23-10-2025, 05:29 PM
(This post was last modified: 23-10-2025, 08:31 PM by gungchill. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কিছু সম্পর্কঃ ৮ (জ) এর বাকি অংশ .........
জয়ের টেক্সট পেয়ে , রানী বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে থাকে । ওর বিশ্বাস হতে চায় না , জয় এটা লিখেছে , ওর এক কথায় জয় এত রাতে এভাবে চলে আসতে রাজি হয়েছে !!!! জয়ের এই আচরণ রানীকে দারুন আপ্লূত করে , আবেগে কাঁপতে থাকে রানী । আরো বেশি কান্না পেতে থাকে রানীর , একটু আগে লেখা জয়ের কথাগুলো যে মিথ্যা ছিলো না , তার প্রমান মেলে জয়ের এভাবে চলে আসতে চাওয়ার মাধ্যমে । রানীও পাগলের মত ঘর থেকে বের হয় , এমন কি শীতের পোশাক পরতেও ভুলে যায় । কিন্তু ঘর থেকে বের হয়েই ওর মনে কিছুটা ভয় ঢোকে , ভাবে যদি ওর আব্বু আর ভাই জেগে যায় ? ওদের এভাবে দেখে ফেলে ?
“ চিৎকার করলি কেন ? তুই এখানে কি করছিস? কি হয়েছে?” হতবাক রাজীব রানীর দিকে তাকিয়ে বলে ।
*****
জয়ের টেক্সট পেয়ে , রানী বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে থাকে । ওর বিশ্বাস হতে চায় না , জয় এটা লিখেছে , ওর এক কথায় জয় এত রাতে এভাবে চলে আসতে রাজি হয়েছে !!!! জয়ের এই আচরণ রানীকে দারুন আপ্লূত করে , আবেগে কাঁপতে থাকে রানী । আরো বেশি কান্না পেতে থাকে রানীর , একটু আগে লেখা জয়ের কথাগুলো যে মিথ্যা ছিলো না , তার প্রমান মেলে জয়ের এভাবে চলে আসতে চাওয়ার মাধ্যমে । রানীও পাগলের মত ঘর থেকে বের হয় , এমন কি শীতের পোশাক পরতেও ভুলে যায় । কিন্তু ঘর থেকে বের হয়েই ওর মনে কিছুটা ভয় ঢোকে , ভাবে যদি ওর আব্বু আর ভাই জেগে যায় ? ওদের এভাবে দেখে ফেলে ?
রানী কিছুটা স্থির হয় , আলতো পায়ে খুব ধিরে ধিরে নিচে নামে, ছাদের চাবি নেয় , তারপর আবার ধিরে ধিরে উপরে উঠে আসে , খুব ধিরে ধিরে ছাদের দরজা খোলে, উত্তেজনায় আবেগে উৎকণ্ঠায় রানীর হাত কাঁপে । বুকের ভেতর ধুকপুকানি , দরজার ওপাশেই দাড়িয়ে আছে ওর কামনার পুরুষ , যে এতো রাতে ওর একটি ডাকেই সাড়া দিতে চলে এসেছে, কোন কিছু না ভেবেই। রানীর শরীর মন শিহরিত হয় , কথাটা ভাবতেই ।
দরজা খুলে যেতেই রানী জয় কে দাড়িয়ে থাকতে দেখে , মুখে সেই চেনা হাসি । জয় কে দেখার সাথে সাথে রানীর মন থেকে সব ভয় উৎকণ্ঠা এক পলকে উধাও হয়ে যায় । ওর শরীর মন এই মুহূর্তে সুধু একটা জিনিস ই চায় , সেটা হচ্ছে সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষটির বুকে আশ্রয় নিতে । প্রায় দৌরে দুজনের মাঝের জায়গাটুকু পেরোয় রানী , জাপটে ধরে জয় কে , এক ইঞ্চি দূরত্ব ও দুজনে মাঝে বরদাস্ত করে না ও এমন ভাবে নিজেকে জয়ের সাথে জড়িয়ে নেয়।
রানীর এমন দৌরে এসে জড়িয়ে ধরার কারনে জয় একটু নড়ে ওঠে । কিন্তু নিজের জায়গা থেকে সরে না । রানীর উষ্ণ শরীর ওর শরীরের সাথে মিশে যেতেই জয়ের ঠোঁটের হাসি আরো চওড়া হয় , রানীকে নিজের বাহু দিয়ে বেষ্টন করে আরো শক্ত করে নিজের সাথে লেপ্টে নেয় ।
এদিকে রানী জয়ের কাঁধে মাথা রেখে হু হু করে কেঁদেই চলছে , কিছুক্ষনের মাঝেই জয় টের পায় ওর টিশার্ট ভিজে গেছে । কিন্তু জয় রানীকে থামানোর কথা চিন্তা করে না । জয় বুঝতে পারে রানী কান্নাই রানীর ভালোবাসার প্রমান হয়ে ওকে ভেজাচ্ছে । জয় মনে মনে বলে - ভিজিয়ে দে আমাকে , আমি সাড়া জীবন এভাবেই সিক্ত হতে চাই তোর ভালোবাসায় ।
কতক্ষণ পর রানী মাথা তোলে সেটা কেউ হিসাব রাখে না । রানী মাথা তুলেতেই জয়ের সাথে মুখোমুখি দাড়ায় , দেখে জয় ওর দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসছে । হঠাত ই রানীকে কিছুটা লজ্জায় পেয়ে বসে । মনে মনে ভাবে - আমাকে কাঁদিয়ে শয়তানটা কেমন মিট্মিট হাসছে। শয়তান একটা । রানী নিজের দৃষ্টি অবনত করে , ওর ঠোঁটেও একটা লজ্জা মিশ্রিত মৃদু হাসু দেখা দেয় । নিজেকে একটু আলগা করার চেষ্টা করে জয়ের কাছ থেকে । কিন্তু জয় বাধা দেয় , আগের মত শক্ত করে চেপে রাখে না , তবে ছেরেও দেয় না । আঁকড়ে ধরে রাখে নিজের সাথে ।
নিজের বুকে জমানো কথা গুলো সব কান্না হয়ে ঝড়ে পড়ার পর রানীর নিজেকে বেশ হালকা লাগছে । সেই সাথে জয়ের উষ্ণ আলিঙ্গনে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ বলেও মনে হচ্ছে। রানীর কাছে মনে হচ্ছে এই বুকে মাথা রেখে ও দুনিয়ার সব দুঃখ কষ্ট ভুলে যেতে পারবে । না সুধু দুঃখ কষ্ট না , ও এই দুনিয়াটাই ভুলে যেতে পারবে ।
আরো কিছুক্ষন এভাবে ওরা একে অপর কে জড়িয়ে দাড়িয়ে থাকে , আশপাশ থেকে যদি কেউ দেখে থাকে , তাহলে হয়তো এই দৃশ্যটা চিরদিন তাদের মাথায় গেঁথে থাকবে । গভির রাতে চাঁদের আলোয় দুই যুবক যুবতি একে অপর কে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে । আশেপাশের কোন কিছুতেই ওদের ভ্রূক্ষেপ নেই , ওরা মজে আছে একে অপরের মাঝে ।
“নিচে তাকিয়ে আছিস কেন ? আমার দিকে তাকা” কিছুক্ষন পর জয় ফিসফিস করে বলে ,
কিন্তু রানী জয়ের কথা শোনে না , নিচের দিকেই তাকিয়ে থাকে , ভীষণ লজ্জা হতে থাকে ওর । সেই সাথে নিজের অবস্থা সম্পর্কেও সচেতন হয়ে ওঠে । এখানে আসার আগে রানী শুয়ে ছিলো , সোজা শোয়া থেকে উঠে এখানে চলে এসেছে । আর অনবরত কান্না করার কারনে মুখের অবস্থাও করুন হয়ে আছে । যেদিন থেকে একজন বিপরীত লিঙ্গের মানুষ হিসেবে জয় ওর কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করতে শুরু করেছিলো । সেদিনের পর থেকে জয়ের সামনে কোনদিন এলোমেলো ভাবে যায় নি রানী। এমন কি জান্নত হঠাত এসে যখন ওদের বাসায় নিয়ে যেতো তখন ও রানী অল্প সময়ের মাঝে নিজেকে পরিপাটি করে নিতো ।
একে তো এই রাতের বেলা জয় কে এভাবে ডেকে নিয়ে আসার লজ্জা , তার উপর নিজের এই হালের জন্য রানী জয়ের দিকে মুখ তুলে তাকাতে লজ্জা হয় । মনে মনে নিজের আচরণের কথা ভাবে রানী , কেমন করে ও জয় কে ওই সময় এ কথা বলেছিলো !!! ভাবতেই এখন অবাক লাগছে । তবে মিথ্যা বলেনি , এটা ও জানে । এখন এই মুহূর্তে যদি জয়ের সাথে না থাকতো , তাহলে হয়তো ওর দম বন্ধই হয়ে যেতো ।
“ এখনো এতটা রেগে আছিস যে আমাকে বঞ্চিত রাখতে চাস ? আমার রানীকে চাঁদের আলোয় কেমন দেখা যায়, সেটা থেকে আমাকে বঞ্চিত রাখতে চাস?” জয় রানীর আর কাছে এসে আবারো ফিস্ফিসিয়ে বলে । এতটা কাছে চলে এসেছে জয় , যে রখন জয়ের কপাল রানীর কপালে প্রায় ঠেকে আছে । জয় কথা বলার সময় ওর নিঃশ্বাস রানী নিজের উপর টের পায় । সেই সাথে জয়ের মুখে “ আমার রানী” কথাটা রানীকে ভীষণ ভাবে পুলকিত করে , রানী লিটারেলি একবার কেঁপে ওঠে ।
জয় রানীকে নিজের ব্যাস্টন থেকে মুক্ত করে দেয় , তারপর দু পাশ থেকে রানীর মুখ নিজের তালু বন্দী করে । তারপর বলে , “ তুই আমাকে অন্য শাস্তি দে রানী , কিন্তু এই সাঁজা দিস না” বলার সময় আবেগে জয়ের কণ্ঠ কেঁপে ওঠে ।
জয়ের হাত রানীর মুখে লাগতেই রানী শিউড়ে ওঠে , শব্দ করে নিঃশ্বাস নিয়ে , এক পাশে মুখ সরিয়ে নিতে চায় । কিন্তু জয় ওর মুখ একি জায়গায় ধরে রাখে , ধিরে ধিরে সোজা করতে শুরু করে । রানী আর বাধা দেয় না , তবে আপনা থেকেই ওর চোখ দুটো বুজে আসে । আবেগে ঠোঁট দুটো কাঁপতে থাকে ।
জয় চাঁদের আলোতে রানীর মুখ তুলে ধরে , জয় প্রান ভরে দেখে , রানীর ঠোঁটের কম্পন , চোখের পাপড়ির অনিয়ন্ত্রিত নড়াচড়া , শুকিয়ে আসা অশ্রু ধারা , নাক ফুলে ফুলে ওঠা , সেই সাথে কিছু এলো মেলো দল ছুট চুলের উড়তে থাকা । কিছু কিছু সৌন্দর্য আছে , যা দেখলে মানুষের বুকের ভেতর হু হু করে ওঠে । জয় জীবনে প্রথম সেই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে ।
জয়ের কাছে মনে হয় এই মুহূর্তে ওর হাতের তালুতে বন্দী মুখটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর , সবচেয়ে নিষ্পাপ সবচেয়ে কোমল। জয় একবার চাঁদের দিকে তাকায় , যেন তুলনা করতে চায় । দেখতে চায় চাঁদ সুন্দর না ওর প্রেয়সী । দ্বিতীয়বার আর চাঁদের দিকে চাওয়ার ইচ্ছে হয় না জয়ের ।
রানীর সাজসজ্জা হীন , কোমল মুখের মসৃণ নরম ত্বকের গোলাপি আভা রানীর ভেতরের কমলতা পবিত্রতার যে বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছে তার কাছে চাঁদের আলো ও মলিন মনে হচ্ছে । জয় বুকের ভেতর একটা তীব্র ব্যাথা অনুভব করে । নিজেকে ওর দুনিয়ার সবচেয়ে বড় পাষণ্ড বলে মনে হয় । কয়েক ঘণ্টা আগেও এই সব কিছু দেখেও ও দেখতে পায়নি । এমন পবিত্র মুখের অধিকারিণী কে যা ইচ্ছা হয় তাই বলেছে , চেয়েছে এমন কোমল একটি ফুল কে কলঙ্কিত করতে । নিজেক বড্ড অযোগ্য মনে হয় জয়ের ।
কিন্তু হতাশা জয় কে পেয়ে বসে না , বরং জয় আরো বেশি দৃঢ় হয় নিজের সঙ্কল্পে । জয় আবারো সংকল্প করে রানীকে আর কোনদিন কোন কষ্ট নিজে তো দিবেই না , অন্য কোন ভাবেও যেন কষ্ট না পায় সে ব্যাবস্থাও করবে ।
“ রানী চোখ খুলে তাকা, আমার চোখে দেখ , আমি চাই আমি আজকে যে সংকল্প করলাম সেটা যেন তুই ও অনুভব করতে পারিস, প্লিজ আমার দিকে তাকা” জয় কাতর স্বরে অনুরধ করে ।
জয় দেখতে পায় রানীর চোখের মনি বেশ কয়েকবার ডান থেকে বায়ে , বাঁ থেকে ডানে নড়াচড়া করে , তারপর ধিরেধিরে রানী চোখ খোলে , পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় জয়ের চোখে , ঠোঁট এখনো কাঁপছে । রানীর নির্মল আর দিঘির পানির মত টলটলে চোখে গভির বিশ্বাস আর নির্ভরতা । এই বিশ্বাস আর নির্ভরতা যে কারো মনেই গভির ভালোবাসা মমতা জন্মাতে সক্ষম । জয়ের খেত্রেও তার ব্যাতিক্রম হলো না ।
রানী চোখ খুলে জয়ের চোখের দিকে তাকাতেই ওকে আবেগের এক বিশাল ঢেউ এসে আঘাত করলো , জয়ের চোখে যা দেখতে পাচ্ছে , সেটা দেখার জন্য ও যেন আজন্ম অপেক্ষা করে ছিলো , আর সেই অপেক্ষার অবসান হলো আজ এই মুহূর্তে , চাঁদের মায়াবী আলোয় নির্জন ছাদের উপর দাড়িয়ে । রানী জয়ের চোখে দেখতে পেলো ওর জন্য গভির ভালোবাসার সংকল্প । নিজেকে রানীর এতো নির্ভার আর কোনদিন লাগেনি । মনে হচ্ছে এতদিন যে জীবনের ভার ওকে বহন করতে হয়েছে , সেটা আজ থেকে আর একা বহন করতে হবে না । কেউ একজন পরম যত্নে সেই ভার বহন করবে । রানীর ঠোঁটে আপনা থেকেই একটা হাসি চলে এলো ।
রানী দেখলো জয় খুব ধিরে ধিরে ওর দিকে নিজের মাথা এগিয়ে আনছে , জয় কি চাইছে সেটা রানীর বুঝতে অসুবিধা হলো না । বুঝতে পেরেই রানীর নিঃশ্বাস ভারি হয়ে এলো , এক মুহূর্তের জন্য আতংক এসে ভর করলো রানীর মনে । ভাবল আবার সন্ধার মত কিছু না হয়ে যায় । রানীর অজান্তেই রানী কিছুটা পিছিয়ে এলো ।
ব্যাপারটা জয়ের চোখ ও এড়ালো না , সাথে সাথেই নিজেকে সংবরণ করে নিলো । রানীর আতঙ্কিত মুখের দিকে তাকিয়ে আশ্বাসের হাসি হাসল ।
দুজনের মাঝে আবার নীরবতা নেমে এলো , জয়ের ঠোঁটে হাসি দেখেও রানী নিজেকে আশ্বস্ত করতে পারলো না । গিল্টি ফিল হতে লাগলো ওর , ভাবলো , এ ও কি করলো । এখানে অয় নিজে থেকে আসেনি , ও ডেকে এনেছে । ওর এক ডাকেই ছেলেটা চলে এসেছে , অথচ ও এমন অপরিপক্ক আচরন করছে ।
“ রানী , আমার কথা শোন , আমি মাইন্ড করিনি , একদম না “ জয় হাসি মুখে বলল , রানীর চেহারায় চিন্তার ছাপ দেখে ও বুঝে ফেলেছে রানী এই আচরণের জন্য গিল্টি ফিল করছে ।
“ জয় …… আমি আসলে , কি ভাবে বলবো” রানী কিছু একটা বলতে যায় , কিন্তু সঠিক শব্দ খুজে পায় না ।
রানীকে এভাবে স্ট্রাগল করতে দেখে জয় রানীর ঠোঁটে আঙুল রেখে থামিয়ে দেয় বলে “ শশশ… কিচ্ছু বলতে হবে না , আমি তোকে পুস করবো না , আমি তো বলেই দিয়েছি , তুই আমার হওয়ার আগে আমি তোর হয়ে যাবো , রানী সত্যি বলছি , আমি তোর হয়ে গেছি , এখন আমাকে নিয়ে কি করবি এটা তোর ব্যাপার , আমি তোর ব্যাপারে নাক গলাবো না, তুই নিশ্চিত থাক”
রানী আবার মাথা নিচু করে ফেলে , ভেবে পায় না ওর মনে কেন দ্বিধা হচ্ছে , সামনে দাঁড়ানো মানুষটা নিজেকে এভাবে ওর সামনে এনে রাখছে অথচ ও কিছুতেই কেন লজ্জা ভাঙ্গতে পারছে না । মনে মনে রানী বলে ‘ আমাকে কিছুটা সময় দাও জয়’
“ তোর জন্য পৃথিবীর সব সময় আমি এনে দিলাম রানী , যত সময় তোর দরকার তুই নিয়ে নে”
রানী ঝট করে জয়ের দিকে তাকায় , ভাবে জয় কি করে ওর মনের ভাষা বুঝতে পারলো । আসলে তেমন কিছু হয় নি , জয় ওর কথার কন্টিনিউটি থেকেই এ কথা বলেছে ।
রানীকে এভাবে তাকাতে দেখে জয় হাসে , চায় রানীকে আশ্বস্ত করতে । পরিবেশ টা একটু গুমট হয়ে গেছে , তাই জয় পরিবেশ হালকা করার জন্য , বিশেষ করে রানীকে স্বাভাবিক করার জন্য । একটু উচ্চ শব্দে হাসতে থাকে । হঠাত জয়ের এমন হাসি দেখে রানী বিভ্রান্ত হয়ে জয়ের দিকে তাকায় । চোখে জিজ্ঞাসা “ কি করছো , তোমার হাসি নিচ পর্যন্ত চলে যাবে যে?” আতঙ্কিত হয়ে রানী একটি এগিয়ে আসে ।
জয় হাসতে হাসতেই রানীর নাকের দিকে ইংগিত করে , প্রচুর কান্না করার কারনে রানীর কিছুটা সর্দি লেগে গেছে , তাই নাক থেকে তরল সচ্ছ কিছু পানি বেরুচ্ছে , জয় তার দিকেই ইংগিত করে । কিন্তু রানী বুঝতে পারে না । তাই ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞাস করে , কি হয়ছে ।
জয় হাসতে হাসতেই বলে ,” আচ্ছা বল তো তুই যে আমাকে ভিজিয়ে দিলি , এর কত পারসেন্ট চোখের পানি আর কত পারসেন্ট নাকের?”
রানী প্রথমে জয়ে কথা বুঝতে পারে না , কিছুটা সময় লেগে যায় বুঝতে , তারপর যখন বুঝতে পারে তখন বেশ লজ্জা পেয়ে যায়। হাত দিয়ে জয়ের বুকে আঘাত করে , রেগে গিয়ে বলে “ আমাকে কাঁদতে দেখে খুব মজা পেয়েছো তাই না?” এই বলে রানী আবার ও জয় কে আঘাত করতে যায় , কিন্তু এবার জয় রানীর হাত ধরে ফেলে । নিজের কাছে টেনে আনে , পেছন থেকে রানী কে নিজের বাহু বন্ধনে নিয়ে নেয় । রানী পিঠ এখন জয়ের বুকের সাথে । জয়ের উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে গেছে , রানী এখন আর গিল্টি ফিল করছে না ।
“ কে বলল আমি তোকে কাঁদতে দেখলে খুশি হই” জয় রানীর কানের কাছে মুখ এনে বলল
জুয়ের মুখ রানীর কানের কাছে চলে আশায় , রানী একটু সুড়সুড়ি বোধ করে , একটু কুঁচকে গিয়ে বলে “ এই আমার কান্না নিয়ে মস্করা করছো , হাসছো , আমি জানি তুমি তখনো হাসছিলে”
“ হ্যা হাসছিলাম , তবে এ জন্য হাসছিলাম , কারন আমি বুঝতে পারছিলাম , তোর কান্না কষ্টের কান্না নয় , তোর অশ্রু হয়ে তোর মনের কথা গুলো বেড়িয়ে আসছিলো , আর আমি সেগুলো হৃদয় দিয়ে উপভোগ করছিলাম , ওগুলো ছিলো আমার প্রতি তোর ভালাবাসা , এবার সেটা নাকের পানি ই হোক আর চোখের পানি”
নাকের পানির কথা আবার ওঠায় রানী ছিটকে জয়ের বাহু থেকে বেড়িয়ে আসে , “ ভালো হবে না বলে দিচ্ছি”
জয় হাসে , বলে “ আয় না কাছে এসে দাড়া খুব শীত লাগছে” বলে রানী কে আবার ধরতে যায় , কিন্তু রানী সরে যায় ।
“ উহু তোমার মত শয়তানের সাথে আমার কথা নেই যাও” ভীষণ লজ্জা হয় , আর সেই লজ্জা রাগ হয়ে বেড়িয়ে আসে ।
“ সত্যি সত্যি শীত করছে , তুই জানিস আমার জ্বর” জয় কাতর গলায় বলে ,
কিন্তু রানীর তেমন ভাবান্তর হয় না “ বলে নাহ তোমার শাস্তি , এতো দুষ্ট কেন তুমি?”
“ আরে দুষ্ট বলেই তো তোর মত মিষ্টি একটা মেয়ে পেয়েছি” জয় হাসতে হাসতে বলে , তারপর আবার রানীকে কাছে আসার কথা বলে ,
রানীর রাগ কিছুটা কমে আসে , মনে মনে ভাবে , এই জ্বর নিয়েও জয় ওর ডাকে চলে এসেছে , রানী কাছে যায় না তবে নরম কণ্ঠে বলে “ আমি সত্যি ভাবিনি তুমি এতো রাতে আসবে” কথা গুলো বলে রানী জয়ের দিকে তাকায় , রানীর চোখে জয়ের জন্য গর্ব , প্রশংসা , ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদ দেখা যায় ।
“ তুই ডেকেছিস , আর আমি আসবো না !!!” জয় যেন অবাক হয়ে , তারপর আবার বলে “ এই ক্ষমতা আমার জন্মের সময় ই আমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে , তোকে অবজ্ঞা করার ক্ষমতা আমার নেই রানী”
রানী ছলছল চোখে জয়ের দিকে তাকায় , জয়ের জন্য ওর মন ভালোবাসা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে । নিজের মাঝে দারুন আত্মবিশ্বাস অনুভব করে , মনে মনে ভাবে , জয় যদি এভাবে ওর পাশে থাকে তাহলে কোন দুঃখ , কোন কষ্ট কোন বাধাই ওর কাছে কিচ্ছু মনে হবে না , জয়ের হাত ধরে চোখ বন্ধ করে এসব বাধা পেরিয়ে যেতে পারবে ও ।
“ সত্যি বলছো” রানী ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে
“ হ্যা তিন সত্যি বলছি , এখন তো কাছে আয়” জয় রানী কে ধরে টনে , এবার সফল হয় জয় । বলতে গেলে রানীই ওকে সফল হতে সাহায্য করে । কিছুক্ষন জয়ের সাথে মিশে দাড়িয়ে থাকে । জয়ের সান্নিধ্য উপভোগ করে , জয় যে ওর জন্য অসুস্থ শরীর নিয়ে এই রাতের বেলা চলে এসেছে , এই ব্যাপারটা রানীর জন্য জয়ের সান্নিধ্য আরো বেশি উপভোগ্য করে তোলে । জয়ের শরীরের স্পর্শ ওর শরীরে আরামদায়ক উষ্ণতা পাস করতে থাকে । এই উষ্ণতা ভালোবাসার উষ্ণতা । রানীর ইচ্ছা হয় আরো অনেকক্ষণ এভাবে দাড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করে । পারলে সাড়া রাত এভাবেই দাড়িয়ে থাকতো । কিন্তু সেটা উচিৎ হবে না , তাই রানী আবার নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় ,
‘ এখন তোমার যাওয়া উচিৎ জয়” খুব ধিরে ধিরে বলে রানী , যেন ওর কথা ও নিজেই বিশ্বাস করছে না , এমন শোনায় ।
কিন্তু জয় কোন উত্তর দেয় না , রানীকে আরো টাইট করে জড়িয়ে ধরে , জয়ের নিঃশ্বাস রানীর কাঁধে পরে , শিউড়ে উঠে রানী চোখ বন্ধ করে ফেলে , সন্ধার সেই পাগলাটে সময়ের কথা মনে পড়ে যায় ।
বেশ কিছুক্ষন পর আবারো অনিচ্ছা সত্ত্বেও রানী আবার জয় কে তাগিদ দেয় , এবার বলে “ তোমার শরীর খারাপ হবে জয়”
কিন্তু জয় বলে “ তুই সাথে থাকলে আমার কিচ্ছু হবে না”
শুনে রানী হাসে , “ কিন্তু আর বেশিক্ষণ থাকলে আমিও অসুস্থ হয়ে যাবো” রানী এবার নিজের বাহানা দেয় , না হলে যে জয় শুনবে না সেটা রানী জানে । এবার জয় অনিচ্ছা সত্ত্বেও ছাড়ে , বলে “ মনে রাখিস ডেকে এনে তাড়িয়ে দিচ্ছিস”
“ আচ্ছা মনে রাখবো , পরে সুদে আসলে শোধ করে দেবো” রানী লজ্জায় লাল হয়ে বলে , এরকম একটা কথা যে ওর মুখ থেকে এই মুহূর্তে বেড়িয়ে আসবে , সেটা যদি ওকে অন্য কেউ কিছুক্ষন আগেও বলতো তবে সেটা রানী নিজেও বিশ্বাস করতো না।
রানীর কথা শুনে জয়ের মুখে একটা দুষ্ট হাসি চলে আসে , দুষ্টুমি করে বলে “ কিভাবে শোধ করবি , তার স্যাম্পল যদি দিতি একটু এখন তাহলে ভালো হতো না”
“ তুমি যাবে না আমি আব্বুকে ডাকবো?” রানী চোখ পাকায় , ওর ঠোঁটে এখনো লজ্জা মিশ্রিত হাসি ,
“ ছোট আব্বু এলে আমি মোবাইল বের করে দেখিয়ে দেবো, ছোট আব্বু বুঝে যাবে ঘটনা কি , তখন তোকে আজকেই আমার সাথে পাঠিয়ে দেবে হা হা হা ”
“ ইশ সখ কত “ এই বলে রানী ঠেলে ঠেলে জয় কে ওদের বাড়ির কার্নিশের দিকে নিয়ে যায় ,
“ তুই এই রাতে আমাকে ফেরত পাঠাচ্ছিস , আমি যদি এখন চাঁদ টপকাতে গিয়ে পরে যাই” জয় গলার স্বর করুন করার চেষ্টা করে ।
জয়ের এমন করুন স্বর শুনে রানী না হেসে পারে না , হাসতে হাসতে বলে “ তুমি যেই বান্দর , তোমার কিচ্ছু হবে না”
জয় রেলিঙ্গের উপর পা দেয় , দিয়ে আবার বলে “ দেখিস কিন্তু “
“দেখছি” বলে রানী হাসে ,
“ তাহলে দেখ” এই বলে জয় কাঠের তক্তায় পা রাখে , ঠিক মাঝ বরাবর গিয়ে ভাব করে ওর ব্যালান্স হারিয়ে গেছে।
রানী বুঝতে পারে না জয় ইচ্ছা করেই এমন করেছে , এক মুহূর্তের জন্য রানীর দুনিয়া কেন কক্ষপথে থেমে যায় । চিৎকার করে ওঠে রানী । রানীর কাছে মনে হয় ওর আত্মা খাঁচা ছেড়ে বেড়িয়ে যাবে । বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে থাকে জয়ের দিকে ।
এদিকে জয় চিৎকার শুনে নিজেকে ঠিক করে নেয় , দ্রুত পার হয়ে বলে ‘ এই আমার কিচ্ছু হয় নি “
রানী বুক ধরে দাড়িয়ে থাকে , ওর কথা বলার শক্তি হারিয়ে গেছে । বুকের ভেতর ধরফর করছে । রানীর অবস্থা দেখে জয় একবার ভাবে আবার পেরিয়ে আসবে , আর ঠিক তখনি , নিচ থেকে ডাক আসে , “ রানী , এই রানী ……”
ডাক শুনেই হুঁশ ফিরে আসে রানীর , দ্রুত জয় কে চলে যেতে বলে , জয় ও শুনেছে ডাক , জয় হাসে , রানীকে একটা ফ্লাইং কিস দেখায় তারপর তারপর রানীর কাছ থেকেও উত্তর চায় । রানী মাইর দেখায় , জয় মানে না , শেষে আর না পেরে রানী দু হাতে দুটো ফ্লাইং কিস দেখায় , তারপর জয় হাসতে হাসতে ছাদ থেকে নেমে যায় । জয় কে যেতে দেখে হাফ ছেড়ে বাঁচে রানী আতংকে ওর চেহারা দেখার মত হয়েছিলো। দ্রুত ছাদের মাঝা মাঝি চলে আসে । আর তখনি রাজীব ছাঁদে আসে ।
*****
সব প্রশ্নের উত্তর নেই,
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)