24-11-2025, 05:37 PM
।। এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান ।।
আপনি এখানে থাকতে পারবেন মিসেস মিত্র! " পুলোকেশ একটু বিস্ময় প্রকাশ করে বলে।
' কেনো, আমি তো কোনো অসুবিধা দেখছি না..... মাথা গোজার একটা ঠাঁই নিয়ে তো কথা ' অনামিকা বলে।
" হুঁ সেটা ঠিক..... কিন্তু আমাদের ওখানে আপনার সমস্যাটা কি হচ্ছিলো? ' পুলকেশ বলেন।
' আসলে আমি একটু একান্তে নিজের মত করে থাকতে চাই' অনামিকা বলে।
' দেখুন..... আপনার সমস্যা না হলেই হল। "
কলেজের পাশেই একটা একতলা বিল্ডিং এ অনামিকা আর আরো এক ফিমেল স্টাফ এর একসাথে থাকার ব্যাবস্থা করা ছিলো। কিন্তু অনামিকার সেটা পছন্দ না। কারো সাথে রুম শেয়ার করে থাকাটা ভালো লাগে না ওর। কাজের বাইরে ব্যাক্তিগত জীবনটা একটু একাকী থাকতেই ভালো লাগে। সেই কারনে কলেজের আশেপাশে একটা ঘর চাইছিলো। এখানে পাকা বাড়ি প্রায় নেই বললেই চলে। কাছেই একটা গ্রাম আছে। সেখানে সবাই প্রায় আদিবাসী। স্কু*লের রান্নার লোক ফুলমনি খুব ভালো মহিলা। বছর ত্রিশের ফুলমনি অনামিকাকে এই ঘরের সন্ধান দেয়। এখানে কেউ ঘরভাড়া দেয় না। দেবে কি, দেওয়ার মত ঘরই নেই কারো। গ্রামের একেবারে প্রান্তে এই ঘরের মালিক ছিলেন এক বৃদ্ধা। গত এক বছর তিনি মারা যাওওয়ার পর এই ঘর এভাবেই পড়ে ছিলো। সম্পর্কে ফুলমনির আত্মীয়া ছিলেন ওই মহিলা। তিনকুলে কেউ নেই। ফুলমনি গ্রামের সবাইকে বলে অনামিকার এখানে থাকার ব্যাবস্থা করে দিয়েছে। শহরের দিদিমনি তাদের গাঁয়ে তাদের সাথে থাকবে এটা যেনো গ্রামের মানুষের কাছে বিরাট গর্বের। সবাই মিলে এই বাড়ি পরিষ্কার করে দেয়। মাটির সুন্দর করে লেপা দেএয়ালে রঙ দিয়ে আলপনা আঁকা। উপরে খাপড়ির টালির চাল। ফুলমনি নিজের হাতে ঘর বারান্দা উঠান লেপে পুছে সুন্দর করে দেয়। অনামিকা এর আগে মানুষের এতোটা ভালোবাসা কখনো দেখে নি। কেউ না অনামিকা ওদের, কোনো স্বার্থ নেই.... তবুও প্রত্যেকে কত খুশী ও এখানে থাকবে বলে।
পাশাপাশি দুটো ঘর। একটা ঘরে একটা শালকাঠের তক্তপোষে বিছানা পেতেছে। একটা সস্তা কাঠের আলনা জামাকাপড় রাখার জন্য। অন্য ঘরে একটা টেবিল আর দুটো চেয়ার। বারান্দায় ঘেরা জায়গায় রান্না করার ব্যাবস্থা। উনুনে রান্না করা অভ্যাস নেই অনামিকার তাই ও একটা ছীট গ্যাস ওভেন আনিয়ে নিয়েছে। গ্রামে কারেন্ট এসে গেছে। এই বাড়িতে একটা লাইটের ব্যাবস্থা করে দিয়েছে কিন্তু ফ্যান নেই। লাগবেও না। মাটির ঘরে বেশ ঠান্ডা, তাছাড়া চারিদিকে বড়ো বড়ো গাছ বাড়টাকে এমন ভাবে ঘিরে রেখেছে যে ছায়ার অভাব নেই।
অনামিকার বড় ভয় ছিলো বাথরুম নিয়ে। কিন্তু এখানে প্রায় সব বাড়িতেই সরকারী টাকায় পায়খানা আর বাথরুম করা আছে। যদিও বাথরুমের মাথায় ছাদ নেই। শুধু দেওয়াল ঘেরা। তাতে অনামিকার কোনো অসুবিধা হবে না। ও বাড়িটা দেখে খুব খুশী হয়েছিলো।
স্কু*ল এখান থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ। ওর বাড়ির সামনে থেকে লালমাটির রাস্তা একটু এগিয়েই পিচ বাঁব্দানো রাস্তায় উঠেছে। রাস্তার দুই পাশে ঘন শাল সেগুনের বন।
অনামিকা এখানে থাকবে শুনে পুলোকেশ আজ দেখতে এসেছিলেন। অনামিকাকে উনি নিষেধ করেন নি। বরং এমন পরিবেশের প্রতি অনামিকার টান দেখে খুশী হয়েছিলেন। যাওয়া আগে একবার বলেন,
" যাই হোক, আপনি তরুনী আর একা, একটু সাবধানে থাকবেন..... যদিও এখানকার সবাই খুব সৎ আর ভালো স্বভাবের, তবুও......... " কথা না শেষ করেই বিদায় নেন পুলোকেশ।
দীপ্তর শরীর সুস্থ না হওয়ায় উদবোধনের দিন এখানে আওস্তে পারে নি অনামিকা। পুলোকেশকে বলে একদিন পরে আসার অনুমতি নিয়ে নিয়েছে। চলে আসার সময় দীপ্ত সাথে আসতে চেয়েছিলো কিন্তু অনামিকাই নিষেধ করে।
" থাক আর গিয়ে কাজ নেই, এবার অফিসে জয়েন।কর, অনেকদিন হয়ে গেলো। "
থমথমে মুখে দীপ্ত ওকে বিদায় দেওয়ার আগে বলে, " অনুদি, তোমাকে অনেক কথা বলার ছিলো...... এই কদিনে বহুবার বলতে চেয়েও পারি নি.... একদিন তোমার ওখানে যাবো, তাড়িয়ে দিও না কিন্তু। " ওর গলার স্বর আবেগে ভরা, চোখ ভেজা।
অনামিকা এসে দীপ্তকে জড়িয়ে ধরে নিসঙ্কোচে। তারপর বলে, " আমার কাছে যাওয়ার আবার পারমিশন লাগিবে নাকি তোর? ..... যখন মন চাইবে চলে যাবি। "
কথা অনামিকারও ছিলো। অনেকগুলো ধোঁয়াশা নিয়েই চলে যাচ্ছে ও। প্রশ্নগুলো করা হলো না, জানা হলো না দীপ্তর অন্তরালে কি লুকিয়ে আছে। এর জন্য তো আবার দীপ্তকে আসতেই হবে ওর কাছে । অনামিকা জানে দীপ্ত আসবে.... নিজের তাগিদেই আসবে।
আজ পল্লবী একেবারে লালীর মত সাজে সেজেছে। নাকে নথ, মাথার চুল টেনে বাঁধা খোপা করে। খোপায় ফুল, পরনে হলুদ শাড়ী আর লাল ব্লাউজ। শাড়ী হাঁটুর নীচ পর্যন্ত। বেশ লাগছে ওকে। রাজু ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো।
মাথার ফুল ঠিক করতে করতে আড়চোখে ওর দিকে তাকায় পল্লবী, " কিরে..... হাঁ করে আছিস? ভালো লাগছে না নাকি খুব ভালো লাগছে?"
রাজু হেসে আঙুলের মুদ্রায় বোঝায় দারুণ লাগছে। পল্লবী মুখ বেঁকিয়ে হেসে ফেলে।
" এ দিদি তোর এখনো সাজাটা হয় লাই? " লালী ভিতরে এসে তাড়া দেয়। তারপর পল্লবীর দিকে তাকিয়ে চোখ বড়ো করে, " কি সুন্দর লাইগছে বটে তুকে, মোর গাঁয়ের মরদগুলা তো তুকেই দেখবে রে দিদি। " লালী হেসে ফেলে।
ঠোঁটে একটু হালকা লিস্পস্টিক দিয়ে পল্লবী হাসে, " বলছিস? তাহলে তোর গাঁয়ের কোন মরদকে বিয়ে করে এখানেই থেকে যাবো..... কি বলিস? "
" হাঁ.....তুর সমান মরদ আমাদের গাঁয়ে কেনো, পাশের দশটা গাঁয়েও না আছে...... কত পড়ালেখা করেছিস তুই,। " পল্লবীর ইয়ার্কিটা একেবারে সহজ ভাবে নিয়েছে লালী। রাজু মুখ টিপে হাসে।
আজকে করম পুজা। লালীদের সব থেকে বড়ো পরব। লালীদের গাঁয়ের মাঠে বিশাল মেলা আর সারারাত নাচ গানের অনুষ্ঠান। এটা শোনার পরেই পল্লবী মেলায় যেতে চায়। লালীতো এক পায়ে খাড়া। পল্লবী যাবে শুনে ওর কি উৎসাহ।
" মেলা দেখে তোরা আজ আমার ঘরে খাবি.... " লালী সোৎসাহে বলে।
" না না..... তুই আবার এতো কষ্ট কেনো করবি? " পল্লবী বাধা দেয়।
" কষ্টটা কিসের বটে? তূরা হামার ঘরে পথম আসবি আর আমি দুটা ভাত রেঁধে তুদের খাওয়াতে পারব না? ..... ইটা কথার মত কথা হলো? " লালী কোমরে হাত রেখে ঝাঁঝিয়ে ওঠে।
" আচ্ছা বাবা আচ্ছা..... খাওয়াবি, তাহলে তোর বাড়িতেই আমরা থেকে যাবো। " পল্লবী বলে।
এবার লালী একটু দমে যায়, " সেতো সমস্যা নাই, কিন্তু আমার ঘরটায় পাখা নাই তো.... তুরা কষ্ট পাবি গরমে। " লালী করুন মুখে বলে।
" চিন্তা নেই, একরাত পাখা ছাড়া থাকলে মরে যাবো না। "
লালী খুশী হয়।
লালীর গ্রাম হাঁটাপথে প্রায় আধ ঘন্টা লাগে। আঁকা বাঁকা উঁচু নীচু পথ পার করে এগোয় ওরা। আজ পথে অনেক লোক দেখা যাচ্ছে। সবাই মেলায় যাচ্ছে। না হয় ফিরছে। এভাবে মেলা দেখতে কোনদিন যায় নি রাজু। মেলা জিনিসটাই জানে না ও ঠিকমত। কলকাতায় দু বার বইমেলায় গেছে বাবা মার সাথে। সেখানে মেলাটা দেখে ওর সেভাবে ভালো লাগে নি। চারিদিকে বই ছাড়াও হরেক রকম স্টল, আর মানুষের বই নিয়ে যতটা না উৎসাহ তার থেকে বেশী উৎসাহ খাবার আর গান বাজনা নিয়ে। কিন্তু এখানে মেলা দেখে অবাক ও। একটা ছোট পাহাড়ের পাশে বিরাট খোলা মাঠে মেলা বসেছে। মাঝখানে আদিবাসী গান নৃত্য চলছে। সব অবিবাহিত মেয়েরা একসাথে হাত ধরাধরি করে নাচছে গান আর মাদলের তালে তালে..... এইসব নাচ গান চলবে আজ সারারাত।
মাঠের চারিদিকে দোকান পাট ভর্তি। সেখানে ঝুড়ি কুলো থেকে কাপড় গামছা, খেলনা, মাটির বাসন, চুড়িমালা সব আছে। আর আছে অনেক খাওয়ারের দোকান। এখন্নেইসব মেলাতেও চাউমিন এগরোল ঢুকে গেছে।
চারিদিকে রঙ বেরঙের মানুষের ছড়াছড়ি। সবাই হাসি খুশী। বেশ ভালো লাগে পল্লবীর। শহরের মানুষ কত আমোদ প্রমোদের সম্ভার নিয়েও অখুশী আর এরা সামান্য মেলাতে এসেই মনে হচ্ছে সারা পৃথিবী হাতের মুঠোয় পেয়ে গেছে।
অনেক সময় ওরা মেলাতে ঘোরাঘুরি করে। পল্লবী নিজে কেনে কাঁচের চুড়ি সেই সাথে কিনে দেয় লালীকেও। রাজু ভেবেছিলো নেহাৎই আদিবাসীদের মেলা হবে, কিন্তু অনেক শহরের মানুষকেও দেখা গেলো উৎসাহ নিয়ে মেলাতে ঘুরতে। কেউ কেউ নিজের ক্যামেরা বা মোবাইল নিয়ে ভিডিও করতে ব্যাস্ত। সবই এখন সোসাল মিডিয়ার চক্কর, আদিবাসীদের এই একান্ত অনুষ্ঠানকে তুলে ধরেই লাখ লাখ ভিউ কামানোর ধান্দা।
সন্ধ্যার পর ওরা মেলা থেকে বেরিয়ে আসে লালীর বাড়ি। মেলার প্রায় কাছেই লালীর গাঁ। প্রায় পঞ্চাশটা আদিবাসী পরিবার থাকে এখানে। লালীর বর থাকে বাইরে, তাই লালীও এখানে থাকে না.... তবে রোজ একবার আসে, বাড়িঘর পরিষ্কার করে রেখে যায়। মাটির বাড়ির উপরে টিনের ছাউনি, পরিষ্কার নিকানো উঠান, ...... উঠানে হাঁস মুরগীর খালি খাঁচা। আগে পুষতো, এখন এখানে থাকে না বলে আর পোষে না। লালী উৎসাহ সহকারে ওদেরকে নিজের বাড়িঘর ঘুরিয়্ব দেখায়। তারপর ঘরে নিয়ে বসায়।
ঘরে একটা শালকাঠের মাচা করা। সেখানেই বসতে দেয় ওদের। এমন বাড়িতে এর আগে আসে নি রাজু, যেনো একেবারে রুপকথার গল্পের মতো। এখানে সবাই ঘর বানাতে ওস্তাদ। এতো সুন্দর পরিচ্ছন্ন বাড়ি যে আদিবাসীদের হতে পারে সেটা ও জানতো না। এখানে এসে ভুল ভেঙে গেলো ওর।
পল্লবীর মন আজ খুব খুশী। লালী ওদের খাওয়ারের যোগার করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। একটা বড়ো বাটিটে মুড়ি, সাথে লঙ্কা আর আলুর চপ এনে দেয়।
" এখন তুরা ইটা খা, আমি রাতের খাবারটার যোগার করি। " লালী বলে।
পল্লবী একমুঠ মুড়ি তুলে নিয়ে মুখে দিয়ে চেবাতে চেবাতে বলে, " সেতো করবি কিন্তু আসল জিনিসটা কখন পাবো? "
লালী অবাক হয়ে তাকায়, " আসল জিনিস কি আছে রে দিদি? "
পল্লবী বলে, " ধুর, এখানে এসে একটু মহুয়া যদি টেস্ট না করি তাহলে তো আসাই বৃথা। "
" ইশ.... তুমি মদ খাবে? " রাজু চেঁচিয়ে ওঠে।
" কেনো আদুরে বাবু...... মদ খেলে কি জাত চলে যাবে? " পল্লবী ব্যাঙ্গ করে।
" না না.....কিন্তু এই দেশী মদ? " রাজু চোখ বড়ো করে।
" আরে বাবা..... সারাজীবন মহুয়ার গল্পই শুনে এসেছি, বিদেশীরা এর টানে এখানে আসে আর আমি দেশীয় মেয়ে হয়ে একটু টেস্ট করবো না? "
রাজু ঠোঁট উল্টায়,! জানি না...... আমি বাবা খাবো না। "
লালী রাজুর কথায় হেসে গড়িয়ে পড়ে, " ছাড় দিদি..... দাদাবাবুর ডর লাগছে, । "
" ডর লাগার কি আছে? পল্লবীর পাল্লায় পড়েছো বাবা, না খেয়ে যাবে কোথায়? " পল্লবী হেসে ওঠে।
রাতের আঁধারে লালীর উঠানে আগুন ধরিয়ে একটা মুরগী পোড়ানো হয়। লালীর সাথে একটা মাটির হাঁড়ি, তাতে ভর্তি মহুয়ার মদ। পল্লবীর যেনো তর সইছে না, ও বার বার হাড়ির দিকে তাকাচ্ছে।
রাজুর চোখ সভয়ে হাঁড়িটা দেখছে। উফ..... এক বছর আগেও ভাবতে পারে নি এখানে এক আদিবাসী বাড়িতে বসে রাতের বেলায় মুরগী সহযোগে মহুয়া খেতে হবে। মদ ও কোনোদিন খায় নি। শুধু বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে সিগারেটটা মাঝে মাঝে খেতো লুকিয়ে। এখনো মাঝে মাঝেই খায়। বিশেষত উৎকন্ঠা হলে তখন কিন্তু মদের স্বাদ ওর অজানা।
লালী একটা কাঁচের গ্লাসে ঘোলাটে তরল পানীয় ঢেলে এগিয়ে দেয় পল্লবীর দিকে, আর একটা রাজুর দিকে। রাজু ভয়ে ভয়ে নাকের কাছে নিয়ে গন্ধ শোঁকে। একটা উগ্র গন্ধ, কোন চেনা গন্ধ না..... এটা গলায় ঢালবে কিভাবে ও?
এদিকে পল্লবী একবারে পুরো গ্লাস ফাঁকা করে দিয়ে বলে, " ওফ দারুন..... এতোদিনে এখানে আসা সার্থক হলো। " তারপর রাজুকে গ্লাস হাতে বসে থাকতে দেখে বলে, " কিরে খাবি নাকি গলায় ঢেলে দেবো? "
রাজু জানে পল্লবীদির কথা না মানলে সত্যিই গলায় ঢেলে দেবে। এদিকে লালী হেসেই যাচ্ছে। রাজু নাক চিপে কোনোমতে ঢকঢক করে গ্লাস ফাঁকা করে। একটা মেটে মেটে স্বাদ সাথে মিস্টি লাগছে জীভটা। ও একটা রোষ্ট করা মাংস নিয়ে মুখে পোরে।
" এই তো..... দ্যাটস লাইক আ গুড বয়। " পল্লবী হাসিতে ফেটে পড়ে।
প্রথম ভালো না লাগলেও পরের দিকে বেশ লাগছিলো রাজুর। মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে ওর। গা গরম হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। একটু ঘোর ঘোর মতন লাগচে। কিন্তু পল্লবীর যেনো থামার নামই নেই। একের পর এক গ্লাস ফাঁকা করে দিচ্ছে। ওর চোখ ঢুলুঢুলু, কথার থেকে হাসছে বেশী..... কথাটাও জড়িয়ে জড়িয়ে যাচ্ছে।
উঠে দাঁড়ায় পল্লবী, " এই লালী..... তোর টয়লেট কোথায় রে? হিসি পেয়েছে.... " রাজুর হাসি পায়, পল্লবীদি একেবারে পাড়ার পেচো মাতাল টাইপের হয়ে গেছে। ঠিকমতো দাঁড়াতে পারছে না। লালী অনেকটা খেলেও ও একেবারে সুস্থ। ও তাড়াতাড়ি উঠে পল্লবীকে ধরে এগিয়ে নিয়ে যেতে যায়।
লালীর বাড়ির এককোনে চটে ঘেরা বাথরুম। পল্লবী কিছুটা গিয়ে বলে, " থাক ছাড় আমি পারবো, "
লালী তবুও ওকে ছাড়ে না, এবার খেপে যায় পল্লবী, " ওফ.....বললাম না ছাড়, আমি কি মাতাল নাকি? ..... তুই যা। "
লালী সভয়ে পিছিয়ে আসে। কিন্ত পল্লবী বাথরুমের দিকে না গিয়ে উঠানের এক পাশেই বসে পরে। শাড়ী কোমর পর্যন্ত তুলে প্যান্টি নামিয়ে দেয়। ভাগ্য ভালো সেখানে ওরা ছাড়া আর কেউ নেই। লালী কিছু করার আগেই সেখানে বসেই প্রস্রাব করা শুরু করে দেয়। রাজুর চোখেও ঘোর। সামনের উপরে পল্লবীর নগ্ন নিতম্ব দেখে ওর শরীর কেঁপে ওঠে। শক্ত হয়ে ওঠে ওর যৌনাঙ্গ। ওর প্রায় চোখের সামনে পল্লবী প্রস্রাব করছে, পিছন থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
পল্লবী উঠে দাড়িয়ে কাপড় নামায়। তারপর ঘুরে দাঁড়িয়েই পেট চেপে ধরে বমি করে দেয়। মহুয়ার রস সব ওর বমির সাথে বেরিয়ে আসে।
রাজু কোনমতে উঠে গিয়ে পল্লবীকে ধরে। লালী একটা গ্লাসে পরিষ্কার জল এনে দেয়। সেই জলে কুলকুচি করে চোখে মুখে ছেটায় ও। রাজু শক্ত করে চেপে ধরে পল্লবীকে। ও একেবারেই দাঁড়াতে পারছে না।
লালী বলে, " দিদিকে ধরে ঘরে শুয়ায় দে.....ডরাস না, মদের নেশা কেটে গেলেই ঠিক হয়ে যাবে.....তুই ঘরে লিয়ে যা, আমি একটু আমার মাসীর বাড়ি থেকে ঘুরে আসছি।"
তোর মাসীর বাড়ি কোথায়? " রাজু প্রশ্ন করে।
" ই কাছেই আছে..... মাসী একা থাকে, বড্ড ভালবাসে আমায়, তুদের রাতের খাবারটা নিজেই রান্না করছে, আমায় করতে দিলে না একেবারে। " লালী বলে।
লালী চলে যায়। রাজু পল্লবীকে ধরে হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে ঘরে এনে সেই মাচার বিছানায় শুইয়ে দেয়। পল্লবীর চোখ বন্ধ। রাজুকে সজোরে জাপ্টে ধরে আছে। রাজুর নিজেরো মাথা টলছে,, চোখে ঘোর লেগে আছে। পল্লবীকে বিছানায় শোয়ালেও ওর রাজুকে ছাড়ে না, হুমড়ি খেয়ে পল্লবীর উপরে পড়ে ও। পল্লবীর মুখ কেনো সারা শরীর থেকেই মহুয়ার গন্ধ বেরোচ্ছে।
রাজু উঠতে গেলে পল্লবী সজোরে ওর জামা টেনে ধরে, " কোথায় যাচ্ছিস? ...... আমার কাছে আয়। " গলার স্বর জড়ানো।
জোর করে উঠেতে গিয়ে রাজুর হাতের টানে পল্লবীর একদিকের শাড়ী সরে গিয়ে ব্লাউযে টান পরে। সেখান দিয়ে পল্লবীর স্তনের অর্ধেক বেরিয়ে আছে। রাজু থমকে যায়। পল্লবী বিড়বিড় করছে...
নেশার ঘোরে আর এতোক্ষন পল্লবীর শরীরের সংস্পর্শে থাকায় রাজুর উত্তেজনা জেগে গেছে। ও মুখ নীচু করে পল্লবীর ঠোঁটে ঠোঁট লাগায়। পল্লবী যেনো তৈরী হয়েই ছিলো। দুই হাতে রাজুকে জড়িয়ে ধরে কামড়াতে শুরু করে ওর ঠোঁট। ওর নিশ্বাস ঘন হয়ে এসেছে, চোখ এখনো বন্ধ।
রাজুর নিজেরও নিয়ন্ত্রন হারিয়ে গেছে। ও নিজেও পাগলের মত সাড়া দিচ্ছে পল্লবীর চুমুতে। পল্লবী যেনো কামড়ে খেয়ে নেবে ওর ঠোঁট। ওর জীভে মহুয়ার স্বাদ লেগে আছে। পল্লবীর জীভ চুষে তার সব রস শুষে নিতে ইচ্ছা করছে। উত্তেজনায় গোঙাচ্ছে পল্লবী।
রাজু উঠে আসে কাঠের মাচার বিছানায়। সেটি ক্যাচ করে ওঠে।
পল্লবীর দুদিকে ছড়ানো দুই হাত নিজের দুই হাতে চেপে ধরে ওর ঘাড়ে গলায় পাগলের মত চুমু খেতে থাকে রাজু। ওর প্যান্টের ভিতরে পুরুষাঙ্গ একেবারে শক্ত হয়ে বাইরে বেরোনর জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
পল্লবীর ক্লিভেজে মুখ ঘষে রাজু। একটা মৃদু সুবাস আসে ওর নাকে। পল্লবী ছটফট করে ওঠে। রাজুর শরীরের ভার ওর শরীরের উপর। তবুও ওর ছটফটানী টের পাচ্ছে রাজু।
আর তর সইছিলো না রাজুর। পল্লবীর উপরে উঠে বসে ওর কোমরে পেঁচানো শাড়ীতে টান দেয়। বুক থেকে শাড়ীর আবরন সরিয়ে দিতেই লাল ব্লাউজে ঢাকা ওর স্তন দেখা যায়। বোঁটার জায়গাটা এমন ফুলে আছে যে ব্রা আর ব্লাউজের মধ্যে থেকেও তার অবস্থান বোঝা যাচ্ছে।
প্পল্লবী রাজুর একটা হাত টেনে নিজের স্তনে রাখে, " চাপ..... " অস্ফুট শব্দ বেরোয় ওর মুখ থেকে। রাজু আগেই চাপে না। ব্লাউজের হুক খুলে দেয়, তারপর পল্লবীকে তুলে বসিয়ে হাত গলিয়ে খুলে দেয় ওর ব্লাউজ আর ব্রা।
পল্লবীর অনাবৃত উর্ধাঙ্গ আগুন ধরিয়ে দেয় ওর শরীরে। বোঁটা দুটো একেবারে আঙুরের আনার মত হয়ে আছে। রাজু একটা হাত ওর স্তনে রেখে চাপ দিতেই, " উহহ......শিইইইই" করে ওঠে পল্লবী।
পল্লবী ওর চুল ধরে টেনে এনে রাজুকে নিজের বুকে ফেলে, রাজু ইঙ্গিত বুঝে একটা বোঁটা মুখে ঢুকিয়ে নেয়। ওর চোষার সাথে সাথে পল্লবীর শিৎকার বেড়েই চলেছে। স্তন থেকে মুখ ওর নাভির কাছে নামিয়ে এনে হালকা কামড় বসায়...... হালকা নেশার ঘোরে মৌথুনের মজা স্বাভাবিক অবস্থা থেকে অনেক বেশী। রাজুর কামড়ে থরথর কেঁপে ওঠে পল্লবী। মাজ্জে মাঝে ও চোখ খুলছে, আর সেই চোখের দৃষ্টিতে শুধুই কামনা...... রাজুর ধীর আর সুকৌশলী শৃঙ্গার পল্লবীকে ক্ষণে ক্ষণে আরো আরো উত্তেজিত করে তুলছে।
পল্লবীর শরীরে আবরন আর পছন্দ হচ্ছিলো না রাজুর। শাড়ি খুলে মেঝেতে ফেলে দেয়। ভিতরে ওর কালো প্যান্টির নীচের দিক সম্পূর্ণ ভেজা। সেটাকে টেনে নামাতেই ঘরের কম পাওয়ারের হলুদ বালবের আলোয় চকচক করে ওঠে ওর ভেজা যৌনাঙ্গ। বেশ কিছুদিন শেভ করে নি পল্লবী। যোনীর উপরের দিকে পাতলা রেশমের মত চুলে ভরে গেছে। রাজুর মুখ নেমে আসে ওর জানুসন্ধির ত্রিভুজে। ভেজা যোনীতে জীভ ঠেকাতেই মহুয়ার স্বাদ আর যোনীরসের স্বাদে একাকার হয়ে যায়। দুই পা দুদিকে দিয়ে ওর চুল খামচে ধরে পল্লবী, মুখ দিয়ে সজরে, " আহহহহ....." বের হয়ে আসে।
ঠিক তখনি বাইরে ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি নামে। টিনের চালে বৃষ্টির শব্দে পল্লবীর উচ্চস্বরে শীৎকার ঢাকা পড়ে যায়। পল্লবীর হাত রাজুর যৌনাঙ্গ খুঁজে বেড়াচ্ছে। রাজুর নিজেরও অস্বাভাবিক গরম।লাগছে। যোনী থেকে মুখ সরিয়ে নিজের জামা প্যান্ট খুলে নগ্ন হয়ে যায় ও। ঘোরের মধ্যে আর উত্তেজনায় দুজনেই ভুলে গেছে ওরা কোথায় আছে। নিজের নগ্ন শরীর পল্লবীর উপরে স্থাপন করে ওর যোনীতে প্রবেশ করে। আজ শরীরে যেনো হাতীর শক্তি ভর করেছে। পল্লবীর রসসিক্ত যোনীর ভিতরে সর্বশক্তিতে মন্থন করতে থাকে ও। প্পল্লবীর দাঁত নীচে ঠোঁট চেপে ধরেছে, নাক দিয়ে আওয়াজ করছে। চোখ বন্ধ। চরম সুখে ওর সর্বশরীর ভেসে যাচ্ছে।
আজ যেনো রাজুর মন ভরছে না। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আর এদিকে রাজু আর পল্লবীর সম্মিলিত শিৎকারও বেড়ে চলেছে। পল্লবীর যোনীপথে মাখনের মত প্রবেশ করছে রাজুর লিঙ্গ । দুই হাতে সজোরে রাজুর বাহু চেপ ধরে আছে পল্লবী, প্রতিবার ধাক্কায় দুলে উঠেছে ওর স্তনদ্বয়।
পল্লবীর যোনীকে এতোটা রসসিক্ত এর আগে পায় নি রাজু। আজ যেনো রসের বন্যা বইছে।
নিজেকে নিশ্বেস করে রাজুর হাত খামচে একসময় স্থির হয় পল্লবী। কিছুক্ষন পর রাজুও নিজের সর্বস্ব পল্লবীর ভিতরে ঢেলে দিয়ে ওর বুকে মাথা রেখে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
দুটো সম্পূর্ণ নগ্ন শরীর বেশ কিছুক্ষন পরোস্পরকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকে। চরম তৃপ্ত পল্লবী রাজুকে দুই হাতে বেষ্টনীতে চেপে ধরে। পল্লবীর যোনীনিসৃত কামরস আর বীর্য্যের মিশ্রনে বিছানা বেশ কিছুটা ভিযে উঠেছে। রাজুর ঘোরভাব অনেকটাই কেটে গেছে। ও পল্লবীর বাঁধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে জামা প্যান্ট পরে নেয়। কিন্তু পল্লবীকে কিছুতেই তুলতে পারে না। খেয়াল হয় এখনী লালী এসে পড়বে। রাজু একা কিভাবে কাপড় পড়াবে ওকে?
কোমমতে পল্লবীর প্যান্টি ব্রা আর ব্লাউজ পরালেও শাড়ীতে গিয়ে আটকে যায়। শুয়ে থাকা মানুষকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শাড়ি পরানো যায় না। রাজু শাড়ীটা কোনমতে কোমরে জড়িয়ে গায়ের উপর ফেলে দেয়। তখনি বাইরে লালীর গলার আওয়াজ পায়, " বৃষ্টিতে আটকায়ে গেছিলাম রে...... "
দরজা ঠেলে ঘরে ঢোলে লালী। পল্লবীর শাড়ী খোলা দেখে একটু থমকে যায়। তারপর প্রশ্ন না করে বলে, " তুই বাইরে যা..... আমি শাড়ীটা ঠিক করে জড়ায় দি। "
লালী কি বুঝতে পেরে গেলো? রাজু বাইরে চলে আসে। মাথাটা এখন অনেকটা ছেড়েছে। ও চোখে মুখে জল দিয়ে বারান্দায় বসে।
ভিতরে পল্লবীর জড়ানো গলা শোনা যায়, " তুই খুব ভালো রাজু....... আই লাভ ইউ..... আমাকে ছেড়ে যাস না..... আই হেট অনামিকা মিত্র... শালী ব্লাডি বীচ। "
Deep's story


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)