11-07-2025, 03:44 AM
(This post was last modified: 11-07-2025, 03:51 AM by lucifer93. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব-০২
ভালো করে তাকালাম মেয়েটির দিকে থ্রি পিসের সাথে ওড়না দিয়ে মাথা ঢেকে এসেছে মেয়েটি। গোলাপি কালারের ওড়নাটি ওর চুলের গোড়া থেকে দুই কানের সামনে দিয়ে নেমে থুতনির নিচ দিয়ে চলে গেছে পেট পর্যন্ত। গোলাপি ওড়নার কারনে মুখটিকে কুঁড়ি থেকে বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করা গোলাপ ফুলের মত মনে হলো। দুধে আলতা রঙ এর সাথে নারিকেল দুটি চোখ ত্রিকোনাকৃতি চৌকো নাক আর তার ঈষৎ নীচে ভরাট গোলাপি দুই ঠোট। চেহারাটা মায়াময় কিন্তু দুষ্টুমীতে পরিপূর্ণ মনে হলো। চেয়ারে একটু ঝুকে বসাতে আর ওড়নাটি ওর কোল অবধি থাকাতে কিছু অনুমান না করতে পারলেও একটু খটকা লাগলো।
- ও রাইসা আপনার ছাত্রী। রাইসার মায়ের কথায় ভাবনায় ছেদ পরলো চোখ তুলে তার দিকে তাকালাম। রাইসা ইনি হচ্ছেন তুহিন স্যার তোমার নতুন টিচার সালাম দাও। রাইসা খুব সুন্দর করে সালাম দিলো আমি প্রতিউত্তর করলাম।
- ও একদমই পড়তে চায় না জানেন তবে মাথাটা বেশ ভালো একটু বুঝিয়ে দিলেই বুজতে পারে ওকে একটু বেশি সময় দিয়ে বুঝিয়ে পড়াতে হবে।
- বললাম চিন্তা করবেন না আমি যথাসাধ্য বুঝিয়ে পড়ানোর চেষ্টা করব।
- তাহলে আজ থেকেই শুরু করুন।
আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সুমন বলে উঠলো হ্যাঁ অবশ্যই, আমি সোমাকে পড়াতে যাচ্ছি তুই রাইসাকে পড়িয়ে নে তারপড় একসাথে যাওয়া যাবে। কিছু বলার সু্যোগ না পেয়ে আমি ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালাম।
- তাহলে আপনারা নাস্তা শেষ করুন তারপর আমি ওকে পাঠিয়ে দিচ্ছি এই বলে উনি রাইসাকে নিয়ে ভেতরে চলে গেলেন।
আচ্ছা রাইসার মায়ের বয়স কত হবে? নিজের মনেই প্রশ্নটা করলাম। মহিলাকে দেখে মনে হলো ৩৭-৩৮ এর কম হবে না একটু মোটাটে ধরনের আর পাঁচটা বাঙ্গালি গৃহিনীর মতই সাধারন। কিন্তু রাইসার চেহারার সাথে তার চেহারার খুব একটা মিল নেই বাবার মত হয়েচে বোধহয়।
যাইহোক আমি আর সুমন ট্রে তে রাখা কাটা আপেল আর মাল্টা শেষ করতে লাগলাম। যারা জীবনে টিউশানি করেছেন তারা জানেন এই সাধারন নাস্তা টিউশানিতে কতটা অর্থ বহন করে। নাস্তাটা হলো অভিভাবকের তরফ থেকে টিউশন টিচারকে দেয়া এক ধরনের মেসেজ যেমন ধরুন প্রথমদিনের নাস্তা হবে পরিপূর্ণ অর্থাৎ ট্রে তে ফল থেকে শুরু করে বিস্কিট চা সবই থাকবে এর পর থেকে নাস্তার পরিমান ও গুনাগুন হবে আপনার পারফর্মেন্স এর উপর নির্ধারন করে। স্টুডেন্ট পড়াশোনায় ভালো করলে বা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি পড়ালে আপনি ভালো বিস্কিট, দুধ চা ও নতুন নতুন আইটেম পাবেন আর স্টুডেন্ট পড়াশোনায় খারাপ করলে আপনার কপালে জুটবে বাসি কোনও খাবার অথবা টোস্ট বিস্কিট আর চিনিকম লাল চা।
- আমি তাহলে যাই তুই পড়ানো শেষকরে কল দিস।
- আচ্ছা, তোর আগে শেষ হলে তুই কল দিস।
সুমন উঠে দারিয়ে আপু আপু বলে রাইসার মাকে ডাকতে লাগলো। আমার খাওয়াও শেষ হয়ে গিয়েছিলো তাই আমিও উঠে দাড়ালাম। রাইসার মা এসে খালি ট্রে টা দেখে সুমনকে বলল-
- একটু বসুন চা করে দিই।
- না আপু এখন আর বসব না সোমাকে পড়াতে হবে অন্য একদিন এসে চা খাব।
- ঠিকাছে এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল রাইসা কে পাঠিয়ে দিই?
- জ্বী আসতে বলুন।
সুমন বেরিয়ে গেলো। রাইসার মা গেটটা লাগিয়ে রাইসা পড়তে এসো বলে সোজাসুজি রুমটাতে ঢুকে গেলেন। আমি খাটের মাথার দিকটাতে ডান পা ভাজ করে বাম পা টা খাটের বাহিরের দিকে ঝুলিয়ে বসলাম। পাশের দুটো বালিশ থেকে একটি টেনে নিয়ে কোলের উপর রাখলাম আরেকটি বালিশ সামনে রাখলাম। টেবিল চেয়ার না থাকলে আমি টিউশানিতে গিয়ে এভাবেই বসি। রাইসা *টা পড়তে পরতে রুম থেকে বের হচ্ছিলো। আমি ওর চুলগুলো দেখতে পাচ্ছিলাম বেশ বড় ওর চুল। এবার ওকে দেখে ক্লাস সিক্সের মেয়েদের তুলনায় বেশ বড় বলে মনে হলো। রাইসা এসে খাটের পাশে রাখা টেবিল থেকে ওর বইপত্র নিয়ে সামনে বসে বালিশের উপর বই রাখলো।
- কোন বইটা বের করব? জিজ্ঞেস করল।
- তোমার যেটা ভালো লাগে সেটা দিয়েই শুরু করব আজকে, বললাম আমি।
- তাহলে অঙ্ক করি।
- আচ্ছা।
কলেজের দ্বিতীয় সাময়িক পরিক্ষা শেষে রাইসাকে পড়ানো শুরু করলাম আমি তাই ও যে চ্যাপ্টার গুলো বার্ষিক পরিক্ষায় আছে তার মধ্যে থেকে একটা চ্যাপ্টারের অঙ্ক করা শুরু করলো। যেখানে আটকে যাচ্ছিলো আমি দেখিয়ে দিতেই বাকীটা ও নিজেই করে নিজেই করে নিতে পারছিলো। এরই মধ্যে আমার মোবাইলটা বেজে উঠতে পকেট হাতড়ে মোবাইলটা বের করে দেখি একা’র কল। রিসিভ করে বললাম-
- হ্যালো
- বাব্বাহ এ কয়দিনে একবারও কল দিলি না? মনে পড়েনি বুঝি?
- না ঠিক তা নয়, আসলে টিউশানিতে আছি বের হয়ে কল দেই?
- আচ্ছা ঠিক আছে। বলে লাইন কেটে দিলো।
কে কল দিয়েছিলো আপনার গার্লফ্রেন্ড নাকি? বলে উঠলো রাইসা।
কেমন হচ্ছে লেখাটা। জানালে উপকৃত হই। আসলে পাঠক প্রতিক্রিয়া থাকলে লিখতে অনেক ভালো লাগে। বোঝা যায় যা লিখছি তা মানে ও গুনে কতটা পাঠকের কাছে পৌছচ্ছে। তাই দয়া করে আপনাদের মুল্যবান মতামত অবশ্যই জানাবেন। অপেক্ষায় থাকব।