যাচ্ছিস নাকি তুই? "
লালীর কথা শুনে তাকিয়ে দেখে লালী একটা ভাগ হাতে হেঁটে আসছে। মনে হয় হাটে শব্জি আনতে গেছিলো। ও ব্যাগটা নামিয়ে রেখে রাজুর দিকে তাকিয়ে হাসে।
" এখানে কোথাও সারাদিন কাটানোর ভালো জায়গা আছে রে? " রাজু প্রশ্ন করে, " মানে কোন মন্দির টন্দির? "
" আচ্ছা তুই সারাদিন কাটাবি তো আমি রান্নাটা করবো কার জন্যে বল সেটা? " লালী চোখ পাকায়।
" তুই খাবি...... আমি জানি না, মেলা না বকে বল কাছাকাছি কোথায় যাওয়া যায়......। " রাজু বিরক্ত হয়।
শেষে লালীর কথামতই বেড়িয়ে পড়ে। আসলে কিছু ব্যাপার কপালের লিখন অনুযায়ীই হয়। না হলে কাকিমাও একই দিনে কিভাবে এখানে আসবে? নেহাত সংযোগ? নাকি কেউ ওকে কাকিমার সাথে মেলাতে চায়? পল্লবীকে না জানিয়েই চলে এসেছে রাজু। জানলে রাগ করবে পল্লবী।
Deep's story


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)