(৪৮)
কিছুক্ষণ কাজে ডুবে ছিলাম। মাথা ধরে এসেছে। আবার ক্যামেরা অন করলাম। রুমে কেউ নাই।
কিছুক্ষণ রেস্ট দরকার। উঠে গেলাম।
রেলিং এর ধারে কিছুক্ষন বিচরন করলাম। একবার ফাউজিয়াকে ফোন দিই। কল করলাম।
“হ্যালো ফাউজি। কি করো?”
“দিলে তো আমার ঘুমটা ভেঙ্গে! ইইইইইইইইই।”
“এই সন্ধাবেলাই কেউ ঘুমাই?”
“আমি ঘুমাই। কেমন আছো তোমরা? কি করছো এখন?”
“ছাদে বসে বসে তোমাকে ভাবছিলাম। তাই ফোন দিলাম।”
“ফ্লাটিং বাদ দিয়ে কাজ করো।”
“আমার এখন কাজ ই হচ্ছে ফ্লাটিং করা।”
“মিম কোথায়?”
“রান্না করছে মেবি। আমি ছাদে।’’
“আর আম্মু?”
“আমি তো ছাদে। কি করে বলবো। সকাল থেকেই তো শুধু তোমার কথায় বলছেন উনি। খুউব টেনশান করছিলো।”
“আমি নিজেই তো টেনশানে ছিলাম।”
“বাদ দাও। আল্লাহ যা করেন ভালর জন্যই। তোমরা কোন বেলা আসছো?”
“আম্মুকে তো বললাম সকালেই। তবে তোমার বন্ধু বোধায় দুদিন পর আসবে।”
“কেন? তার আবার কি হলো?”
“আমার সাথে সাথে সে ও বাড়ি চলে গেছে। এখন ওর বাড়ি থেকে বলছে শীতের পিঠা খেয়েই শহরে যেতে। তাই দুদিন মত দেরি হবে।”
“অহ। বিয়ের পরেই বেচারির স্বামি বিদেশ। কি কস্ট! হা হা হা।”
“এই যে মিস্টার। আমার স্বামি বিদেশ না। দেশেই আছে। বুঝেছো?”
“তবুও…..।”
“কি তবুও?? শুনি। বলো?”
‘“না মানে এমনিই। তুমি চাইলে এই দুদিন আমি প্রক্সি দিতে পারি।”
“নেহিইই মিস্টার। লাগবেনা আমার প্রক্সি। আমি ঠিক আছি।”
ফাউজি আমি দুজনেই হাসছি। ফাউজি অনেক ফান করতে পারে। কারন সে ফান বুঝে।
“আচ্ছা ফাউজি নাদিমের সাথে তোমার কথা হইসে?”
“নারে। ফোন দেওয়া হয়নি।”
”এট কথা হলো? সেইযে গেলো, আর কেউ কথা বললোনা। আমিও ব্যস্ততার মাঝে ফোন দেওয়ার কথা ভুলেই গেছি। তার আম্মা কেমন আছে এখন।”
“দেখি আজ রাতে একবার ফোন দিব।”
“ধন্যবাদ ফাউজি। এক কাজ করিও, যদি ক্যাম্পাসে এসে থাকে তাহলে কাল এখানে ডেকে নিও। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে যাবে।”
“আমি তা বলতে পারবোনা বাপু। তোমাদের বাড়ি,তোমার বন্ধু, তুমিই বলিও।”
“আমার বন্ধু, আর তোমার শত্রু?”
“......”
“কি হলো চুপে গেলে যে! শুনো ফাউজি, আমি চাইনা, আমাদের ৪জনের বন্ধুত্বে কখনো দুরুত্ব বাড়ুক। নিজেদের মধ্যে নিজস্ব কিছু থাকতেই পারে। সেটাতে হস্তক্ষেপ অন্তত আমিই করবোনা---সেটা আগেই বলেছি। আর আমি দ্বিতীয় সেমিস্টার থেকেই তোমার মাঝে নাদিমকে দেখেছি। মুখে বলিনি---মনে কিছু করতে পারো। কিন্তু এখন তো আর লুকানোর কিছু নেই। নাকি আমাকে এখনো ভয় পাও ফাউজি???”
“ভয় কেন পাবো?’”
“তবে? তুমি চাওনা আমরা ৪বন্ধু আজীবন মিলেমিশে থাকি? একি বন্ধনে আবদ্ধ থাকি?”
“হুম।”
“তাহলে প্লিজ প্লিজ লাস্ট ৪বছর তোমরা যেমন স্বাভাবিক ছিলা, আগামিতেও থাকবা। আমি দেখেছি বলে এর প্রভাব ৪জনের বন্ধুত্বের মাঝে ফেলে দিওনা প্লিজ।”
“.......”
“কি হলো?আমি কি কিছু ভুল বলে ফেললাম?”
“নাহ।”
“তাহলে চুপ আছো কেন ফাউজি?”
“ভাবছি। তুমি সামনে থাকলে বুকে জরিয়ে ধরতাম। তুমি এতো ভালো কেন রাব্বীল?”
“কারণ আমার বান্ধবিটা ভালো যে, তাই।”
“আচ্ছা আর পাম্প দিতে হবেনা। থাকো, দেখি ফোন করবো।”
“লাভ ইউ ফাউজি। বাই।”
“আচ্ছা বাই।”
“আর শুনো?”
“বলো।”
“পারলে নাদিমকে কাল পরশুর মধ্যে, সৈকত আশার আগে একবার ডেকে নিও। একটু গল্প করিও বেচারার সাথে। চিন্তা নেই,মিম আর শাশুড়ির দিকটা আমি দেখবো।”
“খালি বদমাইসি কথা সব সময়। বাই।”
ফাউজি একটা হাসি দিয়েই ফোন কেটে দিল। তার হাসিতে ছিলো এক জান্নাত পরিমান খুসি।
যাক, সবাই ভালো থাকুক।
“বেটা আছো?”
সিড়ির দরজা থেকেই শাশুড়ির কন্ঠ।
আমার দুনিয়া
অসমাপ্ত আত্মজীবনী
*******************************



![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)