16-10-2025, 04:24 PM
কিছু সম্পর্কঃ ৮ (গ)
আজকাল জয় শিকারির মত ওঁত পেতে থাকে আর রানী শিকারের মত পালিয়ে বেড়ায় । রানীর এমন পালানোর তৎপরতার পেছনে জান্নাতের প্রত্যক্ষ হাত আছে । যদিও ওদের দুজনের সম্পর্ক এখনো স্বাভাবিক হয়নি । বরং সেদিনের ঝগড়ার পর থেকে আরো বেশি অবনতি হয়েছে । দুজনে মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ । তবুও জান্নাত রানীকে বলেছিলো , “ তোকে জয় কেন যেন খুঁজছে, বলেছে তোকে শিক্ষা দিয়ে দেবে , কি করেছিস তুই?” উত্তরে রানী কিছুই বলেনি , তবে জান্নাত রানীর মুখ শুকিয়ে যেতে দেখে , নিজের কাজ হাসিল হয়েছে বলে ধরে নিয়েছিলো । জান্নাতের ইচ্ছা ও কোন একটা উপায় না খুজে পাওয়া পর্যন্ত রানীকে জয়ের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা ।
আর রানীর এমন তৎপর হয়ে যাওয়ায় জয় আরো ফ্রাস্টেটেড হয়ে উঠেছে । রানীকে সুধু ক্যাম্পাসেই দেখে ও, একা কোথাও পাওয়া যায় না। তবে পাব্লিক প্লেসে কোন সিন জয় করতে চায় না । আর ক্যাম্পাসে ওকে অনেকেই এখন চেনে । তাই ক্যাম্পাসেও সিন করা যাবে না । তবে আবরার নামের ছেলেটার উপর অলরেডি এটাক করে ফেলেছে । নিজে হাত লাগায়নি , জয় খোঁজ নিয়ে দেখছে , আবরার এর টাকার সমস্যা আছে , তাই ওর হলে থাকা বন্ধ করে দিয়েছে , রাজনৈতিক পাওয়ার খাটিয়ে । এই প্রথম জয় নিজের রাজনৈতিক পাওয়ার কারো উপর প্রয়োগ করেছে । হলের অন্য ছেলেরা আবরারের উপর এমন অত্যাচার করেছে যে আবরার হল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে । ছেলেটা বিচক্ষণ , বিচার দিতে যায়নি ।
এখন আবরারের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে নিজের খরচ বহন করতে গিয়ে । কোন জায়গায় যে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকবে সেটাও পারছে না । এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে । সেই আশ্রয় কতদিন বলবত থাকবে সেটা আবরার জানে না । কিন্তু আবরার রানীকে এই ব্যাপারে কিছু জানায়নি ।
তবে জয় এটুকু করে শান্ত হয়নি , ভেতরে ভেতরে আগ্নেয়গিরির মত শক্তি সঞ্চয় করছে ওর রাগ । যখন যখন ফেটে বেরুবে তখন কি হবে কে জানে ?
অবশ্য এর উত্তর পেতে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হলো না। নিজের উত্তাপ কিছুটা দেখিয়ে দিয়েছে জয় । তবে উদর পিন্ডি বুধোর ঘারে দিয়ে দেয়া হয়েছে বলা যায় ।
তখন বাজে রাত সাড়ে এগারোটা , রাজীবের ভীষণ মশা লাগছিলো । কিন্তু হাতে প্রচুর কাজ , তাই রাত জেগে কাজ করতে হবে। আজকাল রাজীব ওর অফিসের কাজ ও জান্নাতের কিনে দেয়া ল্যাপ্টপে করে । আগে করতো না , একদিন জান্নাত ই ওকে ধরলো , বলল “ তুই এখনো কেনো ওই অফিসে যাস? তোর না এখন ল্যাপটপ আছে ?” । রাজীব লাজুক হেসে বলেছিলো , ‘ এটা তো আমাদের চ্যেনেলের ল্যাপটপ , এটাতে কি অন্য অফিসের কাজ করা যাবে?” রাজীবের উত্তর শুনে ভীষণ ক্ষেপে গিয়েছিলো জান্নাত । সেই থেকে রাজীব অফিসের কাজ ও বাসায় বসে করে । এতে রাজীবের অনেকটা সময় বেঁচেছে , পড়াশুনা করার বাড়তি একটু সময় পেয়েছে ।
তাই রাজীব দোকানে যায় , মশা মারার ঔষধ কিনতে , আর জয় ও তখন ফিরছিলো , দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে । গলির ঠিক মাঝামাঝি দুজনে মুখোমুখি । রাজীব স্বাভাবিক ভাবেই জয় কে এড়িয়ে যাচ্ছিলো । এই পরিস্থিতিতে জয় ও সাধারনত এড়িয়ে যায় । কিন্তু সেদিন জয় সেটা হতে দেয় নি , রাজীব কে দেখেই জয়ের মুখ নিশপিশ করতে শুরু করে । রানীর উপরের রাগ কিছুটা রাজীবের উপরে ঢেলে দিতে ইচ্ছা হয় । কারন জয়ের মতে রানীর এতো বড় সাহসের পেছনে রাজীবের মদদ আছে । না হলে রানী কোনদিন এই সাহস করতে পারতো না , ভাইয়ের কথা ছাড়া এক পা ও ফেলে না রানী । ( বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জয়ের ধারনা নেই, রানী যে বিদ্রহ করেছে সেটা ও জানে না)
“ ভেবেছিলাম তুই একটা স্বার্থপর , কাপুরুষ এখন দেখছি তোর গুণের শেষ নেই , দিন দিন সেগুলো বিকশিত হচ্ছে “
জয়ের এমন তির্যক মন্তব্যের কোন কারন রাজীব খুজে পায় না। বেশ অবাক হয় , এমনিতে সামনা সামনি হলে তো কথা বলে না। রাজীব নিজেকে শান্ত রাখে , তবে উত্তর দিতে দেরি করে না , “ আমার কাজ আছে , ফালতু আলাপ করে সময় নষ্ট করার মত সময় আমার নেই” রাজীব আবার পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ,
“ কি কাজ করিস সেটা আমি জানি , এরকম কত বাল ফেলবি তুই হা হা হা” জয় হাসে , কিন্তু ওর চেহারায় ক্রোধ স্পষ্ট দেখা যায় ।
এবার আর রাজীব কোন উত্তর দেয় না , আবার পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে , কিন্তু এবার জয় ওর বুকে হাত দিয়ে থামায় । “ কোথায় যাস ? তোর আসল চেহারা দেখে যা , তুই যে খুব বলতি , আমার ছোট বোনের খেয়াল রাখতে রাখতে আমি নিজেকে শেষ করে দিচ্ছি , এই তোর খেয়াল রাখা ? বাড়িতে অপরিচিত ছেলে ঢুকছে , সেই খেয়াল তুই রাখিস? তোর না হয় মান সম্মান নেই , আমাদের তো আছে , ছোট আব্বুর তো আছে” জয় এমন ভাবে কথা গুলো বলে যেন রানীর ও একজন গার্ডিয়ান হিসেবে বলছে । নিজের আসল মোটিভ লুকিয়ে রাখে ।
রাজীব আশেপাশে তাকায় , দেখে কেউ শুনছে কিনা , তারপর চিবিয়ে চিবিয়ে বলে “ এসব কথা বলার এটা যায়গা না জয় , তোর যদি এতো চিন্তা থাকে তুই আব্বুর কাছে গিয়ে বল, আমার বাড়িতে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেটা তোর কাছ থেকে শুনতে হবে না, আমি ভালো করেই জানি কি হচ্ছে না হচ্ছে”
জয়ের মাথায় আগুন ধরে যায় যেন , রাজীব আবরারের ব্যাপারে জানে এই কথা শোনার পর হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে , ভাবে তলে তলে এতোদুর এগিয়ে গেছে , বাড়ির মানুষ ও জেনে গেছে । জয় রাজীব কে ধাক্কা দেয় , হিস হিস করে বলে “ আমি জানতাম তুই একটা স্বার্থপর , কিন্তু তুই যে একটা স্পাইনলেস বাস্টার্ড সেটা আমার জানা ছিলো না , যদি জানতাম…… ছিঃ এক সময় আমি তোকে বন্ধু ভাবতাম সেটা ভাবতেও ঘেন্না হচ্ছে , খালি বাড়িতে বোন ছেলে নিয়ে এসে ফুর্তি করবে তোর তাতে কোন সমস্যা নেই !!!!!! থু” জয় রাস্তায় থুতু ফেলে ,
এবার আর রাজীব নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না , জয়ের ধাক্কা খেয়ে একটু পিছিয়ে পড়েছিলো , সেই যায়গা টুকু বেশ গতিতে পেরিয়ে এসে শরীরের সব শক্তি দিয়ে জয় কে ধাক্কা দেয় , আচমকা ধাক্কায় জয় নিচে পরে যায় , আশেপাশে দুই একজন লোক উকি দিতে শুরু করেছে , সেটা রাজীবের নজরে আসে , তাই নিচু হয়ে রাগে কাঁপতে কাঁপতে নিচু স্বরে বলে , “ তুই যদি আর একটা বাজে কথা রানীর সম্পর্কে বলবি , তাহলে আমি ভুলে যাবো তুই কে , আমি তোকে সাবধান করে দিচ্ছি , আমাকে যা বলার বল, কিন্তু রানীর সম্পর্কে একটা বাজে কথাও আমি শুনবো না , রানী আমার বোন, আমি নিজের হাতে ওকে বড় করেছি , আমি জানি ও কি করতে পারে , আর কি করা ওর পক্ষে সম্ভব না, আর রানী নিজের বাড়িতে কাকে আনবে কাকে আনবে না এটা ও তোর কাছে জবাবদিহি করবে না”
কয়েক মুহূর্তের জন্য জয় হতবাক হয়ে যায় , হতবাক হওয়ার প্রথম কারন রাজীব যে ওকে ধাক্কা দিয়েছে তার প্রচণ্ডতা , দ্বিতীয় কারন রাজীবের রাগ , জয়ের কাছে মনে হচ্ছে রাজীবের চোখ দুটো যেন ইটের ভাটির মত জ্বলছে । রাজীব যে এরকম রাগান্বিত হতে পারে সেটা ও ভুলেই গিয়েছিলো । সেই ছোট বেলার রাজীব কে এক ঝলকের জন্য যেন দেখতে পায় জয় । প্রচণ্ড জেদ আর মারামারিতে সবার আগে থাকতো রাজীব ।
তবে মুহূর্তের মাঝেই জয়ের ঘোর কেটে যায় , আবার প্রচন্ত জেদ এসে ভর করে , রাজীবের শেষ লাইন ওর কানে বাজতে থাকে , আর সেই জেদ থেকে এমন কথা বলে যা হয়তো অন্য সময় বলতে দশবার ভাবতো , রাজীবের ধাক্কা খেয়ে রাস্তায় পরে যাওয়াতে ওর ইগো ও প্রচণ্ড হার্ট হয়েছে ।
“ হা হা হা , বাড়ি , তোর বাড়ি , রানীর বাড়ি” এই কথা বলতে বলতে উঠে দাড়ায় জয় , তারপর চেহারা বিকৃত করে বলে “ এই বাড়ি তোদের কিভাবে হয়েছে সেটা আমি জানি না ভেবেছিস” হা হাহা জয় উচ্চস্বরে হাসতে থাকে ,
এবার রাজীবের পালা অবাক হওয়ার । রাজীব কোনদিন ও ভাবেনি জয় এই ধরনের কথা বলবে। তারপর আবার নিজেকে নিজেই শুধরে নেয় । মনে মনে ভাবে , এতে আশ্চর্য হওয়ার কি আছে , কিছুক্ষন আগে রানীর চরিত্র নিয়ে কথা বলে জয় সব সীমা লঙ্ঘন করে ফেলেছে , রাজীবের আর রুচি হয় না জয়ের সাথে কথা বলার । ঘুরে বাড়ির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়েও পারে না , পেছন থেকে জয় ওকে টেনে ধরে , নিজের দিকে রাজীব কে ঘুরিয়ে নিয়েই ঘুষি বসিয়ে দেয় রাজীবের মুখ লক্ষ্য করে । নিজের ইগোকে শান্ত করার জন্যই জয় এই কাজ করে । রাজীবের মত একটা ছেলে ওকে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে সেটা ও মেনে নিতে পারে না।
চাপা একটা কাতর ধ্বনি করে রাজীব নিজের মুখ ঢেকে বসে পরে , জয়ের সাথে রাজীবের শক্তির তুলনা হয় না । দরদর করে রক্ত বেড়িয়ে আসে রাজীবের নাক থেকে । এদিকে জয় যেন উন্মাদ হয়ে গেছে , বার বার রাজীব কে উঠতে বলতে থাকে , বলে “ ওঠ , তোর মারামারি করার সখ আমি মিটিয়ে দেবো , আয় দেখি তোর কত শক্তি হয়েছে , আমাকে ধাক্কা দিস , কত বড় সাহস, তোরা ভাই বোন মিলে ভেবেছিস কি , তোরা যা ইচ্ছা করবি আর আমরা চুপ করে থাকবো, তোদের রাজত্ব পেয়েছিস হ্যা”
এই ঘটনা দেখে আশেপাশের কিছু লোক এগিয়ে এসে জয় কে থামায় , দুজন লোক রাজীব কে ধরে ওঠায় । কিন্তু জয় কে থামাতে পারে না , ও আস্ফালন করতে থাকে , বলে “ হিজড়া কোথাকার , যা রাস্তায় গিয়ে ছাইয়া ছাইয়া কর “
দুজন লোক রাজীব কে নিয়ে গলির মাথায় ফার্মেসীতে নিয়ে যায় । সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর , অভিজ্ঞ ঔষধ বিক্রেতা , যে রাজীব আর জয় কে ছোট বেলা থেকেই চেনে , সে অবাক হয়ে বলে “ জয় তোকে মারলো!!! ঘটনা কি?” রাজীব কোন উত্তর দেয় না । সেটা দেখে লোকটা দুটো ঔষধ দেয় বলে “ভাগ্য ভালো বেশি কিছু হয়নি , এই ঔষধ নিয়ে যা , ব্যাথা বেশি হলে খেয়ে নিস।”
রাজীব উঠে দাড়াতে গেলে , আবার সেই ফার্মেসীর লোক বলে “ যদি পুলিস কেস করতে চাস তাহলে মেডিকেলে যা হা হা হা”
রাজীব মলিন হাসে , হাসতে গিয়ে ব্যাথায় ককিয়ে ওঠে ।
মেইন গেইট খুলে রাজীব খুব ধিরে ধিরে নিজের ঘরে চলে আসে , যদিও এখন এই সময় কেউই ঘর থেকে বের হবে না । তবুও রিক্স নেয় না। নাকের ফুটোয় তুলা গুজে রাখার কৈফিয়ত দিতে পারবে না যদি কেউ দেখে ফেলে । সেই রাতের কথা আজো কেউ জানে না । না জয় কাউকে বলেছে, না রাজীব ।
****
রাজীব লুকাতে চাইলেও লুকানো যায়নি শেষ পর্যন্ত , জান্নাত দেখে জিজ্ঞাস করেছিলো , “ এই তোর নাক লাল কেনো , কি হয়েছে”। রাজীব প্রথমে কোন উত্তর দিতে পারেনি , অবাক হয়ে সুধু তাকিয়েই ছিলো , জান্নাত যখন আবার আরো একটু ধমকের সুরে জিজ্ঞাস করেছিলো , তখন রাজীব হাসতে হাসতে বলেছিলো , “ ব্যাথা পেয়েছি”
“ এরকম ব্যাথা তুই কেমন করে পেলি , কেউকে তো কিছু বললি ও না” রাজীব , জান্নাতের কণ্ঠে যে উৎকণ্ঠা আর মমতার মিশেল দেখছিলো , মায়ের মৃত্যুর পর আর কারো মাঝে যা দেখেনি । সেই ছোট বেলায় মায়ের মাঝে পেয়েছিলো । বড় আম্মু এর কাছাকাছি হলেও জান্নাতের সাথে কোন ভাবেই পেরে উঠবে না ।
প্রচণ্ড একটা ভালো লাগা এসে ভর করেছিলো রাজীবের উপরে । ওর জন্য এমন করার মানুষ ও যে এই দুনিয়ায় আছে সেটা জানতে পেরে নিজেকে বেশ মূল্যবান মনে হচ্ছিলো । শেষ পর্যন্ত রাজীবকে একটা মিথ্যা বানিয়ে বলতে হয়েছিলো । কিন্তু সেই মিথ্যা বিশ্বাস করাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিলো । সেই একি মিথ্যা অবশ্য রানী আর ওর আব্বুকে খুব সহজে খাইয়ে দেয়া গিয়েছিলো । “সাবধানে থাকিস” এই উপদেশ আব্বুর কাছ থেকে , আর “ সাবধানে থাকতে পারিস না?” এই ধমক রানীর কাছ থেকে শুনতে হয়েছিলো ।
রাজীব অনেক ভেবেছে , জয়ের এমন আচরণ নিয়ে । রাজীবের মতে , জয় বলতেই পারে , রানী কে ও জান্নাতের মতই মনে করে । তাই রানীর এমন আচরণ ওর কাছে দৃষ্টিকটু মনে হতেই পারে । তাই বলে এমন ক্ষেপে যাবে? কিছুতেই কিছু মেলে না । শেষ পর্যন্ত ভাবা বাদ দেয় । এই উপসংহার টনে , যে জয় কে ও চিনতো , সেই জয় আর নেই , এটা নতুন জয় । যে একজন উঠতি রাজনৈতিক নেতা , ক্ষমতার গরমে কি করছে ও নিজেই জানে না ।
রাজীবের মন কিছুটা শান্ত হয় , না হলে শান্তি পাচ্ছিলো না । জয়ের মুখে রানীর চরিত্র নিয়ে বাজে কথা শোনার পর থেকে শান্তিতে ছিলো না , সেই সাথে বাড়ি নিয়ে খোটাও দিয়েছে । ওর বিশ্বাস হচ্ছিলো না এই জয় একদিন ওকে ভাই বলতো । তবে এখন বেশ শান্তি পাচ্ছে । সিদ্ধান্ত নিয়েছে , জয়ের প্রতি আর কোন এক্সপেকটেশন রাখবে না । রাখলে নিজেই দুঃখ পাবে ।
****
আজকাল জয় শিকারির মত ওঁত পেতে থাকে আর রানী শিকারের মত পালিয়ে বেড়ায় । রানীর এমন পালানোর তৎপরতার পেছনে জান্নাতের প্রত্যক্ষ হাত আছে । যদিও ওদের দুজনের সম্পর্ক এখনো স্বাভাবিক হয়নি । বরং সেদিনের ঝগড়ার পর থেকে আরো বেশি অবনতি হয়েছে । দুজনে মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ । তবুও জান্নাত রানীকে বলেছিলো , “ তোকে জয় কেন যেন খুঁজছে, বলেছে তোকে শিক্ষা দিয়ে দেবে , কি করেছিস তুই?” উত্তরে রানী কিছুই বলেনি , তবে জান্নাত রানীর মুখ শুকিয়ে যেতে দেখে , নিজের কাজ হাসিল হয়েছে বলে ধরে নিয়েছিলো । জান্নাতের ইচ্ছা ও কোন একটা উপায় না খুজে পাওয়া পর্যন্ত রানীকে জয়ের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা ।
আর রানীর এমন তৎপর হয়ে যাওয়ায় জয় আরো ফ্রাস্টেটেড হয়ে উঠেছে । রানীকে সুধু ক্যাম্পাসেই দেখে ও, একা কোথাও পাওয়া যায় না। তবে পাব্লিক প্লেসে কোন সিন জয় করতে চায় না । আর ক্যাম্পাসে ওকে অনেকেই এখন চেনে । তাই ক্যাম্পাসেও সিন করা যাবে না । তবে আবরার নামের ছেলেটার উপর অলরেডি এটাক করে ফেলেছে । নিজে হাত লাগায়নি , জয় খোঁজ নিয়ে দেখছে , আবরার এর টাকার সমস্যা আছে , তাই ওর হলে থাকা বন্ধ করে দিয়েছে , রাজনৈতিক পাওয়ার খাটিয়ে । এই প্রথম জয় নিজের রাজনৈতিক পাওয়ার কারো উপর প্রয়োগ করেছে । হলের অন্য ছেলেরা আবরারের উপর এমন অত্যাচার করেছে যে আবরার হল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে । ছেলেটা বিচক্ষণ , বিচার দিতে যায়নি ।
এখন আবরারের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে নিজের খরচ বহন করতে গিয়ে । কোন জায়গায় যে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকবে সেটাও পারছে না । এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে । সেই আশ্রয় কতদিন বলবত থাকবে সেটা আবরার জানে না । কিন্তু আবরার রানীকে এই ব্যাপারে কিছু জানায়নি ।
তবে জয় এটুকু করে শান্ত হয়নি , ভেতরে ভেতরে আগ্নেয়গিরির মত শক্তি সঞ্চয় করছে ওর রাগ । যখন যখন ফেটে বেরুবে তখন কি হবে কে জানে ?
অবশ্য এর উত্তর পেতে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হলো না। নিজের উত্তাপ কিছুটা দেখিয়ে দিয়েছে জয় । তবে উদর পিন্ডি বুধোর ঘারে দিয়ে দেয়া হয়েছে বলা যায় ।
তখন বাজে রাত সাড়ে এগারোটা , রাজীবের ভীষণ মশা লাগছিলো । কিন্তু হাতে প্রচুর কাজ , তাই রাত জেগে কাজ করতে হবে। আজকাল রাজীব ওর অফিসের কাজ ও জান্নাতের কিনে দেয়া ল্যাপ্টপে করে । আগে করতো না , একদিন জান্নাত ই ওকে ধরলো , বলল “ তুই এখনো কেনো ওই অফিসে যাস? তোর না এখন ল্যাপটপ আছে ?” । রাজীব লাজুক হেসে বলেছিলো , ‘ এটা তো আমাদের চ্যেনেলের ল্যাপটপ , এটাতে কি অন্য অফিসের কাজ করা যাবে?” রাজীবের উত্তর শুনে ভীষণ ক্ষেপে গিয়েছিলো জান্নাত । সেই থেকে রাজীব অফিসের কাজ ও বাসায় বসে করে । এতে রাজীবের অনেকটা সময় বেঁচেছে , পড়াশুনা করার বাড়তি একটু সময় পেয়েছে ।
তাই রাজীব দোকানে যায় , মশা মারার ঔষধ কিনতে , আর জয় ও তখন ফিরছিলো , দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে । গলির ঠিক মাঝামাঝি দুজনে মুখোমুখি । রাজীব স্বাভাবিক ভাবেই জয় কে এড়িয়ে যাচ্ছিলো । এই পরিস্থিতিতে জয় ও সাধারনত এড়িয়ে যায় । কিন্তু সেদিন জয় সেটা হতে দেয় নি , রাজীব কে দেখেই জয়ের মুখ নিশপিশ করতে শুরু করে । রানীর উপরের রাগ কিছুটা রাজীবের উপরে ঢেলে দিতে ইচ্ছা হয় । কারন জয়ের মতে রানীর এতো বড় সাহসের পেছনে রাজীবের মদদ আছে । না হলে রানী কোনদিন এই সাহস করতে পারতো না , ভাইয়ের কথা ছাড়া এক পা ও ফেলে না রানী । ( বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জয়ের ধারনা নেই, রানী যে বিদ্রহ করেছে সেটা ও জানে না)
“ ভেবেছিলাম তুই একটা স্বার্থপর , কাপুরুষ এখন দেখছি তোর গুণের শেষ নেই , দিন দিন সেগুলো বিকশিত হচ্ছে “
জয়ের এমন তির্যক মন্তব্যের কোন কারন রাজীব খুজে পায় না। বেশ অবাক হয় , এমনিতে সামনা সামনি হলে তো কথা বলে না। রাজীব নিজেকে শান্ত রাখে , তবে উত্তর দিতে দেরি করে না , “ আমার কাজ আছে , ফালতু আলাপ করে সময় নষ্ট করার মত সময় আমার নেই” রাজীব আবার পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ,
“ কি কাজ করিস সেটা আমি জানি , এরকম কত বাল ফেলবি তুই হা হা হা” জয় হাসে , কিন্তু ওর চেহারায় ক্রোধ স্পষ্ট দেখা যায় ।
এবার আর রাজীব কোন উত্তর দেয় না , আবার পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে , কিন্তু এবার জয় ওর বুকে হাত দিয়ে থামায় । “ কোথায় যাস ? তোর আসল চেহারা দেখে যা , তুই যে খুব বলতি , আমার ছোট বোনের খেয়াল রাখতে রাখতে আমি নিজেকে শেষ করে দিচ্ছি , এই তোর খেয়াল রাখা ? বাড়িতে অপরিচিত ছেলে ঢুকছে , সেই খেয়াল তুই রাখিস? তোর না হয় মান সম্মান নেই , আমাদের তো আছে , ছোট আব্বুর তো আছে” জয় এমন ভাবে কথা গুলো বলে যেন রানীর ও একজন গার্ডিয়ান হিসেবে বলছে । নিজের আসল মোটিভ লুকিয়ে রাখে ।
রাজীব আশেপাশে তাকায় , দেখে কেউ শুনছে কিনা , তারপর চিবিয়ে চিবিয়ে বলে “ এসব কথা বলার এটা যায়গা না জয় , তোর যদি এতো চিন্তা থাকে তুই আব্বুর কাছে গিয়ে বল, আমার বাড়িতে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেটা তোর কাছ থেকে শুনতে হবে না, আমি ভালো করেই জানি কি হচ্ছে না হচ্ছে”
জয়ের মাথায় আগুন ধরে যায় যেন , রাজীব আবরারের ব্যাপারে জানে এই কথা শোনার পর হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে , ভাবে তলে তলে এতোদুর এগিয়ে গেছে , বাড়ির মানুষ ও জেনে গেছে । জয় রাজীব কে ধাক্কা দেয় , হিস হিস করে বলে “ আমি জানতাম তুই একটা স্বার্থপর , কিন্তু তুই যে একটা স্পাইনলেস বাস্টার্ড সেটা আমার জানা ছিলো না , যদি জানতাম…… ছিঃ এক সময় আমি তোকে বন্ধু ভাবতাম সেটা ভাবতেও ঘেন্না হচ্ছে , খালি বাড়িতে বোন ছেলে নিয়ে এসে ফুর্তি করবে তোর তাতে কোন সমস্যা নেই !!!!!! থু” জয় রাস্তায় থুতু ফেলে ,
এবার আর রাজীব নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না , জয়ের ধাক্কা খেয়ে একটু পিছিয়ে পড়েছিলো , সেই যায়গা টুকু বেশ গতিতে পেরিয়ে এসে শরীরের সব শক্তি দিয়ে জয় কে ধাক্কা দেয় , আচমকা ধাক্কায় জয় নিচে পরে যায় , আশেপাশে দুই একজন লোক উকি দিতে শুরু করেছে , সেটা রাজীবের নজরে আসে , তাই নিচু হয়ে রাগে কাঁপতে কাঁপতে নিচু স্বরে বলে , “ তুই যদি আর একটা বাজে কথা রানীর সম্পর্কে বলবি , তাহলে আমি ভুলে যাবো তুই কে , আমি তোকে সাবধান করে দিচ্ছি , আমাকে যা বলার বল, কিন্তু রানীর সম্পর্কে একটা বাজে কথাও আমি শুনবো না , রানী আমার বোন, আমি নিজের হাতে ওকে বড় করেছি , আমি জানি ও কি করতে পারে , আর কি করা ওর পক্ষে সম্ভব না, আর রানী নিজের বাড়িতে কাকে আনবে কাকে আনবে না এটা ও তোর কাছে জবাবদিহি করবে না”
কয়েক মুহূর্তের জন্য জয় হতবাক হয়ে যায় , হতবাক হওয়ার প্রথম কারন রাজীব যে ওকে ধাক্কা দিয়েছে তার প্রচণ্ডতা , দ্বিতীয় কারন রাজীবের রাগ , জয়ের কাছে মনে হচ্ছে রাজীবের চোখ দুটো যেন ইটের ভাটির মত জ্বলছে । রাজীব যে এরকম রাগান্বিত হতে পারে সেটা ও ভুলেই গিয়েছিলো । সেই ছোট বেলার রাজীব কে এক ঝলকের জন্য যেন দেখতে পায় জয় । প্রচণ্ড জেদ আর মারামারিতে সবার আগে থাকতো রাজীব ।
তবে মুহূর্তের মাঝেই জয়ের ঘোর কেটে যায় , আবার প্রচন্ত জেদ এসে ভর করে , রাজীবের শেষ লাইন ওর কানে বাজতে থাকে , আর সেই জেদ থেকে এমন কথা বলে যা হয়তো অন্য সময় বলতে দশবার ভাবতো , রাজীবের ধাক্কা খেয়ে রাস্তায় পরে যাওয়াতে ওর ইগো ও প্রচণ্ড হার্ট হয়েছে ।
“ হা হা হা , বাড়ি , তোর বাড়ি , রানীর বাড়ি” এই কথা বলতে বলতে উঠে দাড়ায় জয় , তারপর চেহারা বিকৃত করে বলে “ এই বাড়ি তোদের কিভাবে হয়েছে সেটা আমি জানি না ভেবেছিস” হা হাহা জয় উচ্চস্বরে হাসতে থাকে ,
এবার রাজীবের পালা অবাক হওয়ার । রাজীব কোনদিন ও ভাবেনি জয় এই ধরনের কথা বলবে। তারপর আবার নিজেকে নিজেই শুধরে নেয় । মনে মনে ভাবে , এতে আশ্চর্য হওয়ার কি আছে , কিছুক্ষন আগে রানীর চরিত্র নিয়ে কথা বলে জয় সব সীমা লঙ্ঘন করে ফেলেছে , রাজীবের আর রুচি হয় না জয়ের সাথে কথা বলার । ঘুরে বাড়ির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়েও পারে না , পেছন থেকে জয় ওকে টেনে ধরে , নিজের দিকে রাজীব কে ঘুরিয়ে নিয়েই ঘুষি বসিয়ে দেয় রাজীবের মুখ লক্ষ্য করে । নিজের ইগোকে শান্ত করার জন্যই জয় এই কাজ করে । রাজীবের মত একটা ছেলে ওকে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে সেটা ও মেনে নিতে পারে না।
চাপা একটা কাতর ধ্বনি করে রাজীব নিজের মুখ ঢেকে বসে পরে , জয়ের সাথে রাজীবের শক্তির তুলনা হয় না । দরদর করে রক্ত বেড়িয়ে আসে রাজীবের নাক থেকে । এদিকে জয় যেন উন্মাদ হয়ে গেছে , বার বার রাজীব কে উঠতে বলতে থাকে , বলে “ ওঠ , তোর মারামারি করার সখ আমি মিটিয়ে দেবো , আয় দেখি তোর কত শক্তি হয়েছে , আমাকে ধাক্কা দিস , কত বড় সাহস, তোরা ভাই বোন মিলে ভেবেছিস কি , তোরা যা ইচ্ছা করবি আর আমরা চুপ করে থাকবো, তোদের রাজত্ব পেয়েছিস হ্যা”
এই ঘটনা দেখে আশেপাশের কিছু লোক এগিয়ে এসে জয় কে থামায় , দুজন লোক রাজীব কে ধরে ওঠায় । কিন্তু জয় কে থামাতে পারে না , ও আস্ফালন করতে থাকে , বলে “ হিজড়া কোথাকার , যা রাস্তায় গিয়ে ছাইয়া ছাইয়া কর “
দুজন লোক রাজীব কে নিয়ে গলির মাথায় ফার্মেসীতে নিয়ে যায় । সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর , অভিজ্ঞ ঔষধ বিক্রেতা , যে রাজীব আর জয় কে ছোট বেলা থেকেই চেনে , সে অবাক হয়ে বলে “ জয় তোকে মারলো!!! ঘটনা কি?” রাজীব কোন উত্তর দেয় না । সেটা দেখে লোকটা দুটো ঔষধ দেয় বলে “ভাগ্য ভালো বেশি কিছু হয়নি , এই ঔষধ নিয়ে যা , ব্যাথা বেশি হলে খেয়ে নিস।”
রাজীব উঠে দাড়াতে গেলে , আবার সেই ফার্মেসীর লোক বলে “ যদি পুলিস কেস করতে চাস তাহলে মেডিকেলে যা হা হা হা”
রাজীব মলিন হাসে , হাসতে গিয়ে ব্যাথায় ককিয়ে ওঠে ।
মেইন গেইট খুলে রাজীব খুব ধিরে ধিরে নিজের ঘরে চলে আসে , যদিও এখন এই সময় কেউই ঘর থেকে বের হবে না । তবুও রিক্স নেয় না। নাকের ফুটোয় তুলা গুজে রাখার কৈফিয়ত দিতে পারবে না যদি কেউ দেখে ফেলে । সেই রাতের কথা আজো কেউ জানে না । না জয় কাউকে বলেছে, না রাজীব ।
****
রাজীব লুকাতে চাইলেও লুকানো যায়নি শেষ পর্যন্ত , জান্নাত দেখে জিজ্ঞাস করেছিলো , “ এই তোর নাক লাল কেনো , কি হয়েছে”। রাজীব প্রথমে কোন উত্তর দিতে পারেনি , অবাক হয়ে সুধু তাকিয়েই ছিলো , জান্নাত যখন আবার আরো একটু ধমকের সুরে জিজ্ঞাস করেছিলো , তখন রাজীব হাসতে হাসতে বলেছিলো , “ ব্যাথা পেয়েছি”
“ এরকম ব্যাথা তুই কেমন করে পেলি , কেউকে তো কিছু বললি ও না” রাজীব , জান্নাতের কণ্ঠে যে উৎকণ্ঠা আর মমতার মিশেল দেখছিলো , মায়ের মৃত্যুর পর আর কারো মাঝে যা দেখেনি । সেই ছোট বেলায় মায়ের মাঝে পেয়েছিলো । বড় আম্মু এর কাছাকাছি হলেও জান্নাতের সাথে কোন ভাবেই পেরে উঠবে না ।
প্রচণ্ড একটা ভালো লাগা এসে ভর করেছিলো রাজীবের উপরে । ওর জন্য এমন করার মানুষ ও যে এই দুনিয়ায় আছে সেটা জানতে পেরে নিজেকে বেশ মূল্যবান মনে হচ্ছিলো । শেষ পর্যন্ত রাজীবকে একটা মিথ্যা বানিয়ে বলতে হয়েছিলো । কিন্তু সেই মিথ্যা বিশ্বাস করাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিলো । সেই একি মিথ্যা অবশ্য রানী আর ওর আব্বুকে খুব সহজে খাইয়ে দেয়া গিয়েছিলো । “সাবধানে থাকিস” এই উপদেশ আব্বুর কাছ থেকে , আর “ সাবধানে থাকতে পারিস না?” এই ধমক রানীর কাছ থেকে শুনতে হয়েছিলো ।
রাজীব অনেক ভেবেছে , জয়ের এমন আচরণ নিয়ে । রাজীবের মতে , জয় বলতেই পারে , রানী কে ও জান্নাতের মতই মনে করে । তাই রানীর এমন আচরণ ওর কাছে দৃষ্টিকটু মনে হতেই পারে । তাই বলে এমন ক্ষেপে যাবে? কিছুতেই কিছু মেলে না । শেষ পর্যন্ত ভাবা বাদ দেয় । এই উপসংহার টনে , যে জয় কে ও চিনতো , সেই জয় আর নেই , এটা নতুন জয় । যে একজন উঠতি রাজনৈতিক নেতা , ক্ষমতার গরমে কি করছে ও নিজেই জানে না ।
রাজীবের মন কিছুটা শান্ত হয় , না হলে শান্তি পাচ্ছিলো না । জয়ের মুখে রানীর চরিত্র নিয়ে বাজে কথা শোনার পর থেকে শান্তিতে ছিলো না , সেই সাথে বাড়ি নিয়ে খোটাও দিয়েছে । ওর বিশ্বাস হচ্ছিলো না এই জয় একদিন ওকে ভাই বলতো । তবে এখন বেশ শান্তি পাচ্ছে । সিদ্ধান্ত নিয়েছে , জয়ের প্রতি আর কোন এক্সপেকটেশন রাখবে না । রাখলে নিজেই দুঃখ পাবে ।
****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)