Thread Rating:
  • 72 Vote(s) - 3.49 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান
।। এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান ।। 



এখানে দুপুর বড়ো জ্বলাময়।  চারিদিকে খটখটে রদ্দুর, লাল ল্যাটেরাইট মাটির তাপে বেশীক্ষণ টিকে থাকা যায় না,  তবে দীপ্তর বাড়িটা বেশ ঠান্ডা আর ছায়াময়।  স্টেশনের গিঞ্জি পরিবেশ থেকে বেশ কিছুটা দুরে একেবারে ঝাঁ চকচকে পিচ রাস্তার পাশে দীপ্তর ভাড়া বাড়ি।  মালিক বোধহয় মাঝে মাঝে থাকবে বলে বানিয়েছিলো কিন্তু আসা হয় না দেখে ভাড়া দিয়ে দিয়েছ। একতলা বাড়িতে তিনটে ঘর,  বাথরুম,  কিচেন সবই নতুন আর চকচকে।  অনামিকা দুপুরে ঘুরে ঘুরে বাড়টা দেখিছিলো।  দীপ্ত এখন অফিসে। আসতে আসতে বিকাল হয়ে যাবে। এই নিসঙ্গ সময়টা বড়ই ভাবায় অনামিকাকে।  আজ চারদিন হয়ে গেলো ও বাড়ি থেকে চলে এসেছে।  সরোজ একবারের জন্যেও ওকে ফোন বা ম্যাসেজ করে নি। অবশ্য তাতে ভালোই হয়েছে।  নিজের আত্মসম্মান নিয়ে বেরিয়ে এসেছে ও,  শত অনুরোধেও সেখানে ফিরে যাওয়া মানে পক্ষান্তরে নিজের জীবনকে আবার সরোজের সংসারের জোয়ালে ঠেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছু না,  কিন্তু এখানেও বেশীদিন থাকা যায় না..... যদিও দীপ্ত চায় ও এখানেই থেকে কিছু করুক,  কিন্তু হাজার হলেও দীপ্ত ব্যাচেলার,  আজ না হয় কাল ওর মা বা দাদারা জানবে,  তখন তাদের প্রতিক্রিয়া খুব একটা ভালো নাও হতে পারে,  আর এভাবে কারো অধীনে পাকাপাকি ভাবে থেকে যাওয়ার কোন ইচ্ছা আর অনামিকার নেই। হতে পারে দীপ্ত ভালো,  উদার মনষ্ক,  কিন্তু কোন পুরুষের অধীনে থাকা মানেই পক্ষান্তরে তার দাসত্ব বরণ করে নেওয়া।


সেদিন দীপ্তর একপ্রকার জেদাজেদীতেই শেষ পর্যন্ত এখানে আসতে রাজী হয় অনামিকা।  তবে প্রানচঞ্চল দীপ্ত খোলামেলা স্বভাবের হলেও এখনো অনামিকার ব্যাক্তিগত বিষয় নিয়ে একটাও প্রশ্ন করে নি।  অনামিকা নিজে থেকে না বললে যে সেটা শালীনতা লঙ্ঘন করে সেটা দীপ্ত ভালো ভাবেই জানে।  অনামিকাও বিস্তারিত কিছু জানায় নি..... কে জানে যদি দীপ্তও যদি অনামিকার এই অসম বয়সী প্রেমের গভীরতা বুঝতে ব্যার্থ হয়? 

এই তিনদিন অনামিকা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলো,,তাই সেভাবে বাড়ি ঘরের দিকে নজর দেয় নি।  আজ দীপ্ত বেরিয়ে যাওয়ার পর নিছক সময় কাটাতে ও এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এই বাড়িতে দুটো বেডরুম। একটাতে দীপ্ত থাকে।  আর একটাতে অনামিকা আপাতত আশ্রয় নিয়েছে।  মাঝে একটা বসার ঘর কাম ডাইনিং...... বাড়ির সামনে বেশ কিছুটা খোলা জায়গার পরে রাস্তা।  চারিদিকে অস্বাভাবিক রকমের নির্জন।  বেশ কিছু দূরে দূরে কয়েকটা বাড়ি আছে।  একটা কারখানা তৈরী হচ্ছে সেটা কিসের অনামিকা জানে না।  মাঝে মাঝে বাইক আর চারচাকা গাড়ী হুস করে বেরিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন আওয়াজ নেই। 

দীপ্ত নিজেই রান্না করে খায়।  তবে অনামিকা আসার পর এই দুইদিন ও দীপ্তকে কিছু করতে দেয় নি।  আজকেও সকালে রান্না ও করেছে। দীপ্ত অনেক নিষেধ করেছিলো কিন্তু ও শোনে নি।


এই চারদিনেই মনে হচ্ছে যেনো যুগ যুগান্ত হয়ে গেছে ও সরোজকে ছেড়ে এসেছে।  এখন কি করছে বা কি ভাবছে সরোজ সেই বিষয়ে ওর বিন্দুমাত্র ভাবনা নেই।  আচ্ছা রাজু যদি জানে যে অনামিকা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গেছে?  কি করবে?  ও কি বুঝতে পারবে যে অনামিকা ওর কারণেই গৃহত্যাগী?  একটা বার কি ও পারে না সব অভিমান ভুলে অনামিকাকে ফোন করতে?  নাকি ওর মন থেকে মুছে গেছে অনামিকার সব স্মৃতি..... সব ভালোলাগা..... সব অভিমান?  যদি তাই হয় তবে অনামিকা কার কথা ভেবে জীবনে এতো বড় একটা ঝুঁকি নিলো?  একবার কি পল্লবীকে ফোন করে খোঁজ নেবে রাজুর? 


ভাবনার মধ্যেই পল্লবীকে ডায়াল করে অনামিকা, একবার.... দুইবার.... তিনবার.... রিং হয়ে গেলেও ওই প্রান্ত থেকে কোন সাড়া আসে না,....... কি ব্যাপার!  পল্লবী ওর ফোন ধরছে না কেনো?  তবে কি অনামিকার এই গভীর প্রেমকে ও অনাবশ্যক আদিখ্যেতা মনে করছে?  কাউকে ফোন করার পর প্রত্যাখ্যাত হলে ব্যাপারটা খুব একটা সম্মানের হয় না।  পল্লবী যদি কাজের মধ্যে থাকে তাহলে অন্তত একটা ম্যাসেজ করে রিপ্লাই দিতে পারে...... কিন্তু অনেক্ষণ কেটে গেলও ওই প্রান্ত থেকে কোন ফিরতি কল আসে না..... না আসে কোনো ম্যাসেজ। ব্যাপারটা ভালো লাগে না অনামিকার। 




সন্ধ্যার পর দীপ্ত আর অনামিকা চায়ের কাপ হাতে ছাদে বসে।  সরোজের বাড়িতে থাকার সময়েও ছাদ অনামিকার সব চেয়ে প্রিয়ো জায়গা ছিলো,  এখানেও ছাদটা ওর অসম্ভব ভালো লাগছে। উপরে পরিষ্কার আকশে হাজার হাজার তারা.... শান্ত বাতাস গায়ে লাগছে হু হু করে...... অনামিকা দূরে তাকিয়ে ছিলো,  এখানে অনেক দূর পর্যন্ত ফাঁকা অসমতল মাঠ দেখা যায়, ধু ধু মরুভূমি যেনো..... সেদিকে তাকিয়ে ভাবনার জালে জড়িয়ে ছিলো অনামিকা।

" আবার বলছি অনুদি..... কিছুদিন এখানেই থেকে যাও,  তারপর না হয় কোথাও যেও। " দীপ্তর কথায় ভাবনার জাল ছিঁড়ে যায় ওর।

" না রে...... বেশীদিন থাকবো না,  আমাকে এভাবে আটকাস না,  জীববটাকে সামনে থেকে দেখার জন্য কারো উপরে নির্ভর করা ঠিক না.......  নিজে বাস্তবের মাটিতে না দাঁড়ালে  কিছু করতে পারবো না..... সারাটা জীবন অপরের উপরেই নির্ভর করে যেতে হবে " অনামিকা বলে।

" দেখছো তো,  একাকী জীবন,  তুমি থাকলে তবুও ভালো লাগে...... না হলে এই সন্ধ্যার পর একা কাটাতে কাটাতে বোর হয়ে যাই। " দীপ্তর মুখে অন্ধকার।

" একাকীত্ব কাটানোর উপায়, বিয়ে করে নে......সবসময় পাশে কেউ থাকলে একাকীত্ব দূর হবে,  " অনামিকা হাসে,  " কেউ কি আছে তেমন?  "

" না গো..... এটাই তো আর হলো না,  কত জনাই আসলো আর গেলো কিন্তু বাঁধাধরা কেউ তো থাকলো না.... " গলার স্বর গাঢ় হয়ে আসে।


" কেনো থাকলো না?  তুই কতটা চেষ্টা করেছিলি রাখার?........  তেমন বিশেষ কাউকে?  " অনামিকা বলে।

দীপ্ত চোখ সরিয় দূরের দিকে তাকায়,  " করেছিলাম তো,  মন প্রাণ দিয়ে করেছিলাম.....তবুও ছেড়ে গেলো। "

" কেনো ছেড়ে গেলো সেটা বলে নি?  "

" হুঁ" দীপ্ত মুখ দিয়ে আওয়াজ করে, অনেক্ষণ চুপ করে থাকার পর ধীরে বলে,  " আমার নাকি সমস্যা আছে। "

কৌতুহল হয় অনামিকার,  " তোর সমস্যা!......  কি সেটা?  "

" থাক.... ছাড়ো ওসব। " দীপ্ত আর এগোতে চায় না। 

" দেখ ব্যাপারটা যদি ব্যাক্তিগত হয় তবে বলিস না,  কিন্তু আমার কাছে লজ্জা পেয়ে যদি না বলিস তাহলে বলবো তুইই বলেছিস যে আমরা বন্ধু...... আর প্রায় সমবয়সী,  তাই লজ্জার কোন স্থান নেই এখানে। "

" ধুর..... তোমার কাছে ব্যাক্তিগত বলে কিছু নেই আমার অনুদি....... তবে..... " আবার থেমে যায় দীপ্ত,  তারপর একটু পরে বলে,  " আচ্ছা..... অনুদি,  শরীরই প্রেমের প্রথম শর্ত তাই না? মন দিয়ে যদি গভীর ভাবে ভালোবাসা যায় তাহলে সেটা ভালোবাসা না?  "

অবাক হয় অনামিকা,  একথা কেনো বলছে দীপ্ত। এতো কঠিন কথা তো গভীর চোট না পেলে দীপ্তর বয়সী ছেলের মুখ থেকে বের হয় না।   ও কি শারীরিক কোনো ত্রুটিতে ভুগছে?  যার কারণে ওর প্রেমিকা ওকে ছেড়ে গেছে? আবছা আলোয় দীপ্তর দিকে ভালো করে তাকায় ও। মাসলম্যান না হলেও মোটামুটি ছিপছিপে পেশীবহুল চেহারা দীপ্তর, অনাবশ্যক মেদের কোন চিহ্ন নেই কোথাও,  এককথায় যথস্ট হ্যান্ডসাম বলাই চলে..... বাইরে থেকে দেখে কোন সমস্যা আছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না।

" তুই কি কোনো শারীরিক সমস্যায় ভুগছিস?  " দীপ্তর প্রশ এড়িয়ে জিজ্ঞাসা করে অনামিকা......" দেখ তেমন হলে কিন্তু এসব এখন জলভাত..... খুব ভালো.... "

" তার মানে শরীরই প্রেমের প্রধান শর্ত,  তাই তো?  " অনামিকাকে মাঝপথে থামিয়ে তীক্ষ্ণভাবে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় দীপ্ত। 

অপ্রস্তুত হয় অনামিকা, " আমি কিন্তু সেটা বলি নি...... নারী পুরুষের ভালোবাসায় মনের পাশাপাশি হয়তো শরীরও সমান ভাবে দায়ী থাকে........ শারীরিক চাহিদার পূরোন মনের বাঁধন দৃঢ় করে..... একে অপরের পরিপূরক বলতে পারিস। "

" হুঁ........হয়তো তুমি ঠিক,  বা আমি ঠিক.... জানি না। " উদাস ভাবে বলে দীপ্ত।

" দেখ তোর সমস্যাটা কি ধরণের সেটা আগে জানতে হবে?  "

" থাক ওসব প্রসঙ্গ....... আমার সমস্যা অদ্ভুত,  কিছুটা শারিরীক আবার কিছুটা হয়তো মানসিক...... ছাড়ো.... "  দীপ্ত থেমে যায়।


অনামিকার মনে হচ্ছে দীপ্ত কিছু লুকাচ্ছে।  খুব গভীর কোনো গোপনীয় জিনিস।  সেটা কি অনামিকা জানে না।  কিন্তু দীপ্তর চোখমুখের ভাবের  বহি: প্রকাশ অন্য কথা বলছে।



সকালে ঘুম থেকে উঠে মাথাটা খুব ভার লাগে অনামিকার।। চারদিন এখানে আছে ও। প্রতিদিনই ভালো ঘুম হচ্ছে।  মানে শোয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে যাচ্ছে ও,  এক ঘুমে রাত পার.... তবে সকালে ওঠার পর বেশ কিছুক্ষণ মাথা ভার হয়ে থাকে।  আজও ভার কাটাতে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে চা বসায় ও।  দীপ্ত সকালে ছাদে এক্সেরসাইস করে।  অনামিকার অনেক আগেই ও উঠে পড়ে।  আজোও অনামিকার চা করার সময় সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসে দীপ্ত।  একটা শর্টপ্যান্ট পরে খালি গায়ে আছে ও,  ঘাড়ের উপরে একিটা তোয়ালে,  সারা গা ঘেমে চপচপ করছে.... অনাবৃত বুকের ঘন লোম ওর ফর্রসা বুকে খুব বেশী করে চোখে বাঁধছে। অনামিকা তাকাতেই ঝকঝকে হাসে দীপ্ত..... " গুড মর্নিং অনুদি...... "

অনামিকা হাসে,  " বাব্বা ঘেমে চান করে গেছিস তো..... যা গায়ে জল ঢেলে আয়,  আমি চা বসিয়েছি। "

"জাস্ট ফাইভ মিনিট..... " দীপ্ত তোয়ালে হাতে বাথরুমে ঢুকে যায়।  কে বলবে যে এই ছেলের শারিরীক সমস্যা আছে?  আদৌ শারিরীক না মানসিক সেটা দেখার বিষয়।



সকালের খাবার খেয়ে অফিসে বেরিয়ে যায় দীপ্ত।  এরপর অনামিকার নিঝুম সময়। একাকী পড়ে থাকে এই ফাঁকা বাড়িতে।  আজও দীপ্ত বেরিয়ে যাওয়ার একাকীত্ত্ব কাটাতে টেবিলে পড়ে থাকা পুরোনো খবরের কাগজটা তুলে নেয় ও।  দুদিন আগের কাগজ।  এখন খবরের কাগজ পড়ার চল প্রায় উঠে গেছে।  স্মার্টফোনে দিনরাত খবরের ডিটেইলস পেয়ে যাচ্ছে, কে আর কষ্ট করে কাগজ পড়ে? 

একটা স্থানীয় দৈনিক পেপার। যত সব আজে বাজে খবরে ভর্তি। অনামিকা পাতা উলটে ভিতরের পেজ এ যায়।  একটা কোনায় ছোট একটা বিজ্ঞাপন, ' REQUIRES TEACHER'S ON AN URGENT BASIS  FOR PATHARDUNGRI TRIBAL ACADEMY,  QUALIFICATION : H.S / ABOVE,  SALARY: 6000 P.M,  CONT :9064××××××


থমকে যায় অনামিকা।  বরাবর পড়াশোনায় ভালো অনামিকা হায়ার সেকেন্ডারীর বেশী পড়তে পারে নি বিয়ে হয়ে যাওয়ায়,  হায়ার সেকেন্ডারীতেও ভালো ফলাফল ছিলো ওর।  কিন্তু একটা বিয়ে ওর জীবন থেকে সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়.....শখ,  আহ্লাদ,  খুশী,  ক্যারীয়ার সব।  আজ নতুন করে সব শুরু করার ইচ্ছা জাগিছে।  এখানে মায়না একেবারেই কম তবে শুরুটা এভাবে করা যেতেই পারে।  ওর যোগ্যতায় এর থেকে বেশী আশা করা ঠিক না। আর ওকে যে এতো কম কোয়ালিফিকেশনে ওরা চাকরী দেবে তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়?  এখন তো খুবই প্রতিযোগীতার বাজার। 

অনামিকা ফোনটা নিয়ে ডায়াল করে।  ওপাশে রিং হচ্ছে,  অনামিকার বুক ধুক পুক করছে,  এর আগে কোনদিন কোথাও ইন্টারভিউ এর জন্য যায় নি ও।

" হ্যালো..... " একটা পুরুষ কন্ঠ ধরে ফোনটা।

অনামিকা উত্তেজিত,  " হ্যালো,  আমি দৈনিক লালমাটি পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপন দেখে ফোন করছি। "

ওপারের কন্ঠ বলে,  " হা..... বোলিয়ে,  ক্যায়া জাননা চাহতে হ্যায়?  "

" আসলে ইন্টারভিউ কিভাবে দেবো সেটাই আমি জানতে চাইছিলাম ... "

" দেখিয়ে ম্যাডাম,  হামারী সংস্থা ট্রাইবাল ডেভেলপমেন্ট কে লিয়ে কাম করতা হ্যায়... য়াহা পর হামনে হস্পিটাল অউর কলেজ বানায়া...... ছোটে বাচ্চো কে লিয়ে কলেজ,  লেকিন আপকো য়াহা রেহকার কাম করনা হোগা.... কিউ কি কলেজ কে অলাবা ভি বহত কুছ কাম হ্যায়..... ক্যায়া আপ কর সকতি হ্যায়?  "

" হ্যাঁ..... না পারার কোন কারন নেই,  আমি রাজী। " অনামিকা উত্তেজিত হয়ে বলে।

" ঠিক হ্যায় আভি ম্যায় এক লিংক ভেজ রাহা হুঁ....আপ উস লিঙ্ককে থ্রু আপনি ডিটেইলস ভেজ দিজিয়ে হামে.... এক ঘন্টা বাদ ভিডিও কলকে থ্রু আপকি ইন্টারভিউ লি জায়েগী ... "


অনামিকা ধন্যবাদ দিতেই কল কেটে যায়।  একটু পরেই একটা ম্যাসেজ ঢোকে।  সেটা খুলতেই একটা ফর্ম বের হয়,, সেখানে অনামিকা নিজের খুব সাধারন কিছু ডিটেলস দিয়ে সাবমিট করে দেয়। 

প্রায় ২ ঘন্টা বাদে ওর ফোনে একটা ভিডিও কল।আসে।  অনামিকা ভিডিও কল রিসিভ করতেই দেখে ওই প্রান্তে টাকমাথা একটা লোক,  আগের লোকটা হিন্দিভাষী হলেও এই লোকটা বাঙালী,  বয়েস প্রায় ৫০ এর কাছাকাছি,  চোখে দামী চশমা......।

অনামিকাকে দেখেই লোকটা হেসে বলে,  " নমষ্কার,  আপনি অনামিকা মিত্র? 

লোকটার ক্যাজুয়াল ভঙ্গিতে ভয় কেট গেছে অনামিকার। ও সহজ ভাবে বলে,  " হ্যাঁ..... স্যার। "

" ওকে.... আমি পুলকেশ বসু,  অরগানাইজেশনের এই জোনের কালচারাল ম্যানেজার, ... "

অনামিকা হাত জোড় করে নমষ্কার করে।  পুলোকেশ প্রত্যুত্তর দিয়ে বলে,  " দেখুন ম্যাডাম আমরা উপজাতিদের মধ্য স্বাস্থ্য আর শিক্ষার প্রসার ঘটাতে কাজ করছি,  আমাদের কলেজের ছোট ছোট বাচ্চাদের শিক্ষার সাথে সাথে তাদের অন্যান্য দিকেও যেমন মানসিক বিকাশ,  খেলাধুলা,  সামাজিকতা ইত্যাদির দিকে নজর দিতে হবে..... তাই শুধু নির্দিষ্ট কলেজ টাইমের শিক্ষক না আমরা চাই একজন প্রকৃত শিক্ষাদাতা বা শিক্ষাদাত্রী......আপনার প্রথাগত ট্রেনিং না থাকলেও হবে  তবে বাচ্চাদের জন্য কাজ করার ইচ্ছাটা থাকতে হবে,  বাকিটা আমরা শিখিয়ে নেবো, এখানে থেকেই আপনাকে কাজ করতে হবে,  সপ্তাহে দুদিন লীভ নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেন..... আপনি কি রাজী?  "

এমনই চাইছিলো অনামিকা,  ওর দ্বিমতের কোনো কারণ নেই,  " হ্যাঁ.... স্যার আমি রাজী.... "

পুলোকেশ সহাস্য মুখে কিছু প্রশ্ন করার পর নিশ্চিন্ত হয়ে বলে,  " তাহলে আমি আপনাকে এক বছরের কন্ট্রাক লেটার পাঠিয়ে দিচ্ছি,  আপনি সেটা পড়ে সই করে আমাকে পাঠাবেন..... কেমন?  "

অনামিকা ঘাড় নাড়ে।  এতো সহজে যে একটা চাকুরী পাওয়া যাবে সেটা ও আশা করে নি।  হোক না সামান্য মাইনা...... এমন কি বা খরচ আছে ওর?  বাচ্চাদের নিয়ে দিন কাটবে এর থেকে বেশী আর কি পাওনা থাকতে পারে?  ৬০০০ টাকা মানে দিনে প্রায় ২০০ টাকা,  পাহাড়ি আদিবাসী অঞ্চলে বহু মানুষ দিনে ১০০ টাকাও রোজগার করে না.....।

পুলোকেশ আবার বলে,  " ম্যাডাম, আপনার থাকার ব্যাবস্থা এখান থেকেই করা হবে তবে বাকিটা আপনাকেই করতে হবে..... আশা করি সমস্যা হবে না। "

অনামিকা বলে,  " না.... স্যার,  আমি আগ্রহী.... আপনাদের অনেক ধন্যবাদ আমাকে সুযোগ দেওয়ার জন্য। "

পুলকেশ হেসে কল ডিসকানেক্ট করে।  ফোন রেখে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে অনামিকা।  এই কদিন কোথায় যাবে,  কি করবে সেই ব্যাপারে খুব টেনসনে ছিলো..... আপাতত সেই চিন্তা দূর হলো বলা যেতে পারে।  তবে এই পাথরডুংরী গ্রামটা কোথায় সেটা তো জানা হলো না.....?


দুপুরে খাওয়ার পর হালকা ঘুম এসেছিলো অনামিকার।  কিন্তু তলপেটে প্রচণ্ড ব্যাথায় ঘুম ভেঙে যায়।  উঠে বাথরুমে গিয়ে শাড়ী উঠিয়ে প্যান্টি নামিয়ে বসতেই চমকে ওঠে ও।  খেয়াল ই ছিলো না যে ওর পিরিয়ডের সময় আসন্ন। বাথরুমের মেঝেতে রক্তের ফোঁটা ওর প্রস্রাবের সাথে ধুয়ে যাচ্ছে..... এই পান্ডব বিবর্জিত জায়গায় স্যানিটারী ন্যাপকিন কোথায় পাবে ও?  বাজার কত দূরে সেটাই তো জানে না..... ছোট থেকেই স্যানিটারী প্যাড ব্যাবিহারে অভ্যস্ত অনামিকা,  এখন কিছুই মাথায় আসছে না ওর।

কোনোমতে ঘরে এসে নিজের একটুকরো কাপড় দিয়ে যোনীমুখ বন্ধ করে ঘরে আসে।  অভ্যাসহীনতায় অত্যন্ত অস্বস্তি হচ্ছে। 

দীপ্ত কে কি বলা যায় ন্যাপকিন আনতে?  এমনিতে ওর আর দীপ্তর মধ্যে তেমন কোনো গোপনীয়তা নেই,  তবুও মুখের আলগা কথা আর ওর  পিরিয়ডের গোপনীয়তা কি এক?  শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ কাউকে ছাড়া কি পিরিয়ডের কথা বলা যায় কাউকে?  অনামিকা প্রাচীনপন্থী না,  কিন্তু শারীরিক গোপনীয়তা নামে একটা জিনিস তো থাকেই নারীর.... সেটা সহজে ছুঁড়ে ফেলার জিনিস তো না।

কিন্তু কিছু করার নেই।  এই অজানা অচেনা জায়গায় একমাত্র দীপ্তই ওকে সাহায্য করতে পারে.....গোপনীয়তা রক্ষা সবসময় সহজ হয় না।

দুবার রিং হতেই ওপাশ থেকে দীপ্ত ফোন ধরে,  " বলো অনুদি। "

অনামিকা কোন ভনিতা না করে সোজা বলে,  " শোন আসার সময় একটা স্যানিটারী ন্যাপকিনের প্যাড আনিস তো। " আসলে কথাটা বাড়িয়ে বললেই ব্যাপারটা বেশী অস্বস্তিকর হয়ে যায়।  সামান্য কথাতেই সারা ভালো।

" কিসের??  " দীপ্ত সামান্য থমকে যায়,  এর আগে এই জিনিস কেউ আনতে বলে নি ওকে।  পরক্ষণেই নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি বলে,  " ও.... আচ্ছা.... ঠিক আছে। "

হাঁফ ছেড়ে বাঁচে অনামিকা।  উফফফ..... কি কঠিন কাজ।  আচ্ছা দীপ্ত কি কল্পনাপ্রবন? তাহলে ও এই মুহূর্তে নিশ্চই অনামিকার গোপন অঙ্গের কাল্পনিক চিত্র ভাবছে....... ব্যাপারটা খুবই অস্বস্তিকর....   কি সব ভাবছে ও।  আগাগোড়া সরোজ ওকে প্যাড এনে দিতো।  আজ সেই দায়িত্বভার দীপ্তর উপরে। 
Deep's story
[+] 10 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান/ নতুন পর্ব - ৯ ই সেপ্টেম্বর - by sarkardibyendu - 14-11-2025, 05:11 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)