09-09-2025, 04:41 PM
(This post was last modified: 09-09-2025, 10:19 PM by sarkardibyendu. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
এক অন্য অনুভূতি :
আলেস্যি আজ একেবারেই পিছু ছাড়ছে না রাজুর। মোবাইলে দেখে সকাল ১০ টা বাজে, গাছপালা দিয়ে ঘেরা এই বাড়িটায় বাইরে থেকে রদ্দুর প্রায় আসেই না, তাই ঘরের ভিতর থেকে বেলা বোঝা যায় না। রাজু কোলবালিশটা টেনে নিজের পায়ের মাঝে নিয়ে আরো একটু আলেস্যি জড়িয়ে নিলো গায়ে।
পল্লবীর হাসি পেয়ে যায়, ও অনীকের আগে আগে কোয়ার্টারের দিকে এগিয়ে যায়।
আলেস্যি আজ একেবারেই পিছু ছাড়ছে না রাজুর। মোবাইলে দেখে সকাল ১০ টা বাজে, গাছপালা দিয়ে ঘেরা এই বাড়িটায় বাইরে থেকে রদ্দুর প্রায় আসেই না, তাই ঘরের ভিতর থেকে বেলা বোঝা যায় না। রাজু কোলবালিশটা টেনে নিজের পায়ের মাঝে নিয়ে আরো একটু আলেস্যি জড়িয়ে নিলো গায়ে।
লালী রান্নার কাজ করতে করতে একবার এসে ওকে চা দিয়ে গেছে। আবার এক কাপ চা চাইবে নাকি সেটা রাজু ভাবছে। চাইলে এখনি করে দেবে। লালী বড় ভালো মেয়ে। পল্লবীর সর্বসময়ের কাজের লোক। কাছেই বাড়ি হলেও লালী এখানেই থাকে। ওর স্বামী বিরজু বাইরে গেছে কাজ করতে। বছরে একবার আসে। ২৬/২৭ বছরের লালীর বিয়ে হয়েছে বেশ অনেক বছর। কিন্তু এখনো বাচ্চা কাচ্চা হয় নি। দোষটা ওর নাকি ওর বরের সেটা ও জানে না। তবে সবসময় হাসিখুশি লালী নাচ্চার কথা আসলেই একটু উদাস হয়ে পড়ে। গ্রামের ছোট বাচ্চাদের দেখলেই ছুটে গিয়ে আদর করে। সেই সময় ওকে দেখলে খারাপ লাগে। একটা বাচ্চার অভাব স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ককেও স্বাভাবিক রাখতে দেয় না। আসলে মা হওয়ার যে অনুভূতি সেটা থেকে বঞ্চিত হতে কোন নারীই বোধহয় চায় না।
কাকিমার কথা মনে পড়ে রাজুর। সন্তানহীনা কাকিমার মনে কষ্ট কম না, ওখানে থাকাকালীন কারণে অকারণে ও কাকিমার উপর রাগ করেছে। কথা শুনিয়েছে। আঘাত করেছে বারবার। অথচ এখানে আসার পর কাকিমার উপরে রাগ, অভিমান একপ্রকার উবে গেছে। কাকিমার জন্য আজকাল একটা চাপা কষ্ট হয়, এখানে আসার পর সামান্য একটা ফোন করে খোঁজও নেয় নি ও। প্রবল অভিমানের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে এড়িয়ে গেছে বারবার। এখন মনে হয় কাজটা উচিৎ হয় নি। বাবা মা মারা যাওয়ার পর কাকিমা না থাকলে ও দিশাহীন হয়ে যেত। সেই সময় কাকিমাই ওকে সবকিছু দিয়ে আগলে রেখেছে। এতো ভালোবাসা দিয়েছে যে এই উনিশ বছরে বাবা মায়ের কাছ থেকেও এতো ভালোবাসা পায় নি ও। সেই কারণেই বোধহয় একটু বেশীই দাবী করে ফেলেছিল ও। কাকিমা স্বেচ্ছায় যেটা সঁপে দিয়েছে ওকে সেটা ওর ভালো লাগে নি। প্রতিটা নারী উজাড় করে ভালোবাসতে পারে, তবে ধরণ প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা। কাকিমার ভালোবাসা একপ্রকার আবার পল্লবীর ভালোবাসা আর এক প্রকার। অথচ দুজনেই নি:শর্ত ভাবে ওকে ভালোবেসেছে।
মাথাটা ভারী হয়ে আসে রাজুর। এসব কথা ভাবলে খুব খারাপ লাগে। এক কাপ চা হলে ভালো হয়।
" লালী....! " গলা তুলে ডাকে রাজু।
" হাঁ.... বাবু একটু দাড়া, মুই সব্জিটা আঁচে বসায়ে আসছি ।"
একটু বাদে কাপড়ে হাত মুছতে মুছতে লালি আসে, লালীর চেহারা যেনো পাথরে খোদাই করে বানিয়েছে কেউ। একেবারে কালো চকচকে মেদহীন চেহারা। বুক আর নিতম্বের গঠনে যে কোন নায়িকাকে টক্কর দিতে পারে, এদের বুকের আর পাছার গঠন এতোটাই সুন্দর আর নিখুঁত হয় যে মনে হয় কেউ যত্ন করে হাতে করে বানিয়েছে। একটা ছাপা শাড়ী পেঁচিয়ে পরা লালীর, কোমরের কাছের খোলা জায়গা থেকে ওর মসৃন আর মেদহীন পেট উঁকি মারছে। সব থেকে বড় কথা লালীর মুখে এমন একটা লালিত্য আছে যেটা সবাইকে আকৃষ্ট করবে। যেনো কষ্টিপাথরে কুঁদে কুঁদে কেউ মা দূর্গার মূর্তি বানিয়েছে। ও হাসলে একপাটি ঝকঝকে সাদা দাঁত উঁকি মারে....... এককথায় কালো হরিণী বলা চলে লালীকে।
" বল..... বাবু, ডাকছিলি কেনে? " লালী জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়।
রাজুর চোখ লালীর ভরাট বুকের দিকে ছিলো। লালীর কথায় ওর চটক ভাঙে।
" এক কাপ চা খাওয়াবি? " আলেস্যি কাটছে না।
" ই কথা তো তুই না ডেকেও বলতে পারতি, তুই বোস.... মুই এখোনি চা লিয়ে আসছি। " লালী ঝকঝক করে হেসে ওঠে।
" কাল পরশু আসিস নি কেনো? পল্লবীদি বললো ডাক্তার দেখাতে গেছিস? "
লালী লজ্জা পায়। মুখ নীচু করে বলে, " হাঁ..... মোর মরদ আইছে তিন চারদিনের জন্যে..... দিদি বুলল, শহরের বাচ্চা হওয়ানোর ডাগদারের কাছে দেখাই আসতে..... ওসুধ খেলে যদি বাচ্চা আসে পেটে। "
" ও..... তা ডাক্তার কি বললো? "
" উ তো অনেক পরীক্ষা করালো..... আমার পেটে মেসিন ডলে ডলে টিভিতে দেখলো.... বললো সব ঠিক আছে... "
"ও.... আর তোর বরের কিছু করায় নি?" রাজু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়।
লালী ফিক করে হেসে ফেলে। ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বলে আবার ফিকফিক করে হাসতে থাকে।
কিরে হাসছিস কেনো? কি বলল তোর বরকে নিয়ে?
লালী কোনমতে হাসি থামিয়ে বলে, " উ ডাগদার পাগল আছে..... আমার মরদের উটা পরীক্ষা করতে দিছে। "
ওটা মানে? কি? .... রাজু বুঝতে পারলেও জিজ্ঞেস করে। ওর মনেও দুস্টুমি। লালী কিভাবে বলে সেটা ও জানতে চায়।
" আরে ঊটা মানে..... মরদরা যখন বেটিদের আদর করে তখন উটা বের হয় না..... "
রাজু হা হা করে হেসে ফেলে। " উফ.... তুই এতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো? অনেক দিন তো তোর বিয়ে হয়ে গেছে? "
" ওমা..... কি শরমের কথা বল.... আমার মরদ তো রেগে গেলো...... ওরা একঠো কোটা দিয়ে বলে বাতরুমে গিয়ে ভরে লিয়ে আসতে। "
" তারপর? ও বের করলো? " রাজু কৃত্তিম বিস্ময় প্রকাশ করে।
" উভাবে বেরয় বটে? মুই হাত দিয়ে লাড়িয়ে বের করে দিলাম.... " লালী লজ্জামাখা দুষ্টুমি ভরা চোখে তাকায় রাজুর দিকে।
লালীর ভাষা রাজুর খুব ভালো লাগে। আধা ভাঙা বাঙলায় জগাখিচুড়ি করে এতো সুন্দর করে কথা বলে ও যে শুনতে ইচ্ছা করে বারবার।
লালী বাঙলা যে পারে না সেটা না। ভালো বাংলা পারে ও। কিন্তু উত্তেজনার বশে কথা বলতে গিয়ে জড়িয়ে ফেলে। আর এটাই রাজুর ভালো লাগে।
" আচ্ছা..... রিপোর্ট কবে দেবে? "
" উ তো কাল দেবে বলেছে...... " মোর মরদ তো কাল সবেরা চলে যাবে আবার।
" যাহ.... মরদ না থাকলে অসুধ খাওয়াবি কাকে? আর বাচ্চা নিবি কি করে? মরদকে বল কিছুদিন থাকতে হবে এখানে..... " রাজু বলে।
" উ কোন কথা শুনে না..... সুধু কাজ আর কাজ.....তবে হেই দুই দিন মেলা বার আদর করেছে..... " লালী লজ্জায় চোখ নিচু করে।
" আচ্ছা যাএখন একটু চা নিয়ে আয়.... "
লালী একটু হেসে রান্না ঘরের দিকে চলে যায়। রাজু ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। একেবারে সরল সাদাসিদা এখানকার এই মানুষগুলি। লালীর নিজের কোন সমস্যা নেই এটা ডাক্তার বলে দিয়েছে মানে সমস্যা ওর স্বামীর। তবে সেটা জটিল নাকি ওষুধে সারবে সেটা পরীক্ষার রিপোর্ট না পেলে জানা যাবে না। লালীর বিয়ে হয়েছে প্রায় ১০ বছর। এতোদিন বাচ্চা হয় নি মানে সমস্যা খুব বেশী সরল হবে না। এদের জীবনটাতে স্বামী সংসার বাচ্চা ছাড়া বিশেষ কিছু থাকে না। সেখানে বাচ্চার অভাব একটা বড় অভাব। ওদের মত শহুরে মানুষের তো বেঁচে তজাকার অনেক রসদ আছে, কিন্তু এদের তো সেটা নেই। আর দোষ যারই থাক লালীদের সমাজ লালিকেই দোষ দেবে। এই কারণেই স্বামী না থাকলে ও বাড়ি না গিয়ে এখানে পড়ে থাকে।
চায়ের কাপটা শেষ করার পর শরীরটা বেশ ঝরঝরে লাগে রাজুর। বিছানা থেকে নেমে ও বাইরে আসে। বাইরে ছায়া থাকলেও দূরে রদ্দুরের ঝাঁঝ এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে। এই সময় এখানে দুপুরে খুব কম মানুষ রাস্তায় বের হয়। এমনিতেই নির্জন এই এলাকা গরমের দুপুরে খাঁ খাঁ করে। লু না বইলেও বাতাসে গরম বেশ প্রবল। সামনেই খাড়া উপত্যকা থাকায় আর প্রচুর গাছপালার কারণে পল্লবীর এই বাড়িটা অনেক ঠান্ডা। তবুও গরম লাগছে মানে আজ বেশ গরম পড়তে চলেছে। একটু স্নান না করলে ভালো লাগছে না।
স্নান করে বেরিয়ে খাওয়ার টেবিলে বসে রাজু। রান্নাঘর থেকে মুরগীর মাংসের গন্ধ আসছে। লালী মুর্গী বেশ ভালো রাঁধে৷ এখানে মাছ সেভাবে পাওয়া যায় না বলে মাংসই বেশী খাওয়া হয়। মুর্গীর মাংসের গন্ধেই ক্ষিদে পেয়ে গেলো ওর। সকাল থেকে কিছু খায় নি। পেটে চুই চুই করছে। ও টেবিলে বসার সাথে সাথে লালী খাওয়ার নিয়ে আসে। রাজুকে খেতে দিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকে লালী।
" দাঁড়িয়ে আছিস কেনো? বস চেয়ারে। "
লালী না বসে একটু থেমে থেমে বলে, " আজ বিকালে মুই দেবীমায়ের থানে যাবো..... রাতের খাওয়ার বানাতে পারবোক লাই..... তুই দিদিকে একটু বুলে দিবি? "
" ধুর.... এতে আবার বলার কি আছে? তুই যা..... আমি আর তোর দিদি মিলে রান্না করে নেবো "
লালী খুশী হয়ে বলে, " মাংস অনেক বেশী করে রেখেছি.... তুই শুধু রোটিটা বানিয়ে লিবি "
" তোর মরদও যাবে তো সাথে? " রাজু প্রশ্ন করে।
" উ পারবেক না...... আজ সোকালে ও একঠা কামে শহরে গেছে..... ফিরতে রাত হয়ে যাবেক.... "
" কোথায় তোর মায়ের থান? " রাজু একটা মাংসের হাড় চেবাতে চেবাতে বলে।
" অনেক দূর আছে..... হুই যে বড়পাহাড়ের ওপারে একটা ঝোরা আছে সেখানে.... বহত ভীড় হয়, বাঁজ আউরাত সব পুজা দেয়। "
" তুই গেছিস আর আগে? "
" না..... এই পরথম আমি যাবো..... "
রাজু একটু ভাবে। পল্লবীর ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যাবে। একা একা না কাটিয়ে লালীর সাথে দেবী মায়ের থানে ঘুরে আসলেই তো হয়। বেশ একটা নতুন অভিজ্ঞতা হবে।
" তুই সকালবেলাতেই বেরলি না কেনো? তাহলে তো এতক্ষণে ফিরে চলে আসতি? "
" ও দেবী মায়ের পুজা সাম না ঢললে তো শুরু হয় না..... অনেক রাত তক পুজা চলে.... " লালী বুঝিয়ে বলে।
" দারুণ.... আমাকে নিয়ে যাবি? "
" তুই যাবি? "
" হ্যাঁ....একা একা বাড়িতে বসে বোর হচ্ছি.... তোর দেবী মাকে দেখে আসি "
লালী খুশীতে নেচে ওঠে। একা একা ওকে যেতে হত। এখন রাজুর মত সঙ্গী পেয়ে ওর ভালোই লাগছে।
" ঠিক আছে.....তুই কাপড়া পরে লে.....মুই তৈয়ার হয়ে আসছি। "
লালী রাজুর পাশে পাশে চলেছে। বকতেও পারে মেয়েটা। জগাখিছুড়ি ভাষায় সেই থেকে একটানা বকে চলেছে। ওর এই বকার চোটে পাথচলার কষ্ট কমে যাচ্ছে। লালী একটু সেজেছে। রঙিন শাড়ী আর ব্লাউজের সাথে মাথায় খোপা করে তাতে ফুল গুঁজেছে৷ একটা গন্ধ তেলের ঘ্রাণ আসছে ওর গা থেকে। গন্ধটা খুব উগ্র হলেও রাজুর মনে হচ্ছে এটা না হলে লালীকে মানাতো না। এই সুগন্ধী তেল ওদের সৌন্দর্য্যের প্রতীক। ও খালি পায়ে আসছিলো, রাজু বকা দিয়ে একটা চপ্পল পরিয়েছে৷ পাহাড়ি রাস্তায় কোথায় কিসে পা কেটে কুটে যায় কে জানে?
একটা চড়াই রাস্তা বেয়ে উঠছে ওরা। এই চড়াইটা পার হলেই পাহাড়ের অপারে পৌছে যাবে। সূর্য্য পশ্চিমে ঢলে পড়েছে। উঁচু গাছগুলোর মাথায় সোনালি রদ্দুর দেখা যাচ্ছে। আর একটু পরে এটাও মিলিয়ে যাবে। এখানে রাস্তার দুপাশে বড় বড় শাল আর সেগুনের গাছ। রাস্তাটা নুড়ি পাথরের, জুতো পরেও হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। লালীর কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, ও দিব্যি হেঁটে চলেছে। হাঁটার সাথে সাথে লালীর শরীরের নিম্নভাগে একটা দারুন সুন্দর ছন্দ উঠছে...... রাজু না চাইতেও বার বার চোখ লালীর নিতম্বের দিকে চলে যাচ্ছে। লালীর ব্রাহীন শুধু ব্লাউজ পরা বুক এতো খাড়া যে কেউ মনে করবে ও ব্রা পরে আছে।
পাহাড়ের কাছাকাছি আসতেই আরো অনেক আদিবাসী পুরুষ আর মেয়েদের যেতে দেখলো ওরা। ওরা এখন প্রায় পাহাড়ের মাথায় পৌছে গেছে, এখান থেকে একটা রাস্তা বাঁক নিয়ে নিচে ঝর্নার দিকে নেমে গেছে, সবাই সেই রাস্তায় চলেছে। রাজু আর লালীও সেদিকেই নেমে গেলো। ঝর্ণার নীচে একটা বিশাল ফাঁকা জায়গা, সেখানে অনেক লোকজন জড়ো হয়েছে ..... সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়.... এখানে কারেন্টের আলো নেই, জায়গায় জায়গায় মশাল, হ্যাজাক আর কিছু ব্যাটারীর আলো
জ্বলছে। জীবনে প্রথম মশাল আর হ্যাজাক দেখলো ও।
কোথাও দেবী মায়ের মন্দির দেখতে পেলো না রাজু। লালীকে সে কথা বলতেই ও ঝর্ণার পাশে পাহাড়ের একটা দিকে আঙুল তুলে দেখলো। সেদিকে একটা গুহার মত কিছু আছে, মুখের কাছে মশাল জ্বালানো আছে..... ভিতরে কিছু দেখা যাচ্ছে না এখান থেকে।
লালী বলল, " ওই গুহার অন্দরে দেবী মা আছেন...... আন্ধেরা নামলে তারপর পুজা চালু হবে..... এর আগে কেউ অন্দরে ঢুকতে পারবেক না। "
একটু পরেই চারিদিকে অন্ধিকার নেমে এলো। শুধু এই জায়গাটা অসং্খ্য মশালের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। প্রায় একশ নারী পুরুষ এখানে ভীড় করেছে। গুহার ভিতর থেকে ঢাকের আওয়াজের মত স্থানীয় কোন বাদ্যযন্ত্রের আওয়াযে চারিদিকের নিস্তব্ধতা খান খান হয়ে আসছে। রাজুর গা শিরশির করে উঠলো। মনে হচ্ছে ১০০ বছর পিছিয়ে গেছে ও। কলকাতার বুকে বসে এখানকার এই পরিবেশ কল্পনাতেও আনা যাবে না। মেয়েরা দলে দলে গুহার ভিতরে প্রবেশ করছে। লালী ওকে সেখানে দাঁড়াতে বলে গুহার দিকে চলে গেলো। ছেলেদের ভিতরে প্রবেশ নিষেধ। সব পুরুষেরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় সবাই যে যার স্ত্রীর সাথে এসেছে। একমাত্র লালীই অন্য কারো সাথে এসেছে। রাজুর বেশ মজা লাগছিলো। এখানে সবাই ওকে লালীর স্বামী ভাববে। ওর খুব হাসি পেলো।
প্রায় ১ ঘন্টা পর লালী বাইরে বেরিয়ে এলো। ওর কপাল ভরা সিঁদুর আর হাতে একটা মাটির পাত্র। রাজু দেখলো সব মেয়েরাই পাত্র হাতে ঝর্ণার দিকে চলে যাচ্ছে। লালীও ওকে ইশারা করলো সেদিকে আসতে। লালী মাটির পাত্র হাতে আগে আগে ঝর্ণার কাছে পৌছালো। মেয়েরা সেখানে স্নান করে সাথে স্বামীকে নিয়ে অন্ধকারের দিকে অদৃশ্য হচ্ছে।
লালী ঝর্ণার কাছে পৌছে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। মনে হয় কিছু ভাবছে।
" কিরে চুপ করে দাঁড়ালি কেনো? " রাজু অবাক হয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো।
লালী ওর মুখের দিকে তাকিয়ে চিন্তাগ্রস্ত মুখে বললো, " " একটা বড্ড ভুল হয়ে গেছে...... মোর মরদকে লিয়ে আসার দরকার ছিলো..... এই পাত্রের তেল স্নান করার পর কাউকে আমার পেটে মাখিয়ে দিতে হবে..... নিজে হাত লাগানো যাবে না...... তুই বল এখন আমি কি করি? "
রাজুও চিন্তায় পড়ে গেলো। সত্যি..... লালীর পুজাটা বৃথা হয়ে যাবে..... কিন্তু কিছুই করার নেই, ওর মরদ তো বাড়িতেই নেই।
"তাহলে কি করবি? পরে আবার মরদকে নিয়ে আসিস। "
" ইটা একটা কথার মত কথা বল্লি বটে....... বছরে একঠোবার এই পুজা হয়..... আবার এক বরষ পরে হবে... "
" তাহলে কি করা যাবে? তোর মরদকে পাবি কোথায়? " রাজু বিরক্ত হয়।
লালী একটু কি ভেবে মুখটা নীচু করে বলে, " আমার একঠা উপকার করবি বাবু? "
" কেনো করবো না? বল? "
লালী কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে, " তুই তো মরদ আছিস.... মানে ব্যাটাছেলে মানুষ..... তুই হেই তেলটা হামায় মাখায় দিবি? "
মাথায় বাজ পড়লেও এতো অবাক হত না রাজু। বলে কি মেয়েটা? ওর নগ্ন পেটে এটা মাখিয়ে দিতে হবে।
" তুই কি পাগল হয়েছিস? তোর স্বামী জানলে কি ভাববে? "
" ও আর জানবে কিভাবে? তুই মাখায় না দিলে আমার পুজাটা একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে রে....." লালী অসহায়ের মত তাকায়, আবার এক বছর ওকে অপেক্ষা করে থাকতে হবে।
" কিন্তু আমি তো তোর স্বামী না..... আমি দিলে কাজ হবে? " রাজু একটু দ্বিধা নিয়ে প্রশ্ন করে।
" হ্যাঁ..... জরুর হবে..... স্নান করার পর মেয়েমানুষ আর এতে হাত লাগাতে পারবেক লাই.... মরদ মানুষ পারবে।
রাজু মনে মনে হাসে, কি অদ্ভুত নিয়ম, মেয়েদের গায়ে মাখাবে আর মেয়েরা ছুঁতে পারবে না।
ওর বুকের ধুকপুকানি বেড়ে গেছে। না চাইতেও একটা উত্তেজনা ওর শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। রাজু নিজের গায়ে চিমটি কাটে। ছি..... এসব ভাবনা কেনো আসে মনে। স্বাভাবিক ভাবে কাজটা করে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়।
লালীর হাত থেকে পাত্রটা নিয়ে ও দাঁড়ায়। লালী ঝর্ণার জলে নিজেকে ভিজিয়ে স্নান করে। তারপর সেই ভেজা কাপড়েই অন্ধকার দিকে এগিয়ে যায়। এই জায়গাটা বাইরে থেকে অন্ধকার লাগলেও এসে পড়লে সব কিছুই স্পষ্ট দেখা যায়। আশে পাশে গাছের আড়ালে একাধিক নারী পুরুষ। রাজু সেদিকে না তাকিয়ে লালীকে অনুসরণ করে একটা বড় গাছের আড়ালে দাঁড়ায়। লালীর মুখে লজ্জার আভা। কথা বলতেও পারছে না ও। চোখ মাটির দিকে। রাজুর সামনে দাঁড়িয়ে নিজের ভেজা শাড়ীর গিঁঠ খুলে আরো নীচে নামিয়ে আনে। ওর মসৃন কালো তলপেট বেরিয়ে আসে বাইরে।
মেদহীন পেটের মাঝে নিখুঁত নাভির গর্ত।
কাঁপা হাতে রাজু পাত্রটা মাটিতে রেখে তার থেকে তেল দুই হাতের তালুতে নিয়ে লালীর উন্মুক্ত পেটে মাখাতে থাকে। নাভির নীচে হাত দিতেই কেঁপে ওঠে লালী। রাজুর হাত আরো নীচে নামতেই হালকা যৌনকেশের আভাস পায়। আর এগোয় না ও। কল্পনায় লালীর ত্রিভুজ উপত্যকা দেখতে পায়। লজ্জায় চোখ বুজে আছে লালী। শরীর হালকা কাঁপছে। হাজার হলেও পরপুরুষ রাজু।
প্যান্টের ভিতরে রাজুর পুরুষাঙ্গ কবেই তার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে...... ওর টাইট জিন্সের কাপড় ভেদ করে বাইরে আসার জন্য ছটফট করছে সেটা।
ফেরার পথে লালী একরকম চুপ করে যায়। রাজুও লজ্জায় আর কিছু বলতে পারছে না। ওর শরীরের উত্তেজনা এখনো স্তিমিত হয় নি। লালীর দিকে যতবার তাকাচ্ছে ততবার ওর নগ্ন শরীর চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
আজ কাজের ফাঁকে ফাঁকে বারবার আনমনা হয়ে যাচ্ছিলো পল্লবী, কাল রাতে অমন শরীরকে শীতল করে দেওয়া যৌন মিলনের পর রাতে বাড়ি ফিরে রাজুর নগ্ন শরীরকে জড়িয়ে ঘুউমিয়ে যায় ও। কাল রাতে লালী ছিলো না। অন্যদিন লালী ওর ঘরে ঘুমায়। কাল লালীর বর এসেছিলো বলে লালী বাড়িতে ছিলো। তাই বাড়ি ফেরার পর দুজনের কেউ পোষাক পরার প্রয়জনীয়তা বোধ করে নি।
রাজু পল্লবীকে একহাতে জড়িয়ে ধরে অন্যহাতে ওর পিঠ, পাছা আর থাইতে হাত বোলাতে বোলাতে ঘুমিয়ে পড়ে।
খুব ভোর ভোর তলপেটে কিছুত খোঁচায় ওর ঘুম ভেণে যায়। চোখ মেলে তাকায় ও..... ঘুমের ঘোর তখনো কাটে নি, তার মাঝেই দেখে গভীর ঘুমে তলিয়ে থাকা রাজুর পুরুষাঙ্গ আবার শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর সেটা ওর তলটের সাথে ঘষা লাগছে। ঘুমের ঘোরে রাজুকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে ও........ কঠিন পুরুষাঙ্গ নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে ডলতে ডলতে আবার ঘুমিয়ে পড়ে, একবারে ঘুম ভাঙে লালীর ডাকে। ধড়ফড় করে উঠে বসে পল্লবী..... নিজের পোষাকটা পরে নিয়ে রাজুকে ডাকে। পল্লবীত সকাল সকাল ডাকে বিরক্ত রাজু কোনমতে নিজের প্যান্টটা পরে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।
স্নান করতে করতে হঠাৎ মনে পড়ে যায় যে আজ অনামিকা আসার কথা আছে। সাথে সাথে মনের মধ্যে সেই যে খারাপ লাগা ভর করে সেটা এখনো চলে আসছে। বার বাত নিজের ফোন দেখছে আর ভাবছে, এই বুঝি অনামিকা ফোন করলো। অনামিকা ওর বাড়ি চেনে না, বাস থেকে নেমে পল্লবীকে ফোন করার কথা।
ওদের সংস্থার পক্ষ থেকে এখানে হসপিটালের কাজ প্রায় শেষের মুখে। বিল্ডিং অনেকদিন এগেই তৈরী হয়ে গেছে। এখন ভিতরে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট এ সাজানোর কাজ চলছে...... আর কিছু দিনের মধ্যেই চালু করে দেওয়া হবে, আশেপাশের আদিবাসীদের চিকিৎসার খুব সুবিধা হবে এটা হয়ে গেলে। যদিও আপাতত খুব বড় কোন রোগের চিকিৎসার সুযোগ থাকছে না তবে ছোটখাটো অপারেশন বা রোগ ব্যাধি এখানেই চিকিৎসা করা যাবে।
সবার আগে আঊটডোর বিভাগ চালু হবে। আর এর জন্য ডাক্তারও একজন আজ আসার কথা। ওর হেড অফিস থেকে এমনি নির্দেশ এসেছে। ডাক্তারের থাকার সমস্ত ব্যাবস্থা পল্লবীকে করতে হয়েছে। হসপিটালের লাগোয়া কোয়ার্টারে ডাক্তার আর নার্স বা অন্যান্য কর্মচারীরা থাকবে। ডাক্তারের জন্য একটু বড় কোয়ার্টার। বাকিদের জন্য সাধারণ মানের।
আউটডোরের সাজানোর কাজ প্রায় শেষ। পল্লবী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আর কোথায় কি বাকি থেকে গেল সেটা দেখছিলো, তখনি ওর জুনিয়ার এক কর্মীর সাথে বছর ৩৩/৩৪ এর এক তরুন প্রবেশ করে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে উনি অনেক দূর থেকে আসছেন। সাথে লাগেজ আছে, পরনের জামাকাপড় সামান্য অবিন্যাস্ত। সাদা ফুল স্লিভ শার্ট এর হাতা গোটানো, সাথে ব্লু ডেনিমের জিন্স, পায়ে দামী চামড়ার ফরমাল শু। এক নজরে দেখলেও বোঝা যায় বেশ হ্যান্ডসাম চেহারা। যদিও ক্লীনশেভ তবু পল্লবীর মনে হল দাড়ি রাখলে একে আরো হ্যাণ্ডসাম লাগবে।
তরুন ওর সামনে এসে হাত বাড়ালো।
" হ্যালো..... আমি ডক্টর অনীক ব্যানার্জী, এম ডি মেডিসিন....... এই হাসপাতালের নতুন ডাক্তার।
পল্লবীর ঘোর কাটেএ। ও তাড়াতাড়ি হাত ধরে হাসে, "আমি মিস পল্লবী মিত্র.......গ্যালাক্সি সোসাল এন্ড কালচারাল ডেভলপমেন্ট অরগানাইজেশন ফর ট্রাইবালস এর প্রজেক্ট ম্যানেজার....... "
" ভালো লাগলো আপনার সাথে দেখা হয়ে...... এবার একসাথে কাজ করতে হবে আমাদের। " অনীক হাসে।
" হ্যা..... তবে আমার কাজ তো প্রোজেক্ট চালু হওয়া অবধি...... তারপর অন্য কোথাও...... " পল্লবী হাসে।
" ঠিক আছে ততদিন তো একসাথে কাজ করছি...... "
" চলুন আপনাকে আপনার কোয়ার্টার দেখিয়ে দি..... লখাই, সাহাব কা সামান উঠাও..... " পল্লবী অনীককে নিয়ে বাইরে আসে, তখনি ওর মোবাইলে ম্যাসেজ আসে অনামিকার...... অনামিকা আগামী পনেরো দিনাসতে পারবে না...... তারপর যোগাযোগ করবে।
বুকের উপর থেকে একটা পাথর নেমে যায় পল্লবীর। মনে হয় আকাশে উড়ে যাবে ও। বাচ্চা মেয়ের মত লাফিয়ে ওঠে পল্লবী। পাশে যে অনীক আছে সেটা ভুলে যায়। তাকিয়ে দেখে অনীক অবাক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ভাবছে পাগল নাকি মেয়েটা?
পল্লবীর হাসি পেয়ে যায়, ও অনীকের আগে আগে কোয়ার্টারের দিকে এগিয়ে যায়।
Deep's story


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)