10-08-2025, 08:40 PM
কিছু সম্পর্কঃ ৩
শিকদার ফ্যামিলি নিজেদের পুরনো বাড়িতে সিফট হয়েছে দুই বছর হতে চলল । এরি মাঝে রাজীব স্থানিয় ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে। এবং আশ্চর্যের বিষয় হলো জয় ও সেই একি ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে । কেউ চিন্তাও করতে পারেনি জয় এটা করতে পারবে । কারন জয়ের মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিক রেজাল্ট রাজীবের মত এতো ভালো না । কিন্তু জয় দেখিয়ে দিয়ছে ও মুখে যেমন বলে যে ওর অসাধ্য কিছু নেই , তেমন করেও দেখিয়ে দিয়েছে ।
এদিকে জান্নাত আর রানীও উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে । রাজীব আর জয় যে ইউনিতে ভর্তি হয়েছে সেখানেই ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছে ওরা দুজনে । কারন এটাই এই শহরের সবচেয়ে বড় আর ভালো ভার্সিটি ।
নিজেদের পুরোন বাড়িতে ফিরে আসার পর রাজীবের ও একটু সস্তি হয়েছে । রানী জান্নাতের সাথেই বেশি সময় কাটাচ্ছে । রানীকে এদিক সেদিক নিয়ে যাওয়ার জন্য আর সব সময় রাজীব কে প্রয়োজন হয় না ।
জয় আর রাজীবের দ্বিতীয় বর্ষের শেষ ভাগ চলছে । আগামি কিছুদিন পর ওদের পরিক্ষা তাই সব মৌজ মাস্তি সাইডে রেখে দুজনেই লেখা পড়ায় মন দিয়েছে । সারা বছর তেমন লেখাপড়া হয়নি জয়ের , তাই এখন কোমর বেধে নেমেছে ।
মাস চারেক পর ;
পরিক্ষা শেষ হতেই জয় আবার পুরনো ফর্মে ফিরে আসে । রাজীব কে নিয়ে সারাক্ষণ মাস্তিতে মজে থাকে । সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা , তারপর গলিতে সারাদিন খেলাধুলা , বিকেলে রাজীব কে নিয়ে বাইকে ঘুরে বেড়ানো , মাঝে মাঝে দুই একটা মেয়ের সাথে হালকা রোমান্স রোমান্স খেলা ।
আজো জয় রাজীব আর কিছু বন্ধুর সাথে ভার্সিটি এলাকায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলো । এমন সময় ভার্সিটির এক সুন্দরি লেকচারার ওদের সামনে দিয়ে যেতেই , জয় বলল “ আরে এটা মিস সাম্মি না” পাশে থাকা আর একটি ছেলে বলল “ হ্যা ভাই”। জয় রাজীবের দিকে তাকালো । রাজীব নিজের মনে কি যেন ভাবছে । জয় কনুই দিয়ে রাজীব কে একটি ধাক্কা দিলো । ধাক্কা খেয়ে রাজীব জয়ের দিকে তাকালে জয় প্রায় রাগান্বিত ভাবে বলল “ আরে ভাই , মিস সাম্মি তোকে এতো ইশারা ইঙ্গিত করলো গত বছর তুই পাত্তাই দিলি না , উনি কিন্তু তোর উপর পুরো ফিদা ভাই , দেখিস না পুরো ক্লাস সুধু তোকে নিয়েই পরে থাকে, রাজীব তুমি এটা পারো , রাজীব এটার উত্তর কি হবে বলো তো, রাজীব ক্লাস শেষে আমার অফিসে দেখা করো” শেষের কথা গুলো জয় মেয়েলি ভাবে মিস সাম্মি কে নকল করে বলল । আসলে রাজীব আর জয়ের ক্লাস এক সাথে নয় । তবুও জয় নিজের ক্লাস ফাকি দিয়ে মিস সাম্মির ক্লাসে গিয়ে বসে থাকে । আর এতো স্টুডেন্টের মাঝে মিস সাম্মি জয় কে নিজের স্টুডেন্ট ভেবে নেয় । ওদের ডিপার্টমেন্ট এক হলেও সাবজেক্ট আলাদা ।
রাজীব বিরক্ত হলো বলল “ ফিদা হলে ফিদা , আমি কি করবো? উনি আমাদের টিচার , আর টিচার কে সম্মান করতে হয় , বয়সেও কত বড় ”
“ আরে ভাই তুই সুধু বয়স দেখলি , ঐটা কত বড় সেটা দেখলি না , শালা কানাচোদা” জয় হাত দিয়ে মিস সাম্মির বুকের সাইজ দেখিয়ে বলল ।
রাজীব জয়ের এক্সাইট্মেন্ট কে পাত্তা না দিয়ে নিরলিপ্ত ভাবে বলল “ তুই দেখ” । এতে জয়ের মেজেজ আরো খারাপ হয়ে গেলো , বলল “ শালা আমরা এতো কষ্ট করে নিজেদের সম বয়সি মেয়ে পটাই , আর তোকে একজন পাকা মহিলা লাইন দিচ্ছে আর তুই বলছিস তাতে তোর কি , সব কিছু ঠিকঠাক আছে তো বস” শেষের লাইন বলার সময় জয় রাজীবের দু পায়ের মাঝে ইশারা করলো ।
রাজীব প্রথমে একটা ঘুষি বসিয়ে দিলো জয়ের পিঠে , তারপর বলল “ আমার ঠিক আছে কিনা , সেটা আমি বুঝবো , তোর এতো টেনশন কেনো? আমার যেমন মেয়ে চাই তেম্ন পেয়ে গেলেই দেখতে পাবি তোরা”
“ তা তোমার কেমন মেয়ে চাই? যে তোমার বৃদ্ধ বাবা কে দেখাসুনা করবে , যে তোমার ঘর আলো করে তুলবে,” জয় পুরনো দিনের বাংলা সিনেমার ডায়লগ নকল করে বলল , রাজীব কে ক্ষেপানর জন্য ।
“ তাই ভেবে নে” রাজীব কথা না বাড়ানোর জন্য বলল ,
“ ধুর ছাগল , এই বয়সে এসব ভাবলে ফুর্তি করবি কখন”
“ ফুর্তি কে করতে চাইছে , সবাই কে ফুর্তিবাজ ভাবিস কেনো তোর মত , কিছুদিন পর পর একটা করে বান্ধবি পাল্টাস” রাজীব একটু রেগে গিয়ে বলল , ওর কাছে মনে হয় জয় নিজের এই অভ্যাসের কারনে একদিন বিপদে পড়বে ।
“ আরে ভাই , ওই মেয়েরাও জানে আমাদের ভবিষ্যৎ নেই , ওরাও ফুর্তি করতেই আসে , আমি কোন অবলা নারীর জীবন নষ্ট করছি না”
“ দেখিস আমি বলে দিলাম একদিন তুই এর জন্য ফাঁসবি” রাজীব জয় কে সাবধান করে বলল
“ সে দেখা যাবে , আর ফেঁসেই যদি যাই তুই তো আছিস আমার ভাই” জয় হেসে রাজীবের দিকে তাকায়
রাজীব ও না হেসে পারে না , মনে মনে ভাবে এই ছেলেটার উপর বেসিক্ষন রেগে থাকা ওর পক্ষে সম্ভব নয় ।
সন্ধ্যা পর্যন্ত এমন হাসি তামাশায় মশগুল থেকে দুই বন্ধু সন্ধার পর বাড়ি ফেরে । রাজীব ও নিজে একটা বাইক কিনেছে , জয়ের মত এতো ফেন্সি নয় যদিও ।
রাজীব বাসায় ঢুকেই ফ্রেশ হয়ে , রান্না ঘরে চা করার জন্য যায় । দু কাপ চা বানিয়ে সোজা রানীর ঘরে । দরজায় টোকা দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দেয় রাজীব ।
“ আসো ভাইয়া” রানী পড়ার টেবিলে বসে বসেই রাজীব কে ভেতরে আসতে বলে ।
“ কিরে এক্সাইটেড” রাজীব রানীর সামনে চা রেখে হাসি মুখে জিজ্ঞাস করে
কিন্তু রানীর মুখে হাসি নেই , ও ঠোঁট ফুলিয়ে বলল “ উহু , ভয় লাগছে”
“ আরে ধুর পাগলী কিসের ভয় , আমাদের জয় যদি চান্স পায় তুই পাবি না কেনো ? , এখন পড়া বাদ দে , চা খেয়ে ছাদে চল আমার সাথে” রাজীব রানীর হাত থেকে বই কেড়ে নিলো । রানী দিতে চাচ্ছিলো না এক প্রকার কেড়েই নিতে হলো । তারপর দুজনে চা খেয়ে খোলা ছাদের রেলিঙে গিয়ে বসলো । কিছুক্ষন পর রানী চিন্তিত কণ্ঠে বলল “ যদি চান্স না পাই”
“ তাহলে আর কি অন্য ভার্সিটিতে পড়বি” রাজীব সহজ ভাবে বলল
“ না না ভাইয়া আমি এই ভার্সিটিতেই পড়তে চাই , তুই পড়েছিস , আব্বু পড়েছে , আমিও পড়বো, তা ছাড়া এই ভার্সিটির কত নাম ” রানী জেদি গলায় বলল
ছোট বোনের কথা শুনে রাজীব মুচকি হাসল , তারপর বলল “ এই ভার্সিটির নাম হয়েছে কারন এখানে থেকে অনেক বড় বড় মানুষ বেড়িয়েছে তাই , তুই যদি অন্য ভার্সিটিতে পড়ে একজন বড় মানুষ হতে পারিস , তখন দেখবি ওই প্রতিষ্ঠানের ও নাম হবে , লোকজন ওই ভার্সিটিতেও ভর্তি হতে চাইবে , ছেলে মেয়েরা বলবে প্রফেসর রুকাইয়া শিকদার রানী এই ভার্সিটিতে পড়েছে , আমরাও পড়বো, বুঝছিস”
রাজীব যেভাবে ওর পুরো নামের সাথে প্রফেসর শব্দ যোগ করে দিলো রানীর কাছে বেশ মজা লাগলো ফিক করে একবার হেসে দিলো রানী , তারপর বলল “ তুই না থাকলে যে আমার কি হবে, আমি সারাক্ষণ ভয়েই আধমরা হয়ে থাকবো”
রাজীব মুচকি হাসে , তারপর বলে “ অনেক কথা হয়েছে এখন চল রান্না ঘরে , তোর পরিক্ষা উপলক্ষে বিরিয়ানি রান্না করবো , তারপর বিরিয়ানি খেয়ে সটান ঘুম দিবি , সকালে উঠে একদম পরিক্ষ হলে, এর মাঝে কোন বই ধরা নিষেধ আর হ্যা তোকে আমি কালকে নিয়ে যাবো , রাস্তায় সাকাল বেলায় খুব্ জ্যাম হয় , জয় কেও বলেছি জান্নাত কে বাইকে করে পৌঁছে দিতে ”
জয়ের নাম উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথেই রানীর ঠোঁটে হালকা হাসির রেখা ফুটে উঠলো , তবে দ্রুতই সেটা মুছে ফেললো রানী তারপর বলল “আপনি যা বলবেন গুরুজি” রানী কুর্নিস করার ভঙ্গিতে বলল ,তারপর দুজনে সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগলো , নামার সময় রানী বলল “ আচ্ছা পরিক্ষা পাশের উপলক্ষে মানুষ বিরিয়ানি রান্না করে শুনেছি , কিন্তু পরিক্ষা উপলক্ষে কেউ বিরিয়ানি রান্না করে সেটা জানা ছিলো না”
রাজীব হাসতে হাসতে বললে “ আজকে জেনে নে, ভবিষ্যতে কাজে দিবে”
তারপর দুই ভাই বোন মিলে বিরিয়ানি রান্না করার জন্য চলে গেলো । রান্না ঘর থেকে দুজনের যৌথ প্রচেষ্টার কিছু ইঙ্গিত ভেসে আসতে লাগলো “ আহা ভাইয়া তেল মনে হয় বেশি দিয়ে ফেললি ”
“ আরে নাহ কিচ্ছু হবে না”
“ লবন চেক করে দেখতো”
“ আচ্ছা মাংস সেদ্ধ হলো নাকি?”
অন্য দিকে চৌধুরী বাড়ি;
জয় বাসায় ঢুকেই দেখে জান্নাত টিভি দেখছে , “ এই কিরে তোর না কালকে পরিক্ষা” জুয় অবাক হয়ে বলে
“ হু , তো?” জান্নাত কাঁধ ঝাকিয়ের পাল্টা প্রস্ন করে ।
“ তাহলে পড়া রেখে টীভি দেখছিস যে” জয় বড় ভাই সুলভ শাসনের গলায় বলল
কিন্তু জান্নাত তাতে পাত্তা দিলো না , বলল “ কাল পরিক্ষা আজকে পড়ে কি হবে , আজকে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে”
“ দেখিস আবার কালকে পরিক্ষার প্রস্ন দেখে , ঠাণ্ডা মাথা স্টার্ট দেয়ার জন্য হিটার না দরকার হয়ে যায়”
“ সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না , তুই সুধু নিজের কাজটা ঠিক মতন করিস , সময় মত পরিক্ষা হলে পৌঁছে দিস” জান্নাত হেসে বলল
“ ওটা নিয়ে তোকেও কোন চিন্তা করতে হবে না , আমার বাইক আমাকে কখনো হতাস করে না, যেমন কিছু মানুষ করে থাকে” লাস্টের কথা গুলো জয় জান্নাতের দিকে তাকিয়ে বলল
জান্নাত ও জয়ের খোঁচা বুঝতে পারলো , কিন্তু পরিক্ষার আগের দিন জয়ের সাথে লাগার কোন ইচ্ছা ওর নেই । তাই চুপ করে রইলো ।
<><><>
শিকদার ফ্যামিলি নিজেদের পুরনো বাড়িতে সিফট হয়েছে দুই বছর হতে চলল । এরি মাঝে রাজীব স্থানিয় ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে। এবং আশ্চর্যের বিষয় হলো জয় ও সেই একি ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে । কেউ চিন্তাও করতে পারেনি জয় এটা করতে পারবে । কারন জয়ের মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিক রেজাল্ট রাজীবের মত এতো ভালো না । কিন্তু জয় দেখিয়ে দিয়ছে ও মুখে যেমন বলে যে ওর অসাধ্য কিছু নেই , তেমন করেও দেখিয়ে দিয়েছে ।
এদিকে জান্নাত আর রানীও উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে । রাজীব আর জয় যে ইউনিতে ভর্তি হয়েছে সেখানেই ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছে ওরা দুজনে । কারন এটাই এই শহরের সবচেয়ে বড় আর ভালো ভার্সিটি ।
নিজেদের পুরোন বাড়িতে ফিরে আসার পর রাজীবের ও একটু সস্তি হয়েছে । রানী জান্নাতের সাথেই বেশি সময় কাটাচ্ছে । রানীকে এদিক সেদিক নিয়ে যাওয়ার জন্য আর সব সময় রাজীব কে প্রয়োজন হয় না ।
জয় আর রাজীবের দ্বিতীয় বর্ষের শেষ ভাগ চলছে । আগামি কিছুদিন পর ওদের পরিক্ষা তাই সব মৌজ মাস্তি সাইডে রেখে দুজনেই লেখা পড়ায় মন দিয়েছে । সারা বছর তেমন লেখাপড়া হয়নি জয়ের , তাই এখন কোমর বেধে নেমেছে ।
মাস চারেক পর ;
পরিক্ষা শেষ হতেই জয় আবার পুরনো ফর্মে ফিরে আসে । রাজীব কে নিয়ে সারাক্ষণ মাস্তিতে মজে থাকে । সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা , তারপর গলিতে সারাদিন খেলাধুলা , বিকেলে রাজীব কে নিয়ে বাইকে ঘুরে বেড়ানো , মাঝে মাঝে দুই একটা মেয়ের সাথে হালকা রোমান্স রোমান্স খেলা ।
আজো জয় রাজীব আর কিছু বন্ধুর সাথে ভার্সিটি এলাকায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলো । এমন সময় ভার্সিটির এক সুন্দরি লেকচারার ওদের সামনে দিয়ে যেতেই , জয় বলল “ আরে এটা মিস সাম্মি না” পাশে থাকা আর একটি ছেলে বলল “ হ্যা ভাই”। জয় রাজীবের দিকে তাকালো । রাজীব নিজের মনে কি যেন ভাবছে । জয় কনুই দিয়ে রাজীব কে একটি ধাক্কা দিলো । ধাক্কা খেয়ে রাজীব জয়ের দিকে তাকালে জয় প্রায় রাগান্বিত ভাবে বলল “ আরে ভাই , মিস সাম্মি তোকে এতো ইশারা ইঙ্গিত করলো গত বছর তুই পাত্তাই দিলি না , উনি কিন্তু তোর উপর পুরো ফিদা ভাই , দেখিস না পুরো ক্লাস সুধু তোকে নিয়েই পরে থাকে, রাজীব তুমি এটা পারো , রাজীব এটার উত্তর কি হবে বলো তো, রাজীব ক্লাস শেষে আমার অফিসে দেখা করো” শেষের কথা গুলো জয় মেয়েলি ভাবে মিস সাম্মি কে নকল করে বলল । আসলে রাজীব আর জয়ের ক্লাস এক সাথে নয় । তবুও জয় নিজের ক্লাস ফাকি দিয়ে মিস সাম্মির ক্লাসে গিয়ে বসে থাকে । আর এতো স্টুডেন্টের মাঝে মিস সাম্মি জয় কে নিজের স্টুডেন্ট ভেবে নেয় । ওদের ডিপার্টমেন্ট এক হলেও সাবজেক্ট আলাদা ।
রাজীব বিরক্ত হলো বলল “ ফিদা হলে ফিদা , আমি কি করবো? উনি আমাদের টিচার , আর টিচার কে সম্মান করতে হয় , বয়সেও কত বড় ”
“ আরে ভাই তুই সুধু বয়স দেখলি , ঐটা কত বড় সেটা দেখলি না , শালা কানাচোদা” জয় হাত দিয়ে মিস সাম্মির বুকের সাইজ দেখিয়ে বলল ।
রাজীব জয়ের এক্সাইট্মেন্ট কে পাত্তা না দিয়ে নিরলিপ্ত ভাবে বলল “ তুই দেখ” । এতে জয়ের মেজেজ আরো খারাপ হয়ে গেলো , বলল “ শালা আমরা এতো কষ্ট করে নিজেদের সম বয়সি মেয়ে পটাই , আর তোকে একজন পাকা মহিলা লাইন দিচ্ছে আর তুই বলছিস তাতে তোর কি , সব কিছু ঠিকঠাক আছে তো বস” শেষের লাইন বলার সময় জয় রাজীবের দু পায়ের মাঝে ইশারা করলো ।
রাজীব প্রথমে একটা ঘুষি বসিয়ে দিলো জয়ের পিঠে , তারপর বলল “ আমার ঠিক আছে কিনা , সেটা আমি বুঝবো , তোর এতো টেনশন কেনো? আমার যেমন মেয়ে চাই তেম্ন পেয়ে গেলেই দেখতে পাবি তোরা”
“ তা তোমার কেমন মেয়ে চাই? যে তোমার বৃদ্ধ বাবা কে দেখাসুনা করবে , যে তোমার ঘর আলো করে তুলবে,” জয় পুরনো দিনের বাংলা সিনেমার ডায়লগ নকল করে বলল , রাজীব কে ক্ষেপানর জন্য ।
“ তাই ভেবে নে” রাজীব কথা না বাড়ানোর জন্য বলল ,
“ ধুর ছাগল , এই বয়সে এসব ভাবলে ফুর্তি করবি কখন”
“ ফুর্তি কে করতে চাইছে , সবাই কে ফুর্তিবাজ ভাবিস কেনো তোর মত , কিছুদিন পর পর একটা করে বান্ধবি পাল্টাস” রাজীব একটু রেগে গিয়ে বলল , ওর কাছে মনে হয় জয় নিজের এই অভ্যাসের কারনে একদিন বিপদে পড়বে ।
“ আরে ভাই , ওই মেয়েরাও জানে আমাদের ভবিষ্যৎ নেই , ওরাও ফুর্তি করতেই আসে , আমি কোন অবলা নারীর জীবন নষ্ট করছি না”
“ দেখিস আমি বলে দিলাম একদিন তুই এর জন্য ফাঁসবি” রাজীব জয় কে সাবধান করে বলল
“ সে দেখা যাবে , আর ফেঁসেই যদি যাই তুই তো আছিস আমার ভাই” জয় হেসে রাজীবের দিকে তাকায়
রাজীব ও না হেসে পারে না , মনে মনে ভাবে এই ছেলেটার উপর বেসিক্ষন রেগে থাকা ওর পক্ষে সম্ভব নয় ।
সন্ধ্যা পর্যন্ত এমন হাসি তামাশায় মশগুল থেকে দুই বন্ধু সন্ধার পর বাড়ি ফেরে । রাজীব ও নিজে একটা বাইক কিনেছে , জয়ের মত এতো ফেন্সি নয় যদিও ।
রাজীব বাসায় ঢুকেই ফ্রেশ হয়ে , রান্না ঘরে চা করার জন্য যায় । দু কাপ চা বানিয়ে সোজা রানীর ঘরে । দরজায় টোকা দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দেয় রাজীব ।
“ আসো ভাইয়া” রানী পড়ার টেবিলে বসে বসেই রাজীব কে ভেতরে আসতে বলে ।
“ কিরে এক্সাইটেড” রাজীব রানীর সামনে চা রেখে হাসি মুখে জিজ্ঞাস করে
কিন্তু রানীর মুখে হাসি নেই , ও ঠোঁট ফুলিয়ে বলল “ উহু , ভয় লাগছে”
“ আরে ধুর পাগলী কিসের ভয় , আমাদের জয় যদি চান্স পায় তুই পাবি না কেনো ? , এখন পড়া বাদ দে , চা খেয়ে ছাদে চল আমার সাথে” রাজীব রানীর হাত থেকে বই কেড়ে নিলো । রানী দিতে চাচ্ছিলো না এক প্রকার কেড়েই নিতে হলো । তারপর দুজনে চা খেয়ে খোলা ছাদের রেলিঙে গিয়ে বসলো । কিছুক্ষন পর রানী চিন্তিত কণ্ঠে বলল “ যদি চান্স না পাই”
“ তাহলে আর কি অন্য ভার্সিটিতে পড়বি” রাজীব সহজ ভাবে বলল
“ না না ভাইয়া আমি এই ভার্সিটিতেই পড়তে চাই , তুই পড়েছিস , আব্বু পড়েছে , আমিও পড়বো, তা ছাড়া এই ভার্সিটির কত নাম ” রানী জেদি গলায় বলল
ছোট বোনের কথা শুনে রাজীব মুচকি হাসল , তারপর বলল “ এই ভার্সিটির নাম হয়েছে কারন এখানে থেকে অনেক বড় বড় মানুষ বেড়িয়েছে তাই , তুই যদি অন্য ভার্সিটিতে পড়ে একজন বড় মানুষ হতে পারিস , তখন দেখবি ওই প্রতিষ্ঠানের ও নাম হবে , লোকজন ওই ভার্সিটিতেও ভর্তি হতে চাইবে , ছেলে মেয়েরা বলবে প্রফেসর রুকাইয়া শিকদার রানী এই ভার্সিটিতে পড়েছে , আমরাও পড়বো, বুঝছিস”
রাজীব যেভাবে ওর পুরো নামের সাথে প্রফেসর শব্দ যোগ করে দিলো রানীর কাছে বেশ মজা লাগলো ফিক করে একবার হেসে দিলো রানী , তারপর বলল “ তুই না থাকলে যে আমার কি হবে, আমি সারাক্ষণ ভয়েই আধমরা হয়ে থাকবো”
রাজীব মুচকি হাসে , তারপর বলে “ অনেক কথা হয়েছে এখন চল রান্না ঘরে , তোর পরিক্ষা উপলক্ষে বিরিয়ানি রান্না করবো , তারপর বিরিয়ানি খেয়ে সটান ঘুম দিবি , সকালে উঠে একদম পরিক্ষ হলে, এর মাঝে কোন বই ধরা নিষেধ আর হ্যা তোকে আমি কালকে নিয়ে যাবো , রাস্তায় সাকাল বেলায় খুব্ জ্যাম হয় , জয় কেও বলেছি জান্নাত কে বাইকে করে পৌঁছে দিতে ”
জয়ের নাম উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথেই রানীর ঠোঁটে হালকা হাসির রেখা ফুটে উঠলো , তবে দ্রুতই সেটা মুছে ফেললো রানী তারপর বলল “আপনি যা বলবেন গুরুজি” রানী কুর্নিস করার ভঙ্গিতে বলল ,তারপর দুজনে সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগলো , নামার সময় রানী বলল “ আচ্ছা পরিক্ষা পাশের উপলক্ষে মানুষ বিরিয়ানি রান্না করে শুনেছি , কিন্তু পরিক্ষা উপলক্ষে কেউ বিরিয়ানি রান্না করে সেটা জানা ছিলো না”
রাজীব হাসতে হাসতে বললে “ আজকে জেনে নে, ভবিষ্যতে কাজে দিবে”
তারপর দুই ভাই বোন মিলে বিরিয়ানি রান্না করার জন্য চলে গেলো । রান্না ঘর থেকে দুজনের যৌথ প্রচেষ্টার কিছু ইঙ্গিত ভেসে আসতে লাগলো “ আহা ভাইয়া তেল মনে হয় বেশি দিয়ে ফেললি ”
“ আরে নাহ কিচ্ছু হবে না”
“ লবন চেক করে দেখতো”
“ আচ্ছা মাংস সেদ্ধ হলো নাকি?”
অন্য দিকে চৌধুরী বাড়ি;
জয় বাসায় ঢুকেই দেখে জান্নাত টিভি দেখছে , “ এই কিরে তোর না কালকে পরিক্ষা” জুয় অবাক হয়ে বলে
“ হু , তো?” জান্নাত কাঁধ ঝাকিয়ের পাল্টা প্রস্ন করে ।
“ তাহলে পড়া রেখে টীভি দেখছিস যে” জয় বড় ভাই সুলভ শাসনের গলায় বলল
কিন্তু জান্নাত তাতে পাত্তা দিলো না , বলল “ কাল পরিক্ষা আজকে পড়ে কি হবে , আজকে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে”
“ দেখিস আবার কালকে পরিক্ষার প্রস্ন দেখে , ঠাণ্ডা মাথা স্টার্ট দেয়ার জন্য হিটার না দরকার হয়ে যায়”
“ সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না , তুই সুধু নিজের কাজটা ঠিক মতন করিস , সময় মত পরিক্ষা হলে পৌঁছে দিস” জান্নাত হেসে বলল
“ ওটা নিয়ে তোকেও কোন চিন্তা করতে হবে না , আমার বাইক আমাকে কখনো হতাস করে না, যেমন কিছু মানুষ করে থাকে” লাস্টের কথা গুলো জয় জান্নাতের দিকে তাকিয়ে বলল
জান্নাত ও জয়ের খোঁচা বুঝতে পারলো , কিন্তু পরিক্ষার আগের দিন জয়ের সাথে লাগার কোন ইচ্ছা ওর নেই । তাই চুপ করে রইলো ।
<><><>
সব প্রশ্নের উত্তর নেই,
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)