Thread Rating:
  • 15 Vote(s) - 2.8 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance কিছু সম্পর্ক
কিছু সম্পর্কঃ ৮ ()

 
ছুটির দিন রহিম  ভোরে নামাজ পরে একটু বিছানায় গড়িয়ে নেয় । তারপর ছুটির দিনের  রুটিন মাফিক বন্ধু জয়নালের সাথে আড্ডা দিতে বেড়িয়ে যায় ।  আজকেও তার বেতিক্রম হলো না । ঘড়িতে যখন সকাল আটটা তখন রহিম চৌধুরী বাড়ির মেইন গেটের সামনে । একবার কলিং বেল বাজিয়ে অপেক্ষা করে , দরজা খুলে দেয়  শান্তির মা  । চৌধুরী বাড়ির ছুটা কাজের লোক। সকাল আটটায় আসে দুপুর বারোটার মাঝে চলে যায় , এর কাজ ঘর পরিস্কাল করা , আর রান্নায় হেল্প করা । শহরে আজকাল এই ধরেনের কাজের মানুষ জোগাড় করা খুব কঠিন । বেতন ও খুব বেশি , যে মেয়েটি দরজা খুলে দিলো তার চার ঘন্টার বেতন মাসে বারো হাজার টাকা । এই মেয়ে এর পর অন্য একটা বাড়িতে যাবে , সেখানেও তিন চার ঘণ্টা কাজ করে এই পরিমান টাকা নিবে। রাহিম নিজেও এমন একটা লোক রাখতে চেয়েছিলো , কিন্তু রাজীব কিছুতেই রাজি হয় না ।  
 
রহিম মাঝে মাঝে ভেবে পায় না , কোন পুণ্য গুনে এমন ছেলে পেয়েছে । বাবার কষ্টের টাকায় কোন বিলাসিতা করতে চায় না। নিজে ঘরের কাজ করে , মাঝে মাঝে রানীও করে  । অবশ্য রাজীব ঠিক ই বলে দশ বারো হাজার টাকা রহিমের মত মানুষের জন্য অনেক টাকাই ।
 
রহিমের আওয়াজ শুনে আয়শা মাথায় ঘোমটা দিতে দিতে বেড়িয়ে আসে , “ আসেন ভাই , কেমন আছেন?”  যদিও আয়শা হাসি মুখেই প্রশ্নটা করেছে , কিন্তু ভেতরে ওর হাসিটা আসছে না । আফরোজার বিয়ের দিনের কথা আজো মনে আছে আয়শার । দারুন দেখতে ছিলো রহিম , বেশ লম্বা এক হারা গড়নের । মাথায় তখন কার ফ্যাশন মত লম্বা চুল, বিয়ের পোষাকে মনে হচ্ছিলো সত্যি সত্যি রাজপুত্র এসেছে । আয়শা বর দেখে দৌরে গিয়ে ান্ধবীর কানে কানে গিয়ে বর্ণনা  দিয়েছিলো । আর এখন , বয়স এখন মাত্র ৫২ , কিন্তু দেখলে মনে হয় ষাট পেরিয়ে গেছে বহু আগে । আগের মত লম্বা দেখায় না , হালকা একটু নুয়ে পরা মনে হয় , দাড়ি চুল প্রায় ৭০ ভাগ পেকে গেছে ।
 
আছি , যতটুকু ভালো আছি সে আপনাদের দোয়ায় রহিম হেসে হেসে বলে ।
 
তাহলে মনে হয় আমরা আপনার জন্য ঠিক মতন দোয়া করছি না , নিজের শরীরের হাল দেখছেন?”
 
আয়শার কথা শুনে রহিম শব্দ করে হাসে , কথা ঘুরিয়ে নেয়ার জন্য বলে কই আপনার পতিদেব কই ডাক দেন , এক সাথে নাস্তা করি , সপ্তায় একদিন আপনার হাতের নাস্তা খেলে সারা সপ্তার শক্তি চলে আসে শরীরে
 
আর ডাকতে হবে না , তোর দৈত্যের হাসি ই আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়েছে , শালা হাসির কি ছিরিজয়নাল , সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলে ।
 
আমি হাসছি  এক মিনিট ও হয় নাই , আর তুই এই এক মিনিতে বাথরুম দাঁত ব্রাশ সব করে ফেলছিস? মিথ্যা বলার আর যায়গা পাশ না “  
 
আমি কল্পনায় তোর এই বিচ্ছিরি হাসি শুনতে পাইসিলাম আরো দশ মিনিট আগে , তাই ঘুম ভেঙ্গে গেছে হা হা হাজয়নাল ও ভুঁড়ি নাচিয়ে  হাসে । আসলে এই সময়টা বন্ধুর সাথে কাটাতে ভালো লাগে ওর । অন্য দিনে তো সময় ই পায় না , ছুটির দিনে সময় হয় । তাই একটু আগে ভাগেই ঘুম ভাঙ্গে জয়নালের ।
 
জয়নাল আর রহিম বারান্দায় বসে , শীতের কুয়াশা শহরে এতো সময় থাকে না , তাই ঝলমলে রোদে বসে নাস্তা করতে ভালোই লাগে ওদের । কিছুক্ষনের মাঝেই আয়শা আর পরিচারিকা মেয়েটি নাস্তা নিয়ে আসে , আয়শা ও ওদের সাথে বসে ।
 
ভাবি , এই নাস্তা করলে তো আর বেশিদিন আপনাদের মাঝে থাকতে পারবো না , রহিম নাস্তার দিকে তাকিয়ে বলে “   খাসির পায়া , পরোটা আর ছোলার ডাল । জয়নাল বেশ ভোজন রসিক , তাই ছুটির দিনে  বাপ দাদার আমলের নাস্তা ওর পছন্দের । এই খাসির পায়া গতকাল রাত থেকে রান্না হচ্ছে ।  
 
আরে খা বেটা একদিন খেলে কি হবে ?  তুই এইসব খাস না বলেই তোর শরীর দুর্বল
 
আরে না ভাই দরকার নেই , আপনার জন্য রুটি নিয়ে আসছে , আর খাসির পায়া টা একটু ঝোল টেস্ট করে দেখেনআয়শা জয়লানের বিপরীতে গিয়ে বলে , না হলে ও জানে জয়নাল রহিম কে খেতে বাধ্য করবে ।
 
আয়শার কথা শেষ হওয়ার আগেই , পরিচারিকা , আটার রুটি , একটা ডিম সেদ্ধ নিয়ে আসে । নাস্তা করতে করতে ওদের তিনজনের আড্ডা হয় । সারা সপ্তা ওরা তিনজন এই দিনের অপেক্ষা করে । এই দিনের এই সময়ে ওরা অতীতে ফিরে যায় আবার  হাসি ঠাট্টার মাধ্যমে নিজেদের অতীত এবং অতীতে হারিয়ে যাওয়া সঙ্গীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে বর্তমানে ।
 
 
নাস্তা শেষে চায়ে চুমুক দিতে দিতে , রহিম জান্নাত আর জয়ের কথা জিজ্ঞাস করে , তখন আয়শা জয়ের জ্বর হয়েছে , এই তথ্য দেয় । জানতে পেরে রহিম জয়ে কে দেখতে যাওয়ার কথা বললে , আয়শা তড়িঘড়ি করে বাধা দেয়  রহিম কে ।
 
জয় এখন তো ঘুমাচ্ছে , এখন গিয়ে কি করবেন ভাই , আর একটু পরে যাবেন , আমি ডেকে দেবো”  
 
রহিম আর জয়নাল আয়শার চোখে মুখে যে আতংক দেখা দিয়েছিল সেটা খেয়াল করে না । তবে ওরা আয়শার কথা মেনে নেয়ায় আয়শা যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচে । জয়নাল আর রহিমের কাছে ছেলের সিগারেট খাওয়া যেন ধরা পরে না যায় সেই কারনে আয়শা ওদের এমন বাধা দিয়েছে । বিশেষ করে রহিমের কাছে কিছুতেই এই তথ্য ফাঁস হতে দেয়া যাবে না । আয়শা চায় না রহিম জয়ের কোন খারাপ গুণের কথা জানুক ।
 
তাই চা খেয়ে দ্রুত জয়ের ঘরে যায় , আয়শা , ছেলেকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে , “ এই জয় , জয়জয়ের ঘুমন্ত শরীরে হাত দিয়ে ঠেলা দেয় আয়শা । কিন্তু জয় ওঠে না , ঘুম জড়িত কণ্ঠে বলে , “ উফফ আম্মু , আরো একটু ঘুমাই , শরীর ম্যাজ ম্যাজ করছে
 
ওঠ , তোর ছোট আব্বু এসেছে , তোর সাথে দেখা করবে বলেছে , ওঠআয়শা তাড়া দেয় , তারপর অগোছালো ঘর কিছুটা গোছানোর চেষ্টা করে ।
 
রহিমের কথা শুনে  জয়ের বুক ধক করে ওঠে । মনে মনে ভাবে রাজীব আবার বিচার দেয়নি তো ? আবার নিজে নিজেই ভাবে , এতো দিন হয়ে গেছে , এখন কি আবার বিচার দেবে ? তা ছাড়া ওই শালা আর যাই হোক , এই বিচার দেয়া দেইর মাঝে নাই ।   
 
এদিকে আয়শা রুমে রুম ফ্রেশনার স্প্রে করছে , আর বিড়বিড় করে জয়ের গুষ্ঠি উদ্ধার করছে । সেটা দেখেও জয় কিছুটা ভালো বোধ করে ।
 
স্প্রে করা শেষে তোয়ালে ভিজিয়ে জয়ের মুখ মুছে দেয় , মাথা আঁচরে দেয় । একটা টি সার্ট পরিয়ে একদম পরিপাটি করে তারপর  ডাকে রহিম কে । রহিম আর জয়নাল এক সাথে ঘরে ঢোকে ।
 
ঘরের চারপাশে, আর জয়ের পরিপাটি চুলের  দিকে  একবার তাকিয়েই জয়নালের ঠোঁটে একটা হাসি ফুটে ওঠে , হাসিটা খুশি বা আনন্দের নয় , কারো গোপন অভিসন্ধি বুঝে ফেললে যেমন হাসি ফুটে ওঠে তেমন হাসি । সেই সাথে একটা বড় নিঃশ্বাস , কারন ওই গোপন অভিসন্ধির সাথে জয়নাল  এক মত নয় ।
 
কিরে আমার পালোয়ান ছেলে তোর নাকি জ্বর এসেছে ?” রহিম হাসতে হাসতে বলে ।  
 
জয় উত্তরে কিছু বলে না , সুধু একটু হাসে । রহিমের মুখটা দেখার পর ওর মনে কিছুটা অনুশোচনার দেখা দিয়েছে , সেদিন রাতে রাজীব কে বাড়ি নিয়ে খোটা দিয়েছিলো । এখন মনে হচ্ছে এই ধরনের কথা বলা ওর উচিৎ হয়নি । আর ওই বাড়ির সবাইকে অকৃতজ্ঞ বলেও আখ্যা দিয়েছিলো ।
 
এইসব জ্বরে কি তোর মত পালয়ানের কিছু হয় ? যা জিমে গিয়ে দুই সেট ডন মেরে আয়, দেখবি সব ঠিক হয়ে গেছে”  বিছানার পাশে চেয়ারে বসে , জয়ের পিঠে চাপড় মেরে বলে রহিম ।  
 
ঠিক বলেছো , ছোট আব্বু , তোমার মত মটিভেটোর থাকলে আমার কিছুই হবে নাজয় ও হাসতে হাসতে বলে  
 
সেটা না হয় বুঝলাম , কিন্তু পরিক্ষা করছিস না কেনো ? মশা  তো আর জানে না তুই একটা বাঘ , আর আজকাল মশার কামড়ে বাঘ ও কুপকাত হয় , যা ডেঙ্গু পরিক্ষা করে আয় , আমি রাজীব কে বলে দেবো , রাজীব নিয়ে যাবে তোকে
 
এবার জয় বিপদে পরে যায় , কিভাবে বলবে রাজীবের সাথে ও যাবে না , “ আরে শীতের দিনে ডেঙ্গু হয় না ছোট আব্বু এটা তুমিও জানো না ?” জয় প্রতিবাদ করে ।
 
বুঝলাম, কিন্তু চারদিন তো হয়ে গেছে , পরিক্ষা না কর ডাক্তার দেখা
 
ওকে দেখাবো
 
আর কিছুক্ষন রহিম জয়নাল আর আয়শা  জয়ের সাথে থাকে , বেশির ভাগ কথা রহিমের সাথেই হয় । জয়নাল আর আয়শা পাশ থেকে মাঝে মাঝে জয়ের নামে নালিশ করে ।
 
ওরা চলে গেলে জয় ওর আব্বু আর ছোট আব্বুর বন্ধুত্ব নিয়ে ভাবে । এই দুজনের বন্ধুত্ব আজো কেমন অটুট । অথচ ওর আর রাজীবের মাঝে কত বড় ফটল দেখা দিয়েছে , জীবন অর্ধেক পার হতে না হতেই । জয় ভাবে , কি ভুল ছিলো ?
 
বেশ অনেকক্ষণ সময় জয় ওদের দুজন কে নিয়ে ভাবে । শেষ পর্যন্ত অবশ্য জয়ের আদালতে রাজীব কেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় । জয় ভাবে রহিম আর জয়নাল একে অন্যের জন্য সব করতে পারে , ওরা দুজন ফলাফল ভেবে পেছনে হটে না । আর রাজীব একজন বস্তুবাদী মানুষ । ওর কাছে নিজের ক্যারিয়ার , ভবিষ্যৎ এসব ই ইম্পরট্যান্ট , আশেপাশের মানুষ ওর কাছে কোন ইম্পরটেন্স রাখে না । কিন্তু এভাবে তো সম্পর্ক রাখা যায় না । সম্পর্কে আপস আসবে ,  ডাউন আসবে , কিন্তু কখনোই তা নিয়ে রিগ্রেট করা যাবে না । পা ফেলার আগে ভাবা যাবে  না এর ফলাফল কি হবে । ভাবতে হবে যা হওয়ার হবে । এবং যা হবে সেটা একত্রে মোকাবেলা করতে হবে । তবেই না বন্ধুত্বের দাবি মেটানো যাবে । বন্ধুত্বের জন্য  যদি চোখ বন্ধ করে অন্ধকারে ঝাপ ই না দেয়া যায় , সেটা জয়ের কাছে বন্ধুত্বই নয় ।  এসব ভাবতে ভাবতেই রাজীবের উপর জয়ের রাগ যেন নতুন করে রিনিউ হয় ।
 
একটু পর আয়শা ওর জন্য নাস্তা নিয়ে আসে । কিন্তু জয়ের খেতে ভালো লাগে না , মুখের তেঁতো স্বাদ সব খাবার ই তেঁতো বানিয়ে দেয় । অল্প একটু মুখে দিয়েই জয় বলে আম্মু এসব আমার পক্ষে খাওয়া সম্ভব না “   
 
তাহলে আমার মাথা খাও , আজকে তোর ছোট আব্বু যদি রুমে এসে গন্ধ পেতো ? তাহলে আমার মান ইজ্জত কোথায় থাকতো?”  আয়শা ক্ষেপে গিয়ে বলে । ছেলের দিকে ছল ছল চোখে তাকায় ।
 
আহা আম্মু তুমি আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ো না তো , তুমি এই ভাবে তাকালে আমার আর কোন কিছু ভালো লাগে না , এর চেয়ে ভালো তুমি আমাকে দুইটা থাপ্পড় দাও , ছোট বেলায় যেমন দিতে
 
ছেলের কথা শুনে আয়শার চোখ ছলছল করে , বলে এখন তো আর ছোট নও যে সব সময় শাসন করবো
 
তোমার কাছে আমি সব সময় ছোট ই থাকবো, আম্মু, তোমার কাছে কোনদিন বড় হবো নাজয় হাসি মুখে বলে ।
 
তাহলে বাবা আমার কথা শোন , সিগারেট ছেড়ে দে , তুই মাঝে মাঝে মদ খাস , সেটা না হয় কোন সমস্যা না , কিন্তু বাবা সিগারেট ছেড়ে দে , যদি তোর কিছু হয়ে যায় , আর আমি বেঁচে থাকি সেটা দেখার জন্য , তখন আমার কেমন লাগবে একবার ভাব, আমি মরে গেলে তখন নিজের ইচ্ছা মত চলিস”  
 
জয় আয়শার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে , ওর মা জানে ও মদ খায় , কি ভাবে জানলো ভেবে পায় না জয় ।
 
তোমাকে কে বলল আমি মদ খাই?” জয় অবাক হওয়ার ভান করে জিজ্ঞাস করলো
 
জান্নাত বলেছে , বাবা আমি তো সে জন্য কিছু বলছি নাআয়শা অনুনয় করে
 
আরে না জান্নাত মিথ্যা বলেছেজয় ডাহা মিথ্যা বলে , ও চায় না ওর মা এসব জানুক । মনে মনে ভাবে , জান্নাতের বাচ্চা জান্নাত , তোকে আমি ছারবো না । জান্নাতের ইতিহাস ভাবতে শুরু করে , জান্নাতের দোষ ত্রুটি খুজে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু বিচার দেয়ার মত তেমন কিছু পায় না , কিছু না পেয়ে জয় বানিয়ে বলে
 
তুমি জানো , জান্নাত যে ভিডিও ছাড়ছে , ওর উপর কত মানুষ ক্ষেপে যাচ্ছে , যে কোনদিন ওকে রাস্তায় ধরবে মানুষজন , ও অনেক ক্ষমতাধর মানুষ কে ক্ষেপীয়ে তুলছে , তুমি তোমার মেয়ে সামলাও আম্মু , নইলে কিন্তু খুব খারাপ হবে । ও যদি রাস্তায় মাইর খায় , তাহলে কি ওর বিয়ে হবে?”
 
জয় সফল ভাবে আয়শার মন কে অন্য দিকে কনভার্ট করতে সম্ভব হয় , জয়ের কথা শুনে আয়শার চোখ বড়বড় হয়ে গেছে , ছেলের সিগারেট খাওয়ার দুশ্চিন্তা ভুলে , মেয়ের মার খাওয়ার চিন্তায় মন পরিপূর্ণ হয়ে গেছে । কি বলছিস তুই ?”
 
হ্যা আম্মু , আমি তো রাজনীতি করি তাই কিছুটা জানি , আর আমি আছি বলেই এতদিন মাইর খায় নিজয় নিচু স্বরে গোপন কথা বলছে এমন ভাবে বলে ।
 
রাজীব তো আছে ওর সাথে , রাজীব কি ওকে এমন কাজ করতে দেবে?” আয়শা ঠিক ভেবে পায় না , রাজীব কি জান্নাত কে এমন রিস্ক নিতে দেবে ?
 
জয় একটু খুশি হয় রাজীবের নাম আসতেই , বলে আরে আম্মু ওই সব নষ্টের মুল , ওর সাহসেই জান্নাত এসব করছে , নইলে আমাদের জান্নাত কি এতো খারাপ নাকি?”
 
এক  মুহূর্তের জন্য জয়ের মনে হয় ওর শরীরের জ্বর সেরে গেছে , এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছে ও ।
 
 
জয় না না করলেও আয়শা ওকে জোর করে কিছুটা নাস্তা খাওয়ায় । তবে সিগারেটের কথা আর তোলে না ।  বেশ কিছুক্ষন সময় জয়ের ভালো কাটে । এমন কি বারান্দায় গিয়ে একটা সিগারেট ও খেয়ে আসে ।  মোবাইলে কিছু ফানি ভিডিও দেখে বেশ হাসাহাসিও করে । সেই হসপিটাল এর ঘটনার পর এতটা খুশি ও কোনদিন হয়নি ।
 
তবে এই খুশি বেশিক্ষণ স্থাই হয় না , হঠাত ওর মনে হলো , সবাই ওকে দেখতে এলো , সুধু একজন এলো না । তার কি ওর জন্য একবার ও মন কেমন করে না ? জয় নিজেকে প্রশ্ন করে , তারপর আবার নিজেই উত্তর দেয় , করবে কি করে ? তার মন তো আর খালি নেই , তার মনে এখন এমন মানুষ ও আছে যাদের খালি বাড়িতে নিয়ে আসা যায় ।
 
রানীর কথা ভাবতেই জয়ের মুখ আবারো তেঁতো হয়ে উঠলো , আবার একটা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা হলো , কিন্তু বারান্দায় যাওয়ার ইচ্ছা হলো না , শীতের বাসাতে খুব কাহিল লাগে ।
 
জয় রানীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে , তুই আমাকে অপবাদ দিলি , দূরে সরিয়ে রাখলি , তারপর আরো একজন কে তোর জীবনে নিয়ে এলি । আমাকে একটা সুযোগ দেয়ার চিন্তা  কি একবার ও তোর মনে  এলো না?


****
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 1 user Likes gungchill's post
Like Reply


Messages In This Thread
কিছু সম্পর্ক - by gungchill - 29-07-2025, 04:17 PM
RE: কিছু সম্পর্ক - by gungchill - 19-10-2025, 05:52 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)