13-12-2025, 09:39 PM
(This post was last modified: 13-12-2025, 09:40 PM by শূন্যপুরাণ. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
(৩)
রাহাতের বাবা রাশেদ হাসানের সঙ্গে সুলতানার যখন বিয়ে হয়েছিল, তখন তার বয়স মাত্র ১৬ বছর। তিনি মফস্বল শহরের মেয়ে। রাহাতের বাবা প্রথম দিন কনে দেখতে এসেই বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে উঠেছিলেন। পাত্র ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন অফিসার। তাই পরিবারও প্রবল উৎসাহে একটি আন্ডারএজড মেয়েকে তুলে দিয়েছিল স্বামীর ঘরে। তাদের যুক্তি ছিল—এমনিতেই সুলতানা সুন্দরী মেয়ে, তার ওপর দেশের অবস্থাও ভালো না; শেষে যদি কোনো অঘটন ঘটে যায়। তার চেয়ে বিয়ে দিয়ে দেওয়াই ভালো।
বিয়ের পরের বছরই রাহাতের জন্ম। রাশেদ প্রচণ্ড এক্সট্রোভার্ট মানুষ। সারাক্ষণ হৈ-হুল্লোড়, পার্টি—এসব নিয়েই থাকতে পছন্দ করেন। সেনাবাহিনীর ভেতরে এমন এক সংস্কৃতি আছে—সারা মাস জুড়েই অমুক-তমুক পার্টি লেগেই থাকে। সেসব অনুষ্ঠানে অন্যান্য অফিসারদের স্ত্রীদের মতো সুলতানাকেও ট্রফি-বউ হয়ে উপস্থিত থাকতে হতো। শুরুতে মফস্বল থেকে এসে এই লাইফে মানিয়ে নিতে তাকে বেশ স্ট্রাগল করতে হয়েছে। নিজের পোশাক-আশাক, আচরণ—সব দিক থেকেই জড়তা ঝেড়ে ফেলতে হয়েছে। শরীরটাকেও মেইনটেইন করতে হয়েছে। এমনকি রাহাতের জন্মের পর তাকে বুকের দুধ পর্যন্ত খাওয়াতে দেয়নি রাহাতের বাবা—তার সুন্দরী স্ত্রীর ফিগার নষ্ট হয়ে যাবে এই ভয়ে।
এত কিছু করে, এত বছর ধরে সংসার করার পরও সুলতানার কোথাও যেন একটা দুঃখবোধ রয়ে গেছে। রাশেদ যেন বরাবরই তার কাছে অপরিচিত ছিল। স্বামীর ব্যাপারে অনেক গুজবই তার কানে এসেছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়া কোনো এক মেয়েকে নাকি সে ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে রেখেছে। অনেকেই নাকি তাকে মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে ট্যুরে যেতে দেখেছে। রাহাতের বাবাকে সরাসরি এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করার মতো মানসিক শক্তিও সুলতানার নেই—পাছে তার এই সাজানো সংসার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে।
এই যে রাশেদ আফ্রিকায় গেছে দুই বছর—এই সময়ে একবারও দেশে আসেনি। সুলতানা গুণে গুণে বলতে পারবে, কবার তাদের মধ্যে কথা হয়েছে। শারীরিক ইন্টিমেসির ব্যাপারটির অবস্থা আরও করুণ। রাশেদ একবারও তাকে জিজ্ঞেস করেনি, সুলতানা কীভাবে নিজেকে সামলে রেখেছে।
ক্যান্টনমেন্টে এরকম ঘটনা বহু আছে। সবকিছু বাইরে প্রকাশ পায় না। কিন্তু অনেক ভাবীই সুলতানাকে আকারে-ইঙ্গিতে পরামর্শ দেয়—‘আরে, ডিফেন্সে কত অবিবাহিত ইয়াং অফিসার পড়ে আছে! বিবাহিতরাও কম যায় না। তাদের মধ্য থেকে নিজের পছন্দমতো বেছে নাও। এতেও না পোষালে বাইরে তো আরও অনেকেই অপেক্ষা করে আছে। অন্য প্রফেশনের অনেক ছেলেও আছে একটু ছোঁয়ার আশায়। নিজেকে বঞ্চিত করো না।’
ডিফেন্সের অনেক ভাবীই আছে, যারা নামে মাত্র অমুকের বউ। শেষ কবে স্বামীর সঙ্গে একই বিছানায় গেছে, নিজেরাও বলতে পারবে না। অথচ তাদের বিছানাও খালি থাকছে না। সুলতানা এসব পথে কখনো পা বাড়ায়নি। কোথাও যেন একটা বাধা কাজ করে। হয়তো মফস্বলের সেই রক্ষণশীল মেয়েটি এখনো তার বুকের ভেতর লুকিয়ে আছে। কিন্তু কত দিন সেই মেয়েটি ধৈর্য ধরে রাখতে পারবে, সুলতানা নিজেও জানে না।
রাশেদ মিশনে যাওয়ার পর থেকে সুলতানা সবচেয়ে বেশি দোলাচলে আছে। নিজের মনকে অন্যদিকে ফেরানোর জন্য সে নিজেকে সময় দেওয়া শুরু করেছে। নিয়মিত ব্যায়াম, যোগা করে শরীরটাকে ফিট করেছে। একেবারে স্লিম ফিগারে আসেনি, কিন্তু পেট, পিঠ আর কোমর থেকে লদলদে চর্বি ঝেড়ে ফেলতে পেরেছে। বান্ধবীদের কেউ কেউ বলে, সুলতানাকে নাকি ইন্ডিয়ান নায়িকা ম্রুণাল ঠাকুরের মতো লাগে—বিশেষত পেছন দিক থেকে।
সুলতানা লাজুক হেসে হাত নেড়ে উড়িয়ে দেয় এসব স্তুতি। যখন কেউ কেউ—বেশির ভাগই পুরুষ—বলে, ‘আরে ভাবী, আপনার তো কলেজপড়ুয়া একটা ছেলে আছে—এটা বিশ্বাসই হয় না! আপনাকে এখনো ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে।’ প্রকাশ্যে কপট রাগ দেখালেও মনে মনে ঠিকই খুশি হয় সে। নিজেকে গুছিয়ে রাখতে আরও উৎসাহ বোধ করে। আবার একরকম আফসোসও হয়। কোনো কোনো রাতে আয়নার সামনে নিজের নিরাভরণ শরীরটার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবে—‘এত রূপ দিয়েও তো রাশেদকে বন্দী করতে পারলাম না। পুরুষ মানুষ বড়ই রহস্যময়।’
রাহাত অনেকটাই তার মায়ের স্বভাব পেয়েছে। ছেলেটা খুব অন্তর্মুখী। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তাই সুলতানার দুশ্চিন্তার শেষ নেই। হঠাৎ একদিন বন্ধুদের সঙ্গে সাজেক ভ্যালি যাওয়ার কথা বললে তিনি ভাবলেন—বেশ তো, নিজেও একটু ঘুরে আসা যাক। নিজেরও ঘোরা হবে, ছেলেটাকেও চোখে চোখে রাখা যাবে।
বাসস্টেশনে ছেলের বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় হয় সুলতানার। অন্তরকে তিনি খুব ছোটবেলায় একবার দেখেছিলেন। কিন্তু সালমান নামের ছেলেটিকে এই প্রথম দেখছেন। বেশ স্মার্ট ছেলে। দেখলে মনেই হয় না, রাহাতদের সঙ্গে সে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। ইউনিভার্সিটির সেকেন্ড বা থার্ড ইয়ারের ছাত্র বলেও চালিয়ে দেওয়া যাবে।
তন্বী নামের মেয়েটিকে দেখে সুলতানা সামান্য বিরক্তিবোধ করেছিলেন। রাহাত বলেনি যে ওদের সঙ্গে একটি মেয়েও যাচ্ছে। যদিও সামনাসামনি তন্বীর সঙ্গে খুব হেসে হেসে কথা বলেছেন। কথা বলার পর অবশ্য মেয়েটিকে আর অতটা খারাপ লাগেনি।
বাসের মধ্যে তন্বী সুলতানার পাশেই বসেছিল। যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকেই সুলতানা বুঝতে পেরেছিলেন—তন্বী আর অন্তরের মাঝে কিছু একটা চলছে। মনে মনে মুচকি হেসেছিলেন তিনি। উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এসব ফিলিংস থাকতেই পারে। তার সময়ে তো কিছু অনুভব করার আগেই তিনি স্বামীর সংসারে এসে পড়েছিলেন; তারপরেই সন্তান চলে এসেছিল। বন্ধু বা এমন ট্যুর দেওয়া তার জন্য ছিল স্বপ্নেরও বাইরে। যাক, ওরা উপভোগ করুক।
সুলতানা জানালার দিকে তাকিয়ে রইলেন। বাসের ভেতরের লাইট নিভে গেলে তিনি কম্বল গায়ে দিয়ে সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলেন। পুরোপুরি ঘুমাননি যদিও।
কিছুক্ষণ পর সুলতানা শুনতে পেলেন, তন্বী আর অন্তর খুনসুটি করছে। নিচু স্বরে কথা বলছিল বলে সব কথা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না। শুধু এটুকুই বুঝলেন—অন্তর তন্বীকে তার কাছে আসার জন্য অনুনয় করছে। ওদের খুনসুটি শুনতে শুনতেই তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন।
একসময় সুলতানা অনুভব করলেন—তিনি যেন একটি শক্ত, পেশিবহুল বাহুর ওপর মাথা রেখে শুয়ে আছেন। ঘুমের ঘোরে বিষয়টা ঠিক বুঝে উঠতে পারলেন না। তন্বীর হাত এত শক্ত হলো কী করে!
রাহাতের বাবা রাশেদ হাসানের সঙ্গে সুলতানার যখন বিয়ে হয়েছিল, তখন তার বয়স মাত্র ১৬ বছর। তিনি মফস্বল শহরের মেয়ে। রাহাতের বাবা প্রথম দিন কনে দেখতে এসেই বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে উঠেছিলেন। পাত্র ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন অফিসার। তাই পরিবারও প্রবল উৎসাহে একটি আন্ডারএজড মেয়েকে তুলে দিয়েছিল স্বামীর ঘরে। তাদের যুক্তি ছিল—এমনিতেই সুলতানা সুন্দরী মেয়ে, তার ওপর দেশের অবস্থাও ভালো না; শেষে যদি কোনো অঘটন ঘটে যায়। তার চেয়ে বিয়ে দিয়ে দেওয়াই ভালো।
বিয়ের পরের বছরই রাহাতের জন্ম। রাশেদ প্রচণ্ড এক্সট্রোভার্ট মানুষ। সারাক্ষণ হৈ-হুল্লোড়, পার্টি—এসব নিয়েই থাকতে পছন্দ করেন। সেনাবাহিনীর ভেতরে এমন এক সংস্কৃতি আছে—সারা মাস জুড়েই অমুক-তমুক পার্টি লেগেই থাকে। সেসব অনুষ্ঠানে অন্যান্য অফিসারদের স্ত্রীদের মতো সুলতানাকেও ট্রফি-বউ হয়ে উপস্থিত থাকতে হতো। শুরুতে মফস্বল থেকে এসে এই লাইফে মানিয়ে নিতে তাকে বেশ স্ট্রাগল করতে হয়েছে। নিজের পোশাক-আশাক, আচরণ—সব দিক থেকেই জড়তা ঝেড়ে ফেলতে হয়েছে। শরীরটাকেও মেইনটেইন করতে হয়েছে। এমনকি রাহাতের জন্মের পর তাকে বুকের দুধ পর্যন্ত খাওয়াতে দেয়নি রাহাতের বাবা—তার সুন্দরী স্ত্রীর ফিগার নষ্ট হয়ে যাবে এই ভয়ে।
এত কিছু করে, এত বছর ধরে সংসার করার পরও সুলতানার কোথাও যেন একটা দুঃখবোধ রয়ে গেছে। রাশেদ যেন বরাবরই তার কাছে অপরিচিত ছিল। স্বামীর ব্যাপারে অনেক গুজবই তার কানে এসেছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়া কোনো এক মেয়েকে নাকি সে ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে রেখেছে। অনেকেই নাকি তাকে মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে ট্যুরে যেতে দেখেছে। রাহাতের বাবাকে সরাসরি এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করার মতো মানসিক শক্তিও সুলতানার নেই—পাছে তার এই সাজানো সংসার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে।
এই যে রাশেদ আফ্রিকায় গেছে দুই বছর—এই সময়ে একবারও দেশে আসেনি। সুলতানা গুণে গুণে বলতে পারবে, কবার তাদের মধ্যে কথা হয়েছে। শারীরিক ইন্টিমেসির ব্যাপারটির অবস্থা আরও করুণ। রাশেদ একবারও তাকে জিজ্ঞেস করেনি, সুলতানা কীভাবে নিজেকে সামলে রেখেছে।
ক্যান্টনমেন্টে এরকম ঘটনা বহু আছে। সবকিছু বাইরে প্রকাশ পায় না। কিন্তু অনেক ভাবীই সুলতানাকে আকারে-ইঙ্গিতে পরামর্শ দেয়—‘আরে, ডিফেন্সে কত অবিবাহিত ইয়াং অফিসার পড়ে আছে! বিবাহিতরাও কম যায় না। তাদের মধ্য থেকে নিজের পছন্দমতো বেছে নাও। এতেও না পোষালে বাইরে তো আরও অনেকেই অপেক্ষা করে আছে। অন্য প্রফেশনের অনেক ছেলেও আছে একটু ছোঁয়ার আশায়। নিজেকে বঞ্চিত করো না।’
ডিফেন্সের অনেক ভাবীই আছে, যারা নামে মাত্র অমুকের বউ। শেষ কবে স্বামীর সঙ্গে একই বিছানায় গেছে, নিজেরাও বলতে পারবে না। অথচ তাদের বিছানাও খালি থাকছে না। সুলতানা এসব পথে কখনো পা বাড়ায়নি। কোথাও যেন একটা বাধা কাজ করে। হয়তো মফস্বলের সেই রক্ষণশীল মেয়েটি এখনো তার বুকের ভেতর লুকিয়ে আছে। কিন্তু কত দিন সেই মেয়েটি ধৈর্য ধরে রাখতে পারবে, সুলতানা নিজেও জানে না।
রাশেদ মিশনে যাওয়ার পর থেকে সুলতানা সবচেয়ে বেশি দোলাচলে আছে। নিজের মনকে অন্যদিকে ফেরানোর জন্য সে নিজেকে সময় দেওয়া শুরু করেছে। নিয়মিত ব্যায়াম, যোগা করে শরীরটাকে ফিট করেছে। একেবারে স্লিম ফিগারে আসেনি, কিন্তু পেট, পিঠ আর কোমর থেকে লদলদে চর্বি ঝেড়ে ফেলতে পেরেছে। বান্ধবীদের কেউ কেউ বলে, সুলতানাকে নাকি ইন্ডিয়ান নায়িকা ম্রুণাল ঠাকুরের মতো লাগে—বিশেষত পেছন দিক থেকে।
সুলতানা লাজুক হেসে হাত নেড়ে উড়িয়ে দেয় এসব স্তুতি। যখন কেউ কেউ—বেশির ভাগই পুরুষ—বলে, ‘আরে ভাবী, আপনার তো কলেজপড়ুয়া একটা ছেলে আছে—এটা বিশ্বাসই হয় না! আপনাকে এখনো ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে।’ প্রকাশ্যে কপট রাগ দেখালেও মনে মনে ঠিকই খুশি হয় সে। নিজেকে গুছিয়ে রাখতে আরও উৎসাহ বোধ করে। আবার একরকম আফসোসও হয়। কোনো কোনো রাতে আয়নার সামনে নিজের নিরাভরণ শরীরটার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবে—‘এত রূপ দিয়েও তো রাশেদকে বন্দী করতে পারলাম না। পুরুষ মানুষ বড়ই রহস্যময়।’
রাহাত অনেকটাই তার মায়ের স্বভাব পেয়েছে। ছেলেটা খুব অন্তর্মুখী। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তাই সুলতানার দুশ্চিন্তার শেষ নেই। হঠাৎ একদিন বন্ধুদের সঙ্গে সাজেক ভ্যালি যাওয়ার কথা বললে তিনি ভাবলেন—বেশ তো, নিজেও একটু ঘুরে আসা যাক। নিজেরও ঘোরা হবে, ছেলেটাকেও চোখে চোখে রাখা যাবে।
বাসস্টেশনে ছেলের বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় হয় সুলতানার। অন্তরকে তিনি খুব ছোটবেলায় একবার দেখেছিলেন। কিন্তু সালমান নামের ছেলেটিকে এই প্রথম দেখছেন। বেশ স্মার্ট ছেলে। দেখলে মনেই হয় না, রাহাতদের সঙ্গে সে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। ইউনিভার্সিটির সেকেন্ড বা থার্ড ইয়ারের ছাত্র বলেও চালিয়ে দেওয়া যাবে।
তন্বী নামের মেয়েটিকে দেখে সুলতানা সামান্য বিরক্তিবোধ করেছিলেন। রাহাত বলেনি যে ওদের সঙ্গে একটি মেয়েও যাচ্ছে। যদিও সামনাসামনি তন্বীর সঙ্গে খুব হেসে হেসে কথা বলেছেন। কথা বলার পর অবশ্য মেয়েটিকে আর অতটা খারাপ লাগেনি।
বাসের মধ্যে তন্বী সুলতানার পাশেই বসেছিল। যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকেই সুলতানা বুঝতে পেরেছিলেন—তন্বী আর অন্তরের মাঝে কিছু একটা চলছে। মনে মনে মুচকি হেসেছিলেন তিনি। উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এসব ফিলিংস থাকতেই পারে। তার সময়ে তো কিছু অনুভব করার আগেই তিনি স্বামীর সংসারে এসে পড়েছিলেন; তারপরেই সন্তান চলে এসেছিল। বন্ধু বা এমন ট্যুর দেওয়া তার জন্য ছিল স্বপ্নেরও বাইরে। যাক, ওরা উপভোগ করুক।
সুলতানা জানালার দিকে তাকিয়ে রইলেন। বাসের ভেতরের লাইট নিভে গেলে তিনি কম্বল গায়ে দিয়ে সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলেন। পুরোপুরি ঘুমাননি যদিও।
কিছুক্ষণ পর সুলতানা শুনতে পেলেন, তন্বী আর অন্তর খুনসুটি করছে। নিচু স্বরে কথা বলছিল বলে সব কথা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না। শুধু এটুকুই বুঝলেন—অন্তর তন্বীকে তার কাছে আসার জন্য অনুনয় করছে। ওদের খুনসুটি শুনতে শুনতেই তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন।
একসময় সুলতানা অনুভব করলেন—তিনি যেন একটি শক্ত, পেশিবহুল বাহুর ওপর মাথা রেখে শুয়ে আছেন। ঘুমের ঘোরে বিষয়টা ঠিক বুঝে উঠতে পারলেন না। তন্বীর হাত এত শক্ত হলো কী করে!


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)