Thread Rating:
  • 15 Vote(s) - 2.8 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance কিছু সম্পর্ক
কিছু সম্পর্কঃ ৮ (গ) এর বাকি অংশ............




জান্নাত অনেক ভেবেছে , কিভাবে জয়ের আর রানীর ব্যাপারটা সল্ভ করা যায় , কিন্তু কোন কুল কিনারা করতে পারছে না । আর এটা এমন একটা ব্যাপার যা কারো সাথে আলাপ করতে ও পারছে না । শেষে একদিন উপায় নিজে হেটেই এলো । আবরার , এই ছেলেটার নাম কেন আগে মনে আসেনি সেটাই জান্নাতের মাথায় ঢোকে না । ও ছাড়া রানীর ব্যাপারটা সুধু এই ছেলেটাই জানে ।

 
আরে জান্নাত কেমন আছেন , চায়ের দাওয়াত কন্তু পেলাম নাজান্নাত বসে বসে রানীর কথাই ভাবছিলো । আজকাল এই কেস ছাড়া আর কোন কিছুই ওর মাথায় থাকে না । এমন সময় আবরার এসে উপস্থিত হয় । আর তখনি জান্নাতের মাথায় আসে , আরে এই ছেলের সাথে তো শেয়ার করা যায় ।  
 
জান্নাত হাসে , বলে আপনার ান্ধবি আমাকে নিস্তার দেবে ? যদি আপনাকে আমার সাথে দেখে, আচ্ছা বাদ দেন , আপনি কেমন আছেন?”
 
আমার আর থাকা …… কেষ্ট ব্যাটার কোপানলে পরেছি
 
আবরারের বলার ভঙ্গি দেখে জান্নাত উচ্চ স্বরে হেসে ওঠে , বলে মানে ? কোন কেষ্ট?”  
 
ফাটা কেষ্ট না , এ একেবারে কালা কেষ্ট , আমাদের বিনোদিনী রাঁধা রানীর কেষ্ট”  
 
জান্নাতের বুঝতে কিছুক্ষন সময় লাগে , আর যখন বুঝতে পারে আবরার জয়ের কথা বলছে , হাসতে হাসতে লুটিয়ে পরার অবস্থা হয় ওর । জান্নাত বুঝতে পারে এই ছেলের সাথে রানীর এতো ভাল সম্পর্ক এতো কম সময়ে কি করে হলো । এর সাথে কিছুক্ষন কথা বললে যে কারো মন ভালো হয়ে যাবে ।  
 
আপনি জয় কে চেনেন?” জান্নাত অবাক হয়ে জানতে চায় , রানী শেষ পর্যন্ত কারো কাছে অন্তত জয়ের নাম নিয়েছে ।
 
চিনতাম না , এখন হাড়ে হাড়ে চিনতে পারছি, আগে যদি জানতাম ……… , আপনি চেনেন ? ওহ আপনি তো চিনবেন ই একি এলাকায় থাকেন যেহেতু”  আবরার করুন মুখ করে বলে
 
ভাই একটু বেঁচে থাইকেন ? ও ডেঞ্জারাস কিন্তুএই বলে জান্নাত নিজের বাম ভ্রুর উপরে একটা কাটা দাগ দেখায় , “ এটা দেখছেন? এটা ওর হাতের কাজ। ওর কোন জিনিসে কেউ চোখ দিয়েছে এরকম হলে  ভীষণ ক্ষেপে যায় , আমি একবার ওর পছন্দের বাই সাইকেল নষ্ট করেছিলাম”
 
মানে? আপনি তো দেখছি বেশ ভালো করেই চেনেনআবরার একটু অবাক হয় ,  
 
হ্যা তা বলতে পারেন , জন্মের পর থেকে বাড়ি শেয়ার করছি , বাবা মা শেয়ার করছি চিনতে তো হবেই” জান্নাত মুচকি হেসে রহস্য করে বলে ।
 
আবরার হা করে তাকিয়ে থাকে , তারপর কিছুক্ষন পরে বলে “ উনি আপনার ভাই!!!! যাহ বিশ্বাস হয় না”
 
“ কেনো? বিশ্বাস হচ্চে না কেনো?”
 
“ কিভাবে বিশ্বাস হবে বলুন , আপনি এতো ম্যাচিওর , এতো পরিস্কার চিন্তা ভাবনা আপনার , আপনার ভিডিও যত দেখি তত মুগ্ধ হই , আর উনি , কি আর বলবো”
 
জান্নাত হাসে , ওকে ম্যাচিওর আর জয় কে প্রকারান্তে ইম্ম্যাচিওর বলায় বেশ খুশি হয় । “ হ্যা তা বলতে পারেন , আমাদের পরিবারে আমি হচ্ছি  ম্যাচিওর ওয়ান , আর জয় হচ্ছে ডেঞ্জারাস ওয়ান , তা কি করেছে আপনাকে”
 
“ কি করেছে মানে ? রাতের ঘুম হারাম করেছে , হলের ছেলে পেলে লেলিয়ে দিয়েছে , কোন ভাবে প্রান নিয়ে বেঁচেছি”
 
“ ওওও , তাও ভালো , অন্য কারো এতো পাওয়ার থাকলে , সেতো আপনাকে মাইর দিতো, জয় তো সুধু আপনাকে হল ছাড়া করেছে , আমি ভেবেছিলাম মারবে” জান্নাত আবরারের সাথে দুষ্টুমি করে বলে ।  
 
“ ভাই , একটা কথা আছে না , পিঠে সয় , কিন্তু পেটে সয় না, আমার পিঠে পরলে আমি না হয় সহ্য করে নিতাম , কিন্তু লাথিটা পেটে পরেছে যে , এখন ঘর ভাড়া করে থাকার মত অবস্থা আমার নেই” আবরারের মুখটা একটু মলিন হয়ে আসে ।
 
জান্নাতের একটু লজ্জা হয় , আবরার কে একটু ভাল করে দেখে , পায়ের সেন্ডেল বেশ মলিন । জান্নাতের বুঝতে সমস্যা হয় না আবরার ওদের মত ধনীর ঘরের ছেলে না , রানীদের মতও নয় । বেশ কষ্ট করেই লেখাপড়া করছে । একটু আগে আবরারের হলে সিট হারানো নিয়ে রসিকতা করায় বেশ লজ্জিত বোধ করে জান্নাত ।
 
“ আমি ভাবছিলাম একটা কিছু করা দরকার , এভাবে চলতে দেয়া যায় না , ওরা একে অপর কে ভুল বুঝবে , আর পোহাতে হবে আমাদের” জান্নাত একটু রাগত স্বরে বলে ,
 
“ হ্যা , তা তো করতেই হবে , রাঁধা কৃষ্ণ লীলা করবে আর আমরা মাঝে থেকে বিলা হয়ে যাবো , এটা তো চলতে দেয়া যায় না” আবরার নিজের সিরিয়াস্নেস বোঝানোর জন্য এক হাত দিয়ে অন্য হাতের তালুতে আঘাত করে ।
 
“ কিন্তু করবো টা কি করে , আমরা যতই জয় কে বুঝাই , জয় বুঝবে না , আমি এই নিয়ে অনেক ভেবেছি , কিন্তু কোন কুল করতে পারছি না , আপনার কাছে কোন আইডিয়া আছে ?” জান্নাত আবরারের দিকে তাকায় ।
 
 আবরার কিছুক্ষন ভাবে ,  তারপর জান্নাতের দিকে তাকায় , বলে “ আচ্ছা তার আগে একটা কথা বলুন তো , আপনি ঐদিন রানীর সামনে এমন ভাব করলেন যে আপনি জানেন না যে রানীর সমস্যা জয় সাহেব কে নিয়ে , আর এখন দেখছি আপনি সব জানেন, ঘটনা কি?”
 
“ রানী ই আমাকে কোনদিন বলেনি , আমিই চিন্তা ভাবনা করে বের করেছি , তারপর জয়ের সাথে কথা হয়েছে , আর জয় আমার কাছে স্বীকার করেছে , হয়তো আমার ভাই বলে রানী বলতে লজ্জা পেয়েছে , তাই আমিও ভাব করি আমি জানি না”
 
“ তাহলে দেখছি আপনাদের মাঝে কিছু গোপন রাখার মত ব্যাপার সেপার ও আছে , রানী বলেছিলো ও আপনার কাছে সব বলতো”
 
“ এই ঘটনার আগে রানীর জীবনে এমন কিছুই ঘটেনি না আমার কাছে গোপন রাখার মত ছিলো , ওর লাইফ ছিলো একদন সাদাসিধা”  জান্নাত একটু বিরক্তই হলো , আবরারের এমন অফ টপিক নিয়ে কথা বলার কারনে , কিন্তু সেটা প্রকাশ করলো না।
 
“ তা আপনি কি কি গোপন করেছেন রানীর কাছে ? ওহ আর একটা কথা , রাজীব ভাই কেমন আছেন , খুব ভালো লোক কিন্তু উনি , একদম মাই ডিয়ার টাইপ , আমকে সেদিন রাতের খাবার খেয়ে আসতে বলেছিলো” কথা গুলো বলে আবরার জান্নাতের দিকে তাকায় , ঠিক যেমন রিএকশন আশা করেছিলো তেমনি পায় ।
 
“ আমি আপনাকে জিজ্ঞাস করলাম কি আর আপনি বলছেন কি ? রাজীবের খবর রাজীব জানে , আমি কি করে জানবো” জান্নাত এবার বিরক্ত হয় , এবং কিছুটা প্রকাশ ও করে । আবরার ছেলেটার একটা বদ অভ্যাস খুজে পায় ও , এই ছেলে একটু হিন্টস পেলেই দুইয়ে দুইয়ে চার করে ফেলতে পারে । এবং ঠিক বুঝেছে কিনা সেটা পরিক্ষা করেও দেখে ।
 
“ আরে এমনি জিজ্ঞাস করলাম , আপনি আর রাজীব ভাই বেশ ক্লোজ তো , আচ্ছা বাদ দেন , আমি একটা উপায় পেয়েছি , আমার একটা টেকনিক জানা আছে , সেটা হচ্ছে কাটাকাটি টেকনিক “ আবরার খুব কঠিন অংক বোঝাচ্ছে এমন ভাবে বলে ।
 
কিন্তু জান্নাত বুঝতে পারে না , ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাস করে “ মানে?”  
 
আবরার  আরো উৎসাহী হয়ে ওঠে , ভাব খানা এমন যে জান্নাত একজন মনযোগী স্টুডেন্ট , আর ও টিচার , এখন ও জান্নাত কে বোঝাবে , “ জয় সাহেবের মনে এখন ভীষণ রাগ এবং অভিমান , আর রানীর মনে ভয় এবং অনুশোচনা । এই অনুভূতি গুলো ওদের দুজন কে আলাদা করে রেখছে । এবং অনুভূতি গুলো অনেকটা একে অন্যের বিপরীত অনুভূতি”
 
“ আচ্ছা একটু সহজ করে বলুন না প্লিজ” মাঝে জান্নাত ফোঁড়ন কাটে । মনে মনে বলে , ‘জয় যদি তোর হাড্ডি ভেঙ্গে দিতো তাহলে আমি খুশি হতাম ‘   
“ আরে শুনুন না , এখন আমাদের করতে হবে কি জানেন?”
 
জান্নাত মাথা নেড়ে জানায় ও জানে না।  
 
“ তাহলে শুনুন , আমাদের করতে হবে হচ্ছে , ওদের দুই জন কে এমন পরিস্থিতির মাঝে ফেলে দেয়া যেখানে ওদের অনুভূতি গুলো চূড়ান্ত রুপ নিতে পারবে”  
 
“ সেটা কিভাবে ?”
 
“ ওদের একদম একা কোথাও meet করিয়ে দিতে হবে । একদম একা” আবরার হাত দিয়ে শুনশান পরিবেশের একটা ভঙ্গি করে ।  যেমনটা মানুষ ভুতের গল্প বলার সময় করে থাকে ।
 
“ আরে না জয়ের যা রাগ , যদি কিছু করে ফেলে “ জান্নাত এই প্ল্যান বাতিল করে দেয় ।
 
“ না না তেমন কিচ্ছু হবে না , যখন  জয় সাহেবের রাগ আর অভিমান চূড়ান্ত আকার ধারন করবে , তখন রানীর ভয় আর অনুশোচনা ও চূড়ান্ত আকার নেবে , তখন ওই জনশূন্য জায়গার বাতাসে ভেসে বেড়াবে রাগ আর ভয় , অভিমান আর অনুশোচনা । একদিকে রাগ , একদিকে ভয় , একদিকে অভিমান অন্য দিকে অনুশোচনা । রাগ ভয় অনুশোচনা অভিমান , এই চারের মাঝে তীব্র লড়াই চলবে , রক্ত ক্ষয়ী সেই লড়াইয়ে এই চার একে অন্য কে ধংস করে ফেলবে , এর পর সেখানে থাকবে সুধু জয় আর রানী , আমাদের রাঁধা কৃষ্ণ নিজেদের একদম raw ফর্মে , তখন কি হবে ভেবেছেন একবার…… তখন……”  আবরারের চোখ চকচক করছে , আবরার হাত পা নেড়ে নেড়ে এমন ভাবে কথা গুলো বলছিলো , যেন ও রাগ অভিমান অনুশোচনা এই অনুভূতি গুলো দেখতে পাচ্ছে । যেন আবরার কোন নাটকের দৃশ্য অভিনয় করে দেখাচ্ছে । একপর্যায়ে জান্নাত ও আবরারের বলার ভঙ্গিতে কিছুটা বিমোহিত হয়ে পড়েছিলো , জান্নাতের কাছেও মনে হচ্ছিলো ও দৃশ্যটা দেখতে পাচ্ছে ।  কিন্তু এই পর্যায়ে এসে জান্নাত বলে ওঠে
 
“ প্লিজ স্টপ , এর পর কি হবে আমি আর শুনতে চাই না , ভাবতেও চাই না ,  this is sick,  তবে আপনার বলার ভঙ্গি , আর অঙ্গ ভঙ্গি কিন্তু বেশ , এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিলো দৃশ্যটা আমি দেখছি” জান্নাত বেশ মুগ্ধ হয়েই বলে ।    
 
“ হালকা থিয়েটারের সখ ছিলো, কিন্তু চান্স পাইনি” আবরার কে এই প্রথম জান্নাত লাজুক ভাবে হাসতে দেখে ।  
 
“ কিন্তু আমার যে ভয় থেকেই যাচ্ছে , জয় যদি উল্টা পাল্টা কিছু করে , তখন আমি রা… রানীকে মুখ দেখাবো কি করে”
 
  “ হ্যা তেমন কিছু হলে রাজ…… রানীর কাছে আপনাকে মুখ লুকাতেই হবে হয়তো” আবরার সয়তানি হাসি হেসে বলে ।
 
উত্তরে জান্নাত ও হাসে , ভাবে এর কাছ থেকে মুক্তি নেই , এই ছেলে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে ভালোবাসে ।
“ আচ্ছা বলুন তো আপনি জয় সাহেব কে কতটুকু বিশ্বাস করেন?
 
“ এই ধরনের ব্যাপারে এক ফোঁটাও না” জান্নাত এক মুহূর্ত ও সময় নেয় না উত্তর দিতে ।
 
“ আপনার ভাই কি true man?”
 
“ কি যা তা বলছেন , ও ম্যান না হলে কি আমি ভাই বোলে পরিচয় দিতাম , তখন বলতাম জয় আমার বোন”
 
“ আরে না না সেই ম্যানের কথা জিজ্ঞাস করিনি , জয় সাহেব  কি chivalrous ছেলে?”
 
জান্নাত একটু ভাবে , ভেবে বলে “ জানি না , ওকে প্রেডিক্ট করা মুশকিল , ও আনপ্রেডিক্টেবল”
 
আবরার আরো একটু  ভাবে , একটু বলতে বেশ কয়েক মিনিট চুপ করে থাকে , তারপর বলে “ আচ্ছা এসব বাদ দেন , আপনার কাছে কি মনে হয় আপনার ভাই কি রানী কে সত্যি ভালোবাসে?”
 
“ আমার কাছে তো তাই মনে হয়েছে , সুধু ভালোবাসাতেই সীমাবদ্ধ নেই , ও বেশ অবসেসড রানী কে নিয়ে , রানী সুধু আমার , আমি নিজেও নিজেকে বাধা দিতে পারবো না , এই টাইপ সিনেমার ডায়লোগ ও দিয়েছে”  জান্নাত একটু ভেবে নিয়ে বলে । তারপর আবার বলে “ তা ছাড়া যেদিন আপনি এসেছিলেন , সেদিন ও পারলে আমাকে খেয়ে ফেলে , নিজের মোবাইল টবাইল ভেঙ্গে অস্থির অবস্থা”  
 
“ তাহলে আমার মনে হয় , এই প্ল্যানে কোন ক্ষতি নেই , জয় সাহেব যদি রানী কে আঘাত করেও , এমন ভাবে আঘাত করবে যেটা রানী সহ্য করতে পারবে , আর সেই আঘাতে রানী ক্ষতি নেই , ট্রাস্ট মি”  
 
“ এতো বিশ্বাস নিজের প্লানের উপরে?” জান্নাত ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞাস করে ।
 
“ শুনুন , একজন পুরুষ সে যতই বলবান হোক না কেন , নিজের ভালোবাসার নারীকে কখনো আঘাত করে না , আমি নিজেও একজন পুরুষ, সেখান থেকেই বিশ্বাসটা এসেছে ”
 
“ তাহলে যে প্রায় রোজ খবরে শুনি , কুপিয়ে মেরেছে , এখানে লাইভে এসে খুন করেছে , এসব কি?”
 
“ আরে ধুর , ওরা হচ্ছে ফ্রড , নিজেকেই নিজেরা প্রতারিত করে ওরা , ভাব দেখায় ভালোবেসেছি , আসলে কোনদিন বাসেনি, ভালোবাসার একটা বস্তুকে আঘাত করা যায় না , এরা তো মানুষ কে শেষ করে দিচ্ছে, ভালোবাসার মানুষ কে দূরে ঠেলে দেয়া যায় , শেষ করা যায় না , এই ইগো দ্বারা চালিত মানুষ গুলো , প্রভুত্ব আর মালিকানা কে ভালোবাসার মোড়কে মুরিয়ে রেখেছে”
“ নাইস , চলুন আপনার  পাওনা চা আজকেই খাওয়াই” জান্নত উঠে দাড়ায় ,
 
আবরার ও উঠে দাড়ায় , নিজের ঘড়ি দেখে , তারপর বলে , “নাহ আজ নয় , রানী ডেকেছিলো , ওর আসার সময় হয়ে গেছে”
 
“ ওরে বাবা , আপনি এখনো রানীর সাথে ঘুরছেন , আপনার তো বেশ সাহস , জয় যদি এবার সত্যি সত্যি মাইর দেয়”
 
উত্তর আবরার হাসে , হাসিটা অন্যরকম , তবে জান্নাতের কাছে পরিচিত মনে হয় , কিন্তু কোথায় দেখছে ঠিক মনে করতে পারে না ।
****  
 
রানী একটু দূর থেকেই দেখতে পায় আবরার আর জান্নাত কথা বলছে , দেখেই ওর মেজাজ খারাপ হয়ে যায় । একবার ভাবে এখান থেকে চলে যাবে , কেমন মেয়ে রে বাবা !!! কিন্তু আবার সিধান্ত চেঞ্জ করে , ওই দিকে এগিয়ে যায় । রানী কে দেখেই জান্নাত দু হাত উপরে তুলে ফেলে , দ্রুত বলে “ আমি তোর বাধু হাইজ্যাক করার জন্য আসিনি । কসম করে বলছি” বলে জান্নাত হাসে
 
রানী কপাল কুঁচকে বলে “ এখানে সবাই স্বাধীন মানুষ , যে যার সাথে ইচ্ছা কথা বলতে পারে , হাইজ্যাকের কথা আসছে কেনো?”
 
উত্তরে জান্নাত কিছু বলে না , বরং আবরারের দিকে তাকিয়ে বলে “ আমি গেলাম , পরে দেখা হবে”
 
“ বাই” আবরার হাত নারে ।
 
জান্নাত চলে যেতেই রানী ভ্রু কুঁচকে তাকায় আবরারের দিকে ,
 
“ আরে আমি তো এসেছি তুই আসতে বলেছিস বলে , এসে দেখি জান্নাত , আমাকে বলল চলুন চা খাওয়াই , আমি তো সাফ বলে দিয়েছি , না এখন সময় নেই , রানী ডেকেছে , জরুরি কথা আছে আমার সাথে”
 
আবরার বেশ গম্ভির ভাবে বলে , সেটা দেখে রানীর কঠিন মুখ একটু নমনীয় হয় । ঠোঁট দুটো বাঁকিয়ে বলে “ ঠিক করেছিস, আর কোনদিন পাত্তা দিবি না”
 
“ অবশ্যই , তুই যেখানে আমি সেখানে , আমি হলাম তোর লেজ “ আবরার এখনো বেশ গম্ভির ভাবে বলে ।
 
রানীর ভ্রু আবার কুঁচকে যায় , বলে “ তুই কি আমার সাথে ইয়ার্কি করছিস আবরার? তুই কি আমাকে পশু ভবেছিস যে আমার লেজ থাকবে”
“ আরে রাগ করিস কেন ? এক সময় মানুষের ও লেজ ছিলো , এখন নেই , আমি হলাম তোর সেই অদৃশ্য লেজ , মানে লেজের মত, তোর পেছন পেছনে ঘুরি “
 
“ আচ্ছা চল লাঞ্চ করে  আসি” রানী আর ওই বিসয়ে কথা বাড়ায় না ।
 
আবরারের চোখ কপালে ওঠে “ আমার সাথে ?”
 
“ হ্যা , একা যাওয়া যাবে না ,প্রবলেম আছে “ রানী নিজের হাত ব্যাগে কি যেন খুজতে খুজতে বলে
 
“ আমার সাথে গেলে আরো বেশি প্রবলেম, জয় সাহেব দেখলে আমাকে শেষ করে ফেলবে, ভাই আমার জীবন একটাই , সেটা আমাই খোয়াতে চাই না , আমার বাপের আর কোন ছেলে নেই , আমিই বংশের বাতি”  আবরার হাত জোর করে নাটকিয় ভঙ্গিতে বলে ।
 
এদিকে রানী বিস্ময় আর আতঙ্ক নিয়ে তাকিয়ে আছে আবরারের দিকে , আবরারের কথা শেষ হতেই , রানী তোতলাতে তোতলাতে জিজ্ঞাস করলো    “তুই জয় কে চিনিস কি করে ? জান্নাত কে কি বলেছিস?”  
 
“ নাহ তুই কি আমাকে বাচাল ভাবিস? আমি জান্নত কে বলবো যে ওর ভাইয়ের সাথে তোর ইটিস পিটিস চলছে”  
 
রানী একটু রিলিফ ফিল করে , তবে আবরার কে আবার জিজ্ঞাস করে , “তুই জানলি কি করে?”
 
“ আমার রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে , আর আমি জানবো না, সেদিন তোর বাড়ি থেকে বেরুনোর সময় উনি আমাকে দেখছে”  আবরার বেশ স্বাভাবিক ভাবেই বলে ।
 
কিন্তু এদিকে রানীর হয়ে গেছে , ওকে দেখে মনে হচ্ছে ওর উপরে বাজ পরেছে । আতংকে মুখ নীল হয়ে গেছে ।  
 
“ এক কাজ কর , তুই এখানে বস , আমি খাবার নিয়ে আসি “
 
আবরারের কথা রানীর কানে যায় না ।  ও ভাবছে এ জন্যই জান্নাত বলেছিলো , জয় ওকে খুঁজছে । রানীর হাত পা হিম হয়ে আসে। কি উত্তর দেবে জয় কে , আর ও উত্তর দিলেই কি জয় বিশ্বাস করবে । নিজেকে নিজেক থাপরাতে ইচ্ছে হয় ওর , বেশি স্বাধীন ভাব দেখাতে গিয়ে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরেছে ।
 
*****  


এই আপডেট টি অনেকের কাছেই অতি নাটকিয় মনে হতে পারে , বিশেষ করে ওই মারামারির অংশটা । কিন্তু আমি এই নাটকিয়তা না করে থাকতে পারছিলাম না । তাই রিস্ক নিয়ে দিয়েই দিলাম ।  
সব প্রশ্নের উত্তর নেই,
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।


[+] 2 users Like gungchill's post
Like Reply


Messages In This Thread
কিছু সম্পর্ক - by gungchill - 29-07-2025, 04:17 PM
RE: কিছু সম্পর্ক - by gungchill - 16-10-2025, 04:28 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)