10-11-2025, 06:33 PM
(This post was last modified: 10-11-2025, 06:38 PM by sarkardibyendu. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
।। এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান ।।
পুব আকাশে সবে সূর্য্যদেব উঁকি মারছে। এতোক্ষন আলো ছড়ানো প্লাটফর্মের আলো গুলো এখন ম্লান। সকালে প্লাটফর্ম লোকজনের আনাগোনায় সরগরম। ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে লোকজন অপেক্ষারত। কয়েকজন চা বিক্রেতা প্রতিটা মানুষের সামনে গিয়ে তাকে জরিপ করছে সে চা খাবে নাকি? তেমন বুঝলে একটা ছোট হাক, " চা....গরম চা.... চা... "
যাত্রীরা তাতেও সাড়া না দিলে সরাসরি জিজ্ঞাসা, " দাদা..... চা হবে নাকি? "
সকালবেলায় চায়ের বিক্রিই বোধহয় সবচেয়ে বেশী হয়। অনামিকা একটা ফাঁকা কংক্রিটের বেঞ্চে একা বসে। পোষাক অতি সাধারন, চুল আগোছালো ভাবে পিছনে রাবার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধা, প্রসাধন কিছুই নেই, চোখে মুখে রাত্রি জাগার ছাপ স্পষ্ট। ওর সৌন্দর্য্য এতোটাই যে প্রসাধনহীন, টিপ, লিপ্সটিচ ছাড়া চেহারাও লোকের নজর কেড়ে নিচ্ছে। একাকী একজন সুন্দরী মহিলাকে এই ভোর বেলা এভাবে বসে থাকতে দেখে অনেকেই একবার ঘুরে তাকাচ্ছে। অনামিকার সেদিকে খেয়াল নেই। মাথাটা কেমন ফাঁকা হয়ে গেছে। কাল রাতের সবকিছু মনে হচ্ছে একটা স্বপ্ন।
" মাজী.... চায়ে পিজিয়েগা? " বিহারী চা ওয়ালা উৎসুক চোখে অনামিকার দিকে তাকিয়ে। ওর হাতে বড় চায়ের কেটলী। অন্য হাতে চায়ের কাপ।
চা খেলে যদি মাথাটা একটু ঠিক হয়। সাথে বেশী টাকা নেই। তবুও অনামিকা ঘাড় নাড়ে, " একটা দিন....কত? "
চা ওয়ালা ধোঁয়া ওঠা চা একটা কাগিজের কাপে ঢেলে অনামিকার হাতে দেয়, " দশ রুপিয়া.... মাজী। "
ব্যাগ থেকে দশ টাকার একটা নোট বের করে চা ওয়ালার হাতে দেয় অনামিকা। চা ওয়ালা টাকাটা নিয়ে অন্যদিকে এগিয়ে যায়। চায়ের কাপে একটা চুমুক মেরে ভালো লাগে ওর। রাতে কিছু খাওয়া হয় নি। ইচ্ছাও ছিলো না। একটা ঘ্যান ঘ্যানে পীড়াদায়ক সমপর্কের বাঁধন থেকে বেরিয়ে এসে ভালো লাগছে ওর। সত্যি বলতে সরোজের জন্য কোন সহানুভূতি বেই অনামিকার। বিয়ের পর এতোগুলো বছর যেনো সরজ আর তার পরিবারের সেবা করে কাটানোটাকেই জীবনের অপরিহার্য্য সত্যি বলে ধরে নিয়েছিলো। ভালো না লাগলেও সেই একঘেঁয়ে রুটিনেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলো ও। এমন যে করবে সেটা কয়েকমাস আগেও ভাবনার বাইরে ছিলো। কিন্তু রাজুর আগমন সব পালটে দিলো। একটা সদ্য তরুন আর একজন পরিনত নারী...... সব নিয়ম কানুনের বাইরে গিয়ে একে অপরকে শরীর মন দিয়ে বসলো। অনামিকা আজ পরিনত নারী, কিন্তু সত্যিই কি তাই? পরিনত আত্মমর্জাদাসমন্ন অনামিকার আড়ালে এখনো লুকিয়ে আছে কিশোরী অবুঝ অনামিকা। তার প্রশ্রয়েই রাজু তার মনে জায়গা করে নেয়। অবলীলায় সংসার ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে ও। বাইরে থেকে দেখে বিন্দুমাত্র বোঝার উপায় নেই যে ভিতরে থাকা সেই কিশোরী অনামিকা কতটা অবুঝ...।
চাটা শেষ করে চায়ের কাপ পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে পিছনে হেলান দিয়ে চোখ বোজে ও। ঝোঁকের মাথায় কাল বেরিয়ে এসেছে সেটা বলা ভুল। আসলে এতোগুলো বছর ছন্দহীন নদীর মত একঘেঁয়ে একটা জীবন কাটিয়ে আসছিলো অনামিকা। রাজু না আসলে সেই নদীতে ঢেউ কখনো উঠতো কিনা সন্দেহ। হয়ত সংসার নামক জোয়াল ঠেলতে ঠেলতেই একদিন বুড়ি হয়ে যেতো ও। কিংবা একটা সন্তান থাকলেও হয়তো জীবন অন্যরকম হতো। যতদিন রাজু ছিলোনা ততদিন অনামিকা এভাবে কখনো ভাবে নি...।
রাজু ওর জীবনে এমন ভাবে প্রবেশ করলো যে ওর চলে যাওয়ার পর আর পুরোনো সেই একঘেঁয়ে ছন্দহীন জীবনে অনামিকার ফিরতে ইচ্ছা করলো না। মনের অগোচরে ও এর থেকে মুক্তি চাইছিলো। কাল রাতে সবকিছু শোনার পর সরোজ ওকে বারিয়ে যেতে বলে। এটা যেনো অনামিকার কাছে প্রত্যাশিতই ছিলো, বরং সরোজ ওকে এরপরেও সেখানে থাকতে বললেই ওর সেটা খারাপ লাগতো.....।
ভেজা শরীরে ছাদ থেকে নেমে নিজের দু একটা কাপড় আর জমানো কিছু টাকা নিয়ে ও বেরিয়ে আসে তখন সবে আলো দেখা যাচ্ছে। কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে কিছুই ভাবে নি। এখনো ও জানে না ওর গন্তব্য কোথায়। কিন্তু মন বোধহয় ওকে রাজুর কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্যই অগোচরে এই স্টেশনে টেনে এনেছে। কিন্তু সেটাই বা কিভাবে সম্ভব? বাড়ি ছাড়ার পর একবারের জন্যেও রাজু খোঁজ নেয় নি অনানিকার। এটা কি ওর অভিমান? নাকি ছেলেমানুষি? এখানে থাকতে ও অনামিকার জন্য পাগল হয়ে ওঠে কিন্তু যাওয়ার পরেই ভুলে যায়?
অনামিকার মন সেটা বলে না। রাজুর চোখে ও নিজেকে যেভাবে দেখেছে তাতে রাজু কয়েক বছর যোগাযোগ না রাখলেও ও যে অনামিকাকে ভুলতে পারবে না সেটা জানে অনামিকা। কিন্তু কিসের জোরে ও রাজু আর পল্লবীর কাছে গিয়ে উপস্থিত হবে? কোন অধিকারে? সেটাও একটা বড় প্রশ্ন। মন চাইলেও কোথায় একটা বাধা ওকে এগোতে দিচ্ছে না..... সেটা ওর আত্মসম্মানবোধ...... যে আত্মসম্মান ওকে সরোজের এক কথায় বাড়ি ত্যাগে বাধ্য করে সেই আত্মসম্মানই ওকে পল্লবী আর রাজুর মাঝে উপস্থিত হতে বাধা দিচ্ছে। তাহলে উপায় কি? দাদা ভাইয়ের সংসারে ও উপস্থিত হতে পারে না, সেখানেও একি প্রশ্ন..... তাহলে?
একটা পুরুষ বাইরে বেরিয়ে গাছতলাতেও কাটিয়ে নিতে পারে কিন্তু একটা মেয়ে সেটা পারে না, আর এই কারনেই হাজার শর্তসাপেক্ষে মেয়েদের স্বামীর ঘর করে যেতে হয়। ভালো না লাগলেও করতে হয়......।
বসে থাকতে থাকতে তলপেটে চাপ অনুভব করে অনামিকা। অনেক্ষণ বাথরুমে যাওয়া হয় নি। ব্যাগটা হাতে নিয়ে ও বাথরুমের দিকে এগোয়। মেয়েদের বাথরুমটা বেশ পরিষ্কারই আছে। পাঁচ টাকার বিনিময়ে সুলভ শৌচালয়।
কাপড়টা কোমর পর্যন্ত গুটিয়ে প্যান্টিটা নামিয়ে বসে ও। নিজেকে হালকা করে শরীরটাকেও বেশ ঝরঝরে লাগে। চোখে মুখে জল দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। একটা ট্রেন এলো। প্লাটফর্মে বেশ ভীড় এখন। অনামিকা কোথায় যাবে জানে না। আর কিছু সময় ভাবার দরকার। ও ভীড় এড়িয়ে প্লাটফোর্মের মাথার দিকে চলে আসে। এখানে একজায়গায় হলুদের মধ্যে কালো দিয়ে লেখা " " মধুকুন্ড "...... স্টশনের নাম।
একটা গাছের নীচে গোল করে বাঁধানো। অনামিকা সেখানে বসে ব্যাগটা পাশে রেখে চারিদিকে তাকায়। কয়েকজন যাত্রী ওর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বুকের দিকে বেশ করে দৃষ্টি আটকে নেয়.... অনামিকা দেখে শাড়ীর আঁচল সরে গিয়ে ওর স্তনের খাঁজ বেরিয়ে আছে। অনামিকার মত সুন্দরীর ক্লিভেজ দেখার উৎসাহ সবার থাকবেই.... ও আঁচলটা টেনে ঠিক করে নেয়।
" আরে অনুদি না? এখানে? "
নিজের নাম শুনে মাথা তুলে তাকায় অনামিকা। একটা ২৮/২৮ বছরের ফর্সা হ্যান্ডসাম ছেলে ওর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে। ছেলেটার মাথায় ছোট করে ছাঁটা চুল, চোখে চশমা, মুখে ট্রিম করা হালকা দাঁড়ি, পরনে নীল জিন্স আর সাদা শার্ট, কাঁধে একটা ব্যাগ। হঠাৎ করে মনে আসে এটা দীপ্ত। ওর মাসীর ননদের ছেলে।
অনামিকা কি বলবে ভেবে পায় না। দীপ্ত হেসে বলে, " বাব্বা কতদিন্নপর তোমাকে দেখলাম, প্রায় ৮/৯ বছর তো হবেই.... তবে এক্কবারেই চিনে গেছি। "
অনামিকা ম্লান হাসি আনে মুখে, " তুই কোথায়? ? "
" তার আগে বলো এই সকালে তুমি স্টেশনে কি করছো? সরোজ দা আসে নি? "
অনামিকা মাথা নাড়ে, " না, একটা কাজে বরাভুম যাবো। " ইচ্ছা করেই অনামিকা এই স্টেশনের নাম বলে। আর কিছু মাথায় আসে না ওর।
" আরে সে তো আমিও যাবো, কিন্তু ট্রেন তো সেই পৌনে নটায়, এখন এসেছো কেনো? "
অনামিকা থতমত খায়, " না মানে, টাইম জানা নেই। "
দীপ্ত ওর পাশে বসে বলে, " তাই বলো, তবে এখন তো মোবাইলেই দেখে নেওয়া যায়.... আমি এখানে একটা কাজ আছে বলে একটু আগে এসেছি। "
" কোথায় যাবি বরাভুমে ? " অনামিকা প্রশ্ন করে।
দীপ্ত ঝটপট বলে, " আরে ওখানেই তো আমার কর্মভুমি.... চাকরী পেয়েছি একটা পঞ্চায়েত এ, সেক্রেটারী পদে। "
অনামিকা শুধু বলে " ও: ভালো.... "
দীপ্তর ঘোর যেনো কাটছে না, ও আবার বলে, " উ: তুমি কিন্তু আরো সুন্দরী হয়ে গেছো..... সেই ছোটবেলাতেই তোমাকে দেখে ক্রাশ খেয়ে যেতাম, এখনো তাই.... "
অনামিকা ঠোঁটের কোনে চিলতে হাসি এনে চোখ বড়ো করে...., " এখনো ফাজিল রয়ে গেছিস তুই, পাল্টাবি না? "
" ধুর কি হবে পালটে? আমার ফাজলামোতে তোমার মত সুন্দরীরা যদি একটু আনন্দ পায় তাহলে সেটাই আমার পুরোষ্কার। "
" আমি দিদি হই না তোর....? " অনামিকা কপট রাগে তাকায়। একটা হাসি খুশী ছেলেকে সামনে পেয়ে মনটা একটু হালকা লাগছে অনামিকার।
" বাব্বা..... আমার মায়ের বৌদির বোনের মেয়ে তুমি.... সম্পর্ক খুঁজতে গেলে হারিয়ে যাবো.... আমরা বন্ধুই ভালো। " দীপ্ত হেসে ওঠে।
হাসি পায় অনামিকারও। এবার বলে, " যা তোর কাজের দেরী হচ্ছে না? "
" ধুর ও না করলেও হবে, এখন একটূ তোমার সাথে গলপ করে নিই আগে। "
অনামিকার ভালো লাগলেও মনে ভয় লাগছিলো, যদি দীপ্ত জেনে যায় ওর বাড়ি ছাড়ার কারন। কিভাবে সামাল দেবে সেই পরিস্থিতি?
অনামিকার মনের কথা বোধহয় পড়তে পারছিলো দীপ্ত, ও সোজা প্রিশ্ন করে, " কিন্তু তোমার বেশ এমন আগোছালো কেনো? কোন বিপদ হয় নিতো কারো? "
অনামিকা সামলে নেয়, " না না আসলে খুব সকালে বেরিয়েছি তো তাই সেভাবে সাজি নি। "
" দরকারো নেই, এমনিতেই এখানে ৯৫ ভাগ পুরুষের চোখ তোমার উপরে..... " হেসে গড়িয়ে পড়ে দীপ্ত।
মন্ খারাপ থাকলেও ওর কথাতে হাসি পায় অনামিকার। দীপ্তর মত লোকেরা মানুষের খারাপ মনকেও ভালো করে দিতে পারে শুদু নিজের ব্যাবহার দিয়ে। কিছু সময়ের জন্য সব ভুলে থাকা যায়।
" তার মানে কিছু খাও ও নি এখনো? একটু বোসো আমি আসছি..... " দীপ্ত ঝট করে উঠে দাঁড়ায়।
" আরে না না..... " অনামিকার মুখের কথা বেরোনর আগেই দীপ্ত দৌড়ে চলে যায়। অনামিকা হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। চেহারাতে অনেক পরিবর্তন হলেও স্বভাব এখনো একটুও পাল্টায় নি দীপ্তর। ওর কাছের লোকেরা কেউ ওর উপরে বিন্দুমাত্র রাগ করে থাকতে পারে না।
অনামিকা ভাবে কি করবে? বরাভুমে ওর সাথেই নামবে দীপ্ত। আগে জানলে অন্য স্টেশনের নাম বলতো। এখন তো আর সেটা করা যাবে না। কে জানে দীপ্তও ওখানেই যাবে?
একটু বাদে দীপ্ত হাতে দুটো শালপাতায় কচুরী নিয়ে ফেরে। একটা পাতা ওর হাতে দিয়ে বলে, " নাও আপাতত এটা সাবাড় করো। "
ক্ষিধে বেশ পেয়েছিলো অনামিকার। তাই আর কিছু না বলে পাতাটা হাত বাড়িয়ে নেয়।
" মাসীমা কেমন আছে রে? কতদিন দখা হয় না? " অনামিকা বলে।
" মা তো দাদার কাছে টাটানগর থাকে, আমি এখানে একাই থাকি..... মাঝে মাঝে যাই দেখা করে আসি। " কচুরী চেবাতে চেবাতে দীপ্ত বলে।
৯ টা নাগাদ ট্রেন ঢোকে। বেশী ভীড় নেই। মেমু ট্রেন। অনামিকা আর দীপ্ত পাশাপাশি বসে। অনামিকা জানালার ধারে। নিজের কথায় ফেঁসে এই ট্রেনে উঠতে হয়েছে অনামিকাকে। কোথায় যাবে সেটাই জানে না ও। যাই হোক স্টেশনে নেমে যেভাবে হোক দীপ্তকে বিদায় দিয়ে তারপর ভাবতে হবে। ট্রেন এ বসেও হাবিজাবি কথা বলে চলে দীপ্ত। অনামিকা মাঝে মাঝে একটা দুটো কথা বলছে।
বেশ কিছুদূর আসার পর ট্রেন এ একজন সাদা শার্ট কালো কোট এর টী টী ওঠেন। তাকে দেখেই ভয়ে মুখ সাদা হয়ে যায় অনামিকার। কি সর্বনাশ....... টিকিট তো ওর কাটা নেই। এবার কি হবে....? কপাল ঘেমে ওঠে ওর। এদিকে দীপ্ত একটানা বকেই চলেছে। অনামিকার সেদিকে মন নেই। ও কি করবে ভাবছে।
" ম্যাডাম..... টিকিট? " অনামিকার দিকে তাকিয়ে টিটি হাত বাড়ায়।
অনামিকার গলা শুকনো। ও টিটির দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাওয়ার আগেই বাধা দেয় দীপ্ত।
" তাড়াতাড়িতে ওর টিকিট কাটতে ভুলে গেছি, আপনি ফাইন কাটুন.... আমি দিচ্ছি। "
দীপ্ত ফাইনের টাকা দিয়ে রসিদটা অনামিকার হাতে দিয়ে বলে, " এটা রাখো। "
অনামিকা ব্যাগ থেকে টাকা বের করে, কিন্তু দীপ্ত ওর হাত চেপে ধরে, " কি পাগলামো করছো, রাখো এটা এখন। "
অনামিকা ধরা পড়ে গিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখতে থাকে।
উচ্ছ্বল দীপ্ত হঠাৎ শান্ত হয়ে অনামিকার একটা হাতে হাত রাখে, " বাড়ি থেকে অশান্তি করে এসেছো না? "
অনামিকা অবাক চোখে দীপ্তর দিকে তাকায়। এই ধরনের চঞ্চল ছেলেরা যখন শান্ত হয়ে যায় তখন তাদের চোখকে ফাঁকি দেওয়া কঠিন। ও আবার মাথা নীচু করে।
" দেখো অনুদি, তোমাকে আমি যতদূর চিনি তাতে সাধারন কোন কারণে এভাবে বেরিয়ে আসার মানুষ তুমি না, আর বেরিয়ে যখন এসেছো তখন সহজে ফিরবেও না এটা জানি.......কোথায় যাবে কিছু ঠিক করেছো? "
" জানি না....... " অনামিকা মৃদু স্বরে বলে।
" কদিন আমার কাছে থাকবে? আমি একা মানুষ..... তুমি থাকলে ভালো লাগবে? " দীপ্ত বলে।
" না রে....... নিজের দোষে যে বাড়ি ছাড়ি নি সেটা বুঝলি কি করে? কারো উপর গলগ্রহ হব বলে বাড়ি ছেড়ে আসি নি।" অনামিকা বলে।
" আশা করি দীপ্তকে তুমি যেটুকু চেনো তাতে তার কাছে গলগ্রহ বলে কোন জিনিস হয় না সেটা জানো নিশ্চই..... অনুরোধ না অধিকার থেকেই বলছি, আমার কাছেই থাকবে তুমি....... " দীপ্তর স্বর দৃঢ় শোনায়।
" জেদ করিস না দীপ্ত....... হয়তো আমি ভালো না, " অনামিকা নারাজ।
" নিজের মানুষের কাছেই তো জেদ করে, এচাবে তোমাকে ছেড়ে আমি যাবো না...... তুমি আমার সাথে না গেলে আমিও তোমার সাথেই পথে পথে ঘুরে বেড়াবো। "
অনামিকা কেঁদে ফেলে, " কেনো এমন ভালোবাসার বাঁধনে জড়াস তোরা? যেটা ছাড়ানো যায় না? ........আমি কে? একটা বাজে মেয়েমানুষ। "
অনামিকার মাথা টেনে নিজের কাঁধে নেয় দীপ্ত...." এসব কথা বলো না...... আমার সাহসী অনুদি তুমি.... এতো ভেঙে যেও না। "
Deep's story


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)