Thread Rating:
  • 48 Vote(s) - 2.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery নিয়োগ বিয়োগ (পর্ব - ১৪)
পর্ব ১৩
 
মন্টেসরি থেকে মাধুরিলতা রিককে নিয়ে নিজের গাড়িতে এসে বসল। রিককে পাশের সিটে বসিয়ে রিকের সিট বেল্ট বেঁধে দিয়ে সে নিজে ড্রাইভিং সিটে বসল। পিছনের সিট থেকে রিকের জন্য আনা কেক পেস্ট্রির বাক্সটি খুলে রিকের অত্যন্ত পছন্দের ফ্লেভারের একটি পেস্ট্রি বের করে মাধুরিলতা নিজের হাতে সেটি রিককে খাইয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে।
 
“রিক, এই দ্যাখ, আমি তোর জন্য কি নিয়ে এসেছি, তোর পছন্দের চকোলেট পেস্ট্রি।“ বলে মাধুরিলতা পেস্ট্রির একটি টুকরো ভেঙে নিজের হাতে করে রিকের মুখের কাছে নিয়ে আসে।
 
“মুখ খোল রিক, খেয়ে নে, অনেক বেলা হয়ে গেল যে, আর খালি পেটে থাকিস না।”
 
“না আমি এখন খাবো না।“
 
“দুষ্টুমি করিস না রিক, খেয়ে নে খালি পেটে বেশিক্ষণ থাকলে শরীর খারাপ হবে।“
 
“না আমি খাবো না, আমার পেট ভর্তি, প্রীতি ম্যামের কাছে আমি অনেক কিছু খেয়েছি।“
 
রিকের মুখ থেকে এই বাক্যটি শুনে মনে খুবই আঘাত পেল মাধুরিলতা। কিন্তু সে জানতো যে আজ রিকের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার জন্য যদি কেউ দায়ী হয়ে থাকে সেটা সে নিজে। তবুও নিজের মনকে শক্ত করে ফের আরেকবার সে রিককে বলল, “তোর মা আজ ভুল করেছে রিক, মাকে ক্ষমা করে দে রিক। মায়ের হাত থেকে একটু খা বাবা।“
 
মাধুরিলতা পেস্ট্রি সমেত তার হাত ফের একবার রিকের মুখের সামনে নিয়ে আসে রিককে খাওয়ানোর আসায় কিন্তু রিক মাধুরিলতার উল্টো দিকে গাড়ির জানালার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলে, “আমার খিদে পাচ্ছে না।“
 
রিকের এই কথাটি শুনে মাধুরিলতার দু চোখ ভিজে উঠল, সে আর কোন কিছু না ভেবে গাড়ি চালিয়ে সোজা মিত্রবাড়িতে এসে পৌঁছল। সেখানে পৌঁছে আজ সে নিজে রিককে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। রিক ঘুমিয়ে পড়লে সে দোতলায় নিজের ঘরে আসে। মাধুরিলতা ভাবতে থাকে যে সে কি করছে, সে কি চায় ? কিভাবে সে আজ তার সন্তানের কথা ভুলে গেল ? সেকি এটা ঠিক করছে ? আবার পরক্ষনেই তার মাতৃস্বত্ত্বার পাশাপাশি জেগে ওঠে তার নারীস্বত্ত্বা। সে ভাবে বিমলেশ তো আর তাকে সঙ্গমসুখ না যৌনসুখ কোনটাই দিতে পারবে না তাই যদি সে পরপুরুষের কাছে নিজের শারীরিক চাহিদা মিটিয়ে নেয় তাতে কারোর কিছু বলার অধিকার থাকতে পারেনা।
 
এই ভাবনা শেষ হতে না হতেই জেগে ওঠে মাধুরিলতার পত্নিস্বত্তা। পত্নিস্বত্ত্বা তাকে ধিক্কার জানিয়ে বলে, “ছিঃ ছিঃ ছিঃ, নিজের স্বামী আজ একটা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তোকে সুখ দিতে অক্ষম বলে তুই তোর নিজের স্বামীর পিঠে ছুরি মারছিস, যে মানুষটা তোকে নিজের প্রাণের থেকেও বেশি ভালোবাসে তাকে তার ভালোবাসার এই প্রতিদান দিচ্ছিস তুই, তুই তো নরাধম রে।“
 
ব্যাস আর পারল না মাধুরিলতা, দুই হাতে মাথা চেপে ধরে চিৎকার করে উঠল, “আআআআআ …………… আর পারছি না আমি। আমি জানিনা কি করবো, জানি না জানি না, উফফ মাথা ধরে যাচ্ছে পুরো।“ চরম দোনামনায় ভুগতে লাগলো মাধুরিলতা। সে বুঝে উঠতে পারছিলনা যে সে কি করবে। একদিকে ছিল নিজের স্বামী, সন্তান ও পরিবারের প্রতি তার দ্বায়িত্ত্ব, কর্তব্য ও ভালোবাসা তো অপরদিকে ছিল অবৈধ কামনাবাসনার রোমাঞ্চ।
ভবিষ্যতে সে কি করবে তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলনা মাধুরিলতা। অনেক ভাবনাচিন্তা করেও কিছুতেই কোন সিদ্ধান্ত সে নিতে পারছিলনা। তার অন্তরাত্মা তাকে এক পথ দেখাচ্ছিল তো তার শরীর তাকে অন্য পথে অগ্রসর করতে চাইছিল। এ হেন দোটানায় জর্জরিত উতলা মন নিয়ে যখন রীতিমত ছটফট করছিল মাধুরিলতা তখন ঠিক সেই মুহূর্তেই মাধুরিলতার দুরাভাষ যন্ত্রটি বেজে উঠল। স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটি নাম ‘মোনালি’।
 
অপরদিকে ভারতবর্ষের ওপর এক রাজ্য সিকিমে সেই মুহূর্তে মিত্র ইন্ডাস্ট্রিজের চা বাগানে সদ্য সমাপ্ত হয়েছিল এক মহাভোজ। এই ভোজ কোন কর্পোরেট লাঞ্চ ছিল না। এই ভোজ ছিল যেন চা বাগানের বিশাল এক পরিবারের মিলনমেলা যে মিলনমেলায় চা বাগানের মালিক, ম্যানেজার, সুপারভাইজার, সাধারণ শ্রমিক, অফিস কর্মচারী, ইউনিয়ন নেতা, নিরাপত্তারক্ষী সকলে এক সাথে এক পঙক্তিতে বসে একই খাদ্য গ্রহণ করে। চা বাগানের ইতিহাসে এ ছিল এক অভূতপূর্ব ঘটনা। এই যুগান্তকারী ঘটনায় মিত্র ইন্ডাস্ট্রিজের চা বাগানের সাথে যুক্ত প্রতিটি মানুষ অসীম পরিতৃপ্তি লাভ করে। সবাই বিমলেশের নামে জয়ধ্বনি দিতে থাকে। বলাই বাহুল্য যে নিজের নামে জয়ধ্বনি শুনে বিমলেশের মতন মাটির মানুষ যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে।
 
ভোজপর্বের পর সিকিমের সমস্ত বাগানের ম্যানেজারদের সাথে বৈঠক সেরে উঠতে উঠতে সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টা বেজে যায় বিমলেশের। বিমলেশরা যে বাংলোটিতে গিয়ে উঠেছিল তার পাশ দিয়েই বয়ে চলে একটি পাহাড়ি নদী। শীতকালের সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টা হওয়ায় ততক্ষণে সূর্য পুরোপুরি অস্তাচলে চলে গিয়েছিল। বিমলেশের খুব মন চাইছিল এই শুক্লপক্ষের চতুর্দশীর সন্ধ্যায় চাঁদের মনোরম আলোয় সেই কুলকুল করে বয়ে চলা পাহাড়ি নদীটির পাড়ে গিয়ে কিছুক্ষণ আপনমনে বসে সময় কাটাতে।
 
বিমলেশ বৈঠক শেষ করে সুনীল কাকুকে বলে। “সুনীল কাকু, তুমি কি ঘরে যাবে এখন ?”
 
“হ্যাঁ রে এবার একটু ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নি, আজ তো সারাদিন শরীরের ওপর দিকে বেশ ধকল গেল, এই বয়েসে আর পারি না রে।“
 
“ঠিক আছে তুমি তবে ঘরে যাও আমি একটু পরে আমার ঘরে ফিরব।“
 
“কেন রে আবার কোথায় যাবি তুই এখন ?”
 
নিজের আঙ্গুল দিয়ে নদীটির তীরের দিকে ইশারা করে বিমলেশ, “দেখো না চাঁদের আলোয় কি দারুণ লাগছে ওখানকার পরিবেশটা, আমি ওখানে গিয়ে কিছুক্ষণ হেঁটে আসি। এতে মনও শুদ্ধ হবে ও দুপুরের গুরুপাক ভোজনও ভালো হজম হবে।“
হেসে ওঠেন সুনীল কাকু, “হাহা, ঠিক আছে যা। তবে সাবধানে যাবি, ওখানে নদীর পাড়ে পাথর আছে কিন্তু। আর শোন জলের কাছাকাছি যাবি না।“
 
“আমি আর সেই পাঁচ বছরের শিশুটি নেই সুনীল কাকু, আমার নিজের শিশুটিরই আর কয়েক বছর পরে পাঁচ বছর হয়ে যাবে।“
 
“সে তুই যত বড়ই হয়ে যাসনা কেন আমাদের কাছে তুই সেই ফুটফুটে শিশুটাই থাকবি।“
 
“উফফ সুনীল কাকু তুমি না।”
 
“নে এবার যা আর তাড়াতাড়ি চলে আসিস।“
 
“ঠিক আছে কিছুক্ষনের মধ্যেই আমি চলে আসব, তুমি অত চিন্তা করো না।“ এই কথা বলে বিমলেশ সেখান থেকে চলে এলো পাহাড়ি নদীর তীরে। সেখানে এসে একটি মাঝারি সাইজের বোল্ডার দেখে তার ওপর বসে পড়ে। শীতকাল হওয়ায় বেশ ঠাণ্ডা বাতাস বইছিল। বেশ একটা কনকনে ভাব ছিল আবহাওয়ায়। জনসমাগম থেকে নদীটি বেশ কিছুটি দূরে হওয়ায় সেখানের পরিবেশ ছিল একেবারে নিস্তব্ধ। খালি পাশ দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ি নদীটির জলের কুলকুল শব্দ এই নিস্তব্ধতায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিল।   
                      
শরীর বেশ শীতের অনুভব করলেও এই পরিবেশ বিমলেশের মনকে খুব শান্তি প্রদান করছিল। পকেট থেকে মোবাইল ফোনটি বের করে সে ডায়াল করল তার প্রিয়তমা স্ত্রী মাধুরিলতাকে। সিগন্যাল স্ট্রেন্থ কিছুটা কম থাকায় ফোন কানেক্ট হতে বেশ কিছুটা সময় লাগলো তবে তারপর রিং হতে শুরু করল মাধুরিলতার ফোন। কিন্তু পুরো রিং বেজে বেজে কেটে যাওয়ার পরেও ফোন কেউই রিসিভ করল না। এই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আরও তিন বার হলো। নিজের স্ত্রীয়ের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও বিশ্বাস থাকায় বিমলেশ ভাবল যে মাধুরিলতা নিশ্চয়ই কোন কাজে ব্যাস্ত আছে তাই হয়ত ফোন ধরতে পারছে না। আসলে সত্যি সত্যিই মাধুরিলতা ব্যাস্ত ছিল। বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে নিজের ভোদায় মোমবাতি ঢুকিয়ে ঢুকিয়ে জল খসানোয় ব্যাস্ত ছিল সে।    
 
যাই হোক ফোনে কোন উত্তর না পাওয়ায় বিমলেশ ফোনটিকে পুনরায় নিজের পকেটে পুরে সেখানে বসে বসে নদীর জলে ছোট ছোট নুড়ি পাথর ছুড়তে থাকে। এমন করতে করতে তার খেয়ালই নেই কখন যেন এক ঘণ্টারও অধিক সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। ঘড়িতে তখন বাজতে চলেছে রাত আট’টা। ওই রকম পাহাড়ি অঞ্চলে রাত আট’টা মানে শহরের রাত দুটো তিনটের সমান। চারিদিক যেন আরও বেশি নিস্তব্ধ হয়ে আসে। শুধু নদীর বয়ে চলা জলের কুলকুল শব্দ ও অকস্মাৎ কোন রাত জাগা পাখির ‘ক্যা ক্যা’ করে ডেকে ওঠার আওয়াজ।
 
হঠাৎ সেই চরম নিস্তব্ধতার মাঝে দুর থেকে ভেসে আসা আরেকটি শব্দ বিমলেশের কর্ণগোচর হলো। সেটা ছিল একটি ‘ছম ছম’ শব্দ। শব্দটি পেলেও বিমলেশ সেটিকে অত গুরুত্ত্ব দেয় না। সে ভাবে হয়ত আশেপাশেরই কোন মহিলা নদীতে জল নিতে এসেছে কারণ সে এটা জানতো যে ওখানকার অনেক মানুষই বিভিন্ন কাজে এখনও নদীর জলই ব্যবহার করে। তাই বিমলেশ সেই শব্দকে বিশেষ গুরুত্ত্ব না দিয়ে সেখানে বসে অন্য নানারকম চিন্তাভাবনা করতে থাকে। কিন্তু ক্রমেই সেই ‘ছম ছম’ শব্দটি বাকি শব্দগুলিকে ছাপিয়ে যেতে থাকে ও শেষে বিমলেশের মনে হয় সেই শব্দটি যেন সে যেখানে বসে ছিল তার পিছন থেকেই আসছে। শব্দটিকে আর অগ্রাহ্য করা সম্ভব ছিলনা তার পক্ষে। শব্দটির উৎসস্থল কোথায় তা আবিষ্কার করার উদ্দেশ্যে পিছনে ফিরে তাকাতেই বিমলেশ দেখল তার পিছনে এসে দাঁড়িয়ে আছে সাদা শাড়ি পড়া এক নারীমূর্তি। শাড়ির আঁচলটি হাওয়ায় উড়ছে। সেই নারীমূর্তির মুখের দিকে চোখ পড়তেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল বিমলেশের। আঁতকে উঠল সে।
 
“এ …………………… এ ……………… একি ? এএএএ কি করে সম্ভব …………………… এ ………এ ………… এতো অ ………… অ ……… অনু ………………“ এই টুকু বলেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল বিমলেশ। তখনও শূন্য দৃষ্টি নিয়ে তার মুখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছে সেই নারীমূর্তি।
 
(ক্রমশ)   
[+] 8 users Like prshma's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নিয়োগ বিয়োগ (পর্ব - ১২) - by prshma - 08-11-2025, 03:18 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)