07-08-2025, 06:20 PM
কিছু সম্পরকঃ ২ (ঘ)
রাতে খাওয়ার সময় যখন জয়নাল আর রহিম নিজেদের সিদ্ধান্ত সবার সামনে উপস্থাপন করলো । তখন জয় আনন্দে অলমোস্ট টেবিল উল্টে ফেলছিলো নিজের চেয়ার থেকে ওঠার সময় । চেয়ার ছেড়ে উঠে আনন্দে লাফাতে লাগলো জয় , ওর কাছে মনে হতে লাগলো ওর চেয়ে বেশি খুশি দুনিয়ায় আর কেউ নেই । জান্নাত ও আনন্দে চিৎকার করে উঠলো , সাথে যোগ দিলো রানী। তবে রাজীব একদম চুপচাপ , ওকে দেখে মনে হচ্ছে একেবারে ভাবলেশহীন। কিন্তু ভেতরে ভেতরে কাঁপছে রাজীব , সেই ছোটবেলার বাড়ি , পুরনো সৃতি , মায়ের স্পর্শের সৃতি , মায়ের কবর , বন্ধু জয়ে কে সর্বক্ষণ পাশে পাওয়া । রাজীব ভাবতেই পারেনি এসব এতো তারাতারি হয় । মনে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলেও , মাঝে মাঝে মনে হতো ও পারবে তো পুরনো বাড়িতে ফিরতে।
জয় ততক্ষণে রাজীবের কাছে চলে এসেছে , পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে রাজীবকে ।
রানী আড় চোখে একবার রাজীবের দিকে তাকায় , রানীর বুঝতে অসুবিধা হয় না রাজীবের মনের ভেতর এখন কেমন ঝর বইছে। নিজের একটা হাত রাজীবের হাতে রেখে আলতো করে চাপ দেয় রানী , দুজন দুজনের দিকে তাকায় আলতো করে হাসি রানী , সাথে রাজীব ও যোগ দেয় ।
খাওয়া শেষে সবাই এক সাথে বসে , এক সোফায় জয়নাল আর রহিম , পাশের সোফায় আয়শা আর পরী , রাজীব আর জান্নাত ওদের পায়ের কাছে মেঝেতে । আর জয় জয়নালের পাশে সোফার হাতলে বসে ।
জয়নাল আর রহিম নিজদের ছোট বেলা , ছাত্র জীবন এই নিয়ে আলোচনা করছিলো । ছেলে মেয়েরা সেটা মন দিয়ে শুনছিল , বিশেষ করে রাজীব আর জয় । এক সময় কথার ফাঁকে জয়নাল বলে উঠলো , “ আমাদের সময় তো এতো মোবাইল , ল্যাপটপ এসব ছিলো না , তাই আমরা লেখাপড়ার পাশাপাশি নানা ধরনের এক্টিভিটিতে জড়িত থাকতাম , আজকালের ছেলে মেয়েদের মাঝে তেমন কিছু দেখতে পাই না”
“ কেনো বাবা , কতদিন আগে যে আমি বিতর্ক প্রতিযোগিতা তে জিতে এলাম সেটা” জান্নাত সাথে সাথে প্রতিবাদ করে ওঠে।
“ওহ তাইতো , সরি সরি মা ” জয়নাল লজ্জিত হয়
“ বুড়ো মানুষের এই এক সমস্যা , আমাদের সময় আমরা হ্যান করতাম ত্যান করতাম , এখনকার ছেলে পেলে সব উচ্ছনে যাচ্ছে” আয়শা ছেলে মেয়ের পক্ষ নিয়ে মুখ ঝামটা দিলো । মা কে নিজেদের পাশে চপেয়ে ছেলে মেয়ে চারজন উচ্চ স্বরে হেসে ফেললো ।
“ কথা মন্দ বলেন নি ভাবি , তবে এটা আমাদের দোষ না ঠিক , আমাদের সময় এক্টিভিটি অন্য রকম ছিলো এখন অন্যরকম তাই আমারা ঠিক বুঝতে পারি না” রহিম বন্ধুকে সাপোর্ট করে বলল
এবার আয়শা রাজীবের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাস করলো “ তুই বাবা পড়াশোনার ফাঁকে কি করিস “
“ সুযোগ পেলে ফুটবল খেলি , আর কলেজের ট্রিভিয়া ক্লাবে ছিলাম” কিন্তু আয়শা ট্রিভিয়া ক্লাবের মানে ঠিক বুঝতে না পারলে রাজীব বুঝিয়ে বলল ।
পাশ থেকে জান্নাত বলে উঠলো “ ওয়াও আমিও বেশ কয়েকবার অংশ নিয়েছি কিন্তু তেমন সাফল্য পাইনি”
শুনে রাজীব বেশ খুশি হলো , বলল “ তাই নাকি, খুব ভালো”
“ আরে ধুর এটা কোন খেলা হলো , পরিক্ষার প্রস্নের উত্তর দিতে দিতে জান তেজপাতা হয়ে গেলো , তোরা আবার এই প্রস্নের উত্তর দেয়াকে খেলা বানিয়ে নিয়েছিস , পরিক্ষা কি তোদের জন্য কম হয়ে গেলো” জয় বিরক্তি সহকারে বলল ।
“ তুই এসব কি বুঝবি , এবস বুদ্ধিমান মানুষের কাজ , তোর মত মাংস পিন্ড এসব বুঝবে না” জান্নাত ঝারি মেরে বলল ,
জয় আরো কিছু বলতে তেড়ে যাচ্ছিলো , কিন্তু রহিম থামিয়ে দিলো , বলল “ তুই কি করিস সেটা বল না”
“ ছোট আব্বু , তোমার এই ছেলে কি করে না সেটা জিজ্ঞাস করো” জয়ের উত্তরে সবাই হেসে ফেললো
এবার আয়শা রানী কে বুকে টেনে নিয়ে জিজ্ঞাস করলো “ আমার মায়ের কি সখ”
রানী চুপ করে থাকলো , তবে ওর হয়ে রহিম উত্তর দিয়ে দিলো “ রানী বেশ ভালো নাচ করে , কয়েকটা প্রাইজ ও পেয়েছে”
ঘরের বাকি সবাই অবাক হয়ে গেলো , এক সাথেই ই বলে উঠলো “ তাই নাকি”
জান্নাত তো উঠেই দাঁড়ালো , হাতে মাইক আছে এমন ভাব করে বলতে শুরু করলো “ সুধী দর্শক এখন আমাদের মাঝে নাচ পরিবেশন করবে , মহারানী মাস্তানি”
সবাই রিকোয়েস্ট করতে লাগলো , রাজীব ও নিরিবে একবার চোখ ইশারা করে আশ্বাস দিলো । শেষে সবার অনুরধে নাচতে রাজি হলো রানী । বেশি না মাত্র পাচ মিটিতের একটা নাচ পরিবেশন করলো , সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সেই নাচ উপভগ করলো । রানীর লম্বা শারীরিক গঠন নাচের জন্য একদম পারফেক্ট , মুভমেন্ট গুলো ও বেশ গ্রেস্ফুল , পুরো পাঁচ মিনিট নাচের ছন্দে সবাই কে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে রাখলো । সব শেষে একটা শেষ চক্কর দিয়ে লজ্জায় নিজের মুখ ঢেকে ফেললো ।
নাচ শেষ হওয়ার পর ও বেশ কিছুক্ষন সবাই চুপ হয়ে রইলো । সবাই ভেবেছিলো এমেচার লেভেলের কিছু দেখবে । কিন্তু রানীর প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া ছিলো একদম মাপা আর এফরটলেস । এতো ভালো নাচ হয়তো কেউ আশা করেনি । এমন কি রাজীব আর রহিম ও নয় । এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলো সবাই , এমনকি জয়ের মত চুটল বেক্তির মুখ ও বন্ধ হয়ে গেছে ।
বেশ কিছুক্ষন পর সবার অবাক হওয়ার রেষ কেটে গেলে সবাই এক সঙ্গে হাততালি দিতে শুরু করলো । এতে রানী আরো লজ্জায় পরে গেলো ।
“ বাহ মা , তুই তো অনেক ভালো নাচিস , এটা প্রফেশন হিশেবে নেয়ার ইচ্ছা আছে নাকি? ” প্রথমে আয়শা কথা বলে উঠলো
“ হ্যা হ্যা , ঠিক বলেছো” জয়নাল আয়শার কথায় সায় দিলো ।
“ অরে তুই তো মাস্তানিকেও হার মানিয়ে দিলি” জান্নাত খুশিতে জড়িয়ে ধরলো বান্ধবিকে ।
রহিম আর রাজীব গর্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রানীর দিকে মুখে স্মিত হাসি ।
সুধু কিছু বল্লনা জয় , কেমন জানি একটু উদাস হয়ে গেছে ও ।
সবার শেষে রানী জানালো নাচ সুধু ওর হবি , ও বলল “ আমি তো এমনি টিভি দেখে দেখে নাচ শিখেছি , পরে ভাইয়ার চাপাচাপিতে অল্প কিছু শিখেছি , এটা প্রফেশন হিশেবে নিতে চাই না , আমি আমার আব্বুর মত শিক্ষক হতে চাই”
রানীর কথা শুনে সবাই খুব খুশি হলো , জয়নাল বলে উঠলো , “ সাবাস একেবারে বাপ কা বেটি হবি তুই”
এই কথায় আলচনার টপিক চেঞ্জ হয়ে গেলো , জয়নাল রাজীব কে জিজ্ঞাস করলো “ রাজীব , কদিন পরে ভার্সিটিতে ভর্তি হবি , এর পর কি চিন্তা আছে ?”
রাজীব একটু হেসে বলল “ এখনো ঠিক করিনাই বড় আব্বু তবে আমার ফটোগ্রাফার হওয়ার ইচ্ছে আছে ”
“ মানুষের ছবির চেয়ে ভাইয়া গাছ পালার ছবি তুলতে বেশি পছন্দ করে” রানী মাঝ থেকে ফোঁড়ন কাটলো ,
“ সে কিরে? সুধু গাছ পালার ছবি তুলিস” আয়শা একটু অবাক হলো ,
“ এটা বোটানিকাল ফটোগ্রাফি বড় আম্মু” রাজীব একটু খোলাসা করে বলে
“ তোর কি ইচ্ছা জান্নাত” জয়নাল জান্নাতের দিকে তাকিয়ে প্রস্ন করলো ।
“ আমি সাংবাদিক হবো” জান্নাত বেশ কনফিডেন্সের সাথে উত্তর দিলো
“ আরে বাহ , এই তো আমার লক্ষি মেয়ে” জয়নাল খুশি হয়ে বলল , বাকি সবাই ও খুশি হলো
“ তা জয় বাবা আপনি ভবিষ্যতে কি করতে চান” জয়নাল মজা করে জিজ্ঞাস করলো
জয়ের উত্তর ও এলো মজা করে “ ভবিষ্যৎ কে দেখছে আব্বু , না তুমি না আমি , ভবিষ্যৎ কে ওর নিজের জায়গায় রেখে দাও , এখন তো ভার্সিটি লাইফ এঞ্জয় করতে চাই , রাজীবের সাথে”
বাকি সবাই হেসে উঠলেও জয়নাল ,স্ত্রীর দিকে চোখ মটকিয়ে তাকালো , যার অর্থ দাড়ায় ‘তুমি একে কিছু বলবে ,নাকি আমি বলবো’ ।
পরদিন সকালে শিকদার ফ্যামিলি আবার চৌধুরী বাড়ি থেকে নিজেদের ব্যাগ পত্তর গুছিয়ে নিজেদের শহরে রওনা হলো । যাওয়ার সময় সবাই সবাইকে বিদায় জানালো ,তবে এবার আর সেই বিদায়ে দুঃখ নেই , আছে আনন্দ কারন আর কদিন পর ওরা সবাই আবার একসাথে থাকবে । রাওহিম নিজের কোচিং বিজনেস ওখান থেকে গুটিয়ে এখানে নিয়ে আসতে যত সময় লাগে , সুধু তত সময়ের অপেক্ষা । এর মাঝে শিকদার বাড়ির কিছু মেরামতের কাজ জয়নাল নিজের জিম্মায় নিয়ে নিলো ।
রাতে খাওয়ার সময় যখন জয়নাল আর রহিম নিজেদের সিদ্ধান্ত সবার সামনে উপস্থাপন করলো । তখন জয় আনন্দে অলমোস্ট টেবিল উল্টে ফেলছিলো নিজের চেয়ার থেকে ওঠার সময় । চেয়ার ছেড়ে উঠে আনন্দে লাফাতে লাগলো জয় , ওর কাছে মনে হতে লাগলো ওর চেয়ে বেশি খুশি দুনিয়ায় আর কেউ নেই । জান্নাত ও আনন্দে চিৎকার করে উঠলো , সাথে যোগ দিলো রানী। তবে রাজীব একদম চুপচাপ , ওকে দেখে মনে হচ্ছে একেবারে ভাবলেশহীন। কিন্তু ভেতরে ভেতরে কাঁপছে রাজীব , সেই ছোটবেলার বাড়ি , পুরনো সৃতি , মায়ের স্পর্শের সৃতি , মায়ের কবর , বন্ধু জয়ে কে সর্বক্ষণ পাশে পাওয়া । রাজীব ভাবতেই পারেনি এসব এতো তারাতারি হয় । মনে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলেও , মাঝে মাঝে মনে হতো ও পারবে তো পুরনো বাড়িতে ফিরতে।
জয় ততক্ষণে রাজীবের কাছে চলে এসেছে , পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে রাজীবকে ।
রানী আড় চোখে একবার রাজীবের দিকে তাকায় , রানীর বুঝতে অসুবিধা হয় না রাজীবের মনের ভেতর এখন কেমন ঝর বইছে। নিজের একটা হাত রাজীবের হাতে রেখে আলতো করে চাপ দেয় রানী , দুজন দুজনের দিকে তাকায় আলতো করে হাসি রানী , সাথে রাজীব ও যোগ দেয় ।
খাওয়া শেষে সবাই এক সাথে বসে , এক সোফায় জয়নাল আর রহিম , পাশের সোফায় আয়শা আর পরী , রাজীব আর জান্নাত ওদের পায়ের কাছে মেঝেতে । আর জয় জয়নালের পাশে সোফার হাতলে বসে ।
জয়নাল আর রহিম নিজদের ছোট বেলা , ছাত্র জীবন এই নিয়ে আলোচনা করছিলো । ছেলে মেয়েরা সেটা মন দিয়ে শুনছিল , বিশেষ করে রাজীব আর জয় । এক সময় কথার ফাঁকে জয়নাল বলে উঠলো , “ আমাদের সময় তো এতো মোবাইল , ল্যাপটপ এসব ছিলো না , তাই আমরা লেখাপড়ার পাশাপাশি নানা ধরনের এক্টিভিটিতে জড়িত থাকতাম , আজকালের ছেলে মেয়েদের মাঝে তেমন কিছু দেখতে পাই না”
“ কেনো বাবা , কতদিন আগে যে আমি বিতর্ক প্রতিযোগিতা তে জিতে এলাম সেটা” জান্নাত সাথে সাথে প্রতিবাদ করে ওঠে।
“ওহ তাইতো , সরি সরি মা ” জয়নাল লজ্জিত হয়
“ বুড়ো মানুষের এই এক সমস্যা , আমাদের সময় আমরা হ্যান করতাম ত্যান করতাম , এখনকার ছেলে পেলে সব উচ্ছনে যাচ্ছে” আয়শা ছেলে মেয়ের পক্ষ নিয়ে মুখ ঝামটা দিলো । মা কে নিজেদের পাশে চপেয়ে ছেলে মেয়ে চারজন উচ্চ স্বরে হেসে ফেললো ।
“ কথা মন্দ বলেন নি ভাবি , তবে এটা আমাদের দোষ না ঠিক , আমাদের সময় এক্টিভিটি অন্য রকম ছিলো এখন অন্যরকম তাই আমারা ঠিক বুঝতে পারি না” রহিম বন্ধুকে সাপোর্ট করে বলল
এবার আয়শা রাজীবের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাস করলো “ তুই বাবা পড়াশোনার ফাঁকে কি করিস “
“ সুযোগ পেলে ফুটবল খেলি , আর কলেজের ট্রিভিয়া ক্লাবে ছিলাম” কিন্তু আয়শা ট্রিভিয়া ক্লাবের মানে ঠিক বুঝতে না পারলে রাজীব বুঝিয়ে বলল ।
পাশ থেকে জান্নাত বলে উঠলো “ ওয়াও আমিও বেশ কয়েকবার অংশ নিয়েছি কিন্তু তেমন সাফল্য পাইনি”
শুনে রাজীব বেশ খুশি হলো , বলল “ তাই নাকি, খুব ভালো”
“ আরে ধুর এটা কোন খেলা হলো , পরিক্ষার প্রস্নের উত্তর দিতে দিতে জান তেজপাতা হয়ে গেলো , তোরা আবার এই প্রস্নের উত্তর দেয়াকে খেলা বানিয়ে নিয়েছিস , পরিক্ষা কি তোদের জন্য কম হয়ে গেলো” জয় বিরক্তি সহকারে বলল ।
“ তুই এসব কি বুঝবি , এবস বুদ্ধিমান মানুষের কাজ , তোর মত মাংস পিন্ড এসব বুঝবে না” জান্নাত ঝারি মেরে বলল ,
জয় আরো কিছু বলতে তেড়ে যাচ্ছিলো , কিন্তু রহিম থামিয়ে দিলো , বলল “ তুই কি করিস সেটা বল না”
“ ছোট আব্বু , তোমার এই ছেলে কি করে না সেটা জিজ্ঞাস করো” জয়ের উত্তরে সবাই হেসে ফেললো
এবার আয়শা রানী কে বুকে টেনে নিয়ে জিজ্ঞাস করলো “ আমার মায়ের কি সখ”
রানী চুপ করে থাকলো , তবে ওর হয়ে রহিম উত্তর দিয়ে দিলো “ রানী বেশ ভালো নাচ করে , কয়েকটা প্রাইজ ও পেয়েছে”
ঘরের বাকি সবাই অবাক হয়ে গেলো , এক সাথেই ই বলে উঠলো “ তাই নাকি”
জান্নাত তো উঠেই দাঁড়ালো , হাতে মাইক আছে এমন ভাব করে বলতে শুরু করলো “ সুধী দর্শক এখন আমাদের মাঝে নাচ পরিবেশন করবে , মহারানী মাস্তানি”
সবাই রিকোয়েস্ট করতে লাগলো , রাজীব ও নিরিবে একবার চোখ ইশারা করে আশ্বাস দিলো । শেষে সবার অনুরধে নাচতে রাজি হলো রানী । বেশি না মাত্র পাচ মিটিতের একটা নাচ পরিবেশন করলো , সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সেই নাচ উপভগ করলো । রানীর লম্বা শারীরিক গঠন নাচের জন্য একদম পারফেক্ট , মুভমেন্ট গুলো ও বেশ গ্রেস্ফুল , পুরো পাঁচ মিনিট নাচের ছন্দে সবাই কে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে রাখলো । সব শেষে একটা শেষ চক্কর দিয়ে লজ্জায় নিজের মুখ ঢেকে ফেললো ।
নাচ শেষ হওয়ার পর ও বেশ কিছুক্ষন সবাই চুপ হয়ে রইলো । সবাই ভেবেছিলো এমেচার লেভেলের কিছু দেখবে । কিন্তু রানীর প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া ছিলো একদম মাপা আর এফরটলেস । এতো ভালো নাচ হয়তো কেউ আশা করেনি । এমন কি রাজীব আর রহিম ও নয় । এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলো সবাই , এমনকি জয়ের মত চুটল বেক্তির মুখ ও বন্ধ হয়ে গেছে ।
বেশ কিছুক্ষন পর সবার অবাক হওয়ার রেষ কেটে গেলে সবাই এক সঙ্গে হাততালি দিতে শুরু করলো । এতে রানী আরো লজ্জায় পরে গেলো ।
“ বাহ মা , তুই তো অনেক ভালো নাচিস , এটা প্রফেশন হিশেবে নেয়ার ইচ্ছা আছে নাকি? ” প্রথমে আয়শা কথা বলে উঠলো
“ হ্যা হ্যা , ঠিক বলেছো” জয়নাল আয়শার কথায় সায় দিলো ।
“ অরে তুই তো মাস্তানিকেও হার মানিয়ে দিলি” জান্নাত খুশিতে জড়িয়ে ধরলো বান্ধবিকে ।
রহিম আর রাজীব গর্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রানীর দিকে মুখে স্মিত হাসি ।
সুধু কিছু বল্লনা জয় , কেমন জানি একটু উদাস হয়ে গেছে ও ।
সবার শেষে রানী জানালো নাচ সুধু ওর হবি , ও বলল “ আমি তো এমনি টিভি দেখে দেখে নাচ শিখেছি , পরে ভাইয়ার চাপাচাপিতে অল্প কিছু শিখেছি , এটা প্রফেশন হিশেবে নিতে চাই না , আমি আমার আব্বুর মত শিক্ষক হতে চাই”
রানীর কথা শুনে সবাই খুব খুশি হলো , জয়নাল বলে উঠলো , “ সাবাস একেবারে বাপ কা বেটি হবি তুই”
এই কথায় আলচনার টপিক চেঞ্জ হয়ে গেলো , জয়নাল রাজীব কে জিজ্ঞাস করলো “ রাজীব , কদিন পরে ভার্সিটিতে ভর্তি হবি , এর পর কি চিন্তা আছে ?”
রাজীব একটু হেসে বলল “ এখনো ঠিক করিনাই বড় আব্বু তবে আমার ফটোগ্রাফার হওয়ার ইচ্ছে আছে ”
“ মানুষের ছবির চেয়ে ভাইয়া গাছ পালার ছবি তুলতে বেশি পছন্দ করে” রানী মাঝ থেকে ফোঁড়ন কাটলো ,
“ সে কিরে? সুধু গাছ পালার ছবি তুলিস” আয়শা একটু অবাক হলো ,
“ এটা বোটানিকাল ফটোগ্রাফি বড় আম্মু” রাজীব একটু খোলাসা করে বলে
“ তোর কি ইচ্ছা জান্নাত” জয়নাল জান্নাতের দিকে তাকিয়ে প্রস্ন করলো ।
“ আমি সাংবাদিক হবো” জান্নাত বেশ কনফিডেন্সের সাথে উত্তর দিলো
“ আরে বাহ , এই তো আমার লক্ষি মেয়ে” জয়নাল খুশি হয়ে বলল , বাকি সবাই ও খুশি হলো
“ তা জয় বাবা আপনি ভবিষ্যতে কি করতে চান” জয়নাল মজা করে জিজ্ঞাস করলো
জয়ের উত্তর ও এলো মজা করে “ ভবিষ্যৎ কে দেখছে আব্বু , না তুমি না আমি , ভবিষ্যৎ কে ওর নিজের জায়গায় রেখে দাও , এখন তো ভার্সিটি লাইফ এঞ্জয় করতে চাই , রাজীবের সাথে”
বাকি সবাই হেসে উঠলেও জয়নাল ,স্ত্রীর দিকে চোখ মটকিয়ে তাকালো , যার অর্থ দাড়ায় ‘তুমি একে কিছু বলবে ,নাকি আমি বলবো’ ।
পরদিন সকালে শিকদার ফ্যামিলি আবার চৌধুরী বাড়ি থেকে নিজেদের ব্যাগ পত্তর গুছিয়ে নিজেদের শহরে রওনা হলো । যাওয়ার সময় সবাই সবাইকে বিদায় জানালো ,তবে এবার আর সেই বিদায়ে দুঃখ নেই , আছে আনন্দ কারন আর কদিন পর ওরা সবাই আবার একসাথে থাকবে । রাওহিম নিজের কোচিং বিজনেস ওখান থেকে গুটিয়ে এখানে নিয়ে আসতে যত সময় লাগে , সুধু তত সময়ের অপেক্ষা । এর মাঝে শিকদার বাড়ির কিছু মেরামতের কাজ জয়নাল নিজের জিম্মায় নিয়ে নিলো ।
সব প্রশ্নের উত্তর নেই,
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)