Thread Rating:
  • 5 Vote(s) - 3.2 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller সাজু ভাই সিরিজ নম্বর -০৬ (গল্প কাপ ঠান্ডা কফি) (সমাপ্ত গল্প)
#16
পর্ব:- ১৬ 

মাহিনের হাতের এই মোবাইলটা মাহিনের নয়, তাকে যারা বন্দী করেছিল সেখান থেকে পালিয়ে আসার সময় এটা নিয়ে এসেছে। তাদের দলেরই আরেকটা ছেলে, বেশ বিশ্বস্ত আর শক্তিশালী। 

মেসেজ পরে মাহিন বুঝতে পেরেছে সাজু ভাইকে মারার জন্য নতুন বুদ্ধি করেছে। মাহিন দ্রুত সেই রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে সাজুকে খুঁজতে লাগল কিন্তু কোথাও দেখতে পেল না। এরমধ্যে হয়তো সিএনজি নিয়ে রওনা হয়ে গেছে, নাহলে ঠিকই আশেপাশে পাওয়া যেত। 

উত্তর বাড্ডার সেই বাসার ঠিকানা মাহিন জানে, কিন্তু সে এখন সেখানে যেতে চায় না। কারণ এই মুহূর্তে সেখানে পুলিশ আছে, আর দ্বিতীয়ত তার এখন জানতে হবে কাজটা কাকে দিয়ে করানো হচ্ছে। কিন্তু নিজের মোবাইল বের করে সাজুর নাম্বারে কল দিল মাহিন। তৃতীয় রিং বাজতেই রিসিভ করলো সাজু, 

- সাজু ভাই আমি মাহিন। 

- হ্যাঁ মাহিন বলো, আর তোমার কাছে আমার নাম্বার ছিল? 

- জ্বি ভাই। আপনাকে একটা জরুরি কথা বলতে কল দিলাম। আপনি এখন ওই বাড়িতে যাবেন না ভাই, আপনাকে বিপদে ফেলানোর চেষ্টা করা হয়েছে। 

- কিন্তু এতে তাদের লাভ কি? 

- আপনাকে আমি সবকিছু পরে বলবো, আমি একটা কাজে যাচ্ছি। ফ্রি হয়ে আপনাকে কল দিয়ে কোথায় দেখা করতে হবে জানিয়ে দেবো। কিন্তু আপনার কাছে অনুরোধ রইল আপনি ওই বাড়ি যাবেন না। 

- যদি সেরকম কিছু করার চেষ্টা করে তাহলে আমি অবশ্যই যাবো মাহিন। আমি দেখতে চাই এই রহস্যের মধ্যে আরো কে কে যুক্ত আছে। 

- ভাই আপনি বুদ্ধিমান মানুষ, আপনাকে একটা ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। আর আপনি যদি সেই ফাঁদের কথা জেনেশুনে পা বাড়ান তাহলে এটাকে আত্মহত্যা বলা হবে। 

- আমার কিছু হবে না তুমি টেনশন নিও না। 

- ভাই আপনার সঙ্গে কিন্তু আপুও আছে, নিজে হয়তো যেকোনো ভাবে বের হতে পারবেন। কিন্তু আপুকে নিয়ে কিন্তু সমস্যার মধ্যে পরবেন। 

- ঠিক আছে আমি ওকে রেখে একা যাবো। 

- না যাবার অনুরোধ রইল। 

- যেতে আমাকে হবেই মাহিন। 

কল কেটে গেল। মাহিন একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পার্কিং এরিয়া থেকে নিজের বাইক নিয়ে দ্রুত বের হয়ে গেল। 

★★
রাব্বিকে রবিউল নামেই ডাকবো। 
★★

রেস্টুরেন্টের সামনে থেকেই সাজু আর রামিশাকে অনুসরণ করছে রাব্বি। বাইকে করে অল্প কিছু দুরত্ব বজায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছে সে। হেলমেট ব্যবহার করার কারণে কোনভাবেই তাকে চেনার উপায় নেই। 
এইমাত্র সাজুদের সিএনজি রাস্তার পাশে থামতেই সেও থমকে দাঁড়ালো। হঠাৎ করে কেন সিএনজি দাঁড়িয়ে গেল বুঝতে পারছে না সে। 

মাহিনের কল কেটে যাবার সঙ্গে সঙ্গে সাজু ভাই ড্রাইভারকে সিএনজি থামাতে বলেন। রামিশা তাকে জিজ্ঞেস করলেও তাকে সিএনজি থেকে নামতে বলেন সাজু। 

- কি হয়েছে সাজু ভাই? কে কল করেছে? 

- মাহিন, একটু আগে আমরা যার সঙ্গে দেখা করে এসেছি সেই ছেলেটা। 

- কি বলে? 

- আমরা যেখানে যাচ্ছি সেখানে একটু ঝামেলা হতে পারে, তাই যেতে নিষেধ করেছে। 

- তাহলে আমরা এখন কি করবো? সিএনজি নিয়ে চলেন মিরপুরে ফিরে যাই। 

- মিরপুরে তুমি একা চলে যাবে রামু। আমি এখন ওই বাড়িতে যাবো। 

অপলকভাবে তাকিয়ে রইল রামিশা। সে বিশ্বাস করতে পারছে না যে বিপদের কথা জেনেও কেন সাজু ভাই যেতে চাইছে? 

- তাহলে আমিও আপনার সঙ্গে যাবো। 

- না রামু, সমস্যা আছে। আমি যদি কোনো সমস্যা দেখি তাহলে একা একা বাঁচার চেষ্টা করবো। কিন্তু তুমি থাকলে অনেকটা রিস্কি হয়ে যাবে, তাছাড়া ওখানে তোমার তো কোনো কাজ নেই। 

- আমি না আপনার সঙ্গী? 

- এটা একটা সন্ত্রাসী চক্র, এখানে বারবার শুধু খুনাখুনি হয়। তোমাকে নিয়ে আমি সেই সমস্ত স্থানে যাবো যেখানে বিপদের সম্ভাবনা কম। 

- চুপচাপ। 

- তুমি এই সিএনজি নিয়ে চলে যাও৷ তোমাকে সঙ্গে নিয়ে গেলে তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না। 

রামিশা কিছু বললো না, সে জানে সাজু নিজের সিদ্ধান্তে অনড়ভাবে থাকবে। তাই সেখানে বাড়তি কথা বলে লাভ নেই, তাছাড়া সাজুর মতের বিরুদ্ধে কিছু বলার চেষ্টা সে করে না। 

- গাড়িতে ওঠো রামু। 

রামিশা সিএনজিতে উঠে বসলো, সাজু নিজের হাতে দরজা চাপিয়ে দিয়ে বললো, 

- আমি তোমাকে কল দেবো, তুমি নিজে থেকে কল দিও না। 

রামিশার চোখ দিয়ে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পরতে দেখে সাজু ভাই সোজা হয়ে দাঁড়ালো। সিএনজি ড্রাইভারকে মিরপুরে যাবার নির্দেশ দিয়ে সামনে থেকে সরে গেল সাজু। 

এতক্ষণ ধরে এসব দৃশ্য দেখছিল রবিউল ইসলাম যার ছোট নাম রাব্বি। রামিশা চলে গেছে আর সাজু দাঁড়িয়ে আছে এখনো, কিন্তু হঠাৎ করে কেন এমন হলো সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এখান থেকে তাদের কথাবার্তা শোনার উপায় ছিল না কারণ এটা ব্যস্ত মহাসড়ক। 

রবিউলের টার্গেট হচ্ছে সাজু ভাই। তাই রামিশা কোথায় গেল আর কেন গেল সেটা নিয়ে তার বিন্দু পরিমাণ চিন্তা নেই। কিন্তু ছোট্ট একটা চিন্তা হচ্ছে, সাজু ভাই বুঝতে পারলো নাকি যে তাকে কেউ অনুসরণ করছে। আর সেজন্য কি একা একা রয়ে গেছে নতুন গোলক ধাঁধাঁর সৃষ্টি করতে। 
যাই হোক, টেনশন না করে সামনে কি ঘটে সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো রবিউল। 
একটু পরেই সাজু আরেকটা সিএনজি ডেকে উঠে বসলেন। রবিউল তাকে অনুসরন করতে লাগলো। 

সাজুর গন্তব্য উত্তর বাড্ডার সেই বাসা সেটা রবিউল ইসলাম জানে না। সিএনজি যখন উত্তর বাড্ডা এলাকায় ঢুকলো তখনই রবিউল সন্দেহ করতে শুরু করে। তার ধারণা ছিল সাজু সদরঘাট থেকে লঞ্চে উঠতে যাবে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য। এমনটাই বলেছিলেন রবিউলের সেই স্যার। কিন্তু এখন সাজুকে উত্তর বাড্ডা আসতে দেখে খানিকটা অবাক হয়ে গেল। আরেকটু পর যখন সিএনজি এসে মাহিশা খুন হওয়া বাড়ির সামনে থামলো তখন রবিউল বেশ বিস্মিত। 

গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে সাজু মোবাইল বের করে কাউকে কল দিচ্ছে মনে হচ্ছে। একটু পরে গেইট থেকে বের হয়ে এলো ওসি সাহেব, রবিউল বুঝতে পারলো ওসি সাহেবকে কল করেছে সাজু। 
কিন্তু ওসি সাহেব এখানে কেন? আর সাজুকে বা কেন ডেকে আনা হয়েছে, আবার সেই সাজু ভাই তার বন্ধু রামিশাকে পাঠিয়ে দিয়েছে। 
রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এতকিছু ভাবা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই রবিউলের। কারণ ওসি সাহেব ও সাজু ভাই বাড়ির মধ্যে চলে গেছে, গেইট এখন সম্পুর্ন বন্ধ। কদিন আগেই এই বাড়ির মধ্যে সে মাহিশাকে খুন করেছিল। 
মাহিশাকে খুন করার জন্য এই প্রথম তার মনের মধ্যে একটু খারাপ লাগলো। যে রাগ আর জেদের জন্য মেয়েটাকে হত্যা করলো, মেয়েটা সত্যিই সেই অপরাধের অপরাধী কিনা সেটা যাচাই করতে পারে নাই সে। 

★★★ 

সিড়ি দিয়ে তৃতীয় তলায় প্রবেশ করলো সাজু ও ওসি সাহেব। ফ্ল্যাটের মধ্যে আরও দুজন পুলিশ আছে, যদিও তারা পুলিশ নয়। 
হ্যাঁ ঠিকই। পুলিশের পোশাক পরিহিত এই দুজন লোক এসেছে সাজুকে নিয়ে যাবার জন্য। দেখতে অবিকল পুলিশের মতো মনে হলেও এরা একেক জন পাক্কা হারামজাদা। 

- ওসি সাহেব বললেন, এটাই সেই ফ্ল্যাট। এখানে এই ড্রইং রুমে মেয়েটার লাশ পাওয়া গেছে। 

চারিদিকে এখনো রক্তের দাগ শুকিয়ে আছে, সাজু চারিদিকে তাকিয়ে বললো। 

- সাব্বির বলেছিল যে বস্তার মধ্যে মেয়েটাকে প্রথম রাখা হয়েছে। সেই বস্তা কোথায় ছিল? 

- বাথরুমে। 

- বেলকনি টা কোনদিকে? 

- বামদিকের ওই বেডরুমে। 

সাজু বেডরুমে চলে গেল, পুলিশি পোশাক পরা দুজন মিলে অজ্ঞান করার মেডিসিনটা প্রস্তুত করে নিল। ওসি সাহেব এখন সাজুর পিছনে পিছনে হাঁটছে। বেলকনি থেকে ঘুরে সাজু যখন রুমের মধ্যে ঢুকলো তখনই পিছন থেকে পুলিশের লোক দুটো তাকে ঝাপটে ধরলো। 
মিনিট দশেক পরে অচেতন সাজু ভাইয়ের দেহ পরে রইল বিছানায়। 

- ওসি সাহেব বললেন, তোমরা একে ধরাধরি করে নিয়ে বের হবে। আমি সবাইকে বলবো যে হঠাৎ করে উনি অজ্ঞান হয়ে গেছে তাই জরুরি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। 

- একজন বললো, কিন্তু আমাদের তো বলা হয়েছে এখানেই খুন করে দিতে হবে। 

- আরে তোমরা পাগল নাকি? এখানে খুন হলে আমি বিষয়টা কীভাবে চাপা দেবো? তোমরা একে নিয়ে একটা নিরাপদ স্থানে চলে যাবে, তারপর অজ্ঞান অবস্থায় যা করার করো। 

তারা দুজন দুজনের দিকে মুখ চাওয়াচায়ি করে চোখের ইশারায় কিছু বললো। তারপর ওসি সাহেবের দিকে তাকিয়ে রইল, 

- এমনিতেই একটা মামলা নিয়ে ঝামেলার মধ্যে আছি, আবার যদি এখানে লাশ পাওয়া যায় সেটা কীভাবে সামলাবো বলো? এটা তোমাদের বসকে বুঝিয়ে বলবে, নাহলে তিনি আবার আমার সন্তান কে কিন্তু। 

- আপনার সন্তানকে কোনো ক্ষতি করা হবে না। আপনি যদি এভাবে আমাদের কথা মতো কাজ করেন তাহলে নিজের পরিবার ভালো থাকবে আর আপনার ব্যাঙ্ক একাউন্ট ও বৃদ্ধি পাবে। 

চুপ করে রইল ওসি সাহেব, বিছানায় অজ্ঞান হয়ে থাকা সাজুর মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো " ভালো হয়ে কি লাভ ভাই? দেখুন না আপনি ভালো হয়ে কি কষ্টটা পাচ্ছেন। " 

★★★

চারটা সিগারেট শেষ হয়ে গেছে। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে আর ইচ্ছে করছে না তার। সাজু হয়তো আজকে আর সদরঘাট যাবে না মনে হয়। ওসি সাহেবকে নিয়ে ফ্ল্যাটের মধ্যে আলামত খুঁজে বেড়াচ্ছে নিশ্চয়ই। রবিউল একটু হাসলো, সে কখনো তার খুনের কোনো চিন্হ রেখে আসে না। বেশ পরিকল্পনা করে সে কাজটা করতে পারে। 

গেইটটা খুলে গেল। বাড়ির ভিতর থেকে দুজন পুলিশ মিলে সাজুর দেহটা ধরাধরি করে বের করে আনছে। এদের একজনকে রবিউল চেনে, কিন্তু এ মালা পুলিশের পোশাক পরে আছে কেন? ও তো পুলিশ না, তাহলে ঘটনা কি? 

কালো রঙের একটা গাড়িতে সাজুকে ওঠানো হলো, তারপর সেই দুজন মিলে গাড়িটা নিয়ে চলে গেল। ওসি সাহেব একা একা দাড়িয়ে রইল। তার চোখে চিন্তা, অসহায়, হতাশা স্পষ্ট। 

রবিউল বাইক নিয়ে কালো গাড়িটার দিকে নজর রাখছে। সাজুকে নিয়ে তারা কোথায় যাচ্ছে সেটা জানা দরকার। এবার মনে হচ্ছে সাজুকে মারার জন্য নতুন কোনো পরিকল্পনা হয়েছে যেটা রবিউল জানে না। এখন সে সেটাই জানার জন্য পিছু নিচ্ছে এদের। কিন্তু ওই সাদেক হারমজাদা পুলিশের পোশাক পরে ছিল কেন? 

আজিমপুরে নিউমার্কেটের পিছনে একটা পুরনো বাড়ির মধ্যে ঢুকে গেল কালো গাড়িটা। রবিউল সেদিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এই বাড়িটা সে চেনে, অনেকবার সে এখানে এসেছে, থেকেছে। পকেট থেকে মোবাইল বের করে তার দাদাজানের কাছে কল দিল। 

- হ্যা রাব্বি বলো। 

- আপনি সাজুকে মারার নতুন প্ল্যান করেছেন? 

- তুমি কি সদরঘাট তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছ? 

- না, আমি এখন আজিমপুরে আপনার সেই পুরনো বাড়িটার সামনে দাঁড়ানো। সাদেক আর একটা লোককে দেখলাম সাজুকে অজ্ঞান করে গাড়িতে নিয়ে এসেছে। 

- ওহ্, তুমি সব দেখে ফেললে কীভাবে? 

- আমি সেই থানার সামনে থেকে তাকে অনুসরণ করে এসেছি। আপনাদের দলের সেই মাহিন ছেলেটার সঙ্গে রেস্টুরেন্টে বসে কথা বলছিল সাজু ভাই। 

- কি? মাহিন ওখানে কীভাবে? তাকে না আটকে রাখা হয়েছে? তুমি ঠিক দেখছো তো? 

- হ্যাঁ ঠিকই দেখেছি, ওই ছেলের উপর আমার তো কোনো আকর্ষণ নেই তাই সে কোথায় কি করে তা জেনে আমার কি দরকার। আমি সাজুর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি আর সেটা আপনার আদেশে। 

- সাজুর বিষয়টা সাদেক দেখবে, তুমি আপাতত মাহিনকে ধরো ওই ছেলের জন্য আজ এতদূর। 

- মানে? 

- যে মেয়েটাকে খুন করেছো সেই মেয়েটার সঙ্গে এই মাহিনের প্রেম ছিল। সে যদি জানতে পারে তুমি মাহিশাকে হত্যা করেছো তাহলে সে তোমাকে বাঁচতে দেবে না। তাই তার জানার বা সতর্ক হবার আগে তোমার কিছু একটা করা দরকার। 

- একটা কথা বলি দাদাজান? 

- হুম বলো। 

- আমি আপনাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি, আপনি কিছু আদেশ করলে সঙ্গে সঙ্গে পালন করি। 

- হঠাৎ এরকম কথা কেন? 

- আপনি নিজেও যদি আমার সঙ্গে বেঈমানী করেন তাহলে তো আমার কিছু করার নেই দাদাজান। 

- আমি কেন বেঈমানী করবো? 

- যে মেয়েটাকে খুন করেছি সেই মেয়ের বাবার সঙ্গে আপনার শত্রুতা তাই না? অথচ আপনি মিথ্যা কথা বলে, অন্য লোক দিয়ে আমার সঙ্গে বেশ চালাকি করেছেন। 

- এসব কি বলছো তুমি? 

- মেয়েটার বাবাকে আমি বিয়ে বাড়িতে দেখে চিনতে পেরেছিলাম। তবে ঠিক কোথায় দেখেছি সেটা মনে করতে পারিনি। আজকে হঠাৎ করে আপনার সঙ্গে সকাল বেলা কথা বলতে বলতে কিন্তু আমি বুঝতে পারছি। 

- কি বুঝতে পারছো? 

- আপনার দলের দক্ষিণবঙ্গের মানে খুলনা বাগেরহাট সাতক্ষীরার প্রধান হাতিয়ার মাহিশার বাবা। আর তার মেয়েকে খুন করালেন আপনি, কিন্তু কেন দাদাজান? 

- আমি ওই মেয়েকে খুন করাইনি রাব্বি, বিষয়টা আমি পরে জানতে পেরেছি। কারণ দলের মধ্যে আমি কোনো ঝামেলা চাইনি। তুমি আমার বাসায় আসো আমি তোমাকে সবকিছু বুঝিয়ে বলবো। 

- আমি হয়তো আপনার হয়ে আর কোনো কাজ করতে পারবো না দাদাজান। এসব কাজে বিশ্বাস একবার ভেঙে গেলে আর ফিরে পাওয়া যায় না। 

- তুমি আমার সব কথা শুনলে আশা করি তোমার মনে অবিশ্বাস আসবে না। 

- ঠিক আছে আমি আসছি। 

- মাহিনকে আগে... 

- আমি ওকে মারবো না, আগে আপনার সঙ্গে কথা বলি তারপর ভেবে সিদ্ধান্ত নেবো। 

- ঠিক আছে আসো। 

কল কেটে দিয়ে রাব্বি বাইকে উঠে গেল। সে জানে সাজুকে হয়তো মাহিশার মতো মরতে হবে। তারপর সাব্বিরের বাবার মতো কাউকে দিয়ে লাশ ফেলে দেওয়া হবে লোকচক্ষুর আড়ালে। দিনের পর দিন চলবে সাজু নিখোঁজ হবার মামলা, কেউ খুঁজে পাবে না তাকে। নতুন মামলার ভিড়ে হারিয়ে যাবে সাজুর পুরনো নিখোঁজ হবার মামলা। 
কোথাও সাজু নেই। 

★★★ 

পুলিশের পোশাক খুলে সাধারণ পোশাক পরে বসে আছে সাদেক ও তার সঙ্গী। সাজুকে এখন হাত পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছে, এখনো অজ্ঞান হয়ে আছে সে। 

- ভাই একে তো মেরে ফেললেই হয়, এখন তো কোনো ঝামেলা নেই। 
আস্তে আস্তে বললো সাদেকের সঙ্গী। 

- আমি একটা প্ল্যান করেছি। 

- কি প্ল্যান ভাই? 

- এই লোকের বাবা নাকি বিশাল বড়লোক, লন্ডনে থাকে সেখানে টুকটাক ব্যবসা করে। 

- তাতে আমাদের কি? 

- আমি ভাবছি এর বাবার কাছে এখন আমরা দুজন মিলে মুক্তিপণ দাবি করবো। বলবো যে তার সন্তান আমাদের হাতে বন্দী, এক কোটি টাকা হলে সন্তানকে জীবিত পাওয়া যাবে। 

- কিন্তু একে তো ছাড়া যাবে না ভাই। 

- আরে আমরা ছাড়বো নাকি? টাকা পেলেই একে খুন করে ফেলবো। তুই পঞ্চাশ আর আমি পঞ্চাশ ভাগ করে নেবো, এতো টাকা জীবনে চোখে দেখছো কোনদিন? 

- দেখছি তবে নকল টাকা হাহাহা। 

- এবার তাহলে আসল টাকা পাওয়া যাবে। শুধু সাবধানে কাজ করতে হবে। 

- বস যদি লাশ গুম করার জন্য কাউকে পাঠায়? 

- আমরা বলবো যে লাশ আমরাই গুম করবো। আর ভালো করে এই লোকের কিছু ছবি তুলে তারপর একে মেরে ফেলতে পারবো। তার বাবা তো জানবে না যে বেঁচে আছে না মরে গেছে। 

- তাহলে আমি ভালো করে ছবি তুলি, আপনি তাদের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করেন। 

চলবে...

মোঃ সাইফুল ইসলাম।
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply


Messages In This Thread
RE: সাজু ভাই সিরিজ নম্বর -০৬ (গল্প কাপ ঠান্ডা কফি) - by Bangla Golpo - 16-08-2025, 08:55 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)