Thread Rating:
  • 118 Vote(s) - 2.53 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery দীক্ষা লাভ - এক মায়ের পরিবর্তন
Update :20(A)


বৃহস্পতিবার,

আজ মন্টুর মেয়ের বিয়ে, সক্কাল সক্কাল মন্টুর ছোট ছেলে গুরুদেবকে ডেকে নিয়ে গেছে। বিনোদ গেছে অমরকে খুঁজতে, সেই যে গেছে আর বাড়ি ফেরেনি এখনো।কি কারণে যে অমর বাড়ি ছেড়ে গেছে বিনোদ জানে না।বউমার এক কথায় বিনোদ অমরকে খুঁজতে বেরিয়েছে, কিন্তু ভীষণ বিরক্ত নাতির এই কার্যকলাপে।

   রান্না-বান্না শেষ করে ঊষা অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে রাস্তার দিকে, কিন্তু কেউ ফিরে আসে না, না ছেলে না শ্বশুর।তাও তো সেই ঘন্টা দুই হলো শ্বশুর গেছে। দুঃশ্চিন্তায় ঊষার মন ধুক ধুক করতে লাগল।সারা রাত ঘুমায়নি ঊষা,চোখের কোলে কালি পরেছে, চোখ বুজে আসতে চায়।মাথা ঝিমঝিম করছে  অবসাদে।

তবুও কাজের  ফাঁকে ফাঁকে হারানো মানিক খুঁজে পেতে চোখ রাস্তার দিকে ঊষার,না এখনো কেউ এলো না, এই ফাঁকে  ঊষা কিছু থালাবাসন হাতে করে কলের পাড়ে বসে পরল, আস্তে ধীরে ছাই দিয়ে মাজছে।এর কিছুক্ষণ পরেই 

-- না পাইলাম না তুমার পুলারে, আসে-পাশে কুনুক্ষানে নাই।

একটু থেমে আবার বলল- 

--ভাত দেও কয়ডা খাইয়া বিশরাম করি গ্যা । 

শ্বশুর ফিরে এসেছে কিন্তু শূন্য হাতে!রাগে দুঃখে শরীর চিটমিট করতে লাগল ঊষার।হাতের গামলা ঝাটকা দিয়ে ফেলে হড় হড় করে রান্না ঘরে গিয়ে বলল

-- আসেন,গিলা উদ্দার করেন আমারে । 

নাহ,বউমার মতিগতি কিছুই বুঝতে পারে না বিনোদ,অপরাধ তো সে কিছুই করেনি, ঘুম থেকে উঠেই বউমার কথায় অমরকে খুঁজতে বেরিয়েছে, না পেলে কি করবে সে। কতজন কে সে জিজ্ঞেস করেছে - আমাগো অমররে দেখচাও নাকি। এদিক ওদিক কোনদিকই তো বাদ দেয়নি।শেষে রাগটা ওই নাতির উপরেই গিয়ে পরল- শালা কথায় কথায় বাড়ি ছেড়ে পালায় আর যত ঝামেলা আমার ওপর।

যেমন- তেমন করে বিনোদ ভাতের থালার সামনে বসে গিলতে লাগল।উপায় যে নেই।ঊষা আবারও থালাবাসন মাজতে বসেছে।শ্বশুরের আরও কয়টা ভাত বা আর একটু তরকারি লাগবে কি না একবারও খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজনই বোধ করল না।
একসময় খাওয়া শেষ করে বিনোদ উঠে গেল।নিজের খোপড়ায় বসে তামুক সাজতে লাগল।ঊষা থালাবাসন গুলো ঘরে রেখে, শ্বশুরের এঁটো থালাটা তুলে সেখানে জল ছিটা দিয়ে লেপছিল, ঠিক সেই সময় পায়ের শব্দে ঊষা পেছনে  তাকিয়ে দেখল ছেলে রান্না ঘরের ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে।একদম শুকনো মুখ, কিন্তু তেজে ভরা,শরীর জুড়ে ধুলোবালি।
হাফপ্যান্ট পরা পা দুটো উত্তেজনায় কাঁপছে, চোখ দুটো রক্তের মতো টকটকে লাল,কি যেন বলার জন্য ঠোঁট দুটো তিরতির করে কাঁপছে বাতাসে।ছেলের অবস্থা দেখে ধুক করে উঠল বুকের পাঁজরখানা ।ঊষা অনুমান করতে পারল ছেলের উপর দিয়ে কি ঝড় অবয়ে গেছে ।সাহস হচ্ছিল না ছেলের ওই চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলে,তাই মাথা নিচু করে নিল ঊষা, আস্তে করে বলল
-- 'কই গেচিলি?'
ব্যস! এতটুকু বলেই মাথা নিচু করে নিল।ছেলের দিক থেকে কোন উত্তর পেল না।শুধু বাঁকা চোখে দেখল  ছেলে পকেট থেকে একটা ছোট শিশি বের করে ঘরের সামনে রাখল।চমকে উঠল ঊষা শিশিটা দেখে।তবু না দেখার ভান করে সেই আগের সুরেই নিচু গলায় ছেলেকে বলল

- যা হাতমুখ ধুইয়ায়  আমি ভাত বারতেচি।

- হুম বারো, আর এইডা ভাতের সাতে মিশায় দিও, যদি আমার ভাতে  না মিশাইবার পারো ত্যালে নিজের থালে ঢাইলা নিও।

ছেলের কথায় হতবাক হয়ে ঊষা তাকিয়ে রইল।ইসসস!কি বিষাক্ত ছেলের কথা, ওই শিশিটার মতোই।তবু ঊষা আলগোছে শিশিটা হাতের মুঠোয় ভরে নিল,একদম শান্ত, শীতল  অথচ বেদনা ভরা সুরে বলল

- এইডা আমার কাচেই থাক, আমার দরকারেই লাইগব।তুই হাত ধুইয়া খাইবার বয়।

অমর কিছু বলল না,হয়ত মনে মনে থু থু ছিটিয়ে হন হন করে ঘরে চলে গেল।নাতিকে দেখে বিনোদও খুশি হল 

- শালা আইচাস ত্যালে?  কনে ছিলি সারা রাইত? 
বাল দেয় উত্তর বুড়োর, কোন কথা না বলেই অমর ঘরে চলে যায়।কিছুক্ষণ পরে তামুক খাওয়া শেষ করে বিনোদও বাইরে বেরিয়ে যায়। 



        এদিকে  ঊষা অথব্বের মত নিস্তেজ হয়ে রান্না ঘরের সম্মুখের খুঁটিটায় হেলান দিয়ে বসে আছে।হাতের মুঠিতে ছেলের দেওয়া উপহার সেই শিশিটা আরও শক্ত করে ধরা।ভেসে গেছে সেই গতরাতের স্মৃতিতে----


দরজা খুলে অমর বাইরে চলে যাবার ঠিক কিছুক্ষণ আগের সেই মুহুর্ত ঊষা ভাবতে লাগল।ক্লান্ত হয়ে যখন চোখ বুজে বিশ্রাম করছিল আর গুরুদেব আস্তে ধীরে হাতে মালিশ করে দিচ্ছিলেন।বেশ ভালো লাগছিল ঊষার।তার কিছুক্ষণ পরেই গুরুদেব উঠে গিয়ে উনার ঝোলার ভেতর থেকে কিছু বের করে আনলেন। ঊষা চোখ বুজেই পরে ছিল।হটাৎ ঊষার একটা হাত টেনে নিয়ে গুরুদেব কি যেন ভরতে লাগল হাতে, ঊষা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখল - এক জোড়া চুড়ি।ঊষা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছিল, তারপর আরও অবাক হলো , যখন একটা দামি হার গুরুদেব বের করলেন। সোনালী রঙের হারটা চক চক করছিল।সেই হারটা ঊষার গলায় পরিয়ে দিলেন গুরুদেব।তারপর একের পর এক গয়না। ঊষার উলঙ্গ দেহকে ঢেকে দিতে লাগল।ঊষার চোখ জ্বলজ্বল করছিল অলঙ্কারের চকমকিতে।ঊষা নির্বোধের মতো তাকিয়ে ছিল গুরুদেবের মুখের দিকে।গুরুদেব মুচকি হেসে শুধু বলেছিলেন


- 'এগিনা তোর জইন্যে, কাইল বিয়া বাড়ি সাইজা যাবি দেইহা পুইজার বাজার করবার যাইয়া নিয়া আইচি, লুকাই রাখচিলাম হিহিহিহিহিহি।'

খুশিতে ঊষার চোখে জল চলে এসেছিল।জড়িয়ে ধরেছিল গুরুদেবের গলা।অলঙ্কার গুলো নকল ছিল, সোনার নয়।কিন্তু গুরুদেবের ভালোবাসা তো খাঁটি। কি করে উনি ঊষার মনে কথা বুঝতে পারল?কত সাধ হত পাড়ার অন্যান্য বউদের মতো সেও সেজেগুজে কোন অনুষ্ঠানে যায়,সবাই যেমন রসিয়ে রসিয়ে  গয়নাকে কেন্দ্র করে গল্প করে তারও মনে হত সেও যদি এভাবে কাউকে নিজের গয়না গুলো দেখাতে পারত, দুটো কথা বলতে পারত।  কিন্তু পারেনি কোন দিন।তাই আজ যখন সেই অমূল্যধন হাতে পেল তখন  খুশিতে গুরুদেবের গলা জড়িয়ে ধরেছিল।তারপর  সোহাগি সুরে বলেছিল 

--  এত কিচু আনার কি দরকার ছিল?

গুরুদেবও ঊষাকে জড়িয়ে ধরলেন।
সত্যিই অনেক কিছু এনেছেন গুরুদেব- নাকের কানের গলার হাতের পায়ের কোমরের। ঊষার গলা জড়িয়ে ধরে উনিও আদুরে সুরে  বলছিলেন 
- এত আর কনে রে, এই তো সামাইন্য কিচু জিনিস , তোর পচন্দ হইচে?

- হুম খুউউউব।

এর পরেই গুরুদেব শয়তানি করে বলেছিলেন 
- তবে একটা যে ভুল হইয়া গেচে রে,আসল জিনিসডাই তো আনা হয় নাই।

-- কি জিনিস! 
গুরুদেব শয়তানি হেসে ঊষার গুদে আঙুল ঘষে বলেছিলেন 

- ভাবছিলাম তোর এই এত সুন্দুর ভোদার ঠোঁটের  জইন্যে একখান রিং নিয়া আসুম।কিন্তু দেখ আমার ভোলা মন, মনেই নাই হিহিহিহিহি

গুরুদেবের কথায় ঊষা খিল খিল করে হেসে উঠেছিল -
- ধ্যাৎ কি সব কোন, অহেনে আবার ঠোঁট কোনে?

এর পর গুরুদেব কিছু বলবেন ঠিক তার আগেই পাশের রুমে সেই ঢুব ঢুব শব্দ আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই দরজা খুলে অমরের বাইরে চলে যাওয়া। 

অমর কি জানে সে শুধু একা বেরয়নি?  তার পিছু পিছু আরও দুজন বেরিয়ে ছিল?হ্যাঁ অমর বেরনোর সঙ্গে সঙ্গে ঊষাও সেই গয়না ভর্তি উলঙ্গ শরীরেই বেরিয়ে এসেছিল, অমর অমর অমর করে চিৎকার করেও আর অমরকে খুঁজে পায়নি সে।অন্ধকারের মধ্যেই সে বড় রাস্তায় চলে গিয়েছিল, নিজের অবস্থার কথা একবারও ভাবেনি।শেষে গুরুদেব জোর করে ধরে এনেছিল ঊষাকে।

ঊষা এতক্ষণ বসে বসে কালকের করা সেই নিজের ভুল গুলোই ভেবে চলেছে,ছেলেকে সে বিন্দুমাত্র দোষ দিতে পারল না।এসব তার অদৃস্ট, দোষ দিবে কাকে?হঠাৎ কারও উপস্থিতি একদম কাছাকাছি বুঝতে পারল।মুখ তুলে তাকিয়ে দেখল গুরুদেব দাঁড়িয়ে আছে সামনে ।গুরুদেব ঊষার হাতের শিশিটার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছেন।দুজনের চোখাচোখি হতেই গুরুদেব বললেন

- এইডা কই পাইলি? 

ঊষা অন্যমনস্কভাবে বড় অসহায় ভাবে উত্তর দিল

-- অমর আইনা দিচে।

-- বেজন্মাডা কোনে?

ঊষা অন্যমনস্কভাবেই আঙুলের ইশারায় ঘর দেখিয়ে দিল।

ব্যস্ এটুকুই, ভীমগতিতে গুরুদেব ঘুরে দাঁড়ালেন, বজ্রমুঠি পাকিয়ে শুধু একটা হুংকার দিলেন -এত সাহস বেজন্মাডার!তোরে মরবার কয়?

বলেই দ্রুত এগিয়ে চললেন ঘরের দিকে।যেতে যেতে আরও ভয়ানক কি সব যেন বলছিলেন, প্রথমে ঊষা বুঝতে পারেনি কি ঘটতে চলেছে, পরে বুঝতে পেরেই মরিবাঁচি করে সেও দৌঁড় লাগাল,
-- দাঁড়ান আপনে দাঁড়ান, যাইয়েন নাআ আ আ আ আ 
 গুরুদেব তখন প্রায় উঠোন থেকে বারান্দায় পা রাখবে তখনই ঊষা আছড়ে পরল গুরুদেবের পায়ে।

-- ছাড় তুই আমারেএএএএএএএ, আইজ ওর একদিন কি আমার একদিন, মাইরাইইইইই ফালামু বেজন্মারে....।

এক ঝটকায় ঊষাকে দূরে সরিয়ে দিলেন,ঊষা ছিটকে পরল দূরে, শাড়ির আঁচল খসে গেছে,টানাহেঁচড়া তে ব্লাউজের উপরের একটা হুক খুলে উথলে উঠে দুধ।চুলের খোঁপা খসে পরেছে।সেই অবস্থাতেই আবারও গুরুদেবের পা পেঁচিয়ে ধরল, কান্না মাখা অনুনয় করে বলল

-- ওগো তুমি শান্ত হও কি করতেচ, ওর ভুল হইয়া গেচে......।

অগ্নিমূর্তি গুরুদেব তবু শান্ত হচ্ছে না,আজ প্রথম হয়ত ঊষা -- 'ওগো তুমি' সম্বোধন করল। এত মধুর আহ্বানেও গুরুদেব শান্ত হতে পারলেন না।

-- তুই ছাড়, ওরে না মাইরা শান্ত হমু না,ওর খুব বাইর বারচে, শিক্ষা দেওয়া দরকার। 

- ওগো ওরে মারার আগে আমারে মাইরা যাও, আমারে শ্যাষ কইরা ওরে শ্যাষ করো.... 
বলেই ঢুঁকরে ঢুঁকরে কাঁদতে লাগল পায়ে আছড়ে পরে।

গুরুদেব তবুও বাঁধ মানে না। টানাটানি গালাগাল, মারার হুমকি চলতেই লাগল। 

এদিকে ঘরের ভেতর আরেকজন ধারালো দা হাতে দাঁড়িয়ে আছে, ঘরে প্রবেশ করা মাত্রই এক কোপে দুখণ্ড করে ফেলবে, সেও মনে মনে ভাবছে--

-- আয় আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।

বাইরের উত্তেজনা আরও গভীর হচ্ছে তার মা যে প্রানপনে ঠেকাবার চেষ্টা করছে তা ভেতর থেকেই বুঝতে পারল।

এদিকে গুরুদেবকে আর কিছুতেই আটকানো যায় না।দরজার প্রায় সামনে চলে এসেছে, ঊষা পা ধরে পেছন দিকে টানছে আর গুরুদেব ঊষাকে মাটির সাথে ঘষটে ঘষটে নিয়ে সামনে চলছে। 

-- তুই সর কইতেচি আমার রাগ তুই খুব ভালো মতো জানস, ওর টুটি চিপা জান বার করুম আইজ খানকির ছেলে মাগির বাচ্চার এত সাহস আসে কই থিকা তাই আইজ দেহুম.......। 

-- আ আ আ আপনে ওরে মাইরলে আমি এহনি এই বি* খামু। 

একথা  বলেই গুরুদেবের পা ছেড়ে ঊষা রান্না ঘরের দিকে দৌঁড় দিল।গুরুদেব আর দরজা খুলে ঘরে ঢুকতে পারলেন না,তিনিও দৌড়ে গেলেন রান্না ঘরের দিকে।দেখলেন সত্যি সত্যি ঊষা শিশিটা হাতে তুলে নিয়েছে, গুরুদেব খফাত করে কেড়ে নিয়ে শিশিটা জঙ্গলের দিকে ছুঁড়ে ফেলে বললেন
- তুই পাগল হইচাস?

-- হ আমি পাগল হইচি.....

বলেই হাউহাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বসে পরল মাটিতে।গুরুদেবও কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। ঊষা ইনিয়েবিনিয়ে কাঁদতে লাগল।অনেকক্ষণ পর ঊষার পাশে বসে ঊষাকে শান্ত করার চেষ্টা করতে লাগলেন।

এদিকে অমর দেখল যে শয়তানটা সরে পরেছে, তাই হাতের দা টা বিছানার ওপর রেখে আবারও শুয়ে পরল।পেটে খিদে আছে,সেও ভীষণ  ক্লান্ত। ঘর থেকে পালিয়ে সারারাত ওই নদীর পাড়ে একা একা বসে ছিল, ভয়ে গা ছমছম করছিল ওই শূন্য নদীর কূলে।তবুও একপা সরেনি সেখান থেকে।  শেষ রাতে কখন সেখানেই ঘুমিয়ে গেছে জানে না।তারপর যখন ঘুম ভাঙে দেখে অনেক বেলা হয়েছে।ক্লান্তি, অবসাদ রাগে ক্ষোভে যে কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না, শেষে পাড়ার এক মস্ত কৃষকের বাড়িতে যায় লুকিয়ে লুকিয়ে আর সেখান থেকেই অতি সন্তপর্ণে চুরি করে সেই শিশিটা।


 গুরুদেব আর ঊষা বসে আছে,গুরুদেব মাঝে মাঝে সান্ত্বনা দিচ্ছে ঊষাকে,এবং নিজের ব্যবহারের জন্য ক্ষমাও চাইছে 

-- কি করুম ক তোর হাতে শিশিডা দেইহাই মাথা গরম হইয়া গেচে,তাই রাগ সামলাইবার পারি নাই।......

একটু থেমে বললেন

--.... আইচ্ছা তুই তি ক কোন ছাওয়ালে তার মাইরে বি* খাইবার কথা কইবার পারে?এমন বেজন্মা কেউ প্যাটে ধরে?

ঊষা গুরুদেবের মুখের দিকে তাকাল, মুখ দেখেই বুঝতে পারলেন কথাগুলো ঊষার ভালো লাগেনি।সেই তখন থেকে যা ইচ্ছে তাই গালাগাল দিয়ে যাচ্ছে ছেলেকে, এটা ঊষার মোটেও ভালো লাগেনি। হাজার হোক ছেলে তো।ঊষার মনের ভাব বুঝতে পেরে একটু থতমত খেয়ে কথা ঘুরিয়ে বললেন
-- আইচ্ছা আইচ্ছা তোগো মা-বেটার মইধ্যে আমি নাই,নে এহন কয়ডা খাইবার দে দেহি, খিদায় প্যাট জ্বলতেচে। 


লোকটা কি!এতসবের মাঝেও কেমন নির্দ্বিধায় পেটের কথা বলে দিলো।ঊষা অবাক মুখে তাকিয়ে থেকে একসময় উঠে পরল। শাড়ি ব্লাউজ ঠিকঠাক করে চোখে মুখে জল দিয়ে এল।তারপর গুরুদেবের জন্য ভাত বেড়ে দিল।গুরুদেব সেবায় বসলেন।

-- তুই খাইচাস?
- নাহ 
- ত্যালে বাইরা নে একসাথে খাই।
- আপনে খান, আমি পরে খামু।

ঊষা সবই করছে, সবই বলছে কিন্তু ওর অন্তরে যেন চাপা কোন বিষয় ঘুরছে।দু-এক কথায় উত্তর দিচ্ছে,কিন্তু নিজে থেকে কিছু বলছে না।গুরুদেবেও লক্ষ্য করলেন বিষয়টা। ভাবলেন কিছুক্ষণ আগের ঘটনায় এখনও রেগে আছে, তা  হোক পরে মানিয়ে নিলেই হবে।গুরুদেব সেবা সেরে কলের পাড়ে হাত মুখ ধুতে যাচ্ছেন ঠিক তখন ঊষা বলল-- 
--আপনে এহন একটু বাইরে যাইবেন, আর দেরি কইরা ফিরবেন।

এটা আদেশ না অনুরোধ?উনিও রাতে ঘুমাননি।আর সকালের আসল ঘুমটার সময়ই মন্টুর ছেলে এসে ডেকে নিয়ে গেছে, এখন সেবা সেরে একটু গড়াগড়ি পারবেন এই ছিল উনার ভাবনা।তাই গুরুদেব একটু অবাকই হয়ে গেলেন

-- আমার বাইরে যাওয়া লাগব ক্যান?

-- যাইতে কইচি জান, অত ক্যান ক্যান আমি বুঝি না।

বলেই এঁটো থালাটা তুলতে লাগল। গুরুদেব আর দ্বিরুক্তি না করে হাত ধুয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন।বুঝতে পারলেন আজ কাজটি উনি মোটেও ভালো করেননি।মায়ের উপস্থিতিতে সন্তানকে কেউ স্পর্শ করলে কোন মা তা সইতে পারে?সামান্য এক তুচ্ছ মুরগীও সন্তানের জন্য চিলের সাথে লড়াই করে।
যদিও উনি ঊষার ছেলের শরীরে কোনরুপ স্পর্শ করেনি।কিন্তু মায়েদের কাছে যে- বলা আর স্পর্শ করা একই জিনিস।


গুরুদেব চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে ঊষা দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকল এবং প্রথমেই যা দেখল তাতে ঊষার চক্ষু চড়কগাছ।কেমন করে ধাঁরালো দা টা পাশে রেখে ছেলে তার শুয়ে আছে।মানে!  মানে বিরাট কিছু ঘটতে যাচ্ছিল!ভগবান রক্ষা করেছেন এই ভরসা, নইলে কি হত?কাকে আজ হারাতে হত? কিন্তু কাউকে না কাউকে ঠিক হারাত। ঊষা মনে মনে ভাবে না না না এভাবে আর চলতে পারে না - বাঘ আর মহিষ একঘাটে জল খেতে পারে না। ব্যবস্থা তাকে করতেই হবে।

সকল দ্বিধা দ্বন্দ্ব লজ্জা-শরম বাদ  দিয়ে এখন এসেছে সে ছেলের কাছে।কারণ লজ্জা-শরমের পর্দা কবেই উঠে গেছে।এখন আর ভণিতা নয়।সে যে সতীসাবিত্রী আর নয় তা ছেলেকে বলার প্রয়োজন নেই।অবশ্য নিজেকে সতী প্রমান করতেও আসেনি সে।ঊষার 'ঊষা' তো ডুবে গেছে তমসা তিমিরে।ঊষা এখন এসেছে শুধু মাত্র মাতৃত্বের টানে;অভুক্ত সন্তানের টানে।যেমন যেসকল পতিতাগণ সন্তানের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে গ্রাহককে নিয়ে কুটিরে ঢোকে। সন্তান দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদে।একসময় অর্থ পায়, এবং সেই অর্থ দিয়েই  সন্তানের কান্না থামায়।আচ্ছা সেই সন্তানেরাও কি মাকে ঘৃন্না করে?হয়ত করে।তবু মা বাইরে বেরিয়ে হাসিমুখে কোলে তুলে নেয়, স্নেহভরে পেটপুরে খাওয়ায়।ঊষা অর্থ না পাক কিন্তু  সেও তো এভাবেই তার  সোনার চাঁদকে কাঁদিয়েছে।তাই ঘৃন্না করবে করুক, মরতে বলে বলুক....... যা ইচ্ছে...... । দরকার পরলে ছেলের পায়ে পরবে।সেই ভরসাতেই ঘুমন্ত ছেলের পাশে বসে গায়ে হাত দিয়ে  বলল

- অমর ও অমর উঠ বাবা,  চল খাইয়া নিবি।

মায়ের ডাকে অমরের কাঁচা ঘুমটা আবারও ভেঙে গেল, মনে মনে ভীষণ ক্ষীপ্তও হলো। কিন্তু সাড়া না দিয়ে চুপ করে পরে রইল অমর।ছেলে জেগে গেছে ঊষাও বুঝতে পারল।

- কি রে সোনা, চল দুপুর গড়াই গেল,  আমিও যে খাই নাই এহনো, চল সোনা চল।
হাত ধরে টেনে তোলার চেষ্টা করতেই এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিল অমর।এতে ভীষণ ভীষণ কষ্ট পেল ঊষা, বুকটা দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে যেতে লাগল।বুকফেঁটে কান্না বেরিয়ে আসতে চায়।তবুও কান্না চাপা দিয়ে একবিচিত্র আর্তনাদের মতো ঊষা বলতে লাগল

- মা রে ঘিন্না করস?কর, তোর মা ঘিন্নারই পাত্র,তোর মা যে নষ্টা, নষ্টারে সবাই ঘিন্নাই করে তুইও কর তাতে দুঃক্ষ নাই, কিন্তু বিইশ্বাস কর সোনা তোর মা নষ্টা ছিল না এই তোর পা ছুঁ......

'ইয়া' বেরনোর আগেই অমর চৌকিতে উঠে বসে মায়ের মুখে হাত চাপা দিল।কান্নায় ভেঙে পরল অমর

-- আর কইও না মা আর কইও না......।

-- আমারে কইতে দে বাবা কইতে দে, আমার যে বুক ফাইটা যাইতেচে আর চাইপা রাইখপার পারতেচি না আমারে কইতে দে......।সবাই আমারে কষ্ট দেয়, ভুল বুজে, তুই সন্তান হইয়াও যদি মায়রে কষ্ট দেস আমি যামু কনে..... তুই ক, তুই ছাড়া আমার আর কেরা আচে.....।তুই চইলা যাওয়ার পর আমার মনের অবস্থা কি হইচিলও তুই কেম্বা কইরা বুজবি... তোরে হারাইলে আমি কি নিয়া বাচুম.... 
 
ঊষাও কান্নায় ভেঙে পরল।

-- আমি যে আর সইয্য করবার পারতেচি না মা, আমারে মুক্তি দেও মা মুক্তি দেও.....।

ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল অমর

.......এএএএএইইইই শ শ শয়তানডারে খেদায় ক্যান দেও না মা, ক্যান দেও না?  

 অমর মাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরল বুকে,  হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগল,বহুদিনের জমানো কষ্ট গুলো তরল আকারে গড়িয়ে পরতে লাগল মায়ের বুকে।ছেলে যে কি পরিমাণ কষ্ট বুকে লুকিয়ে রেখেছিল তা ঊষার সামনে পরিস্কার,কষ্ট সেও পেয়েছে কিন্তু ছেলের কষ্টের কাছে খুবই নগন্য।

মা-ছেলে অনেকক্ষন একে-অপরকে জড়িয়ে ধরে ভীষণ রকম কান্না করল।যতটা কান্না করলে জমানো কষ্ট কমে ঠিক ততটাই হয়ত কাঁদল ।সেই চোখের জলই বুঝি মান-অভিমান ,দুঃখ -কষ্ট , ঘৃণা সব কিছুকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল ;ছেলের কপালে স্নেহময় চুম্বন এঁকে  ভরসা দিল সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে আগের মতো,এভাবেই পুনরায় সেই স্নেহময় ভালোবাসা স্থাপিত হল মা-ছেলের মাঝে।


দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল হতে চলল। ঊষা স্নান করছে এখন। অনেকটা ফুরফুরে লাগছে নিজেকে, ছেলের সাথে যে সংঘাত ছিল সেটা কেটে গেছে,নিজের হাতে সে শুধু ছেলেকে খাওয়ানি ছেলেও তাকে আদর করে মুখে ভাত তুলে দিয়েছে।তারপর  ছেলে প্রায় নাচতে নাচতে বিয়ে বাড়ির দিকে গেছে,আহ কতদিন পরে ছেলেকে এভাবে হাসি-খুশি দেখাচ্ছিল।ছেলের হাসিতেই মন ফুরফুরে লাগছে ঊষার।একটু পরে সবাই মিলে নাচতে নাচতে জল ভরতে যাবে নদীতে।ফাঁকা বাড়ি, সেই সুযোগেই হাতের যা একটু কাজ ছিল সেরে স্নান করছে ঊষা।সেও যাবে জল ভরার সেই আনন্দের স্রোতে গা ভাসাতে।


সাদা রঙের পাতলা শায়াটা দুধের ওপর গিঁট বেঁধে বসে পরেছে কলের পাড়ে।দু-এক মগ জল শরীরে ঢেলে সাবান মাখছে হাতে পায়ে।সেই সাথে মনের সুখে গুনগুন করে মিস্টি একটা গানের সুর তুলেছে ঊষা, সাবান ঘষছে আর গুনগুন করছে--

"তোরা কে কে যাবি লো জল আনতে। /এই কলসি ভাসাইয়া জলে কান্তে, কান্তে, কান্তে /হো,তোরা কে কে যাবি লো জল আনতে........।"


- বাহ্ কি চমৎকার তোর গলা।

ঊষা চমকে উঠে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল গুরুদেব গোয়াল ঘরের বেড়ায় হেলান দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাঁসছে আর হাততালি দিচ্ছেন।হাততালি কেন যে দিচ্ছেন তা ঊষা পরিস্কার বুঝতে পারল- অমন বেসুরো গলার গানে উনি ব্যঙ্গ করেছেন। লজ্জায় এমনকি রাগে ঊষা মুখ কালো করে ফেলল।বলেছিল অনেক দেরি করে ফিরতে তা আর সবুর হয়নি, এর মধ্যেই এসে হাজির।সত্যি বলতে এই অসময়ে উনার উপস্থিতি একটুও ভালো লাগল না ঊষার, স্পষ্ট বিরক্তি দেখা দিল ঊষার মুখে।সাথে একটু ভয়ও পেয়েছে --যে অবস্থায় এখন সে রয়েছে কে না কে এল!কিন্তু গুরুদেবকে দেখে ভয় কাটলেও বিরক্তি কাটল না।মনের সুখে কি সুন্দর গুনগুন করছিল।তাও যেন এই লোকটার সহ্য হলো না।তাই একটু বিরক্তসহকারেই জিজ্ঞেস করল
- 'আপনে এহেনে কি করেন?'

- তোর গান শুনতেচিলাম।হিহিহি হিহিহি......
হাসি থামিয়ে বললেন
- থামলি ক্যান,গা না। 
মাথানিচু করে নেয় ঊষা, মুখ নিচু করেই বলে
- আপনে যান এহন।

ঊষার কথা কানে না তুলে গুরুদেব হাসতে হাসতে ঊষার একদম কাছে এসে দাঁড়ালেন।হাঁটু গেড়ে ঊষার পেছনে বসে ঊষার উন্মুক্ত কাঁধে থুতনি রেখে, আদর করে জাপটে ধরলেন,কিন্তু এ আদরে কাম ছিল না, যা ঊষাও বুঝতে পারল।গুরুদেব বললেন

- এত খুশি যে!জল ভরবার যাবি মনে হইতেচে?
ঊষা কিছু বলল না।গুরুদেব বড় নরম গলায় সে ভাবেই জড়িয়ে ধরে বললেন

- 'যা তাড়াতাড়ি, এহনি বাইর হইব সবাই।'

একথা বলেই গুরুদেব উঠে চলে যাচ্ছিলেন।ঠিক সেই সময়টাতেই ঊষার বুকের মাঝে যেন কোন এলার্ম বেজে উঠল,ঊষা ঝনাৎ করে উঠল- 

- আপনের সাতে কথা ছিল।

গুরুদেব ঘুরে দাঁড়ালেন।
- কি কথা!

ঊষা গুরুদেবের চোখের দিকে তাকিয়ে বড় একটা হা করেও হা টা বুজে নিল, শুধু ঠোঁট দুটি মৃদু কেঁপে উঠল বার দুয়েক, কি যেন বলতে গিয়েও আর বলতে পারল না। তার পরিবর্তে মাথা নিচু করে ফেলল।গুরুদেব মিটমিট করে হেসে বললেন
- আইচ্ছা পরে কইসেনে কি কইবার চাস, আমি এহন বাজারে চইলাম।

ঊষার বলার ছিল অনেক কিছুই; বলা হল না, কিন্তু বলাটা ছিল ভীষণ দরকার। ঊষা শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখল গুরুদেব ঘরে ঢুকে আবার বেরিয়ে পরলেন,বাজারের উদ্দেশ্য।

কোনমতে  স্নান সেরে, কিছুক্ষণ পরে  হাল্কা সাজগোছ করে চলে গেল ঊষা জল ভরতে।


(চলবে)

# অনেকদিন পরে আবার লেখা, তাই ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন।
Mrpkk
Like Reply


Messages In This Thread
Dating for Sex. - by nrj373 - 09-01-2025, 04:55 AM
RE: দীক্ষা লাভ - এক মায়ের পরিবর্তন - by Mr.pkkk - 21-09-2025, 12:19 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)