14-10-2025, 12:40 PM
(This post was last modified: 14-10-2025, 12:41 PM by Subha@007. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব -৬
লাঞ্চ সেরে মেয়েরা হইহই করে বেরিয়ে পরলো বাইরে। কাবেরী ম্যাডামও গেলেন ওদের সাথে। এবার আর নদীর ধারে নয়, একটু দূরে পাইন বনের ধারে একটা জায়গা আছে, ওখানে যাওয়া হবে। বেশিক্ষনের জন্য নয় অবশ্য, সন্ধের আগেই আবার ফিরে আসতে হবে হোমস্টেতে। তারপর কালকে আবার সারাদিনের বাস জার্নি রয়েছে।
স্বর্ণালী ওর বেডের ওপর হাঁটু মুড়ে বসেছিল চুপ করে। ওর গায়ে একটা চাদর জড়ানো। ও যাবে না বাকিদের সাথে। ম্যাম কে বলেছে শরীর খারাপ, কিন্তু শরীর ঠিক আছে ওর, তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একটা চাপা অপরাধবোধ জন্ম নিয়েছে স্বর্ণালীর মনের ভেতরে।
স্বর্ণালী উঠে জানালাটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। জানলা দিয়ে বাইরের আলো আসছে বেশ। পাতলা মেঘ আছে আকাশে, কিন্তু তবুও এটাকে উজ্জ্বল দিন হিসেবে ধরে নেওয়া যায়।
মাথা নিচু করে স্বর্ণালী একবার নিজের শরীরের ঘ্রাণ নিলো আলতো করে। দামী সাবানের সুমিষ্ট ঘ্রাণ এখনো জড়িয়ে আছে ওকে। সমুদ্র স্যারের সাথে ওই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো শেষ হওয়ার পর স্যারই ভালো করে স্নান করিয়ে দিয়েছিল ওকে।
বাথরুমে চুপ করে বসে ছিল স্বর্ণালী। সমুদ্র স্যার একটা কথাও বলেনি। চুপ করে পরিষ্কার করিয়ে দিয়েছিল ওকে। স্বর্ণালীর শরীরের প্রতিটা অংশে লোকটা স্পর্শ করেছিল। কিন্তু স্বর্ণালীর মনে হয় সেই স্পর্শে কামনা ছিল না, বরং তাতে মিশে ছিল ভালবাসা আর যত্ন।
কিন্তু তবুও.. স্বর্ণালী বুঝতে পারছে না কিছু। ও কি ঠিক করলো কাজটা? বাবা মাকে ফাঁকি দিয়ে এভাবে চুপি চুপি একটা অপরিচিত লোকের সাথে..। হ্যাঁ! অপরিচিতই তো! কদিনই বা চেনে ও সমুদ্র সিংহকে! এরকম একটা লোকের কাছে কিভাবে নিজের শরীরটাকে তুলে দিতে পারলো ও! ছিঃ! যদি কখনো বাপি জানতে পারে.. কি হবে তখন! কি বলে স্বর্ণালী বোঝাবে ওর বাপিকে! স্বর্ণালীর হরিণের মতো চোখদুটো জলে ভরে উঠলো ক্রমশ।
হঠাৎ দরজায় শব্দ হলো একটা। স্বর্ণালী সঙ্গে সঙ্গে সামলে নিল নিজেকে। দরজায় লক করা নেই। সবাই তো চলে গেছে বেড়াতে, এমনকি ছেলেরাও। তাহলে কি রুম সার্ভিসের লোক? নাকি...!
একটা অজানা ভয় গ্রাস করলো ওকে।
সমুদ্র স্যার! আবার! এখন আবার কি চায় লোকটা? নাকি ওকে একা পেয়ে আবার লোকটা চলে এসেছে গন্ধে গন্ধে!
“কে ওখানে?” স্বর্ণালী কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলো।
“আমি”
আওয়াজটা পরিচিত স্বর্ণালীর। মেঘা। একটু স্বস্তি পেলো স্বর্ণালী। মেঘা স্বর্ণালীর পাশে বসে বললো, “তোর কি হয়েছে বল তো?”
স্বর্ণালী মুখ ঘুরিয়ে নিলো, “কই কিছু হয়নি তো!”
“মিথ্যে বলিস না। আসার আগে কত প্ল্যান করলি এটা দেখবো ওটা দেখবো, আর এখানে এসে একদম চুপচাপ হয়ে গেছিস। হোটেল থেকেই নড়ছিস না। কি হয়েছে বল আমাকে।”
স্বর্ণালী মিথ্যে করে বললো, “আসলে মাথাটা খুব যন্ত্রণা করছে তো.. তাই কিছু ভালো লাগছে না।”
“মিথ্যে বলিস না।” মেঘা রেগে গেল একটু। “তোর এখন মোটেই মাথা যন্ত্রণা করছে না। তুই ইচ্ছে করে সবাইকে এড়িয়ে চলছিস। সত্যি করে বল, কি হয়েছে তোর?”
“আমি.. আমি.. আসলে..” স্বর্ণালী কি বলবে বুঝতে পারলো না। “আমি আসলে সেক্স করে ফেলেছি।”
“মানে?”
মেঘা কয়েক সেকেন্ড কিছু বুঝতে পারলো না। “কখন? কোথায়? কিভাবে? কার সাথে?” অনেকগুলো প্রশ্ন একসাথে করলো মেঘা।
স্বর্ণালী ওকে সব খুলে বললো। মেঘা সব শুনে বললো, “তুই কি পাগল?”
“কেন?” স্বর্ণালী ভয় পেয়ে গেল একটু।
“আরে পাগল, সেক্স একটা বেসিক হিউম্যান নিড। তুই অন্যায় কিছু করিসনি, বুঝলি।”
“কিন্তু এভাবে একটা টিচারের সাথে..”
“তো! তোদের দুজনেরই কনসেন্ট ছিল। এমন তো না কেউ তোকে জোর করেছে! এখানে অন্যায় কোথায়?”
“তুই বুঝতে পারছিস না। এটা ঠিক..”
“এখানে বোঝার কিছু নেই স্বর্ণালী। তুই এখন অ্যাডাল্ট। তোর অধিকার আছে তুই কাকে কিভাবে ট্রিট করবি। আর দ্যাখ..” মেঘা মুচকি হাসলো একটু, “সমুদ্র স্যার বিশাল হ্যান্ডসাম। ম্যারেড, কিন্তু ভীষণ আন্ডারস্ট্যান্ডিং। উনি তোকে মিসইউজ করবেন না। এটা তোর লাইফ। ট্যুরে এসেছিস, যতটা পারিস এনজয় করে নে। এখন রেস্ট নে একটু, আমি আসছি, কেমন?”
মেঘা উঠে গেল বিছানা ছেড়ে। যাওয়ার আগে বললো, “আমার কথাগুলো আরেকবার চিন্তা করে দেখিস। রাতে কথা হবে।”
মেঘা চলে গেল। রুমের মধ্যে স্বর্ণালী একা। ওর মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরছে, “এটা তোর লাইফ। যতটা পারিস এনজয় করে নে।” স্বর্ণালীর মনে হলো ওর মাথাটা এবার ফেটে যাবে যন্ত্রণায়।
জানালার পাশের সোফাটায় বসে একমনে বাইরের দৃশ্য দেখছিল সমুদ্র। পাশের টেবিলে রুম সার্ভিসের দেওয়া ব্ল্যাক কফি রাখা। বাইরের দৃশ্য দেখতে দেখতে মাঝে মাঝেই ছোট ছোট কফির সিপ নিচ্ছিল ও।
আজকে এক্সকার্শনের দ্বিতীয় দিন। একটু আগেই বাসে করে সবাই বেরিয়ে গেছে মিরিকের উদ্দেশ্যে। সমুদ্র যায়নি। কারণ, স্বর্ণালীর শরীর ভালো নেই। সকালে কাবেরী ম্যামকে স্বর্ণালী বলেছে যে বাস জার্নি করতে পারবে না ও। স্বর্ণালীর বাড়িতেও ফোন করা হয়েছিল, ওখানেও বাস জার্নি অ্যাভয়েড করতে বলেছে। স্বর্ণালী অবশ্য বলেছে এটা ওর পুরোনো প্রবলেম, চেকআপের প্রয়োজন নেই। রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। তাই স্বর্ণালীকে দেখে রাখার জন্য সমুদ্রই থেকে গেছে এখানে।
দরজায় টোকা পড়লো দুটো। সমুদ্র উঠে দাঁড়ালো। রুম সার্ভিস নিশ্চই। কফি দেওয়ার সময়ই ও বলে দিয়েছিল ব্রেকফাস্ট ওর ঘরে দিয়ে যেতে। ব্রেকফাস্ট সেরে একবার স্বর্ণালীকে দেখে আসবে সমুদ্র। কালকের ওই ঘটনার পর, স্বর্ণালীর সাথে এখনো দেখা হয়নি ওর। কে জানে! হয়তো স্বর্ণালীর মাথা যন্ত্রণার জন্য সমুদ্রই আসল দায়ী!
সমুদ্র উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলো। আর দরজাটা খুলেই ভূত দেখার মত চমকে উঠলো সমুদ্র। হোমস্টের বেয়ারা নয়। ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে স্বর্ণালী। কালকের থেকে একেবারে অন্যরকম লাগছে ওকে। শাড়ি পরেছে মেয়েটা। সমুদ্রর দিকে তাকিয়ে স্বর্ণালী মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করল, “আসতে পারি?”
সমুদ্র হাঁ করে তাকিয়ে রয়েছে স্বর্ণালীর দিকে। স্বর্ণালী ওর দিকে তাকিয়ে একটু নকল রাগ দেখিয়ে বললো, “হাঁ করে দেখছেন কি? ভেতরে ঢুকতে দেবেন না?”
“ওহ হ্যাঁ হ্যাঁ.. এসো এসো।” সমুদ্র দরজার থেকে সরে দাঁড়াল একপাশে। বাচ্চা খরগোশের মত টুক করে মেয়েটা ঢুকে পড়ল ঘরে, তারপর কোনরকম দ্বিধা না করে বসে পড়লো সোফাটার ওপরে।
সমুদ্র বিছানায় উঠে বসলো। ভীষণ সুন্দর লাগছে স্বর্ণালীকে। একটা টকটকে লাল রঙের সিল্কের শাড়ি পরেছে স্বর্ণালী। সাথে ম্যাচিং করে ব্লাউজ। সমুদ্র মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো স্বর্ণালীর দিকে।
“তোমার না শরীর খারাপ?” সমুদ্র জিজ্ঞেস করলো স্বর্ণালীকে।
“হ্যাঁ, খারাপ তো। আপনার জন্যই তো খারাপ!” স্বর্ণালী দুষ্টু দুষ্টু চোখে তাকালো সমুদ্রর দিকে।
“আমার জন্য মানে?” সমুদ্র একটু ঘাবড়ে গিয়েই জিজ্ঞেস করল প্রশ্নটা। কি বলতে চাইছে মেয়েটা! ডুয়ার্সের এই মনোরম আবহাওয়াতেও সমুদ্রর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে লাগলো। স্বর্ণালী এখনো সমুদ্রর দিকে একইভাবে তাকিয়ে রয়েছে। কালকের তুলনায় আজকে স্বর্ণালীর চোখ দুটো আরো গভীর লাগছে সমুদ্রর। যদিও মেয়েদের সাজপোশাক সম্পর্কে সমুদ্রর তেমন কোনো ধারণা নেই, তবে মনেহয় চোখে মাশকারা লাগিয়েছে স্বর্ণালী। চোখের ওপর চকচকে হালকা মেরুন রঙের প্রলেপটাকে সম্ভবত আইশ্যাডো বলে। আর লম্বা লম্বা পাঁপড়িগুলোকে বলে আইল্যাশ।
হঠাৎ খিলখিল করে হেসে উঠলো স্বর্ণালী। “এত ভয় পান কেন আপনি! শরীর খারাপ আমার কালকেই সেরে গেছে।”
লাল রঙের ম্যাট লিপস্টিকের আড়াল থেকে বত্রিশ পাটি দাঁত বের হয়ে এলো ওর। দাঁতগুলোও এত সুন্দর স্বর্ণালীর! না না, একটা ছাত্রীর সম্পর্কে এইসব ভাবা উচিত হচ্ছে না ওর। নাহয় উত্তেজনার বশে একটা ভুল করে ফেলেছে সমুদ্র, কিন্তু সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করাটা বোকামির থেকে কম কিছু নয়। একটু কড়া স্বরে সমুদ্র বললো, “তাহলে গেলে না কেন সবার সাথে? সবাই কত মজা করছে! গ্রুপ ট্যুরে এসে কত অ্যাকটিভিটি করা যায়! আর তুমি শুধু শুধু দিনটা নষ্ট করছো! কত কষ্ট করে এই ট্যুরটা অ্যারেঞ্জ করা হয়েছে জানো!”
স্বর্ণালীর হাসি থেমে গেল, যদিও ওর মুখের দুষ্টুমির ভাবটা একটুও কমলো না। স্বর্ণালী উঠে দাঁড়ালো সোফার থেকে। তারপর জংলী বেড়ালের মত ছোট ছোট পায়ে এগিয়ে আসতে লাগলো সমুদ্রর দিকে।
“আর আমি যে আজকের দিনটা অ্যারেঞ্জ করলাম আপনার জন্য!”
চলবে... গল্পটা কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্টে জানান...
ভালো লাগলে লাইক আর রেপুটেশন দিন।।।
লাঞ্চ সেরে মেয়েরা হইহই করে বেরিয়ে পরলো বাইরে। কাবেরী ম্যাডামও গেলেন ওদের সাথে। এবার আর নদীর ধারে নয়, একটু দূরে পাইন বনের ধারে একটা জায়গা আছে, ওখানে যাওয়া হবে। বেশিক্ষনের জন্য নয় অবশ্য, সন্ধের আগেই আবার ফিরে আসতে হবে হোমস্টেতে। তারপর কালকে আবার সারাদিনের বাস জার্নি রয়েছে।
স্বর্ণালী ওর বেডের ওপর হাঁটু মুড়ে বসেছিল চুপ করে। ওর গায়ে একটা চাদর জড়ানো। ও যাবে না বাকিদের সাথে। ম্যাম কে বলেছে শরীর খারাপ, কিন্তু শরীর ঠিক আছে ওর, তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একটা চাপা অপরাধবোধ জন্ম নিয়েছে স্বর্ণালীর মনের ভেতরে।
স্বর্ণালী উঠে জানালাটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। জানলা দিয়ে বাইরের আলো আসছে বেশ। পাতলা মেঘ আছে আকাশে, কিন্তু তবুও এটাকে উজ্জ্বল দিন হিসেবে ধরে নেওয়া যায়।
মাথা নিচু করে স্বর্ণালী একবার নিজের শরীরের ঘ্রাণ নিলো আলতো করে। দামী সাবানের সুমিষ্ট ঘ্রাণ এখনো জড়িয়ে আছে ওকে। সমুদ্র স্যারের সাথে ওই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো শেষ হওয়ার পর স্যারই ভালো করে স্নান করিয়ে দিয়েছিল ওকে।
বাথরুমে চুপ করে বসে ছিল স্বর্ণালী। সমুদ্র স্যার একটা কথাও বলেনি। চুপ করে পরিষ্কার করিয়ে দিয়েছিল ওকে। স্বর্ণালীর শরীরের প্রতিটা অংশে লোকটা স্পর্শ করেছিল। কিন্তু স্বর্ণালীর মনে হয় সেই স্পর্শে কামনা ছিল না, বরং তাতে মিশে ছিল ভালবাসা আর যত্ন।
কিন্তু তবুও.. স্বর্ণালী বুঝতে পারছে না কিছু। ও কি ঠিক করলো কাজটা? বাবা মাকে ফাঁকি দিয়ে এভাবে চুপি চুপি একটা অপরিচিত লোকের সাথে..। হ্যাঁ! অপরিচিতই তো! কদিনই বা চেনে ও সমুদ্র সিংহকে! এরকম একটা লোকের কাছে কিভাবে নিজের শরীরটাকে তুলে দিতে পারলো ও! ছিঃ! যদি কখনো বাপি জানতে পারে.. কি হবে তখন! কি বলে স্বর্ণালী বোঝাবে ওর বাপিকে! স্বর্ণালীর হরিণের মতো চোখদুটো জলে ভরে উঠলো ক্রমশ।
হঠাৎ দরজায় শব্দ হলো একটা। স্বর্ণালী সঙ্গে সঙ্গে সামলে নিল নিজেকে। দরজায় লক করা নেই। সবাই তো চলে গেছে বেড়াতে, এমনকি ছেলেরাও। তাহলে কি রুম সার্ভিসের লোক? নাকি...!
একটা অজানা ভয় গ্রাস করলো ওকে।
সমুদ্র স্যার! আবার! এখন আবার কি চায় লোকটা? নাকি ওকে একা পেয়ে আবার লোকটা চলে এসেছে গন্ধে গন্ধে!
“কে ওখানে?” স্বর্ণালী কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলো।
“আমি”
আওয়াজটা পরিচিত স্বর্ণালীর। মেঘা। একটু স্বস্তি পেলো স্বর্ণালী। মেঘা স্বর্ণালীর পাশে বসে বললো, “তোর কি হয়েছে বল তো?”
স্বর্ণালী মুখ ঘুরিয়ে নিলো, “কই কিছু হয়নি তো!”
“মিথ্যে বলিস না। আসার আগে কত প্ল্যান করলি এটা দেখবো ওটা দেখবো, আর এখানে এসে একদম চুপচাপ হয়ে গেছিস। হোটেল থেকেই নড়ছিস না। কি হয়েছে বল আমাকে।”
স্বর্ণালী মিথ্যে করে বললো, “আসলে মাথাটা খুব যন্ত্রণা করছে তো.. তাই কিছু ভালো লাগছে না।”
“মিথ্যে বলিস না।” মেঘা রেগে গেল একটু। “তোর এখন মোটেই মাথা যন্ত্রণা করছে না। তুই ইচ্ছে করে সবাইকে এড়িয়ে চলছিস। সত্যি করে বল, কি হয়েছে তোর?”
“আমি.. আমি.. আসলে..” স্বর্ণালী কি বলবে বুঝতে পারলো না। “আমি আসলে সেক্স করে ফেলেছি।”
“মানে?”
মেঘা কয়েক সেকেন্ড কিছু বুঝতে পারলো না। “কখন? কোথায়? কিভাবে? কার সাথে?” অনেকগুলো প্রশ্ন একসাথে করলো মেঘা।
স্বর্ণালী ওকে সব খুলে বললো। মেঘা সব শুনে বললো, “তুই কি পাগল?”
“কেন?” স্বর্ণালী ভয় পেয়ে গেল একটু।
“আরে পাগল, সেক্স একটা বেসিক হিউম্যান নিড। তুই অন্যায় কিছু করিসনি, বুঝলি।”
“কিন্তু এভাবে একটা টিচারের সাথে..”
“তো! তোদের দুজনেরই কনসেন্ট ছিল। এমন তো না কেউ তোকে জোর করেছে! এখানে অন্যায় কোথায়?”
“তুই বুঝতে পারছিস না। এটা ঠিক..”
“এখানে বোঝার কিছু নেই স্বর্ণালী। তুই এখন অ্যাডাল্ট। তোর অধিকার আছে তুই কাকে কিভাবে ট্রিট করবি। আর দ্যাখ..” মেঘা মুচকি হাসলো একটু, “সমুদ্র স্যার বিশাল হ্যান্ডসাম। ম্যারেড, কিন্তু ভীষণ আন্ডারস্ট্যান্ডিং। উনি তোকে মিসইউজ করবেন না। এটা তোর লাইফ। ট্যুরে এসেছিস, যতটা পারিস এনজয় করে নে। এখন রেস্ট নে একটু, আমি আসছি, কেমন?”
মেঘা উঠে গেল বিছানা ছেড়ে। যাওয়ার আগে বললো, “আমার কথাগুলো আরেকবার চিন্তা করে দেখিস। রাতে কথা হবে।”
মেঘা চলে গেল। রুমের মধ্যে স্বর্ণালী একা। ওর মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরছে, “এটা তোর লাইফ। যতটা পারিস এনজয় করে নে।” স্বর্ণালীর মনে হলো ওর মাথাটা এবার ফেটে যাবে যন্ত্রণায়।
জানালার পাশের সোফাটায় বসে একমনে বাইরের দৃশ্য দেখছিল সমুদ্র। পাশের টেবিলে রুম সার্ভিসের দেওয়া ব্ল্যাক কফি রাখা। বাইরের দৃশ্য দেখতে দেখতে মাঝে মাঝেই ছোট ছোট কফির সিপ নিচ্ছিল ও।
আজকে এক্সকার্শনের দ্বিতীয় দিন। একটু আগেই বাসে করে সবাই বেরিয়ে গেছে মিরিকের উদ্দেশ্যে। সমুদ্র যায়নি। কারণ, স্বর্ণালীর শরীর ভালো নেই। সকালে কাবেরী ম্যামকে স্বর্ণালী বলেছে যে বাস জার্নি করতে পারবে না ও। স্বর্ণালীর বাড়িতেও ফোন করা হয়েছিল, ওখানেও বাস জার্নি অ্যাভয়েড করতে বলেছে। স্বর্ণালী অবশ্য বলেছে এটা ওর পুরোনো প্রবলেম, চেকআপের প্রয়োজন নেই। রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। তাই স্বর্ণালীকে দেখে রাখার জন্য সমুদ্রই থেকে গেছে এখানে।
দরজায় টোকা পড়লো দুটো। সমুদ্র উঠে দাঁড়ালো। রুম সার্ভিস নিশ্চই। কফি দেওয়ার সময়ই ও বলে দিয়েছিল ব্রেকফাস্ট ওর ঘরে দিয়ে যেতে। ব্রেকফাস্ট সেরে একবার স্বর্ণালীকে দেখে আসবে সমুদ্র। কালকের ওই ঘটনার পর, স্বর্ণালীর সাথে এখনো দেখা হয়নি ওর। কে জানে! হয়তো স্বর্ণালীর মাথা যন্ত্রণার জন্য সমুদ্রই আসল দায়ী!
সমুদ্র উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলো। আর দরজাটা খুলেই ভূত দেখার মত চমকে উঠলো সমুদ্র। হোমস্টের বেয়ারা নয়। ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে স্বর্ণালী। কালকের থেকে একেবারে অন্যরকম লাগছে ওকে। শাড়ি পরেছে মেয়েটা। সমুদ্রর দিকে তাকিয়ে স্বর্ণালী মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করল, “আসতে পারি?”
সমুদ্র হাঁ করে তাকিয়ে রয়েছে স্বর্ণালীর দিকে। স্বর্ণালী ওর দিকে তাকিয়ে একটু নকল রাগ দেখিয়ে বললো, “হাঁ করে দেখছেন কি? ভেতরে ঢুকতে দেবেন না?”
“ওহ হ্যাঁ হ্যাঁ.. এসো এসো।” সমুদ্র দরজার থেকে সরে দাঁড়াল একপাশে। বাচ্চা খরগোশের মত টুক করে মেয়েটা ঢুকে পড়ল ঘরে, তারপর কোনরকম দ্বিধা না করে বসে পড়লো সোফাটার ওপরে।
সমুদ্র বিছানায় উঠে বসলো। ভীষণ সুন্দর লাগছে স্বর্ণালীকে। একটা টকটকে লাল রঙের সিল্কের শাড়ি পরেছে স্বর্ণালী। সাথে ম্যাচিং করে ব্লাউজ। সমুদ্র মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো স্বর্ণালীর দিকে।
“তোমার না শরীর খারাপ?” সমুদ্র জিজ্ঞেস করলো স্বর্ণালীকে।
“হ্যাঁ, খারাপ তো। আপনার জন্যই তো খারাপ!” স্বর্ণালী দুষ্টু দুষ্টু চোখে তাকালো সমুদ্রর দিকে।
“আমার জন্য মানে?” সমুদ্র একটু ঘাবড়ে গিয়েই জিজ্ঞেস করল প্রশ্নটা। কি বলতে চাইছে মেয়েটা! ডুয়ার্সের এই মনোরম আবহাওয়াতেও সমুদ্রর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে লাগলো। স্বর্ণালী এখনো সমুদ্রর দিকে একইভাবে তাকিয়ে রয়েছে। কালকের তুলনায় আজকে স্বর্ণালীর চোখ দুটো আরো গভীর লাগছে সমুদ্রর। যদিও মেয়েদের সাজপোশাক সম্পর্কে সমুদ্রর তেমন কোনো ধারণা নেই, তবে মনেহয় চোখে মাশকারা লাগিয়েছে স্বর্ণালী। চোখের ওপর চকচকে হালকা মেরুন রঙের প্রলেপটাকে সম্ভবত আইশ্যাডো বলে। আর লম্বা লম্বা পাঁপড়িগুলোকে বলে আইল্যাশ।
হঠাৎ খিলখিল করে হেসে উঠলো স্বর্ণালী। “এত ভয় পান কেন আপনি! শরীর খারাপ আমার কালকেই সেরে গেছে।”
লাল রঙের ম্যাট লিপস্টিকের আড়াল থেকে বত্রিশ পাটি দাঁত বের হয়ে এলো ওর। দাঁতগুলোও এত সুন্দর স্বর্ণালীর! না না, একটা ছাত্রীর সম্পর্কে এইসব ভাবা উচিত হচ্ছে না ওর। নাহয় উত্তেজনার বশে একটা ভুল করে ফেলেছে সমুদ্র, কিন্তু সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করাটা বোকামির থেকে কম কিছু নয়। একটু কড়া স্বরে সমুদ্র বললো, “তাহলে গেলে না কেন সবার সাথে? সবাই কত মজা করছে! গ্রুপ ট্যুরে এসে কত অ্যাকটিভিটি করা যায়! আর তুমি শুধু শুধু দিনটা নষ্ট করছো! কত কষ্ট করে এই ট্যুরটা অ্যারেঞ্জ করা হয়েছে জানো!”
স্বর্ণালীর হাসি থেমে গেল, যদিও ওর মুখের দুষ্টুমির ভাবটা একটুও কমলো না। স্বর্ণালী উঠে দাঁড়ালো সোফার থেকে। তারপর জংলী বেড়ালের মত ছোট ছোট পায়ে এগিয়ে আসতে লাগলো সমুদ্রর দিকে।
“আর আমি যে আজকের দিনটা অ্যারেঞ্জ করলাম আপনার জন্য!”
চলবে... গল্পটা কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্টে জানান...
ভালো লাগলে লাইক আর রেপুটেশন দিন।।।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)