09-09-2025, 09:46 PM
কিছু সম্পর্কঃ ৬ (খ)
আশেপাশের মানুষের চাপা হাসির ভেতর বেশিক্ষণ থাকতে হয়নি রানী আর জয়ের । যেমন হঠাত করে বৃষ্টি নেমেছিলো , ঠিক তেমন করেই হঠাত বৃষ্টি থেমে ঝলমলে রোদ চারদিক ঝলসাতে শুরু করে । ভেজা রাস্তা , ফুটপাতে জমা পানি , গাছের পাতায় ফোঁটা ফোঁটা পানি , আর রানী জয়ের ভেজা জামা কাপড় না থাকলে কেউ হয়তো বিশ্বাস ই করতো না যে একটু আগে ঝুম বৃষ্টি হয়েছে ।
দুজনে দ্রুত নিজেদের মাঝে আরো একবার পোশাকের অদল বদল করে নেয় , তারপর জয়ের বাইকে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে । এবার রানী কিছুটা লেগেই বসে জয়ের সাথে , ভাবে আর অল্প রাস্তাই তো বাকি , রেশ টা বাড়ি পর্যন্ত থাকুক না।
জয় একদম রানীদের বাড়ির সামনে এসে বাইক থামায় , ওদের দুই বাড়ির মাঝে যে সম্পর্ক তাতে ওদের দুজনের এক বাইকে করে আসা নিয়ে কেউ তেমন ভ্রু কুচকাবে না । যদি কারো মনে কোন প্রশ্নের উদয় হয় ই , সেটা মনেই থেকে যাবে । রানী বাইক থেকে নামে , কিছু একটা বলতে চায় , কিন্তু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছে না । সামান্য ধন্যবাদ ওর মুখে থেকে বের হয় না । কারন ওর কাছে মনে হয় এখানে জয় ধন্যবাদ পাওয়ার মত কিছুই করেনি । বরং জয় যা করেছে তা ওর কর্তব্য ছিলো । রানী অন্য কিছু একটা বলতে চায় , সেই অন্য কিছু একটা যে কি সেটাই গুছিয়ে নিতে পারছে না।
আর ঠিক সেই সময় ই রাস্তার উল্টো পাশের বিলদিং থেকে একজন নারী বেড়িয়ে আসে । রানী আর জয় দুজনই এই মেয়েকে চেনে । ওদের প্রতিবেশী , নিলু । বয়সে জয়ের চেয়ে দুই বছরের বড় । ছোটবেলায় ওরা এক সাথে খেলেছে । তবে জয় আর নিলুর আরো একটি পরিচয় আছে , জয়ের রোমান্টিক লাইফের সূচনা এই নিলুর সাথেই । তখন জয় সবে ক্লাস নাইনে পড়ে , আর নিলু উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে ।
“ জয় না , কি খবর তোর?” জয় কে দেখে উচ্ছ্বাসিত ভাবে বলে । যদিও ওরা একজন আর একজনের এক্স , কিন্তু ওদের মাঝে কোন ব্যাড ব্লাড নেই । কারন ওরা জানতো এই সম্পর্কের কোন ভবিষ্যৎ নেই । বছর তিনেক আগে নিলুর বিয়ে হয়ে গেছে , স্বামীর সাথে ইউরোপ থাকে ।
“ আরে নিলু আপা, কি খবর , কবে দেশে আসলা?” পুরাতন প্রেমিকাকে দেখে জয় ও খুশি হয় ।
রানী দাড়িয়ে আছে , ওর মনে একটা মিশ্র অনুভূতি , নিলুর ব্যাপারে ও কিছুটা জানে । রানী কিছুটা কৌতুক পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে , দুই প্রাক্তন প্রেমিক প্রেমিকার পুন মিলন ।
“ আসলাম , দুই দিন আগে , খুব টায়ার্ড ছিলাম , তাই ঘর থেকে বের হইনাই , আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে?”
রানী লক্ষ্য করে নিলু কথা বলার সময় জয়ের আপাদমস্তক একবার দেখে নেয় । এবার রানীর মনে একটা সুই বিদ্ধ হয় , তবে রানী তেমন পাত্তা দেয় না । পুরনো প্রেমিকা বলে কথা , তার উপর জয় দেখার মতই জিনিস ।
“ হ্যা ভালোই আছে , তোমার খবর বলো , প্যা পু হইসে নাকি?” জয় বাচ্চার কথা জিজ্ঞাস করে ,
“ আমার ফিগার দেইখা কি মনে হয়?” নিলু হাসতে হাসতে বলে , নিজের শরীরের দিকে ইশারা করে
রানী জয়ের উত্ততর শোনার জন্য জয়ের দিকে তাকায় , চোখে এখন পর্যন্ত কৌতুক পূর্ণ কৌতূহল । দেখতে চায় জয় কি বলে ।
জয় নিলু কে একবার ভালো করে দেখে , তারপর নিজের স্বভাবসিদ্ধ হলকা ফ্লারট করার টোনে বলে “ মিস ওয়ার্ল্ড”
রানী ফিক করে হেসে ফেলে , আর যাই হোক নিলু কে মিস ওয়ার্ল্ড বলা যায় না । অনেক চেষ্টা করেও নিজের হাসি চাপতে পারে না রানী । মনে মনে ভাবে , এই ব্যাটা কখনো মানুষ হবে না । মেয়ে দেখলেই ফ্লারট করতেশুরু হয়ে যায়। তবে জয়ের এমন ব্যাবহারে রানী অভ্যস্ত ।
নিলু সরু চোখে রানীর দিকে তাকায় , রানীর হাসি নিলুকে বিরক্ত করে , জয়ের করা কমপ্লিমেন্টের সম্পূর্ণ আনন্দ ভোগ করতে পারে না । নিলুর এই অভিবেক্তির পরিবর্তন রানীর চোখেও পরে , দ্রুত হাসি বন্ধ করে ফেলে , শত হলেও মহল্লার বড় বোন । তবে মনে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করে ।
“ আরে তুই রানী না, কত বড় হয়ে গেছিস” নিলু এমন ভাব করে যেন এতক্ষনে রানী কে দেখতে পেয়েছে । আর নিলুর গলাতেও আগের মত উচ্ছ্বাস খুজে পাওয়া গেলো না ।“ ওমা তোরা আবার কবে ফিরে আসলি? তোরা না এই বাড়ি বিক্রি করে দিসিলি?”
“ওরা কবে বাড়ি বিক্রি করলো ? কি যা তা বলো তুমি” উত্তরটা জয় ই দিয়ে দিলো , কিন্তু নিলু সেদিকে কোন কর্ণপাত করলো না । রানী কে উদ্দেশ্য করে বলল , “ এমন শুকনা কেনো রে , একদম কাঠির মত , শরীরে মাংস লাগা , নইলে বড় হয়েছিস , বিয়ে শাদী হবে কি করে? ছেলেরা তো তোকে নিজদের মানুষ মনে করে কাঁধে হাত দিয়ে বলবে , দোস্তো কেমন আছিস হি হি হি ”
খুব নোংরা ভাবে নিলু রানীর হাসির প্রতিশোধ নিলো , রানীর চেহারা একদম শুকিয়ে গেছে , এই ধরনের কথার চালাচালিতে রানী খুব একটা পারদর্শী না । এদিকে নিলু রানীর প্রাপ্য পরিশোধ করতে পেরে তৃপ্তির হাসি হাসছে । এরি ফাঁকে রানী আর নিলুর মাঝে ঠাণ্ডা দৃষ্টির বিনিময় হয়ে গেছে বেশ কয়েকবার । কিন্তু জয় এ ব্যাপারে একদম বেমালুম । হাসতে হাসতে জিজ্ঞাস করলো “ কোথায় যাচ্ছ তুমি?”
“ এই একটু শপিঙে , এক কাজ কর না ভাই , বৃষ্টির পর রিক্সা পাওয়া মুশকিল , আমাকে একটু গলির মাথায় নামিয়ে দিয়ে আয় না” কথাটা বলে নিলু রানীর দিকে তাকালো , ঠোঁটে ইংগিত পূর্ণ হাসি । রানীর কাছে মনে হলো , নিলু ওর মনের একদম ভেতরে লুকিয়ে রাখা জয়ের জন্য যে আকর্ষণ আছে সেটা দেখে ফেলেছে ।
“ আরে ওঠো , গলির মাথায় কেনো , তুমি কোথায় যাবে আমারে বলো নামিয়ে দিয়া আসি” জয় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বলল ,
রানী জানে ওর আর জয়ের মাঝে অফিসিয়াল কোন সম্পর্ক নেই , তবুও জয়ের এমন সহজে রাজি হয়ে যাওয়া , ওর কাছে প্রচন্ড অপমানকর মনে হলো , এতক্ষণ নিলুর সাথে যে ঠাণ্ডা দৃষ্টির লড়াই চলছিলো , তাতে ও হেরে গেছে । রানী আর দাঁড়ালো না , জয় কে বিদায় ও বলল না , দ্রুত পদে গেটের দিকে হাটা দিলো । কিছুক্ষন আগে জয়ের সাথে কাটানো সময় গুলো এতক্ষণ ছবির মত ফ্রেমে গাঁথা ছিলো , তা এখন কাচের মত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে ।
পেছন থেকে নিলু কে বলতে শুনল , “ তুই মাত্র একজন কে নিয়ে ভিজে ভিজে রোমান্টিক গান গেয়ে এলি , এখন কি তোর সময় হবে?” নিলুর গলায় স্পষ্ট বক্র কটাক্ষ ,
উত্তরে জয় বলল “ আরে ধুর , কি যে বলো , তোমার জন্য আমার সময় আর সময়”
রানীর দ্রুত পদক্ষেপ এ পর্যায়ে এসে দৌরে রুপান্তর হয়েছে । ভেতর থেকে একটা চাপা কান্না প্রচণ্ড বেগে দরজায় আঘাত করছে, যে কোন মুহূর্তে বেড়িয়ে আসবে । রানী দরজার সামনে এসে চাবি বের করার সময় বাইক স্টার্ট হওয়ার আওয়াজ পায়।
নিজের ঘরে এসে হাতের ব্যাগ কোন রকমে ছুরে ফেলতে পারে সুধু । আর সাথে সাথেই কান্না ঠেলে বেড়িয়ে আসে । রানী ভেজা কাপরেই বালিসে মুখ গুজে শুয়ে পরে । একটি প্রস্নই বার বার ঘুরে ফিরে মনে আঘাত করতে থাকে , “ জয় তুমি কি চাও আমার কাছে?”
আজকের সুখ সৃতি গুলো যে এতো স্বল্পস্থায়ী হবে সেটা কিছুক্ষন আগেও ভাবেনি রানী । রানী জানে আজকে নিজেকে যে বিরহের চোরাবালিতে নিয়ে ফেললো। এর থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় লাগবে । না রানী জয় কে দোষ দিচ্ছে না । জয় নিজের স্বভাব সুলভ আচরণ করেছে , যা ও অনেকের সাথেই করে । জয়তো ওর সাথে কোন কমিট্মেন্ট করেনি । সুধু বাইকে করে বাড়ি পৌঁছে দিতে চেয়েছে । এবং তা করেছেও । দোষ ওর নিজের ই , ও নিজেই কাঁচের ক্যানভাসে স্বপ্ন আঁকতে চেয়েছিলো । কিন্তু ভাবেনি , কেউ একজন ঢিল ছুঁড়লেই সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে । আজকে সেই ঢিল ছোঁড়ার কাজ করলো নিলু ।
*****
আশেপাশের মানুষের চাপা হাসির ভেতর বেশিক্ষণ থাকতে হয়নি রানী আর জয়ের । যেমন হঠাত করে বৃষ্টি নেমেছিলো , ঠিক তেমন করেই হঠাত বৃষ্টি থেমে ঝলমলে রোদ চারদিক ঝলসাতে শুরু করে । ভেজা রাস্তা , ফুটপাতে জমা পানি , গাছের পাতায় ফোঁটা ফোঁটা পানি , আর রানী জয়ের ভেজা জামা কাপড় না থাকলে কেউ হয়তো বিশ্বাস ই করতো না যে একটু আগে ঝুম বৃষ্টি হয়েছে ।
দুজনে দ্রুত নিজেদের মাঝে আরো একবার পোশাকের অদল বদল করে নেয় , তারপর জয়ের বাইকে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে । এবার রানী কিছুটা লেগেই বসে জয়ের সাথে , ভাবে আর অল্প রাস্তাই তো বাকি , রেশ টা বাড়ি পর্যন্ত থাকুক না।
জয় একদম রানীদের বাড়ির সামনে এসে বাইক থামায় , ওদের দুই বাড়ির মাঝে যে সম্পর্ক তাতে ওদের দুজনের এক বাইকে করে আসা নিয়ে কেউ তেমন ভ্রু কুচকাবে না । যদি কারো মনে কোন প্রশ্নের উদয় হয় ই , সেটা মনেই থেকে যাবে । রানী বাইক থেকে নামে , কিছু একটা বলতে চায় , কিন্তু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছে না । সামান্য ধন্যবাদ ওর মুখে থেকে বের হয় না । কারন ওর কাছে মনে হয় এখানে জয় ধন্যবাদ পাওয়ার মত কিছুই করেনি । বরং জয় যা করেছে তা ওর কর্তব্য ছিলো । রানী অন্য কিছু একটা বলতে চায় , সেই অন্য কিছু একটা যে কি সেটাই গুছিয়ে নিতে পারছে না।
আর ঠিক সেই সময় ই রাস্তার উল্টো পাশের বিলদিং থেকে একজন নারী বেড়িয়ে আসে । রানী আর জয় দুজনই এই মেয়েকে চেনে । ওদের প্রতিবেশী , নিলু । বয়সে জয়ের চেয়ে দুই বছরের বড় । ছোটবেলায় ওরা এক সাথে খেলেছে । তবে জয় আর নিলুর আরো একটি পরিচয় আছে , জয়ের রোমান্টিক লাইফের সূচনা এই নিলুর সাথেই । তখন জয় সবে ক্লাস নাইনে পড়ে , আর নিলু উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে ।
“ জয় না , কি খবর তোর?” জয় কে দেখে উচ্ছ্বাসিত ভাবে বলে । যদিও ওরা একজন আর একজনের এক্স , কিন্তু ওদের মাঝে কোন ব্যাড ব্লাড নেই । কারন ওরা জানতো এই সম্পর্কের কোন ভবিষ্যৎ নেই । বছর তিনেক আগে নিলুর বিয়ে হয়ে গেছে , স্বামীর সাথে ইউরোপ থাকে ।
“ আরে নিলু আপা, কি খবর , কবে দেশে আসলা?” পুরাতন প্রেমিকাকে দেখে জয় ও খুশি হয় ।
রানী দাড়িয়ে আছে , ওর মনে একটা মিশ্র অনুভূতি , নিলুর ব্যাপারে ও কিছুটা জানে । রানী কিছুটা কৌতুক পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে , দুই প্রাক্তন প্রেমিক প্রেমিকার পুন মিলন ।
“ আসলাম , দুই দিন আগে , খুব টায়ার্ড ছিলাম , তাই ঘর থেকে বের হইনাই , আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে?”
রানী লক্ষ্য করে নিলু কথা বলার সময় জয়ের আপাদমস্তক একবার দেখে নেয় । এবার রানীর মনে একটা সুই বিদ্ধ হয় , তবে রানী তেমন পাত্তা দেয় না । পুরনো প্রেমিকা বলে কথা , তার উপর জয় দেখার মতই জিনিস ।
“ হ্যা ভালোই আছে , তোমার খবর বলো , প্যা পু হইসে নাকি?” জয় বাচ্চার কথা জিজ্ঞাস করে ,
“ আমার ফিগার দেইখা কি মনে হয়?” নিলু হাসতে হাসতে বলে , নিজের শরীরের দিকে ইশারা করে
রানী জয়ের উত্ততর শোনার জন্য জয়ের দিকে তাকায় , চোখে এখন পর্যন্ত কৌতুক পূর্ণ কৌতূহল । দেখতে চায় জয় কি বলে ।
জয় নিলু কে একবার ভালো করে দেখে , তারপর নিজের স্বভাবসিদ্ধ হলকা ফ্লারট করার টোনে বলে “ মিস ওয়ার্ল্ড”
রানী ফিক করে হেসে ফেলে , আর যাই হোক নিলু কে মিস ওয়ার্ল্ড বলা যায় না । অনেক চেষ্টা করেও নিজের হাসি চাপতে পারে না রানী । মনে মনে ভাবে , এই ব্যাটা কখনো মানুষ হবে না । মেয়ে দেখলেই ফ্লারট করতেশুরু হয়ে যায়। তবে জয়ের এমন ব্যাবহারে রানী অভ্যস্ত ।
নিলু সরু চোখে রানীর দিকে তাকায় , রানীর হাসি নিলুকে বিরক্ত করে , জয়ের করা কমপ্লিমেন্টের সম্পূর্ণ আনন্দ ভোগ করতে পারে না । নিলুর এই অভিবেক্তির পরিবর্তন রানীর চোখেও পরে , দ্রুত হাসি বন্ধ করে ফেলে , শত হলেও মহল্লার বড় বোন । তবে মনে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করে ।
“ আরে তুই রানী না, কত বড় হয়ে গেছিস” নিলু এমন ভাব করে যেন এতক্ষনে রানী কে দেখতে পেয়েছে । আর নিলুর গলাতেও আগের মত উচ্ছ্বাস খুজে পাওয়া গেলো না ।“ ওমা তোরা আবার কবে ফিরে আসলি? তোরা না এই বাড়ি বিক্রি করে দিসিলি?”
“ওরা কবে বাড়ি বিক্রি করলো ? কি যা তা বলো তুমি” উত্তরটা জয় ই দিয়ে দিলো , কিন্তু নিলু সেদিকে কোন কর্ণপাত করলো না । রানী কে উদ্দেশ্য করে বলল , “ এমন শুকনা কেনো রে , একদম কাঠির মত , শরীরে মাংস লাগা , নইলে বড় হয়েছিস , বিয়ে শাদী হবে কি করে? ছেলেরা তো তোকে নিজদের মানুষ মনে করে কাঁধে হাত দিয়ে বলবে , দোস্তো কেমন আছিস হি হি হি ”
খুব নোংরা ভাবে নিলু রানীর হাসির প্রতিশোধ নিলো , রানীর চেহারা একদম শুকিয়ে গেছে , এই ধরনের কথার চালাচালিতে রানী খুব একটা পারদর্শী না । এদিকে নিলু রানীর প্রাপ্য পরিশোধ করতে পেরে তৃপ্তির হাসি হাসছে । এরি ফাঁকে রানী আর নিলুর মাঝে ঠাণ্ডা দৃষ্টির বিনিময় হয়ে গেছে বেশ কয়েকবার । কিন্তু জয় এ ব্যাপারে একদম বেমালুম । হাসতে হাসতে জিজ্ঞাস করলো “ কোথায় যাচ্ছ তুমি?”
“ এই একটু শপিঙে , এক কাজ কর না ভাই , বৃষ্টির পর রিক্সা পাওয়া মুশকিল , আমাকে একটু গলির মাথায় নামিয়ে দিয়ে আয় না” কথাটা বলে নিলু রানীর দিকে তাকালো , ঠোঁটে ইংগিত পূর্ণ হাসি । রানীর কাছে মনে হলো , নিলু ওর মনের একদম ভেতরে লুকিয়ে রাখা জয়ের জন্য যে আকর্ষণ আছে সেটা দেখে ফেলেছে ।
“ আরে ওঠো , গলির মাথায় কেনো , তুমি কোথায় যাবে আমারে বলো নামিয়ে দিয়া আসি” জয় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বলল ,
রানী জানে ওর আর জয়ের মাঝে অফিসিয়াল কোন সম্পর্ক নেই , তবুও জয়ের এমন সহজে রাজি হয়ে যাওয়া , ওর কাছে প্রচন্ড অপমানকর মনে হলো , এতক্ষণ নিলুর সাথে যে ঠাণ্ডা দৃষ্টির লড়াই চলছিলো , তাতে ও হেরে গেছে । রানী আর দাঁড়ালো না , জয় কে বিদায় ও বলল না , দ্রুত পদে গেটের দিকে হাটা দিলো । কিছুক্ষন আগে জয়ের সাথে কাটানো সময় গুলো এতক্ষণ ছবির মত ফ্রেমে গাঁথা ছিলো , তা এখন কাচের মত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে ।
পেছন থেকে নিলু কে বলতে শুনল , “ তুই মাত্র একজন কে নিয়ে ভিজে ভিজে রোমান্টিক গান গেয়ে এলি , এখন কি তোর সময় হবে?” নিলুর গলায় স্পষ্ট বক্র কটাক্ষ ,
উত্তরে জয় বলল “ আরে ধুর , কি যে বলো , তোমার জন্য আমার সময় আর সময়”
রানীর দ্রুত পদক্ষেপ এ পর্যায়ে এসে দৌরে রুপান্তর হয়েছে । ভেতর থেকে একটা চাপা কান্না প্রচণ্ড বেগে দরজায় আঘাত করছে, যে কোন মুহূর্তে বেড়িয়ে আসবে । রানী দরজার সামনে এসে চাবি বের করার সময় বাইক স্টার্ট হওয়ার আওয়াজ পায়।
নিজের ঘরে এসে হাতের ব্যাগ কোন রকমে ছুরে ফেলতে পারে সুধু । আর সাথে সাথেই কান্না ঠেলে বেড়িয়ে আসে । রানী ভেজা কাপরেই বালিসে মুখ গুজে শুয়ে পরে । একটি প্রস্নই বার বার ঘুরে ফিরে মনে আঘাত করতে থাকে , “ জয় তুমি কি চাও আমার কাছে?”
আজকের সুখ সৃতি গুলো যে এতো স্বল্পস্থায়ী হবে সেটা কিছুক্ষন আগেও ভাবেনি রানী । রানী জানে আজকে নিজেকে যে বিরহের চোরাবালিতে নিয়ে ফেললো। এর থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় লাগবে । না রানী জয় কে দোষ দিচ্ছে না । জয় নিজের স্বভাব সুলভ আচরণ করেছে , যা ও অনেকের সাথেই করে । জয়তো ওর সাথে কোন কমিট্মেন্ট করেনি । সুধু বাইকে করে বাড়ি পৌঁছে দিতে চেয়েছে । এবং তা করেছেও । দোষ ওর নিজের ই , ও নিজেই কাঁচের ক্যানভাসে স্বপ্ন আঁকতে চেয়েছিলো । কিন্তু ভাবেনি , কেউ একজন ঢিল ছুঁড়লেই সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে । আজকে সেই ঢিল ছোঁড়ার কাজ করলো নিলু ।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)