23-09-2025, 05:58 PM
(This post was last modified: 23-09-2025, 06:31 PM by sarkardibyendu. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
প্রাপ্তবয়ষ্ক রুপকথার উপন্যাস
রম্ভা আর যশোদার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রুপেন্দ্র রওনা দেয় সুবর্ননগরীর দিকে। রম্ভার চোখ জলে ভিজে ওঠে, ছোট থেকে কখনো কাছ ছাড়া করে নি ও রুপেন্দ্রকে। সব বিপদ থেকে আগলে রেখেছে। আজ সে ওর কাছ থেকে না জানি কত দিনের জন্য বিপদের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে বাধা দেয় না রম্ভা, সে জানে খর্বাকৃতি হলেও শরীরে প্রচন্ড সাহস আর শক্তি ধরে রুপেন্দ্র। ওকে পরাজিত করা যার তার কাজ না। তাই ও চায় রুপেন্দ্র এমন কোন কাজ করুক যাতে সবাই ওকে ধন্য ধন্য করে। বীরের মত সে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসুক।
একটা ছুরী, একটা তরোবারি নিজে আর কিছু খাবার পুটুলিতে বেঁধে রুপেন্দ্র রওনা দেয়। কোথায় সেই সুবর্ননগরী সেটা ও জানে না। তবে শুনেছে উত্তর দিকে বিশাল অরণ্য আর তিনটি পাহাড় টপকে তবে পৌছাতে হয় সেই দেশে। পথে নানা বিপদ.... হিংস্র জানোয়ার, দস্যু, চোর ডাকাতের উপদ্রব..... তবে এসব কিছুতেই ও ভয় পায় না, একা দশজনের সাথে ও লড়ে যেতে পারে, একবার সেই রাজ্যে পৌছাতে পারলে ঔষধ নিয়ে তবে সে ফিরবে।
সকাল থেকে হেঁটে হেঁটে বেশ কিছু গ্রাম আর শহর পার করে ও। এরপর দেখে বিশাল বন শুরু হয়েছে। কি ভয়ানক সেই অরন্য, দিনের বেলাতেও সেখানে গা ছমছম করে...... অরণ্যে ঢুকেই মনে হয় সন্ধ্যা নেমে এসেছে। চারিদিকে নানা পশু পাখির জানা অজানা আওয়াজ কানে আসছে। রুপেন্দ্র কিছুটা হেঁটে দাঁড়িয়ে পড়ে। সকাল থেকে হেঁটে হেঁটে খুব ক্ষিধে পেয়ে গেছে। সাথে পুটুলিতে রম্ভা কিছু খাবার দিয়ে দিয়েছে সেগুলো খেয়ে শরীরটা একটু চাঙ্গা করে আবার হাঁটা যাবে। যেমনি ভাবা তেমনি একটা বড় গাছের নীচে এসে বসে ও। দিনের বেলাতেও এখানে বেশ আলো কম। আসলে গাছপালা এতো ঘন যে সুর্য্যের আলোও ঠিকমত ঢোকে না। ও যেই গাছর নীচে বসেছিলো সেটা একটা বিশাল বটগাছ, এতো বড় যে সেটা কতদূর ছড়িয়ে আছে সেটাই দেখা যাচ্ছে না। উপরে ডালপাতার আড়ালে কি আছে কে জানে, তবে নীচে শিকড়ের মাঝে একটা সুন্দর জায়গা দেখে ও বসে যায়।
মায়ের দেওয়া খাবার খেয়ে ওর শরীরে একটু ঘুম নেমে আসে। ও ভাবে, কিছুক্ষন এই গাছের নীচে বিশ্রাম নিয়ে তারপর আবার যাওয়া যাবে। সেই ভেবে কাপড়ের পুটুলিটা মাথার নীচে রেখে শুয়ে পড়ে। তরবারিটা পাশে রেখে দেয়। বেশ ঘুম নেমে এসেছিলো, হঠাৎ একটা ভয়ার্ত চিৎকারে ওর ঘুম ভেঙে যায়। তাড়াতাড়ী তরবারীটা হাতে নিয়ে ও উঠে দাঁড়ায়। চারিদিক তাকিয়ে দেখে গাছের উপর থেকে চিৎকার ভেসে আসছে, আর আরো অবাক হয় যে গাছ পেঁচিয়ে গাছের উপরে উঠছে একটা দানবাকৃতি অজগর সাপ, জীবনে এতো বড় অজগর দেখে নি রুপেন্দ্র। ওর মাথা গাছের উপরে থাকলেও লেজ তখনো মাটিতে। আর কি মোটা! একাই তিন চারটে মানুষ খেয়ে নিয়ে পারবে।
অজগরের নজর রুপেন্দ্রর দিকে নেই, ও উপরে কিছুর দিকে নজর দিয়েছে। রুপেন্দ্র উঁকি মেয়ে ভালো করে দেখে, সাথে সাথে ও অবাক হয়ে যায়, গাছের উপরে একটা বামন দৈত্যের মত মানুষ আর মানুষী, কালো কুচকুচে চেহারা, মাথায় ছোট শিং, আর রাক্ষসে মত বড় বড় দাঁত.... চেহারা ভয়ংকর হলেও এদের দেখে মোটেই ভয় লাগছে না, এরা দুজনে নিজেরাই ভীত হয়ে চেঁচামেচি জুড়ে দিয়েছে। অজগর সাপটা চেষ্টা করছে এদের শিশুকে গিলে খাওয়ার, আর এরা দুজন নিজেদের শিশুকে বাঁচাতে চেষ্টা করছে...... দেখেই খুব খারাপ লাগলো রুপেন্দ্রর... হোক না দৈত্য, তবুও বাবা মা তো.... নিজের বাচ্চা মারা গেলে কি কষ্টটাই না পাবে.... রুপেন্দ্র আর দাঁড়ায় না, নিজের তরবারি তুলে এক আঘাত করে অজগরের লেজে, লেজ কেটে খণ্ড হয়ে যায়, সহসা আক্রমণে অজগরের নজর খাদ্য থেকে আক্রমণকারীর উপর পড়ে, লেজ হারানোর যন্ত্রনায় ক্ষেপে গিয়ে ও বিশাল হাঁ করে তেড়ে আসে রুপেন্দ্রর দিকে, এতো বড় হাঁ যে রুপেন্দ্রর মত তিন জন সেখানে ঢুকে যাবে...... রুপেন্দ্র ভয় না পেয়ে পিছিয়ে আসে, ওর হাতে রক্তমাখা খোলা তরবারি। এদিকে অজগরের চোখ লাল ভাঁটার মত জ্বলজ্বল করছে, দাঁতগুলো এক একটা বিশাল......বিশাল লম্বা চেড়া জীভ লক লক করছে.... অজগড় একটু অপেক্ষা করে রুপেন্দ্রকে দেখে, তারপর তীর বেগে ওর দিকে ধেয়ে আসে, রুপেন্দ্রও প্রস্তুত ছিলো, ও নিজের তরবারি সোজা অজগরের একটা চোখে ঢুকিয়ে দেয়....... যন্ত্রনায় ছটফট করে ওঠে সাপটা, ওর ছটফটানির চোটে চারিদিকে ধুলোর ঝোড় উঠে যায়, সেই সুযোগে রুপেন্দ্র ওর গলা লক্ষ্য করে কোপ বসায়..... অজগরের বিশাল মাথা ধড় থেকে আলাদা হয়ে মাটিতে পড়ে, শরীরটা বেশ কিছুক্ষণ দাপাদাপির পর স্থির হয়ে যায়।
অবাক ভীত চোখে এতোক্ষণ গাছের উপর থেকে অজগরের সাথে খর্বাকৃতি একটা মানুষের লড়াই দেখছিলো বামন দৈত্য আর দৈত্যিনী.... এবার তারা নেমে আসে নীচে, রুপেন্দ্রর সামনে হাত জোর করে দুজনেই দাঁড়ায়। দৈত্য কৃতজ্ঞতার সুরে বলে,
" আপনি নিশচই ভগবানের বামনবতার, আমাদে বিপদে বাঁচাতে এসেছেন..... "
" আরে না না আমি সাধারণ মানুষ.... তোমাদের বিপদ দেখে শুধু সামান্য সাহায্য করলাম।মাত্র.... কিন্তু তোমরা কারা? দেখে তো মানুষ বলে মনে হচ্ছে না! " রুপেন্দ্র বিস্ময়ের সাথে জিজ্ঞাসা করে।
দৈত্য সেভাবেই হাত জড়ো করে বলে, " প্রভু.... আমরা দুজনেই রাক্ষস রাজ্যের থেকে আসছি, আমার নাম ভীমা আর আমার পত্নীর নাম ভীরা, দুজনেই ছোট থেকেই বামন আমরা.... আমাদের চেহারার কারণে রাজ্যের সবাই আমাদের নিয়ে বিদ্রুপ করে, আমরা নাকি তাদের রাক্ষস রাজ্যের কলঙ্ক.... সেই কারণে আমাদের তারা রাজ্য থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে.... আমরা পতি পত্নী আমাদের পুত্রকে নিয়ে অনেকদিন এই বৃক্ষে আশ্রয় নিয়েছি.... আজ আপনি না বাঁচালে আময়াদের একমাত্র পুত্রকে আমরা হারাতাম "
" আহা.... এতো বলো না... এটা আমার কর্তব্য ছিলো, অসহায় জীবকে রক্ষা করাই তো প্রকৃত বীরের কাজ। "
" আপনি মানুষরুপী ভগবান.... কিন্তু এই ঘন অরণ্যে আপনি কিভাবে কি উদ্দেশ্যে এসেছেন? " ভীমা প্রশ্ন করে।
রুপেন্দ্র নিজের উদ্দেশ্যর ব্যাপারে সবকিছু ভীমাকে জানায়। সব শুনে ভীমা বলে, " সুবর্ণনগরী আমি নাম শুনেছি কিন্তু কখনো সেখানে যাই নি....তাহলে আপনাকেও লোকে চেহারার কারণে বিদ্রুপ করে.... "
এবার ভীরা বলে, " প্রভু.....আমরা খর্ব হলেও বেশ কিছু যাদু বিদ্যা জানি, তবে সেসব আমরা নিজেদের স্বার্থে ব্যাবহার করতে পারি না.... আপনাকে আমি একটি জিনিস দিতে চাই.... "
রুপেন্দ্র একটু অবাক হয়ে ভীরার দিকে তাকায়। ভীরা নিজের কোমরের কাছে গোঁজা একটা কৌটো থেকে একটা সুন্দর আংটি বের করে আনে। সোনার আংটির মাঝে একটা উজ্জ্বল সবুজ পাথর বসানো। সেটা রুপেন্দ্রর হাতে দিয়ে বলে, এই আংটির অনেক ক্ষমতা, নিজের মধ্যমাতে এটা ধারণ করে আপনি যে রূপ নিতে চাইবেন সাথে সাথে সেই রূপে আপনি নিজেকে পাবেন....তবে রূপ পরিবর্তনের পর আংটি দ্রুতো উষ্ণ হতে থাকবে, কারণ আপনাকে নতুন রূপে রাখতে এর অনেক শক্তি ক্ষয় হবে..... একসময় আংটিটা সবুজ থেকে লাল রক্তবর্ণ ধারণ করবে....আর আপনি আবার আসল রূপে ফিরে যাবেন। তাই লাল হওয়ার আগেই আপনাকে সরে যেতে হবে যাতে আপনি যে রূপ পাল্টেছেন সেটা কেউ জানতে না পারে।
আংটী হাতে নিয়ে রুপেন্দ্র আপ্লুত হয়ে বলে, এটা আমার অভিজানে অনেক কাজে আসবে..... কি বলে যে তোমাদের ধন্যবাদ দেবো. "
ভীমা আর ভীরা ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বলে, " আমাদের লজ্জিত করবেন না প্রভু.... আজ আপনি যে উপকার করেছেন সেটার মূল্য দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই, এটা তো সামান্য জিনিস। "
ভীমা আর ভীরার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আবার পথচলা শুরু করে সুরেন্দ্র। ঘন বনের ভীতর দিয়ে তরবারি দিয়ে গাছপালা কেটে পথ তৈরী করে নিতে হচ্ছে। যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে আসে। তখন বন শেষ হয়ে একটা ছোট গ্রাম দেখা যায়, এদিকে যা খেয়েছিলো পথশ্রমে সব হজম হয়ে গেছে, তাছাড়া রাতে থাকার ব্যাবস্থাও তো করতে হবে.... অজানা অচেনা গ্রামের লোক কি ওকে আশ্রয় দেবে? রুপেন্দ্র একটা বড় জলাশয় দেখে ভাবে, আগে একটু জলপান করে তৃষ্ণা মেটানো যাক.... তারপর ভাবা যাবে৷
সেইমত ও দিঘির কাছে এসে তার টলটলে জল আঁজলা ভরে তুলে তৃপ্তি সহকারে পান করে। চোখে মুখে জল দিতেই পথশ্রম অনেকটাই লাঘব হয়ে আসে। ও দিঘির পাড়ে একটা গাছের নীচে বসে তখনি কাছ থেকে একটা আওয়াজ ভেসে আসে... " ভিনদেশী মনে হচ্ছে.... প্রাণের ভয় নেই নাকি? "
রুপেন্দ্র এদিক ওদিক তাকায়। দেখে একটু দূরে একটা কাপড়ের পুটুলি নিয়ে একটা লোক বসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
" কে বাপু আপনি? আমি ভিনদেশী সেটা জানলেন কি করে? " রুপেন্দ্র অবাক হয়ে বলে।
" ধুর.... এটা কি কোন ভেল্কি লাগে নাকি? এই অঞ্চলের সব লোককে আমি চিনি..... আর তোমার চেহারাই বলে দিচ্ছে তুমি অন্য দেশের লোক। " লোকটি তাচ্ছিল্যর সুরে বলে।
" তা প্রানের ভয়ের কথা কি বলছিলেন? "
লোকটি এদিক ওদিক তাকিয়ে একটু চাপা গলায় বলে, " এটা দস্যুদের এলাকা.... গ্রামের লোকেদের কিছু বলে না, অচেনা লোক এলেই মেরে চেলে সব লুটে নেয়। "
" তাই নাকি? কিন্তু আমি তো রাতে এখানেই থাকবো ঠিক করেছি? " র্যপেন্দ্র চিন্তার সুরে বলে।
" পাগল নাকি? সকালে তোমার মৃতদেহ পাওয়া যাবে এই দিঘির জলে ভাসা অবস্থায় " লোকটি বলে।
" তাহলে কি উপায়? " রুপেন্দ্র আবার বলে।
লোকটি আগাগোড়া রুপেন্দ্রকে দেখে নিয়ে বলে, " তোমার মতন চেহাহার লোক খারাপ হবে না আসা করি.... কারণ চোর ডাকাত এমন ছোট খাটো হয় না, ..... তাই যদি ৫ টা মোহর দাও তাহলে আমার বাড়িতে ব্যাবস্থা করে দিতে পারি । " লোকটী নিজের শর্ত জানায়।
" বাহহ....এতো দারুণ কথা... তবে তুমি আবার দস্যুদের দলের লোক নাতো? ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজের বাড়ি নিয়ে গিয়ে মেরে ফেললে আমাকে.... তাহলে? " রুপেন্দ্র বলে ওঠে।
" ধুর.... এইজন্য কারো ভালো করতে নেই.... যাও বাপু তুমি মরোগে.... আমার কি? " লোকটা রাগ করে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
" আহা রাগ করো কেনো? আমি তো এমনি মজা করছিলাম.....চল, তোমার বাড়িতে নিয়ে চল। " রুপেন্দ্র হেসে ফেলে।
" আগে পাঁচ মোহর আমার হাতে রাখো... "
রুপেন্দ্র থলি থেকে পাঁচটা মোহর বের করে। মোহর দেখে লোকটা এগিয়ে এসে ওর পাশে বসে। ওর হাত থেকে মোহর নিয়ে নিজের ট্যাকে গুঁজে বলে, " তুমি এই গাঁয়ের অতিথি.... তোমার কাছ থেকে অর্থ নিতাম না.... কিন্তু আমার বৌকে একটা দামী কাপড় কিনে দিতে হবে, তার জন্য অর্থের আমার খুব দরকার ভাই.... কিছু মনে করো না। "
" না না ঠিক আছে..... তুমি কি কাজ করো? "
" কাপড়ের গাঁঠড়ি দেখিয়ে ও বলে, " আমি ধোপা.....আমার নাম ভিখু.... লোকের কাপড় কেচে যা পাই তাতে সংসার চলে না, বৌ রোজ রাগ করে....আজ পাঁচটা মোহর দেখে বৌ খুব খুশী হবে। " ধোপার চোখে আনন্দের ছাপ।
ধোপার সাথে রুপেন্দ্র গ্রামের ভিতরে ওর বাড়িতে আসে। পাথরের একটা ছোট সুন্দর ঘর ধোপার, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন.... সামনে বেশ কিছুটা খোলা জায়গা, ঘরের সামনে একটা বারান্দা... ওরা উঠানে দাঁড়াতেই ভীখুর বৌ বেরিয়ে এলো, ধোপার সাথে খর্বাকৃতি কদাকার একটা লোক দেখে অবাক হয়ে ভ্রু কোঁচকালো, " ও মা..... একে গো? এমন বিচ্ছিরি দেখতে? "
রুপেন্দ্রর রাগ হলেও মুখে কিছু বললো না, ধোপার বৌ যুবতী, গায়ের রঙ শ্যামলা হলেও চেহারার গড়ন বেশ ভালো..... একটা ঘাগরার সাথে উপরে একটা কাপড়ের মত জিনিস বুকে জড়ানো, ওর স্তন বেশ বড়ো.... পেটের খোলা অংশ দিয়ে নাভি দেখা যাচ্ছে...... চোখে মুখে বেশ একটা কামুক ভাব, এমন মেয়েদের একটা আলাদা আকর্ষন আছে।
রাজকুমারীর সাথে তুলনীয় না হলেও ধোপার যুবতী বৌকে রুপেন্দ্রর বেশ ভালো লাগল। তাই রাগ হলেও মুখে কিছু বললো না। ধোপা বৌকে ধমকে বললো, " আহহ....উনি অতিথি.... ওনাকে এমন করে কেউ বলে? আজ রাতে আমাদের বাড়িতে থাকবেন.... তার জন্য পাঁচ মোহর দিয়ছেন. "
মোহরের কথা শুনে ধোপা বঊএর চেহারার রঙ পালটে যায়, " আহা.... তাহলে ওনাকে ভিতরে নিয়ে আসো.... অতিথি নারায়ন বলে কথা "
ধোপার সাথে ওদের ঘরে ঢোকে রুপেন্দ্র। খুব বেশী বড় ঘর না। একপাশে একটা পাথরের বেদী মত করে সেখানে শয্যা পাতা, এছাড়া ঘরে কয়েকটা পাথর আর মাটির পাত্র, একটা কুঁজো, আর কুলুঙ্গিতে একটা প্রদীপ ছাড়া আর কিছু নেই। সুরেন্দ্র বিছানায় বসে।
ধোপা বলে, " আসলে আমাদের ঘর খুব ছোট.... এখানেই কষ্ট করে আপনাকে থাকতে হবে আজ রাতে, আপনি এখন বিশ্রাম করুন..... আমি খাবারের ব্যাবস্থা করি.... "
ভীখু আর তার বৌ বাইরে চলে যায়। রুপেন্দ্র আয়েস করে বসে। আজ রাত তো বেশ একটা নিশ্চিন্ত আশ্রয় পাওয়া গেলো, কাল ভোর ভোর এখান থেকে বেরিয়ে আবার রওনা হতে হবে। কে জানে কতদিন লাগবে সেখানে পৌছতে? ভীরার দেওয়া আংটিটা হাতে নিয়ে দেখে.....ভালো একটা জিনিস পাওয়া গেছে আজ, খুব কাজে লাগবে ওর।
রাতে যবের আটার রুটি আর দুধ দিয়ে খাওয়া শেষ করে রুপেন্দ্র। ধোপার বৌএর নাম চপলা, ওর ব্যাবহার এখন একেবারে পালটে গেছে। রুপেন্দ্রকে সামনে বসিয়ে যত্ন করে খেতে দিচ্ছে। না চাইলেও চপলার ভরন্ত যুবতী শরীরের দিকে রুপেন্দ্রর চোখ চলে যাচ্ছে। ঝুঁকে যখন খাবার এগিয়ে দিচ্ছে তখন ওর বড় বড় স্তনের কিছুটা রুপেন্দ্রর নজরে আসছে। সদ্য দুটি নারী শরীর দেখার সৌভাগ্য হয়েছে ওর। তাতে নারীর প্রতি আকর্ষন প্রবল ভাবে বেড়ে গেছে। ও চোখ সরাতে চাইলেও বার বার ওর চোখ চপলার ভরাট বুক, খোলা নাভির দিকে চলে যাচ্ছে। চপলার গলার স্বরও খুব মিস্টি, চোখদুটো একেবারে কালো হরিনীর মত। রাজকুমারীকে খুব মনে পড়ছে ওর। কেমন যেনো স্বপ্নের মত লাগে সব ওর কাছে। শরীরে কামের বাণ ডেকে যায়। আহ.....কবে যে আবার রাজকুমারীকে সেদিনের মত আদর করতে পারবে?
খাওয়া শেষ করে শুতে যায় ওরা। রুপেন্দ্র পাথরের বেদীর শয্যায় আর ভীখু আর চপলা নীচে মাটিতে শুয়ে পড়ে। চপলার শরীরের কথা ভাবতে গিয়ে লিঙ্গ শক্ত হয়ে যায় রুপেন্দ্রর। কিছুতেই ঘুম আসছে না ওর। ঘরের মধ্যে একটা তেলের প্রদীর টিমটিম করে জ্বলছে। তাতে ঘরে একটা আলো আঁধারী পরিবেশ তৈরী হয়েছে৷ এদিকে নীচ থেকে ভীখু আর তার বৌএর নিশ্বাসের আওয়াজ আসছে, ওরা গভীর ঘুমে মগ্ন। কিন্তু কামত্তেজনা রুপেন্দ্রকে জাগিয়ে রেখেছে । আজকাল প্রতি রাতেই এভাবে কামউত্তেজনা জেগে ওঠে ওর। আজ একটু বেশীই জাগছে।
অনেক সময় কেটে যায় কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসে না রুপেন্দ্রর। ও উঠে বসে, নীচের দিকে তাকাতেই চোখ আটকে যায় ওর। চপলা চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। ঘুমের ঘোরে ওর বুকের কাপড় ঢিল হয়ে খুলে গেছে। একদিকের বুক বাইরে বেরিয়ে এসেছে। শ্যামলা রঙ এর বড় স্তনের আকার একেবারে শঙ্খের মত, একেবারে গোল, বৃন্তের কাছটা একটু ফোলা..... ঠিক নিখুঁত গম্বুজাকৃতি যাকে বলে.....রুপেন্দ্রর লিঙ্গ আরো শক্ত হয়ে ওঠে...... এভাবে কারো স্ত্রীকে দেখা পাপ... কিন্তু সুরেন্দ্রর শরীরে কামত্তেজনা ওকে তাড়িত করছে, চপলার ঘাগরা হাঁটুর উপরে উঠে আছে.... মৃদু আলোতে মসৃণ উরু চকচক করছে। একটু ভালো করে দেখার জন্য খুব ধীরে ধীরে শয্যা থেকে নেমে আসে ও। চপলার ভরন্ত শরীরের অমোঘ আকর্ষণ ও এড়াতে পারছে না। ভীখুকে পার করে চপলার পাশে যায়..... চপলার স্তন রাজকুমারীর থেকে অনেক বড়, ও ঝুঁকে স্তনের সৌন্দর্য্য দেখতে দেখতে মগ্ন হয়ে যায়। গভীর ঘুমে থাকা চপলা ওর অস্তিত্ব একেবারেই টের পায় না। রুপেন্দ্রর মনের খুব ইচ্ছা করে কাপড়টা পুরো সরিয়ে চপলার ওই বিশাল স্তন দেখার কিন্তু পাছে জেগে যায় তাই সাহস হয়ে না...... নিশ্বাসের সাথে সাথে চপলার সুন্দর নাভী উপরে উঠছে আর নামছে। নাভীর একটু নীচে ওর কোমর বন্ধনী দেখা যাচ্ছে...... চপলার স্তনে দেখতে দেখতেই রুপেন্দ্র কাপড়ের আড়াল থেকে নিজের খাড়া লিঙ্গ বের করে আনে। খুব ধীরে ধীরে সেটা নাড়াতে থাকে ও।
চপলা গভীর ঘুমের মাঝে একটু নড়ে ওঠে, তাতে ওর স্তনের কাপড় আর একটু সরে গিয়ে অন্য স্তনটাও অর্ধেক বেরিয়ে আসে। রুপেন্দ্রর উত্তেজনায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। এক নিষিদ্ধ অথচ রোমাঞ্চকর অনুভূতি ওর শরীরকে চালিত করে, শক্ত কঠিন লিঙ্গের শিরা উপশিরা জেগে উঠেছে ওর, অগ্রভাগ রক্তের মত টকটকে লাল.....এই মুহূর্তে চপলা জেগে গেলে কি হবে সেটা না ভেবেই ও ওর পাশে বসে হস্তমৈথুন কার্য চালিয়ে যেতে থাকে......
হঠাৎ করে ওকে চমকে দিয়ে ভীখু উঠে বসে। থমকে যায় রুপেন্দ্র। ভীখু এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে, ভয়ে হৃদ স্পন্দন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে আসে রুপেন্দ্রর। ও নিজের হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে রাখা খাড়া লিঙ্গের দিকে তাকায়, সেটা তখনো বিস্ফারিত হয়ে চেয়ে আছে..... ভীখু কিন্তু সেভাবেই চেয়ে থাকে, কিছু বলে না।
একটু পরেই রুপেন্দ্র বুঝতে পারে ভীখু মোটেও জেগে নেই। ও ঘুমের ঘোরে উঠে বসে আছে। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে ওর। ও কাপড়টা নামিয়ে আস্তে করে উঠে ভীখুর পাশে যায়। তারপর হালকা করে ওর ঘাড়ে আঘাত করতেই ভীখু সেখানে লুটিয়ে পড়ে। এসব কায়দা ভালো করে জানা আছে ওর। একটু নিজের মনে হেসে ভীখুর শরীর দুহাতে তুলে উপরে শুইয়ে দেয়। এবার নিজের হাতের দিকে চাইতেই মধ্যমায় ভীরার দেওয়া আংটিটা চোখে পড়ে। সেটার দিকে চেয়ে ও ভীখুকে মনে করে, সাথে সাথে ওর চেহারা পালটে ও ভীখুর রূপ নেয়। মনে মনে দারুণ খুশী হয়ে ও চপলার পাশে ভীখুর জায়গায় শুয়ে পড়ে।
নিজের হাতে চপলার বুকের কাপড় সরিয়ে ওর স্তন উন্মুক্ত করে দেয়, উত্তেজনায় হাত কাঁপছে ওর। নিজের হাত চপলার সুডৌল স্তনের উপরে রেখে হালকা চাপ দেয়, গভীর ঘুমের থেকে উসখুস করে ওঠে চপলা। ঘুরে ভীখুরূপি রুপেন্দ্রকে জড়িয়ে ধরে। ওর খোলা নরম বুক সুরেন্দ্রর বুকের সাথে মিশে আছে, চপালার গরম নিশ্বাস ওর মুখে এসে লাগছে। ওর উর্ধাঙ্গের কাপড় এখন প্রায় পুরো সরে গেছে। ওর দুটো স্তনই উন্মুক্ত...দুই স্তনের মাঝখান থেকে একটা গাড় দাগ ওর পেট বরাবর নাভিতে গিয়ে মিশেছে। রুপেন্দ্র আর চপলা পরস্পরের দিকে মুখ করে শুয়ে আছে। ও চপলাকে জড়িয়ে ধরে ওর খোলা পিঠে হাত রাখে। স্বামীর সোহাগ মনে করে চপলা আরো চেপে আসে ওর দিকে। রুপেন্দ্র ওর খোলা পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে নীচের দিকে নামতে থাকে..... ঘাগড়া টেনে নামিয়ে ওর ভারী নিতম্ব আলগা করে দেয়......নরম অথচ মাংসল নিতম্বে হাত বোলাতে বোলাতে আলতো করে চাপ দিতে থাকে, যেনো মাখনের দলা.... ঘুমের মধ্যে কামত্তেজনায় ছটফট করে ওঠে চপলা, সুরেন্দ্র ওর গলা আর গালের পাশে নিজের ঠোঁট ঘষতেই ক্রমশ শক্ত হয় আসে চপলার স্তনবৃন্ত...স্তনের শিরা উপশিরায় রক্তসঞ্চালনের ফলে সেগুলো ভারী আর কঠিন হয়ে আসে, এতো কিছুর মধ্যেও ঘুম পুরো ভাঙে না চপলার। আধা ঘুমের আবেশেই ও নিজের হাত বাড়িয়ে কাপড়ের আড়ালে থাকা রুপেন্দ্রর কঠিন লিঙ্গ খুঁজে বেড়ায়, সুরেন্দ্র ওর হাত নিয়ে নিজের লিঙ্গে পৌছ দেয়...... চপলা শক্ত হাতে লিঙ্গ চেপে ধরে,
বেশী দেরী করা ঠিক না ভেবে রুপেন্দ্র দ্রুতো চপলার নিচের পোষাক নামিয়ে ওর গোপন স্ত্রীঅঙ্গ উন্মুক্ত করে ..... অপলক দৃষ্টিতে চপলার নগ্ন যোনীর দিকে তাকিয়ে থাকে ও। পরীর বা রাজকুমারীর মত অপরূপ না হলেও চপলার শরীরে একটা আলাদা আকর্ষণ আছে..... নাভির একটু নীচ থেকে কালো পাতলা রোমের আভাস দুই উরুর মাঝখান পর্যন্ত ঢেকে দিয়েছে.... দুই উরু চেপে থাকায় মাঝের চেরা জায়গাটা দেখা যাচ্ছে না... রুপেন্দ্র ওর হাঁটু ধরে দুই উরু আলগা করতেই মাঝের গুপ্ত দরজা দেখা যায়...... হালকা ভেজা, সেখানে হাত রাখতেই কেঁপে ওঠে চপলা.... রুপেন্দ্রর মনে হয় গরম কিছুতে হাত রেখেছে..... ও যোনীর সিক্ত খাঁজ বরাবর নিজের আঙুল দেয়, ঘুমের ঘোরে কামপিপাসি চপলা নিজের দুই পা ছড়িয়ে রুপেন্দ্রকে নিজের স্বামী মনে করে যোনীতে প্রবেশ করার ইঙ্গিত দেয়.....
রুপেন্দ্র নিজের কাপড় খুলে নগ্ন হয়ে চপলার দুই পায়ের ফাঁকে নিজেকে রাখে। ওর যোনীর মুখে নিজের লিঙ্গ স্থাপনা করে ওর মুখের দিকে তাকায়, ঘুমের ঘোরে এখনো আছে চপলা, রুপেন্দ্রকে ও নিজের স্বামী ভীখুই মনে করছে..... একেবারে নিস্পাপ মুখ, মাঝে মাঝে চোখ খুল্লেও সেখানে কোন বিস্ময় নেই..... উপরে শয্যার দিকে চোখ পড়ে সুরেন্দ্রর..... মুহুর্তে চমক ভাঙে ওর, কামত্তেজনায় এটা কি করতে যেচ্ছে যাচ্ছে ও? নিজের আশ্রয়দাতার সাথে চাতুরী করে তারই স্ত্রীর শরীর ভোগ করছে? না না না..... এটা তো মহাপাপ..... হাজার হোক, চপলা তো ওকে স্বেচ্ছায় শরীর দেয় নি, ওকে নিজের স্বামী ভেবে কাছে টেনে নিয়েছে...... এটা তো ওর বিশ্বাসের সাথে খেলা করা......।
চপলার যোনীভেদ করতে উদ্যত হওয়া কঠিন লিঙ্গকে ওর যোনীর মুখ থেকে সরিয়ে নেয় রুপেন্দ্র।
চপলার উপর থেকে সরে আসে ও। ওর পোষাক আবার আগের মত পড়িয়ে দিয়ে ভীখুকে তুলে এনে ওর পাশে শুইয়ে দেয়....... ঘুমন্ত চপলা কামতাড়নায় ভীখুকে জড়িয়ে ধরে।
বাইরে আসে রুপেন্দ্র .... উত্তেজনার বশে যে ভুল করছিলো তার ক্ষমা নেই, পতিব্রতা নারীর সতীত্ব কেড়ে নিচ্ছিলো ও। বাইরে কুয়ো থেকে জল তুলে নিজের চোখেমুখে দেয়, এখন শরীর ধীরে ধীরে শান্ত হচ্ছে..... চারিদিকে তাকিয়ে দেখে পূর্ব আকাশে আলোর আভাস, মানে ভোর হতে চলেছে। ওর হাতের আংটি প্রায় লাল হয়ে এসেছে, মানে ও আবার নিজের রুপে ফিরে আসছে।
ঘরে ঢুকে কোন সাড়াশব্দ না করে নিজের ঝোলা আর তরবারীটা নিয়ে বেরিয়ে আসে। চপলা এখন তার নিজের স্বামীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে.... আর তাকায় না রুপেন্দ্র.... ভীখুর বাড়ি ত্যাগ করে পথে নেমে আসে। আশে পাশে গাছে পাখিরা কিচির মিচির জুড়ে দিয়েছে৷
(চলবে)
Deep's story