Thread Rating:
  • 72 Vote(s) - 3.49 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান
।। এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান।। 






 ভেবে দেখো অনুদি, ........ এই প্রত্যন্ত এলাকায় থেকে এই সামান্য মাইনেতে চাকরী করতে পারবে তুমি?  "
আবার
অবিশ্বাসের চোখে তাকায় দীপ্ত।  ওর এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে অনামিকা সত্যি কাজটা চায়।  পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে একার একটা জীবন ও বেছে নিয়েছে।  সেখানে প্রতুকূলতা যে থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক।

" তুই কি জানিস দীপ্ত,  এখানে বেশীরভাগ স্থানীয় মানুষ মাসে ২০০০ টাকাও আয় করে না? " অনামিকা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়।

একটু থমকায় দীপ্ত,  পঞ্চায়েতে কাজ করার সুবাদে এইসব দিকের মানুষের অবস্থা ওর ভালো করেই জানা। এই বিষয়ে অনুদি একশ শতাংশ সঠিক। তবুও ও বলে।...

" কিন্তু তারা ছোট থেকেই এভাবেই জীবন যাপনে অভ্যস্ত। "

" আর আমি না হয় এই বয়সে এসে অভ্যাস করবো..... ক্ষতি কি?  এখানে তো কোন চাহিদা নেই..... দুবেলা দুটো খাওয়ার বাইরে আর চাহিদা তো সামান্যই। " অনামিকা হাসে।

কথাটা মন:পুত হয় না দীপ্তর।  আসলে ও অনুদিকে যেতে দিতে চায় না৷ ওর একাকী একঘেঁয়ে জীবনে অনুদি রোমাঞ্চকর সপ্নের মত।  যতদিন আসে নি চলে গেছে,  আজ একবার এসে আবার চলে যাবে এটাই ও মেমে নিতে পারছিলো না।  অনুদি স্বপ্নের মত...... অনুদি একটা ভালোলাগা..... অনুদি জীবন্ত পরী..... সেই ছোটবেলা থেকে অনুদিকে দেখার পর লেগে থাকা ঘোর আজও একই ভাবে ওকে আচ্ছন্ন করে রাখে। কোথায় যেনো দীপ্তর মনে লুকিয়ে থাকা আদর্শ নারীর প্রতিচ্ছবির সাথে অনুদির মিল আছে.......

দীপ্ত কিছু না বলে চুপ করে থাকে।  অনুদিকে তার সিদ্ধান্ত থেকে সরানো যাবে না।  এটা জানার পরেও বার বার একটা কথাই ও বলে আসছে।  আর প্রতিবারেই অনামিকা ওকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। 


আজ এখানে আসার কথা বলতেই দীপ্তও সাথে আসার জন্য জেদ করে।

" শুধু শুধু তুই অফিস কামাই করবি?  আজ তো শুধু দেখেই চলে আসবো...... কিছু কাগজে সই করতে হবে জাস্ট...... " অনামিকা ওকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু দীপ্ত নারাজ, 

" উফ.....তুমি তো জানো অফিসে আমার তেমন কোনো চাপ নেই..... একদিন না গেলে কিছু হবে না.... যাই আমি তোমার সাথে। "

আর না করে নি অনামিকা।  যাক,  এতো দূরের রাস্তা,  তবুও একটা সঙ্গী পাবে......।

খুব সামান্য কয়েকটি পোষাক নিয়েই ঘর ছেড়েছিলো অনামিকা।  তার থেকেই একটা কালো তাঁতের শাড়ি পরে ও।  সামান্য প্রসাধন করে দীপ্তর সামনে আসতেই থমকে যায় দীপ্ত। চুম্বকের মত আটকে যায় ওর চোখ..... একেবারে সাধারণ সাজেও কালো শাড়িতে অবামিকাকে অসামান্য লাগছে।  ওর কাঁচা সোনার মত গায়ের রঙ যেনো আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

" কিরে,  কি হল?  হাঁ করে কি দেখছিস?  ভালো লাগছে না?  " অনামিকা হাসে।

লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নেয় দীপ্ত।  এভাবে তাকানোটা ঠিক হয় নি।  ও প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলে,  " এই গরমে কালো শাড়ি পরলে?  আরো গরম।লাগবে তো.... "


" থাক...... তেমন আর কিছু পেলাম না রে.... " অনামিকা হেসে বলে।

সেই খুব সকালের বাস ধরতে হয়।  বাস থেকে নেমে একটা গাড়ী করে পৌছায় অনামিকার কর্মস্থলে।  ছোট বড়ো অনেক পাহাড়ের পাকদণ্ডী বেয়ে ঘুরে একটা জায়গায় দাঁড় করায় ওদের।  এতো নিরালা নির্জন জায়গা অনামিকা আগে দেখে নি।  এখানে কাছে দূরে অনেক ছোট বড় পাহাড় আর জঙ্গল বেশী।  ওরা যেখানে নামে সেখানে একপাশে পাহাড়ের ঢালে শাল সেগু পলাশ মহুয়া গাছের সারি....... আর একদিকে ওদের অফিস,  পিছনেই খাড়া ঢাল নেমে গেছে নীচের দিকে।  একবারে নতুন ঝাঁ চকচকে কিন্তু খুবই সাধারন একটা বিল্ডিং। একপাশে অফিস আর তার লাগোয়া কলেজ বিল্ডিং।  এখনো সেখানে কিছু কাজ চলছে।



পুলোকেশ বসু ভারী অমায়িক লোক।  এই সংস্থার কালচারাল ম্যানেজার হলেও ওনার কথাবার্তায় কোন অহংকার নেই।  একেবারে ছিমছাম অফিসে বসেই উনি কাজ করেন।  কিছু দরকারী কাগজে সই করানোর পর উনি নিজেই সাথে করে কলেজ ঘুরিয়ে দেখালেন।  সাথে অনামিকার থাকার জায়গা।  সব কিছুই বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আর ছিমছাম।

" আমাকে কবে থেকে জয়েন করতে হবে?  " অনামিকা প্রশ্ন করে।

" আর চার পাঁচদিনের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে গেলে একটা ওপেনিং সেরিমনী করে কলেজ চালু করে দেএয়া হবে...... আপনাকে ওই দিন থেকেই থাকতে হবে। " পুলোকেশ উত্তর দেয়।


অনামিকার জায়গাটা বেশ পছন্দ হয়েছে। ও বেশ উৎফুল্ল কাজে যোগদান নিয়ে কিন্তু আগোচরে দীপ্তর মুখে কালো মেঘের ঘনঘটা অনামিকার নজরের আড়ালে থেকে যায়। 


পুলোকেশ আবার বলে,  " এখনো প্রায় ত্রিশ জন বাচ্চা কে আমরা পেয়েছি...... আপনি আসলে সেটা আরো বাড়বে আশা করি.... "

" অবশ্যই স্যার...... আমি মন প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করবো..... "

" দেখুন মিসেস মিত্র...... আমি মানুষ চিনি.....ইন্টারভিউতে আপনাকে দেখে এবং কথা শুনে মনে হয়েছে শুধু কাজ হিসাবে আপনি এটাকে দেখবেন না..... একটা সামাজিক দায়বদ্ধতার নিয়ে কাজ করবেন,  এই কারণেই আপনাকে আমার পছিন্দ। " পুলোকেশ অনামিকার দিকে তাকিয়ে বলে।

অনামিকার মন ভরে ওঠে,  একটা সংস্থার ম্যানেজার ওর উপর এতোটা আস্থা রেখে কাজটা দিচ্ছে সেটাকে অর্থের মাপকাঠিতে মাপা ঠিক না..... ও আপ্লুত পুলোকেশের কথায়।

" ওকে মিসেস মিত্র...... সী ইউ সুন.... আমার বেশ কিছু কাজ আছে,  আমায় এবার যেতে হবে। " পুলোকেশ হাত বাড়িয়ে করমর্দন করে বিদায় চায়।

বাড়ি ফেরার সময় বিপদে পড়ে অনামিকা আর দীপ্ত।  এখানে গাড়ী সেভাবে পাওয়া যায় না।  ওরা যে গাড়ীতে এসেছিলো সেটা ছেড়ে দিয়েছে।  আর এখন এখান থেকে গাড়ী পাওয়া দুস্কর। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে পুলোকেশ....

" আমার একটা গাড়ী সামনে লোকাল হাটে যাবে।  আপনারা ওই গাড়ীতে চলে যান।  তবে হাটের কাছে নেমে দশ মনিট হাঁটলেই বাস রাস্তায় পৌছে যাবেন।  "


প্রস্তাবে রাজী হয়ে যায় অনামিকা।  আর কিছু করার নেই।  ও গাড়ীকে একেবারে বাস রাস্তায় পৌছে দিতে বলতে পারে না।  উনি নিজে যে এটুকু সাহায্য করছেন এটাই অনেক।

ওদের মনের কথা বুঝেই বোধহয় পুলোকেশ আবার বলে,  " আসলে আমার গাড়ী আপনাদের বাস রাস্তায় পৌছাতে পারতো কিন্তু ওর অনেক দেরী হয়ে গেছে,  এরপর হাট বন্ধ হয়ে গেলে ওর কাজ হবে না..... আর শেষ রাস্তাটুকু এতো খারাপ যে গাড়ীর গিয়ে ফিরে আসতে সময় লাগবে....... হেঁটেই তাড়াতাড়ি পৌছাবেন।"


" না না...... এই টুকুই যথেষ্ট স্যার..... আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের এইটুকু উপকার করার জন্য।  অনামিকা লজ্জিত হয়ে বলে। 


পুলোকেশের গাড়ীতে চারিদিকের প্রাকৃতিক শোভা দেখতে দেখতে হাটের কাছে পৌছে যায় ওরা।  প্রায় বিরল বসতিযুক্ত পাহাড়ের মাঝে মাঝে ছোট ছোট গ্রামগুলি যেনো তুলিতে আঁকা।  মসৃণ মাটির দেএয়ালের উপর রঙ দিয়ে এতো সুন্দর চিত্র যেনো বিশাল অট্টালিকাকেও সৌন্দর্য্যেকেও হার মানাবে।  অনামিকার ইচ্ছা করছিলো গ্রামগুলোতে দু দন্ড দাঁড়াতে।  প্রান ভরে তদের এই নিপুণ শিল্পকলা দেখতে..... এই অর্ধনগ্ন অর্ধপেট খাওয়া সরল মানুষগুলোর সাথে কিছু সময় কাটাতে।  কিন্তু এখন সেটা সম্ভব না।  ড্রাইভারের তাড়া আছে। 


হাট বলতে একটা ছোট বাজার মত।  সামান্য কিছু দোকান পাট,  সবজি,  নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের সমাহার।  এখান থেকেই বাজার করে নিয়ে যেতে হয় এদের।  লোকাল সাধারন মানুষের ভরসা এই হাট।  এখন হাটে লোক হাতে গোনা....... ড্রাইভার ওদের নামিয়ে দিয়ে হাটে চলে যায়।


হটের সামনে থেকে একটা রাস্তা চড়াই হয়ে উঠে গেছে,  সেই চড়াই পার করলেই আর ১ কিমি গেলেই বাস রাস্তা।  কিন্তু ভয় ধরে আকাশ।  হাটে নেমে চড়াইএর পথে উঠতেই ওরা খেয়াল করে আকাশ জুড়ে কালো মেঘ।ঘন গাছপালার ফাঁকে কালো মেঘের ঘনঘটা চোখে পড়ছে।   এখানে আশে পাশে বাড়ি ঘরের চিহ্নও নেই।  শুধু দুই পাশে গাছের সারি। এমনিতেই প্রায়ুন্ধকার জায়গাটা,  তার উপরে আকাশ কালো করে আসায় মনে হচ্ছে সন্ধ্যা নেমে এসেছে।   দ্রুতো পা চালিয়েও লাভ হয় না।  প্রবল বেগে বৃষ্টি নেমে আসে চারিদিক সাদা করে দিয়ে।  অনামিকা ব্যাগ থেকে ছাতা বের করে।  ছাতা সাথেএ নেওয়াটা দীপ্তর অভ্যাস নেই একেবারে।  ও অনামিকার ছাতার বাইরে হাঁটতে থাকে।  যদিও এই তুমুল বৃষ্টি ছাতাতে মানার মত না।  মুহূর্তেই দুজনে ভিজে একসা হয়ে যায়। 

অনামিকা দীপ্তকে ধমক দেয়,  " কিরে,  ছাতার বাইরে হাঁটছিস যে বড়ো?  আয় ছাতার নীচে। "

অনামিকার ছাতা ওকেই ঢাকতে পারছে না,  সেখানে দীপ্ত কি করবে ওর মাথায় ঢোকে না..... কিন্তু অনামিকার জোরাজুরীতে ছাতার নীচে আসতে হয়।


দীপ্ত হাত সোজা করে অনামিকার ছাতার তলায় পাশাপাশি যেতে চেষ্টা করে,  কিন্তু এভাবে হাঁটাটা বেশ কষ্টকর সেটা বোঝা যাচ্ছে। 

" আহহ..... তুই এতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো বলতো?  অনুদি বলে ডাকিস আবার লজ্জাও পাবি এটা কি? বাঁ হাতটা পিছন দিয়ে আমার কোমরে রাখ..... " অনামিকা আবার ধমকের সুরে বলে।

দীপ্ত লজ্জা পেয়ে যায়।  যতই মুক্তমনা হোক,  না চাইতে কোন যুবতী নারীর কোমর জড়িয়ে হাঁটা যায় না,  অনুদির কাপড় এর মধ্যেই ভিজে গেছে..... দীপ্ত নিজের হাত অনামিকার পিছন দিক দিয়ে কোমরে রাখতেই ওর শীতল ত্বকের স্পর্শ পায়।  এতো কাছে এভাবে অনুদিকে ও এর আগে স্পর্শ করে নি।  নিজের অজান্তেই দীপ্তর মন অদ্ভুত এক রোমাঞ্চে ভরে ওঠে।  ছাতা থাকা সত্বেও দুজনে ক্রমাগত ভিজে যাচ্ছে। বৃষ্টির ফোঁটা কনকনে ঠান্ডা।  শরীরে কাঁপুনি উঠে যাচ্ছে।  কিন্তু তার মধ্যেই ওরা দুজনে এগিয়ে চলেছে। 

দীপ্তর চোখে পড়ছে অনামিকার খোলা কাঁধে জলের ফোঁটা..... ফর্সা মসৃন ত্বক বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে তারা নীচের দিকে।  কালো ব্রা এর স্ট্যাপ ব্লাউজের ভিতর থেকে সামান্য বাইরে দৃশ্যমান।  দীপ্ত অনামিকার থেকে বেশ খানিকটা লম্বা..... তাই কাঁধ থেকে নেমে সামনের দিকে অনামিকার উত্তল বুকের ঢাল আর বক্ষবিভাজিকা বার বার ওর চোখে ধরা পড়ছে..... অনামিকার গায়ের থেকেও স্তন এ আরো উজ্জ্বল তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। 

নিজের অজান্তেই দীপ্তর চোখ চলে যাচ্ছে সেদিকে।  বাধ্য হয়ে দীপ্ত সামনের দিকে তাকিয়ে নিজেকে অন্যমনষ্ক করার চেষ্টা করে। 

হঅঠাৎ অনামিকা হাঁটার বেগ কমিয়ে দেয়,  সামনের দিকে তাকিয়ে বলে,  " কি অপূর্ব দেখ দীপ্ত...... মনে হচ্ছে সারা পৃথিবীতে আমরা দুইজনেই আছি "

সত্যি তাই,  এখানে দু পাশের ঘন জঙ্গল রাস্তাটাকে সুড়ঙ্গে পরিনত করেছে।  চারিদিকে শুধু গাছের পাতায় বৃষ্টির ফোঁটার শব্দ..... দীপ্ত অনামিকার দিকে তাকায়......অনামিকার দুই চোখে মুগ্ধতা,  চারিদিকে ঘন্নসবুজের মাঝে এক ঝিরি ঝিরি শব্দ মনে তোলপাড় উঠিয়ে দিচ্ছে।  হঠাৎ অনামিকা ছাতাটা বন্ধ করে দেয়,  দীপ্তর দিকে তাকিয়ে বলে,  " থাক না...... দরকার নেই,  এমন নিঝুম বৃষ্টিভেজা অরণ্যে আবার কবে ভিজতে পারবো কে জানে.... ঠান্ডা লাগে একটু লাগুক। "

দীপ্তর চোখেও মুগ্ধতা।  ছাতা সরয়ে দেওয়ায় অনামিকার সম্পূর্ণ শরীর মূহূর্তে ভিজে গেলো, অনামিকা দীপ্তর একটা হাত ধরে কিছুটা বাচ্চা মেয়েদের মত উল্লাসে মেতে ওঠে...... এখানে অনামিকার ছেলেমানুষী দেখার কেউ নেই দীপ্ত ছাড়া,........

" ওই যে একটা দোকান....... " অনামিকার চেঁচিয়ে ওঠাতে ঘোর কাটে দীপ্তর।  সামনে একটা ছোট দোকান দেখা যাচ্ছে৷ চারিদিকে পাকা দেওয়াল,  আর উপরে টালির চাল দেওয়া দোকান...... চা কাম মুদিখানা ধরনের,  তবে মালপত্র খুবই সামান্য।  দোকানের ভিতরেই একটা কাঠের বেঞ্চ পাতা।  অনামিকা দোকানে ঢুকে ছাতা বন্ধ করে৷  দোকানী এক আদিবাসী আধ বুড়ো লোক। 

" আইয়ে মাজি,  অন্দর বেঠিয়ে..... আপলোগ তো পুরা ভিগ গয়ে..... " * স্তানী দোকানী সাদরে ডাকে ওদের। 

নিজের খুব পছন্দের মানুষের সংস্পর্শে আসার মধ্যে ভালো লাগার মতই একটা উৎকন্ঠাও কাজ করে। একটা দোকান পাওয়াতে দীপ্তর আচ্ছন্নতা কাটে।  দোকানটা নিতান্তই ছোট।  চায়ের দোকানের সাথে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আছে।  সামনে বয়ামে কিছু সাধারন বিস্কুট। দোকানীর বোধহয় খরিদ্দার খুব বেশী হয় না,  তাই ওরা আসাতে খুশী হয়েছে।  নিজেই একটা গামছা দিয়ে বেঞ্চটা ভাল করে মুছে দেয়। 

দীপ্ত অনামিকার দিকে তাকায়।  শরীর প্রায় ভেজা অবামিকার।  গলায় বুকে জলের ফোঁটা ব্লাউজ আর শাড়ী ভেজা..... এই বৃষ্টিতে ভেজা অনামিকার রূপ যে নো আরো খুলেছে..... ভিজে গিয়ে ঠান্ডায় তিরতির করে কাঁপছে অনামিকার ঠোঁট..... কিন্তু চোখে মুখে খুশীর ছোঁয়া।


দোকানী ওদের দিকে অনেক আশা নিয়্যে তাকিয়ে আছে।  সেটা দেখে খারাপ লাগে দীপ্তর। বোধ হয় সেটা অনামিকাও উপলব্ধি করে।  তাই সে দুটো চা আর সাথে কিছু বিস্কুট দিতে বলে.... এছাড়া নেওয়ার মত কিছুই নেই এখানে।  দোকানী চা বানাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।  বাইরে বৃষ্টি একই বেগে হয়ে চলেছে।  দীপ্ত ঘড়ি দেখে,  চারটে বাজে.........


জনমানবহীন এক অরণ্যে দীপ্ত আর অনামিকা একাকী এক গুমটি দোকানে বসে আছে।  যেনো পৃথিবীর শেষ প্রান্তে আছে ওরা...... দীপ্ত মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখে,  কোন এক নিরালা নিঝুম অরণ্যের মাঝে ও আর ওর একান্ত প্রিয় মানুষ, দীপ্ত আকুল হয়ে সন্তর্পণে স্পর্শ করে তার প্রিয় মানুষকে..... সেখানে কেউ নেই,  কোথাও কোন জনপ্রানীরও চিহ্ন নেই....


সেই একাকী অরণ্যে বিশাল বনানীকে সাক্ষী রেখে ও  নিজের প্রিয়তমার শরীরের আবরণ উন্মোচন করে।  সদ্য পাঁপড়ি মেলা লাজুক ফুলের কুঁড়ির মত লজ্জায় গুটিয়ে যায় ওর প্রিয়তমা....... সামনে আদিম পোষাকে দাঁড়িয়ে থাকা দীপ্ত আর ওর উত্থিত দন্ড দেখে কামঘন হয়েও চোখ ঢাকে লজ্জায়..... দীপ্তর গোপন স্পর্শে কেঁপে কেঁপে ওঠে ওর শরীর....

প্রানচঞ্চল দীপ্ত ছোট থেকেই কল্পনাবিলাসী।  একেবারে নিখুঁত হ্যান্ডসাম যুবক দীপ্তর আশেপাশে কলেজ লাইফ থেকেই মেয়ে কম ছিলো না।  তবে দীপ্তর ভালোবাসা আর কাম নিয়ে চিন্তাভাবনা বরাবর আলাদা...... সেখানে উশৃঙ্গখলতা নেই,  সেখানে উদ্দামতা নেই...... একেবারে শান্ত সরবরের মত, ...........ওর প্রথম যৌনতা হবে কাব্যিক, আবেগে ভরপুর,  সেখানে থাকবে পরস্পরের প্রতি ভালবাসা........ অজানাকে জানার গভীর আগ্রহ আর সলজ্জ উদ্দীপনা....... নিজের মত করে নিজের যৌনজীবন তৈরী করকটাই দীপ্তর ফ্যান্টাসী ছিলো......


এক অনুষ্ঠানে প্রথন দেখা হয় নন্দিতার সাথে।  প্রানচঞ্চল সুন্দরী নন্দিতা সহজেই মনের গভীরে জায়গা করে নেয় ওর।  দীপ্তর ধারনা ছিলো প্রতিটা মেয়েঈ নিজের প্রথম শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে ওর মতই আবেগ প্রবন....... তাই পার্কে,  রেস্টুরেন্ট এ দুজনে অনেকবার দুজনকে স্পর্শ করলেও কখনো শারিরীক সমপর্ক হঠাৎ করে করার কথা ভাবে নি। দীপ্তও কখনো নন্দিতাকে বলে নি শারিরীক ঘনিষ্ঠতার কথা........... ঘনিষ্ঠতাটাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলো,  ইচ্ছা ছিলো একদিন ঠিক সেই স্বপ্নের মত করে মিলিত হবে দুজনা.....


কিন্তু সেই ইচ্ছা কখনো পূর্ণ হওয়ার ছিলো না।  নন্দিতার উদ্যোগেই ওর দুই ফ্রেন্ড কাপল আর দীপ্ত নন্দিতা বেড়াতে যায় ডুয়ার্সে। এই প্রথম বার নন্দিতার সাথে কোথাও বেড়াতে যাওয়া তাও ডুয়ার্সের গহীন অরন্যে....দীপ্ত আর না করে নি..... কিন্তু তখনো জানতো না নন্দিতার আসল চেহারা.....


নিজের প্রথম যৌনতাকে স্বপ্নের মত করে সাজাতে চেয়েছিলো ও।  কিন্তু নন্দিতা সেটা পারে  নি....... ওদের সাথে প্রবীর -স্নিগ্ধা,  আলোক- নিরঞ্জনা নামে আরো দুজন কাপল গেছিলো....... তিনটে কটেজ নেওয়া হয়েছিলো,  সন্ধ্যার পর ওদের নাচ গান আর মদ্যপানের আসর চলে রাত পর্যন্ত।  দীপ্ত কখনো মদ খায় নি, নন্দিতাকে নিসংকোচে ওদের সাথে যোগ দিতে দেখে অবাক হয়েছিলো ও।  সেই উদ্দামতার পর যে যার কটেজে চলে যায়।  এই প্রথম নন্দিতাকে অচেনা লাগে দীপ্তর....... এমন উশৃঙ্খলতা ও নন্দিতার কাছ থেকে আশা করে নি..... কিন্তু তবুও কিছু মনে করে নি......সব মানুষ যে ওর মত করেই চলবে তার নিশ্চয়তা কোথায়?


কিন্তু কটেজে ঢুকে নেশাগ্রস্ত নন্দিতা ঝঁপিয়ে পড়ে দীপ্তর উপর।  ওর বাধা সত্ত্বেও খুলে দেয় দীপ্তর শার্ট.....পাগলের মত দীপ্তর ঠোটে চুম্বন করতে থাকে,  নন্দিতার মুখ থেকে আসা আলকোহলের গন্ধে অস্বস্তি লাগছিলো দীপ্তর..... ও দুই হাতে বাধা দিতে গেলেও পারে না...

দীপ্তর স্বপ্নকে চুরমার করে নিজেই নিজের পোষাক খুলে নগ্ন হয়ে যায় নন্দিতা....কালো ব্রা খুলতেই বেরিয়ে আসে ওর ২৫ বর্ষীয় সামান্য অবনত কিন্ত ফর্সা মাঝারী স্তন........ কোমরের দুই দিকে আঙুল ঢুকিয়ে নামিয়ে আনে ওর প্যান্টি...... রেগুলার শেভ করা ঝকঝকে নির্লোম যোনীপ্রদেশ......নন্দিতার আগুন ঝরানো নগ্ন রূপ, নিজের স্তনবৃন্ত দীপ্তর মুখে গুজে দিয়ে জড়ানো গলায় বলে,  " চোষো...... "

দীপ্ত যেনো কলের পুতুল,  ও আবেগহীন ভাবে নন্দিতার স্তনবৃন্ত মুখে নেয়।  নন্দিতার হাত ওর ট্রাকশুটের ইলাস্টিক গলে সাপের মত ওর  শিথিল লিঙ্গ খাবলে ধরে...... নিজের গোপন অঙ্গে প্রথম কোন নারী স্পর্শে একফোঁটাও অনুভূতির বদল হয় না দীপ্তর..... ওর কোন উত্তেজনা জাগছে না,........  এ কোন নন্দিতা?  একে তো ও চেনে না?  সেই রুচীশীল,  আবেগী...... কোথায় সে? 


নন্দিতার ক্রমাগত আগ্রাসনের সামনে নিজেকে আরো গুটিয়ে নেয় দীপ্ত।


ওকে ধাক্কা মেরে শুইয়ে নন্দিতা ওর ট্রাকশুট খুলে নগ্ন করে দেয়। 

" প্লীজ..... নন্দিতা,  এটা কোরো না....আমার ভালো লাগছে না.... " বাধা দিতে যায় দীপ্ত। 

ঠোঁটে আঙুল রেখে চুপ করতে বলে নন্দিতা..... " আজ আমি যা চাইবো তাই করবে....... "

নিজের কামঘন চোখের মদির দৃষ্টি দিয়ে ও দীপ্তকে দেখে৷ 

সামনে নন্দিতার সম্পূর্ণ নগ্ন শরীর।  ওর পীনদ্ধত স্তন,  ভরাট ভারী নিতম্ব........ একেবারে নির্লোম  যোনী.... কোন কিছুই দীপ্তকে বিন্দুমাত্র উত্তেজিত করে না,  বরং চোখের সামনে নিজের প্রথম যৌনতার স্বপ্নকে খন্ড বিখন্ড হতে দেখে শীতল হয়ে যায় ও..... এই ভাবে তো ও চায় নি,  এভাবে ঝড়ের মত উত্তাল হয়ে নন্দিতাকে ভোগ করার স্বপ্ন দেখে নি ও.......


কিন্তু নন্দিতা অপ্রতিরোধ্য..... দীপ্তর শিখিল লিঙ্গ নিজের মুখে নিয়ে অনেক্ষণ নাড়াচাড়া  করে তাকে জাগাতে চায় নন্দিতা,  কিন্তু নন্দিতার এই উদ্দামতা দীপ্তর পুরুষাঙ্গকে জাগাতে ব্যার্থ হয়...... অবাক চোখে মুখ থেকে দীপ্তর পৌরুষ বের করে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ,  ওর যেনো বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে নন্দিতাকে স্বল্প পোষাকে দেখেই কত ছেলের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়,  হাতের মধ্যে তার নগ্ন শরীর পাওয়ার পরেও দীপ্ত এতো শিথিল?   লাফিয়ে ওঠে নন্দিতা.....দীপ্তর দিকে অবিশ্বাসে চোখে তাকিয়ে বলে....

" তুমি ইরেক্টাইল ডিসফাংশানে ভুগছো? ....... আমার কখনো বলনি তো? ....... কে এতো সাহস দিয়েছে আমার জীবন নিয়ে খেলা করার? ....... " কামত্তেজনা ছাড়িয়ে নিজের বিরক্তি আর ঘৃণা ঢাকতে পারে না নন্দিতা।

নন্দিতার চিৎকারে কেঁপে ওঠে ঘর।  প্যান্ট টেনে নিজের লজ্জা ঢেকে ওকে থামাতে যায় দীপ্ত,  " আমার কথা শোন...... আমার কোন রোগ নেই..... "

নেশাগ্রস্ত নগ্ন নন্দিতা এক ঝটকায় দূরে চলে যায়,  রাগী বিড়ালের মত জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়ে বলে, " এতোগুলি দিন একটা নপুংসকের জন্য নষ্ট করলাম আমি? ...... ছি:.... ভাবতেই গা গোলাচ্ছে আমার, ..... "

দীপ্ত উঠে আসে নন্দিতার কাছে,  " আমার কথা শোন..... আমাকে বোঝার চেষ্টা করো নন্দিতা...... "

" দূরে থাকো আমার থেকে..... আর আজকের পর আর আমার কাছে আসার চেষ্টা করবে না...." নিজের পোষাক গায়ে গলিয়ে নেয় নন্দিতা, তারপর দড়াম করে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে যায়।  সেদিন নিজেকে বড়ো অসোহায় লাগছিলো দীপ্তর..... বিচ্ছেদের থেকেও নিজের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার বেদনা কুরে কুরে খাছিলো ওকে।  কাউকে কিছু না জানিয়ে একাই ডুয়ার্স থেকে ফিরে আসে ও।  আর কখনো নন্দিতা ওর সাথে যোগাযোগ করে নি।  দীপ্ত বার কয়েক ফোনে ওর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া মেলে নি.....


এরপর থেকে যৌনতার কথা ভাবলেই সেই অভিশপ্ত রাতের কথা মনে হত ওর।  জাগতে গিয়েও আবার ঘুমিয়ে পড়তো  ওর পৌরুষ।  নিজেকে বড় অসহায় বোধ করতো ও।  সময়ের সাথে সাথে মিলিয়ে যায় নন্দিতার দেওয়া ঘা...... তবে কোন কোনায় সেটা চাপা পড়ে ছিলো,  আজ অনামিকার সাথে সামান্য স্পর্শ ওকে কঠিন করে তুলেছে সেটা ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছে। আবার সেই চেনা ছন্দ অনুভূত হচ্ছে......


" কি রে কি ভাবছিস? ........ অনামিকার প্রশ্নে ভাবনার জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসলে  দীপ্ত।  ভেজা শরীরে সামান্য কাঁপছে অনামিকা। 

দোকানদার দুই গ্লাস গরম চা হাতে ধরিয়ে দিতেই সেটা ঠোঁটে ছোঁয়ায়,  " আহহ...." একটা সুখানুভুতি বেরিয়ে আসে গলা থেকে।


হঠাৎ দীপ্তর হাতে হাত রাখে অনামিকা,  " কিরে রাগ করছিস?  "

" কেনো? .... " না তাকিয়ে বলে দীপ্ত।

" না...... এভাবে চলে যাচ্ছি বলে?  "

কোন উত্তর দেয় না দীপ্ত।  রাগ অভিমান এসব করে কি হবে?  অনুদি তুমি জানতেও পারবে না কোনদিন তুমি এই কদিনে কিভাবে আমার হারানো স্বপ্নকে বাঁচাতে সাহায্য করেছ।  আমি ভেবেছিলাম আমার স্বপ্নের নারী বোধহয় বাস্তব হয় না...... কিন্তু হয়,  সেটা তুমি...... এটা জানার পর তোমাকে হারাতে আমি কত ভয় পাই সেটা বোঝাতে পারবো না,  যেমন পারবো না আমার মনের কথাগুলো বলতে। 

" শোন...... নিজের মত করে জীবনকে বেছে নেওয়ার সুযোগ কজন পায় বল তো? ......... আমার কাছে তো তোর জন্য দরজা সবসময় খোলা,  ছুটি পেলেই ছুটে আসবি....... আর অভিমান করে থাকিস না.... " অনামিকা দীপ্তর কাছে ঘেষে আসে। 

দীপ্ত মুখে বলতে পারছে না যে,  আমার এতো কাছে এসো না অনুদি....... অনেকদিন পর আবার আমার ভুলে যাওয়া স্বপ্ন জেগে উঠেছে তোমাকে কাছে পেয়ে......... একে থামাবো কিভাবে?  


অনেক রাতে বাড়ি ফিরে আসে ওরা।  একটা বৃষ্টিভেজা রোমাঞ্চকর দিনের স্মৃতি বুকে নিয়ে ঘুমাতে যায় দীপ্ত।  
Deep's story
[+] 9 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান/ নতুন পর্ব - ৯ ই সেপ্টেম্বর - by sarkardibyendu - 18-11-2025, 03:49 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)