Thread Rating:
  • 19 Vote(s) - 2.79 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy প্রাপ্তবয়ষ্ক রূপকথার গল্প/ নতুন আপডেট
#43
প্রাপ্তবয়ষ্ক রূপকথার উপন্যাস 


চপলা আর ভীখুর কথা মন থেকে সরিয়ে হাঁটতে থাকে ও।  এখন আর ঘন অরণ্য নেই।  পাথুরে রাস্তার দুপাশে বড় বড় গাছ।  হাঁটতে হাঁটতেই আকাশে সুর্য্য উদিত হয়।  গত রাতে ঘুম না হওয়ায় শরীর সামান্য ক্লান্ত লাগছে তবুও নিজের হাঁটা বন্ধ করে না ও।  পথে ছোট গ্রাম পড়লে সেখানেই কিছু খেয়ে নিয়ে আবার হাঁটা শুরু করে।  এভাবেই একসময় আবার সন্ধ্যা হয়ে আসে। এবার আর কাছাকাছি কোন গ্রাম নেই।  যেখানে রাত কাটাতে পারে ও।  এখন আশেপাশে পাহাড় দেখা যাচ্ছে। এখানেই কোথাও রাতে আশ্রয় নিতে হবে।  অনেক খুঁজে একটা গুহা আবিস্কার করে ও।  রাতের জন্য সেখানেই থাকার মনস্থির করে।  সাথে পেছনে ফেলে আসা গ্রাম থেকে কিছু দানা শষ্য ভাজা নিয়ে এসেছিলো।  সেগুলো খেয়ে কোনমতে উদরপূর্তি করে ও।  গুহার কাছেই একটা ঝর্ণা আর সেখান থেকে কলকল শব্দ করে বয়ে যাচ্ছে এক নদী।  প্রান ভরে সেই নদীর জল খেতেই শরীর জুড়িয়ে আসে ওর।  গুহার মধ্যে একটা বড় পাথরে নিজের পুটুলিটা মাথায় রেখে ঘুমিয়ে পড়ে ও।  অনেক রাতে একটা শব্দে ঘুম ভেঙে যায়।  বাইরে কোন পশু মানে ঘোড়ার আর্তনাদের শব্দ কানে আসে।  তাড়াতাড়ি বাইরে এসে ও শব্দ লক্ষ্য করে এগিয়ে যায়।  অন্ধকারে সাদা একটা ঘোড়া চোখে পড়ে যেটা পাথরের খাঁজে আটকে আর উঠতে পারছে না,  মনে হচ্ছে জল খেতে এসে পড়ে গেছে।

ওকে দেখেই ঘোড়াটা ডেকে ওঠে।  ছোট থেকে পশুপাখি দের সাথে বন্ধুত্ব করতে করতে ওদের সব কথা রুপেন্দ্র খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে।  ও বোঝে ঘোড়াটা ওকে বলছে,  " আমাকে এখান থেকে তোল..... আমি না হলে মরে যাবো। "

রুপেন্দ্র ওকে শান্ত হতে বলে ধীরে ধীরে কসরত করে ঘোড়াটাকে পাথরের খাঁজ থেকে উদ্ধার করে।  বাইরে এসে ঘোড়াটা আপ্লুত হয়ে যায় রুপেন্দ্রর প্রতি।  এতক্ষণ খেয়াল করে নি,  এবার কাছ থেকে ভালো করে দেখে ঘোড়াটার পিঠের দুই পাশে পাখির মত ডানা ভাঁজ করা।........ তার মানে এটা পক্ষীরাজ ঘোড়া! সীমাহীন বিস্ময় নিয়ে রুপেন্দ্র ঘোড়াটাকে দেখে ও।

এর আগে পক্ষীরাজের অনেক গল্প শুনলেও বাস্তবে কখনো দেখে নি ও।  ও বিস্ময়ের সাথেই ঘোড়ার পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়।  ঘোড়া বলে ওঠে,  " আমায় রক্ষা করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমায়...... তোমার এই কৃতজ্ঞতার প্রতিদান আমি কিভাবে দেবো?  "

বিস্ময়ে কথা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছিলো রুপেন্দ্রর।  এবার ও বলে,  " আমি অনেক দূরে যাবো..... সেই সুবর্ণনগরীতে.... সেখানে আমায় পৌছে দেবে পক্ষীরাজ?  "

" তোমায় এই উপকার করতে পারলে আমি ধন্য হবো..... তুমি আমার পিঠে চেপে বসো..... আমি তোমায় সেখানে নিয়ে যাবো। " ঘোড়া আনন্দের সাথে বলে ওঠে। 

পক্ষীরাজের পিঠে চেপে বসতেই সেটা ডানা মেলে আকাশে উড়ে যায়,  নীচে পাহাড়ি ঝর্ণা,  নদী আর ঘন সবুজ উপত্যকার অনেক উপর দিয়ে মেঘ ছুঁয়ে উড়ে চলে পক্ষীরাজ,  সুরেন্দ্রর কাছে স্বপ্নের মত মনে হয় সবকিছু...চাঁদ ডুবে যাচ্ছে,  আস্তে আস্তে আলোর আভা দেখা দিচ্ছে পূব আকাশে..... আস্তে আস্তে নীচে হালকা সবুজ উপত্যকা ভোরের আলোয় সবুজ গালিচার মত দেখাচ্ছে,  অনেক দুরে বরফাবৃত পাহাড়ে সুর্য্যের সোনালি আভা পড়ে সেটা স্বর্ণাভ রঙ নিয়েছে..... এই দৃশ্য ভোলার নয়। হঠাৎ দূরে পাহাড়ের কোলে একটা নগরী চোখে পড়ে।  নগরীর মাঝখানে একটা বিশাল প্রাসাদ যেটা সুর্য্যের আলোয় এমম ভাবে রঙিন হয়ে উঠেছে যে মনে হচ্ছে সোনা দিয়ে তৈরী..... এটাই কি সেই সুবর্ণনগরী??  অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সুরেন্দ্র.... কি অপূর্ব লাগছে এই দৃশ্য।

পক্ষীরাজ নীচে নেমে আসে,  পাহাড় আর জঙ্গলের মাঝে একটা জায়গায় ওকে নামিয়ে পক্ষীরাজ ওকে বলে, " ক্ষমা করবেন..... আমি আর এগোতে পারবো না,  এখান থেকে বাকিটা একাই আপনাকে যেতে হবে। "

রুপেন্দ্র পক্ষীরাজকে বিদায় দেয়,  পক্ষীরাজ আকাশে উড়ে সাদা মেঘের মধ্যে মিলিয়ে যায়।

এখন সবে সকাল হচ্ছে।  একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর বেলা হলে ধীরে সুস্থে নগরীর দিকে যাওয়া যাবে।  এই ভেবে ওখানেই একটা পাথরের উপর শুয়ে পড়ে ও।  কাল মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠায় এখন চোখের পাতা ভারী হয়ে আসছে ওর।  পাথরে মাথা রেখে আয়েষ করে চোখ বোযে।  গাছ৷ গাছালি দিয়ে ঘেরা জায়গাটা,  অনেক রঙিন ফুল আর পাতাবাহারী গাছের ছড়াছড়ি।  আশেপাশে রঙিন প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে.... ডালে ডালে নানা প্রজাতির পাখির ডাকে সরগরম জায়গাটা। সবে চোখ বুজতে যাবে এমন সময় কাছাকাছি কোথাও মেয়েদের হাসির শব্দ শুনতে পায়।  সাথে জল পড়ার শব্দ,  পাখির ডাকের আড়ালে এতক্ষণ জক্লের আওয়াজ শুনিতে পায় নি ও।  চারিদিক দেখে কিছুই পায় না, তরবারিটা হাতে নিয়ে আওয়াজ লক্ষ্য করে এগোয়।  এখান থেকে পাহাড়ি ঢাল নেমে গেছে নীচে,  সেইদিক থেকেই আওয়াজ আসছে,  কিছুটা নামতেই চোখে পড়ে একটা পাহাড়ী ঝর্ণা।  তার দুধ সাদা জল পাথরের উপর পড়ে চারিদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে।  বেশ কিছু ডালপাতার আড়ালে দেখা যাচ্ছে ঝর্ণাটিকে।  রুপেন্দ্র তরবারি দিয়ে ডালপাতা কিছুটা কেটে দিতেই আড়ালে থাকা ঝর্ণা প্রকাশ্যে আছে,  সেই সাথে প্রকাশ্যে আসে একদল হাস্য কলরবমুখর সুন্দরী তরুনী। 

ঝট করে আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে ফেলে ও। তরুনীরা দল বেঁধে ঝর্ণায় স্নান করতে এসেছে।  পরস্পরের সাথে হাসি ঠাট্টা করছে এরা।  মোট ছয়জন তরুনী,  প্রত্যেকেই সুন্দরী হলেও এদের মধ্যে একজনের পোষাক আষাক দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে বাকিদের থেকে আলাদা।  আর রুপেও সে বাকিদের থেকে অনেক সুন্দরী।  মাথাভর্তি কোঁকড়ানো ঘন চুল, ধপধপে সাদা গায়ের রঙ, চোখ আর মুখ এতো দূর থেকে ভালো বোঝা না গেলেও সে যে বেশ সুন্দরী সেটা বোঝা যাচ্ছে।  মেয়েটির কথা বার্তায় একটা প্রভুত্তের ছাপ আছে।  বাকিরা ওর কথা সাথে সাথে মান্য করছে।  এ নিশচই সুবর্ণন্নগরীর রাজকুমারী হবে।  রুপেন্দ্র স্থির বিশ্বাস হল,  কিন্তু তিন বোনের মধ্যে বাকিরা তো এখানে আছে বলে মনে হচ্ছে না। 

রাজকুমারী একটা রঙিন পাথরে দাঁড়ালে দুজন সখি এসে ওর পোষাক খুলে দেয়।  দুধসাদা ঝর্ণার সামনে নিরাবরন রাজকুমারীকে একেবারে স্বর্গের অপ্সরীর মত লাগছে,  নগ্ন রাজকুমারী ঝর্ণার জল নিয়ে খেলা করছে বাচ্চা মেয়েদের মত,  ওর মসৃণ ঢেউখেলানো শরীরের বাঁক বেয়ে উচ্ছ্বল ঝর্ণার শীতল জল নেমে আসছে,  দুই হাত ছড়িয়ে বাচ্চাদের মত মেতে উঠেছে রাজকুমারী।  ওর লাফানোর তালে তালে নরম স্তন আর নিতম্ব দুলে উঠছে.... বাকি সখিরাও যে যার  পোষাক খুলে নগ্ন হয়ে রাজকুমারীর সাথে যোগ দেয়,  কিন্তু রাজকুমারীর অপার সৌন্দর্য্যের কাছে তাদের নগ্নতা চোখে পড়ছে না... যদিও তারা কেউ অসুন্দর না।

রাজকুমারীর সৌন্দর্য্যে বিভোর হয়ে রুপেন্দ্র বাকি সব ভুলে যায়।  রাজকুমারীর পিনোদ্ধত স্তন,  কলসের ন্যায় নিতম্ব, তেল চকচকে মসৃন উরু আর সেই উরুসন্ধির মাঝের গহীন অরন্যের অপার শোভায় বিভোর হয়ে যায় ও।

ডালপালার আড়ালে রুপেন্দ্রকে কেউ খেয়াল করছে না।  তরুনীর দল একে অপরের সাথে শরীর নিয়ে মেয়েলি ঠাট্টায় মেতে আছে..... দুজন রাজকুমারীর গা হাত পা পরিষ্কার করে দিচ্ছে..... কেউ ওকে নিয়ে হালকা মজা করছে।

একসাথে এতোজন নগ্ন নারী দেখার অভিজ্ঞতা নেই রুপেন্দ্রর।  ওর সব ধ্যান জ্ঞান ওদের জল্ক্রীড়াতেই নিমজ্জিত হয়ে বসে আছে...... এমম দৃশ্য দেখার সুযোগ জীবনে বার বার তো আসে না। 

" এই ব্যাটা তুই কে রে?  সাহস তো কম না...... রাজকুমারীর স্নান দেখছিস?  " পিছন থেকে একটা বাজখাঁই মেয়েলি গলা শুনে চমকে পিছন ফেরে ও। সাথে সাথে ওর বুকের উপর বল্লম ধরে ওকে থামায় একটা কালো বিকট দর্শনা নারী প্রহরী।  বড় বড় ভাঁটার মত চোখ করে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে সে।

রুপেন্দ্র দেখে অবস্থা সুবিধার না।  এখন এর কাছে বশ্যতা স্বীকার না করে উপায় নেই।  এমনিতেও নারীর উপরে প্রতি আক্রমণ করা ওর সাজে না।  ও নিজের দুই হাত তুলে অসহায় মুখ করে বলে,  " আহা...... আমি কি আর যেচে দেখতে গেছি? আমার সামনে পড়ে গেলো তাই... "

" ওমা.... তুই পুরুষ?  জানিস না এই রাজ্যে পুরুষরা আসতে ভয় পায়?  " বাজখাই গলা আবার চেঁচায়।

" আরে জানলে কি আর প্রাণ খোয়াতে এখানে আসতাম?  আমি তো পথ ভুলে এখানে এসে পড়েছি। "  রুপেন্দ্র প্রায় কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে। 

রক্ষী বল্লমটা ওর বুকে আরো একটু জোরে চেপে বলে,  " পুরুষ হলেও তুই খুবই কিম্ভুতাকার.....এখন বল,  তোর উদ্দেশ্য কি?  রাজকুমারীকে বিয়ে করতে চাস? ..... ভুলে যা...... তোর মত কদাকার পুরুষকে বিয়ে করার চেয়ে অবিবাহিত থাকাও ঢের শ্রেয় রাজকুমারীর..... "

রুপেন্দ্র মুখ বিকৃত করে বলে,  " তোমার বল্লমটা একটু সরাবে আমার বুকে লাগছে...... আমি কাউকে বিয়ে করতে আসি নি..... পথ হারিয়ে এসে গেছি।"

" ওসব আমি জানি না...... এখন আমার সাথে চল,  রাজকুমারীর কাছে...... তিনি যদি তোকে ছাড়েন তাহলেই ছাড়া পাবি নয়তো গর্দান যাবে তোর। "


এই সুযোগটাই চাইছিলো রুপেন্দ্র।  কোন ছুতোয় রাজকুমারীর  সাথে দেখা করতে হবে।  সেই সুযোগটাই এসে গেলো ওর কাছে।  মনে মনে খুশী হলেও মুখে সেই ভাব আনলো না।  অসহায় মুখ নিয়ে রক্ষীর বল্লমের আগে আগে ও হাঁটতে থাকে,  পাহাড় থেকে নেমে সমতল রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলে ওকে নিয়ে রক্ষী।  রাস্তায় কোথাও কোন যুবক বা তরুন নেই।  চারিদিকে শুধু যুবতী, পৌঢ়া আর বৃদ্ধা নারীদের ছড়াছড়ি..... মাঝে মাঝে দু একজন অশিতীপর বৃদ্ধ ছাড়া আর কোন পুরুষ দেখা গেলো না।  মেয়েরা ওর দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে।  যেনো কোথাকার আজব জীব ও।  নগরের অলি গলি বাজার ঘুরে রাজপ্রাসদের সামনে আসে ওরা।  ওর সাথে আসা রক্ষীর ইশারায় একজন রক্ষী প্রাসাদের দ্বার খুলে দেয়। এখানে সব রক্ষীও নারী। 

সামনে বিশাল শ্বেত শুভ্র প্রাসাদ। পাথরের তৈরী তিন মহলের প্রাসাদের মাঝখানে বিশাল বড় গম্বুজ।  বিশাল মোটা মোটা পাথরের স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে আছে পারাসাদটি।   তার আশে পাশে আরো হাজারো নানা মহল।  চারিদিকে সৈন্য,  সামন্ত,  ঝি চাকরানী ঘুরে বেড়াচ্ছে...... তারা সবাই নানা কাজে ব্যাস্ত..... কোথাও একটাও পুরুষ নেই। 

ভিতরে ঢুকেই রুপেন্দ্র উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে।

" কোথায় তোমাদের রাজকুমারী?  চল আমায় সেখানে নিয়ে। "  আনন্দে নেচে ওঠে রুপেন্দ্র।

ওর পাছায় বল্লমের একটা খোঁচা মেরে রক্ষী বলে,  "এই ব্যাটা..... রাজকুমারী কি তোর দাসী নাকি?  যখন ইচ্ছা দেখা করবে?  তোকে এখন আমাদের কোতয়ালের কাছে নিয়ে যাবো.... তুই এখন বন্দী থাকবি,  যেদিন রাজকুমারী তার বিচার সভায় বসবেন সেদিন তোকে নিয়ে যাওয়া হবে। "

মুখ চুন হয়ে যায় রুপেন্দ্রর।  যাহ বাবা..... এখন বন্দী থাকতে হবে?  না জানি এরা কত অত্যাচার করবে ওর উপর।

অনেকটা হেঁটে একটা  বিরাট কক্ষে ওকে নিয়ে আসে রক্ষী,  সেখানে প্রায় ওর মত চেহারার একজন বসে আছে.... রক্ষী তাকে প্রনাম জানিয়ে রুপেন্দ্রর ঘটনা সব বলে।  সব শুনে কোতোয়াল রুপেন্দ্রকে ভালো করে জরিপ করে। 
" এহ.....কতদিন পুরুষ মানুষ দেখি না,  যাও বা দেখলাম তাও এমন বিদঘুটে কদাকার? ..... যা,যা একে নিয়ে গিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ কর।

রক্ষী ওকে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে একটা অন্ধকার কক্ষে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে দেয়।  এই রাজ্যে পুরুষ নেই বলে অপরাধীও কম।  কারাগারের এই কক্ষে রুপেন্দ্র একা।  চারিদিকে পাথরের দেওয়াল। শুধু সামনে লোহার গরাদওয়ালা গেট।  কোনায় একটা জলের কুঁজো ছাড়া আর কিছুই নেই।  একটু দূরে দুজন নারী রক্ষী পাহারায় নিযুক্ত।  তারা একেবারে কাঠের পুতুলের মত দাঁড়িয়ে আছে।  দেখে বোঝা যাচ্ছে না যে মানুষ না মূর্তি। রুপেন্দ্র অসহায়ের মত কারাকক্ষের পাথরের মেঝেতে বসে পড়ে।  এখন ভালো করে পরিকল্পনা করতে হবে যে কিভাবে রাজকুমারীদের সাথে দেখা করা যায়। 


রুপেন্দ্র আয়েষ করে পাথরের মেঝেতে শুয়ে পড়ে।  ওর সাথে আনা পুটুলি আর তার ভিতরে থাকা মোহর সব সেই ঝর্ণার কাছেই পড়ে আছে।  তরবারীটাও নেই।  অবশ্য থাকলেও এরা কেড়েই নিতো।  যাই হোক,  এবার একটু বিশ্রাম নেওয়া যাক।

যখন ঘুম ভাঙে ওর তখন প্রায় সন্ধ্যা।  কারন এই জায়গাটা আগের থেকেও বেশী অন্ধকার হয়ে এসেছে।  একটু পরে একজন এসে দেওয়ালে রাখা মশাল জ্বেলে দিয়ে যায়। এইবার চারিদিক আলোকিত হয়ে ওঠে।  ও দেখে সেই দুজন রক্ষী এখনো সেভাবেই সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।  যে মশাল জ্বলেছিলো একটু পরে সে এসে একটা পাত্রে দুটো মোটা বীজের রুটি আর সামান্য আচার মত কিছু দিয়ে যায়। সারাদিনে কিছুই পেটে পরে নি ওর।  ক্ষিধের চোটে সেই অখাদ্য রুটিই গোগ্রাসে গিলে শষ করে কোনায় রাখআ কুঁজো থেকে জল খায়।

এবার এখান থেকে বেরোনোর বুদ্ধি বানাতে হবে।  মাঝরাতে আগের রক্ষী দুজন সেখান থেকে বিদায় নেয় আর তার জায়গায় আরো দুজন নতুন রক্ষী আসে।  এরাও একি ভাবে পুতুলের মত দাঁড়িয়ে আছে। একটু পরে এরা দাঁড়িয়ে আঁড়িয়ে দুজনাই ঘুমে ঢুলতে থাকে।  মাঝে মাঝে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।  রুপেন্দ্র এবার আংটির দিকে তাকিয়ে ওদের কোতয়ালের চেহারা মনে করে।  মূহুর্তের মধ্যে ওর চেহারা কোতয়ালের চেহারায় রুপান্তরিত হয়।  ও জোরে জোরে গেট ঝাঁকাতে থাকে।  শব্দে ঘুম ভেঙে প্রহরীরা ছুটে এসে দেখে ওদের কোতোয়াল ভিতরে আটকা আর সেই ভিনদেশী পালিয়েছে।

র‍্যপেন্দ্র চিৎকার করে বলে,  " তাড়াতাড়ি বের কর আমায়.... "

একজন প্রহরী তাড়াতাড়ি খুলতে গেলেও অন্যজন সন্দেহ প্রকাশ করে,  " অপরাধ নেবেন না কোতয়াল মহোদয়া.... কিন্তু আপনাকে এভাবে আটকালো কিভাবে?  "

এই প্রশ্ন যে আসবে সেই ব্যাপারে রুপেন্দ্র নিশ্চিত ছিলো।  ও রাগ রাগ মুখ করেই বলে,  " ভিনদেশীর কাছ থেকে গোপন তথ্য জানতে আমি এসেছিলাম,  কিন্তু তোমরা তো ঘুমাতেই ব্যাস্ত তাই আমি নিজেই তালা খুলে একে জেরা করতে আসি..... অতি চালাক সেই ভিনদেশী আমায় বোকা বানিয়ে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে পালায়। "

নিজেরা ঘুমাতে ব্যাস্ত ছিলো বলে রক্ষী আর কোন কথা বলে না,  সে নিজের কোমর থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে দেয়।  রুপেন্দ্র সেখান থেকে বেরিয়ে ওদের বলে,  যাও.... তাড়াতাড়ি বাইরে সব জায়গায় ওকে খুঁজে দেখো.... না পাওয়া গেলে গর্দান দেবো তোমাদের। "

ভয়ে রক্ষী দুজন ছুটে বাইরে বেরিয়ে যায়।  সেই সুযোগে রুপেন্দ্র সেখান থেকে বেরিয়ে আসে।  কিন্তু বাইরে আসতে গিয়েই বাধা পায়।  আসল কোতয়াল বেশ খোষ মেজাজে সেখানেই আসছে।  কোতয়াল এসে তার কক্ষে বাস  যায়।  রুপেন্দ্রকে বেরতে হলে এখান দিয়েই বেরোতে হবে.... কিন্তু এখন আর সেটা সম্ভব না।  ও চারপাশ দেখে...... এখান থেকে তিনদিকে দীর্ঘ পথ চলে গেছে যার একদিকে ও বন্দী ছিলো।  বাকি দুই দিকে কি আছে সেটা জানে না ও।  ও অপেক্ষা না করে ডানদিকের  পথ দিয়ে ছুট দেয়।  এদিকে কারাগার নেই,  তবে সারি সারি বন্ধ কক্ষ।  একটু দূরে দূরে মশাল জ্বলছে।  কোন রক্ষী নেই এখানে কোথাও।  অনেকটা আসার পর সেই পথ আবার দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে।  ও আবার ডানদিকে ঘুরে এগোয়,  একটু এগোতেই দেখে পাথরের সিঁড়ি নেমে গেছে নীচের দিকে।  তার মানে এটা গুপ্ত পথের রাস্তা।  ও সোজা নেমে যায় সিঁড়ি দিয়ে।  বেশ অনেকটা নামার পর সিঁড়িটা শেষ হয়েছে একটা সুড়ঙ্গ পথে।  কোনোমতে একজন মানুষ দাঁড়াতে পারে সেখানে। সুরেন্দ্র কোততালের রুপে আছে বলে ওর চেহারা বড়োসড়।  তাই অনেক কষ্টে সেই সংকীর্ণ পথ ধরে এগোতে থাকে।  এখানে আর মশালের আলো নেই।  কোনমতে হাতড়ে হাতড়ে ও অনেকটা এগোয়,  এক জায়গায় এসে সেই সুড়ঙ্গ দুই দিকে চলে গেছে,  আন্দাজে রুপেন্দ্র বাঁ দিকে এগোয়,  কিছুটা আসতেই একটা সিঁড়ি বাধে পায়ে।  তার মানে এই পথটা আবার রাজপ্রাসদের দিকে গেছে,  ও ধীরে ধীরে সেই সিঁড়ি বেয়ে উঠতে থাকে।  কয়েকবার এদিক ওদিক পাক খেয়ে একটা কাঠের দরজার কাছে এসে শেষ হয় সিঁড়িটা। দরজা অন্যপাশ থেকে বন্ধ করা।  ও এদিক ওদিক হাতড়ে বেড়ায়।  শেষে কি এখানে এসে আটকে যাবে ও?  হাতড়াত হাতড়াতে হঠাৎ হাতে একটা আলগা পাথর বাধে,  ও সেটাকে টানতেই হালকা একটা শব্দ হয়,  দেখা যায় দরজাটা খুলে গেছে।  একেবারেই ছোট দরজা।  নীচু হয়ে সেখান্দিয়ে ভিতরে ঢোকে ও।  কিছুটা এগোতেই একটা বারান্দা মত পায়,  দূরে মশাল জ্বলছে..... নিজেকে যতটা সম্ভব লুকিয়ে ও এগোতে থাকে,  কিছুটা এগোতেই একটা নক্সা করা জানালার সামনে দাঁড়ায় ও,  জানালায় জালের পর্দা লাগানো, কোনমতে সেই পর্দা একটু ফাঁক করে ভিতরে তাকাতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় ওর।  ওপারে একটা বিশাল সুদৃশ্য কক্ষ। সেখানে অনেক ঝাড়বাতির আলোয় উজ্বল হয়ে আছে  চারিদিক।  কক্ষের মাঝ খানে একটা সুদৃশ্য পালঙ্ক....  তাতে সোনা রুপা আর হাতির দাঁতের কারুকাজ করা,  মোটা স্তম্ভ গুলোতেও সোনার কারুকাজ,  দরজা জানালায় বিশাল বিশাল রেশমের পর্দা ঝুলছে, আর সেই সুদৃশ্য পালঙ্কে বসে আছে সকালে ঝর্ণায় দেখা সেই রাজকুমারী।  তার শরীরে একটা সুতোও নেই,  পালঙ্কে বসে নিজের দুই পা দুইদিকে ছড়িয়ে দিয়ে যোণী উন্মুখ করে রেখেছে,  ওর দুই চোখ কামঘন,  রেশমের মত ঘন চুল খোলা,  এক হাতে নিজের স্তন মর্দন করছে...... আর একজন ওর মতই সুন্দরী যুবতী ওর দুই পায়ের ফাঁকে মুখ দিয়ে রাজকুমারীর যোনী লেহন করছে..... যোনী লেহনের তীব্র সুখে রাজকুমারীর চোখ অর্ধমগ্ন...... মুখ দিয়ে হালকা শিৎকার বের হচ্ছে,  মাঝে মাঝে নিজের কোমর তুলে ধরে যোনী চেপে ধরছে ওর মুখে। 

এবার ওর মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হয়, রাজকুমারী তীব্র আশ্লেষের সাথে বলে ওঠে, " আহহহহ.....আরো জোরে চোষো চিত্রা....... খেয়ে ফেলো আমার সব রস...... আরো ভিতরে জীভ দাও.....আহহহ.... আহহহহ...

চিত্রার মুখ র‍্যপেন্দ্র দেখে নি এখনো।  ও রুপেন্দ্রর দিকে পিছন ঘুরে থাকায় ওর মাংসল পাছা নজরে আসছে,  চেহারা প্রায় রাজকুমারীর মতই...... তবে চিত্রা কি ওর বোন সেটা জানতে হবে।

(চলবে) 
Deep's story
Like Reply


Messages In This Thread
RE: প্রাপ্তবয়ষ্ক রূপকথার গল্প/ নতুন আপডেট - by sarkardibyendu - 23-09-2025, 06:00 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)