16-10-2025, 02:25 PM
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প
সকালে লেখার ঘুম ভাঙে পাখির কোলাহলে। গদাধরের বাড়িটা অনেকটা জায়গা নিয়ে। জানালার পাশে নানা গাছ গাছালিতে ভর্তি। ভোর ভোর সেখানে কয়েকটা শালিক পাখি চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছে। তাদের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় লেখার। কাল বাইক থেকে পড়ে যাওয়ার পর দুটো লোক ওকে টেনে ধানক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায়। লেখা চেঁচানোর চেষ্টা করলে মুখে একটা কাপড় চাপা দিয়ে রাখে ওরা..... তারপর আর কিছু মনে নেই। এখন গায়ে হাত পায়ে মারাত্বক ব্যাথা অনুভব করছে। চোখ খুলে কোথায় আছে সেটা বোঝার চেষ্টা করে। একটা সাদা চুনকাম করা দেওয়ালের ঘর। বেশ পুরোনো হলেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। উপরে ছাদে জায়গায় জায়গায় জলের দাগ ধরে গেছে..... মাথার কাছে খোলা জানালা, লোহার গরাদ দেওয়া, এর বাইরেই শালিকগুলো চেঁচামেচি করছে।
ঘরে একটা কাঠের আলমারী আর কাঠের চেয়ার টেবিল ছাড়া আর কিছুই নেই, টেবিলে বেশ কিছু বই রাখা আছে.... এছাড়া একটা চার্জার লাইট আর কলমদানী। একটা কাঠের তক্তপোষে শুয়ে আছে লেখা। ও মাথা তুলতেই হতবাক হয়ে যায়..... এতোক্ষন খেয়াল করে নি যে ওর পরনে একটা সাদা পাঞ্জাবি। তবে তার নীচে শায়া ব্লাউজ যথাস্থানে আছে। তার মানে যে শাড়ী খুলেছে সে আর সাহস দেখায় নি..... লোকটা কে? নিশ্চই ইন্সপেকটর সাহেব হবেন, একটু লজ্জা লাগে লেখার.... শাড়ী খোলার সময় নিশ্চই ওর শরীরের দিকে চোখ গেছে ওনার..... ইসসস....এরপর ওনার সাথে কথা বললেই কেমন অপ্রস্তুত লাগবে নিজেকে।
হাতে কয়েক জায়গায় ছড়ে যাওয়ার দাগ, এগুলো কাল পড়ে গিয়ে হয়েছে। উনি যত্ন করে লাল ওষুধ লাগিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু ব্যাথা করছে খুব, পায়েও লেগেছে বোধহয়, উনি আর শাড়ী তুলে দেখাত চেষ্টা করেননি এটাই যা বাঁচোয়া।
লেখা উঠে বসে। পা টা বাড়াতেই ব্যাথা টের পায়, কাপড়ের আড়ালে কাটা ছড়া আছে। নাহলে এতো ব্যাথা হতো না। এখন খুব বাথরুম পেয়েছে, ও অবশ্য জানে না বাথরুম কোথায়। কি করবে ভেবে পায় না। গদাফহর কোথায় সেটাও জানে না ও। নিশ্চই পাশের ঘরে ঘুমাচ্ছেন, কাল যা ধকল গেছে.... সবই হয়েছে ওর কারনে। ভাবতেই খারাপ লাগছে লেখার। এখন আবার বাথরুম যাওয়ার জন্য এই ভোরে ওনাকে ডেকে অস্থির করার কোন মানে হয় নাকি? লেখা ধীরে ধীরে ব্যাথা পা নিয়েই এগোয়.... ভেজানো দরজা ঠেলে ও একটা বড় ঘরে আসে, এটা বোধহয় বসার ঘর, এখানে একটা খাবার টেবিল, চারটে চেয়ার পাতা, একপাশে দেওয়ালে একটা টিভী, এছাড়া একটা সোফা আর ছোট টেবিলও আছে। এই ঘরের সামনের দিকে বারান্দা আর পিছনে বাথিরুমের দিকে গেছে মনে হচ্ছে, ঘরের অন্যপাশে একটা ঘর আছে সেটার দরজা বন্ধ ভিতর থেকে৷ লেখা বাথরুমের দিকে এগোয়, রান্না ঘর ছাড়িয়েই বাথরুম আর পায়খানা একসাথে, লেখা বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। মাথা গলিয়ে পাঞ্জাবীটা খুলে ফেলে, তারপর ব্লাউজ আর শায়া ছেড়ে নগ্ন হয়, হাঁটুত বশ ভালো ছড়ে গেছে, তার দাগ শায়াতে পাওয়া যাচ্ছে। লেখা প্রাত:কর্ম সেরে গায়ে জল ঢালে, ঠান্ডা জল গায়ে দিতেই কেঁপে ওঠে ও। তাও বেশ করে জল ঢেলে নিজেকে পরিষ্কার করে, তারপর শায়া আর ব্লাউজটা ধুয়ে সেগুলো দিয়েই গা মুছে পাশে রাখে আর পাঞ্জাবীটা পড়ে নেয় আবার। এবার আর ভিতরে কিছু নেই, তবে গদাধিরের পাঞ্জাবী প্রায় ম্যাক্সির মত ওর হাঁটুর অনেক নীচে পৌছে গেছে।
বাথরুমের দরজা বন্ধ করে ও বসার ঘরে আসতেই দেখে গদাধর আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বেরোচ্ছে ঘর থেকে। লেখা লজ্জায় মাথা নীচু করে দেয়। গদাধর আর পাঞ্জাবীর প্রসঙ্গে যায় না, একটু হেসে বলে, " শরীর কেমন এখন..... কাল ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করে দেয় ওরা আপনাকে..... "
লেখা মাথা নাড়ে, " ভালো..... "
গদাধর ওর চেঁচড়ে হাঁটা দেখে বুঝতে পারে কাল পায়েও লেগেছে। ও সহানুভুতির সুরে বলে, " ইশ পাটাতেও লেগেছে তাই না.....আমি একটু ওষুধ দিচ্ছি আপনি তুমি লাগিয়ে নাও। "
এবার লেখা হাসে, " সে দেখা যাবে.... আপনার রান্নাঘরে একটু ঢুকব? একটু চা বানাই.... অনেক ধকল গেছে আপনার। "
" আরে না না..... এ রোজকার রুটিন....প্রায় রাতই এমন যায় আমাদের, তুমি বসো আমি চা করে আনি। " গিদাধর ওকে নিরস্ত করতে চায়।
" না.... আপনি বসুন, আমার এমন কিছু লাগেনি যে খাটে পা তুলে বসে থাকতে হবে..... গ্রামের মেয়েদের এমন অনেক ব্যাথা নিয়েই সারাদিন কাজ করতে হয়..... সামান্য চা করা কোন ব্যাপার না। " লেখা রান্না ঘিরে ঢুকে যায়। গদাধর আর কিছু না বলে মোবাইলটা খুলে সোফায় গা এলিয়ে দেয়।
সাত আট মিনিট বাদে লেখা দু কাপ চা একটা প্লেটে সাজিয়ে গদাধরের সামনে রাখে। গদাধর ওকে সামনের সোফায় বসতে বলে। লেখা একটু জড়সড়ো হয়ে সামনে বসে, গিদাধর এক নজর ওর মুখের দিকে তাকায়, সদ্য ঘুম ভেঙে ওঠা লেখার মুখে এক অদ্ভুত সারল্যে ভরা। কাল রাতে ওকে দেখে উত্তেজিত হয়ে যা ঘটিয়েছে সেটা ভেবে লজ্জা লাগে গদাধরের, একটা বিস্কুট তুলে তাতে কামড় দিয়ে ও বলে, " এখন কদিন এখানেই থাকো তুমি, ভয় নেই কোন......তবে বাইরে একেবারে বেরোবে না, গ্রামের লোকের কৌতুহলের শেষ নেই..... তোমাকে এখানে দেখলে ওনেক কথা শুরু হয়ে যাবে। "
লেখা বাধ্য মেয়ের মত মাথা নাড়ে। গদাধর আবার বলে, " আর আমার খোঁজে কেউ এলেও দরজা খুলবে না..... আমি অবশ্য বাইরের গেটে তালা দিয়ে যাবো। "
" তার মানে আমাকে এখানে গৃহবন্দী হয়ে থাকতে হবে" লেখা বলে।
" হুঁ....অন্তত যতদিন কেসের সুরাহা না হচ্ছে..... সেটা তোমার সুরক্ষার কারণেই। " গদাধর একটু গম্ভীর হয়।
" না না আমি সেটা বলি নি..... আমি জানি আপনি আমার কথা ভেবেই এইসব করছেন....এমনি বলছিলাম।" লেখা অপ্রস্তুত হয়।
গদাধর কিছু না বলে ভিতরে চলে যায়। আলমারী খুলে হাতে করে দুটো বেনারসী শাড়ি এনে লেখার সামনে রেখে বলে, "আমার ঘরে মেয়েদের কিছু নেই, আজ ফেরার সময় নিয়ে আসবো..... আপাতত আমার মায়ের এই দুটো শাড়ী দিয়ে কাজ চালাতে পারো। "
লেখা হেসে ফেলে, " এসব শাড়ী লোকে বিয়েতে পড়ে.... আপনি এগুলো রাখুন, আমি এতেই কাজ চালিয়ে নেবো। "
গদাধর বোকার মত মুখ ক্ল্রে আবার শাড়ীগুলো তুলে নেয়।
থানায় ঢুকতেই গদাধর দেখে একটা ত্রিশ বত্রিশ বছরের নেশাখোর ধরনের দেখতে ছেলে সেখানে বেঞ্চে বসে আছে। গায়ে ধরা কাছা। ইশারায় আশারুল জানায় যে এর নাম পরেশ, নরেনের ছেলে আর লেখার বর। ভালো করে দেখে গদাধর, প্রায় কালোর দিকে গায়ের রঙ, মাথায় ঝাঁকড়া আর উস্কো খুস্কো চুল, গালে প্রায় মাসখানেকের না কাটা দাঁড়ি...... গাল এই বয়সেই তুবড়ে গেছে, দীর্ঘশ্বাস পড়ে গদাধরের..... এই মানুষের স্ত্রী যে লেখা সেটা বলে দিলেও কেউ বিশ্বাস করবে না। একেবারে দিন আর রাত..... কোথাও কোন সামঞ্জস্য নেই।
গদাধর ওর সামনে দাঁড়াতেই পরেশ উঁঠে দাঁড়ায় হাতজোড় করে, " নমস্কার স্যার.....বাবা কিভাবে মরলো কিছুই জানি না আমি....একদিন পর খবর পেয়ে এসে বডি নিয়ে যাই স্যার.....এর বেশী কিছুই জানি না স্যার আমি। "
" সেদিন তুই কোথায় ছিলি? "
" আমি টাউনে কাজে ছিলাম স্যার..... রাতে বাড়ি ছিলাম।"
" হু....তুই যে সেদিন সেখানেই ছিলি তার কোন প্রমাণ আছে? "
" আছে স্যার.... আমার ঘরে নবীন আর জগা থাকে.... ওরা জানে। "
" এরা কারা...."
পরেশ এবার চুপ করে যায়। একটু থেমে বলে, " আমার ইয়ার বন্ধু স্যার.... একসাথে থাকি। "
" ইয়ার বন্ধু না ছাই......সব কটা গাঁজাখোর স্যার, শহরে ইল্লিগাল কাজ করে টাকা কামায় আর মদ গাজা খেয়ে কাটায়..... এক পয়সা বাড়িতে পাঠায় না কেউ.....এদের নামে থানায় কেসও আছে। " আশারুল বলে ওঠে।
পরেশ গদাধরের পা জড়িয়ে ধরে, " আমায় বাচান স্যার.... আমি বাবাকে মারি নি, বাবার সাথে জমি জমা বেচা নিয়ে আমার কথা কাটাকাটি হতো বটে তবে তার জন্য ওকে মারার কথা কখনো মাথাতেও আসে নি স্যার।"
" পা ছাড়...... তুই নিজে না মেরে কাউকে পাঠিয়েছিলি তাহলে.... "
" মা কসম স্যার...... আমি এসবের কিছুই জানি না। " পরেশ হাউঁমাউ করে কেঁদে ওঠে।
গদাধর নিজের চেম্বারে গিয়ে বসে। আশারুল পিছনে পিছনে ঢোকে....." স্যার, একে গারদে ঢুকিয়ে দেবো নাকি? দুই ঘা দিলেই সব উগরে দেবে।"
গদাধর একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে বলে, " ছেড়ে দে ওকে..... আর বল দরকারে ডেকে পাঠাবো। "
আশারুল হতাশ হয়ে সেলাম ঠুকে বেরিয়ে যায়। ও ভেবেছিলো গারোদে বেশ করে ধোলাই মলাই করা হবে... স্যার সেই আশায় জল ঢেলে দিলো।
গদাধর সোজা হয়ে বসে। এবার বাকি থাকলো শুধু একজন আর সে নুটু.... এই ব্যাটাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আর কেউ বাকি থাকবে না, লেখা নুটু কোথায় আছে সেটা জানলেও বলবে না..... সে না বলুক, গিদাধরের সোর্স কম নেই, আজকের মধ্যেই নুটুর পাতা লাগাতে হবে। ও ফোন তুলে ডায়াল করে একজনকে।
রমা কেমন শান্ত হয়ে গেছে। এই জ্বর শুধু ওর শরীর না, সাথে সাথে অস্থির মনকেও শান্ত করে দিয়েছে। যে রাগ, অভিমান নিয়ে এতোদিন নুটুকে ও সারাক্ষণ জ্বালিয়ে এসেছে সেটা আজ আর নেই। কাল রাতে নুটুর সেবা, ওর মন থেকে সব কিছু মুছে দিয়েছে। মেয়েদের মন বড় অস্থির। সে কখনো বিশাল কিছু চায় না.....চায় একটু ভালোবাসা, যত্ন, আর মনোযোগ...... সেটুকুই অনেক কষ্টকে ভুলিয়ে রাখতে পারে। হারাধন শরীরের সাথে সাথে রমার মন থেকেও সরে গেছিলো। যেনো রমা একটা যন্ত্র। ওর কোন চাওয়া পাওয়া নেই..... ভালোবেসে দুটো কথাও বলা যায় না, একদিন ওর শরীর খারাপ হলে ওকে ভালোবেসে যত্ন করা যায় না, একবেলা নিজের হাতে করে খাইয়ে দেওয়া যায় না?...ও অসুস্থ হলে নিজের মনে কিছু প্রতিক্রিয়া হয় না? ...... হারাধনের সেটা হয় না.... শারীরিক অতৃপ্ততার সাথে ক্রমাগত ওর প্রতি হারাধনের এই নিস্পৃহতা রমাকে ভাবিতে বাধ্য করে যে ওর প্রতি কারো সামান্য সহানুভুতিও নেই। ও একটা মেশিন..... শুধু কাজ আর কাজ করার জন্যই জন্ম ওর।
কাল রাতে নুটুর যত্ন আর উদবেগ দেখে ও অবাক হয়ে যায়। ওর বাবা মাও সামান্য জ্বরে এতো উদবেগ দেখায় নি বোধহয়। এতো ভালো মন যার আছে তাকে সামান্য কারণে অবহেলা আর অপমানে এতোদিন দূরে সরিয়ে রেখেছিলো। কে জানে ওর হয়তো কোন প্রেমিকা আছে...... তার কাছেই সঁব সঁপে দিয়ে রেখেছে বলেই রমার প্রতি কোন আবেগ দেখায় না। এমন মানুষ কজন পায়? যে হাতের সামনে সুযোগ পেয়েও কোথায় কতদূরে থাকা প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা করে থাকে? বেচারা..... আজ থেকে আর রমা নিজেও কষ্ট পাবে না আর নুটুকেও কষ্ট দেবে না।
নুটু সকালে ওর ছেলেকে খাইয়ে দাইয়ে স্নান করিয়ে কলেজে দিতে গেছে। এসব কাজ ওকে বলতে হয় না। ও রমাকে বিছানা থেকে উঠতেই দেয় নি। শুধু বাথরুমে যাওয়ার জন্য যেটুকু উঠছিলো, তাতেই ওর মাথা ঘুরিয়ে ওঠে.... একরাতের জ্বরে ওর শরীর দুর্বল হয়ে গেছে। এখোনো গা সামান্য গরম। নুটু সকালে দোকান থেকে রুটি তরকারী এনে খাইয়ে ওষুধ খাইয়ে গেছে। রমা বারণ করলেও শোনে নি। হারাধন বোধহয় আজকেও আসবে না। কাল ভোরে ফিরতে পারে।
এর মধ্যেই নুটু ফিরে আসে। ছেলে কাছেই একটা নার্সারী কলেজে পড়ে। দু তিন মিনিটের রাস্তা। বআড়ি ফিরেই নুটু ওর কাছে এসে বসে। রমা বুছানায় আধশোয়া হয়ে ভাবছিলো। ওকে দেখে বিছানায় বসতে বলে। নুটু এখন অনেক সহজ। এক রাতের ঘটনা ওকে রমার অনেক কাছে এনে দিয়েছে। আগে রমাকে দেখকেই গুটিয়ে যেতো ও। আজ আর ওর ব্যাবগ্লহারে কোনো জড়তা নেই। রমার দিকে আগে তাকাতো না, আজ ওর কপালে হাত রেখে বলে, " এখনো গা গরম আছে...... একটু বাদে স্নান করে নেবে, তারপর ভাত খেয়ে ভালো করে ঘুমাবে। "
ওর শাশনের ভঙ্গীতে কথায় রমা হেসে ফেলে, " কিরে, নিজের বৌকেও এভাবেই শাশনে আর যত্নে রাখবি তো? "
নুটু লজ্জা পায়। লেখার কথা মনে পড়ে যায় ওর। তমা ছাড়া এর একজনকেই তো যত্ন করতে ইচ্ছা করে। সে কোথায় আছে এখন কে জানে, সেই ঘটনার পর লেখা আদৌ সেখানে আছে না নরেন ওকে তাড়িয়ে দিয়েছে সেটাও জানা নেই।
" কিরে বল, নিকের বৌকে এভাবেই যত্নে রাখবি তো? রমা আবার বলে, ওর চোখের কোনে হাসি।
" কি দরকার বিয়ের? এভাবেই সারা জীবন কেটে গেলেই বা খারাপ কি?..... আর আমার মত ছেলেকে বিয়ে করতে কারো বয়েই গেছে। "
" কে বলেছে?.....সব মেয়ে সমান না রে..... কেউ কেউ একটু ভালোবাসা আর যত্ন পেলেই আর কিছু চায় না....।"
আবার লেখার কথা মনে পড়ে যায় নুটুর। সত্যি, লেখা তো ওর কাছে এটাই চাইতো, ওর মত একটা ভিখারীকে মানুষ বানিয়ে দিয়েছে ও, স্বপ্ন দেখতো একদিন নুটুকে নিয়ে ঘর বাঁধবে ও, বিয়ে তো শুধু লোক দেখানো, আসলে সেখান থেকে কিছুই পায় নি লেখা। "
" যাও..... এসব বাদ দিয়ে এবার স্নান করে নাও তো, বেলা বেড়ে গেছে....। " নুটু বলে।
শরীর খুব দুর্বল হয়ে গেছে রমার। ও বিছানা থেকে উঠে স্নান করার জন্য বের হয়। রমাদের বাথরুম বাইরে। টিনের দরজা লাগানো বাথরুমের ছাদ খোলা, চারিদিকে দেওয়াল দিয়ে ঘেরা। রমা বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। কাপড়, শায়া, ব্লাউজ ছড়ে ছেড়ে নিজের নগ্ন শরীরে জমানো ঠান্দা জল ঢালতে থাকে, জ্বর ছাড়ার পর গা ঘেমে সারা শরীরে অস্বস্তি হচ্ছে। ঠান্ডা জলের সাথে নিজেকে পরীষ্কার করে কিছুটা তৃপ্তি লাগে, যদিও জল গায়ে ঢালতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে......পরিষ্কার শুকনো গামছা দিয়ে গা মুছে কাপড় পড়ার জন্য হাত বাড়াতেই মাথাটা ঘুরে ওঠে ওর, দুচোখ অন্ধকার হয়ে যায়..... সেখানেই পড়ে যায় রমা। এতো ফুর্বল যে উঠতে গিয়েই মাথা ঘুরে যাচ্ছে।
রমা পড়ে যাওয়াতে বাথরুম থেকে একটা শব্দ আসে। নুটু চাল ধুয়ে ভাত বসানোর জন্য তৈরী করছিলো, শব্দ শুনে বাথরুমের দিকে তাকায়। সেখান থেকে রমার কোন সাড়া শব্দ নেই। ও কয়েকবার ডাকার পর অস্ফুটে একটা আওয়াজ আসে ভিতর থেকে। নুটু বুঝিতে অয়ারে যে রমার কিছু হয়েছে, বাথরুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ও দেখতেও পাচ্ছে না। শেষে সাড়া না পেয়ে দেওস্লের উপর দিয়ে তাকাতে দেখে রমা নীচে পড়ে আছে, ওঠার ক্ষমতা নেই।
নুটু আর কিছু না ভেবেই টিনের পলকা দরজা টান দিতেই সেটার কাঠ ভেঙে দরজা খুলে যায়, মেঝেতে রমা.... শরীরে একটুও কাপড় নেই। নুটু সেদিকে মন না দিয়ে দুই হাতে রমার নগ্ন শরীর তুলে কোলে করে ওকে ঘরে নিয়ে আসে। রমা অচেনত হয় নি, নুটু ওর নগ্ন শরীর এভাবে তোলায় লজ্জায় লাল হয়ে আসে ও। কিন্তু প্রতিক্রিয়া দেএয়ার মত শারীরিক অবস্থা ওর নেই। নুটু ওকে যত্ন করে বিছানায় শুইয়ে দেয়।
" ইশ..... এখুনি একটা অঘটন ঘটে যেতো, ভাগ্য ভালো কোথাও কেটে কুটে যায় নি..... নিজে পারছো না যখন আমায় ডাকবে তো... " নুটু ওকে বকাবকি করে। রমা যে সম্পূর্ণ নগ্ন সেকথা এতক্ষণ ওর মাথাতেই আসে নি।
লজ্জায় রমা ওর দিকে তাকাতে পারছিলো না ও হাত দিয়ে নিজের বুক আর পা ভাঁজ করে নিম্নাঙ্গ আড়াল করে বলে, " কাপড়টা দে তাড়াতাড়ি..... " সরাসরি নুটুর চোখের দিকে ও তাকাতে পারছে না।
এবার নুটুর খেয়াল হয় যে রমা সম্পূর্ণ বিবস্ত্র। হাত দিয়ে বুক আড়াল করলেও সেটা প্রায় অনেকাংশেই দৃশ্যমান। হঠাৎ তাল হারিয়ে ফেলে ও। তাড়াতাড়ি রমার কাপড়, শায়া ব্লাউজ খুঁজে ওলে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়।
" দাঁড়া..... " পিছন থেকে ক্ষীণ গলায় রমার ডাক আসে " আমি একা পারবো না, একটু সাহায্য করতে হবে। "
নুটুর পা যেনো কেউ আঠা দিয়ে আটকে রেখেছে। ও খুব ধীরে ধীরে আয়াবার রমার কাছে আসে। চোখ নামানো ওর। রমা লেখার মত সুন্দরী না হলেও যথেষ্ট সুন্দরী.... বাচ্চা হওয়ায় কিছু শারীরিক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী, সেগুলো ছাড়া এখনো বেশ আকর্ষনীয়। কোন মনে ও উঠে বসেছে। ভেজা চুল কাঁধের দুই দিক দিয়ে নেমে ওর স্তনের উপরে পড়েছে, পেটে হালকা চর্বির ভাঁজ, পা মুড়ে রাখায় যোনী দেখা যাচ্ছে না তবে পেটের কিছুটা নীচে কালো যৌনকেশের আভাস.... হাত পা এর চামড়া একেবারে টানটান আর দাগহীন..... রমা ওর স্তনের উপর থেকে হাত সরিয়ে দিয়েছে। একটু বড় আর আমান্য ঝুলে যাওয়া স্তনের বৃন্ত কালো আর বেশ বড়ো..... কাল রাতেই ডান স্তনের উপরে একটা তিন দেখেছে ও.... আজ খোলা বুকের মাঝে সেই তিলটা জ্বলজ্বল করছে।
এসব নিয়ে ভাবয়লতে না চাইলেও সদ্য তরুন নুটুর শরীরের প্রতিক্রিয়া দেখানোটা স্বাভাবিক, না চাইতেও ওর লিঙ্গ কঠিন হতে শুরু করে, নুটু রমার আরো কাছে এসে ওকে ব্লাউজ পরিয়ে দেয়....রমা নিজেকে ওঠে পারছিলো না..... নুটু ওর পায়ের মধ্যে দিয়ে শায়াটা গলিয়ে উপরে তুলে দেয়..... মুহুর্তের জন্য রমার পায়ের ভাঁজ খোলে আর ওর জানুসন্ধিস্থল পুরো দেখা যায়। ঘন কালো চুলের মাঝে স্পষ্ট চেরা।
বারমুডার উপর দিয়ে নুটুর লিঙ্গ ফুলে ওঠে। ও সেখান থেকে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে ছিলো, কিন্তু ওর এই পরিবর্তন রমার চোখ এড়ায় না..... ওর প্যান্টের ফোলা উঁচু জায়গায় ওর চোখ বারবার পড়তে থাকে। নগ্ন রমা যে ওকে উত্তেজিত ক্ল্রে তুলেছে সেটা বোঝা যাচ্ছে।
নুটু সরে যেতে গেলে রমা হাত ধরে ওকে কাছে টেনে নেয়। রমা খাটের একেবারে ধারে বসে আছে। আর নুটু নীচে ওর একেবারে গা ঘেষে দাঁড়িয়ে। রমার শরীরের সাথে স্পর্শ হয় নুটুর শরীর। নুটু একেবারে চুপ ক্ল্রে গেছে। শরীর আর মনের মাঝে এক তীব্র দ্বন্দ হচ্ছে। শরীর তার মত করে প্রতিক্রিয়া দিলেও ওর মন সরে যেতে চাইছে। কিন্তু রমার আকর্ষণ এড়াতে পারে না। রমা ওকে টেনে নিতেই ও রমার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট রাখে। রমা ওকে শক্ত করে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে। জ্বরের জন্য রমার শরীর যৌনতায় সাড়া দিচ্ছে না কিন্তু মন নুটুকে ছাড়িতে চাইছে না। নিজের শরীরে নুটুকে অনুভব করলেও দুর্বলতা ওকে প্রতিক্রিয়া দিতে দিচ্ছে না। নুটু যেনো স্থান কাল পাত্র সব ভুলে গেছে। ও চোখ বুঝে রমার কোমল শরীরের উত্তাপ নিতে ব্যাস্ত।
রমার ঘাড়ে গলায় ও নিজের ঠোঁট ঘষে চলে..... মনে হচ্ছে লেখাকে আবার কাছ পেয়েছে। রমার হাত ওর প্যান্টের আড়াল থেকে দাঁড়িয়ে থাকা লীঙ্গ বের করে আনে।
রমার হাতের মধ্যে আরো শক্ত হয়ে ওঠে নুটুর লিঙ্গ..... রমা জানে এই মুহুর্তে নুটুর কি দরকার.....ও নুটুর কঠিন লিঙ্গ মুঠ করে ধরে নাড়াতে থাকে..... নুটু চোখ বন্ধ করে আছে, শরীর উত্তেজনায় কাঁপছে ওর। চোখের সামনে লেখা ভেসে বাড়াচ্ছে..... রমার শরীর উত্তেজিত না হলেও নুটুর অঙ্গ চালনা করতে ওর বেশ লাগছে..... এতো কঠিন আর উত্তেজিত লিঙ্গ এই প্রথম দেখছে, নুটুর প্যান্ট মাটিতে খুলে পড়েছে.... একটা গেঞ্জি ছাড়া ও পুরো বিবস্ত্র। রমা আরো দ্রুতো হাত চালাতেই নুটূ মুখ দিয়ে আরামের সংকেত দেয়, অনেকদিন নুটু যৌনতা বা স্বমেহন করে নি..... তাই ওর উত্তেজনা বাঁধ ভাঙা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রমা এর আগে হারাধনকে জাগাতে ওর লিঙ্গ সঞ্চালন করে দিয়েছে, কিন্তু এই কাঠিন্য, এই তীব্রতা হারাধনের কোনদিনই ছিলো না.... রমা হাত দেএয়ার সাথে সাথেই সে নিজেকে সমর্পন করে দিতো। কিন্তু নুটুর লিঙ্গ অনেক আলাদা...... ওর হাতের মাঝে যেনো গোখরো সাপের মত ফুঁসছে, নীচের দিকে টান দিতেই ওর লিঙ্গের লাল অগ্রভাগ বেরিয়ে আসছে......রমা তীব্রতা আরো বাড়িয়ে দেয়, নুটু ওকে চেপে ধরে ওর ঘাড়ে মাথা গুজে দিয়েছে...সেই অবস্থাতেই ওর বিস্ফোরন ঘটে, তীরের মত ছিটকে বের হয় ওর বীর্য্য.... রমার ব্লাউজের নীচ থেকে খোলা পেট ভরে যায় সাদা থক থকে বীর্য্যে.... রমার হাতেও কিছুটা লাগে.....
না চাইতো ঘটে যাওয়া ঘটনায় নুটু কি করবে ভেবে পায় না। একটা কাপড়ে রমার শরীর থেকে নিজের বীর্য্য মুছে প্যান্ট পরে নেয়...... রমার চোখের দিকে তাকাতে পারছে না ও। একটা লজ্জা বোধ আর পাপ বোধ কুরে কুরে খাচ্চে ওকে। ও কি রমার কাছে ধরা দিয়ে দিলো? এরপর কি আর রমাকে প্রত্যাখ্যান করা সহজ কাজ হবে?
সারাদিন রমার চোখের দিকে তাকাতে পারে না ও। রমা কিন্তু ব্যাপারটায় ওতোটা প্রতিক্রিয়া দেখায় না। যেনো কিছুই হয় নি এভাবে সে নুটুকে গ্রহন করে। সন্ধ্যার দিকে ছেলেকে নিয়ে রমা আর নুটু ওদের চাতালে বসেছিলো তখনি সদর দরজায় আওয়াজ আসে।
হারাধন ফিরেছে ভেবে নুটু দরজা খুলেই দেখে এক অচেনা লোক দাঁড়িয়ে আছে, হাফ শার্ট আর জিন্স পরা সুদর্শন লোকটি নুটুকে দেখেই একটু থমকে যায়....নুটু ওর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিত তাকাতেই লোকটা বলে, " আমি কুসুমপুর থানার ওসি গদাধর বল.....আসতে পারি? "
" কুসুমপুর! "নুটুর শরীরে শীতল স্রোত বয়ে যায়। ও গদাধকে ভিতরে আসতে বলতে ভুলে যায়। গিদাফহর নিজেই ওকে ঠেলে ভিতরে ঢোকে।
অনেক রাত এখন। গদাধরের রয়াল এনফিল্ড গর্জন করতে করতে হাইওয়ে দিয়ে ছুটে যাচ্ছে। ওর মাথা পুরো ফাঁকা। নরেনের খুনীকে পাওয়ার শেষ ক্লু টাও হারালো। নুটু যে এই ঘটনার বিন্দু বিসর্গও জানে না সেটা ওর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াতেই বুঝে গেছে ও। ছেলেটা যে লেখার প্রেমে পাগল সেটাও বুঝতে অসুবিধা হয় না। তবে রাস্তা ক্লিয়ার করতে বা প্রতিশোধ নিতে ও যে নরেনকে মারে নি সে ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত ও। নুটু আর লেখা পরস্পরকে ভালোবাসে....... খুনীকে না পাওয়ার থেকেও এই ব্যাপারটা বেশী মনে ধরে গেছে গদাধরের। কোথাও মনের কোনে একটা চিনচিনে ব্যাথা হচ্ছে..... ও কি লেখাকে ভালোবেসে ফেলেছে? নাকি লেখার মত সুন্দরী মেয়ে নুটুর মত চালচুলোহীন একটা ছেলেকে এতো ভালোবাসায় ওর হিংসা হচ্ছে? কাল রাতে কল্পনায় লেখাকে নিজের কাছে পাওয়ার পর কি সেটাকে বাস্তব করতে মন চেয়েছিলো ওর? ওর নিসঙ্গ জীবনে লেখার মত একটা সুন্দরী, কোমল, বুদ্ধিমতী মেয়ের প্রয়োজন ছিলো খুব........
না চাইতেও মনকে শান্ত করতে পারছে না ও। গাড়ি দাঁড় করিয়ে একটা সিগারেট ধরায় গদাধর। দৃষ্টি শুন্যে। কালকের আগেও মন এতো অস্থির ছিলো না। কিন্তু লেখাকে কাছে পেয়ে একরাতে ওর মনে ঝড় উঠে গেছে। দুবার সিগারেটে টান দিয়ে ধোঁয়াটা ছেড়ে নিজেকে বোঝায় ও........জীবনে এমন পরিস্থিতি কত আসে, চাকুরীর প্রথম পোষ্টিং এ অনুসুয়া বলে ওর এক সিনিয়ার অফিসার ওর জন্য পাগল হয়েছিলো..... প্রচন্ড ভালোবাসতো ওকে, কিন্তু অনুসুয়ার প্রতি গদাধরের কোন অনুভূতি ছিলো না..... সেদিন ও বোঝে নি অনুসুয়া মনে কি পরিমান কষ্ট ভোগ করেছে.... আজ মাত্র এক রাতের পরিচয়ে লেখার জীবনে অন্য পুরুষের উপস্থিতিতে ওর মনে ঝড় উঠে যাচ্ছে..... প্রত্যেকেরই সময় আসলে, আগে আর পরে.... এটাই পার্থক্য।
বাইকে উঠে আবার স্টার্ট দেয়।। গাড়ি ১০০ গতিতে এগিয়ে যায় সামনের ফাঁকা রাস্তায়।
Deep's story


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)