10-12-2025, 10:10 PM
(This post was last modified: 11-12-2025, 01:22 AM by kingsuk-tomal. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
তমাল তার মাথায় একটা হাত রাখলো আর কোমরটা অল্প অল্প নড়াতে শুরু করলো। ছোট ছোট ঠাপ দিচ্ছে সে শালিনীর মুখে। শালিনী জিভটা বাঁড়ার চামড়ার ভিতরে ঢুকিয়ে মুন্ডির গোড়ার খাঁজটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চাটছে। তমালের কোমর নাড়া আর ঠাপ দ্রুততর হলো। এবার দু'হাতে মাথার চুল ধরে জোরে জোরে মুখ চোদা দিচ্ছে সে। শালিনীও এক্সপার্ট দের মতো ব্লোজব দিচ্ছে তমালকে।
আআআহহ্হ আআহহহ্ ওওওহহহহ শালী... ইয়েস ইয়েস ফাস্ট ফাস্ট ফাস্ট.... উউউফফ উউউফফ আআআহহ্হ উউউউউউউ ইসসসসসসস্ ওহহহহ্ আআআআআআআআএএএএএএএএএএহহহ...! বলতে বলতে শালিনীর মুখের ভিতরে বাঁড়াটা ঠেসে ধরে গরম মাল উগড়ে দিলো তমাল। শালিনী অনেক সময় নিয়ে ধৈর্য্য সহকারে মালের প্রতিটা ফোটা চেটে পরিষ্কার করে দিয়ে মুখ তুলে তাকালো। তারপর দু'জনেই বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এলো।
তমাল আবার একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বললো, বুঝলে শালী, কেসটা ভীষণ জটিল! অনেক কিছুই বুঝতে পারছি, কিন্তু মোটিভটাই এখনো ধরতে পারছি না। তোমার এক্সট্রা-অর্ডিনারি কৌশলও ফেল মেরে গেলো। বীর্য ছাড়া সমাধান কিছুই বেরোলো না।
শালিনী বললো, হতাশ হবেন না বস্! আই অ্যাম অলওয়েজ অ্যাট ইয়োর সার্ভিস! একবারে না হইলে চোষো শতবার!
দু'জনেই হো হো করে হেসে উঠলো শালিনীর কথায়। তারপর তমাল বললো, এবারে একটু ঘুমিয়েনি ডিয়ার। রাতে ভূত ধরা অভিযান আছে। রাত জাগতে হবে। শালিনী ঘাড় নেড়ে বাধ্য মেয়ের মতো ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো !
প্ল্যান অনুযায়ী রাত ন'টার ভিতরে ডিনার করে রেডি হয়ে গেলো রতন আর তমাল। একটা কালো প্যান্ট আর কালো টি-শার্ট পরে চুপি চুপি অন্ধকারে মিশে গেল রতন। সঙ্গে একটা শক্তিশালী টর্চও নিয়েছে। লনের ডান দিকের কোনায় বাউন্ডারি ওয়ালের কাছে রতনদের বাথরুমে লুকিয়ে থাকবে রতন। আর তমাল থাকবে ছাদে। শালিনী সঙ্গে আসতে চাইলে নিষেধ করলো তমাল। তাকে থাকতে বললো, কুহেলির সঙ্গে। প্ল্যানটা সমরবাবু, টুসি আর ভূপেনবাবুকে জানানো হলো না। ছাদে উঠে একা একা অপেক্ষা করছে তমাল। মশা ছেঁকে ধরেছে। শব্দ না করে তাদের তাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে সে। এমন কি সিগারেট ধরাতেও পারছেনা উপস্থিতি জানাজানি হওয়ার ভয়ে। অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে গেল তমাল। কিছুই ঘটছে না। ঠান্ডাও লাগছে একটু একটু। ওদিকে রতনও কোনো শব্দ করছেনা। ছেলেটা ঘুমিয়ে না পড়লেই হয়। ঘড়ির লুমিনাস ডায়ালে দেখলো প্রায় একটা বাজে।
এমন সময় হঠাৎ লনের পিছন দিকে দপ্ করে আগুন জ্বলে উঠলো। ওওওহহহ একটা বিভৎস ভূতুরে মুখ নাচতে শুরু করলো। এতো ভয়ঙ্কর কিছু তমাল আশাই করেনি। মুখ দিয়ে দু' ফুট লম্বা আগুন এর হলকা বেরোচ্ছে। চোখ দু'টো লাল আগুন এর ভাটার মতো জ্বলছে। নাচতে নাচতে মুখটা ডাইনে বায়ে সরে যাচ্ছে। সেই ভৌতিক দানবটা কখনো মাটিতে নেমে আসছে, কখনো লাফ দিয়ে দশ বারো ফুট উপরে চলে যাচ্ছে।এতোই বিভৎস দৃশ্য, যে তমালও কয়েক মুহূর্ত জমে পাথর হয়ে গেল। মন্ত্র-মুগ্ধের মতো তাকিয়ে রইলো সেদিকে। তারপর সম্বিত ফিরে পেয়েই ডাক দিলো... রত-অ-অ-ন ! ধরো... জলদি জলদি কুইক!
খটাং করে বাথরুম এর দরজা খুলে বেরিয়ে এলো রতন। বোধহয় সেও ওই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো কয়েক মুহুর্ত। তারপরেই দৌড় দিলো ভূতুরে মুখ লক্ষ্য করে। তমাল দ্রুত নেমে এলো ছাদ থেকে। দুরন্ত গতিতে ডান দিকের দরজা খুলে টাইলস বসানো রাস্তা ধরে ছুটলো লনের দিকে। ছুটতে ছুটতে তমাল রতনের আর্তনাদ শুনতে পেলো। ওওওহহহ মাআআ গোওওও। মরে গেলাম তমালদা.... বাঁচান।!!!
চিৎকার চেঁচামেচিতে ততক্ষণে সবাই উঠে পড়েছে। দরজা খুলে বেরিয়ে এলো নীচতলার সবাই। কুন্তলা, কুহেলি আর শালিনী জানালা থেকে মুখ বার করে দেখার চেষ্টা করছে। সমরবাবু আর ভূপেনবাবু বেরিয়ে এসেছে ঘর থেকে। তাদের একটু পিছনে টুসিও চলে এলো।
তমাল ততক্ষণে পৌঁছে গেছে রতনের কাছে। যন্ত্রণায় মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছে রতন। তমাল তাড়াতাড়ি তার হাত ধরে তুলতে যেতেই আবার চিৎকার করে উঠলো সে.....
আআয়ায়ায়ায়ায়ায়াহহহ্ উউউউউউফফফ্ মাআআ গোওওও! তমাল হাত ছেড়ে দিলো। রতন বাঁ হাত দিয়ে ডান হাতটা চেপে ধরে কাতরাচ্ছে। তার কোমর ধরে টেনে তুলল তমাল। বললো, কি হয়েছে রতন?
তখনও যন্ত্রণায় গুঙিয়ে চলেছে সে। কোনো রকমে বললো, ডান হাতটা বোধহয় ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে তমালদা। সমরবাবু আর ভূপেনবাবু পৌঁছে গেছে সেখানে। সবাই মিলে ধরাধরি করে রতনকে বাড়িতে নিয়ে আসা হলো। পিছনে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে আতঙ্কে কাঁপছে টুসি।
তমাল দেখল রতনের ডান হাতে একটা গভীর ক্ষত হয়েছে। রক্ত চুইয়ে পড়ছে সেখান থেকে। ভালো করে দেখতে যাবার জন্য হাতটা ধরতেই রতন আবার চিৎকার করে উঠলো। সম্ভবত হাড় ভেঙ্গে গেছে । তমাল নিজের ওষুধের বাক্সটা এনে খুব সাবধানে ক্ষত পরিষ্কার করে একটা হালকা ব্যান্ডেজ করে দিল। একটা পেইন কিলার আর একটা কড়া ঘুমের ওষুধ দিল রতনকে। তারপর তাকে তার বিছানায় শুইয়ে দিল। ওষুধ কাজ করা শুরু করতেই রতনের গোঙানি কমে এল। তমাল বললো, এবার বলো কি হয়েছিল?
কথা বলার আগে রতন জল চাইলো। টুসি দৌড়ে গিয়ে জল এনে দিল। রতন বললো, আপনার ডাক শুনে বেরিয়ে এলাম। বাইরে এসেই দেখি সেই ভয়ানক মুখটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কয়েক মুহূর্ত ভয়ে পাথর হয়ে গেলাম। তারপর যা হয় হবে ভেবে দৌড় দিলাম ওর দিকে। উউউফফফ তমালদা কি তাপ! যেন পুড়িয়ে দেবে! এমন হল্কা বেরোচ্ছিলো ওটার মুখ দিয়ে আগুনের। কাছে যেতেই সেটা আরও লম্বা হয়ে আমাকে ছুঁয়ে ফেলল। প্রায় চোখ ধাঁধিয়ে গেল। টর্চটা কোমরে গোঁজা ছিল। সেটা বের করতে চেষ্টা করতেই আগুন নিভে গেল। টর্চটা হাতে বের করে এনে জ্বালতে যাবো, তখনি অসহ্য ব্যথায় কুঁকড়ে গেলাম। মনে হল আমার হাতের ওপর পাহাড় ভেঙ্গে পড়লো। প্রচন্ড গরম একটা কিছু বাড়ি মারলো আমার হাতে। চোখে অন্ধকার দেখলাম মাথা ঘুরে পরে গেলাম আমি। তারপর তো আপনি পৌঁছে গেলেন। এত অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছিলো যে আমি কিছুই মনে করতে পারছিলাম না।
ঘর ভর্তি লোক, কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় সেখানে কবরের নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। ঘুমের ওষুধে চোখ জুড়ে আসছে রতনের। তমাল সবাইকে ইশারা করলো চলে আসতে। বেরিয়ে আসার সময় পিছন থেকে জড়ানো গলায় ডাকলো রতন, তমালদা?
তমাল ঘুরে তাকিয়ে বললো, বলো রতন?
রতন বললো, কী ছিল ওটা তমালদা ! কী ওটা? হে ভগবান !
তমাল দু' পাশে মাথা নাড়লো। বললো, জানি না! সত্যিই জানি না রতন! আমার নিজেরই বিচার বুদ্ধি ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। আমার জন্যই তোমার আজ এই দুরবস্থা হলো। এখন প্রথম কাজ সকাল হলেই তোমাকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়া। তবে তোমাকে কথা দিচ্ছি রতন, তোমার এই দুরবস্থা যেই করুক, সে মানুষ, ভূত বা ভগবান যেই হোক, আমার হাত থেকে তার নিস্তার নেই। শাস্তি তাকে দেবোই। এখন ঘুমাও আর একটাও কথা নয়।
একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল রতন। তারপর চোখ বন্ধ করে নিল। তমাল বাইরে বেরিয়ে এসে দরজা ভেজিয়ে দিল।
কুহেলির ঘরে এসে বসলো সবাই। কারো মুখে কোনো কথা নেই। তমাল ভুরু কুঁচকে মুখ নিচু করে রয়েছে। বাকিরাও চুপ করে রয়েছে। হঠাৎ তমাল উঠে দাঁড়ালো বললো, শালিনী এসো আমার সঙ্গে। বলে দরজার দিকে হাঁটতে শুরু করলো। কুন্তলা বললো, কোথায় যাচ্ছো তমালদা? তমাল বললো, লনে। কুহেলি আর কুন্তলা দু'জনেই আঁতকে উঠলো। কুন্তলা বললো, না না তোমাকে এক্ষুণি কিছুতেই যেতে দেবো না ওখানে। কুহেলিও সায় দিলো তার কথায়। কুন্তলা বললো, আমিই তোমাকে ডেকে এনেছি, কিন্ত আমার জন্য তোমাকে বিপদে পড়তে দেবো না আমি। এক্ষুণি কিছুতেই তুমি ওখানে যেতে পারবে না।
তমালের চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো বললো, ডেকে তুমি এনেছিলে ঠিকই কুন্তলা, কিন্তু এখন আর এটা তোমার কেস নয়। আমার জন্য একটা ছেলের ভয়ংকর বিপদ হতে যাচ্ছিলো। অলরেডি সে ভীষণ ভাবে আহত। এটা এখন আমার ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ কুন্তলা। এর শেষ আমাকে দেখতেই হবে। ভেবো না, আমার কিছু হবে না। এসো শালিনী। কাউকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে শালিনীকে নিয়ে বেরিয়ে এলো তমাল।
ঘটনার জায়গায় এসে টর্চ জ্বাললো তমাল। চারপাশে আলো ফেলে ফেলে খুঁজতে লাগলো সে। লনের ভিতরে রতনের টর্চটা পরে থাকতে দেখলো। তুলে নিলো সেটা। কাঁচ ভেঙে গেছে। তবে জ্বলছে টর্চটা। তমাল সেটা শালিনীর হাতে ধরিয়ে দিলো। দু'জনে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে লাগলো কোনো পরে থাকা সূত্র।
টাইলস বিছানো রাস্তার একটা জায়গায় এসে থমকে দাঁড়ালো তমাল। বসে পড়লো হাঁটু মুড়ে। টর্চ এর আলো ফেলে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখলো। তারপর শালিনীকে ডাকলো, শালি একটু এদিকে এসো তো? শালিনী এসে তমালের নজর অনুসরণ করে রাস্তার উপর তাকালো। কালো কালো কয়েকটা টুকরো জিনিস পরে থাকতে দেখলো। জিজ্ঞেস করলো, কি এগুলো বস? তমাল বললো, জানিনা। পকেট থেকে রুমাল বের করে টুকরো গুলো তুলে রুমালে জড়িয়ে রাখলো। তারপর পাঁচিল এর গায়ে আলো ফেলে খুঁজলো অনেকক্ষণ। পাঁচিলটা পুরানো, অনেক দিন এর। প্লাস্টার খুলে গেছে অনেক জায়গায়। ইট গুলোর খাঁজে মশলাও খসে গেছে বেশ কিছু জায়গায়।পাঁচিল এর খুব কাছে গিয়ে মনোযোগ দিয়ে কি যেন দেখলো তমাল। ভুরু কুঁচকে গেলো তার। তারপর রতনদের বাথরুমে এসে ঢুকলো দু'জনে।
বেশ বড়সড় বাথরুম। বাথরুম না বলে স্টোর রুম বলাই ভালো। এক সময় হয়তো বাগান করার জিনিস পত্র রাখার স্টোর রুমই ছিলো এটা। এখনো এক পাশে ভাঙ্গা চোরা লোহা লক্কর পড়ে আছে। ভাঙ্গা টিন, ছোটো ছোটো করে কাটা অনেক লোহার রডের টুকরো, বোধহয় বাড়ির জলের পাইপ বদলানোর পরের অবশিষ্ট টুকরো, ভাঙ্গা কোদাল, জল দেবার ঝাঁঝরি, আরও হাবিজাবি কতো কিছু! এক পাশটা পরিষ্কার করে বাঁধিয়ে নিয়ে স্নানের জায়গা করা হয়েছে। পাশেই একটা বড় চৌবাচ্চা। ভিতরে অর্ধেক জল জমে আছে। কিন্তু অনেক দিনের নোংরা জল, ব্যবহারের অযোগ্য। কালো হয়ে আছে ময়লা জমে জমে। তার পাশে একটা ঘেরা জায়গায় টয়লেট। তবে ফ্রেশ জলের উৎস নেই কোথাও। জল বোধহয় বাড়ির ভিতরে থেকে বয়ে আনতে হয়।
অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করে আর দেখার মতো কিছু পেলোনা ওরা। ফিরে এলো বাড়িতে। ওদের ফিরতে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো কুহেলি আর কুন্তলা দু'জনে। শালিনীকে কুহেলির সঙ্গে রেখে তমাল আর কুন্তলা যার যার ঘরে চলে গেলো।
ন'টা নাগাদ ঘুম ভাঙলো তমালের। রতনের কথা মনে পড়তেই তড়াক্ করে লাফিয়ে উঠলো। ইসসস কতো বেলা হয়ে গেলো! ছেলেটাকে আরও আগে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিলো। অপরাধবোধে মনটা ভার হয়ে গেলো তমালের। দ্রুত পায়ে রতনের ঘরে ঢুকে দেখলো রতন বসে চা খাচ্ছে। ডান হাতটা জুড়ে বিশাল এক ব্যান্ডেজ।
তমালকে দেখে মিটিমিটি হাসছে রতন। বললো, আপনি ঘুমোচ্ছেন, তাই আর ডিস্টার্ব করিনি তমালদা। টুসিকে নিয়েই চলে গেছিলাম ডক্টর সেনের কাছে। একটুর জন্য বেঁচে গেছি তমালদা। হাড় টুকরো হয়নি, তবে চির ধরেছে। আর ক্ষতটাও বেশ ডিপ। ডক্টর সেন বললো, প্লাস্টার করলে ভালো হতো। কিন্তু ক্ষতটা না শুকালে প্লাস্টার করা যাবে না। ক্ষতটা বিষিয়ে যেতে পারে। তাই এই মোটা গাম্বুষ সাইজ ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। আর বলেছে হাত একদম না নাড়াতে। অবশ্য উনি না বললেও আমি নাড়াতে পারতাম না। এখনো অবশ হয়ে আছে। একটু নাড়লেই প্রচন্ড ব্যাথা লাগছে। ওষুধ দিয়েছেন। বললো, পনেরো কুড়ি দিনেই ভালো হয়ে যাবো। দাঁত বের করে হাসলো রতন।
তমাল বললো, স্যরি কিভাবে যে এতো ঘুমিয়ে পড়লাম! আমারই তোমকে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিলো ডক্টরের কাছে। আচ্ছা আমি ডক্টর সেনের সাথে দেখা করে ওষুধ পত্র কিনে আনবো।
রতন বললো, ধুর দাদা, কী যে বলেন আপনি? ডক্টর সেন আমাদের কনস্ট্রাকশন কোম্পানির বাধা ডাক্তার। কনস্ট্রাকশনের কাজ করতে গিয়ে এরকম কতো ছোটখাটো আঘাত লাগে। ডক্টর সেনকেই তো দেখাই। আপনি দুর্গাপুর তো ভালো করে চেনেন না, তাই আমি আপনাকে বিরক্ত না করে টুসিকে নিয়ে ডাক্তার বাবুকে দেখিয়ে এলাম। উনি তো প্রথমে দেখে বললো, কী রে রতন, কাজ থেকে ফাঁকি মারার জন্য নাটক করছিস না তো? তারপর দেখেটেখে নিজেই এক্স-রে করে ছুটি লিখে দিলেন পনেরো দিনের। ওষুধ পত্রও সব কিনে এনেছি দাদা, আপনি ব্যস্ত হবেন না। বলে আবার হাসতে লাগলো রতন।
টুসি রতনের খুব খেয়াল রাখছে। তাকে ভাত মাখিয়ে খাইয়েও দিচ্ছে। ভূপেনবাবু পাঁচন গেলার মতো ব্যাজার মুখ করে সব দেখছেন। কিন্তু কিছু বলতে পারছেন না। সারাদিন সবাই মনমরা হয়ে রইলো কাল রাতের ঘটনার জন্য। দিনটা কিভাবে চলে গেলো, বোঝাই গেলো না।
রাতে ডিনারের পরে শালিনী এলো তমালের ঘরে। দু'জনে কেসটার নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে অনেক রাত হয়ে গেলো। বেশ কয়েকটা সিগারেট খেয়েছে তমাল ইতমধ্যেই। ঘরটা ধোঁয়ায় ভর্তি হয়ে গেছে দেখে শালিনী জানালা খুলে দিলো। বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিলো শালিনী। অল্প অল্প তাজা বাতাস আসছে, বেশ ভালো লাগছে তার। হঠাৎ চাপা গলায় ডাকলো শালিনী, বস্... কুইক! এদিকে আসুন!
লাফ দিয়ে শালিনীর কাছে পৌঁছে গেলো তমাল। ওদের ঘরে ডিম লাইট জ্বলছিলো। তাই অন্ধকার হয়ে আছে ঘরটা। দু'জনেই দেখলো একটা ছায়ামূর্তি আস্তে আস্তে হেঁটে যাচ্ছে টাইলস বিছানো রাস্তা ধরে। আবছা আলোতেও মূর্তিমানকে চিনতে পারলো ওরা। সমরবাবু। পা টিপে টিপে এসে নীচের জানালায় টুসির ঘরে উঁকি দিলো। তারপর ফিরে চললো যে পথে এসেছিলো সে পথ ধরে। তমাল বা শালিনী কেউ কোনো শব্দ করলো না। তমাল চট্ করে দরজা খুলে সিঁড়ির উপর দিয়ে নীচে তাকালো। ভালো ভাবে নজর করে হাসি খেলে গেলো তার মুখে। ফিরে এসে শালিনীকে বললো, যাও অনেক রাত হয়ে গেছে, কুহেলির কাছে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। শালিনী চলে গেলো কোনো প্রতিবাদ না করে।
ঘণ্টা খানেকও যায়নি, তমালের দরজায় জোরে জোরে কেউ ধাক্কা মারতে শুরু করলো। দরজা খুলে দেখলো শালিনী আর কুহেলি দু'জনেই দাঁড়িয়ে আছে। শালিনী বললো, জলদি আসুন বস্। তমাল ওদের সাথে কুহেলির ঘরে ঢুকে দেখলো ঘরের মেঝোতে একটা বড়সড় মুরগি পরে আছে। গলাটা কাটা! মাথাটা অল্প একটু স্কিন এর সাথে ঝুলছে। মুরগিটার বুকের ঠিক মাঝখানে একটা বিশাল সস্তা ছুরি আমূল গাঁথা রয়েছে। ছুরিটা মুরগির পিঠ ফুটো করে পিছন দিকে বেরিয়ে রয়েছে। বুকের কাছটা রক্তে লাল হয়ে আছে।
তমাল মুরগিটা নেড়েচেড়ে বললো, এখনো এটার রোস্ট করা যেতে পারে, বেশিক্ষণ মারা যায়নি বেচারি। তারপর বললো, একদম ভয় পেও না। ভূতের মুরগি মারতে ছুরির দরকার হয় না। তারপর তমাল মুরগির বুক থেকে ছুরিটা বের করে নিলো আর সেটার পা ধরে ঝুলিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে চলে এলো। টুসির দরজায় নক্ করলো সে। টুসি দরজা খুলতেই মুরগিটা টুসিকে দিয়ে বললো, কাল সকালে এটা রান্না করে দিও তো? জলখাবারে কাল লুচি আর মাংস খাবো।
টুসির চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। বললো, এতো রাতে মুরগি কোথায় পেলেন? তমাল বললো, বিকালে কিনে এনেছিলাম। এক্ষুনি মেরে নিয়ে এলাম। চামড়া ছাড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দাও, সকালে রান্না করবে। বিস্ময়ে হাঁ হয়ে যাওয়া টুসির দিকে পিছন ফিরে সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠে এলো তমাল আর একটাও কথা না বলে।
তমাল শালিনী আর কুহেলি কে জিজ্ঞেস করলো, জানালা খোলা রেখেছিলে বুঝি? দু'জনে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। তমাল বললো, কাঠের পাল্লাটা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ো। আজকের কোটা শেষ। আর কোনো উপদ্রব হবে না আজকের মতো। গুড নাইট।
পরদিন সকালে কুন্তলা চা নিয়ে এসে ঘুম ভাঙালো তমালের। বললো, তমাল, বাড়ির পিছনে একটা কান্ড হয়েছে এসে দেখো।
তমাল চায়ে চুমুক দিয়ে বললো, আবার কি কান্ড হলো?
কুন্তলা বললো, কুহেলির ঘরে গিয়েই দেখো না?
তমাল আবার কোনো রক্ত মাখা বস্তু পড়েছে জানালা দিয়ে অনুমান করতে করতে পৌঁছে গেলো কুহেলির ঘরে। কিন্তু সেরকম কিছুই দেখতে পেলো না। তার বদলে দেখলো শালিনী আর কুহেলি জানালা দিয়ে কি যেন দেখছে।
তমাল বললো, গুড মর্নিং সুইট লেডিস! কি দেখা হচ্ছে এতো মনযোগ দিয়ে?
দু'জনেই ঘুরে তাকিয়ে বললো, গুড মর্নিং! এসে দেখো না কি হয়েছে!
তমাল জানালার কাছে এসে দেখলো লনের পাঁচিলের পিছনে মানুষ আর পুলিশে গিজগিজ করছে। বললো, ওরে বাবা! এতো পুলিশ কেন? কি হয়েছে?
কুহেলি বললো, কাল রাতে গয়নার দোকানে চুরি হয়েছে। পুলিশ এসেছে তদন্ত করতে। পুলিশ আর গোয়েন্দারা খুব ছোটাছুটি করছে চারদিকে।
তমাল বললো, যাক ভালোই হয়েছে। এখন কয়েকদিন পুলিশ পোস্টিং থাকবে ওখানে। তোমাদের বাড়িতে আর ভূত আসতে পারবে না ওদের সামনে দিয়ে।
পিছনে কুন্তলা এসে দাঁড়িয়েছিলো। বললো, বড় রকম চুরি হয়েছে মনে হয়। দেখো পুলিশ এর বেশ উঁচু অফিসাররাও এসেছে।
দোকানটা বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে। পুরো লনটার ওপাশে ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছে না। তবুও পুলিশের ইউনিফর্ম দেখে পদমর্যাদা বোঝা যাচ্ছে পরিষ্কার।
তমাল বললো, যাক্! ওদের নিজেদের কাজ করতে দাও। আমরা বরঞ্চ দেখি কাল রাতের মুরগিটার কি ব্যবস্থা করলো টুসি। সবাই মিলে নিচে চলে এলো।
সত্যিই টুসি মুরগিটা দিয়ে কষা মাংস রান্না করেছে, সঙ্গে পরোটা। তমাল সবার আগে রতনের ঘরে গেলো। রতন তখনও ঘুমাচ্ছিলো। তমাল ঢুকতেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো তার। কোনো রকমে উঠে বসলো সে। লাজুক হেসে বললো, ছুটি তো পাই না? তাই আজ কাজে যেতে হবে না দেখে একটু আলসেমি করছি তমালদা।
তমাল বললো, থাক্ থাক্, তুমি রেস্ট নাও। তোমার হাতের ব্যথা কেমন?
রতন বললো, হাত এখনো নাড়াতে পারছি না। আর ব্যথাও আছে ভালোই। ওষুধ খেলে একটু কম থাকে। ওষুধ এর প্রভাব কেটে গেলে টনটন করে হাতটা। আর খুব দুর্বলও লাগছে
তমাল বললো, শুনেছো, পিছনের গয়নার দোকানে চুরি হয়েছে?
রতন বললো, তাই নাকি? বলেন কি? কাল রাতে? ওহ্ বড় দোকান! অনেকটাকার মাল ছিল।
তমাল বললো, গেছিলে নাকি ভিতরে? রতন বললো, হ্যাঁ গেছি তো। ওদের সব গেট, গ্রিল তো আমরাই বানিয়ে দিয়েছিলাম।
তমাল বললো, ও আচ্ছা।
আআআহহ্হ আআহহহ্ ওওওহহহহ শালী... ইয়েস ইয়েস ফাস্ট ফাস্ট ফাস্ট.... উউউফফ উউউফফ আআআহহ্হ উউউউউউউ ইসসসসসসস্ ওহহহহ্ আআআআআআআআএএএএএএএএএএহহহ...! বলতে বলতে শালিনীর মুখের ভিতরে বাঁড়াটা ঠেসে ধরে গরম মাল উগড়ে দিলো তমাল। শালিনী অনেক সময় নিয়ে ধৈর্য্য সহকারে মালের প্রতিটা ফোটা চেটে পরিষ্কার করে দিয়ে মুখ তুলে তাকালো। তারপর দু'জনেই বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এলো।
তমাল আবার একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বললো, বুঝলে শালী, কেসটা ভীষণ জটিল! অনেক কিছুই বুঝতে পারছি, কিন্তু মোটিভটাই এখনো ধরতে পারছি না। তোমার এক্সট্রা-অর্ডিনারি কৌশলও ফেল মেরে গেলো। বীর্য ছাড়া সমাধান কিছুই বেরোলো না।
শালিনী বললো, হতাশ হবেন না বস্! আই অ্যাম অলওয়েজ অ্যাট ইয়োর সার্ভিস! একবারে না হইলে চোষো শতবার!
দু'জনেই হো হো করে হেসে উঠলো শালিনীর কথায়। তারপর তমাল বললো, এবারে একটু ঘুমিয়েনি ডিয়ার। রাতে ভূত ধরা অভিযান আছে। রাত জাগতে হবে। শালিনী ঘাড় নেড়ে বাধ্য মেয়ের মতো ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো !
প্ল্যান অনুযায়ী রাত ন'টার ভিতরে ডিনার করে রেডি হয়ে গেলো রতন আর তমাল। একটা কালো প্যান্ট আর কালো টি-শার্ট পরে চুপি চুপি অন্ধকারে মিশে গেল রতন। সঙ্গে একটা শক্তিশালী টর্চও নিয়েছে। লনের ডান দিকের কোনায় বাউন্ডারি ওয়ালের কাছে রতনদের বাথরুমে লুকিয়ে থাকবে রতন। আর তমাল থাকবে ছাদে। শালিনী সঙ্গে আসতে চাইলে নিষেধ করলো তমাল। তাকে থাকতে বললো, কুহেলির সঙ্গে। প্ল্যানটা সমরবাবু, টুসি আর ভূপেনবাবুকে জানানো হলো না। ছাদে উঠে একা একা অপেক্ষা করছে তমাল। মশা ছেঁকে ধরেছে। শব্দ না করে তাদের তাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে সে। এমন কি সিগারেট ধরাতেও পারছেনা উপস্থিতি জানাজানি হওয়ার ভয়ে। অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে গেল তমাল। কিছুই ঘটছে না। ঠান্ডাও লাগছে একটু একটু। ওদিকে রতনও কোনো শব্দ করছেনা। ছেলেটা ঘুমিয়ে না পড়লেই হয়। ঘড়ির লুমিনাস ডায়ালে দেখলো প্রায় একটা বাজে।
এমন সময় হঠাৎ লনের পিছন দিকে দপ্ করে আগুন জ্বলে উঠলো। ওওওহহহ একটা বিভৎস ভূতুরে মুখ নাচতে শুরু করলো। এতো ভয়ঙ্কর কিছু তমাল আশাই করেনি। মুখ দিয়ে দু' ফুট লম্বা আগুন এর হলকা বেরোচ্ছে। চোখ দু'টো লাল আগুন এর ভাটার মতো জ্বলছে। নাচতে নাচতে মুখটা ডাইনে বায়ে সরে যাচ্ছে। সেই ভৌতিক দানবটা কখনো মাটিতে নেমে আসছে, কখনো লাফ দিয়ে দশ বারো ফুট উপরে চলে যাচ্ছে।এতোই বিভৎস দৃশ্য, যে তমালও কয়েক মুহূর্ত জমে পাথর হয়ে গেল। মন্ত্র-মুগ্ধের মতো তাকিয়ে রইলো সেদিকে। তারপর সম্বিত ফিরে পেয়েই ডাক দিলো... রত-অ-অ-ন ! ধরো... জলদি জলদি কুইক!
খটাং করে বাথরুম এর দরজা খুলে বেরিয়ে এলো রতন। বোধহয় সেও ওই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো কয়েক মুহুর্ত। তারপরেই দৌড় দিলো ভূতুরে মুখ লক্ষ্য করে। তমাল দ্রুত নেমে এলো ছাদ থেকে। দুরন্ত গতিতে ডান দিকের দরজা খুলে টাইলস বসানো রাস্তা ধরে ছুটলো লনের দিকে। ছুটতে ছুটতে তমাল রতনের আর্তনাদ শুনতে পেলো। ওওওহহহ মাআআ গোওওও। মরে গেলাম তমালদা.... বাঁচান।!!!
চিৎকার চেঁচামেচিতে ততক্ষণে সবাই উঠে পড়েছে। দরজা খুলে বেরিয়ে এলো নীচতলার সবাই। কুন্তলা, কুহেলি আর শালিনী জানালা থেকে মুখ বার করে দেখার চেষ্টা করছে। সমরবাবু আর ভূপেনবাবু বেরিয়ে এসেছে ঘর থেকে। তাদের একটু পিছনে টুসিও চলে এলো।
তমাল ততক্ষণে পৌঁছে গেছে রতনের কাছে। যন্ত্রণায় মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছে রতন। তমাল তাড়াতাড়ি তার হাত ধরে তুলতে যেতেই আবার চিৎকার করে উঠলো সে.....
আআয়ায়ায়ায়ায়ায়াহহহ্ উউউউউউফফফ্ মাআআ গোওওও! তমাল হাত ছেড়ে দিলো। রতন বাঁ হাত দিয়ে ডান হাতটা চেপে ধরে কাতরাচ্ছে। তার কোমর ধরে টেনে তুলল তমাল। বললো, কি হয়েছে রতন?
তখনও যন্ত্রণায় গুঙিয়ে চলেছে সে। কোনো রকমে বললো, ডান হাতটা বোধহয় ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে তমালদা। সমরবাবু আর ভূপেনবাবু পৌঁছে গেছে সেখানে। সবাই মিলে ধরাধরি করে রতনকে বাড়িতে নিয়ে আসা হলো। পিছনে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে আতঙ্কে কাঁপছে টুসি।
তমাল দেখল রতনের ডান হাতে একটা গভীর ক্ষত হয়েছে। রক্ত চুইয়ে পড়ছে সেখান থেকে। ভালো করে দেখতে যাবার জন্য হাতটা ধরতেই রতন আবার চিৎকার করে উঠলো। সম্ভবত হাড় ভেঙ্গে গেছে । তমাল নিজের ওষুধের বাক্সটা এনে খুব সাবধানে ক্ষত পরিষ্কার করে একটা হালকা ব্যান্ডেজ করে দিল। একটা পেইন কিলার আর একটা কড়া ঘুমের ওষুধ দিল রতনকে। তারপর তাকে তার বিছানায় শুইয়ে দিল। ওষুধ কাজ করা শুরু করতেই রতনের গোঙানি কমে এল। তমাল বললো, এবার বলো কি হয়েছিল?
কথা বলার আগে রতন জল চাইলো। টুসি দৌড়ে গিয়ে জল এনে দিল। রতন বললো, আপনার ডাক শুনে বেরিয়ে এলাম। বাইরে এসেই দেখি সেই ভয়ানক মুখটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কয়েক মুহূর্ত ভয়ে পাথর হয়ে গেলাম। তারপর যা হয় হবে ভেবে দৌড় দিলাম ওর দিকে। উউউফফফ তমালদা কি তাপ! যেন পুড়িয়ে দেবে! এমন হল্কা বেরোচ্ছিলো ওটার মুখ দিয়ে আগুনের। কাছে যেতেই সেটা আরও লম্বা হয়ে আমাকে ছুঁয়ে ফেলল। প্রায় চোখ ধাঁধিয়ে গেল। টর্চটা কোমরে গোঁজা ছিল। সেটা বের করতে চেষ্টা করতেই আগুন নিভে গেল। টর্চটা হাতে বের করে এনে জ্বালতে যাবো, তখনি অসহ্য ব্যথায় কুঁকড়ে গেলাম। মনে হল আমার হাতের ওপর পাহাড় ভেঙ্গে পড়লো। প্রচন্ড গরম একটা কিছু বাড়ি মারলো আমার হাতে। চোখে অন্ধকার দেখলাম মাথা ঘুরে পরে গেলাম আমি। তারপর তো আপনি পৌঁছে গেলেন। এত অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছিলো যে আমি কিছুই মনে করতে পারছিলাম না।
ঘর ভর্তি লোক, কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় সেখানে কবরের নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। ঘুমের ওষুধে চোখ জুড়ে আসছে রতনের। তমাল সবাইকে ইশারা করলো চলে আসতে। বেরিয়ে আসার সময় পিছন থেকে জড়ানো গলায় ডাকলো রতন, তমালদা?
তমাল ঘুরে তাকিয়ে বললো, বলো রতন?
রতন বললো, কী ছিল ওটা তমালদা ! কী ওটা? হে ভগবান !
তমাল দু' পাশে মাথা নাড়লো। বললো, জানি না! সত্যিই জানি না রতন! আমার নিজেরই বিচার বুদ্ধি ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। আমার জন্যই তোমার আজ এই দুরবস্থা হলো। এখন প্রথম কাজ সকাল হলেই তোমাকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়া। তবে তোমাকে কথা দিচ্ছি রতন, তোমার এই দুরবস্থা যেই করুক, সে মানুষ, ভূত বা ভগবান যেই হোক, আমার হাত থেকে তার নিস্তার নেই। শাস্তি তাকে দেবোই। এখন ঘুমাও আর একটাও কথা নয়।
একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল রতন। তারপর চোখ বন্ধ করে নিল। তমাল বাইরে বেরিয়ে এসে দরজা ভেজিয়ে দিল।
কুহেলির ঘরে এসে বসলো সবাই। কারো মুখে কোনো কথা নেই। তমাল ভুরু কুঁচকে মুখ নিচু করে রয়েছে। বাকিরাও চুপ করে রয়েছে। হঠাৎ তমাল উঠে দাঁড়ালো বললো, শালিনী এসো আমার সঙ্গে। বলে দরজার দিকে হাঁটতে শুরু করলো। কুন্তলা বললো, কোথায় যাচ্ছো তমালদা? তমাল বললো, লনে। কুহেলি আর কুন্তলা দু'জনেই আঁতকে উঠলো। কুন্তলা বললো, না না তোমাকে এক্ষুণি কিছুতেই যেতে দেবো না ওখানে। কুহেলিও সায় দিলো তার কথায়। কুন্তলা বললো, আমিই তোমাকে ডেকে এনেছি, কিন্ত আমার জন্য তোমাকে বিপদে পড়তে দেবো না আমি। এক্ষুণি কিছুতেই তুমি ওখানে যেতে পারবে না।
তমালের চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো বললো, ডেকে তুমি এনেছিলে ঠিকই কুন্তলা, কিন্তু এখন আর এটা তোমার কেস নয়। আমার জন্য একটা ছেলের ভয়ংকর বিপদ হতে যাচ্ছিলো। অলরেডি সে ভীষণ ভাবে আহত। এটা এখন আমার ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ কুন্তলা। এর শেষ আমাকে দেখতেই হবে। ভেবো না, আমার কিছু হবে না। এসো শালিনী। কাউকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে শালিনীকে নিয়ে বেরিয়ে এলো তমাল।
ঘটনার জায়গায় এসে টর্চ জ্বাললো তমাল। চারপাশে আলো ফেলে ফেলে খুঁজতে লাগলো সে। লনের ভিতরে রতনের টর্চটা পরে থাকতে দেখলো। তুলে নিলো সেটা। কাঁচ ভেঙে গেছে। তবে জ্বলছে টর্চটা। তমাল সেটা শালিনীর হাতে ধরিয়ে দিলো। দু'জনে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে লাগলো কোনো পরে থাকা সূত্র।
টাইলস বিছানো রাস্তার একটা জায়গায় এসে থমকে দাঁড়ালো তমাল। বসে পড়লো হাঁটু মুড়ে। টর্চ এর আলো ফেলে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখলো। তারপর শালিনীকে ডাকলো, শালি একটু এদিকে এসো তো? শালিনী এসে তমালের নজর অনুসরণ করে রাস্তার উপর তাকালো। কালো কালো কয়েকটা টুকরো জিনিস পরে থাকতে দেখলো। জিজ্ঞেস করলো, কি এগুলো বস? তমাল বললো, জানিনা। পকেট থেকে রুমাল বের করে টুকরো গুলো তুলে রুমালে জড়িয়ে রাখলো। তারপর পাঁচিল এর গায়ে আলো ফেলে খুঁজলো অনেকক্ষণ। পাঁচিলটা পুরানো, অনেক দিন এর। প্লাস্টার খুলে গেছে অনেক জায়গায়। ইট গুলোর খাঁজে মশলাও খসে গেছে বেশ কিছু জায়গায়।পাঁচিল এর খুব কাছে গিয়ে মনোযোগ দিয়ে কি যেন দেখলো তমাল। ভুরু কুঁচকে গেলো তার। তারপর রতনদের বাথরুমে এসে ঢুকলো দু'জনে।
বেশ বড়সড় বাথরুম। বাথরুম না বলে স্টোর রুম বলাই ভালো। এক সময় হয়তো বাগান করার জিনিস পত্র রাখার স্টোর রুমই ছিলো এটা। এখনো এক পাশে ভাঙ্গা চোরা লোহা লক্কর পড়ে আছে। ভাঙ্গা টিন, ছোটো ছোটো করে কাটা অনেক লোহার রডের টুকরো, বোধহয় বাড়ির জলের পাইপ বদলানোর পরের অবশিষ্ট টুকরো, ভাঙ্গা কোদাল, জল দেবার ঝাঁঝরি, আরও হাবিজাবি কতো কিছু! এক পাশটা পরিষ্কার করে বাঁধিয়ে নিয়ে স্নানের জায়গা করা হয়েছে। পাশেই একটা বড় চৌবাচ্চা। ভিতরে অর্ধেক জল জমে আছে। কিন্তু অনেক দিনের নোংরা জল, ব্যবহারের অযোগ্য। কালো হয়ে আছে ময়লা জমে জমে। তার পাশে একটা ঘেরা জায়গায় টয়লেট। তবে ফ্রেশ জলের উৎস নেই কোথাও। জল বোধহয় বাড়ির ভিতরে থেকে বয়ে আনতে হয়।
অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করে আর দেখার মতো কিছু পেলোনা ওরা। ফিরে এলো বাড়িতে। ওদের ফিরতে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো কুহেলি আর কুন্তলা দু'জনে। শালিনীকে কুহেলির সঙ্গে রেখে তমাল আর কুন্তলা যার যার ঘরে চলে গেলো।
ন'টা নাগাদ ঘুম ভাঙলো তমালের। রতনের কথা মনে পড়তেই তড়াক্ করে লাফিয়ে উঠলো। ইসসস কতো বেলা হয়ে গেলো! ছেলেটাকে আরও আগে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিলো। অপরাধবোধে মনটা ভার হয়ে গেলো তমালের। দ্রুত পায়ে রতনের ঘরে ঢুকে দেখলো রতন বসে চা খাচ্ছে। ডান হাতটা জুড়ে বিশাল এক ব্যান্ডেজ।
তমালকে দেখে মিটিমিটি হাসছে রতন। বললো, আপনি ঘুমোচ্ছেন, তাই আর ডিস্টার্ব করিনি তমালদা। টুসিকে নিয়েই চলে গেছিলাম ডক্টর সেনের কাছে। একটুর জন্য বেঁচে গেছি তমালদা। হাড় টুকরো হয়নি, তবে চির ধরেছে। আর ক্ষতটাও বেশ ডিপ। ডক্টর সেন বললো, প্লাস্টার করলে ভালো হতো। কিন্তু ক্ষতটা না শুকালে প্লাস্টার করা যাবে না। ক্ষতটা বিষিয়ে যেতে পারে। তাই এই মোটা গাম্বুষ সাইজ ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। আর বলেছে হাত একদম না নাড়াতে। অবশ্য উনি না বললেও আমি নাড়াতে পারতাম না। এখনো অবশ হয়ে আছে। একটু নাড়লেই প্রচন্ড ব্যাথা লাগছে। ওষুধ দিয়েছেন। বললো, পনেরো কুড়ি দিনেই ভালো হয়ে যাবো। দাঁত বের করে হাসলো রতন।
তমাল বললো, স্যরি কিভাবে যে এতো ঘুমিয়ে পড়লাম! আমারই তোমকে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিলো ডক্টরের কাছে। আচ্ছা আমি ডক্টর সেনের সাথে দেখা করে ওষুধ পত্র কিনে আনবো।
রতন বললো, ধুর দাদা, কী যে বলেন আপনি? ডক্টর সেন আমাদের কনস্ট্রাকশন কোম্পানির বাধা ডাক্তার। কনস্ট্রাকশনের কাজ করতে গিয়ে এরকম কতো ছোটখাটো আঘাত লাগে। ডক্টর সেনকেই তো দেখাই। আপনি দুর্গাপুর তো ভালো করে চেনেন না, তাই আমি আপনাকে বিরক্ত না করে টুসিকে নিয়ে ডাক্তার বাবুকে দেখিয়ে এলাম। উনি তো প্রথমে দেখে বললো, কী রে রতন, কাজ থেকে ফাঁকি মারার জন্য নাটক করছিস না তো? তারপর দেখেটেখে নিজেই এক্স-রে করে ছুটি লিখে দিলেন পনেরো দিনের। ওষুধ পত্রও সব কিনে এনেছি দাদা, আপনি ব্যস্ত হবেন না। বলে আবার হাসতে লাগলো রতন।
টুসি রতনের খুব খেয়াল রাখছে। তাকে ভাত মাখিয়ে খাইয়েও দিচ্ছে। ভূপেনবাবু পাঁচন গেলার মতো ব্যাজার মুখ করে সব দেখছেন। কিন্তু কিছু বলতে পারছেন না। সারাদিন সবাই মনমরা হয়ে রইলো কাল রাতের ঘটনার জন্য। দিনটা কিভাবে চলে গেলো, বোঝাই গেলো না।
রাতে ডিনারের পরে শালিনী এলো তমালের ঘরে। দু'জনে কেসটার নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে অনেক রাত হয়ে গেলো। বেশ কয়েকটা সিগারেট খেয়েছে তমাল ইতমধ্যেই। ঘরটা ধোঁয়ায় ভর্তি হয়ে গেছে দেখে শালিনী জানালা খুলে দিলো। বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিলো শালিনী। অল্প অল্প তাজা বাতাস আসছে, বেশ ভালো লাগছে তার। হঠাৎ চাপা গলায় ডাকলো শালিনী, বস্... কুইক! এদিকে আসুন!
লাফ দিয়ে শালিনীর কাছে পৌঁছে গেলো তমাল। ওদের ঘরে ডিম লাইট জ্বলছিলো। তাই অন্ধকার হয়ে আছে ঘরটা। দু'জনেই দেখলো একটা ছায়ামূর্তি আস্তে আস্তে হেঁটে যাচ্ছে টাইলস বিছানো রাস্তা ধরে। আবছা আলোতেও মূর্তিমানকে চিনতে পারলো ওরা। সমরবাবু। পা টিপে টিপে এসে নীচের জানালায় টুসির ঘরে উঁকি দিলো। তারপর ফিরে চললো যে পথে এসেছিলো সে পথ ধরে। তমাল বা শালিনী কেউ কোনো শব্দ করলো না। তমাল চট্ করে দরজা খুলে সিঁড়ির উপর দিয়ে নীচে তাকালো। ভালো ভাবে নজর করে হাসি খেলে গেলো তার মুখে। ফিরে এসে শালিনীকে বললো, যাও অনেক রাত হয়ে গেছে, কুহেলির কাছে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। শালিনী চলে গেলো কোনো প্রতিবাদ না করে।
ঘণ্টা খানেকও যায়নি, তমালের দরজায় জোরে জোরে কেউ ধাক্কা মারতে শুরু করলো। দরজা খুলে দেখলো শালিনী আর কুহেলি দু'জনেই দাঁড়িয়ে আছে। শালিনী বললো, জলদি আসুন বস্। তমাল ওদের সাথে কুহেলির ঘরে ঢুকে দেখলো ঘরের মেঝোতে একটা বড়সড় মুরগি পরে আছে। গলাটা কাটা! মাথাটা অল্প একটু স্কিন এর সাথে ঝুলছে। মুরগিটার বুকের ঠিক মাঝখানে একটা বিশাল সস্তা ছুরি আমূল গাঁথা রয়েছে। ছুরিটা মুরগির পিঠ ফুটো করে পিছন দিকে বেরিয়ে রয়েছে। বুকের কাছটা রক্তে লাল হয়ে আছে।
তমাল মুরগিটা নেড়েচেড়ে বললো, এখনো এটার রোস্ট করা যেতে পারে, বেশিক্ষণ মারা যায়নি বেচারি। তারপর বললো, একদম ভয় পেও না। ভূতের মুরগি মারতে ছুরির দরকার হয় না। তারপর তমাল মুরগির বুক থেকে ছুরিটা বের করে নিলো আর সেটার পা ধরে ঝুলিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে চলে এলো। টুসির দরজায় নক্ করলো সে। টুসি দরজা খুলতেই মুরগিটা টুসিকে দিয়ে বললো, কাল সকালে এটা রান্না করে দিও তো? জলখাবারে কাল লুচি আর মাংস খাবো।
টুসির চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। বললো, এতো রাতে মুরগি কোথায় পেলেন? তমাল বললো, বিকালে কিনে এনেছিলাম। এক্ষুনি মেরে নিয়ে এলাম। চামড়া ছাড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দাও, সকালে রান্না করবে। বিস্ময়ে হাঁ হয়ে যাওয়া টুসির দিকে পিছন ফিরে সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠে এলো তমাল আর একটাও কথা না বলে।
তমাল শালিনী আর কুহেলি কে জিজ্ঞেস করলো, জানালা খোলা রেখেছিলে বুঝি? দু'জনে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। তমাল বললো, কাঠের পাল্লাটা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ো। আজকের কোটা শেষ। আর কোনো উপদ্রব হবে না আজকের মতো। গুড নাইট।
পরদিন সকালে কুন্তলা চা নিয়ে এসে ঘুম ভাঙালো তমালের। বললো, তমাল, বাড়ির পিছনে একটা কান্ড হয়েছে এসে দেখো।
তমাল চায়ে চুমুক দিয়ে বললো, আবার কি কান্ড হলো?
কুন্তলা বললো, কুহেলির ঘরে গিয়েই দেখো না?
তমাল আবার কোনো রক্ত মাখা বস্তু পড়েছে জানালা দিয়ে অনুমান করতে করতে পৌঁছে গেলো কুহেলির ঘরে। কিন্তু সেরকম কিছুই দেখতে পেলো না। তার বদলে দেখলো শালিনী আর কুহেলি জানালা দিয়ে কি যেন দেখছে।
তমাল বললো, গুড মর্নিং সুইট লেডিস! কি দেখা হচ্ছে এতো মনযোগ দিয়ে?
দু'জনেই ঘুরে তাকিয়ে বললো, গুড মর্নিং! এসে দেখো না কি হয়েছে!
তমাল জানালার কাছে এসে দেখলো লনের পাঁচিলের পিছনে মানুষ আর পুলিশে গিজগিজ করছে। বললো, ওরে বাবা! এতো পুলিশ কেন? কি হয়েছে?
কুহেলি বললো, কাল রাতে গয়নার দোকানে চুরি হয়েছে। পুলিশ এসেছে তদন্ত করতে। পুলিশ আর গোয়েন্দারা খুব ছোটাছুটি করছে চারদিকে।
তমাল বললো, যাক ভালোই হয়েছে। এখন কয়েকদিন পুলিশ পোস্টিং থাকবে ওখানে। তোমাদের বাড়িতে আর ভূত আসতে পারবে না ওদের সামনে দিয়ে।
পিছনে কুন্তলা এসে দাঁড়িয়েছিলো। বললো, বড় রকম চুরি হয়েছে মনে হয়। দেখো পুলিশ এর বেশ উঁচু অফিসাররাও এসেছে।
দোকানটা বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে। পুরো লনটার ওপাশে ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছে না। তবুও পুলিশের ইউনিফর্ম দেখে পদমর্যাদা বোঝা যাচ্ছে পরিষ্কার।
তমাল বললো, যাক্! ওদের নিজেদের কাজ করতে দাও। আমরা বরঞ্চ দেখি কাল রাতের মুরগিটার কি ব্যবস্থা করলো টুসি। সবাই মিলে নিচে চলে এলো।
সত্যিই টুসি মুরগিটা দিয়ে কষা মাংস রান্না করেছে, সঙ্গে পরোটা। তমাল সবার আগে রতনের ঘরে গেলো। রতন তখনও ঘুমাচ্ছিলো। তমাল ঢুকতেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো তার। কোনো রকমে উঠে বসলো সে। লাজুক হেসে বললো, ছুটি তো পাই না? তাই আজ কাজে যেতে হবে না দেখে একটু আলসেমি করছি তমালদা।
তমাল বললো, থাক্ থাক্, তুমি রেস্ট নাও। তোমার হাতের ব্যথা কেমন?
রতন বললো, হাত এখনো নাড়াতে পারছি না। আর ব্যথাও আছে ভালোই। ওষুধ খেলে একটু কম থাকে। ওষুধ এর প্রভাব কেটে গেলে টনটন করে হাতটা। আর খুব দুর্বলও লাগছে
তমাল বললো, শুনেছো, পিছনের গয়নার দোকানে চুরি হয়েছে?
রতন বললো, তাই নাকি? বলেন কি? কাল রাতে? ওহ্ বড় দোকান! অনেকটাকার মাল ছিল।
তমাল বললো, গেছিলে নাকি ভিতরে? রতন বললো, হ্যাঁ গেছি তো। ওদের সব গেট, গ্রিল তো আমরাই বানিয়ে দিয়েছিলাম।
তমাল বললো, ও আচ্ছা।

kingsuk25@ জিমেইল ডট কম


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)