14-09-2025, 06:08 PM
কিছু সম্পরকঃ ৬ (গ)
কিছুদিন যাবত রাজীব খুব বিজি সময় কাটাচ্ছে । ভার্সিটির ট্রিভিয়া ক্লাব থেকে ওকে সাধারন সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে । আর দেশের সবচেয়ে বড় ভার্সিটি হওয়ায় ওদের উপর দায়িত্ব পড়েছে আন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার । সেই নিয়েই রাজীবের ব্যাস্ততা । সেই সাথে লেখাপড়ার চাপ ও রয়েছে । আর কিছুদিন পর সেমিস্টার ফাইনাল । এই দুই চাপে রাজীব ঠিক মত ঘুমানোর সময় পাচ্ছে না । তার উপর আর একটা ব্যাপার রাজীব কে বেশ ভোগাচ্ছে , সেটা হচ্চে জয়ের আচরণ ।
হ্যা রাজীব হয়তো একটু বেশি রিয়েক্ট করে ফেলেছিলো , বাপ্পির ব্যাপারটা নিয়ে । তাই বলে এমন করবে জয় !! সেটা রাজীব কখনো ভাবেবি । রাজনীতি জয়েন করেছে , এই খবর রাজীব অনেক আগেই পেয়েছে । সেই প্রথম থেকেই জয় কে খোঁচাচ্ছিল সরকার সমর্থিত ছাত্র উইং । কিন্তু রাজীব জয় কে বার বার বাধা দিয়েছে ।
রাজীব জানে কেন জয় এই শেষ সময়ে এসে রাজনীতি জয়েন করেছে । ওকে বাপ্পির কেস থেকে রক্ষা করার জন্য জয় এটা করেছে । জয় ওই দলে যোগ দেয়ার পর লেডিস হোস্টেলে অনুপ্রবেশ এর ব্যাপারে আর কোন ইনভেস্টিগেশন হয়নি । বাপ্পি আর ওই মেয়েকে শাস্তি দিয়েই কেস ক্লোজ করা হয়েছে ।
এক রাতে জয় এমন সিধান্ত নেবে সেটা রাজীব কোনদিন ভাবতে পারেনি । এটুকু রাগ করার অধিকার কি ওর নেই ? বার বার এই প্রশ্ন নিজেকে করেছে । হ্যা রাজীব ভয় পেয়েছিলো , ভয় পাওয়া কি খুব অপরাধ ছিলো? নির্ঘুম রাতে এই চিন্তা করেই কাটিয়েছে।
কিন্তু জয় এসব কিছুই শুনতে রাজি ছিলো না । দুই রাত রাগ আর রিগ্রেটের সাথে লড়াইয়ের পর রাজীব জয়ের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছিলো । নিজের অবস্থান পরিস্কার করার চেষ্টা করতে চেয়েছিলো। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় নি ।
জয় তখন গলির সামনে একটা ঝুপড়ি দোকানে বসে এলাকার বন্ধুদের সাথে সিগারেট ফুকছিলো । রাজীব গিয়ে সামনে দাড়াতেই নিজের মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে অন্য একজনের সাথে কথা বলতে শুরু করে । সরাসরি এমন প্রত্যাখ্যান উপেক্ষা করে রাজীব বলেছিলো “ জয় একটু এদিকে আয় তোর সাথে কথা আছে”
জয় ওর দিকে না তাকিয়েই বলেছিলো “ যা বলার এইখানেই বল , এরা সবাই বন্ধু বান্ধব , ভাই ব্রাদার”
রাজীব কিছুক্ষন চুপ করে থাকে , বাকিদের মুখের দিকে তাকায় , এরা সবাই এলাকার ছেলে , ছোট বেলায় রাজীব আর জয় এদের সাথেইও খেলাধুলা করতো । রাজীব চলে যাওয়ার পর এদের সাথে তেমন ঘনিষ্ঠতা নেই । সবার চোখে মুখেই একটা অবাক হওয়ার স্পষ্ট ছাপ দেখা যাচ্ছে । এরা সবাই রাজীব আর জয়ের ঘনিষ্ঠতা রাখে ।
এদের মাঝে একটা ছেলে জয় কে বলেছিলো “ জয় যা একটু বাইরে গিয়ে কথা বইলা আয়” ছেলেটা রাজীবের থমথমে মুখ দেখে কিছুটা বুঝতে পেরেছিলো যে ওদের মাঝে হয়তো কিছু ঝামেলা চলছে । তখন জয় অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে দাড়ায় , হাতের সিগারেট অন্য একজনের হাতে দিয়ে ঝুপড়ির বাইরে বেড়িয়ে আসে । ওর প্রতিটা নড়াচড়ায় অনিচ্ছার স্পষ্ট ছাপ । রাজীব এসব বুঝতে পারেও উপেক্ষা করে যাচ্ছিলো ।
“ কি বলবি তারাতারি বল , আমার পার্টি অফিসে মিটিং আছে, প্রথম মীটিঙে দেরি করে যেতে চাই না ” জয় আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বলেছিলো ।
রাজীব সময় নষ্ট করেনি , জয়ের এমন আচরন ওকেও কিছুটা রাগান্বিত করে তুলেছিলো , এখানে আসার আগে রাজীবের মনে যে অনুসুচনা ছিলো , ধিরে ধিরে সেটা কমে আসছিলো আর সেই খালি জায়গাটা রাগ দখল করে নিচ্ছিলো । জয়ের এমন আচরণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না । ভুল সুধু ও একা করেনি ।
“ এমন আচরণ করছিস ক্যান আমার সাথে” রাজীব সরাসরি আসল পয়েন্টে চলে আসে , এখানে আসার আগের মনভাব আর ওর মাঝে নেই । কেউ যদি ওকে এভোয়েড করতে চায় , ওর নিজেরো ঠ্যাকা পরেনি সেধে গিয়ে বন্ধুত্ব জিইয়ে রাখবে ।
“ কেমন আচরণ?” জয় এমন ভাব করেছিলো যেন খুব অবাক হওয়ার মত একটা কথা বলেছে রাজীব
“ তুই জানিস না?” রাজীব চোখ সরু করে তাকিয়েছিলো জয়ের দিকে
জয় হেসেছিলো , তাচ্ছিল্লের হাসি , তারপর হঠাত হাসি থামিয়ে সিরিয়ান টোনে বলেছিলো “ আমি সুধু একটা জিনিস ই জানি , যে বন্ধু মনে মনে বন্ধুত্বের জন্য রিগ্রেট রাখে , মনে এমন ভাব রাখে যে বন্ধুত্বের কারনে নিজের ক্ষতি করছে , সেই বন্ধুত্বের এক কানা কড়ি দাম নাই আমার কাছে”
কয়েক সেকেন্ডের জন্য থেমে গিয়েছিলো রাজীব , ভেবে পাচ্ছিলো না জয় কোথাহতে এই বিষয় গুলো খুজে পেলো। জয় যে ওকে উদ্দেশ্য করে এইসব বলছে , সেটা বুঝতে রাজীবের কোন সমস্যা হয়নি । আর এই মিথ্যা অভিযোগে রাজীবের মন ভাঙার সাথে সাথে রাগের পারদ ও উপরে উঠছিল । “ তুই খুব বন্ধুত্বের মানে বুঝিস? এসব কথা তোর মুখে মানায় না”
“ নাহ তোর মুখে খুব মানায় , বিপদ দেখে নীতিবাক্যের পেছনে লুকানো মহাবীর রাজীব তুই”
জয়ের এই ব্যঙ্গাত্মক কথা গুলো , রাজীবের অহংবোধে প্রচণ্ড ভাবে আঘাত করলো , “ তুই জীবনের কি জানিস , জীবন মানে তো তর কাছে খেলা , তোর কাছে তো এমন মনে হবেই , তুই মনে করিস এটাই জীবন , আরে নিজের বানানো ভিদিও গেম থেকে বেড়িয়ে দেখ জীবন কাকে বলে , দায়িত্ব কাকে বলে , সংগ্রাম কাকে বলে ত্যাগ কাকে বলে ”
“ কাকে তুই সত্যিকারের জীবন বলছিস , সব সময় তো কারো না কারো পেছনে লুকিয়ে থাকিস , বাহান খুজিস “ জয়ের চোখে মুখেও ক্রোধ ফুটে উঠতে শুরু করেছিলো , রাজীব কে আরো বেশি করে হার্ট করার জন্য এর পরে যা বলেছিলো , তা হয়তো জয় নিজেও বলতে চায়নি ।
“ আমার মা নেই , আমার আব্বু অসুস্থ , আমার ছোট বোনের প্রতি দায়িত্ব , এসব বলে বলে সব সময় নিজের খামতি লুকানোর চেষ্টা করিস , আর তুই এসেছিস আমাকে জীবন বোঝাতে , তোর মত ভিরু কাপুরুষের জন্য আমার মনে দয়া ছাড়া আর কিছুই নেই”
স্তব্দ হয়ে রাজীব কিছুক্ষন জয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো , এতটা পার্সোনাল হবে জয় সেটা রাজীব কোনদিন ভাবেও নি । এসব কথা জয়কে সবচেয়ে কাছের মানুষ ভেবেই শেয়ার করেছিলো রাজীব । আজ প্রয়োজনের সময় জয় ওর বিরুদ্ধে ব্যাবহার করলো ।
ধিরে ধিরে ওদের দুজনের মাঝে উতপ্ত বাক্য বিনিময় বাড়তে শুরু করে , সেটা দেখে ওদের বন্ধুরা দ্রুত ঝুপড়ি থেকে বেড়িয়ে ওদের আলাদা করে দেয় । দুজন কে দুদিকে নিয়ে গেলেও ওরা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে , রাজীবের চোখে একি সাথে অভিমান আর প্রচণ্ড রাগ , আর জয়ের দৃষ্টিতে তাচ্ছিল্য , আর সেই তাচ্ছিল্যের আড়ালে কিছুটা অভিমান আর অনুসুচনা ।
এর পর থেকে রাজীব আর জয়ের কথা বলা বন্ধ , সামনা সামনি হয়ে গেলেও দুজন দুজন কে এড়িয়ে চলে । মাঝে মাঝে জয় নিজের স্বভাব মত রাজীব কে উদ্দেশ্য করে তির্যক কিছু মন্তব্য অথবা আন্ডিরেক্টলি কোন কাজ করে , যেমন সেদিন ক্যাম্পাসে একটি ছেলের কলার চেপে ধরেছিলো ।
রাজীব বুঝতে পারে এসব জয় ওকে ক্ষেপানোর জন্য করছে । রাজীব ভেবে পায় না কি করে এই অল্পদিনে ওর আজন্ম পরিচিত মানুষটি এভাবে বদলে গেলো । যদিও সেদিন রাজীব পন করেছিলো আর জয়ের সাথে ও নেই । কিন্তু এতদিনের সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় মনে মনে একটা গোপন ব্যাথা বয়ে বেড়াচ্ছে ।
এতো এতো সৃতি জড়ানো সম্পর্ক তো এমনি এমনি শেষ করে দেয়া যায় না ।
*****
কিছুদিন যাবত রাজীব খুব বিজি সময় কাটাচ্ছে । ভার্সিটির ট্রিভিয়া ক্লাব থেকে ওকে সাধারন সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে । আর দেশের সবচেয়ে বড় ভার্সিটি হওয়ায় ওদের উপর দায়িত্ব পড়েছে আন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার । সেই নিয়েই রাজীবের ব্যাস্ততা । সেই সাথে লেখাপড়ার চাপ ও রয়েছে । আর কিছুদিন পর সেমিস্টার ফাইনাল । এই দুই চাপে রাজীব ঠিক মত ঘুমানোর সময় পাচ্ছে না । তার উপর আর একটা ব্যাপার রাজীব কে বেশ ভোগাচ্ছে , সেটা হচ্চে জয়ের আচরণ ।
হ্যা রাজীব হয়তো একটু বেশি রিয়েক্ট করে ফেলেছিলো , বাপ্পির ব্যাপারটা নিয়ে । তাই বলে এমন করবে জয় !! সেটা রাজীব কখনো ভাবেবি । রাজনীতি জয়েন করেছে , এই খবর রাজীব অনেক আগেই পেয়েছে । সেই প্রথম থেকেই জয় কে খোঁচাচ্ছিল সরকার সমর্থিত ছাত্র উইং । কিন্তু রাজীব জয় কে বার বার বাধা দিয়েছে ।
রাজীব জানে কেন জয় এই শেষ সময়ে এসে রাজনীতি জয়েন করেছে । ওকে বাপ্পির কেস থেকে রক্ষা করার জন্য জয় এটা করেছে । জয় ওই দলে যোগ দেয়ার পর লেডিস হোস্টেলে অনুপ্রবেশ এর ব্যাপারে আর কোন ইনভেস্টিগেশন হয়নি । বাপ্পি আর ওই মেয়েকে শাস্তি দিয়েই কেস ক্লোজ করা হয়েছে ।
এক রাতে জয় এমন সিধান্ত নেবে সেটা রাজীব কোনদিন ভাবতে পারেনি । এটুকু রাগ করার অধিকার কি ওর নেই ? বার বার এই প্রশ্ন নিজেকে করেছে । হ্যা রাজীব ভয় পেয়েছিলো , ভয় পাওয়া কি খুব অপরাধ ছিলো? নির্ঘুম রাতে এই চিন্তা করেই কাটিয়েছে।
কিন্তু জয় এসব কিছুই শুনতে রাজি ছিলো না । দুই রাত রাগ আর রিগ্রেটের সাথে লড়াইয়ের পর রাজীব জয়ের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছিলো । নিজের অবস্থান পরিস্কার করার চেষ্টা করতে চেয়েছিলো। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় নি ।
জয় তখন গলির সামনে একটা ঝুপড়ি দোকানে বসে এলাকার বন্ধুদের সাথে সিগারেট ফুকছিলো । রাজীব গিয়ে সামনে দাড়াতেই নিজের মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে অন্য একজনের সাথে কথা বলতে শুরু করে । সরাসরি এমন প্রত্যাখ্যান উপেক্ষা করে রাজীব বলেছিলো “ জয় একটু এদিকে আয় তোর সাথে কথা আছে”
জয় ওর দিকে না তাকিয়েই বলেছিলো “ যা বলার এইখানেই বল , এরা সবাই বন্ধু বান্ধব , ভাই ব্রাদার”
রাজীব কিছুক্ষন চুপ করে থাকে , বাকিদের মুখের দিকে তাকায় , এরা সবাই এলাকার ছেলে , ছোট বেলায় রাজীব আর জয় এদের সাথেইও খেলাধুলা করতো । রাজীব চলে যাওয়ার পর এদের সাথে তেমন ঘনিষ্ঠতা নেই । সবার চোখে মুখেই একটা অবাক হওয়ার স্পষ্ট ছাপ দেখা যাচ্ছে । এরা সবাই রাজীব আর জয়ের ঘনিষ্ঠতা রাখে ।
এদের মাঝে একটা ছেলে জয় কে বলেছিলো “ জয় যা একটু বাইরে গিয়ে কথা বইলা আয়” ছেলেটা রাজীবের থমথমে মুখ দেখে কিছুটা বুঝতে পেরেছিলো যে ওদের মাঝে হয়তো কিছু ঝামেলা চলছে । তখন জয় অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে দাড়ায় , হাতের সিগারেট অন্য একজনের হাতে দিয়ে ঝুপড়ির বাইরে বেড়িয়ে আসে । ওর প্রতিটা নড়াচড়ায় অনিচ্ছার স্পষ্ট ছাপ । রাজীব এসব বুঝতে পারেও উপেক্ষা করে যাচ্ছিলো ।
“ কি বলবি তারাতারি বল , আমার পার্টি অফিসে মিটিং আছে, প্রথম মীটিঙে দেরি করে যেতে চাই না ” জয় আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বলেছিলো ।
রাজীব সময় নষ্ট করেনি , জয়ের এমন আচরন ওকেও কিছুটা রাগান্বিত করে তুলেছিলো , এখানে আসার আগে রাজীবের মনে যে অনুসুচনা ছিলো , ধিরে ধিরে সেটা কমে আসছিলো আর সেই খালি জায়গাটা রাগ দখল করে নিচ্ছিলো । জয়ের এমন আচরণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না । ভুল সুধু ও একা করেনি ।
“ এমন আচরণ করছিস ক্যান আমার সাথে” রাজীব সরাসরি আসল পয়েন্টে চলে আসে , এখানে আসার আগের মনভাব আর ওর মাঝে নেই । কেউ যদি ওকে এভোয়েড করতে চায় , ওর নিজেরো ঠ্যাকা পরেনি সেধে গিয়ে বন্ধুত্ব জিইয়ে রাখবে ।
“ কেমন আচরণ?” জয় এমন ভাব করেছিলো যেন খুব অবাক হওয়ার মত একটা কথা বলেছে রাজীব
“ তুই জানিস না?” রাজীব চোখ সরু করে তাকিয়েছিলো জয়ের দিকে
জয় হেসেছিলো , তাচ্ছিল্লের হাসি , তারপর হঠাত হাসি থামিয়ে সিরিয়ান টোনে বলেছিলো “ আমি সুধু একটা জিনিস ই জানি , যে বন্ধু মনে মনে বন্ধুত্বের জন্য রিগ্রেট রাখে , মনে এমন ভাব রাখে যে বন্ধুত্বের কারনে নিজের ক্ষতি করছে , সেই বন্ধুত্বের এক কানা কড়ি দাম নাই আমার কাছে”
কয়েক সেকেন্ডের জন্য থেমে গিয়েছিলো রাজীব , ভেবে পাচ্ছিলো না জয় কোথাহতে এই বিষয় গুলো খুজে পেলো। জয় যে ওকে উদ্দেশ্য করে এইসব বলছে , সেটা বুঝতে রাজীবের কোন সমস্যা হয়নি । আর এই মিথ্যা অভিযোগে রাজীবের মন ভাঙার সাথে সাথে রাগের পারদ ও উপরে উঠছিল । “ তুই খুব বন্ধুত্বের মানে বুঝিস? এসব কথা তোর মুখে মানায় না”
“ নাহ তোর মুখে খুব মানায় , বিপদ দেখে নীতিবাক্যের পেছনে লুকানো মহাবীর রাজীব তুই”
জয়ের এই ব্যঙ্গাত্মক কথা গুলো , রাজীবের অহংবোধে প্রচণ্ড ভাবে আঘাত করলো , “ তুই জীবনের কি জানিস , জীবন মানে তো তর কাছে খেলা , তোর কাছে তো এমন মনে হবেই , তুই মনে করিস এটাই জীবন , আরে নিজের বানানো ভিদিও গেম থেকে বেড়িয়ে দেখ জীবন কাকে বলে , দায়িত্ব কাকে বলে , সংগ্রাম কাকে বলে ত্যাগ কাকে বলে ”
“ কাকে তুই সত্যিকারের জীবন বলছিস , সব সময় তো কারো না কারো পেছনে লুকিয়ে থাকিস , বাহান খুজিস “ জয়ের চোখে মুখেও ক্রোধ ফুটে উঠতে শুরু করেছিলো , রাজীব কে আরো বেশি করে হার্ট করার জন্য এর পরে যা বলেছিলো , তা হয়তো জয় নিজেও বলতে চায়নি ।
“ আমার মা নেই , আমার আব্বু অসুস্থ , আমার ছোট বোনের প্রতি দায়িত্ব , এসব বলে বলে সব সময় নিজের খামতি লুকানোর চেষ্টা করিস , আর তুই এসেছিস আমাকে জীবন বোঝাতে , তোর মত ভিরু কাপুরুষের জন্য আমার মনে দয়া ছাড়া আর কিছুই নেই”
স্তব্দ হয়ে রাজীব কিছুক্ষন জয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো , এতটা পার্সোনাল হবে জয় সেটা রাজীব কোনদিন ভাবেও নি । এসব কথা জয়কে সবচেয়ে কাছের মানুষ ভেবেই শেয়ার করেছিলো রাজীব । আজ প্রয়োজনের সময় জয় ওর বিরুদ্ধে ব্যাবহার করলো ।
ধিরে ধিরে ওদের দুজনের মাঝে উতপ্ত বাক্য বিনিময় বাড়তে শুরু করে , সেটা দেখে ওদের বন্ধুরা দ্রুত ঝুপড়ি থেকে বেড়িয়ে ওদের আলাদা করে দেয় । দুজন কে দুদিকে নিয়ে গেলেও ওরা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে , রাজীবের চোখে একি সাথে অভিমান আর প্রচণ্ড রাগ , আর জয়ের দৃষ্টিতে তাচ্ছিল্য , আর সেই তাচ্ছিল্যের আড়ালে কিছুটা অভিমান আর অনুসুচনা ।
এর পর থেকে রাজীব আর জয়ের কথা বলা বন্ধ , সামনা সামনি হয়ে গেলেও দুজন দুজন কে এড়িয়ে চলে । মাঝে মাঝে জয় নিজের স্বভাব মত রাজীব কে উদ্দেশ্য করে তির্যক কিছু মন্তব্য অথবা আন্ডিরেক্টলি কোন কাজ করে , যেমন সেদিন ক্যাম্পাসে একটি ছেলের কলার চেপে ধরেছিলো ।
রাজীব বুঝতে পারে এসব জয় ওকে ক্ষেপানোর জন্য করছে । রাজীব ভেবে পায় না কি করে এই অল্পদিনে ওর আজন্ম পরিচিত মানুষটি এভাবে বদলে গেলো । যদিও সেদিন রাজীব পন করেছিলো আর জয়ের সাথে ও নেই । কিন্তু এতদিনের সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় মনে মনে একটা গোপন ব্যাথা বয়ে বেড়াচ্ছে ।
এতো এতো সৃতি জড়ানো সম্পর্ক তো এমনি এমনি শেষ করে দেয়া যায় না ।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)