23-08-2025, 10:30 PM
পার্ট : ১৭
স্নেহার সামনে দাঁড়িয়ে আছে তার মা বাবা,স্নেহা তার মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে, কতোদিন পর মাকে দেখতে পেলো সে,
- আর কাঁদিস না মা,
- মামনি আমি তোমাকে অনেক মিস করেছি মামনি।
- হ্যা রে মা জানি আমারো তোর কথা খুব মনে পড়তো।
- স্নেহা মা মাকে ছাড় তারা অনেকটা পথ এসেছেন ক্লান্ত হয়তোবা।
যা ওনাদের রুমে নিয়ে যা,
স্নেহা তার মা বাবাকে নিয়ে গেস্ট রুমের দিকে গেলো।
রুমে ঢুকেই দরজা আটকে দিলো স্নেহা,,
- পাপা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে!!
- হ্যা মা বল?
- অধরা আপুর মাড়া যাওয়ার পেছনে কি তোমার কোনো হাত আছে?
- কি?? এসব তুই কি বলছিস মা? তোর ভাই শ্রাবন আমাকে অধরার কথা বলেছিলো প্রথমে অমত করলেও পরে আমি আমার ছেলের খুশির জন্য অধরাকে মেনে নিয়েছিলাম।
পরেরদিন অধরার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ারর কথা ছিলো আমার, কিন্তু তার আগেই অধরার।
- আমি জানতাম পাপা, আমার পাপা কারো ক্ষতি করতে পারেনা।
আচ্ছা তোমরা রেস্ট নাও আমি আসছি।
স্নেহা চলে যাবে ঠিক তখনি তার মনে পড়লো কিছু একটা,
- আচ্ছা বাবা তোমরা হঠাৎ কিছু না জানিয়ে আসলে?
- রুদ্র আমাদের আসতে বলেছে মা,
রুদ্র আবার কেনো আসতে বললো তবেকি পাপা আর মামনির কোনো বড় ক্ষতি করতে চায় কথা গুলো ভাবতে ভাবতে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো স্নেহা,
এদিকে রুদ্র অনেকক্ষন তার সামনে থাকা গাড়িটাকে ফলো করে যাচ্ছে,
সামনে থাকা গাড়িটা থামতেই রুদ্র থেমে গেলো, শ্রাবন গাড়ি থেকে নেমেই ডিকি থেকে বেগ নামাচ্ছে ঠিক তখনি, রুদ্র যেয়ে পেছন থেকে ডাক দিলো,
- শ্রাবন ভাই???
শ্রাবন পেছনে ফিরতেই দেখলো রুদ্র দাঁড়িয়ে আছে, শ্রাবন কিছুক্ষন রুদ্রের দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর বললো,
- কেমন আছিস?
- ভালো ভাই আপনার সাথে কিছু কথা আছে, একটু সাইডে চলেন।
শ্রাবন কিছুক্ষন চুপ থেকে রুদ্রের সাথে এক সাইডে গেলো,
- এতোদিন দেশে আসেননি কেনো ভাই?
- আমি যে বাহিরে ছিলাম তুই জানিস কিভাবে?
- আমি সব জানি ভাই, আরো অনেক কিছু জানতে পেড়েছি, কিন্তু অনেক পরে, যা আমাদের সবার অনেক আগে জানা উচিৎ ছিলো,
- মানে? কি সব বলছিস,
তারপর রুদ্র শ্রাবনকে অধরার সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা খুলে বললো,
আজ অনেক দিন পর শ্রাবনের চোখ দিয়ে ঝরে পড়ছে নোনা জল। এতোদিন রাগ হয়ে জমে থাকা কিছু কষ্ট আজ জলের ধারায় রুপ নিয়েছে,
শ্রাবন তার ভালোবাসার মানুষকে এতোদিন চরিত্রহীনা ভেবেছিলো, সেই ভালোবাসার মানুষটার মৃত্যুর আসল রহস্য আজ যেন শ্রাবনের চোখ খুলে দিয়েছে,কথা বলার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছে শ্রাবন।
- রুদ্র আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি,
- ভালোবাসার মানুষটাকে ভুল বোঝার ভুল আমিও করেছি ভাই, আর এখন কষ্ট পাচ্ছি,
তবে ভাই আমাদের শাস্তি দিতে হবে যারা আমাদের ভালোবাসার মানুষকে আমাদের চোখে খারাপ বানিয়েছে,
- কিন্তু আমরা কিভাবে?
-.যেভাবেই হোক ভাই, আমাদের পারতে হবে।
এখন চলুম বাসায় যাবেন,
- আমিতো আমার বন্ধুর বাসায় উঠবো,
- বাবা মা থাকতে বন্ধুর বাসায় কেনো?( রুদ্র)
- তুই জানিস না, বাবা মা এখন ঢাকায় থাকেনা।
- কে বলেছে তারা ঢাকায় থাকে আর কোথায় থাকে তাও আমি জানি, এবার চলেন বাসায়। বলেই শ্রাবনের বেগ গাড়িতে রেখে শ্রাবনকে নিয়ে বাসায় রওনা দিলো রুদ্র।
বাসায় আসার পর,,
-ভাই আপনি ভেতরে যান আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি.
শ্রাবন এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে বাসায় ঢুকছে,
সাথে সাথে কেও এসে শ্রাবনকে একটা কাপড় দিয়ে পেচিয়ে ধরলো,
- মা, ভাইয়া, ভাবি চোর চোর চোর, চোর ধরেছি। শ্রাবনে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে চেঁচিয়ে বলছে তিতির।
শ্রাবন কাপড় সরানোর জন্য চেষ্টা করছে কিন্তু তিতির আরো আষ্টেপৃষ্ঠে ধরছে,
রুদ্রের মা তিতিরের চেঁচামেচি শুনে রুম থেকে বেড়িয়ে এসেছে,
- কি হয়েছে চেচাচ্ছিস কেনো?
- মা দেখো চোর ধরেছি,
- একি চোর হোক বা ডাকাত এভাবে কাপড় দিয়ে ধরলে শ্বাস নিবে কিভাবে,
- তাই তো তারপর যদি শ্বাস আটকে মাড়া যায় পুলিশ আমাকে ধরবে বলেই শ্রাবনে ছেড়ে দিলো তিতির।
ছাড়া পেতেই চেঁচিয়ে উঠলো শ্রাবন,
- হ্যা ইউ। হোয়াট দ্যা হেল?
তিতিরের দিকে তাকিয়েই চুপ হয়ে গেলো শ্রাবন।
- আপনি? আপনি ডাকাতিও করেন, মা এটা সেই লোকটা যে আমাকে গাড়ি চাপা দিতে চেয়েছিলো,
আমাকে গাড়ি চাপা দিতে গিয়েও পারেননি তাই আমার বাড়ি অবদি এসে গেছেন??( কোমরে হাত দিয়ে বললো তিতির)
আরে ভাই আপনার লাগেজ? বলতে বলতে বাসায় ঢুকলো রুদ্র!!
- ভাইয়া তুমি এসেছো? এই লোকটার নাক ফাটিয়ে দাও তো মেড়ে।
- এই তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? কাকে কি বলছিস?? ( রেগে তিতিরকে বললো রুদ্র)
- কেনো ভাইয়া এই লোকটাকে,
- চুপ একদম চুপ সবসময় বেশি বকবক করিস,,
তিতিরকে ধমক দিয়েই রুদ্র শ্রাবনে বললো,
- সরি ভাই আসলে ও একটু বেশি কথা বলে ছোট মানুষ বুদ্ধি ও কম কখন কি বলত্র হয় জানেনা।
ও তরফ থেকে আমি মাফ চাচ্ছি ভাইয়া।
তিতিরের কাণ্ডকারখানায় শ্রাবনের রাগে মাথায় আগুন জললেও, রুদ্রের কথায় আবার স্বাভাবিক হলো শ্রাবন।
- না, না ঠিক আছে। ইটস ওকে
- কিরে দাঁড়িয়ে কি দেখছিস? সরি বল ভাইয়াকে!( রেগে বললো রুদ্র তিতিরকে)
রুদ্রের ধমক শুনে তিতির সরি বললো,
- ভাইয়া,তুমি?
শ্রাবনকে দেখেই স্নেহা দৌড়ে এসে শ্রাবনকে জড়িয়ে ধরলো,
- ভাইয়া তুমি এসেছো? জানো তোমাকে কতো মিস করেছি আমি
শ্রাবন অবাক হয়ে আছে, কারন স্নেহার এখানে থাকার কথা না কিন্তু স্নেহা এখানে কিভাবে, স্নেহাকে জিজ্ঞেস করলো শ্রাবন।
- তুই এখানে? তোর শশুরবাড়ি থাকার কথা,আর মা বাবাই বা কোথায়?
- ভাই আপনাকে বলেছিলাম না আমি সব জানি! আপনার বোন তার শশুর বাড়ি আছে,( রুদ্র)
-মানে( শ্রাবন অবাক হয়ে)
-মানে স্নেহার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে, আর এটাই ওর শশুর বাড়ি( রুদ্র) আমিই বাবাকে বলেছি আমার সাথে বিয়ের কথা আপনাকে না জানাতে, এসে একেনারে সারপ্রাইজ পাবেন তাই!!
- হুম তাইলে আমার বোনটা ঠিক মানুষকেই তার জীবনে পেয়েছে,
স্নেহা প্রশ্ন করলো,
- ভাইয়া তুমি যে আসবা মামনি পাপা কে জানাওনি?
- না রে হুট করেই আসা হলো,
- এতোদিন পর আমাদের কথা মনে পড়লো?
- না রে বোন সবাইকে অনেক মিস করেছি, যাক বাদ দে। এখন তো এসে গিয়েছি তাইনা।
- হুম ভাইয়া, মামমি আর পাপাও এখানে চলো ওদের কাছে নিয়ে যাই,
- হ্যা বাবা ওপরে যাওও ফ্রেস হও, আনোয়ারা বেগম.
- আচ্ছা আন্টি,
স্নেহা তার ভাইকে নিয়ে বাবা মায়ের কাছে গেলো।
াবা মায়ের কাছে যেতেই ছেলেকে পেয়ে বাবা মা অনেক খুশি কিন্তু শ্রাবন পুরোটা খুশি হতে পারছে না।
কারন নিজের ভালোবাসাকে হারানোর কষ্টে একদিন দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলো, নিজেও কষ্ট পেয়েছিলো আর সাথে সাথে মা বাবাকেও অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছিলো, এ প্রকার অপরাধবোধ কাজ করছে শ্রাবনের ভেতরে,
স্নেহা বুঝতে পারছে না রুদ্র কেনো তার পড়িবারের সবাইকে এই বাড়িতে এনে তুলেছে তাহলে কি নতুনভাবে কোনো প্রতিশোধ নেয়ার কথা ভাবছে রুদ্র, ব্যাপারটা খুব খটকা লাগছে স্নেহার,
তাই দেরি না করে রুমে গেলো স্নেহা,
রুদ্র মাত্রই ফ্রেস হয়ে বেড়িয়েছে,
- আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো,
- আরে আমাকে এতো মিস করছিলে যে এতোদিন পর ফ্যামিলিকে পেয়েও রুমে ছুটে এলে আমাকে দেখতে,
- এসব বাজে কথা ছাড়ুন, বলুনতো আপনার মতলবটা কি,আবার নতুন ভাবে প্রতিশোধ নেয়ার ফন্দি তাইনা?
- আজ আমার ঝগড়ার মুড নেই, তাই আমই আর কোনো কথা বাড়াতে চাইনা জান,
স্নেহার হাত ধরে হেচকা টান মেড়ে নিজের কাছে নিয়ে আসলো রুদ্র,
স্নেহা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে রুদ্রের দিকে,
চলবে,
===========================
পড়তে থাকুন চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।
Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.
( Post By- Kam Pagol)