23-10-2025, 05:27 PM
কিছু সম্পর্কঃ ৮ (জ)
****
নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে রানীর ঘর থেকে তড়িঘড়ি করে চলে এসেও লাভ হয়নি । রান্না করতে করতে পুরোটা সময় আত্মগ্লানিতে ভুগেছে রাজীব । মন অন্য দিকে থাকায় বেশ কয়েকবার এক্সিডেন্টও হয়েছে । হাত কেটে গেছে , গরম ছ্যাকা খেয়েছে, দুবার লবন দিয়েছে সব্জিতে ।
আর এখন খেতে বসেও সেই ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছে না । আর এই ভাবনার ছাপ রাজীবের চেহারাতে এতো গভির ভাবে পরেছে যে , রহিম আর রানীর চোখ ও এড়ায় না । একবার তো রহিম জিজ্ঞাস করেই ফেলে , “ রাজীব তোর কি হয়েছে মুখ এমন দেখাচ্ছে কেনো?” জয়ের শরীর খারাপ দেখে এসেছে সকাল বেলা , তাই রহিমের মনে হয়েছে রাজীবের শরীর ও হয়তো খারাপ হতে পারে । আর শরীর খারাপ হলেও চাপা স্বভাবের রাজীব হয়তো কিছু বলবেও না ।
তাই যখন রাজীব “ কিছু না তো” বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে , তখন রহিম রাজীবের কপালে হাত দিয়ে একবার দেখে । যখন দেখে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে তখন আশ্বস্ত হয় । তবুও বলে “ দেখিস এখন সময় ভালো না চারদিকে জ্বর সর্দি হচ্ছে , সাবধানে থাকিস”
এদিকে ফুরফুরে মেজাজে থাকা রানী দুষ্টুমি করার সুযোগ হাতছারা করে না , “ আব্বু ভাইয়া নাকি ভুত দেখছে , তাই ওর এই অবস্থা”
রাজীব চট করে একবার রানীর দিকে তাকায় , রানীর হাস্য উজ্জ্বল চোখে মুখে খুজে দেখে এ ব্যাপারে রানী কিছু জানে কিনা । মনে মনে ভাবে , রানী যদি বুঝে থাকে তাহলে আর লজ্জার শেষ থাকবে না । কিন্তু রাজীব দেখে রানীর মাঝে তেমন কোন লক্ষন দেখা যায় না । রাজীব একটা সস্তির নিঃশ্বাস ফেলে , মনে মনে ভাবে - ধুর , এতো বেশি বেশি ভাবছি কেন? রানী জানবে কি করে? আসলে রানী যখন ‘দেখছে’ শব্দটা ব্যাবহার করেছে তখন ই রাজীবের মস্তিষ্ক রিয়েক্ট করেছে ।
“ তুই এই শহরে ভুত কোথায় পেলি রে ব্যাটা?শহরের লাইটের আলো আর গাড়ির হর্ন শুনে ভুত সব পালিয়েছে, ওদের এখন চাচা আপন প্রান বাচা অবস্থা ” এই বলে রহিম হো হো করে হেসে ওঠে । রাজীবের যে ভুতে ভয় আছে , এটা রহিম জানে। কিন্তু এখনো এই বয়সে এসে ওর ছেলে যে ভুতে ভয় পায় , এই ব্যাপারটা রহিমের কাছে হাস্যকর লাগে । তাই নিজেও একটু মজা করতে ছাড়ে না ।
“ তুই ডিমের কুসুম গুলো ফেলে দিচ্ছিস কেনো?” রাজীব কথার মোড় ঘুরানোর জন্য রানীর ডিমের কুসুম না খাওয়ার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সবার ।
“ আমার বমি পায়” রানী ঠোঁট উল্টে বলে । সেই ছোট বেলা থেকেই রানী ডিম সেদ্ধর সুধু সাদা অংশ খায় , ডিমের কুসুম খেতে ওর ভালো লাগে না ।
“ এরকম করলে কি চলবে মা? এইজে আজকে আমরা কেউ ছিলাম না , যদি একটা এক্সিডেন্ট হয়ে যেতো? ভাগ্য ভালো জান্নাত চলে এসেছিলো, নইলে কি হতো একবার ভবেছিস?” রাহিমের একটু আগের হাস্য উজ্জ্বল মুখটায় দুশ্চিন্তার ছাপ পরে । এ সমস্যার সমাধান ওর জানা নেই । কাজের জন্য ওকেও বাইরে যেতে হয় , মাঝে মাঝে রাজীব কেও বাইরে থাকতে হয় । সেই সময়টা রানী একাই বাসায় থাকে ।
“ আমি কি করবো আব্বু , আমি খেতে পারি না”
“ এই দেখ আমি শিখিয়ে দেই কিভাবে খেতে হবে” এই বলে রহিম ডিমের কুসুমে লবন লাগায় , তারপর রানীকে কে দেয় , “ এবার খেয়ে দেখ তো পারিস কিনা , একটু একটু করে না একেবারে পুরোটা মুখে দিয়ে দে”
অনিচ্ছা সত্ত্বেও মুখ দিতে হয় রানীকে , মুখে দিতেই রানীর পেটের নাড়িভুঁড়ি উল্টে আসতে চায় । মুখ থেকে ফেলে দেয় , অর্ধেক চাবানো ডিমের কুসুম।
সেই আওয়াজে রাজীবের ধ্যান ভাঙ্গে , রহিমের মুখ জান্নাতের নাম উচ্চারিত হওয়ার পর রাজীব আবার নিজের চিন্তায় ডুবে গিয়েছিলো । রানী যখন ওয়াক করে শব্দ করে তখন আবার ফিরে আসে । দ্রুত পানির গ্লাস এগিয়ে দেয় । রানী পানি মুখে দিয়ে কুল্কুচি করে মুখের ভেতর লেগে থাকা বাকি কুসুম গুলো ধুয়ে ফেলতে চায় । গন্ধে ওর আরো বমি হতে চায় , কুল্কুচি শেষে রানী খুজতে থাকে কোথায় ফেলবে , রাজীব দ্রুত একটা খালি পেয়ালা এগিয়ে দেয় , রানী মুখের পানি সেখানেই ফেলে । ওর চোখ দিয়ে পানি চলে এসেছে , পাশে থাকা একটা লেবুর টুকরো মুখে দিয়ে দেয়।
“ তোর তো দেখি খুব খারাপ অবস্থা রে মা , একটা ডিমের কুসুম খেতে পারিস না?” রহিম চিন্তিত স্বরে বলে ।
“ আমি নানা ভাবে চেষ্টা করেছি , কিন্তু একেবারে ভাজা ভাজা না হলে ও খেতেই পারে না “ রাজীব পাশ থেকে বলে ।
“ তুই যা ঠিক মত খেতে পারিস , সেটাই না হয় বেশি করে খাবি” রহিম রানী কে উদ্দেশ্য করে বলে , ডিমের ব্যাপারে এক প্রকার হাল ছেড়েই দিয়েছে ও। যেই দৃশ্য একটু আগে দেখলো , তারপর আর কিছু বলার থাকে না ।
“ তাহলে তো হয়েছে , তাহলে বাড়িতে ভাত ডাল বাদ দিয়ে , চটপটি, ফুচকা্, পাঁচমিশালি ঝাল আঁচার এসব বানাতে হবে” রাজীব কিছুটা সারকাজ কিছুটা বিরক্তি মিশিয়ে বলে ।
“ তুই কি চিকেন ও খেতে পারিস না?” রাহিম চোখ কপালে তুলে জিজ্ঞাস করে ,
“ খাই তো” রানী নিচু স্বরে বলে । আড় চোখে একবার রাজীবের দিকে তাকায় ।
“ হ্যা , বিরিয়ানি রান্না করে দাও , ফ্রাই করে দাও , সাধারন ভাবে রান্না করলে এক পিস কোন মতে খায়”
খাওয়া দাওয়া নিয়েই আলাপ চলতে থাকে শিকদার পরিবারের তিন সদস্যের মাঝে । রাজীব ও কিছুটা স্বস্তি বোধ করে । কারন এই পারিবারিক আলোচনা ওকে জান্নাতের চিন্তা থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে যায় ।
রাতের খাওয়ার প্রায় ঘণ্টা খানেক পর , রাজীব রানীর জন্য একটা ইন্সটেন্ট রামেন রান্না করে আর সাথে এক গ্লাস দুধ নিয়ে রানীর ঘরে যায় । ডিমের কুসুম খাওয়ার পর রানীর আর ভাত খাওয়া হয়নি । রানী কে খাইয়ে রহিম কে এক কাপ দুধ দেয় । তারপর রাতের মত কাজ শেষে নিজের ঘরে আসে ।
নিজের ঘরে একা হতেই রাজীব কে আবার গ্লানি চেপে ধরে । কি করে মুখ দেখাবে জান্নাত কে সেটাই ভাবে । রাজীব একবার ভাবে ও হয়তো বেশি বেশি রিয়েক্ট করছে । কিন্তু পরক্ষনেই সেই ভাবনা বাতিল করে দেয় । মনে মনে বলে ‘রাজীব তুই কাকে বোকা বানাতে চাচ্ছিস? নিজেকে নিজে?’
রাজীব যখন জান্নাতের কাছে ধরা খেয়ে গিয়েছিলো তখন , জান্নাতের চোখে ও স্পষ্ট দেখছে , যে জান্নাত জানে ও কোথায় তাকিয়ে ছিলো ।
****
রাত সাড়ে বারোটা সময় রানীর মোবাইল টুং করে শব্দ করে ওঠে । এটা রানীর টেক্সট এর নোটিফিকেশন টোন । খুব ধিরে হয় শব্দটা । কিন্তু রানীর বুকের ভেতর ঢংঢং করে ডঙ্কা বাজায় এই শব্দটা । কেমন করে যেন রানী জেনে গেছে এই টেক্সট কে পাঠিয়েছে। শুয়ে শুয়ে রানী জয়ের কথাই ভাবছিলো , ভাবছিলো সন্ধার সেই মুহূর্ত গুলো , জয়ের প্রতিটা স্পর্শ যেন এখনো ওর শরীরে লেগে আছে । সেই সময় চরম মুহূর্তে পেনিক করে গিয়েছিলো ঠিক ই । কিন্তু এখন সেই স্পর্শ গুলো হৃদয় দিয়ে অনুভব করছে । সেই সাথে রানীর শরীর মন যেন একি সাথে হাজার খানেক অনুভুতির মিশ্র স্রোতের উপর দিয়ে ভেসে যাচ্ছে ।
টুং……… টুং
বুকের ধুকপুকানি যেন প্রতিটা মুহূর্তের সাথে বেড়ে যাচ্ছে । কম্পিত হাতে রানী মোবাইল হাতে নেয় , চোখ বন্ধ করে বড় করে একটা নিঃশ্বাস নেয়। মোবাইল আনলক করে , কম্পিত আঙ্গুলে । ডিজিটাল স্ক্রিনে খুদে খুদে অক্ষর গুলো যেন জয় কে ওর সামনে এনে দাড় করিয়েছে।
প্রথম টেক্সট ঃ এখন কেমন আছিস ?
এক মিনিট বিরতি দিয়ে ,
দিতিওঃ রেগে আছিস এখনো? রেগে থাকার ই কথা । তোকে ওই অবস্থায় রেখে চলে এলাম একবার দেখতেও গেলাম না এর পর ।
তৃতীয়ঃ দেখতে যাবো কোন মুখে বল । ওই সময় যা করলাম তোর সাথে………
একেকটা টেক্সট পড়ছে , আর রানী অবাক হয়ে দেখছে , একটা ছোট টেক্সট ম্যাসেজের কি পরিমান ক্ষমতা থাকতে পারে । একটা প্রশান্তি ওর শরীরের প্রতিটি কোষে কোষে অনুতে পরমানুতে পৌঁছে দিচ্ছে ।
এরি মাঝে জয়ের আরো একটা টেক্সট আসে ,
জয়ঃ আমি কথা দিচ্ছি রানী , আর কোনদিন তুই আমাকে ওই অবস্থায় দেখবি না , রানী আমি তোকে কোনদিন কষ্ট দেবো না । এখন এই মুহূর্ত থেকে আমি অন্য এক জয় । যে তোর মনেকে বোঝার চেষ্টা করবে , তোকে বোঝার চেষ্টা করবে , জানার চেষ্টা করবে । সুধু তোকে পাওয়ার চেষ্টা নয় ।
রানী টাইপ করতে শুরু করে , বার বার লেখে , আবার ডিলিট করে দেয় , রানী মনে হয় , কোন শব্দ দিয়েই ও ওর এই মুহূর্তের মনের অবস্থা জয় কে বোঝাতে পারবে না । এরি মাঝে জয় আবার টেক্সট করে ,
জয়ঃ তুই আমার হওয়ার আগে , আমি তোর হয়ে যাবো রানী , আমাকে আর একটি বার সুযোগ দে , I LOVE YOU RANI , আমি তোর জন্য পাগল হয়ে আছি , তুই যদি আমাকে সুযোগ না দিস। তাহলে তুই ছাড়া এই দুনিয়া আমার জন্য মরুভুমি হয়ে যাবে , যেখানে ধুলিকনা ছাড়া আর কিছুই থাকবে না ।
রানীর চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় কান্না ঝরে পড়ছে , ওর কাছে মনে হচ্ছে বুকের ভেতরটা এখনি ফেটে যাবে । এমন কেন হচ্ছে ও জানে না । আজ তো ওর আনন্দের দিন , যাকে সেই কিশোরী বয়স থেকে কামন করে আসছে , সেই পুরুষ আজ নিজে এসে ধরা দিয়েছে , এমন এমন সব কথা বলছে যা শোনার জন্য ও তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করে ছিলো । তাহলে ওর এমন অসহ্য যন্ত্রণা কেন হচ্ছে ?
এর উত্তর রানী নিজের মনের ভেতর ই খুজে পায় । রানীর এই অসহ্য জন্ত্রনার কারন ওর ভেতরে জমা হওয়া না বলতে পারা কথা গুলো , যা ও জয়কে বলতে চায় । এতো এতো কথা সেখানে জমা হয়েছে যে সেগুলো একবারে বুক ফেটে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। কিন্তু বলতে পারছে না ।
রানী হাত চলায়
রানিঃ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে জয় , এই মুহূর্তে তোমার হাত ধরে থাকতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে … আজকে রাতে এই ঘরে একা থাকলে আমি মরে যাবো …
রানী নিজের বিছানায় শুয়েই নিঃশব্দে কাঁদতে থেকে , না রানী মিথ্যা বলেনি , সত্যিই ওর এই মুহূর্তে জয়কে পাশে পেতে ইচ্ছে হচ্ছে । ওর মনে হচ্ছে জয়ের বুকে মাথা রেখে চিৎকার করে কিছুক্ষন কাঁদতে পারলে ওর মন ভালো হয়ে যেতো ।
****
জয় রানীকে টেক্সট করছিলো নিজের ঘরে শুয়ে শুয়ে । প্রথম কয়েকটি টেক্সট পাঠানোর পর রানী যখন রিপ্লে দিচ্ছিলো না তখন জয়ের মনে কু ডাকতে শুরু করেছিলো । যদিও জান্নাত ওকে বলেছিলো রানীর মাঝে কোন নেগেটিভ কিছু দেখেনি । কিন্তু জান্নাতের সেই আশ্বাস বানী জয়ের তখন আর বিশ্বাস হচ্ছিলো না । ধিরে ধিরে সেই ভয় আতঙ্কে রুপ নিচ্ছিলো । ঠিক তখনি রানী টেক্সট করে ,
রানী লিখে পাঠিয়েছে ওর খুব কষ্ট হচ্ছে , এই মুহূর্তে ও একা থাকতে পারবে না । রানীর পাঠানো শব্দ গুলো দেখে জয় তড়াক করে উঠে বসে , বসা থেকে দাড়িয়ে যায় । ওর প্রেয়সী সাধনার নারী ওকে ডেকেছে , এই ডাক উপেক্ষা করার শক্তি জয়ের নেই। সেই সাথে দুনিয়ায় এমন কোন শক্তিও নেই যা ওকে এই কাজ করতে বাধা দেবে ।
জয় সুধু এটুকু সময় ব্যয় করে যতটা সময় লাগে লিখতে “ রানী আমি আসছি , তুই ছাদের দরজা খোল”
জয় নিজের চাবি নেয় , তারপর ছাদের দরজা খুলে কোন রকম অসুবিধা ছাড়াই রানীদের ছাঁদে চলে আসে । ছাদের দরজার সামনে অস্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকে জয় , ওর বুকের ভেতর তোলপাড় চলছে , রানী ওকে ডেকেছে , ওর রানী ওকে ডেকেছে। জয়ের আর তড় সইছে না , যদি সম্ভব হতো দরজা ভেঙ্গে ও ভেতরে চলে যেতো ।
জয়ের হাত কাঁপছে , মাঘ মাসের তীব্র শীতে নয় , জয়ের হাত কাঁপছে প্রচণ্ড উত্তেজনায় , প্রচণ্ড আবেগে । মিনিট খানেক সময় জয়ের কাছে মনে হয় সহস্র বছর পেরিয়ে গেছে । ওর মনে হয় ওর হৃদপিণ্ড ধুকপুক করছে না মনে হচ্ছে , সেটা লাফাচ্ছে । রানী কে দেখাঁর জন্য এক মুহূর্ত অপেক্ষা সইছে না ।
জয়ের কাছে মনে হয় রানীদের ছাদের দরজা খুলছে একেবারে স্লো মোশানে , এতো ধিরে ধিরে যেন একেক সেন্টিমিটার ফাঁকা হতে এক ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে । জয় শ্বাস রোধ করে অপেক্ষা করে , দরজার ওপাসেই রয়েছে ওর কাঙ্ক্ষিত নারী ।
সব প্রশ্নের উত্তর নেই,
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)