Thread Rating:
  • 44 Vote(s) - 3.68 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy প্রাপ্তবয়ষ্ক রূপকথার গল্প/ নতুন আপডেট
চন্দ্রপুরে রূপেন্দ্র 




সত্যি কথা বলতে এতোদিন রূপেন্দ্র যাদের সাথে যৌনিতায় লিপ্ত হয়েছে তারা প্রত্যেকেই সুঠাম চাবুকের মত শরীরের অধিকারী। আজ প্রথম এমন কাউকে ও মৈথুন করছে যার শরীরে মেদাধিক্য।  মুদ্রাক্ষীর বিশাল স্তন আর তলপেটের থলথলে মাংস ভুমিকম্পের মত কাঁপছে।  এমন নরম তুলতুলে শরীরের আলাদা একটা ভালোলাগা আছে সেটা ও অনুভব করছে।

রূপেন্দ্রর লিঙ্গ তার সর্বোচ্চ শক্তিতে মুদ্রাক্ষীর যোনীতে আঘাত করছে,  প্রতিবারের আঘাতে যোনীরসে সেখান থেকে ছিটকে বেরীচ্ছে।  মুদ্রাক্ষীর চোখ বন্ধ,  দাঁত দিয়ে সে নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরেছে ,  নিজের দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে রেখেছে।  ভারী উরু দিয়ে পেঁচিয়ে ধরেছে রূপেন্দ্রর কোমর।

অবশেষে নিজেকে উজাড় করে সারা শরীর কাঁপিয়ে রাগমোচন করে মুদ্রাক্ষী। দীর্ঘ সাত বছরের সঞ্চিত রস ছিটকে বের হয় ওর যোনী থেকে।  বিপুল সুখে রূপেন্দ্রকে জড়িয়ে ধরে সে।

রূপেন্দ্রও আর অপেক্ষা করতে চায় না,  কিন্তু বাধা দেয় মুদ্রাক্ষী।

" তোমার বীর্য্য পান করতে চাই আমি....... "

রূপেন্দ্র নিজের লীঙ্গ মুদ্রাক্ষীর যোনী থেকে বের করে ওর মুখের সামনে আনে,  কয়েকবার সেটাকে ঝাঁকাতেই ঘন বীর্য্য চলকে চলকে মুদ্রাক্ষীর খোলা মুখে পড়ে,  পুরো মুখ ভিরে আসা সাদা ঘন বীর্য্যে।  মুদ্রাক্ষীর চোখে তৃপ্ততা।  সব বীর্য্য তৃপ্তিওসহকারে পান করে রূপেন্দ্রর পুরুষানঙ্গের গা লেহন করে।

দুজোনেই নিজেদের পোষাক পরে নেয়।  রূপেন্দ্র বলে,  " তোমার ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছে,  এবার আমায় পথ দেখাও,  নিয়ে চল কেতকীর কাছে। "

" এসো,  তবে একটা কথা বলে দিই, এখান থেকে কেতকীকে উদ্ধার করে নিয়ে যেতে যদি ধ্রা পড়ে যাও তবে মৃগনাথ তোমায় হয় হত্যা না হয় কালকুঠুরীতে বন্দী ক্ক্রবে। "

" সেসব পরে ভাবা যাবে..... আগে তুমি আমকে সেখানে নিয়ে চল। " রূপেন্দ্রর আর তর সয় না।

মুদ্রাক্ষী ওকে নিয়ে খুব সন্তর্পনে বাইরের কক্ষে আসে।  সময় খানে এসে হাততালি দিতেই দুজন দাসী এসে উপস্থিত হয়।  ওদেরকে কানে কানে কিছু বলতে ওরা মাথা নেড়ে চলে যায়।  একটু অপেক্ষা করে সে রূপেন্দ্রর হাত ধরে নিয়ে চলে,  কোথায় যাচ্ছে সেটা জানে না রূপেন্দ্র।  বেশ কয়েকটা মহল পার হওয়ার পর একটা অন্ধকার কক্ষে প্রবেশ করে ওরা।  সেখানে কোথাও আলো নেই।  কক্ষের বীপরীত দিকে একটা দরজা দেখা যাচ্ছে। সেখান থেকে আলোর আভাস আসছে।  ওরা দুজনে সেই দরজার দিকে এগিয়ে যায়।  দরজাটা পার করতেই সামনে একটা জেলখানার মত কক্ষ দেখা যায়।  তার ভিতরে একটা আলো আছে,  পুরো কক্ষ আলো আঁধারী।  তার মধ্যে একপাশে কেতকী বসে আছে,  ওর শরীরে কোন পোষাক নেই,  হাঁটু মুড়ে হাঁটুর উপরে থুতনি রেখে নিশ্চল  চোখে তাকিয়ে আছে ও।  খোলা চুল পিঠের উপর ছড়ানো।

"এখানে কোন প্রহরী নেই?  " রূপেন্দ্র প্রশ্ন করে।

" না এখানে দাসীরাই পাহারা দেয় ওকে।  প্রহরী বাইরে থাকে।  আসলে নরপিশাচ কুমারী যোনী না হলে গ্রহন করে না,  পুরুষ প্রহরী যদি কোনভাবে এর কুমারীত্ব নষ্ট করে দেয় তাহলে আর একে সমর্পণ করা যাবে না তাই এখানে কোন পুরুষ প্রবেশ করতে দেয় না মৃগদেব।  আর দাসীরা আমার খুব ঘনীষ্ঠ,  তাই আমি তাদের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছি।  "

" ওকে কি কালই সমর্পণ করা হবে?  "

" না না..... কেতকীকে আগামী আমাবস্যার দিনে পাঠানো হবে,  সেদিনই সর্বশেষ নারী হিসাবে ও নরপিশাচের ভোগ্য হবে...... আর মৃগদেব তার কৃপা লাভ করবে।  "

" তার মানে আমার হাতে আরো দশদিন সময় আছে.... কিন্তু এই কক্ষের চাবি কার কাছে?  "

চাবি দিয়ে খুললে মৃগদেব বুঝে যাবে যে কেউ তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে,  তাই তোমাকে তালা ভেঙে ওকে উদ্ধার করতে হবে, বাকিটা আমি সামলে নেবো। 

রূপেন্দ্র দেখে লোহার গারদে একটা বড় তালা ঝুলছে।  এদিক ওদিক তাকিয়ে একটা বড় চৌকো পাথর দেখতে পায় ও।  সেটা এনে সজোরে আঘাত করে।  সেই আঘাতে চমকে ওঠে কেতকী। সে দরজার দিকে তাকিয়ে ওদের দেখে বুঝতে পারে না কিছু,  দুবার আঘাতেই তালা ভেঙে যায়।  রূপেন্দ্র ভিতরে প্রবেশ করে কেতকীর কাছে পৌছায়।  বিবস্ত্র কেতকী রূপেন্দ্রকে দেখে লজ্জা পায়।  ওর চোখে বিস্ময় আর লজ্জা একসাথে।  নিজেকে আরো গুটিয়ে নেয় যাতে গোপন অঙ্গগুলো ঢাকা যায়।  রূপেন্দ্র সেদিকে না তাকিয়ে ওর হাতে হাত রাখে,  " লজ্জা ছাড়ো কেতকী,  আমি তোমাকে এখান থেকে নিয়ে যেতে এসেছি,  এখন কোন প্রশ্ন না করে আমার সাথে এসো।  "

নিরাবরন কেতকীর হাত ধরে টেনে তাকে তুলে বাইরে নিয়ে আসে রূপেন্দ্র।  মুদ্রাক্ষী বলে,  এখান থেকে বাইরে বেরিয়ে বাম দিকে সোজা গেলে বেরোনর পথ পাবে,  তবে সেখানে প্রহরী আছে,  তাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে হবে তোমাদের। 

রূপেন্দ্র যে স্নানাগারের গুপ্ত পথ দিয়ে এসেছিলো সেটা মুদ্রাক্ষী জানে না।  রূপেন্দ্র সেই পথের কথা বলতেই মুদ্রাক্ষী বলে,  " কেতকী অতোটা শ্বাস বন্ধ করে যেতে পারবে বলে মনে হয় না,  তাই সেখানে বিপদ বেশী। "

কথাটা সত্যি,  রূপেন্দ্রর নিজেরই কষ্ট হচ্ছিলো শেষ দিকে,  কেতকী সেটা পারবে না। ও মুদ্রাক্ষীর কথা মত কেতকীর হাত ধরে এগোয়।  সেই স্থানে এসে দেখে দুজোন প্রহরী দ্বার আগলে দাঁড়িয়ে,  অন্য দিক থেকেও দুজন আসছে এই দিকেই।  এখনি ধরা পড়ে যেতে হবে।  দুই পাশে বিশাল বিশাল স্তম্ভ,  তার মাঝে পথ..... রূপেন্দ্র কেতকীর হাত ধরে একটা স্তম্ভের আড়ালে লুকিয়ে পড়ে।  কেতকীর শরীর কে চেপে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।  কেতকী নগ্ন শরীরে রূপেন্দ্রর শরীরে মিশে লজ্জায় লাল হয়ে যায়।  রূপেন্দ্রর হাত ওর খোলা পিঠে।  স্তন মিশে আছে রুপেন্দ্রর বুকের সাথে।  চেপে থাকায় রূপেন্দ্রর কাপড়ের আড়ালে বিরাট লিঙ্গের উপস্থির অনুভব করতে পারছে ও।  রূপেন্দ্রর এখন এসব দিকে মম নেই,  দুজোন প্রহরী ওদের পার করে চলে যেতেই রূপেন্দ্র আবার ওকে নিয়ে বেরিয়ে আসে।  সামনে একটা খোলা প্রাঙ্গন,  সেটা পার করে যেতে পারলেই  এরিয়ে যেতে পারবে।  চারিদিকে দেখে কেতকীর হাত শক্ত করে ধরে ও দৌড়ায়,  কিন্তু কপাল খারাপ,  একটু এগোতেই চারিদিক থেকে সসস্ত্র প্রহরীরা ওকে ঘিরে ফেলে।  প্রত্যকের হাতে খোলা তরবারি। মুখে ক্রুড় হাসি।  রূপেন্দ্র  ইজের কোমরে হাত দিয়ে দেখে ওর তরবারি নেই।  কেতকী ভয়ে ওকে চেপে ধরেছে। 

একজন প্রহরী বিকট হেসে বলে,  " কি ভেবেছিস?  আমাদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালাবি?  এবার তোর মৃত্যু এখানেই হবে। "

একজন এসে কেতিকীকে টেনে নিয়ে যায় ছ্যাচড়াতে ছ্যাচড়াতে। নিরস্ত্র রূপেন্দ্রর করার কিছুই নেই।  খালি হাতে এতো লোকের সাথে লড়াই করা মানে মৃত্যু।  ও সেখানে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে।  তখনি সেখানে উপস্থিত হয় মৃগিদেব। মুখে ক্রুড় হাসি,  " এসো ভিনদেশী..... রুদ্রনাথের চর তুমি সেটা আমি জেনে গেছি.... আমাকে সর্বশক্তিমান হতে কেউ আটকাতে পারবে না,  রুদ্রনাথকে রাজ্যছাড়া করেছি এবার তোমাকে এই পৃথিবী ছাড়া করবো..... হা হা হা হা। "

রূপেন্দ্র কিছু না বলে চুপ করে নীচের দিকে তাকিয়ে থাকে। 

" প্রভু,  এর শিরচ্ছেদ করি এখনি?  "

হাত তুলে তাকে থামায় মৃগদেব ,  " না,  আপাতত একে সেইসব উন্মাদ ক্রীতদাসীদের কক্ষে ছেড়ে এসো,  তারা একে ছিঁড়ে খাবে...... কাল সকালে এর মৃতদেহ ভাসিয়ে দেবে জলে। "

রূপেন্দ্র বুঝতে পারে না উন্মাদ ক্রীতদাসী মানে?  ও কিছু বুঝিতে পারে না। 

দুজন প্রহরী ওকে টেনে তুলে নিয়ে যেতে থাকে,  পিছন থেকে মৃগদেবের অট্টহাসি কানে আসে।  কিন্তু রূপেন্দ্র ভাব্জছিলো উন্মাদ দাসীদের কথা।

অনেকটা পথ পেরিয়ে একটা কালকুঠুরীর মত জায়গায় আনা হয় ওকে,  প্রহরী সেখানে একটা লোহার দ্বার খুলতেই ভিতর থেকে কিছু বিদঘুটে চিৎকার ভেসে আসে। 

ওকে সেই প্রায়ন্ধকার কক্ষে ঠেলে দিয়ে লোহার গরাদ বন্ধ করে হাসে প্রহরী,  " এখানে সেই সব ক্রীতদাসী থাকে যারা দীর্ঘদিন ধরে বিকৃত যৌনতা সহ্য করতে করতে পাগল হয়ে গেছে..... পুরুষ দেখলেই এরা ঝাঁপিয়ে পড়ে হত্যা করবে..... যা এবার এদের শিকার হ তুই..... হি হি হি।"

প্রহরী দুজন চলে যায়,  রূপেন্দ্র দেখে ওর একটু দূরেই সেই উন্মাদ কক্ষের দরজা।  এরা এখনো ওর উপস্থিতি হয়তো টের পায় নি।  সেই কক্ষ থেকে বিভিন্ন আওয়াজ ভেসে আসছে।  এর আগে অশনি বুড়ির কক্ষে এমন পাগলের হাতে পড়েছিলো ও,  কিন্তু তারা ছিলো কামপিপাসু...... আর এরা অত্যাচারিত।


রূপেন্দ্র সেই কক্ষে উঁকি দিতেই দেখে প্রায় দশজন নারী সেখানে।  কাউকে প্রকৃতিস্থ মনে হচ্ছে না,  এদের মধ্যে কেউ কেউ সম্পূর্ণ উলঙ্গ,  কারো পোষাক ছেঁড়া,  মাথার চুল সব আগোছালো,  শরীরে ময়লা আর দুর্গন্ধ,  কয়েকজন মড়ার। অত পড়ে আছে,  আর বাকিরা এক একজন এক এক রকম ভাবে  বসে আছে,  কেউ মুখ দিয়ে অদ্ভুত আওয়াজ করছে..... কেউ নিজের চুল ধরে টানছে। রূপেন্দ্র বুঝতে পারে এদের থেকে নিস্তার পাওয়া সহজ হবে না,  হঠাৎ একজনের নজর পড়ে রূপেন্দ্রর দিকে..... সে কিছুক্ষন স্থির ভাবে ওকে দেখে, তারপর ওর মুখের ভাব বদলে যায়,  প্রবল রাগ আর ঘৃণা দেখা দেয় সেখানে,  চিল চিৎকার করে সে ছুটে আসে রূপেন্দ্রর দিকে..... মেয়েটির চিৎকারে সবার চোখ ওর দিকে এসে পড়ে,  রূপেন্দ্র সরে যাওয়ার সুযোগ পায় না,  দশজন নারী ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর উপরে.... মুহূতের মধ্যে ওর পোষাক ছিন্ন ভিন্ন করে শরীর থেকে উধাও হয়।  ওকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দেয় মেঝেতে,  একজন ওর লিঙ্গ ধরে টানতে থাকে,  এতো জোরে যে সেটা ছিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, একজন ওর বুকের উপরে বসে ঘাড়ে কামড় দিতে উদ্যত হয়, বাকিরা যে যেমন পারছে ওকে আঘাত করছে। 


একে এদের আঁচড় কামড় তার উপরে আত্যন্ত দুর্ঘন্ধে গা গুলিয়ে উঠিছিলো রূপেন্দ্রর।  কেউ ওর পুরুষাঙ্গ কামড়ে সেটাকে বোধহয় ছিঁড়েই ফেলবে,  রূপেন্দ্র শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে ওদের ছিটকে ফেলে,  রূপেন্দ্রর আঘাতে চারিদিকে ছিটকে পড়ে সবাই,  ওর শরীরে বেশ কয়েক জায়গায় দাঁত আর নখের ক্ষত,  সেখান থেকে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে,  ছিটকে পড়েও দমে না কেউ,  প্রবল বিক্রমে আবার ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর উপর....... রূপেন্দ্র এদের কাউকে হত্যা করতে চাইছিলো না,  অসহায় নারী এরা,  মৃগদেবের বিকৃত কামনায় আজ এই অবস্থা..... এতো আঘাত সত্তেও ওর মনে সহানুভুতি কাজ করছিলো।  ও এদের থেকে বাঁচার পথ ভাবতে থাকে,  হঠাৎ নিজের আঙুলের দিকে নজর যায়..... আংটিটা সেখানে জ্বলজ্বল করছে,  আর দেরী না করে ও মুদ্রাক্ষীর চেহারা মনে করে...... ততক্ষণে উন্মাদ নারীরা আবার ওর উপর হামলে পড়েছে,  কিন্তু হঠাৎ ওরা থেমে যায়..... চুপ করে পিছনে সরে গিয়ে হাঁটু মুড়ে বসে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে বিড়বিড় করতে থাকে,  মুখে মৃদু হাসি আসে রূপেন্দ্রর....... এরা তাহলে আজও মুদ্রাক্ষীকে এরা ভালোবাসে।  মুদ্রাক্ষীরুপী রুপেন্দ্র ওদের উদ্দেশ্যে বলে, " আমি না বললে তোমরা কেউ উঠবে না এখান থেকে,  আমি তোমাদের মুক্তির ব্যাবস্থা করবো।  "

ঘরের চারিদিকে তাকায় ও।  কোথাও পালাবার কোন পথ নেই। একেবারে নিশ্ছিদ্র চারিদিক।  একটা ক্ষুদ্র ছিদ্রো ওর চোখে পড়ে না। এখান থেকে পালাতে গেলে একমাত্র সামনের দ্বার।  কিন্তু সেটাও তালা দেওয়া।  আর সেখান দিয়ে যেতে গেলে প্রহরী দ্বারা বাধা পাবে।  এতোজন একসাথে সেই পথে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব।  এদিকে ওরা সবাই অবাক চোখে মুদ্রাক্ষীরুপী রূপেন্দ্রকে দেখছে।  ওর ধারণা যে এরা আগে সবাই মুদ্রাক্ষীর অনুগত ছিলো,  তাই ওকে  দেখে সবাই নিরস্ত হয়েছে।  এদের সবারই বয়স ২৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে।  সবার শরীরে আঘাতের পুরোনো ক্ষত।  যার অর্থ কেউ এদের উপর প্রবল অত্যাচার করতো,  একজন নারীর স্তনবৃন্ত নেই,  কেউ যেনো সেটা ধারালো কিছু দিয়ে কেটে ফেলেছে, কারো মুখে,  কারো বুকে,  পেটে,  হাতে বা পায়ে পুরানো ক্ষত।  দেখে কষ্ট হয় রূপেন্দ্রর।  কি মারাত্বক অত্যাচারের শিকার হয়েছ এরা পূর্বে..... যে এখন পুরুষের দর্শনেই ক্ষিপ্ত হয়ে যাচ্ছে। 

এর মধ্যেই ঘরের লোহার ফটকের মধ্যে দিয়ে একটা নীল আর কালো রঙের সুন্দর পাখি উড়ে আসে।  পাখিটা মুদ্রাক্ষীরূপী রূপেন্দ্রকে দেখে থমকে যায়, একটু দূরে বসে ঘাড় কাত করে ওকে দেখতে থাকে,  রূপেন্দ্র হেসে বলে,  " ভয় নেই আমি রূপেন্দ্র,  মুদ্রাক্ষী নই " সে আঙুলের আংটি দেখিয়ে বলে, " এটার যাদুতে আমি এই রূপ নিয়েছি শুধু এদের থেকে বাঁচার জন্য। "

এবার পাখিটা কথা বলে ওঠে,  " আমিও তাই ভাবছিলাম প্রভু,  মৃগদেবের পত্নী এখানে কি উদ্দেশ্যে?  যাক এবার আমার কথা শুনুন, আমি রাহু,  নিজের রূপে আমি আসতে পারছি না কারন এই উন্মাদ নারীর দল আমাকে ছিঁড়ে খাবে,  তাই আপনাকে বলছি যেটা সেটাই আপনি করবেন আমি শুধু সাথে থাকবো। "

রূপেন্দ্র মাথা নাড়ে। 

রাহু এবার বলে,  " ওই কোনের মেঝের পাথর তুলে ফেলূন। "

রুপেন্দ্র ওর দেখানো কোনে গিয়ে দেখে মেঝেতে চারকোণা পাথরটা একটু আলগা মত।  বাকি পাথর থেকে কিছুটা উঠে আছে।  ও খাঁজে হাত দিয়ে সেটা টানে।  প্রচন্ড ভারী পাথর,  রূপেন্দ্রর ঘাম বেরিয়ে আসে।  অনেক চেষ্টার পর পাথরটা উঠে আসে।

" বাহ....এবার নীচের মাটি কিছুটা তুলে ফেলুন। "

রূপেন্দ্র আলগা মাটী হাত দিয়ে সরাতে থাকে,  একটু প্রে ধাতব কিছু হাতে বাদে।

" ওটা একটা ঢাকনা...... আপনি ওটা টেনে তুলুন, "

রূপেন্দ্র ঢাকনাটা ধরে টানতেই সেটা উঠে আসে আর নীচে একটা সিঁড়ি নেমে যেতে দেখা যায়। 

পাখি উৎসাহে বলে,  " বাহ বাহ..... এবার সবাইকে ওই সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে যেতে বলুন..... মুদ্রাক্ষীরুপী রূপেন্দ্রর আদেশে নারীর দলের সবাই সেই সিঁড়িয়ে দিয়ে নেমে গেলে রূপেন্দ্রও নীচে নামে।  নীচে একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার,  কিছু দেখা যাচ্ছে না।  হাতড়ে হাতড়ে চলতে হচ্ছে।

অন্ধকার সিঁড়ি শেষ হয় একটা পাথরের মেঝেতে। অন্ধকার থেকে রাহুর কন্ঠ শোনা যায়।  " এটা পাতালঘর... ….. আপনি বাঁ দিকের দেওয়ালে খুঁজুন একটা আলগা পাথর পাবেন সেটা ধরে টানুন।

রূপেন্দ্র বাঁ দিকের দেওয়াল হাতড়াতে শুরু করে,  অনেক্ষণ পর একটা আলগা পাথর হাতে বাধে।  সেটা টানতেই কিছু দূরে একটা দরজা খুলে যায়।  দরজার ওপাশে মৃদু আলোতে একটা সুড়ঙ্গের মুখ দেখা যাচ্ছে।  ঘরের সবাইকে এখন সামান্য হলেও দেখা যাচ্ছে।  পাখির কথায় রূপেন্দ্র সবাইকে নিয়ে সেই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে। 

রাহু পাশে পাশে চলেছে,  সে এবার বলে..... " এই সুড়ঙ্গ নগরের বাইরে নদীর পাশে মিশেছে,  আমরা সুরক্ষিত ভাবে এখান থেকে বেরিয়ে যাবো,  এরা মুক্তি পাবে। "

রূপেন্দ্র হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে,  " কিন্তু কেতকী?  তাকে তো মৃগদেবের লোকেরা নিয়ে গেছে..... তার উদ্ধারের কি হবে?  "

রাহু এবার একটু করুন সুরে বলে,  " কেতকী এখানে নেই,  তাকে মৃগদেব অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিয়েছে,  কেতু তাদের অনুসরণ করেছে..... আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন,  তাকে উদ্ধার আমরা করবোই। "

এখন আবার গাড় অন্ধকার সুড়ঙ্গে,  কোথায় যাচ্ছে সেটা জানে না,  বার বার হোঁচট খেয়ে খেয়ে অনেক সময় পরে সামনে থেকে আলো দেখতে পায়,  শেষ হয়েছে সুড়ঙ্গ,  সামনে নদীর বালুকাময় বীস্তীর্ণ চর আর ঘন জঙ্গল দেখা যাচ্ছে।  প্রভাতের সূর্যেয় আলো বালুকারাশির উপরে পড়ে চকচক করছে।  ফাঁকা জায়গায় এসে প্রানভড়ে শ্বাস নেয় রুপেন্দ্র। 

রাহুর কথামত দুটো বড় ভারী পাথর সবাই মিলে ঠেলে এনে সুড়ঙ্গের মুখ বন্ধ করে দেয়।  কেউ পিছু  নিলেও বেরোতে পারবে না। 

প্রভাত হওয়ার সাথে সাথে মুদ্রাক্ষীর চেহারা পালটে আবার রূপেন্দ্র তার চেহারার এসে গেছে। উন্মাদ নারীর দল বহুদিন পর খোলা পরিবেশে এসে আনন্দে হেসে ওঠে। এখন আর ওরা রূপেন্দ্রকে দেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে না।  ওদের অনেক স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে।  রূপেন্দ্র ওদের সবাইকে বলে,  " আজ থেকে তোমরা মুক্ত,  কেউ আর তোমাদের উপর অত্যাচার করবে না...... তোমরা এবার যেখানে ইচ্ছা যেতে পারো, তবে একটু দাঁড়াও...... আমি ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।


এই বলে রূপেন্দ্র সেই গুহায় গিয়ে কিছু মোহর নিয়ে ফেরে,  প্রত্যেককে কিছু করে  মোহর দিয়ে বলে,  " এগুলো নিয়ে তোমরা পাশের কোন দেশে চলে যাও,  সেখানে ভালোভাবে থাকো।  "

ওদের মধ্যে একজন নারী এগিয়ে এসে রূপেন্দ্রর পায়ের কাছে ভসে পড়ে,, তার চোখে জল, " প্রভু,  আমরা কখনোই পুরোপুরি উন্মাদ হয়ে যাই নি, মৃগদেবের অত্যাচার থেকে বাঁচতে তার পত্নী মুদ্রাক্ষীর পরামর্শে আমরা উন্মাদের মত আচরন করতাম,  যাতে যৌন অত্যাচার থেকে বাঁচতে পারি...... আপনি আমাদের নতুন জীবন দান করলেন...... তবে এইভাবে আমরা কোথাও যেতে পারবো না..... আমাদের জন্য কিছু পোষাকের অন্তত ব্যাবস্থা করে দিন। "

রূপেন্দ্র দেখে কথাটা সত্যি।  মাত্র চারজন নারী পোষাক পরিহিত, তাও ছেঁড়া..... বাকিরা একেবারে পোষাকহীন,  এভাবে কেউ কোথাও যেতে পারে না।

তখনি একটা বৃহৎ বাজপাখি সেখানে নেমে আসে,  তার পায়ে ধরা একটা পুটুলি...... রাহু আর কেতু দুজনেই মানুষ রূপে ফিরে আসে।  সেই পুটুলি থেকে সবাইকে সুন্দর বস্ত্র বের করে দেয়।  নারীর দল ন্দীতে স্নান করে পরিষ্কার হয়ে সেই বস্ত্র পরিধান করে। 

" এবার তোমরা যেতে পারো। " রুপেন্দ্র বলে।


ওরা এবার সমস্বরে বলে,  " না প্রভু...... আমরা এই রাজ্যের মুক্তি আর মৃগদেবের শেষ পর্যন্ত আপনাকে সাহায্য ক্ল্রতে চাই,  দয়া করে আমাদের যেতে বলবেন না। 
Deep's story
[+] 2 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: প্রাপ্তবয়ষ্ক রূপকথার গল্প/ নতুন আপডেট - by sarkardibyendu - 03-11-2025, 06:18 PM



Users browsing this thread: