Thread Rating:
  • 41 Vote(s) - 3.54 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান/ নতুন পর্ব - ৯ ই সেপ্টেম্বর
#87
এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান


একদিন যেটাকে অনাকিমার ক্ষণিকের পাগলামি ভেবে মন থেকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলো সরোজ তার পর যত দিন গড়িয়েছে অনামিকার আচরণে ততই অস্বাভাবিকতা এসেছে।  সেদিন সরোজের সাথে উদ্দাম যৌনতার পর সরোজ ভেবেছিলো সব ঠিক হয়ে গেছে।  কিন্তু এটা জানতো না যে ভাঙনের সবে শুরু।  বরাবর আত্মকেন্দ্রীক অনামিকা কখনোই যেচে সরোজকে ভালোবাসতে আসে নি।  দীর্ঘ বিবাহিত জীবনে সরোজ অনামিকাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে,  যেন ছাড়লেই সে তুমুল স্রোতে হারিয়ে যাবে।  সরোজের ডাকে যে সাড়া দেয় নি সেটা না,  তবে সেই সাড়ায় কোন প্রাণ থাকতো না...... রাতের পর রাত অনামিকার নগ্ন শরীরে নিজেকে প্রবেশের পর অনামিকা থেকেছে নিস্পৃহ.... সরোজের চরম সময় ওকে যেন বাধ্য হয়েই নিজের বাহুতে চেপে ধরেছে।  অনামিকার যোনী নিজের তরল ঘন বীর্য্যে ভরিয়ে দিয়ে শ্রান্ত ক্লান্ত সরোজ পাশে শুয়ে চেয়েছে অনামিকা ওর বুকে হাত রাখুক.....নিজের তৃপ্ততাকে বর্ননা করুক নিজের ভাষায়..... কিন্তু অনামিকা যেন কোন দরকারী কাজ শেষ করে উঠেছে এমন ভাবে পাশ ফিরে শুয়ে পড়েছে..... কাপড়াটুকুও পড়ার সময় হয় নি ওর.....মৈথুন ক্লান্ত সরোজ অনামিকার এই নিস্তেজ নগ্ন শরীরের দিকে হতাশ হয়ে চেয়ে চেয়ে একসময় ঘুমিয়ে পড়েছে।

এতো কিছুর পরেও অনামিকাকে নিজের থেকে আলাদা ভাবে নি সরোজ। কখনো ওর এই আচরনের কারন জানিতে চায় নি।  বরং বিয়ের এতো বছর পরেও একটা সন্তানের অভাবে বিমর্ষ অনামিকাকে ও আঘাত করতে চায় নি।  ওকে ওর মতই থাকতে দিতে চেয়েছে।  অনামিকাও নিজের দায়িত্ব কর্তব্য পালনে কখনোই অবহেলা করে নি। কিন্তু সেই রাতের পর অনামিকার চেনা রুপ আস্তে আস্তে পাল্টাতে থাকে।  কারণে অকারণে সরজের উপর তিক্ত বাক্যবাণ প্রয়োগ করা ছাড়াও নিজের প্রতি অযত্নও ধীরে ধীরে বাড়িতে থাকে।  সরোজের মাথায় কিছুই আসে না....আজকাল অনামিকার সাথে কথা বলতও ওর ভয় লাগে।  না জানি কোন তীক্ষ্ণ বাক্যবাণ ধেয়ে আসে? 

সুস্থ নয় অনামিকা।  ভিতরে ভিতরে ভাঙন চলছে ওর মধ্যে।  কেন? কারন কী?  বিয়ের এই দীর্ঘ ১৪ বছরে তো কখনো এমন অস্থির আচরন করে নি অনামিকা।  তাহলে হঠাৎ করে আজ এসবের কারণ কি অন্য কোন পুরুষ??

কিন্তু কে সে??  অনামিকা তো বাইরে কোথাও যায় না যে তার সাথে কোন পুরুষের সম্পর্ক তৈরী হবে?  তবে কি কোন প্রাক্তন কারো ওর জীবনে পুনরাগমন ঘটেছে?  তেমন হলে জানিয়ে দিক সরোজকে..... ও নির্দ্বিধায় চলে যেতে দেবে অনামিকাকে।  যে সম্পর্কে মনের বাঁধন নেই,  সেটা থাকা আর না থাকার মধ্যে পার্থক্য কোথায়?  কিন্ত আগে জানবে যে কে সেই পুরুষ.... যার জন্য অনামিকা সরোজকে আঘাত করতে পিছপা হয় না.... নিজেকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে ও? 


আজও সারা বাড়ি অন্ধকার।  নিম্নচাপের কারণে সন্ধ্যা থেকেই ঝির ঝির বৃষ্টি পড়ছে।  সারা বাড়িতে কোথাও নেই অনামিকা।  সিঁড়ি বেয়ে ছাদের দিকে এগোয় সরোজ।  আজ অনামিকার উদ্দেশ্য জানতেই হবে।  ছাদে পা রেখে দাঁড়িয়ে যায় সরোজ।  একটু দূরে ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে অনামিকা। মোবাইলএর  লাইটটা জ্বালে সরোজ।  যদিও আজ পুর্নিমা বলে মেঘলা আকাশ হলেও চারিদিকে আবছা আলো আছে।  সরোজের উপস্থিতি টের পেলেও অনামিকার মধ্যে তাতে উৎসাহ দেখা যায় না।  ও সেভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে।  ব্লাউজহীন গায়ে শুধু শাড়ীর আঁচল ফেলা কাঁধে... সেটাও বৃষ্টিতে ভিজে গায়ের সাথে লেপ্টে আছে।  অনামিকার মসৃণ ফর্সা আর চওড়া পিঠ একেবারে ৭০ ভাগ উন্মুক্ত..... শিঁড়দাঁড়ার উপত্যকা স্পষ্ট ভাবে নেমে গেছে নীচে উত্তল বাঁকের মাঝ বরাবর। ভেজা শাড়ী ওর নিটোল গোল নিতম্বের সাথে লেপ্টে আছে। মাঝখানের বিভাজিকা স্পষ্ট...... এই দৃশ্য পুরুষ মাত্রই শরীরে উত্তেজনা আনবে।  কিন্তু আজ সরোজের মনে কোন কিছুর প্রতিই আগ্রহ নেই।  সামমে আধা নগ্ন অনামিকার আগুন ঝরানো শরীরী আবেদন ওকে একেবারেই মোহিত করে না।

" অনু...... " সরোজ ডাকে, সরোজের ডাকে ঘুরে দাঁড়ায় অনামিকা।  স্থির চোখে তাকায় ওর দিকে।  সেই চোখে কোন কিছুর প্রকাশ নেই।  একেবারে নীরব আর নিস্পৃহ।  মাথার সিঁদুর পড়া কবেই ছেড়ে দিয়েছে ও,  শরীরের কোথাও কোন প্রসাধনের চিহ্ন নেই।  খোলা ভেজা চুল লেপ্টে আছে।  ওর ব্লাউজহীন বুকে একপাশের স্তন সম্পূর্ন দৃশ্যমান।  ভেজা স্বচ্ছ শাড়ীর অন্তরালে অপর বুকের গাড় রঙের বৃন্ত তার অস্তিত্ব প্রবলনভাবে জানান দিচ্ছে। 

কথায় আছে নদীর এ কূল ভাঙে আর ও কূল গড়ে।  মানুষেরও তাই।  কিন্তু বয়স কোথাও এসে অনামিকার কাছে থমকে গেছে। বিয়ের চৌদ্দ বছর পরেও অনামিকার কোথাও ভাঙন নেই।  ধীরে ধীরে আজও ওর শরীর যেন প্রতিনিয়ত গঠিত হচ্ছে।  পিনোদ্ধত স্তনের কোথাও অবনমনের চিহ্ন নেই, ঠান্ডা বৃষ্টির জল গলা বুক বেয়ে স্তনকে ভিজয়ে নীচে নেমে আসছে।  শীতল জলের স্পর্শে স্তনের বোঁটা জমাট বাঁধা শক্ত দানার মত লাগছে.... ভেজা স্তনের গায়ে বিন্দু বিন্দু জলে
র ফোঁটা... কোমরের নীচে জড়ানো শাড়ীর আড়ালে কিছু দেখা যাচ্ছে না..... তবে এতো বছরে বহুবার সেখানে প্রবেশ করলেও অনামিকার মনে সরোজ কোনোদিন প্রবেশ করতে পারে নি। 

" তুমি কি চাও... অনু? " সরোজের স্থির দৃষ্টি অনামিকার চোখের দিকে।

অনামিকা সরোজের কথা বোঝার চেষ্টা করে।  উত্তর দেয় না।

" উত্তর দাও...... এভাবে চলতে পারে না... আমি যন্ত্র না,  মানুষ...... এভাবে আমার উপর মানসিক চাপ দিতে পারো না তুমি..... তোমার সব কথা আমায় বলো আজ... "

" তুমি এখন যাও সরোজ " অনামিকার ঠোঁট সামান্য নড়ে " আমাকে একা থাকতে দাও "

" না..... আমি যেতে চাই না.....আমি জানি আমার জন্য তোমার কোন সহানুভুতি নেই..... কিন্তু তার জন্য তো আমি নিজেকে শেষ করতে পারি না.... তোমার অনুভূতি কার জন্য সেটা তো আমাকে জানতে হবে। "

" কেনো জোর করছো?  যদি চাও আমি থাকবো না তোমার সাথে.... কিন্তু আর কিছু জানতে চেও না।" অনামিকা চোখ  নামিয়ে বলে।

সরোজ এগিয়ে এসে অনামিকার একটা হাত চেপে ধরে ঝটকা দেয়। সেই ঝটকায় ওর ভেজা আঁচল কাঁধ থেকে নেমে নীচে পড়ে যায়।  অনামিকা সম্পূর্ণ নিরাবরণ উর্ধাঙ্গ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।  অনামিকার হাত চেপে একটু মোচড় দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে সরোজ বলে,  " ওসব বলে পার পাবে না..... হয় বলবে না হয় এখান থেকে একসাথে দুজনে লাফ দিয়ে মরবো......সরোজ ছাদের রেলিং এর কিনারায় টেনে আনে অনামিকাকে। 

কেঁদে ফেলে অনামিকা, " পাগলামো করো না সরোজ.... আমাকে আমার মত থাকতে দাও..... তুমি চাইলে আমি চলে যাচ্ছি "

অনামিকার নগ্ন বুক সরোজের বুকের সাথে ধাক্কা খাচ্ছে।  সরোজ এক হাতে অনামিকার হাত চেপে অন্য হাতে ওর মাথার পিছনে ধরে ওকে নিজের কাছে টেনে আনে,  মুখের সাথে মুখ প্রায় লাগিয়ে বলে,  " যদি আমার মৃত্যুর জন্য তুমি দায়ী না হতে চাও তাহলে আজ বল..... কার প্রেমে তুমি এমন করছো?  কে সে?  "

চমকে ওঠে অনামিকা।  সরোজকে ও বিন্দুমাত্র ভালোবাসে না সেটা সত্য তবে ওর কারণে সরোজের কিছু হলে সেটাও সহ্য হবে না ওর..... আবার  সত্যিটা জানার পর সরোজ হয়তো কোনদিন ওর মুখ দেখবে না.... এখানে থাকলেও এই বাড়ি ঘর সব পর হয়ে যাবে।

" বল....অনু..... কার জন্য আমাদের সংসার শেষ করে দিলে তুমি?  নিজেকে তিলে তিলে শেষ করছো?  "

শরীরের শক্তি প্রয়োগ করে সরোজকে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দেয় অনামিকা।  বৃষ্টির আওয়াজ ছাপিয়ে ও চেঁচিয়ে ওঠে, " জানতে চাও..... খুব শখ তোমার জানার?  তবে জানো...... রাজু আমার প্রেম,  আমার ভালোবাসা.... আমার বেঁচে থাকার প্রেরনা সবকিছু। "

" মানে?  " সরোজের মাথায় সব জট পাকিয়ে যায়।  " রাজু আমার ভাইপো,  তোমার ছেলের মত..... সে কিভাবে.......?" এমন একটা নাম সরোজ একবারেই আশা করে নি।  রাজু? ...... শেষে এতো নীচে নেমে গেলো অনামিকা!  নিজের ছেলের মত বয়সের ছেলের সাথে.....?  ছি ছি..... অনামিকাকে ঘৃণা করার বোধটুকুও আসছে না সরোজের। ওর মাথায় পাকিয়ে যাওয়া জট খোলার চেষ্টা করে ও। 

অনামিকা কিছু না বলে জোরে জোরে নিশ্বাস নেয়, সরোজের অভিব্যাক্তি দেখার সাহস ওর নেই,  ও নীচের দিকে চোখ নামিয়ে রাখে।

কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে একটা ঘোরের মধ্যে থেকে সরোজ বলে " তোমাদের শারিরীক সম্পর্ক...... হ...য়ে..ছে....??

মুখে কিছু না বলে নীরব সম্মতির দৃষ্টিতে নীচে তাকিয়ে থাকে অনামিকা।

একটা প্রবল প্রতি আক্রমনের অপেক্ষায় ছিলো অনামিকা।  সরোজের তীব্র আঘাতে অপেক্ষায় দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে ছিলো ও। চারিদিক ঝড় আসার আগের পরিবেশের মত নিস্তব্ধ।  সরোজের দিকে তাকাতে পারছে না অনামিকা.....

একটা ঠান্ডা অথচ তীক্ষ্ণ শব্দ ভেসে আসে সরোজের কাছ থেকে,  " বেরিয়ে যাও "

এতো নীরব প্রতি আক্রমন কল্পনাও করে নি অনামিকা।  ও প্রবল বিস্ময়ে মুখ তুলে তাকায় সরোজের দিকে।  সেখানে একটা তীব্র ঘৃণা থিক থিক করছে.... সামান্য দুটো কথার মাধ্যমে হাজার বাণের আঘাত জর্জরিত করছে অনামিকাকে। ও ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু বলতে যায়,  আওয়াজ বের হয় না.....শুধু ঠোঁটই নড়ে,  কোন ভাষা আসে না।

" আজ রাতের পর তোমার এই চেহারা আমি দেখতে চাই না অনু...... প্লীজ " " আর হ্যাঁ.....যদি ভাবো পরে আলোচনায় সব ঠিক হয়ে যাবে সেটা বৃথা, তোমার এই মুখ আর কোনদিন আমার সামনে আসলে আমি আত্মহত্যা করবো,  "থেমে থেমে কথাটা শেষ করে একরকম দৌড়ে নীচে চলে যায় সরোজ।  অনামিকা ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।  যেনো সরোজ না,  একটা জোর করে বেঁধে দেওয়া সম্পর্ক বাঁধন খুলে চলে যাচ্ছে।  ওকে থামানোর কোন গরজ বোধ করে না ও। নিজের গলায় ছুরি চালানোর আগে যা ভয়টা থাকে ছুরি একবার চালানো হয়ে গেলে সেই ভয় আর থাকে না.....অনামিকা সরোজের ব্যাপারে একেবারে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে।  চৌদ্দ বছরের সম্পর্ককে কতগুলো মিথ্যা প্রতিশ্রুতির আড়ালে বাঁচিয়ে রাখার কোন গরজ নেই ওর  মধ্যেও।

সরোজ আর তার সংসারে এতোদিন শুধু দায়িত্ব পালন করতে এসেছিল ও। আজ রাজুর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে হয়তো সরোজের ঘৃণা এতোটা প্রবল হতো না.... কি ভাবছে সরোজ এখন ওকে?  কামপিপাসু?.........  ছেলেভোলানো নারী?.......  নাকি বেশ্যা? 

অনামিকার সামনে এখন কোন লক্ষ্য নেই।  কোন উদ্দেশ্য নেই।  কার জন্য নিজের ছেলেভোলানো সংসার জলাঞ্জলি দিলো সেটাও জানে না।  ও কি সাইকো হয়ে যাচ্ছে?  নাকি কোন একটা ভ্রমের মধ্যে আছে যেটা ওর কল্পনাকে বাস্তবে রুপান্তরিত করছে?  কিছুই মাথায় আসে না ওর। বৃষ্টির বেগ বেড়েছে।  তুমুল জলরাশি ওর নগ্ন উর্ধাঙ্গ ধুয়ে নেমে যাচ্ছে গহীন খাদের অন্তরালে।  অনিশ্চিত জীবনের মাঝেও একটা স্বাধীনতার সুখ ওকে কুরে কুরে খাচ্ছে।  বিয়ের প্রথম দিন থেকেই কি এই স্বাধীনতাই ওর কাম্য ছিলো?  রাজু একটা উপলক্ষ্য মাত্র সরোজের কৃত্তিম বন্ধন থেকে দূরে সিরে যাওয়ার?  আসলে মানুষ যা চায় সেটা পরিপূর্ণ রুপে পেতে চায়,  অন্যকে কেউ ভালোবাসে না...... ভালোবাসে নিজেকে... নিজের ভালোলাগাকে..... অনামিকা মহান সাধিকা না,  অতৃপ্তি,  লোভ,  আকাঙ্খা,  ঘৃণা,  ভালবাসা সব কিছুই আছে ওর মধ্যে।  রাজু অনামিকার ভালোলাগা..... ভালোবাসা কি?  রাজুর মধ্যে ও খুঁজে পায় কৈশোরের অনীককে...... তাহলে সেখানে রাজুর অস্তিত্ব কোথায়?  এখান থেকে যাওয়ার পর রাজু একবারের জন্যও অনামিকার খোঁজ নেয় নি..... তার জন্য ওর মধ্যে অভিমানের জন্ম হয়েছে,  কিন্তু তাতে কি রাজুর কিছু আসে যায়?  আসলে অনামিকা বা রাজু..... দুজনেই নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েছে..... রাজু অনামিকার অধিকার,  এটাই ও মনে মনে বিশ্বাস করে.... তাই রাজুকে ও ছাড়তে পারবে না.....।




আজ পল্লবী নেই। বিশেষ কাজে কলকাতা গেছে।  কাল ফিরবে।  ঘরে একা রাজু আর পাশের ঘরে লালী আছে।  আগের দিন এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়ে এখনো শরীর রোমাঞ্চিত হয়ে আছে। অদ্ভুত সব নিয়ম কানুন রিতি নীতি...... লালী কি জানতো না যে সেখানে স্বামীকে নিয়ে যেতে হয়?  আর এমন পরিবেশে এমন নানা রিচুয়াল দেশের কোনায় কোনায় বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে হয়ে আসছে।  এখানে না আসলে এসব ও জানতোও না। 

সেদিনের পর থেকে লালী ওকে দেখে একটু যেনো লজ্জা পাচ্ছে।  কথা বললেও আগের মত সেই চঞ্চলতা নেই কথায়।  সহজে রাজুর সামনে আসে না।  খাবার দিয়েই আগের মত দাঁড়িয়ে থেকে গল্পো জুড়ে দিচ্ছে না। 

আজ রাতে অনেক দেরীতে ঘুম আসে।  এখানে আসার পর আর কাকিমার সাথে যোগাযোগ করা হয় নি।  ও জানেও না কাকিমা কেমন আছে।  অনেক বার কাকিমার নম্বর ডায়াল করতে গিয়েও কেটে দিয়েছে।  কেনো জানে না।  এখানে আসার পর লালী আর পল্লবীর সঙ্গ ওকে মানসিক ভাবে অনেক শক্ত করেছে।  বোধহয় সেই কারণেই আবার পুরোনো ঘা খুঁচিয়ে নিজেকে দুর্বল করে তোলার ইচ্ছা হয় নি।  ও জানে কাকিমা এমন একজন মানুষ যার গলার আওয়াজ একমূহুর্তে ওকে সব ভুলিয়ে দিতে পারে।  সেটা ও চায় না।  পল্লবী সাদা সিধা উচ্ছ্বল ঝর্নার মত।  সাথে থাকলে ওকে ভালোবাসতেই হয়,  কিন্তু কাকিমার রুপ যেমন আগুন,  অন্তরের গভীরতাও সমুদ্রের মত।  এই বয়সে সেই গভীরতায় পৌছানো সহজ না.... তার থেকে যে যার মত দূরে থাকুক,  ভালো থাকুক...।


একটা ফোঁপানো কান্নার আওয়াজ আসছে কোথা থেকে।  বাইরে অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে,  টিনের চালে তার আওয়াজ ছাপিয়ে কান্নার শব্দ আসছে বলে মনে হচ্ছে।  রাজু উঠে বসে।  পাশে লালির ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে।

এটো রাতে আবার কি হল? অবশ্য আজ সারাদিন লালী বিশেষ কথা বলে নি।  সকালে শহরে গেছিলো।  দুপুরের পর এসে রান্না করে।  সেই থেকেই মুখ গম্ভীর। রাজু নিজেকে নিয়ে একটু ব্যাস্ত থাকায় ব্যাপারটা বিশেষ গুরুত্ব দেয় নি।  এখন মনে হচ্ছে কিছু নিশ্চই হয়েছে,  না হলে এতো রাতে লালী কাঁদবে কেনো?

রাজু বিছানা থেকে উঠে দরজার পর্দা সরিয়ে পাশের ঘরে উঁকি মারে।  ঘরে একটা হালকা আলো জ্বলছে।  লালি মেঝেতে বিছানা করে শোয়। আজও বিছানা পাতা।  কিন্ত ও বিছানার এক কোনে দেওয়াল হেলান দিয়ে বসে আছে হাঁটু মুড়ে। গায়ে ব্লাউজ নেই,  শাড়ীটা টাইট করে পেঁচিয়ে পড়া।  ভাঁজ করা হাঁটুর উপর মাথা রেখে ও  কাঁদিছে।  ওর ফোঁপানোর ফলে পিঠটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। 

ধীর পায়ে রাজু এগিয়ে লালীর পাশে বসে।  লালীর কাঁধে হাত রাখে...
" এই লালি..... কি হয়েছে?  কাঁদছিস কেনো? "

লালী মুখ তোলে।  ওর চোখ লাল, জলে ভিজে গেছে ওর হাঁটু...... রাজুকে পাশে দেখে ওর কান্না আরো বেড়ে যায়। 

" আরে বল.....এভাবে মাঝরাতে কাঁদছিস কেনো?  "

লালী এবার ওর হাত জড়িয়ে ধরে,  " এ দাদা বাবু...... আমি কনোদিন বাচ্চা পয়দা করতে পারবো না রে। "

" কেনো? ..... কে বলল তোকে?  "

লালী ফোঁপাতে থাকে,  " শহরের ডাকদার আমার মরদের পরীক্ষা করেছে..... সেই কাগজ দেখে বুলেছে আমি মা হতে পারবেক না। " আবার কান্নায় ভেঙে পড়ে লালী।  ওর মা হওয়ার স্বপ্ন অনেক দিনের।  এতোদিন তবুও মনে একটা আশা নিয়ে ছিলো যে কখনো মা হবে।  আজ ডাক্তারের জবাব দিয়ে দেওয়ার পর সেই ক্ষীণ আশাটাও নিভে গেছে ওর।  নারীত্বের চরম সুখ থেকে বঞ্চিত হওয়ার দু:খ রাজুর মেটানোর তো ক্ষমতা নেই।  ও লালীর মাথাটা নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে। 

" কাঁদিস না..... ভগবান তো সবাইকে সব কিছু দেন না,  দেখবি তোকে অন্য সুখে সুখী করবে। "

" কি বুলছিস দাদা বাবু তুই?  বাঁজ না হয়েও আমি সবার কাছে বাঁজ হয়ে থাকবো?  আমার বাচ্চা পয়দা করার ক্ষমতা আছে...... "

" তাহলে তোর স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে কর " রাজু লালীকে  নিজের মত করে সমাধান দেখায়।

" ইটা কি বুলছিস তুই?  আমাদের মধ্যে বাঁজ আউরাত কে  কে বিহা করবে বটে?  সবাই জানে আমি বাঁজ..... আমার মরদের দোষ আছে সিটা কেউ মানবেক লাই। " লালী বাস্তব টা বলে। 

রাজু কি বলবে ভাবে পায় না,  এদিকে লালীর অবস্থা পাগলের মত।  সত্যি একটা বাচ্চা এই প্রান্তিক মানুষগুলোর কত স্বপ্নের হতে পারে সেটা কেউ জানে না। শুধু শুধু সমাজের কাছে বন্ধ্যা হয়ে থাকতে কার ইচ্ছা করে? লালীকে কিছু বলেই সান্তনা দেওয়া যাবে না।  ওর চাহিদা নিজের মা হওয়ার,  সেটাই ওকে একমাত্র তৃপ্তি দিত্ব পারে। 

রাজু ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, " শোন,  এমন ভাবে কান্নাকাটি করিস না,  কত লোকেরই তো বাচ্চা থাকে না,  তারা কি এভাবে ভেঙে পড়েছে?

লালীকে এখন এসব বলে কতটা লাভ হবে ও জানে না। এখন ওর মানসিক অবস্থা একেবারেই খারাপ।  কিছু বোঝার মত অবস্থায় নেই। পরে এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। 

লালী মুখ তোলে,  "নারে আমি ভেঙে পড়বেক লাই....... ই দাদাবাবু...... তুই হামার একটা কথা রাখবি?  হামার একটা উপকার করবি?  "

" কি বল.....?" রাজু জিজ্ঞাসা ভরা দৃষ্টিতে তাকায়।  লালী কোন ভনিতা না করে ওর হাত নিজের দুই হাতে চেপে ধরে বলে,  " তুই আমাকে বাজে মেয়ে ছ্যালে মনে করবি না বল?"

" ধুর..... এমন কেনো মনে করবো? তুই বল.....কি বলবি " রাজু ওর দিকে কৌতুহলের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।

লালী কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই যায়।  লালীর ভরাট বুক রাজুর বুকে স্পর্শ করে আছে। ওর চোখের জলে রাজুর গেঞ্জি এর মধ্যেই ভিজে গেছে কিছুটা।

" কিরে বল?  "  রাজু অধৈর্য্য হয়।

লালী একটু মুখ তুলে ওর দিকে তাকায়।  সারল্যে ভরা ওর মুখ।  সেখানে কোন ছলচাতুরীর চিহ্নও নেই।  ওর মমে বেদনা চোখের দৃষ্টিতে ধরা পড়ছে।

" তুইও তো মরদ আছিস...... আমায় একটা বাচ্চা দিতে পারিস লাই? "

" মানে?  কি আবল তাবল বকছিস তুই?  " রাজু লালীর দিকে অবাক হয়ে তাকায়। লালীর চোখে কিন্তু কোন কপ্টতা নেই।  সরল ভাবে সে তার ইচ্ছা জানিয়েছে। ওর চোখে কোন কামপিপাসা নেই,  সেখানে শুধুই সন্তানলাভের আকাঙ্খা।

" একটু ঘুমা তুই..... তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। " রাজু ওকে ধরে শুইয়ে দিতে চায়।

" নারে.... হামার মাথাটা ঠিক আছে.... তুই শুধু একটা বাচ্চা দিবি আমায়..... "

" উফ.... কোন পাগলের পাল্লায় পড়লাম এই রাতে.... " রাজু বিরক্ত হয়।

" না করিস না...... আমি কাউকে বলবো না.... দিদিও জানবে না.... "

রাজু গলা চড়ায়, " তোর মরদ সেই বাচ্চা মেনে নেবে?  "

" উ তো জানেই না যে উ বাবা হতে পারবেক না.... হামি একা গেছিলাম ডাগদারের কাছে....আর একঠা বাচ্চা আসলে উ তো খুশী হবে,  ঘরে মন লাগবে উর . " লালী আশ্বাস দেয়। ওর চোখে মুখে অদ্ভুত রকমের সারল্য।  যেনো কোন বাচ্চা কোন খেলার জিনিস চাইছে এমন ভাবে ও রাজুর কাছে বাচ্চা চাইছে।  এরা কপটতা জানে না।  যেটা মনে আসে সোজাসুজি বলতেই ভালোবাসে। 

রাজুর গা হাত পা শির শির করে ওঠে,  ওর সামনে বসে ওর কাছেই বাচ্চা আবদার করছে লালী। মানে সোজা কথায় ওকে যৌন সঙ্গম করতে বলছে...... উফফ.... পাগল মেয়েটা একেবারে।

" ই দাদাবাবু...... হামি তো সহরের মেয়েদের মত সুন্দর না আছি..... সেটা ভেবে তুই আমাকে ফিরায় দিস লা। " লালির কথায় এক প্রবল আকুতি। 

রাজুর আর কথা বাড়াতে ভালো লাগছিলো না।  ও লালীকে নিজের বুক থেকে সরিয়ে বলে,  " তুই এখন ঘুমা...... এসব কথা পরে বলা যাবে। "

" আমার গায়ের রঙ কালো বলে তোর আমাকে আদোর করতে শরম লাগে? ....... না আমি ইখানে কাম করি বলে........ বল.... " লালী একপ্রকার নাছোড় বান্দা,  যেনো এখনি ও রাজুর কাছ থেকে বাচ্চা নেবে।

রাজু ওর কথার উত্তর না দিয়ে ওকে জোর করে শুইয়ে দিতে যায়।  কিন্তু লালী গায়ের জোর খাটিয়ে উঠে বসে পড়ে..... নিজের পেঁচানো শাড়ীর আঁচল খুলে ফেলে এক টানে।  আঁচল ওর কোমরের কাছে লুটিয়ে পড়ে।

" দেখ না......আমি কি খুব খারাপ? " লালী একেবারে অপ্রকৃতিস্থের মত আচরন করছে। রাজুর চোখ ওর অনাবৃত উর্ধাঙ্গে আটকে যায়।  একেবারে কষ্টি পাথর কুঁদে বানানো হয়েছে যেন।  লালীর শরীর কাকিমা বা পল্লবীর মত কোমল না..... পেশীবহুল শরীরে চর্বির উপস্থিতি প্রায় নেই।  দুটি একেবারে নিটোল গোল স্তনের মাথায় কালো বৃন্ত.... ওর ঘন নিশ্বাস প্রশ্বাসে সাথে সাথে দুটি বুক ওঠানামা করছে...... ওর চোখে কোন কামের চিহ্ন নেই,  সেখানে শুধুই আকুলতা। ওর ইচ্ছা রাজুকে আকর্ষিত করে সন্তানলাভ,  এছাড়া এখানে আর কোন ব্যাভিচারের কোন চিহ্নও নেই।

রাজু মাটিতে পড়া শাড়ীর আঁচল তুলে আবার ওর গায়ে দিয়ে দেয়।  লালীর দুই গালে হাত দিয়ে ওকে বলে,  " এখন ঘুমা...... তুই অনেক সুন্দর লালী,  তবে যেটা বলছিস সেটা ঠিক না। "

লালীকে সেভাবে রেখেই রাজু উঠে নিজের ঘরে চলে আসে।  বালিস মাথায় দিয়ে অনেক ঘুমানোর চেষ্টা করে।  কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে  না। পাশের ঘরে লালীর কান্নার শব্দ আর আসছে না।  ও ঘুমিয়েছে কিনা কে জানে।  শহরে ধনী মানুষদের কাছে অনেক বিকল্প থাকা সত্ত্বেও বহু মানুষ সন্তানহীন.....কিন্তু এখানে লালীর মত প্রান্তিক আদিবাসী মানুষদের কাছে এটাই একমাত্র বিকপ্ল বলে মনে হয়েছে।  দোষটা তো ওর না...... রাজুকে ও অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করতে বলে নি,  শুধু নিজের বাঁজ অপবাদ ঘোঁচাতে ওর সাহায্য চেয়েছে...।

(চলবে)
Deep's story
[+] 9 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: এক নিষিদ্ধ প্রেমের উপাখ্যান/ নতুন পর্ব - ৯ ই সেপ্টেম্বর - by sarkardibyendu - 29-09-2025, 02:03 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)