Thread Rating:
  • 118 Vote(s) - 2.53 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery দীক্ষা লাভ - এক মায়ের পরিবর্তন
Update :20(B)



প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে, ঊষা জল ভরার অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরছে ধীরে ধীরে। একটু ক্লান্ত দেখাচ্ছে ঊষাকে, যতটা আহ্লাদ নিয়ে গিয়েছিল তাও যেন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে,আগের মতো আর কিছুই নেই;আগে জল ভরতে নদীতে গেলে যে আনন্দ হৈ-হুল্লোড়টা হত সেই আমেজটা  আর নেই এখন।একেবারেই যে নেই  তা  বললে ভুল হবে - কারণ বাকি সবাই তো বেশ গা ঢলাঢলি করে  নাচছিল।ওই তো ও পাড়ার বউ বন্দনা, নতুন বিয়ে হয়েছে সবে সেও তো বেটা মানুষের হাত নির্দ্বিধায় ধরে এনে কেমন কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে নাচল।

কিন্তু ঊষা গ্রামের পুরনো বউ হয়েও নাচতে পারেনি।কেন পারেনি?ঊষা কি নাচতে জানে না?উত্তর হ্যাঁ ঊষা নাচতে জানে হয়ত অনেকের চাইতে ভালোই জানে,তবে? তবেটা হলো - নাচতে জানলেই নাচা যায় না।কেউ যদি হাতটা ধরে একটু জোর না করে তবে নিজের থেকে নাচাটা ঠিক হয়ে উঠে না।ঊষার ক্ষেত্রেও একই হয়েছে।কত মহিলা নাচছে ঠাট্টা ইয়ার্কি করছে কিন্তু ঊষাকে কেউ এসে হাতটা ধরা দূরে থাক মুখের কথাটাই বলল না।ঊষা যেন থেকেও নেই এমন একটা ভাব।

সত্যিই কি কেউই  ঊষার হাত ধরেনি?বলেনি আয় না লো? বলেছিল, তবে বড্ড বেশি দেরি করে।ভজার মা ঊষার সই নয়নতারা এসে ঊষার হাত ধরেছিল শেষ মুহুর্তে ,বলেছিল- 'আয় না লো সই নাচি অল্প........।'
ঊষা মুচকি হেসে সংক্ষেপে উত্তর
দিয়েছিল-- তুই নাচ সই,নাচার থিকা তোর নাচ দেইহা বেশি মজা নাগতেচে।

ঊষা অনেককিছুই ভেবে ভেবে বাড়ি ফিরল।বিয়ে বাড়ি যাওয়া নিয়ে তেমন আর উৎসাহ রইল না।হাত পা ধুয়ে সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বেলে ঘরে ঢুকল। ফাঁকা বাড়ি, শুধুমাত্র শ্বশুর রয়েছে।কুপি জ্বেলে বারান্দায় শ্বশুরে খোপড়ায় রাখতে গিয়ে শ্বশুরকে জিজ্ঞেস করল বিয়ে বাড়ি উনি যাবেন কি না।একটু কাঁচুমাচু করে বিনোদ বলল
-- যাইবার তো মন চায় বউমা, কিন্তু একা ফিরাডাই ত মুশকিল হইবেনে।খাইতে খাইতে ত মেলা রাইত হইবেনে।আমারে নিয়া আসইপ কেরা?

ঊষা বুঝতে পারল উনার ইচ্ছে আছে।ইচ্ছে থাকাটাই স্বাভাবিক। ভালো মন্দ তো কপালে জোটে না বারো মাসে।ওই নেমন্তন্ন পেলে যা একটু জোটে।ঊষার বড় মায়া হল শ্বশুরের এই কথায় তাই ঊষা বলল

-- ক্যান আমার সাতে আইসপেন।

বিনোদের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল,বউমা তাকে নিয়ে আসবে আহহহ। বউমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল

-- ত্যালে যামানি, ধুয়া ধুতি আর ফতুয়াডা বাইর কইরা দিও।

- আইচ্ছা,আমি বাইর কইরা দিতেচি, তাড়াতাড়ি সাইজা গুইজা বাইর হয়েন।

ঘরে ঢোকার আগে ঊষা শ্বশুরকে বলল

- উনি এহনো ফিরে নাই?

-কেরা? গুরুদেব?উনি তো আইসা কি জিনি ঘরের মধ্যে রাইখ্যা বিয়া বাড়ি চইলা গেল।কইল তুমি ফিরলে তুমারে জেন কই আমি।তুমার জইন্যেই মনে অয় কিছু আনচে ঘরে যাইয়া দেহগা।


ঊষা সরাসরি পাশের রুমে চলে গেল। হাতের কুপি টেবিলে রেখে চৌকিতে নজর পরতেই খুশিতে ঝলমল করে উঠল ঊষার মুখ।একটা ভাঁজ করা নতুন শাড়ি রাখা। তার উপর শায়া- ব্লাউজ, এবং নতুন ব্রা- প্যান্টি।গতকালের সেই গয়না, একটা মেকআপ বক্স।তার সাথে সাদা ধবধবে বেলীফুলের গাজরা।অন্য একটা লম্বা চওড়া খাপ খুলে দেখল তাতে নতুন জুতা। বেশ সুন্দর এবং অবশ্যই দামী। ঊষা অবাক হয়ে যায় এত এত সব দেখে। বাপের জন্মেও তো এতকিছু সে চোখে দেখেনি।বুক খুশি আর উত্তেজনায় ধুকপুক করতে লাগল, কাঁপতে থাকা হাতে ঊষা প্রথমেই গাজরাটা আলতো করে তুলে নিল। নাকের কাছে এনে চোখ বুজে নাক টেনে টেনে ঘ্রাণ নিল বার কয়েক।আহহ কি সুবাস।

এরপর ব্রা-প্যান্টি হাতে নিতেই লজ্জায় মরিমরি অবস্থা।আজ পর্যন্ত এগুলো সে ব্যবহার করেনি।উল্টে-পাল্টে কয়েকবার ঊষা নাড়াচাড়া করল,কি নরম!আঙুল ডুবে যায় আর কি বিশ্রী আকৃতির এগুলো।এপার-ওপার সব কিছুই তো দেখা যায়।মনে মনে ঊষা ভাবে -লোকটার কান্ডজ্ঞান নেই এভাবে কেউ মেলে রেখে যায়?ইসসস শ্বশুর যদি ঘরে এসে এগুলো দেখত!

মেকআপ বক্সটাও খুলে দেখল, তাতে রঙবেরঙের চকলেটের মতো সাজানো রয়েছে সব।এদের  ব্যবহারই তো জানা নেই।মুখে মাখতে হয় শুধু এটুকুই জানা আছে।তা হোক পরে দেখা যাবে। 

এরপর শাড়িটা হাতে তুলে নিল।নুসনুস করছে শাড়িটি।'ময়ূরকণ্ঠী' তাঁত বেনারসি।চওড়া পাঁড় জুড়ে পেখম মেলে ময়ূর বিচরণ করেছে।চোখ জুড়িয়ে যায়।দু'হাতে শক্ত করে বুকের সাথে গেঁথে ধরল শাড়িখানা।চোখ ভিজে উঠতে লাগল নতুন ঘ্রাণে।ঊষার মনে পড়ে বিয়ের সময় কত সাধ ছিল সুন্দর দেখে একটা  বেনারসি পড়বে, তা কপালে জুটেনি।বিয়ের পর তো নয়-ই।সারাজীবন সুতীর সাদামাটা  শাড়িতেই কেটে গেল।আজ এত বছর পর তার সাধ মিটল।তাও সে সাধ কে মেটালো?না,যে তার সব কিছু ছিনিয়ে নিয়েছে।ছিনিয়ে নিয়েছে বলেই হয়ত সুদসমেত ফিরিয়েও দিচ্ছে।গুরুদেবের প্রতি শ্রদ্ধায় মন পরিপূর্ণ হয়ে উঠল ঊষার।মনে মনে একটু অনুশোচনাও হল - লোকটাকে আজই হয়ত চলে যেতে বলতে হবে।তখন বলতে বলতেও বলতে পারেনি।কিন্তু উপায় কি?
এমন সময় শ্বশুরের গলার আওয়াজে ঊষার ধ্যান ভাঙল।শ্বশুর ধুতি চাইছে।


শ্বশুর চলে যাওয়ার পর অনেক অনেক সময় ধরে ঊষা নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠল।নিজেকে সাজিয়ে তুলতে লাগল ধীরে ধীরে বহু যত্নসহকারে।এত সময় নিয়ে সে কোনদিন সাজেনি, সাজবে কি করে? সাজার সুযোগই তো পায়নি এতদিন,আজ সব কিছুই তার মনের মতো হয়েছে।সময় লাগা স্বাভাবিক।ছোট আয়নায় যখন নিজেকে দেখল ঊষা যেন নিজেই চমকে উঠল--এত সুন্দর সে!সাজলে তাকে এত এত রূপবতী লাগে! তৃপ্তির একটা সুক্ষ্ম রেখা বয়ে গেল ঊষার  ঠোঁটের কোণ দিয়ে।


 সন্ধ্যা প্রায় আটটা -সাড়ে আটটার দিকে ঊষা যখন গরবিনী চিত্তে স্বর্গ থেকে নেমে আসা অপ্সরার মত বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল তখন একঝাঁক মুগ্ধ নয়ন ঘিরে ধরল তাকে।হা করা মুখ গুলো বুঝতে ভুলে গেল।সভাসদদের মধ্যে বসে থাকা একজন বলেই ফেলল
- আমাগো অজয়ের বউ না?
আরেকজন বলল-আহহ সাক্ষাৎ মা নক্ষী।
আরেকজন অজয়ের ভাগ্যকে হিংসা করে বলল-বেটার ভাগ্য বটে!
উপরে উপরে স্তুত্তি করলেও এদের মধ্যেই বসে থাকা  দু-একজন বাড়া চুলকে নিয়ে মনে মনে বলল
- আহহ মাগির রূপের জৌলুস কি,পুইড়া মরবার মন চায়।....কি ডাসা মাগির দুধ আর পোঁদ......।


সভার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এদের হা করা মুখ, ফুসফুসানি কিঞ্চিৎ শুনে ঊষার মুখ মিশ্র এক অনুভূতিতে রাঙা হয়ে উঠল।মাথা নত করে বাম গালে ঝুলে পড়া একগুচ্ছ  চুলের লতি আলতো করে কানে গুজে কাঁপতে থাকা পায়ে ঊষা চলে গেল,যাবার আগে বাঁকা চোখে একবার মাত্র গুরুদেবের দিকে তাকাল, দেখল গুরুদেব অপলক মুগ্ধ দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।ঊষা মুচকি একটু হেসে মুখ ঘুরিয়ে নিল,সে আজ সত্যি  ভীষণ ভীষণ খুশি---তার রূপের দাবানল ছড়িয়ে পরেছে শুষ্ক অরণ্যে। 

ঊষা গিয়ে দাঁড়াল মহিলাদের সভায়।দু-তিনজন চেয়ারে বসে আছে এবং কয়েকজন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসি ঠাট্টা করছে--চৌধুরী বাড়ির মেজবউ তাদের কেন্দ্রবিন্দু।কারণ গ্রামের ধনীব্যক্তির বউমা সে,তাই কদর অনেকটা বেশি। আর আছে বিমলা, শেফালী, সাথে আরও দু-একজন আর সেই মুখপুড়ি সরলা।ঊষাকে দেখে সবার গল্প গুজব হাসি-ঠাট্টায় যেন কিছুটা ভাঁটা পরল।সেই সাথে একটু ফুসফুসানি বেড়ে গেল।ঊষা এতসব না ভেবে হাসি মুখে জিজ্ঞেস করল

- তোরা সবাই কহন আইচাস?

কথা বলার সময় বাড়ে বাড়ে হাত দুটো কেমন অকারণে নাড়াচ্ছিল ঊষা।এই ব্যাপারটা সবাই লক্ষ্য করে ঊষার মুখের দিকে কেমন তুচ্ছ ভাবে তাকালো, একটু মুচকি হাসিও ফুটে উঠল সবার ঠোঁটে।ঊষার জিজ্ঞাসার উত্তর দিল সরলা শয়তানি হেসে

-- আমরা তো মেলাক্ষণ আগেই আইচি, তোর দেরি হইল ক্যা? গুরুদেব তো সন্দার আগেই চইলা আইচে।হিহিহিহিহিহিহি

শেফালী এতক্ষন ঊষার পা থেকে মাথা অবধি দেখছিল।এবার  অবাক হয়ে বলেই ফেলল

- বাহ! কি সুন্দুর তোর হারডা, কেরা কিনা দিচে, তোর ভাতার?

- গুরুদেব...হিহিহিহি।
একদম চাপামুখে কথাটা বলল সরলা, ঊষা শুনতে না পেলেও বাকি দু-একজন শুনে ফেলল। কিন্তু ঊষা আছে নিজেকে নিয়ে।তার দিকেও যে নজর পরেছে এতে  খুশিতে নেচে উঠল সে, এটাই মোক্ষম সময়।গলার হারটা উঁচু করে ধরে  হেসে বলল

- হ, মেলা দিনের শখ ছিল তাই কিনা দিয়া গেচে।

এরপর একের পর এক গয়না, শাড়ি সম্পর্কে বলতে লাগল।কেউ শুনছে কিনা লক্ষ্যই করল না।এদিকে সবাই মিটমিট করে হেসেই চলেছে।এদের মধ্যেই একজন হাসি থামিয়ে বলে উঠল

- তা তোর ভাতার তো মেলা বড়লোক রে,এমন ভাতার পাইলে আমি নিত্তি নতুন গয়না বানাইতাম হিহিহিহিহিহ।

সরলা হেসে বলল
--মাগি, ভাতার বড়লোক হইলেই পাউন যায় না,এর জইন্যে সুন্দুরী হওয়া নাগে,মাইনষের মন ভুলান নাগে, তোর মত কালুঠি রে কেরা গয়না দিব.... হিহিহিহিহ।

হো হো হো একটা হাসির রোল পরে গেল।এতক্ষণ পরে ঊষার মনে খটকা লাগল। সবাই তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করছে?কথার মানেটাও কিছু কিছু আন্দাজ করতে পারল।আবার ঊষা মনে মনে এটাও ভেবে নিল যে - এরা সবাই তার রূপের হিংসা করছে, করুক, এটাই স্বাভাবিক।নারীরাই নারীদের সবচেয়ে বেশি হিংসা করে, জ্বলে পুড়ে মরে।মরুক।


এদের সাথে আর কথা বলতে ভালো লাগছে না।এরা সুন্দরের কদর জানে। কিন্তু চট করে সরেও যেতে পারল না।একটু উশখুশ করতে লাগল ঊষা,এর মধ্যেই নজর পরল আরেকটি সুন্দরী মহিলা প্রবেশ করছে প্যান্ডেলের ভেতর।ঊষার মন খুশি হয়ে উঠল- তার সই নয়নতারা এসেছে।ঊষা এগিয়ে গেল সইয়ের দিকে।ঊষাকে দেখে নয়নতারাও বেশ খুশি হলো।ঊষাকে জাপটে ধরে বলল

-- বাহ! কি মিস্টি লাগতেচে তোরে সই।আইজ কার মাথায় ঠাটা ফালাবি হিহিহিহিহিহিহিহি

- যাহ কি সব কস নজ্জা নাগে না বুজি।

-- নজ্জার কি আচে? তোরে  দেইহা ত আমারই লোভ হইতেচে হিহিহিহিহি, কপাল ভালো যে আমার মিনসে আইজ আসে নাই, নাইলে তোর পিচনেই ঘুরঘুর করত।

দুজনেই খিলখিল করে হেসে উঠল।তারপর ঊষা বলল
- তুই ত খাসি হইতেচাস দিন দিন  হিহিহি হিহিহি।

-- তাও ত কেউ খাইবার আসে না হিহিহিহিহহি

হাসি থামিয়ে ঊষাই বলল
- নে হইচে, চল ওইদিকে যাইয়া বসি অল্প.....। 


বিয়ের লগ্ন সাড়ে এগারোটায়।বরযাত্রী এখনো এসে পৌচ্ছায়নি,কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। এর মধ্যেই  খাওয়া-দাওয়ার জন্য ডাক পরল।কচি-কাচা থেকে বয়স্ক যারা আছেন একে একে উঠে যেতে লাগল।শুধুমাত্র মহিলারা বাদে।পুরুষদের পরে মহিলারা খাবে এটাই নিয়ম।এ যে কেমন নিয়ম জানি না।কে যে এ নিয়ম সমাজের গোড়া অবধি পৌচ্ছে দিয়েছেন তাও জানা নেই।কিন্তু এ নিয়ম সকলেই মেনে চলে,বিশেষ করে মহিলারা,তারই যেন বড় দ্বায়িত্ব নিয়েছে এই উদ্ভট নিয়ম টিকিয়ে রাখার।


গুরুদেব যেখানে বসে গল্প করছিল সে জায়গাটা প্রায় ফাঁকা হয়ে এসেছে,সবাই খেতে চলে গেছে।থাকার মধ্যে পুরোহিত, মাতব্বর, পরাণ আর গুটি তিন-চারজন ব্যক্তি।এরা সমাজের মাথা এরা আগে গিয়ে বৈঠকে বসতে পারেনা।অনেকটা ফাঁকা থাকায় গুরুদেব উনার চেয়ার ছেড়ে অন্য চেয়ারে গিয়ে বসলেন।কারণ একটাই ঊষা।অনেকটা দূরে ঊষা আর তার সই গল্প করছে।সেদিকেই মুখ করে বসে গুরুদেব সবার তালে তাল মিলিয়ে হ্যাঁ হু করে চললেন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই চোখাচোখি হয়ে গেল দুজনের। ঊষা মুচকি একটা হাসি দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিল।নয়নতারা লক্ষ্য করে বলল
- কি লো সই মুচকি হাসতেচাস যে মনে ধরল নাকি কাউরে হিহিহিহি।
- ধ্যাৎ কি যে কস।

নয়নতারা কিছু বলবে তার আগেই সেখানে এসে উপস্থিত হল অমর আর ভজা।ছেলেকে দেখে নয়নতারা বলল

-- এহনো খাস নাই তোরা?
-- নাহ, এই বৈঠাক উঠলেই বসমু।

বলেই ভজা ঊষার দিকে হা করে তাকাল।এত সুন্দর লাগতেচে!ভজার চোখের ভাষা বুঝতে পেরে ঊষার আরও হাসি পেল, বিশেষ করে সেদিনের ঘটনার কথা।আজও ছেলেটা ভিমরি খেয়েছে।এরপর অমরের দিকে তাকিয়ে বলল
- তাড়াতাড়ি খাইয়া নিস সোনা, ঝগড়া-ঝাটি করিস না কারও সাথে। 

যদিও অমর শান্ত ছেলে, ঝগড়া করার প্রশ্নই আসে না।তবু মায়েদের বুলি ওটা।
অমর হ্যাঁসূচক সম্মতি দিয়ে ভজা বলল 

- চল এহন।
দুজনেই চলে গেল।আবার দুই সই মিলে গল্প শুরু করল।গল্পের মাঝে হঠাৎ গুরুদেবের দিকে চোরা চাহনিতে তাকাতেই ঊষা নতুন কিছু আবিষ্কার করল।দেখল এখন শুধু গুরুদেব নন।পরাণ কাকাও তার দিকে জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়ে আছে।কখন যে সে নিজের জায়গা ছেড়ে গুরুদেবের পাশে বসে পরেছে ঊষা লক্ষ্যই করেনি।চোখ সরিয়ে নিল ঊষা।ভুলেও আর সেদিকে তাকাতে পারল না।

এর মাঝেই হৈ-হুল্লোড় পড়ে গেল বর চলে এসেছে।যে যার মতো দৌড়া-দৌড়ি করে গেটের দিকে যেতে লাগল।ঊষা আর নয়নতারাও গেল তবে আস্তে ধীরে।ঊষারা গিয়ে দেখল গেটের সামনে লম্বা ভীড় জমে গেছে, অগত্যা দূরেই দাঁড়াতে হলো। নয়নতারা বার বার বলতে লাগল

-চল না ভিতরে ঢুহি।

এত গরম, তাছাড়া সাজগোছটাও নষ্ট হবে এই ভেবে ঊষা সেখান থেকে নড়ল না।নয়নতারা একাই এগিয়ে গেল,বিয়ে বাড়ির এটাই তো মজার সময়।ওদিকে বরকে ঘিরে মহিলাদের হাসি-তামাশা শুরু হয়ে গেছে।হাজার এক টাকা বরের কাছ থেকে আদায় করে নিতে চায় তার শালিকারা।তাই নিয়েই দুপক্ষের বাগবিতণ্ডা চলছে।এরমাঝেই সেই ভীড় দুদিকে ভাগ হতে শুরু করল

-- সরো সরো যাইবার দেও যাইবার দেও।
সামনে একজন গুরুদেবকে পথ তৈরী করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।গুরুদেবের সাথে মাতব্বর,  পরাণ আর দু-একজন। সবাই এগিয়ে গেলেও কেন জানি না পরাণ আর এগিয়ে গেল না, প্রায় ঊষার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পরল।বিভিন্ন কুটুক্তি,হাসি মজাক সামনে থেকে ভেসে আসছে। কোন পক্ষই ছেড়ে কথা বলছে না।ঊষাও হাসছে প্রাণ খুলে।এর মাঝেই পরাণ নিজে যেচে কথা পারল

-- 'বরডা কি সুন্দুর হইচে না?আমাগো মন্টুর ম্যায়ার কপাল ভালো এত সুন্দুর জামাই পাইল।'
 ঊষাও হাসির সাথেই জবাব দিলো
- হ ঠিক কইচেন কাকা,খুব মানাইব দুইজনরে।

- মানাইব না ছাই, কনে কালা মিচমিচা মন্টুর ম্যায়া আর কনে এই সুন্দরশন জামাই।এ বেটা নির্ঘাত ঠইগল, টাহা ছাড়া আর কিচুই পাইল না,...তুমার মতো সুন্দর কাউরে পাইল না বেটা বিয়া করবার?

এবার ঊষা অবাক হয়ে পরাণের দিকে তাকালো - এ যে কথার ফাঁকে  তারই  রূপের বর্ণনা করছে।পরাণের কথায় লজ্জাই পেল ঊষা।তবু মনের গভীরে কোথায় যেন একটু গর্বও অনুভব করল।পরাণ বলেই যাচ্ছে

-- আমি হইলে কি আর এই পেত্নীরে টাকার জইন্যে বিয়া করতাম.......।আমার টাকা থাইকলে তুমার মত সুন্দর নক্ষী বাইছা নিতাম....।
একটু থেমে বলল
-যাই কও বউমা আমাগো অজয় জিতচে, এই বেটার মত ঠগে নাই...আরে বেটা টাহাডাই কি সব রেএএএএএ 

আবারও একটু থেমে 
---সবই কপাল বুঝচাও না বউমা সবই কপাল।

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পরাণ।ঊষা বুঝতে পারে এ যে ভারী বেকায়দায় পরলাম।সরে পরাই উত্তম।ঊষা পেছন ফিরে চলে যেতে লাগল।
-- কই যাও বউমা 
-- পা বেথা করতেচে ভিতরে যাইয়া বসি অল্প।
বলেই ঊষা হনহন করে চলে যেতে লাগল।বেটা পরাণও ভাদ্রমাসের কুত্তার মত পিছু নিল।
- ঠিক কইচাও বউমা, তাছাড়া এগিনা দেহার কি আর বয়স আচে এহন, এহন ওই কচি-কাচা গো ফুরতির সময়। চল চল আমিও যাই।

এত ভারী বিপদ!পিছুই ছাড়ছে না।কি বলে পিছু ছাড়াবে সেটা ঊষা ভেবেই পাচ্ছে না।অগ্যতা প্রায় ফাঁকা চেয়ারে গিয়ে বসে পরল।পরাণ বসে পরল সামনের চেয়ারে।এখন আর কি? পেচাল শুনতেই হবে।এটা সেটা বকবক করেই চলল পরাণ।শুধু মুখ চলছে না চোখও চলছে। ঊষার সারা শরীর গিলে খাচ্ছে ওই দুচোখে।

ঊষা উশখুশ করতে লাগল।কি করে যে উঠে চলে যাওয়া যায়।কিছুক্ষণ পরে মুখ ফুটে ঊষা বলেই ফেলল

-- আপনে অল্প বসেন কাকা, আমি আসতেচি।

-- কনে যাইবা।
ঊষা লজ্জা পেয়ে বলল
- আপনে বসেন আমি এহনি আসতেচি।
পরাণ বুঝতে পারল ঊষা মুততে যাচ্ছে।মুহুর্তেই চিনচিন করে উঠল বুক।সংযত হয়ে কিন্তু হাসি মাধ্যমে বলল

- আইচ্ছা যাও....। 

ঊষা চলে গেল।বাঁচা গেল।সত্যি সত্যি চাপ এসেছে কিন্তু এখন না গেলেও কোন ব্যাপার ছিল না।কিন্তু ওই যে বকবক শুনতে ভালো লাগছিল না তাই উঠে এল।এর চেয়ে মুতে পেট হাল্কা করা অনেক ভালো। 

কিন্তু ঊষা কি জানত এই উঠে আসাটাই ওর জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ালো?

(চলবে)
Mrpkk
Like Reply


Messages In This Thread
Dating for Sex. - by nrj373 - 09-01-2025, 04:55 AM
RE: দীক্ষা লাভ - এক মায়ের পরিবর্তন - by Mr.pkkk - 30-09-2025, 12:19 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)