(১১)
মিমকে বাইকে তুলে চললাম বাসার উদ্দেশ্য। বললাম, "শক্ত করে ধরো।"
গাড়ি কত জোরে চালিয়ে বাড়ি এসেছি নিজেও জনিনা। মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরছিলো---মিমের "অতীত" আবার মিমকে এসে ডিস্টার্ব করছিলো কেন? কোনোই উত্তর নেই আমার কাছে।
বাসাই পৌছেই সৈকতদের কথা মনে পরলো। ফোন বের করে দেখি অনেকবার কল। ব্যাক করে বললাম, দোস্ত তোরা ক্যাম্পাস চলে যা, আকি বিকালে আসছি। এসে তোদের বলছি সব। আমি মিমকে নিয়ে বাসাই চলে আসলাম।
শাশুড়ি দরজা খুলে দিলেন। মিম গিয়ে মায়ের গলা ধরে কান্না শুরু করলো। পুরো রাস্তায় মিম একটি কথাও বলেনি। আমাকে শক্ত করে জোরিয়ে ধরেছিলো।
শাশুড়ি মিমকে ভেতরে নিয়ে গেলেন। আমি আর কিছুই বললাম না। বলার মত কিছু পেলাম ও না।
সালাম চাচা মিমের কান্না দেখে অবাক। বারংবার জিজ্ঞেসা করছেন, “কি হয়েছে মা তোমার?”
আমি আমার রুমে আসলাম। শাশুড়ি মিমকে তার রুমে নিয়ে গেলো। ফ্রেস হয়ে সুয়ে গেলাম। শরীর কাপছে। আবার জ্বর চলে আসবে নাকি?
ঘড়িতে ৯:২০ বাজে। এখন কোনো কাজ নাই।শরীরে জ্বর আসলো। মনটাও ভালো লাগছেনা। ওরা মা মেয়ে এখনো মায়ের রুমে। কি করি এখন আমি?
ইউটুবে গেলাম গান শুনবো। পছন্দের রবীন্দ্রসংগীত প্লে করলাম। চোখ বন্ধ করে শুনতে থাকলাম। নাহ ভালো লাগছেনা। মন ছটপট করছে। পছন্দের জিনিসের জন্যেও পরিবেশ পরিস্থিতি লাগে। নয়তো সেটাও অপছন্দের লিষ্টে চলে যাই।
ঘড়ির কাটা ১১টা বাজে। এখনো মিম মায়ের রুমে।
নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। ল্যাপটপটা অন করে রিসাইকেলবীনে গেলাম। কদিন আগেই ডিলিট করা মা মেয়ের গোপন দুনিয়া এখনো পার্মানেন্ট ডিলিট হয়নি। রিসাইকেলবীনেই আছে। সেখান থেকে পুরো ফাইলটা উদ্ধার করে একটা মিমের কাপল উলঙ্গ ছবি আর আরেকটা শাশুড়ির মেকাপ করা সাজুগুজু ছবি যা জামা আর পেড়িকোটের সহিত। কাপড় টা হালকা বুক থেকে নিচে নামানো।
ছবি দুইটা আমার ফোনে নিয়ে চললাম শাশুড়ির রুমে। মাথা আমার কাজ করছেনা আর। যা হবার হবে। ওরা পেয়েছে কি? এতক্ষণ ধরে আমি রুমে একা পড়ে আছি। এখনো মা মেয়ের একা রুমে কি?
“আছো?” রুমের দরজার থেকেই নক দিলাম তাদের।
রুমে ঢুকেই বুঝলাম তারা আমায় দেখে অপ্রস্তুত হয়ে গেছে। কথা বন্ধ করে দিয়েছে। আমি সোজা গিয়ে সোফাই বসলাম। ওরা মা মেয়ে বেডে।
“কি ব্যাপার তোমার গায়ে ছাদর কেন? জ্বর আসলো আবার নাকি?” মিম আমার অবস্থা দেখে প্রশ্ন করলো।
আমি তার প্রশ্নে গুরুত্ব দিলাম না।পালটা প্রশ্ন করলাম।
“তোমার কি হয়েছে বলো তো?” সারা রাস্তা প্রশ্ন করলাম, উত্তর দিলানা। বাসাই এসেও এখানে বসে আছো। আমি তোমার স্বামি না? তোমার জীবন্র যাইহোক, আমাকেই যদি না বলো, আর কাকে বলবা? এখন তো তোমার সবকিছুর দায়িত্বে আমি। আমাকেই এভাবে লুকানোর তো মানে দেখিনা।
“না বাবা ওর ব্যাপারে মন করোনা। আসলেই তোমাকে তো তখন বললাম ই। ঐ ছেলেটা নাকি আজ ক্যাম্পাসে এসে ডিস্টার্ব করছিলো। আর মিম তোমাকে বলতে ভয় পাচ্ছে। তাই।”
“কিন্তু আম্মা, আমি তো তার স্বামি। তার ভালোমন্দ সবকিছুই আমার দায়িত্বে। আমাকে ভয় পাবার তো কিছু নাই। নাকি আমাকে এখনো বিশ্বাস্কযোগ্য স্বামি হিসেবে ভাবতে পাচ্ছেনা?” মুখে যা আসছে তাই বলে দিচ্ছি। ভেতরটা রাগে ফেটে যাচ্ছে।
মিম নিচে মুখ করে আছে। চুপ। বুঝছিনা সে স্বাভাবিক নাকি কান্না করছে। শাশুড়িই আবার মুখ খুললেন।
“না বেটা। তুমি ভুল বুঝোনা প্লিজ। মিম সত্যিই তোমাকে ভয়েই কিছু বলতে পাচ্ছেনা। আমি অনেক ক্ষন ধরেই তাকে রুমে পাঠানোর চেস্টা করছি। সে ভয়েই যাচ্ছেনা। তুমি প্লিজ রাগ করোনা বেটা।”
“বুঝেছি। আমাকে ভয় পাচ্ছে। তার মানে আমাকে এখনো আপন ভাবতে পারেনি। আমাকে আপনারা কেউ এখনো নিজের ভাবতে পারেন নি। নয়তো আপন মানুষের কাছে কেউ ভয় পাই? বিপদ হলে আগেই আপন মানুষের কাছে আমরা দৌড়াই। তার কাছেই নিজেকে আশ্রয় দিই। আর সেখানে আমাকেই ভয় পাচ্ছে। অথচ আমি আপনাদের পরিবারটাকে বিয়েই আগে থেকেই কতটা আপন করে নিয়েছি তা আপনারা কখনোই জানবেনা না। আপনাদের জীবনের বিপদ ভেতর ভেতর কতটা ভয়ংকর ভাবে নেমে এসেছিলো তা কখনোই জানবেনা না। একমাত্র আমিই যেকিনা আপনাদের কেউ জাতে বিপদে ফেলতে না পারে সেজন্যে আমিই মিমকে বিয়ের জন্য তারা দিই। আপনাদের পরিবারটিতে সাথে থাকবো বলে।”
লম্বা একটা ভাষণ দিয়ে দিলাম। কি দিলাম নিজেও জানিনা। লাটাই ছেরে দিয়েছি। ঘুড়ি উড়ছে। যাক যেদিকে যাবে।
“কিসের বিপদ বেটা?” শাশুড়ির চোখে মুখে আতংকের ছাপ।
“আম্মা একটু এদিকে আসবেন?” শাশুড়িকে আমার পাশে ডাকলাম।
উনি আসলে আমি উনার ছবিটা বের করে উনার হাতে ফোনটা দিলাম যাতে উনি একাই দেখেন।
উনি নিজের ছবি দেখার পর হাত পা কাপা শুরু হয়ে গেছে। আমি উঠে উনাকে ধরে পাশে বসিয়ে দিলাম।
মিম উনার অবস্থা দেখে চমকে গেছে।
“কি হলো তোমার আম্মু?” মিম দৌড়ে এসে পাশে।
শাশুড়ি চুপ। মিম আমার ফোন দেখতে চাচ্ছে। তাকে বললাম, ওয়েট। আমাকে আগে কথা বলতে দাও।
আমি বলা শুরু করলাম, “আম্মা এই ব্যাপার টা আমি আমার বিয়ের আগেই জানতে পারি। Shahjahan Mia নামের ঐ প্রতারকের খোজ বের করি। কিভাবে জেনেছি জানতে চায়েন না। সে অনেক বড় কাহিনি। আমি উনার পরিচয় বের করে জানতে পারি সে একজন বস্তির ঘরের নুংরা ছেলে। আমি আর আমার দুজন বন্ধু গিয়ে তার ফোন কেড়ে দিই। সেখান থেকে সব কথা জানতে পারি। তাকে পুলিশের ভয় দিলে সে আর আপনাকে ডিস্টার্ব করবেনা বলে জানাই।
কিন্তু আমিই বলি, তোমরা এতো দূর পর্যন্ত পৌছে গেছো, ঐ মহিলা(তখন তো আপনি আমার শাশুড়ি হননি) যদি আবেগে কিছু করে ফেলে তাহলে সমস্যা। তাই তোমাকে আমি ৩মাস সময় দিলাম। এই ৩মাসে তুমি কলা কৌশলে উনার জীবন থেকে বেরিয়ে আসবা। আর যদি এমনটা না করেছো তো তোমাকে বাকি জীবন পুলিশের আশ্রমে কাটাতে হবে। এই বলে ঐ বাটপারকে শায়েস্তা করে আসি।
আর মিমের জন্য আমি কিছু করিনি ভেবেছেন?”----বলেই ফোন থেকে মিমের ছবি বের করে তার হাতে দিলাম।
মিম শাশুড়ির পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার অতীত দেখছে। এদিকে শাশুড়ি সোফাই বসে বসে চোখ বেয়ে টপটপ করে জল ফেলেই যাচ্ছেন।
আমি আবার মিমের হাত থেকে ফোনটা নিলাম। বললাম, “মিম জানো, আমি তোমার এসব কখন জানতে পারি??? জানোনা। তুমি তো আমাকে সব গোপন রেখেছিলাম। আমি এসব জানার পর তোমাকে বিন্দু মাত্র কষ্ট দিয়েছি? বিন্দু মাত্র বুঝতে দিয়েছি?? তুমি কষ্ট পাও এমন কিছু বলেছি??? নাহ। কিছু বুঝতে দেইনি তোমাদের। কেন জানো?? কারণ এই পরিবারকে আমি নিজের ভেবেই এই পরিবারে এসেছি। আমি ভেবেছিলাম আমি তোমাদের অনেক আপন হয়ে আছি এই পরিবারে। আর অতী আপনের সঙ্গ্যা কি জানো??? নিজেরা নিজেদের থেকে গোপন না রাখা। বিপদে আপদে পাশে থাকা। তোমার অতীত কি আমি জানিনা? তাহলে কেন আমাকে এতো ভয়??
ঐ ছেলের ব্যাপারে আজ ক্যাম্পাসে যদি বলতা, আর ওকে যদি ওইখানে পেতাম তাহলে ওকে তখনিই পুলিশে দিতাম। আর তুমি কিছুই না বলে চুপচাপ বাসাই চলে আসলে।”
লম্বা একটা ভাষণ দিয়ে চুপে গেলাম। জানিনা ভালো করলাম নাকি খারাপ। তবে মা মেয়ে দুটোই এখন কিংকর্তব্যবিমূঢ়!
দুজন ই দুজনার দিকে তাকাচ্ছে।
আমি শেষ আরেকটা কথা বললাম, “শুনো, আমাকে আপন না ভাবতে পারলে বলে দিও। আমি আমার বাবা মাকে ছেরে তোমাদের বাসাই পরে আছি। আপন ভেবেই আছি। আর আমি তোমরা মা মেয়ের বিপদ মানে তো আমার বিপদ। আর তাই আমি বাইরে বাইরে সেটাকে ম্যানেজ করে আসছিলাম। যাতে এরপর থেকে কেউ তোমাদের সমস্যা বা ব্লাকমেইল না করতে পারে। আজ তুমি সেখানেই সত্যটা বললে তার খবর করে দিতাম।”
“বাবা আমাদের ভুল বুঝোনা। তুমি আমাদের আপন সন্তান বাবা। আমরা তোমাকে কেন আপন ভাব্বোনা বলো?”
শাশুড়ির চোখে জল।
“শুনেন আম্মা, আপনাদের কাছে এখনো আমি কাছের মানুষ হতে পারিনি। হতে পারলে মিম সেখানেই আমাকে সব বলে দিতো যে তাকে কে ডিস্টার্ব করছিলো। আপনাকে তো ফোনে ঠিকই বলেছে, তাহলে আমাকে বলতে ভয় কিসের?”
মিম তার মায়ের সামনেই আমাকে ঝাপটে ধরলো। চিৎকার দিয়ে কান্না শুরু করলো। আমিও তাকে সাপর্ট স্বরুপ জোরিয়ে ধরলাম–---”কান্না করোনা। আমি আছি তো। তোমাদের পরিবারের আমি একজন সদস্য। আমি বেচে থাকতে তোমাদের পরিবারটির কেউ কিছু করতে পারবেনা।”
আমি মিমকে ছেরে দিয়ে বললাম, ‘“শুনো, তোমার বিপদ দেখে আমি সৈকতদের আসতে বলেছিলাম। আমি একটু ওদের সাথে দেখা করে আসি। যাবো আসবো। আর হ্যা, যাবার আগে একটা কথা দিতে হবে তোমরা দুজনকে।”
দুজন ই আমার দিকে তাকিয়ে। শাশুড়ি বললেন, “কি বাবা?”
“শুনেন আম্মা, আমি এখন ক্যাম্পাস যাচ্ছি। একটু পর আসবো। যাবার আগে একটু অনুরোধ---আপনার মেয়েকে আমি যা দেখিয়েছি তা আপনার মেয়েই জানে।কৌতুহল বসত সেটা আপনার মেয়েকে প্রশ্ন করে জানতে চাইবেন না যে কি দেখিয়েছি। এটাতে আপনার মেয়ে বিব্রতবোধ করতে পারে।
আমি মিম শুনো, তুমিও আম্মাকে কি দেখিয়েছি তা আম্মার থেকে জানতে চাইবানা। তাহলে উনিও বিব্রতবোধ হতে পারেন। এটা আমার অনুরোধ। আর আমার উপর ভরসা রাখো, আমি বেচে থাকতে তোমাদের উপর কোনো ধরনের অশুভ ছায়া পরতে দিবনা।”
“আচ্ছা বেটা। সাবধানে যেও। আর জলদি চলে আসিও। খাবার রেডি করে রাখছি।”
আমি উনার রুম থেকে বের হলাম।মিম আমার পিছন পিছন।
আমাদের রুমে আসলে মিম আমাকে পিছন থেকে আবারো জোরিয়ে ধরলো–---- “তুমি অনেক ভালো একজন স্বামি। আই লাভ ইউ।”
“হয়েছে হয়েছে। আমাকে ভয় পাও, আর আহলাদিপনা দেখাতে আসছে। থাকো। আমি ওদের সাথে দেখা করে আসি।”
“আচ্ছা সোনা যাও। আজ রাতে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।” মিমের ঠোটে মুচকি হাসি।
“কিসের সারপ্রাইজ?”
“উহুহ। সারপ্রাইজ তো আগে বলতে নেই।”
“প্লিজ সোনা বলো। নয়তো মনে শান্তি পাবোনা। গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে এটাই বারবার মনে পড়বে। প্লিজ বলো।”
মিম আমার গালে একটা চুমু দিয়ে বললো, “পাগল স্বামি আমার। আজ আমার স্বামির জন্য বেনারশি পরবো রাতে। হয়েছে?” বলেই মিম আমার বুকে মুখ লুকালো।
“কাল তোমার পরিক্ষা না?” পরিক্ষা দিয়ে এসে পরের রাতে সাজিও।”
“নায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া, প্লিজ আজিইইই। বেশি সময় লাগবেনা।”
“আচ্ছা ঠিকাছে। আজ অনেক কাজ বাকি পড়ে গেলো। সন্ধ্যা পর ছাদে বসবো কাজে। তুমি পড়াশোনা শেষ করে সাজুগুজু করে রাত ১১টার দিকে ফোন দিবা। আমি নিচে নেমে এসে তোমাকে আদর করে দিব।”
“আচ্ছা মাই ডিয়ার স্বামি।”
“ওকে বউ থাকো। দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
“আচ্ছা যাও।আমি গোসলে ঢুকবো। তুমি আম্মুকে বাইরের গেট লাগিয়ে দিতে বলিও।”
বলেই মিম গোসলে চলে গেলো। আমি এই মুহুর্তে আর মিমকে কলেজের ঘটনা জানতে চেয়ে তার মন খারাপ করে দিতে চাইলাম না। ভালো একটা মুডে জানা যাবে। এখন আর না।
আমি বের হয়ে শাশুড়ির রুমে গেলাম।
উনি ঐভাবেই সোফাই বসে আছে।
“আম্মা আসবো?”
“হ্যা বেটা আসো।”
আমি ঢুকলে উনি উঠে দাড়ালেন।
“আম্মা আপনি এখনো ঐসব চিন্তাই পরে আছেন? বলেছিনা আপনারা কোনোই চিন্তা করবেন না। আপনার এই সন্তন যতদিন বেচে আছে ততদিন আপনাদের এই বাড়িতে কারো অশুভ ছায়া পড়তে দিবনা।”
শাশুড়ি আমার কেদে দিলেন। আমি পাশে গিয়ে উনার মাথাই হাত রাখলাম। শান্তনার হাত। উনি আমার বুকে চলে আসলেন। বেটা তুমি আমাদের অনেক বড় বিপদ থেকে বাচিয়েছো। আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম ঐ লোক ভালো না। কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেলো। আমাকে মাফ করে দাও বাবা।”
“আম্মা প্লিজ চোখের পানি ফেলবেন না।আপনাকে কাল বললাম না, কখনোই চোখে পানি ফেলবেন না। তাতে আমার মরহুম শ্বশুর আব্বা কস্ট পাবেন। আমি সব সময় আপনাকে হাসি খুশি দেখতে চাই।”
“তুমি অনেক ভালো মনের মানুষ বেটা।তোমাকে আমরা পেয়ে অনেক লাকি।”
“আপনারাও অনেক ভালো আম্মা।”
শাশুড়ি আমাকে ঐভাবেই জোরিয়ে আছেন। আমি বললাম, ‘“আম্মা এখন থাকেন। আমি একটু বাইরে যাবো।”
উনি আমাকে ছেরে দিলেন। উনার চোখ ছলছল করছে। উনার চোখ দুটি মুছিয়ে দিলাম। কপালে একটা চুমু দিলাম। বললাম, “আমি থাকতে আর আপনাদের কোনো চিন্তা নেই আম্মা।”
“বেটা একটা কথা বলবো?” প্রশ্নের দৃষ্টিতে উনি আমার দিকে তাকালেন। আমি বললাম,
“এখন না আম্ম। সন্ধ্যা পর ছাদে যাবো।ওখানেই কাজ শেষে গল্প করা যাবে। এখন রান্না করেন, ফ্রেস হন।”
“আচ্ছা বেটা যাও। জলদি এসো। আমি খাবার তৈরি করছি।”
আমি “আচ্ছা আম্মা” বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। শরীর টলমল করছে। মা মেয়ে দুজনই আমার বুকে এসেছিলো। তবুও কেউ বুঝেনি আমার গা পুরে যাচ্ছে। ওরা আছে নিজেদের জগতে। ঘোরে। এখনো ঘোর কাটেনি। কাটুক। ওদের আলাদা সময় দেওয়া দরকার। ভাবছি আজ দুপুরের খাবারটা বন্ধুদের সাথে বাইরে করবো।
আমার দুনিয়া
অসমাপ্ত আত্মজীবনী
*******************************



![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)