Thread Rating:
  • 48 Vote(s) - 2.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery নিয়োগ বিয়োগ (পর্ব - ১৪)
পর্ব ১২

 
অমুর বাড়ি থেকে গাড়ি চালিয়ে কিছুক্ষনের মধ্যেই মাধুরিলতা পৌঁছে গেল রিকের মন্টেসরিতে। সেখানে যাওয়ার পথে মাধুরিলতা রিকের জন্য কিছু কেক পেস্ট্রি কিনে নেয় যাতে সে রিককে আর খিদের তাড়নায় কষ্ট না পেতে হয়। মন্টেসরির গেটের বাইরে গাড়ি পার্ক করে প্রায় দৌড়ে দৌড়ে মন্টেসরির ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে মাধুরিলতা।
 
সেখানে মন্টেসরির দারোয়ানকে মাধুরিলতা জিজ্ঞাসা করে, “আমার ছেলে রিক কোথায় ?”
 
“ম্যাডাম আপনার ছেলে প্রীতি ম্যাডামের সাথেই আছে।“
 
“প্রীতি ম্যাডাম ভিতরে কোথায় আছেন ?”  
 
“প্রীতি ম্যাডাম ভিতরে ওনার স্টাফ রুমেই আছেন, আপনি ভিতরে ঢুকে সোজা গিয়ে শেষের ডান দিকের ঘরে চলে যান, ওইটাই স্টাফ রুম, প্রীতি ম্যাডাম ওই স্টাফ রুমেই বসেন।“
 
দারোয়ানের থেকে রিক কোথায় আছে তার খোঁজ নিয়ে পড়িমরি করে লম্বা করিডোর দিয়ে প্রায় দৌড়তে দৌড়তে এসে স্টাফ রুমের দরজার সামনে এসে দাঁড়াল মাধুরিলতা। স্টাফ রুমটিতে কোন রকম বিভাজন বা পার্টিশন না থাকায় পুরো স্টাফ রুমটিই দরজার সামনে থেকে বিনা বাধায় দৃষ্টিগোচর হয়।  ভিতরে চোখ ফেলতেই মাধুরিলতা দেখতে পেল রিক আর প্রীতিকে। সেই দৃশ্য দেখে সে একই সাথে মনে শান্তিও পেল আবার সেই একই দৃশ্য তার মাতৃস্বত্তায় কিছুটা হলেও আঘাত আনলো।
 
মাধুরিলতা দেখতে পেল রিক বসে আছে প্রীতির কোলের উপর আর প্রীতি নিজে হাতে অত্যন্ত স্নেহের সাথে রিককে খাইয়ে দিচ্ছে। খাইয়ে দেওয়ার সাথে সাথে প্রীতি রিককে শুনিয়ে চলেছে নানারকম গল্প আর রিকও সেই সব গল্প শুনতে শুনতে কখনও কখনও প্রীতিকে সেই গল্পের চরিত্রদের সম্পর্কে নানারকম প্রশ্ন করছে তো আবার কখনও কখনও খিলখিলিয়ে হেসে উঠছে। এইভাবেই আস্তে আস্তে প্রীতি রিককে তার পুরো খাবারটা খাইয়ে দেয় আর দরজার বাইরে চুপচাপ মন্ত্রমুগ্ধের মতো সেসব দেখতে থাকে মাধুরিলতা। আসলে রিককে খাওয়ানো ছিল এক কষ্টকর কাজ। মাধুরিলতা রিকের দেখাশোনা করার জন্য যে ভৃত্য ছিল তার মুখে বহুবার শুনেছে যে রিক খাওয়ার সময় নাকি ভীষণ দুষ্টুমি করে ও একেবারেই খেতে চায়না। কিন্তু আজ রিককে বাধ্য ছেলের মতো বসে গল্প শুনতে শুনতে চুপচাপ খেতে দেখে বিস্মিত হয়ে যায় মাধুরিলতা। আসলে মাধুরিলতা ভুলেই গিয়েছিল যে সে রিকের মা আর রিকের দেখাশোনা ও খাওয়াদাওয়ার মুল দ্বায়িত্ত্বটা তার উপরেই বর্তায়। তার অসুস্থতায় ও তার অবর্তমানে সেই কাজ একদিন দুদিন ভৃত্যদের ওপর ছেড়ে দেওয়া যায় কিন্তু মাধুরিলতা রিকের  দেখাশোনা ও খাওয়াদাওয়ার সম্পূর্ণ দ্বায়িত্ত্বটাই ভৃত্যদের হাতে তুলে দিয়ে সেই সময় মশগুল থাকতো নিজেকে ও নিজের অবৈধ প্রেমিককে নিয়ে। আজ প্রীতির কোলে বসে গল্প শুনতে শুনতে কোনরকম দুষ্টুমি না করে চুপচাপ নিজের খাবার খেয়ে নিয়ে নিজের অজান্তেই রিক যেন মাধুরিলতার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে মাধুরিলতা মা হিসেবে কতটা অযোগ্য, কতটা ব্যার্থ।
 
খাওয়ানো শেষ হতেই মাধুরিলতা নিজের উপস্থিতি জানান দিতে স্টাফ রুমের দরজায় দুবার ‘ঠক ঠক’ করে টোকা দেয়। দরজায় টোকার শব্দে তার দিকে রিক ও প্রীতি দুজনেই তাকিয়ে দেখে। মাধুরিলতা আশা করেছিল যে তাকে দেখামাত্রই রিক প্রীতির কোল থেকে নেমে তার কাছে ছুটে আসবে। কিন্তু তাকে দেখার পরেও তার কাছে ছুটে আসা তো দুর এমনকি প্রীতির কোল থেকে রিক নামে পর্যন্ত না। নিজের মাতৃত্বের ওপর দ্বিতীয় আঘাতটি পেল মাধুরিলতা।
 
শেষে রিককে নিজের কোল থেকে নামিয়ে চেয়ারে বসিয়ে নিজে উঠে দাঁড়িয়ে প্রীতি বলে, “আসুন আসুন মিসেস মিত্র, ভিতরে আসুন।“
 
মুখ নিচু করে ধীরপায়ে স্টাফ রুমের ভিতর প্রবেশ করে মাধুরিলতা।
 
“তো আপনার বি এম ডাব্লিউ ঠিক হলো ?”
 
“হ্যাঁ। রিক কাঁদ …………………”
 
মাধুরিলতাকে কথা শেষ করতে না দিয়েই প্রীতি বলল, “তা কি খারাপ হয়েছিল আপনার গাড়ির ?”
 
“ওই সাইলেন্সার পাইপ জ্যাম হয়ে গিয়েছিল, সাইলেন্সার পাইপের ফুটোটাকে সার্ভিস করাতে হলো।“
 
“বাহ, আপনার সার্ভিস সেন্টার তো দারুণ এফিশিয়েন্ট মাত্র ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সাইলেন্সার পাইপের সার্ভিসিং করে দিল। আমাদের তো গাড়ি গ্যারেজে রেখে আসতে হয় ১-২ দিনের জন্য এসব কাজে। আপনি শিওর তো যে সাইলেন্সার পাইপের ফুটোটারই সার্ভিসিং করেছে ?  অন্য কোন ফুটোর সার্ভিসিং করে দেয়নি তো আপনার ……… থুড়ি আপনার গাড়ির ?”
 
প্রীতির মুখ থেকে এসব কথা শুনতে শুনতে কান লাল হয়ে গিয়েছিল মাধুরিলতার। সে ভালোমতই বুঝতে পারছিল যে তার বলে যাওয়া সমস্ত মিথ্যে কথা প্রীতির চোখে ধুলো দিতে একেবারেই সক্ষম হয়নি। তবে তার পাল্টা বলার মতন কিছু ছিল না। সত্যিই তো আজ তার দুটো গোপন ফুটোকেই নিজের অবৈধ প্রেমিক অমুর হাতে নির্লজ্জের মতো সার্ভিসিং করাতে করাতে তার নিজের সন্তানের কোথায় ভুলে গিয়েছিল সে। তবুও সমস্ত লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে উত্তরে মাধুরিলতা মুখে একটা নকল হাসি এনে বলে, “না না ওখানেই প্রবলেম ছিল এখন ঠিক আছে।“
 
“হুম, তাই হবে হয়ত, বি এম ডাব্লিউ তো। আমাদের তো সাধারণ গাড়ি তাই গ্যারেজে ফেলে আসতে আমাদের অত চিন্তা হয়না।“
 
“রিক এসো, চল এবার বাড়ি যাই।“
 
“হ্যাঁ রিক দেখ তোমার মা তোমাকে নিতে এসেছে।“
 
“না ………………… আমি এখন বাড়ি যাবনা। আমি ম্যামের সাথে থাকব। ম্যাম তুমি আমাকে আরও গল্প শোনাবে তো ?”
 
চোখে প্রায় জল চলে আসার উপক্রম হল প্রীতির। সে বুঝতে পারল যে রিককে বাড়িতে আদর করে, গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়ানোর মত কেউ নেই। তবুও নিজেকে সংযত করে সে রিককে বলল, “রিক দেখো তোমার মা তোমাকে নিতে এসেছে, মায়ের সাথে না গেলে তোমার মা যে কষ্ট পাবে। আমি তোমাকে প্রমিস করছি কাল আবার আমি তোমাকে গল্প শোনাবো, আবার আমরা একসাথে খেলব।“
 
“প্রমিস ?”
 
“হ্যাঁ, প্রমিস রিক। এখন তুমি তোমার মায়ের সাথে বাড়ি যাও।”
 
“ধন্যবাদ প্রীতি ম্যাম, এতক্ষণ এখানে থেকে গিয়ে রিকের খেয়াল রাখার জন্য।“
 
“এতে আবার ধন্যবাদের কি আছে ? আমি বলেছিলাম না আপনাকে যে যাই ঘটুক নিজের সন্তান তো দুরস্থান নিজের সন্তানসম কাউকেও আমি একা ফেলে রেখে যাবনা। আর আমার ছাত্র ছাত্রীরা সকলেই আমার পুত্র কন্যাসম।“    
 
“চলো রিক আমরা এবার বাড়ি যাই।“ বলে রিকের হাত ধরে সেখান থেকে প্রস্থান করে মাধুরিলতা।
 
রিককে নিয়ে মাধুরিলতা সেখান থেকে প্রস্থান করার পর প্রীতি নিজের দু চোখ বন্ধ করে, দু হাত জুড়ে মনে মনে প্রার্থনা করে, “হে ভগবান এই মহিলার ভিতরে একটু দ্বায়িত্ত্ববোধ জাগিয়ে তোলো, এ তো এখনও এটাই উপলব্ধি করে উঠতে পারেনি যে সে একজন মা, একজন দায়দ্বায়িত্ত্ববিহীন কলেজ ছাত্রী নয়। হে ঈশ্বর দয়া করে শিশুটার মুখের দিকে চেয়ে একে কিছু সুবুদ্ধি প্রদান করো। আমার অনুমান অনুযায়ী যে পথে এ অগ্রসর হয়ে চলেছে সেই পথ এর সাজানো সংসারটাকে ধ্বংস করে দেবে। আমি আশা করবো আমার অনুমান যেন ভুল প্রমাণিত হয়।“
 
কলকাতায় যখন এই ঘটনাপ্রবাহ আবর্তিত হচ্ছিল ঠিক তখনই কলকাতা থেকে ৬৫০ – ৭০০ কিলোমিটার দূরে মিত্র ইন্ডাস্ট্রিজের সিকিমের চা বাগানে ঘটতে চলেছিল আরেকটি রোমহর্ষক ঘটনা।
 
(ক্রমশ)  
[+] 6 users Like prshma's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নিয়োগ বিয়োগ (পর্ব - ১১) - by prshma - 01-11-2025, 03:23 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)