Thread Rating:
  • 20 Vote(s) - 2.75 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance কিছু সম্পর্ক
কিছু সম্পর্কঃ ৯ 


 
সেই জান্নাত , এই জান্নাত …… পেছন থেকে নিজের নাম শুনতে পায় জান্নাত , কেউ একজন ডাকছে , যে ডাকছে তার ডাক শুনে মনে হচ্ছে বেশ জরুরি কিছু , কিন্তু কণ্ঠটা খুব পরিচিত নয় ।  জান্নাত  পেছন দিকে তাকায় , দেখে আবরার আসছে । একটা ওভার সাইজ হুডি , জিন্স আর চুল গুলো খোঁপা করে সেখানে একটা কাঁটা লাগিয়েছে , শীতের শেষের দিকে স্নিগ্ধ সকালের মিষ্টি রোদে জান্নাতকে দেখতেও বেশ মিষ্টি লাগছে ।   
কি খবর আবরার , এভাবে ডাকলেন যে?” আবরার কাছে আসতেই জান্নাত জিজ্ঞাস করলো , আবরার প্রায় দৌরে এসেছে ।
 
আপনি  যে বলেছিলেন , আমার হলের একটা ব্যাবস্থা করবেনবেচারা আবরার কণ্ঠে কিছু আশা কিছুটা আশঙ্কা নিয়ে জিজ্ঞাস করে ।   
 
জান্নাত কিছুটা লজ্জিত হয় , আবরারের কথা একদম ভুলে গিয়েছিলো । ওহ সরি আবরার আমি একদম ভুলে গিয়ে ছিলাম , তা আপনার  ান্ধবী কই , ওর সাথে কথা হয় না?   
 
আরে না , প্রেমের দেবি আর দেবতার মিলন হয়ে গেছে , এখন আমার মত তুচ্ছ মানুষের কি কাজ , আমরা হলাম সাইড ক্যারেক্টার , প্রয়োজনের সময় আমাদের উদয় হয় , আবার প্রয়োজন শেষে আমরা নীরবেই মিলিয়ে যাই হা হা হাআবরার হাসতে হাসতে বলে ।
 
তা যা বলেছেন , ওরা যে এখনো মেচিং টিশার্ট পড়ছে না এটাই এক বিস্ময়জান্নাত হেসে হেসে বলে , তারপর আবার বলে আপনার  ান্ধবী চাইলেই এখন জয় কে বলে সব ঠিক করে দিতে পারে , জয় এখন নাকে দড়ি বাধা উট , আর দড়ি আপনার  ান্ধবীর হাতে হি হি “    
 
আরে ওকে পেলে না বলবো , ক্যাম্পাসে তো পাওয়াই যায় না , ফোন করলে বলে পরে কথা বলছি” আবরার অসহায় ভাবে বলে ।
 
জান্নাত একটু বিরক্ত হয়ে রানীর উপর  , একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে , তারপর বলে । তাহলে আর  কি চলেন  আমার সাথে , তবে আমার প্রসিডিওর কিন্তু লম্বা হবে , আর কিছুটা সাহস ও রাখতে হবে? পারবেন তো?”   
 
মানে কি ? আপনি একটু জয় সাহেব কে বলে , যদি চেষ্টা করতেন , তাহলে কি দ্রুত হতো না?”
 
সেটা আমি করবো না আবরার , আমি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করবো , দেরি হবে , কিন্তু আমরা অবশ্যই সফল হবোজান্নাত দেখে ওর কথা শুনে আবরারের চেহারা শুকিয়ে গেছে । তাই আবরার কে আশ্বাস দেয়ার জন্য বলল চিন্তা করবেন না , এই ক্যাম্পাসে সুধু ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র উইং ই সক্রিয় নয় , আপনাকে হেল্প করার মত ক্ষমতা আরো অনেকের আছে, এবং তাদের আমি খুব ভালো করেই চিনি , তাঁরাও আমাকে হেল্প করবে”  কিন্তু জান্নাত দেখে আবরার আশ্বস্ত হয়নি , উল্টো আরো ভয় পেয়ে গেছে ।  
 
আবয়ারার নিচের দিকে তাকিয়ে বলে দেখুন জান্নাত আমার একটা টিউসুনি ও চলে গেছে , তা ছাড়া আমি গ্রামের ছেলে , পড়াশুনার ফাঁকে বাবার কাজে হেল্প করতাম , শহুরে স্কিল ও আমার নেই , তাই  আপনাদের মত কোন কিছু করাও আমার পক্ষে সম্ভব নয় , আমার ঐ একটাই পথ টিউশনি , কিন্তু এখন যা দুষ্প্রাপ্য , আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন? ”
 
জান্নাত একটু ক্ষুণ্ণ হয় , তবে সেটা আবরারের উপর নয় , সিস্টেমের উপর । ঠিক আছে , আমি তাহলে আপনাকে সুধু আর এক ভাবেই হেল্প করতে পারি , সেটা হচ্ছে রানীকে বলতে পারি আপনার কথা , যেহেতু আমরা পাশাপাশি থাকি তাই ওকে ধরা আমার জন্য সহজ
 
সেটাই এই গড়িবের জন্য অনেক কিছু হবে মিস জান্নাতআবরার হাসে , “ তবে দেখবেন আমি যেন আবার কোপানলে না পরি , একবারেই আমার খবর হয়ে গেছে
 
জান্নাত হাসে , “ সেটা আমি দেখবোজান্নাত মনে মনে আবরারের জন্য সহানুভুতি বোধ করে , কত মানুষ কত কষ্ট করে লেখাপড়া করছে , সেটা ভাবা ওদের মত পরিবারের মানুষের পক্ষে একটু কষ্টকর ই বটে । হঠাত জান্নাতের মাথায় একটা বুদ্ধি আসে , “ আচ্ছা আবরার আমি খেয়াল করেছি আপনার হিউমার বেশ ভালো , তাছাড়া আপনি থিয়েটার করার ইচ্ছাও পোষণ করতেন , আপনি কি স্ক্রিপ্ট লিখতে পারবেন?”
 
হঠাত এমন প্রস্নে আবরার একটু অবাক হয় , অবাক হয়েই জিজ্ঞাস করে কিসের ? নাটকের?”
 
না আমার ভিডিওর , এখন আমিই করি , তবে আমি কিছুটা স্যাটায়ার এড করতে চাচ্ছি , আপনি হেল্প করতে পারেন , আমি হয়তো এখন খুব বেশি কিছু দিতে পারবো না , তবে বাড়তি কিছু ইনকাম হবে আপনার”  
 
আমি তো ভাবতাম আমার হিউমার সব নিম্ন মানের , তা ছাড়া ……… আচ্ছা চেষ্টা করবো , যদি প্রথম বার ভালো হয় , তবেই সামনে এগুবো
 
ওকে ডান জান্নাত খুশি হয় , আবরারের জন্য কিছু করতে পেরে ভালো লাগছে ওর , সেটা ওর চোখে মুখেও ফুটে উঠেছে ।
 
****  
 
জয়ের নতুন বাইক একটা হাইওয়ে ধরে দ্রুত ব্যাগে এগিয়ে যাচ্ছে । আগের স্পোর্টস বাইকে রানীর বসতে অসুবিধা হতো বলে জয় বাইক চেঞ্জ করেছে । এখন এমন একটা বাইক ইউজ করে যার প্যাসেঞ্জার সিট বেশি উঁচু নয় , এই বাইক বেশ দুর্লভ , কিন্তু জয় বেশি টাকা দিয়ে মেনেজ করে নিয়েছে । পাঁচ লাখ টাকার বাইক প্রায় এক লক্ষ্য তাকা বেশি লেগেছে । অবশ্য বেশিরভাগ টা আগের বাইক বিক্রি থেকে এসেছে । তবে এই অল্প দিনে বেশ অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে , প্রথমে মোবাইল , এর পর বাইক চেঞ্জ । তবে জয়ের এসব গায়ে লাগে না , এই যে রানী এখন ওর পেছনে বসে ওর কাঁধে মাথা রেখে আছে , এর মূল্য টাকা দিয়ে হিসেব করা যায় না ।
 
যদিও টাকা মেনেজ করতে বেশ কষ্ট হয়েছে । ওর আব্বু কিছুতেই এতো তাকা এক সাথে দেবে না । তাই জয় কিছু টাকা ওর দাদির কাছ থেকে নিয়েছে । জয়ের দাদি এখন ওর ছোট ফুপুর সাথে আছে , সেই যে দুই বছর আগে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলো এখনো আসেনি । আসবে করেও আসে না , ছোট ফুপু ছাড়তেই চায় না । জয় হচ্ছে ওর দাদির চোখের মনি , বংশের বাতি । তাই নাতীর প্রতি দারুন স্নেহ , জয় কিছু চাইলে না করতে পারে না । সালেহা টাকাটা জয়নালের কাছ থেকেই নিয়ে দিয়েছে , কিন্তু নিজের নাম করে । বাকি কিছু টাকা জয় নিয়েছে মায়ের কাছ থেকে ।  এই দুজন হচ্ছে জয়ের ব্যাংক । টাকা দরকার হলেই জয় এই দুজনের কাছে ধর্না দেয় ।  
 
এদিকে রানী জয়ের কাঁধে মাথা রেখে , অন্য চিন্তা করছে , চিন্তাটা আজকে সকালে হঠাত করেই মাথায় এসেছে । এর পর থেকে বের হচ্ছে না । অনেক চেষ্টা করেও বের করতে পারছে না । আর এই চিন্তাটার কারনেই রানী এই বাইক রাইড এঞ্জয় করতে পারছে না । মনের মাঝে খচ খচ একটা ব্যাপার রয়েই যাচ্ছে ।
 
এখনো শীত পুরোপুরি কেটে যায়নি , সকালে ভীষণ ঠাণ্ডা থাকে । গোসল করতে রানী যান বেড়িয়ে যায় । তবুও নিয়ম মত আজকেও গোসলে গিয়েছিলো । রানীর অভ্যাস উলঙ্গ হয়ে গোসল করা , তার ব্যাতিক্রম আজকেও হলো না ।  রাজিব আবার ওর জন্য গরম পানির বেবস্থা করে দিচ্ছে আজকাল । মাঝে কিছুদিন রানী ই চাইতো না , জিজ্ঞাস করলেও বলতো লাগবে না ।  কিন্তু সেই রাতে ছাঁদের ঘটনার পর রানীর যখন হলকা ঠাণ্ডা লেগে গেলো এর পর থেকে রাজিব আর জিজ্ঞাস করে না । রানীও না করে না , আর কত রাগ ধরে রেখে নিজের ক্ষতি করা যায় ।
 
কিন্তু গরম পানি দিয়ে গোসল করার একটা বিরম্বনা হচ্ছে , শাওয়ার ব্যাবহার করা যায় না । এটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে অবশ্য রানীর সমস্যা নেই । ঈষৎ উষ্ণ পানি গায়ে পরতেই রানীর শরীর কাঁটা দেয় । রানী গুন গুন করতে করতে গোসল করছিলো , সাবান মাখার সময় কয়েকটা নাচের ভঙ্গিও করেছে । বেশ ফুরফুরে মেজাজ ছিলো তখন পর্যন্ত । কিন্তু বিপত্তি বাধলো এর পর থেকে ।
 
গোসল শেষে যখন আয়নার সামনে দাঁড়ালো তখন ই বিপত্তি বাধলো , বার বার নিজেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখছিলো আর ভ্রু নাচিয়ে আয়নাকে জিজ্ঞাস করছিলো , “ কি ? কেমন?” । আজকাল রানী নিজেকে জয়ের দৃষ্টিতে দেখে। এই কাজটা করার সময় রানীর ভীষণ ভাল লাগে । আজো তাই করছিলো । হঠাত করেই ওর দৃষ্টি চলে গেলো নিজের শরীরে দাগ গুলোর দিকে , ওখানে দৃষ্টি যেতেই রানীর মনের সব আনন্দ যেন হাওয়ায় মিশে গেলো । মনে ভর করলো আশংকা আর ভয় । কিছু কিছু দাগ বুঝা যায় না , তবে কিছু কিছু বুঝা যায় , বেশ ভালো রকম বুঝা যায় । দুই বাহুতে , নাভির নিচে , উপরে , উরুতে , লম্বা লম্বা কাঁটা দাগ ।  
 
সেই থেকেই রানী এই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছে , হয়তো এখন নয় , কিন্তু জয় একদিন না একদিন ওকে দেখবে । তখন কি হবে ? জয় কি এই দাগ গুলো দেখে মনে মনে নিরাশ হবে ? যদি নিরাশ না ও হয় , জিজ্ঞাস তো করবে । তখন কি উত্তর দেবে ও?
 
কেমন লাগছে?” শো শো বাতাস কে পাল্লা দিয়ে প্রায় চেঁচিয়ে জিজ্ঞাস করে জয় ।
 
কিন্তু রানী শুনতে পায় নি , কারন ও নিজের শরীরের দাগ গুলো নিয়ে চিন্তায় মগ্ন ছিলো , তাই ও নিজেও চেঁচিয়ে জিজ্ঞাস করে কি বললে?”
 
তার আগে বল তুই আছিস কোথায়?”  রানীর অন্যমনস্কতা এই মাত্র চোখে পরে জয়ের , রিয়ার ভিউ মিররে দেখতে পায় , রানীর মন কিছুটা বিষণ্ণ ।
 
আমি তো এখানেই আছি!!” এই বলে রানী নিজের অন্যমনস্কতা লুকানোর চেষ্টা করে ।
 
উহু আমার তো তা মনে হচ্ছে না, ক্লাস মিস হয়েছে বলে মন খারাপ এখনো?” জয় রানীর দিকে তাকায় , বাইক চলন্ত রেখেই , এক্টুও স্পিড না কমিয়ে ।  
 
জয় কে এভাবে ওর দিকে তাকাতে দেখে রানী ভয় পেয়ে যায় , ও ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে ,  “ প্লিজ সামনে তাকাও জয় , আমার এমনিতেই ভয় করছে , এতো স্পিডে চালাচ্ছো”  এতো স্পিডে বাইকে রাইড করার অভ্যাস ওর নেই , এর আগে  জয়ের বাইকে যখন উঠেছিলো , তখন সেটা আরবান এরিয়ায় ছিলো , ট্রাফিক ছিলো , তাই জয় এতো স্পিডে চালাতে পারেনি ।  
 
রানীর এমন ভয়ার্ত মুখ দেখে  জয় মজা পায় , ওর মাথায় দুষ্টুমি চাপে , ও ভাব করে এখনো রানীর দিকে তাকিয়ে আছে , কিন্তু মাঝে মাঝেই রাস্তার দিকে একবার তাকিয়ে নেয় , সেই সাথে উচ্চ স্বরে হাসে “ হা হা হা , উহু এভাবে বললে হবে না , বল , জয় প্লিজ এমন করো না , বাইকের স্পিড কমাও , প্লিজ জয় , আমি এর প্রতিদানে সব কিছু করতে রাজি আছি , সব কিছু ”  শেষের সব কিছু বলার সময় জয় সিনেমা নাটকে দেখানো ঐ সব মেয়দের বলার ভঙ্গি নকল করলো , যারা কোন কিছুর বিনিময়ে নিজের শরীর দানের কথা বঝানোর সময় এই কথা ব্যাবহার করে ।  
 
জয়ের বলার ধরন আর মুখের বিটকেলে শয়তানি হাসির অর্থ বুঝতে রানীর কয়েক মুহূর্ত সময় লাগলো , এমনিতেই ভয় পাচ্ছে , তার উপর জয়ের এই দুষ্টুমি , ভয় থেকে রাগের জন্মো হলো রাগত্ব স্বরে বলল   “ বাইক  থামাও , আমি নেমে যাবো , থামাও বলছি”
 
রানীর রাগ দেখে জয় তারাতারি রাস্তার দিকে চোখ দেয় , দ্রুত বলে “ আরে না  না , আমিই  তোর জন্য সব কিছু করতে রাজি আছি , আপাতত রাস্তায় চোখ দিলাম , বাকিটা তুই যখন চাইবি তখন দেবো”
 
কিন্তু রানী আশ্বস্ত হয় না , ওর এখনো কিছুটা রাগ রয়ে গেছে , রানী এতো স্পিডে সত্যি ভয় পেয়েছে , তাই জয়ের এই ফানি হওয়ার চেষ্টায় রানীর উপর কোন প্রভাব পরে না । জয় রিয়ার ভিউ তে রানীর এমন গাল ফোলানো দেখে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসে, তারপর বলে
 
“ তুই কি ভেবেছিস ? আমি তোর কিছু হতে দেবো? তোর কিছু হলে আমার কি হবে ? তুই সত্যিকারের বাইক রাইডের মজা নে , বাকিটা আমার উপর ছেড়ে দে , কথা দিচ্ছি , আজকের পর তুই এর আগে যতবার বাইকে উথেছিস সেসব তোর কাছে মনে হবে টুক্টুক রিকশায় উঠেছিস”
 
“ তোমার আর কি হবে ? তোমার কি মেয়ের অভাব পরবে , অন্য একটা জুটিয়ে নিবে”  রানী মুখ বাঁকিয়ে , কপট রাগ দেখিয়ে বলে । যদিও এটা মনের কথা নয় , রানীর মনে হয় , ও যদি মরেও যায় জয় কে অন্য কোন মেয়ের সাথে রিলেশনে দেখতে পারবে না , পারলে ভুত হয়ে এসে জয়ের কাঁধে চেপে বসবে ।  তবুও সব সময় জয়ের কাছে থাকবে , কখনো দূরে যাবে না ।
 
রানীর কথা শুনে জয় আবার উচ্চ সরে হাসে , তারপর হাসি শেষে বলে “ আমি যদি হাজার মেয়েও জুটাই , তাতেও আমার রানীর অভাব কেউ পূর্ণ করতে পারবে না , আর তুই চিন্তা করিস না তোর কিছু হওয়ার আগে আমার হবে , আর আমাদের দুজনের কিছু হোক সেটা আমি চাইনা , তোর সাথে আমি অনেকদিন থাকতে চাই , সবে তো মাত্র শুরু , আসল কাজ ই তো করলাম না, এর আগে আমি মরবো ভেবেছিস? হা হা হা”
 
এবার রানী জয়ের পিঠে একটা কিল বসিয়ে দেয় , একি সাথে বিস্মিত আর অপ্রস্তুতু হয়ে ওঠে রানী । বিস্মিত হওয়ার কারন জয়ে এভাবে এতো সহজে এমন কথা কি করে বলতে পারে , মানুষ এতো নির্লজ্জ হয় কিভাবে । আর অপ্রস্তুত হওয়ার কারন , রানী চাইলেও জয়ের কাছ থেকে একটু দূরে সরতে পারছে না , এমন ঘনিষ্ঠ অবস্থায় বসে এমন কথা শোনা রানীর জন্য একটু অসস্তিকরই ।
 
তবে ভালো ও লাগে রানীর , দুষ্টু ইংগিত করার আগের কথা গুলো রানীর মনে কিছুটা হলেও নিরাপত্তা বোধ বৃদ্ধি করে । বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয় , জয়ের সাথে যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ ওর ক্ষতি হওয়ার কোন চান্স নেই , জয় কিছুতেই ওর ক্ষতি হতে দিবে না। দুনিয়ার তাবৎ ক্ষতি থেকে বাচানোর জন্য জয় নিজের সবটুকু দিয়ে লড়াই করবে । রানী খেয়াল করে ওর আর নিজেকে অপ্রস্তুত লাগছে না , বরং জয়ের শরীর থেকে যে ওম ওর শরীরে পাস হচ্ছে , সেটা থেকে একটা উষ্ণ নিরাপত্তা বোধ ওর সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে , ধিরে ধিরে মনে প্রবেশ করছে । রানীর ইচ্ছে হয় আর নিবিড় ভাবে জয়ের উষ্ণ শরীরের সাথে নিজেকে আরো লেপ্টে নিতে । রানী নিজের মাঝেও একটা শারীরিক শিহরণ আর  আকর্ষণ টের পায় । মনে মনে ভাবে এই দুষ্ট নির্লজ্জ ছেলেটার উপর ও বেশিক্ষণ রেগে থাকতে পারবে না , রানীর ঠোঁটে হাসি চলে আসে , কিন্তু রানী ঠোঁট কামড়ে কোন মতে হাসিটা রুখে দেয় । রানীর মনে হয় , যদি ওর হাসি দেখতে পায় , তবে এই দুষ্টুটাকে আর আটকে রাখা যাবে না ।
 
কিন্তু রানীর এই আনন্দের সময় বেশিক্ষণ স্থাই হয় না , আবার সেই ভাবনাটা ওর মাঝে উদয় হয় , যা আজকে সকাল থেকেই ওকে ভেতর থেকে প্রচণ্ড অস্বস্তিতে রাখছে । রানী নিজের শরীর নিয়ে আবার সচেতন হয়ে ওঠে । এক দিন না একদিন সেই দিন আসবেই , জয় ওকে চাইবে । তখন রানীর আর উপায় থাকবে না জয়ের ডাকে সাড়া দেয়া ছাড়া । তখন কি হবে ? যদি জয় সত্যি সত্যি হতাশ হয় ? হয়তো মুখে বলবে না , হয়তো ওর প্রতি ভালোবাসার কারনে জয় মুখে বলতে সংকোচ করবে ।  কিন্তু মনে মনে যদি হতাশ হয় ?
কিছু প্রশ্নের উত্তর নেই,
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।


[+] 2 users Like gungchill's post
Like Reply


Messages In This Thread
কিছু সম্পর্ক - by gungchill - 29-07-2025, 04:17 PM
RE: কিছু সম্পর্ক - by gungchill - 30-10-2025, 07:01 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)