Thread Rating:
  • 19 Vote(s) - 2.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Golpo-The Villain (Writer: Nishath Tanveer Nilasha)
#22
 
পার্ট       : ১৯



রুদ্রের শরীরটা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো,
মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে রুদ্রের,
এসব দেখে যেন স্নেহা কথা বলার শক্তিটা একদম হারিয়ে ফেলেছে, 
স্নেহা চিৎকার করে শ্রাবনে ডাকলো,

প্রায় অনেকক্ষন ধরে সবাই হাসপাতালে বসে আছে,
ডাঃ  গভীরভাবে রিপোর্টগুলো দেখছে!!
- ডাঃ এনি প্রবলেম?
ডাঃ স্বাভাবিক হয়ে বসলো, তারপর বলতে শুরু করলো,
- পেসেন্টের খাওয়া দাওয়ার ওপরে কি খেয়াল নেন না? কি অবস্থা তার শরীরের? পেসেন্টের খাওয়া দাওয়ায় অনেক অনিয়ম হয়েছে আর তার জন্য গ্যাস্ট্রিক বেড়ে তা আলসারে রুপ নিয়েছে, 
বুঝতে পারছেন ব্যাপারটা? একদিনে হয়নি এসব পেসেন্ট হয়তো অনেক দিন ধরেই এমন অনিয়ম করছিলেন!
- এখন আমাদের করনীয়?( শ্রাবন)
আসলে করণীয় বলতে তার কেয়ার করুন। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করতে বলুন।
অতিরিক্ত চিন্তার কারনে ওভাবে মাথা ঘুরব পরে গিয়েছে আর আজ ও হয়তো সে খায়নি তাই ওভাবে ব্লাডগুলো বেড়িয়েছে,
চিন্তার কিছু নেই, পেসেন্টের অনেক কেয়ার করবেন।।আমি তার রেগুলার একটা রুটিন দিয়ে দিবো। তবে মনে রাখবেন কিছুক্ষন পর পর তাকে খাওয়াবেন। পেট খালি রাখা যাবেনা। 
- সমস্যা নেই ডাঃ আমরা ওর খেয়াল রাখবো, ওনাকে কি আজ নিয়ে যেতে পারি?
- না আজ পারবেন না, স্যালাইন চলছে চলুক কাল নিয়ে যাবেন। 
- ওকে ডাঃ,
রুদ্রের কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে চোখের পানির ফেলছে রুদ্রের মা, সন্তান যতো অপরাধ করুকনা কেন! মা কখনোই সন্তানের কষ্টে সময় স্বাভাবিক থাকতে পারেনা, রুদ্রের মায়ের ও একি অবস্থা, এতোদিন সন্তানের ওপরে রাগ করে কথা বলেনি, খেয়েছে কি না খেয়েছে তাও জানতে চায়নি। তাই হয়তো আজ ছেলেটার এ অবস্থা, এসব ভাবছে আর চোখের পানি ফেলছে মনোয়ারা বেগম।
স্নেহা শ্রাবনের ঘাড়ে মাথা দিয়ে বসে আছে,  এই সময় তার হাসিখুশি থাকা উচিৎ কিন্তু এমন সব ঘটনা ঘটছে হাসিখুশি থাকা তো দূর স্বাভাবিক থাকাই কষ্টের হয়ে যাচ্ছে।
- ভাবি, হাসপাতালে ক্যান্টিন আছে চলো তুমি কিছু খেয়ে নিবে,
- এখন খাবোনা তিতির, বাড়ি গিয়েই খেয়ে নেবো।
- ভাইয়াকে না দেখে বাড়ি যাবেনা,  আর বাড়ি যেতে দেড়ি হবে। এই অবস্থায় না খেয়ে থাকা ঠিক হবেনা ভাবি চলো কিছু খেয়ে নিবে,
- ও ঠিক বলছে যা খেয়ে নে কিছু,( শ্রাবন)
তিতির স্নেহাকে নিয়ে ক্যান্টিনে চলে গেলো,
স্নেহার সামনে খাবার কিন্তু একটুও খেতে ইচ্ছা করছেনা,
-ভাবি খাবারের দিকে তাকিয়ে না থেকে খাইয়া শুরু করো।
- ইচ্ছা করছেনা গো!!
- ইচ্ছা করছেনা মানে খেতে হবে, আমাদের গুবলু সোনা মনে হয় খিদে জ্বালায় কান্না করছে,
স্নেহা তিতিরের কথায় হেসে দিলো,
- তুমি কি করে জানলে গুবলু কাঁদছে??
- আরে!!
স্নেহা কিছু বলার আগেই পেছন থেকে শ্রাবন বলে উঠলো,
- ও জানবেনা আবার, ওর তো ১২ হালি বাচ্চাকাচ্চা আছে,
তিতির পেছনে তাকিয়ে দেখলো শ্রাবন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসছে আর কথা বলছে,
- শয়তান একটা সব জায়গায় চলে আসে আমাকে লজ্জা দিতে ইচ্ছা করে চুলগুলো টেনে ছিড়ে ফেলি আর গাল খামছে লাল করে দি।( মনে মনে শ্রাবনকে গালাগালি করছ্র তিতির,
হাসতে হাসতে তিতির আর স্নেহার পাশে চেয়ার নিয়ে বসলো শ্রাবন
- আসলে মাথাটা খুব ব্যাথা করছিলো রে, তাই একটু কফি খেতে এলাম।
- ভাবি তুমি খেয়ে নাও আমি একটু ওদিকে যাই,,
বলেই তিতির ওখান থেকে উঠে এলো।
আসার সময় শ্রাবনকে এতোগুকা গালাগালি করতে করতে এলো।

তিতির চলে আসতেই,
- ভাইয়া এটা তুই কি বললি, মেয়েটা কতো লজ্জা পেলো।
- আরে তুই জানিস না ও কি কান্ড করেছে, তারপর শ্রাবন সব খুলে বললো স্নেহা তো শুনে হাসতে হাসতে শেষ।
এর মাঝেই স্নেহার মা এলো,
- এই স্নেহা ওদিকে চল!!
- কেন মামনি?
- আরে রুদ্রের জ্ঞান ফিরেছে, ওর সাথে দেখা করবিনা?
শ্রাবনের সাথে কথা বলতে বলতে স্নেহা কিছুক্ষনের জন্য ভুলেই গিয়েছিলো যে তারা হাসপাতালে আর রুদ্র অসুস্থ,
স্নেহার মুখের হাসি মলিনয়ায় পরিণত হলো,
- আচ্ছা মামনি আসছি!!

প্রায় ১৫ মিনিট হলো জ্ঞান ফিরেছে রুদ্রের, রুদ্রের মা ছেলের হাত ধরে কেঁদে যাচ্ছে কান্নার জন্য ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেনা,

- মা এবার তো থামো আমি ঠিক আছি,,
- বাবা আমি রাগে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম আর তাই আজ তোর এই অবস্থা এই কয়েকটা দিন আমি তোর একদম খেয়াল রাখিনি,

এর ভেতরেই ঢুকলো স্নেহার মা, তিতির আর স্নেহা,
- আপা আর কতো কাঁদবেন আপনি কাঁদলে আপনার ছেলেরই কি ভালো লাগবে বলুন? বাবা জানো তুমি অজ্ঞান হওয়ার পর থেকে তোমার মা কেঁদে যাচ্ছে এতো থামানোর চেষ্টা করছি কথা শুনছেই না।
- হুম আন্টি আসলে মা, এমনি,
কথাটা বলেই রুদ্র স্নেহার দিকে ঘাড়  ঘুরিয়ে তাকালো,
রুদ্রের মা বুঝতে পারলো যে রুদ্র হয়তো স্নেহাকে ডাকতে চাচ্ছে কিন্তু তারা সামনে থাকায় পারছেনা, আসলে মা তো এমনি মুখে না বললেও যে সন্তানের চাওয়া বুঝে যায়।
- আপা চলেন আমরা বাহিরে যাই ছেলেটার এখন বিশ্রাম দরকার বিশ্রাম করুক, রুদ্রের মা কথাটা বলেই বেড়িয়ে গেলো সাথে তিতির আর স্নেহার মা ও।
স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে,
- কাছে এসো,
রুদ্রের কথা স্নেহা কাছে আসলো, কারন অসুস্থ মানুষের ওপর রাগ দেখানোর মেয়ে স্নেহা নয় আর যেখানে রুদ্রকে সে ভালোবাসতো।
- খেয়েছো? ঠিকমতো না খেলে কিন্তু আমার বেবির প্রবলেম হবে,
- হুম খেয়েছি, তিতির খাইয়ে দিয়েছি!!
- তাই নাকি বোনটা তো দায়িত্বশীল হয়ে গেছে দেখছি। 
- হুম,,,,
- স্নেহা, একটা অনুরোধ করবো?
- হুম করুণ,
- আমার পাশে একটু বসবে শুধু তোমার দুটো হাত আমার বুকের ওপরে রাখবো।
স্নেহা কিছু না বলেই রুদ্রের পাশে বসলো,,,
রুদ্র স্নেহার দুটো হাত টেনে নিয়ে বুকের ওপরে রাখলো,
আজ যেন অসুস্থতায় ও প্রশান্তি লাগছে রুদ্রের যে প্রশান্তি সুস্থ অবস্থায় ও পায়নি সে,
এমন প্রশান্তির জন্য রুদ্র সারাজীবন অসুস্থ থাকতে রাজি। যদি স্নেহার হাত তার বুকে থাকে,

তিতির ফিল্টার থেকে পানি খাচ্ছে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।
শ্রাবন পানি খাওয়ার জন্য ফিল্টারের সামনে এসে দাড়াতেই মুখ ভর্তি পানি নিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে তিতির।
মনে মনে ভাবছে এই লোকটা আবার আমার সামনে নিশ্চই আবার কোনো লজ্জা দিবে,
হঠাৎ তিতির ফুস করে তার মুখের পানি ফেলেদিলো।
- ও সিট এটা কি করলে???( রেগে বললো শ্রাবন কারন তিতিরের মুখের পানি পাশে সোজাসুজি দাঁড়িয়ে থাকা শ্রাবনে শার্টটা অলরেডি ভিজিয়ে দিয়েছে,
- আমি ইচ্ছে করে করিনি( ভয়ে কাছুমাছু হয়ে বললো তিতির)
- রাবিশ, ( বলেই হনহনিয়ে চলে গেলো শ্রাবন)
-ভাবি, ভাবি
- হুট করেই কেবিনি ঢুকে পড়লো তিতির, 
রুদ্র স্নেহার হাত বুকের ওপরে রেখে স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে,
তিতির কেবিনে আসতেই হাত ধড়ফড়িয়ে হাত সরিয়ে নিলো স্নেহা,
- ওহ সরি সরি ভুল টাইমে চলে আসলাম, ( চোখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বলছে তিতির)
- তুই তো ভুল টাইমেই আসবি, বলদি একটা,
- ভাইয়া তুমি এভাবে বলতে পারোনা? চোখের থেকে হাত সরিয়েই ঝাজালো কন্ঠে বললো তিতির।
- ওরে বাবা বোনটা দেখি আবার রাগ ও করে, 
- তো কি রাগ করবনা হ্যা? আমি এখন বড় হয়ে গেছি কলেজে পড়ি আর তুমি আমাকে সবসময় অসম্মান করো এটা আমাকে মেনে নিতে বলছো? আমি কিন্তু,
- বাবা রে ভয় পেয়েছি, তুই কিন্তু কি রে,
- মাকে বলে দিবো তুমি আমার সাথে এমন করো,, ( ভিতু হয়ে যেয়ে)
- হাহাহা, হাসিতে যেন রুদ্রের পেট ফেটে যাচ্ছে,  তুই এই মাত্র যে রুপ নিয়েছিলি মনে হচ্ছিলো আমার সামনে কোনো বাঘিনী দাঁড়িয়ে আছে, বাট এখন আমাদের সেই বিড়ালটার কথা মনে পড়ে গেলো,
- ভাবি কিছু বলো( নেকা কান্না করে)
- আপনি চুপ করবেন, মেয়েটার পেছনে সবসময় লেগে থাকে।
তুমি আমার সাথে এসো, আর কিছু বললে আমি দেখে নেবো।
- হ্যা ভাইয়া একদম কান মুলে দিবা,
- আমাকে ভালো হতে দে,কে কার কান মোলে দেখা যাবে তখন!!
রুমে রুদ্রের মা আর শ্রাবন এলো,
রুদ্রের কাছে রাতে থাকবে শ্রাবন এই অবস্থা স্নেহার রেস্ট দরকার। আর হাসপাতালে১ জন থাকতে হবে, তাই রুদ্রের সাথে শ্রাবন থাকবে, একরকম জোর করে থাকছে শ্রাবন,
সবাই যাওয়ার জন্য রওনা হয়ে গেছে একে একে রুম থেকে সবাই বেড়িয়ে গেলো,
যাওয়ার সময় স্নেহা রুদ্রকে একটা কথা বলে গেলো,
- আপনি আমার সাথে অনেক অপরাধ করেছেন আপনাকে আমি সত্যি ঘৃনা করি। তবে আমার মাঝে মানবিকতা আছে আমি চাইনা আপনার কোনো ক্ষতি হোক। চাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুন।
বলেই চলে গেলো স্নেহা,
স্নেহার এতোটুকু কথা যেন  রুদ্রের খুন গভীর ক্ষত রেখা একে দিলো,
হ্যা সে তো অনেক অন্যায় করে! তবে আজ স্নেহার বলা এই সত্যি কথায় তার বুক কেন ফেটে যাচ্ছে,
হয়তো ভালোবাসার মানুষটার একটু ক্ষত ও অনেক বড় ভাবে আঘাত করে,,

পরেরদিন সকালে,,,
- রুদ্রের কেবিনের ভেতরে সোফার ওপরে গুটিসুটি ভাবে শুয়ে আছে শ্রাবন সারা রাত ঘুমায়ই কারন সে ঘুমিয়ে গেলে রুদ্রের কোনো প্রয়োজন হলে যদি টের না পায় তাই,ভোরের দিকে সোফার ওপরে হেলান দিয়ে শুয়ে চোখ লেগে গেছে শ্রাবনের,
আজ ৮ টা থেকে এক্সেম শুরু তিতিরের কাল রাতে কিছু পড়া হয়নি, সবসময় এক্সেম এর আগে ভাইকে জড়িয়ে ধরে  আর রুদ্র ও পকেট থেকে টাকা দিয়ে বলে, এক্সেম ভালো না হলে টাকা ফেরত দিবি আর ভালো হলে যা চাইবি তাই দিবো,
কিন্তু তিতির কিছুই চায়না, প্রতিবারই তিতিরের এক্সেম ভালো হয় কিন্তু তিতির কিছুই চায়না শুধু বলে ভাইয়া সময় হলে চেয়ে নেবো।
আজও নিজের ভাইয়ের কাছেই বলে যাবে তাই তাড়াতাড়ি রওনা দিয়েছে তিতির, হাসপাতাল হয়ে এক্সেম হলে যাবে।
হাসপাতালে এসেই রুদ্রের কেবিনে ঢুকলো তিতির, 

শ্রাবন সোফায় কোনোরকম শুয়ে আছে, মাথাটা বেকে আছে। এমন ভাবে থাকলে হয়তো ঘাড়ে ব্যাথা হবে পড়ে,
তাই তিতির শ্রাবনের মাথা ঠিক করে দিলো, যেই হাত সরিয়ে নিতে যাবে ঠিক তখনি শ্রাবন তিতিরের হাত চেপে বলতে লাগলো,
- উম্মম্ম অধরা আর একটু ঘুমাই প্লিজ, তুমি একটি বসো আর আমার ঘুম মাখা মুখটা দেখো,
শ্রাবনের কথা শুনে তিতির অবাক, কি করবে বুঝতে পারছে না, হাত সরিয়ে নিলে শ্রাবনের ঘুম ভেঙে যাবে, তারপর তিতিরকেই লজ্জায় পড়তে হবে, ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ,

চলবে,,,,
 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply


Messages In This Thread
RE: Golpo-The Villain (Writer: Nishath Tanveer Nilasha) - by Bangla Golpo - 23-08-2025, 10:33 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)