Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 2.77 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL NRI গৃহবধূ থেকে পেশাদার Porn actress
#15
সপ্তম পর্ব


ঐ porn ফিল্ম প্রোডাকশন হাউজ সোনালীর মত milf hot and happening porn actress কে পেয়ে ছেড়ে দিতে রাজি ছিল না। সোনালী বুঝে গেছিল এই জগৎ টা তার জন্য নয়। সে কন্ট্রাক্ট  টার্মিনেট চেয়ে আইনি নোটিশ সার্ভ করেছিল। 4- 5 মাস নোটিশ পিরিয়ডে হাউস চাইছিল যতটা সম্ভব বেশী করে সোনালীর থেকে আদায় করে নিতে সেই কারনে দুদিন পর পর শুটিং এর ডেট ফেলা হচ্ছিল , আর সোনালী কেও চুক্তি বদ্ধ মডেল এক্ট্রেস হিসেবে কাজ করতে হচ্ছিল। সোনালী অল্প সময় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল ।তার ভিডিও যেগুলো পর্ন সাইটে আপলোড করা হয়েছিল সেগুলো দারুন views পেয়েছিল, ওই পর্ন হাউস এর পেজ এর সাবক্রিপশন বেড়ে গেছিল সোনালীর পর্ন ভিডিও গুলো আসার পর্ থেকে। সোনালীর কন্টেন্ট ভিউআর দের এত ভালো লাগার পিছনে দুটি কারণ কাজ করেছিল। তার মধ্যে একটা ছিল, সোনালী জন্মসূত্রে খাটি ভারতীয় হলেও , তার শরীর আর রূপ এর মধ্যে একটা Latina type ব্যাপার ছিল। আর দ্বিতীয় কারণ ছিল Extream hardcore সেক্স সিন করার সময় সোনালীর শরীর ঘেমে গেলে তার গা থেকে একটা মিষ্টি ঘেমো গন্ধ বেড়াতো। যার ফলে সোনালীর কো এক্টর পারফর্ম করত সে আরো চার্জ আপ হয়ে যেতো। এটা হওয়ার কারণে সিন গুলো অনেক বেশি উপাদেয় হত। 

সোনালী কে হামেশাই ডিরেক্টর দের satisfied করতে একই সিন 5-6 টা টেক দিতে দিতে ক্লান্ত বিধ্বস্ত হয়ে পড়তে হতো। এক একটা সিন দুই তিন রকম ভাবে শুট করা হতো। তার মধ্যে যেটা সব থেকে hot দেখাতো সেটা ফিল্মে রাখা হতো।

সোনালীর স্বামী সোনালীর এই জগতে যোগ দেওয়া মন থেকে মেনে নিতে পারে নি। এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বিয়ে টে সে কয়েক সপ্তাহের জন্য দেশে ফিরেছিল। ডিভোর্স এর ব্যাপার টা দেশের সবাই জানতো না। Cousin sister এর বিয়েবাড়ি টে আত্মীয় স্বজন রা যখন সোনালীর কথা জিজ্ঞ্যেস করছিল, ও আসলো না কেন? ও কি অফিস থেকে ছুটি পায় নি? এই সব প্রশ্ন স্বাভাবিক কারনে সোনালীর স্বামী কে বিড়ম্বনার মুখে ফেলে দিয়েছিল। সত্যিটা বলতে পারলো না। এই সত্যিটা সবাইকে বলা যায় না। ঘুমোতে যাওয়ার আগে only fan এ নিজের স্ত্রীর hot নাম মাত্র পোশাক পরে তোলা ছবি দেখে সোনালীর স্বামী ভেতরে ভেতরে জ্বলত।

সোনালী এদিকে ঐ নোটিশ পিরিয়ড কবে শেষ হবে, কবে এই জগৎ থেকে ও মুক্তি পাবে সেই জন্য অপেক্ষা করছিল। একটা আউটডোর থেকে ফিরে এসে,  মাত্র একদিন বিশ্রাম দিয়ে পরদিন সকালেই সোনালীকে আবার কল টাইম দেওয়া হল। আগের রাতের পরিশ্রম আর পার্টির চাপের পর তার শরীর ভীষণভাবে অবসন্ন, মাথা ব্যথা করছে, ঠোঁট শুকনো, চোখ দুটো লালচে হয়ে উঠেছে। তবু ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হবে—কারণ প্রোডাকশন টিম শিডিউল পেছাতে রাজি নয়।

মেকআপ রুমে ঢুকতেই মেকআপ আর্টিস্ট এক নজরে বুঝে গেল, সোনালীর শরীর কাজের চাপ সামলাতে পারছে না। সে কপালের ঘাম মুছে দিল, চোখে আই ড্রপ দিল, আর হালকা কনসিলার দিয়ে ক্লান্তি ঢাকার চেষ্টা করল। কিন্তু মুখে সেই আগের ফ্রেশ গ্লো আর নেই।

আজকের শুটটা আরও কঠিন—পুরো দৃশ্যটাই এক দীর্ঘ ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ধারাবাহিকতা, যেখানে একটানা আবেগ ধরে রাখতে হবে। সাথে নতুন কিছু অ্যাকশনও যোগ হয়েছে, যা শারীরিকভাবে ক্লান্ত সোনালীর জন্যে আরও বড় বোঝা।

ডিরেক্টর, রবার্ট, ঠাণ্ডা গলায় নির্দেশ দিলেন—
“Sonali, today we need more intensity. You have to forget your tiredness. Just flow with the scene.”

ক্যামেরা অন হওয়া মাত্রই কো-অভিনেতা, ইথান, পেশাদারি ভঙ্গিতে এগিয়ে এল। কিন্তু সোনালীর শরীর সায় দিচ্ছিল না। হাত কাঁপছিল, গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ডিরেক্টর শুট থামালেন, গিয়ে তাকে জোর করে পানীয় অফার করলেন—
“Drink this, you’ll feel better. Otherwise we can’t finish the schedule.”

ওষুধ মেশানো এনার্জি ড্রিঙ্কটা খেতে গিয়ে সোনালীর ভেতরটা কেমন অদ্ভুত লাগল। শরীর একটু হালকা হলো বটে, কিন্তু মন আরও ভারী হয়ে উঠল। ডিরেক্টর পাঁচ মিনিট পর এসে বলল, আমরা তৈরি, তুমি এবার এসে  তোমার house coat টা খুলে, inner wears পড়ে, বিছানায় শুয়ে পড়। বাকি টা আস্তে আস্তে খুলবে,  প্রথম প্রথম খুব অস্বস্তি বোধ হলেও, সোনালীর ততদিনে বাইরের লোকেদের সামনে এই শুটিং এর সময় undress হওয়া অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া ড্রিংকস টা টে এমন কিছু উপাদান মেশানো ছিল ওটা খাওয়ার পর, যত পাতলা ছোট পোশাক ই সোনালীর গায়ে চাপানো থাক, খুব ভারী মনে হত।

শুটিং তার স্বাভাবিক ছন্দে চলতে থাকল। প্রতিটা দৃশ্যে তার শরীর যেন এক যান্ত্রিক অস্ত্রের মতো ব্যবহৃত হচ্ছে। অভিনয় করার সময় সে বুঝতে পারছিল, নিজের ভেতরের মানুষটা কোথাও দূরে সরে যাচ্ছে। হাসি, স্পর্শ, আবেগ—সবকিছুই ক্যামেরার জন্য সাজানো, কিন্তু ভেতরে ভেতরে সোনালী কেবল একটাই ভাবছিল—
“আর কতদিন?”

একটানা কয়েক ঘণ্টা শুটিং শেষে যখন অবশেষে ‘প্যাক আপ’ ঘোষণা হলো, তখন সোনালী চেয়ারে বসে নিঃশ্বাস ফেলল। শরীরের প্রতিটি পেশী যেন টেনে নেওয়া হয়েছে। মনটা আরও বেশি ক্লান্ত—কারণ প্রতিবারই সে বুঝতে পারছে, এই ইন্ডাস্ট্রি থেকে বেরিয়ে আসা এত সহজ নয়।

সে নিজের রুমে ফিরে এসে আয়নার সামনে দাঁড়াল। মুখটা শুকিয়ে গেছে, চোখে আর কোনও স্বাভাবিক আলো নেই। ওষুধের নেশা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছিল, কিন্তু ভেতরে জমা হচ্ছিল গভীর হতাশা।

বিছানায় শুয়ে সোনালী কেবল একটা কথাই বারবার ভাবছিল—
“আমাকে আর তিন থেকে চার মাস টিকতে হবে। তারপরে…এই জগৎ থেকে মুক্তি।” এই ফিল্মের স্টোরি লাইন ছিল অনেকটা এই রকম, সোনালীর উপর তার প্রতিবেশী ইথান এর অনেক দিন ধরে নজর, সোনালীর স্বামী বাইরে যাওয়ায়, ইথান সুযোগ নেয়, সোনালীর সাথে আলাপ করে, আর তাদের সম্পর্ক আস্তে আস্তে বিছানা পর্যন্ত গড়ায়। সোনালীর স্বামী ছিল একজন বৃদ্ধ 60 plus একজন ব্যক্তি, তার সাথে শুয়ে সোনালীর মত একজন যৌবন এর শীর্ষে থাকা মহিলা স্যাটিসফাইড না। প্রথমে আপত্তি দেখালেও, ইথান যখন প্রমিজ করলো, তার স্বামী কিছু জানবে না, সোনালী আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ল, বিছানায় শুয়ে তার ডাকে সাড়া দিতে লাগলো। শুটিং সেটটা সেই দিন আগের থেকে অনেক আলাদা ছিল। আলোর তীব্রতা, ক্যামেরার কৌণিক দৃষ্টিভঙ্গি আর ক্রুরা সব যেন এক অদ্ভুত চাপ তৈরি করছিল। সোনালীকে আজ অভিনয় করতে হচ্ছিল এক দীর্ঘ এবং গভীর যৌন দৃশ্য, যেখানে তার সহঅভিনেতা ইথান — দেখতে চওড়া কাঁধ, নীল চোখ, কিন্তু ভেতরে যেন এক ঠাণ্ডা পেশাদারি আচরণ।

প্রথমে দৃশ্যটা ছিল খুবই যান্ত্রিক—ডিরেক্টরের নির্দেশমতো শুয়ে থাকা, উঠা, কণ্ঠের শব্দকে ঠিকভাবে প্রক্ষেপ করা। কিন্তু দৃশ্য যত এগোতে লাগলো, ততই সোনালীর শরীর আর মন আলাদা দুই দিকে ছুটে যেতে লাগলো। শরীরটা প্রায় যন্ত্রের মতো রিহার্সালের গতি অনুসরণ করছে, কিন্তু মনের ভেতর একটা তীব্র অস্বস্তি, একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—

“এটা কি আমি চাইছি? নাকি আমি শুধু আরেকটা পুতুল, যাকে ক্যামেরার সামনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে?”

ইথান হঠাৎই চরিত্রের তীব্রতায় সোনালীর মুখ চেপে ধরলো। সেটির শট ডিরেক্টর আগে থেকেই বলে রেখেছিলেন। বাইরের চোখে সেটা নিছক অভিনয়, কিন্তু সোনালী অনুভব করছিল নিজের শ্বাসরোধ হয়ে আসছে। মুহূর্তটুকুতে ওর মনে হলো—কোনও এক অজানা শক্তি যেন তাকে গ্রাস করছে।

ডিরেক্টর পাশ থেকে বললেন, “Perfect, keep going, don’t stop… more intensity, Sonali!”

সোনালীর চোখে হঠাৎ জল চলে এল। ক্যামেরা সেটা ধরে ফেলল, কিন্তু ডিরেক্টর চেঁচিয়ে উঠলেন, “Beautiful! Keep those tears, it’s raw, it’s real!”

কিন্তু সোনালীর ভেতরে তখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।

ইথানের স্পর্শে শরীর সাড়া দিচ্ছে, কারণ সেটা পেশাদারি কাজের অংশ, শরীরকে মানিয়ে নিতে হয়। কিন্তু মনে হচ্ছিল—সে যেন নিজের ভেতরের অংশটা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছে। ওর মাথায় ভেসে উঠলো মা-বাবার মুখ, কলেজের বন্ধুরা, এমনকি নিজের পুরনো জীবনের এক টুকরো নির্ভার দিন। এই মুহূর্তে ওরা জানলে কি ভাবতো?

দৃশ্য শেষে ক্যামেরা বন্ধ হলো। সবাই হাততালি দিল, ডিরেক্টর খুশি হয়ে এগিয়ে এসে সোনালীর কাঁধে চাপড় দিলেন—
“This was your best performance yet. Remember, audiences don’t want fake, they want truth. And you just gave them truth.”

কিন্তু সোনালীর মনে হলো, এই “truth” টা আসলে ওর সত্যি নয়, ওটা একটা বিকৃত বাস্তবতা, যা ক্যামেরার আলোতে ওর শরীরের ভেতর থেকে বের করে আনা হচ্ছে।

মেকআপ রুমে ঢুকে আয়নার সামনে বসতেই সোনালী নিজের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। চোখ লাল, ঠোঁটে অল্প কাঁপুনি। ওর ভেতরে তখন দুই রকম কণ্ঠস্বর চলছিল—

একদিকে বলছে, “তুমি শক্ত, তুমি পারবে, এই কয়েকটা মাস কেটে গেলে সব শেষ।”

অন্যদিকে ফিসফিস করে উঠছে, “তুমি তো নিজের আত্মাটাই বিক্রি করে দিচ্ছো প্রতিদিন।”


সেই রাতে হোটেল রুমে একা শুয়ে যখন সোনালী চোখ বন্ধ করলো, তখনও ইথানের ছোঁয়ার অনুভূতি, ডিরেক্টরের হুকুম, আর নিজের ভেতরের অশান্তি একসাথে মাথার ভেতর প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল।

ওর মনে হলো—শরীরকে সে নিয়ন্ত্রণে রাখলেও, মনের ভেতরে সে প্রতিদিন
 একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে। সারাদিন কাজ করে রাত আটটা নাগাদ সেদিনের মত শুট শেষ হল। পরের দিন আবার এই ফিল্ম এর পরিবর্তী সিন হবে, যেখানে ইথান আরো সাহসী। অর্থাৎ সোনালি কে আরো কড়া চ্যালেঞ্জ এর মুখে পড়তে হবে।

সকালের আলো জানালার ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়েছিল। ঘুম ভাঙতেই সোনালী বুঝতে পারল তার মাথাটা ভারী, শরীর যেন ক্লান্তির বোঝা বইছে। বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায়ও গত রাতের দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছিল—ইথানের হাতের দৃঢ় স্পর্শ, ডিরেক্টরের কানে ফিসফিস করে দেওয়া নির্দেশ, আর নিজের শরীরকে ব্যবহার করা হচ্ছে এই তীব্র অনুভূতি।

সে জানত, অভিনয় মানে কৃত্রিমতার আড়ালে সত্যিকারের আবেগ দেখানো। কিন্তু পর্দার সেই "আবেগ" তৈরি করার জন্য তার শরীরকে যে কতটা দমন করতে হচ্ছে, সেটা ওর মনকে টুকরো টুকরো করে ফেলছিল। ইথানের প্রতি এক ধরনের অদ্ভুত টান তৈরি হচ্ছিল—সে খুব প্রফেশনাল, মৃদুভাষী, মাঝে মাঝে শুটিং এর বাইরে ওর পাশে দাঁড়াতো। কিন্তু একইসাথে একটা অস্বস্তি কাজ করছিল, কারণ সোনালী জানত এই টান বিপজ্জনক হতে পারে।

ডিরেক্টরের ব্যাপারটা আলাদা। ওর দৃষ্টি সব সময়ই তীক্ষ্ণ—কোনও আবেগ নেই, কেবল নিখুঁত "শট" এর প্রতি আসক্তি। গত রাতেও যখন দৃশ্যটা শুট হচ্ছিল, সোনালী স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিল ও কেবল একজন "ক্যামেরার অবজেক্ট" হয়ে গেছে। তার শরীর, তার অনুভূতি—সবটাই যেন ডিরেক্টরের কাছে শুধুই একটা উপাদান।

মেকআপ রুমে বসে যখন ও চুল ঠিক করাচ্ছিল, সেলিনা হালকা গলায় বলল,
— “তুমি এখন স্টার হচ্ছো, গার্ল। এটাই আমাদের লাইফ। একটু ব্যথা, একটু নেশা, অনেক এক্সপোজার—সব মিশে আছে।”

সোনালী ওর দিকে তাকিয়ে শুধু হালকা হাসল, কিন্তু মনে মনে প্রশ্ন করল—“আমি কি সত্যিই এটা চাইছি?”

রাত নামলে শুটিং চলল নতুন দৃশ্য নিয়ে। ইথানের সাথে আবার ঘনিষ্ঠ অভিনয় করতে হচ্ছিল। ক্যামেরা রোল করতেই ওদের ঠোঁট এক হলো, স্পর্শে উষ্ণতা এল। অভিনয় হলেও সোনালীর ভেতরে যেন একটা সত্যিকারের স্রোত বয়ে গেল—অপরাধবোধ আর আকর্ষণ মিলেমিশে এক অদ্ভুত দোটানা তৈরি করল। শট শেষ হওয়ার পর যখন সবাই হাততালি দিল, সোনালী ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ছিল।

ড্রেসিং রুমে ফিরে সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের দিকে তাকাল। সাজানো মুখ, ক্লান্ত চোখ, আর ঠোঁটে লেগে থাকা অন্য কারও ছাপ—এসব মিলিয়ে যেন আর নিজের পরিচয় খুঁজে পাচ্ছিল না।

তার মাথার ভেতর প্রশ্ন গর্জে উঠছিল—
“আমি কি অভিনেত্রী, নাকি শুধু শরীরের প্রদর্শনী? আমি কি ইথানের কাছে সত্যিই কিছু, নাকি পর্দার বাইরেও একটা প্রলোভন? ডিরেক্টরের চোখে আমি কেবল কি ক্যামেরার ফ্রেম?”

সেদিন রাতে ঘুম আসেনি সোনালীর। সে জানত, যতই শক্ত থাকতে চাইছে, ভেতরের ভাঙন তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
সেলিনা এসে ওকে আরেকটা রেভ পার্টিতে নিয়ে যেতে চাইলো। আনন্দে ভেসে গেলে সব কিছু ভুলে থাকা যাবে। এই লাস্ট ফিল্ম শুট করে অনেক অর্থ একাউন্টে ঢুকেছে, তার থেকে একটু ফুর্তি করে খরচ করলে কিচ্ছু যায় আসবে না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও সোনালী সেলিনার সঙ্গে একটা স্ট্রিপ ক্লাবে পার্টি করতে গেল।

সোনালীর চোখ তখনও লালচে, শরীর ক্লান্ত, মাথার মধ্যে টকটকে হ্যাংওভার। তবু সেলিনার টানাটানিতে বেরিয়ে পড়ল। শহরের কেন্দ্রস্থলে আলো ঝলমলে এক স্ট্রিপ ক্লাবে ঢুকতেই কানে এল বধির করে দেওয়া সাউন্ড সিস্টেমের বিট, আর চোখে পড়ল ঘূর্ণায়মান আলোয় আধখোলা পোশাকে নাচতে থাকা নারীপুরুষ।

সেলিনা যেন পুরো অন্য এক জগতে ঢুকে পড়ল—হাসছে, শট নিচ্ছে, ছুটে যাচ্ছে মঞ্চের সামনে। সোনালী খানিকটা দূরে বসে রইল। হাতে দেওয়া হল এক গ্লাস উজ্জ্বল সবুজ ককটেল, ওর নাকে অচেনা গন্ধ, জিভে জ্বালামাখা স্বাদ। সেলিনা হেসে বলল—
“চিয়ার্স টু ফ্রিডম, বেবি! আমরা এখন স্টার। ক্লান্তি ভুলে যাও, রাত আমাদের।”

সোনালী গ্লাস তুলল, তবে পানীয় মুখে যেতেই বুকের ভেতর কেমন চাপা ব্যথা। ওর ভেতরে চলছিল এক অদ্ভুত যুদ্ধ। দিনের পর দিন শুটিং, শারীরিক চাপ, মানসিক অশান্তি—সব মিলিয়ে শরীর যেন বিদ্রোহ করছে। তবু চারপাশে অশ্লীল উল্লাস, নগ্ন নাচ, ডলারের বৃষ্টি—সেই কোলাহলে ও যেন হারিয়ে গেল।

একটা লম্বা বিদেশি লোক, নাম জনাথন, সোনালীর পাশে এসে দাঁড়াল। হেসে হাত বাড়িয়ে দিল—
“লেডি, ইউ লুক লোনলি। কেয়ার টু ডান্স?”
সোনালী না বলতে চাইলেও সেলিনা ঠেলে দিল নাচের ফ্লোরে। আলো আঁধারির ভেতর জনাথনের শক্ত বাহুর ফাঁদে আটকে নড়াচড়া করল। শরীর সুরের সঙ্গে মিশে যাচ্ছিল, কিন্তু মন বারবার ফিসফিস করে বলছিল—
আমি আসলে কী করছি? এটাই কি আমার চাওয়া জীবন?

মুহূর্তের মধ্যে আরেক রাউন্ড শট এসে গেল। কেউ সিগারেট ধরিয়ে দিল, ধোঁয়ায় ভরে গেল নাকমুখ। সোনালী নিজেকে অবশ করে ফেলল, যেন কিছু না ভেবে শুধু ভেসে যায়। মঞ্চে উঠে সেলিনা বেপরোয়া নাচ শুরু করল, আর দর্শকের হাততালিতে সোনালীর বুকের ভেতর কেমন ফাঁকা শূন্যতা তৈরি হল।

রাত বাড়তে থাকল। জনাথন মদ্যপ অবস্থায় ফিসফিস করে বলল—
“তুমি এখানে শুধু অতিথি নও, তুমি এই জগতের রানি হতে পারো।”

সোনালী মৃদু হাসল, কিন্তু চোখের কোণে জল জমে উঠল। কোলাহলের মাঝেই ওর মন যেন চিৎকার করে উঠছিল—
এই গ্ল্যামার, এই ডলার, এই উল্লাসের পেছনে আমি প্রতিদিন নিজেকে হারিয়ে ফেলছি।

ক্লাবের আলো তখনও নাচছিল, কিন্তু সোনালীর ভেতরের আলো নিভে যাচ্ছিল ধীরে ধীরে।

সেলিনা জনাথন রা সোনালী কে শুকনো নেশার সন্ধান দিল। ওদের দাবি ছিল এটা নিলে মন খুলে জীবন টা উপভোগ করতে পারবে, কোনো দুঃখ যন্ত্রণা থাকবে না। সোনালী ওদের সাথে বসে শুকনো নেশা নিল। তারপর ওর আর কোনো হুস থাকল না। জনাথন আর তার বন্ধুরা সোনালী আর সেলিনা কে ক্লাব থেকে তুলে তাদের গাড়িতে চেপে একটা পেন্ট হাউসে নিয়ে গেল। 6 জন পুরুষ দুজন নারী। ওখানে আসার পর সেলিনা নিজের থেকে কাপড় খুলে 3 জন এর সাথে মন খুলে নাচতে শুরু করলো। জনাথন এগিয়ে এসে সোনালীর কানে কানে বলল, সোনালী বুঝে গেল, এই প্রাইভেট পার্টি ভোর অবধি চলবে আর এই পার্টির কিছু সিন রেকর্ড করা হবে পার্সোনাল কালেকশন এর জন্য।। সোনালী রাজি হয়ে গেল।।

পেন্টহাউসের ভেতর আলো–আঁধারের খেলা। ছাদের কাঁচের জানালা দিয়ে শহরের আলো ঝলমল করছে, কিন্তু ভেতরে এক অদ্ভুত দমবন্ধ করা পরিবেশ। মিউজিকের বেস ভীষণ জোরে কাঁপছে, যেন শরীরের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে।

সোনালী সোফার একপাশে বসেছিল, নেশার প্রভাবে মাথাটা ভারী হয়ে এসেছে। সেলিনা তখনও খোলামেলা নাচে মেতে, আর ওর চারপাশে তিনজন পুরুষ ঘিরে রেখেছে। জনাথন আস্তে আস্তে সোনালীর হাত ধরে টেনে নিলো।

“চিন্তা করো না, এটা শুধু একটা খেলা… ক্যামেরা থাকবে, কিন্তু বাইরের কেউ জানবে না,” ফিসফিস করে বলল সে।

সোনালীর ভেতর দ্বন্দ্ব চলছিল। মাথার এক কোণে যেন মায়ের মুখ ভেসে উঠল—“নিজেকে সামলাতে শিখিস।” কিন্তু পরক্ষণেই নেশার ঘোরে সেই কণ্ঠস্বর মিলিয়ে গেল। শরীর গরম লাগছিল, মিউজিকের রিদমে বুক কাঁপছিল।

ওর চারপাশে পুরুষদের ভিড় তৈরি হচ্ছিল। তাদের চোখে এক ধরনের ক্ষুধার ঝিলিক, যা সোনালীর বুকের ভেতর ভয় আর উত্তেজনা দুটোই তৈরি করছিল। জনাথন তার চুলে হাত বোলাতে বোলাতে বলল, “তুই জানিস না সোনালী, তোর মতো মুখ আর শরীর কেউই ভুলতে পারবে না।”

হঠাৎই কেউ একটা ক্যামেরা অন করলো। লাল আলো ঝলমল করতে শুরু করল। সোনালী সেই আলো দেখে এক মুহূর্তের জন্য চমকে উঠল। ও জানতো এর মানে—আজ রাতের দৃশ্য কোনো না কোনো স্মৃতির খাতায় থেকে যাবে, যদিও সেটা গোপন।

সেলিনা তখন নিজের নেশায় ডুবে, হাসতে হাসতে শরীর ছেড়ে দিয়েছে। তার দৃশ্য দেখে সোনালীর বুকের ভেতর একটা চাপা ঝড় বইলো। “আমি কি সঠিক করছি? নাকি আমি আর আমার জীবনটা ভেসে যাচ্ছি এমন এক স্রোতে, যেখান থেকে আর ফেরা সম্ভব নয়?”

একজন পুরুষ সোনালীর সামনে এসে গ্লাস বাড়িয়ে দিল, তাতে মিশ্রিত নেশার ড্রিঙ্ক। সোনালী এক মুহূর্ত দ্বিধায় থাকলেও গ্লাসটা নিয়ে ঠোঁটে ছোঁয়াল। উষ্ণ তরল শরীরের ভেতরে ঢুকতেই আবারও ঘোর ভারী হয়ে এল।

জনাথন তাকে কাছে টেনে নিয়ে নাচ শুরু করল। নাচের ছন্দে ধীরে ধীরে পোশাক আলগা হতে লাগল। চারপাশের সবাই হাততালি দিচ্ছিল, কেউ কেউ ক্যামেরা তাক করছিল।

এই মুহূর্তে সোনালী যেন নিজেকে দুই ভাগে দেখতে পাচ্ছিল—
একটা সোনালী, যে ভেতরে কাঁদছে, ভয় পাচ্ছে, পালাতে চাইছে।
আরেকটা সোনালী, যে বলছে, “থেমে গেলে এখনই সব শেষ। চালিয়ে যাও, ভুলে যা, উপভোগ কর।”

শরীরটা দ্বিতীয় সোনালীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেল, কিন্তু মনে এক অদৃশ্য দাগ কেটে গেল।

রাতটা যেন এক অন্তহীন রঙিন দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো—সঙ্গীত, নাচ, নেশা, কামনা আর ক্যামেরার ঠান্ডা দৃষ্টি। ভোর হতে না হতেই সোনালী বুঝে গেল, ওর জীবনের আরেকটা সীমা
সে অতিক্রম করে ফেলেছে।

রাতটা যেন শেষই হচ্ছিল না। পেন্টহাউসের ঘন সাউন্ডপ্রুফ দেওয়ালের ভেতরে আলো, সঙ্গীত আর শরীরের উন্মত্ত নাচন মিলেমিশে এক অদ্ভুত, বিভ্রান্তিকর পরিবেশ তৈরি করেছিল। শুকনো নেশার প্রভাবে সোনালীর শরীর হালকা মনে হচ্ছিল, মাথার ভেতরটা ভাসছিল শূন্যে। বাইরে থেকে বিচার করার শক্তি তখন আর তার ভেতরে ছিল না। শুধু সেলিনা, জনাথন আর সেই পাঁচ-ছয় জন পুরুষের উন্মত্ত হাসি, উগ্র নাচ আর ছন্দবদ্ধ শরীরী খেলা।

জনাথন বারবার সোনালীর পাশে এসে দাঁড়াচ্ছিল, কখনো ওর কাঁধে হাত রাখছিল, কখনো ওর চুলের ভেতরে আঙুল চালাচ্ছিল। "রিল্যাক্স, সোনা। এই রাতের জন্যই তো সবকিছু," — তার গলায় ছিল এক অদ্ভুত দাপট আর মাদকতা। সোনালী হ্যাঁ-না কিছুই বলতে পারছিল না, শুধু চোখ বন্ধ করে শরীরকে ভেসে যেতে দিচ্ছিল।

একসময় আলো আরও ম্লান হলো, শুধু নীলচে লেজার রশ্মি ঘরে ঘুরে বেড়াতে লাগল। সেলিনা তখন পুরোপুরি নেশায় ডুবে, তিনজন পুরুষের মাঝখানে নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছে। সোনালী তাকিয়ে থাকতে পারছিল না, তবুও চোখ ফিরিয়ে নিতে পারছিল না। তার বুকের ভেতরে কেমন একটা অস্থিরতা জন্ম নিচ্ছিল—আনন্দ, লজ্জা, ভয় আর অদ্ভুত উত্তেজনার এক জটিল মিশ্রণ।

একসময় জনাথন তাকে টেনে নিয়ে গেল সোফার দিকে। পেন্টহাউসের মাঝখানে রাখা ক্যামেরা নীরবে ঘুরছিল, লেন্স তার দিকে স্থির। সোনালী হালকা কাঁপছিল, কিন্তু নেশার ঘোরে প্রতিবাদ করার মতো মানসিক শক্তি ছিল না। “এটা শুধু আমাদের স্মৃতি,” জনাথন কানে কানে বলল। সেই মুহূর্তে সোনালীর ভেতরে একটা দ্বিধা জেগে উঠল—এ কি তার পেশাদার সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে? নাকি এ-ও সেই দুনিয়ার অঙ্গ, যেখানে ঢুকে পড়েছে সে নিজে থেকেই?

ঘড়ির কাঁটা তখন ভোরের দিকে এগোচ্ছে। বাইরে শহরের আকাশ ধীরে ধীরে ফিকে হতে শুরু করেছে। পেন্টহাউসের ভেতরে কিন্তু এখনো বেহিসেবি উল্লাস চলছে। সোনালী নিজের শরীরকে যেন বাইরের কারো হাতে তুলে দিয়েছে, নিজের মনের কণ্ঠস্বর কোথাও চাপা পড়ে গেছে। শুধু মাঝে মাঝে ভেতরে ক্ষীণ একটা প্রশ্ন উঠছে—এই নেশা আর উল্লাস শেষ হলে, কেমন লাগবে তার?

শেষ দিকে, শরীর অবসন্ন হয়ে যখন সোফায় পড়ে রইল, তখন বুঝল ভোর এসে গেছে। মাথা ফাঁকা, চোখ জ্বালা করছে, কিন্তু শরীরে এখনো কেঁপে কেঁপে উঠছে উগ্র অভিজ্ঞতার রেশ। পাশেই সেলিনা হেসে কাত হয়ে শুয়ে আছে, আর জনাথন সিগারেট হাতে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে।

সোনালী জানত—এই রাত তাকে আরও গভীরভাবে টেনে নিয়ে গেল সেই অন্ধকার জগতে, যেখান থেকে ফেরার রাস্তা ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।

সকালের আলো পেন্টহাউসের পর্দা ভেদ করে ঢুকতেই সোনালীর চোখ খুলল। মাথার ভেতর যেন কেউ হাতুড়ি মারছে। শরীর ভাঙাচোরা, গলা শুকনো, চোখ আধখোলা—কোথায় আছে ঠিক বুঝে উঠতে পারল না প্রথমে। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নেশার প্যাকেট, খালি বোতল, ছেঁড়া পোশাক। পাশেই মেঝেতে গুটিসুটি মেরে ঘুমাচ্ছে সেলিনা, আর এক কোনায় আধশোয়া জনাথন ফোনে কারও সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। সোনালীর নগ্ন ক্লান্ত শরীর বেড শিট দিয়ে ঢাকা।

একটু নড়তেই সোনালী অনুভব করল, শরীরের প্রতিটি অংশ যেন অচেনা কারও ছোঁয়ায় চিহ্নিত। মনে পড়তে চেষ্টা করল—কেউ তাকে জড়িয়ে ধরেছিল, কেউ ঠেলে দিয়েছিল, কেউ হাসছিল ক্যামেরার লেন্সের আড়াল থেকে। কিন্তু সবকিছু ঝাপসা, অস্পষ্ট। শুধু মনে আছে, একসময় আর “না” বলার ক্ষমতাই ছিল না।

ওঠে বসতেই জনাথন ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল—
“Good morning, superstar. Last night you were on fire. We’ve got some golden footage.”

সোনালীর বুক কেঁপে উঠল। ফুটেজ? মানে সবকিছু রেকর্ড হয়েছে? নিজের কণ্ঠস্বর খুঁজে পেতে কষ্ট হচ্ছিল, তবু ফিসফিস করে বলল—
“জনাথন… এসব মুছে দাও… প্লিজ।”

জনাথন নির্লিপ্ত গলায় হেসে উঠল।
“Don’t worry, darling. It’s just for personal collection. And you know, it can also open more doors for you. Big producers love boldness.”

সোনালী কেঁপে উঠল। এটা কি তার ক্যারিয়ারের ধাপ, নাকি এক অন্ধকার গহ্বরের শুরু? নিজের শরীরের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ ঘেন্না আর অসহায়তা এসে ভর করল। সেলিনা এখনও ঘুমোচ্ছে, কিন্তু তার ঠোঁটে এক অদ্ভুত তৃপ্তির ছাপ। যেন এই জীবনকেই সে বেছে নিয়েছে।

সোনালীর মাথায় ঝড় উঠল—

সে কি ইচ্ছে করেই এই পথে এসেছে?

নাকি এইসব নেশা, পার্টি আর জনাথনের প্রলোভন তাকে ঠেলে দিয়েছে?

আর যদি একদিন এই ফুটেজ বাইরের জগতে ছড়িয়ে পড়ে?


শরীরটা সামলে বাথরুমের দিকে এগোতে গিয়েও পা কেঁপে গেল। আয়নায় নিজেকে দেখে চমকে উঠল—চোখ লাল, ঠোঁট শুকনো, চুল এলোমেলো, মুখে এক অদ্ভুত শূন্যতা। ও যেন আর সেই পুরোনো সোনালী নেই।

হৃদয়ের গভীরে একটা কণ্ঠস্বর বলছিল—
“ফিরে যা, থেমে যা।”

কিন্তু তারই পাশে আরেকটা কণ্ঠস্বর ফিসফিস করল—
“এখন আর ফেরার পথ নেই। তুমি অনেকদূর চলে এসেছ।”

সোনালী বুঝল, তার জীবনের মোড় ঘুরে গেছে, আর সেই মোড় থেকে ফেরাটা সহজ হবে না।












চলবে......


( এই কাহিনী কেমন লাগছে কমেন্ট করুন সরাসরি মেসেজ করতে পারেন আমার টেলিগ্রাম আইডি @Suro Tann21 )
[+] 3 users Like Suronjon's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: NRI গৃহবধূ থেকে পেশাদার Porn actress - by Suronjon - 22-08-2025, 11:59 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)