Yesterday, 02:57 AM
নিয়োগ পর্ব ১৭
মাধবীর থেকে ভর্ৎসনা পেয়ে বিমল কাঁচুমাচু মুখে রওনা দিল অফিসে। যেতে যেতে ভাবলো হয়তো সত্যিই খুব বেশি রিঅ্যাক্ট করে ফেলেছে সে সমরেশের উপর। আর যাই হোক, গায়ে হাত তোলাটা উচিত হয়নি। তাও আবার মাধবীর সামনে। এই গুন্ডাগিরিতে মাধবী বেজায় রুষ্ট হয়েছে।
সান্যাল বাড়িতে মাধবী সমরেশের শুশ্রূষা করছিল, আর বারবার স্বামীর কৃতকর্মের জন্য প্রেমিকের কাছে ক্ষমা চাইছিল। সমরেশের নাক দিয়ে অঝোরে রক্তগঙ্গা বইছিল। বিমল নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তাকে প্রহার করেছিল। মাধবীর অনেক প্রচেষ্টার পর গিয়ে তবে সমরেশ কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো নাক দিয়ে। যাক! রক্তপাত বন্ধ হয়েছে। হাসপাতালে যেতে হবেনা।
"থ্যাংক ইউ মাধবী, থ্যাংক ইউ সো মাচ! তুমি ছিলে বলে এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম"
"আমি ছিলাম বলেই তুমি এই আঘাতটা পেলে.."
"এভাবে বলছো কেন? বিমল ছেলেমানুষ, ওর শুধু বয়সটাই বেড়েছে।.. তাই হয়তো ঈশ্বর ওকে বাবা হওয়ার সুযোগ দেয়নি।"
এই কথাটা শুনেই মাধবীর মুখটা শুকিয়ে গেল। কথাটা যে তার খুব একটা ভালো লাগেনি সেটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল। সমরেশের মন্তব্য ফের একবার বেলাগাম হচ্ছিল। মনে মনে হয়তো সে বিমলকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মানতে শুরু করেছিল, মাধবীকে পাওয়ার রাস্তায়। তাই না চাইতেও তার মুখ থেকে বিমল সম্পর্কিত কটু কথা বেরিয়ে আসছিল। সুতরাং আরো একবার নিজেকে সংযত করে সে বললো, "না মানে, কথাটা আমি ঠিক ওভাবে বলতে চাইনি।.. যাই হোক, আমি একটা বিষয় নিয়ে খুব সন্দিহান যে বিমল ওই প্যান্টির খবরটা পেল কোত্থ থেকে? তুমি কিছু বলেছো?...." সমরেশ কথা ঘুরিয়ে দিয়ে মাধবীর মনকে বিমলের রাগের কারণ খুঁজতে মনোনিবেশ করাতে চাইলো।
মাধবীও তখন বিমলকে নিয়ে সমরেশের করা কটূক্তি ভুলে গিয়ে সেই কারণ অন্বেষণ করতে শুরু করলো। হঠাৎ মনে পড়লো আজ যখন সকালে বাথরুমে গিয়ে কালকের ফেলে রাখা কাপড়চোপড় গুলো কাঁচতে দেওয়ার তোড়জোড় আরম্ভ করেছিল, তখন সে খেয়াল করে সেগুলো আগের অবস্থানে নেই, এবং বেশ এলোমেলো হয়ে অন্যত্র পড়ে রয়েছে। তখন মনে প্রশ্ন না জাগলেও এখন সন্দেহ হচ্ছে যে গতরাতে নিশ্চই বিমল তার কাপড়ে হাত দিয়েছিল। তখুনি হয়তো সে প্যান্টিটা খুঁজে পায়নি। সেই কারণে সমরেশের বাড়িতে ঢুকেই সে দোতলায় চলে যায় নিজের সন্দেহের বীজে জল দিতে। এবং খুঁজে পায় সেখানে প্যান্টিটা।
এইসব কথা সে সমরেশকে বিস্তারিত ভাবে খুলে বলতেই সমরেশ দুইয়ে দুইয়ে চার করতে পারে। কিন্তু আর সে বিমলের উপর রাগ করে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়না। কারণ মাধবী এখন তার কাছে, বিমল ধারের কাছেও নেই। আর সে জানে মাধবী বিমলের উপর যতই রাগ করুক না কেন, নিজের স্বামীর সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য সে সহ্য করবে না। তাই অযথা তাকে চটিয়ে লাভ কি?
"ছাড়ো এখন সেসব কথা। বিমল এলে নাহয় দু' জন মিলে ওকে নতুন করে বোঝাবো। আমাদের মধ্যে কি হয়েছে বা হতে পারে তার সম্পর্কে তো সে এমনিতেও ওয়াকিবহাল রয়েছে। আরেকটু নাহয় বলে শান্ত করবো। এখন চলো, আমরা আমাদের কথা বলি...."
"আমাদের কথা? সেটা আবার কি?"
"কেন? আমাদের কোনো নিজস্ব কথা থাকতে পারেনা?"
"সমরেশ, তুমি যে পথ দিয়ে হাঁটতে চাইছো, সেই পথের শেষে মস্ত বড় দেওয়াল দাঁড়িয়ে রয়েছে। তোমাকে আবার ফিরে আসতে হবে। তাই সেইদিকে পা না বাড়ানোই ভালো...."
"কিন্তু যতক্ষণ না সেই দেওয়াল দেখতে পাচ্ছি, ততক্ষণ একটু হাঁটিই না, তোমার সাথে। কিছু মুহূর্ত তো সঞ্চয় করা যাবে, তাও বা কম কিই!"
"তুমি নিশ্চিত? এই পথে তুমি হাঁটবেই? যেই পথে কোনো স্থায়ী প্রাপ্তি হবেনা, শুধু আমাদের একসাথে চলার কিছু স্মৃতি শুকনো পাতার মতো ছড়িয়ে থাকবে রাস্তায়, আর কিচ্ছু না। .. কিচ্ছু পাবেনা।"
"আমি কিছু নিয়ে আসেনি তোমার কাছে, তাই কিছু হারানোর ভয়ও নেই আমার। নাহয় সেই শুকনো পাতাগুলোই কুড়িয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরবো, একা।"
সমরেশের কথা শুনে মাধবীর চোখ জলে ভরে এলো। সে আবেগে ভাসমান হয়ে নিজের মুখটা এগিয়ে দিল। সমরেশও একটু এগোতেই দুই ওষ্ঠাধরের পুনর্মিলন ঘটলো। হস্ত ছুঁলো কপোল। দুই কটিদেশ এল কাছে। রক্তক্ষরণ এখন বন্ধ, এবার হয়তো ক্ষরিত হবে তরল, অপর শরীরের যোনি হতে। তার সম্ভাবনা প্রবল। মাধবী কি সেটা আটকাতে পারবে? মনে তো হয়না।
অল্প কিছু সময়ের ব্যবধানে ওরা আরো কাছাকাছি চলে এল। জড়িয়ে ধরলো একে অপরকে।.. মাধবী ও সমরেশ সোফায় বসেছিল। সেখানেই চলেছিল শুশ্রূষা। এবার চলবে সুড়সুড়ানি, যৌনতার। মাধবী আজকেও একটা জামদানি শাড়ি পড়ে এসছিল, আর সমরেশ সেই ছেঁড়া পাঞ্জাবি, যা সে কাল থেকে ছাড়েনি। বিমলের নজর তা এড়ায়নি। কালকেও সে দেখেছিল, সমরেশের বুকের কাছটা ছেঁড়া, যখন সে দ্বিতীয়বারের মতো ফিরে এসেছিল তার বউকে নিয়ে যেতে। কিন্তু যখন টেবিলের নিচে বউয়ের প্যান্টিটা পড়ে থাকতে দেখলো, তখন মাথায় অন্য আর কিছু জায়গা করে নিতে পারেনি।
আজকে যখন বিমল আবার সমরেশকে সেই পাঞ্জাবিটা পড়ে থাকতে দেখে, তখন তার মাথায় আগুন চড়ে যায়। তৎক্ষণাৎ সে ভাবে যে গতকাল প্যান্টি দিয়ে আসার নাম করে উপরে গিয়ে তার বন্ধু নির্ঘাত তার স্ত্রীয়ের সাথে কোনো অসভ্যতামি করতে চেয়েছে। আর তখন মাধবী প্রত্যাঘাত করতে চাওয়ায় জোরাজুরিতে পাঞ্জাবিটা ছিঁড়ে গ্যাছে। বুক ছেঁড়া পাঞ্জাবি তাকে সেই অনুমানই দেয়। তার সন্দেহ আরো দৃঢ় হয়, যখন প্রায় একইরকম রুগ্ন অবস্থায় সে তার স্ত্রীয়ের প্যান্টি আবিষ্কার করে সমরেশের বিছানায়। কিন্তু সে ভুলে গেছিল, গতকাল টেবিলের তলায় প্যান্টিটা পাওয়ার আগে থেকেই সমরেশের পাঞ্জাবিটা ছেঁড়া ছিল। বিমল দুইয়ে দুইয়ে চার করতে পারেনি। বিয়োগ করে একেবারে শূন্য করে দিয়েছিল।
ফেরা যাক সেই সোফায়, যেখানে বিমলের স্ত্রী ও বন্ধু দুজনে গভীর চুম্বনে লিপ্ত ছিল। জীভ ঠেকিয়ে অপর জীভ থেকে মধু ছিনিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চলছিল দু পক্ষের মধ্যে। এ এক নিস্পত্তিহীন যুদ্ধ। যে যুদ্ধে নীতি পরাজিত, বাসনা বিজয়ী। তাই দুটি ঠোঁট একে অপরকে আঁকড়ে ধরলো, আর ভেতরে লেপ্টে গেল জিহ্বা দ্বয় একে অপরের সাথে।
সমরেশ বিলম্ব করলো না এক মুহূর্তও। মাধবীর মুখে মুখ রেখেই ওই অবস্থায় পাঁজাকোলা করে তাকে কোলে তুলে নিল। আবার গন্তব্য সেই দোতলার ঘর। মাধবীকে নিয়ে সমরেশ সিঁড়ি ঘরের দিকে পা বাড়াচ্ছিল। হঠাৎ মাধবী মুখ সরিয়ে এনে বললো, "উঃহ্হ্হঃ! তুমি স্নান করোনি কাল?"
"কেন?"
"তোমার গা থেকে একটা বোঁটকা গন্ধ বেরোচ্ছে।.. আমার কিন্তু পরে গা গুলিয়ে উঠবে।.."