21-06-2025, 02:51 AM
পর্ব ৩ :
সেদিন সন্ধ্যেবেলায় মদনবাবুকে চা দিয়ে মধুমিতা নিজেই কথা বলল। বলল - আজকে দুপুরে আপনাকে অমন কথা বলা আমার উচিত হয়নি। আমি বুঝতে পারিনি আপনি এতটা রেগে যাবেন ।
মদনবাবু মধুমিতাকে থামিয়ে বললেন - আর কখনো বোলো না ছোটবৌ। তা দাঁড়িয়ে কেন বোসো না।
মধুমিতা বসলে মদনবাবু আবার বললেন - আসলে ছোটবৌ, সম্পর্কে তুমি আমার স্ত্রী কিন্তু বয়সে আমি অনেকটাই বড় তোমার থেকে, তাই দুনিয়াদারি তো কম দেখলাম না। সেখানে তোমার এমন কচি বয়সে কোথায় আর পাঁচটা মেয়ের মত সাজবে, গুজবে, অভিমান করবে, তা নয় মুখ গুঁজে যন্ত্রের মত করে কাজ করে যাও। ওটাই দেখতে কষ্ট লাগে। তাই তোমাকে বলা। বলতে দ্বিধা নেই, আমি ইচ্ছা করেই তোমার অন্তর্বাসের দিকে নজর দিয়েছিলাম। মনে করছিলাম ভালোমন্দ কিছু তো তুমি বলবে। অবশ্য মন্দটাই ভেবেছিলাম আগে।
মধুমিতা মদনবাবুর কথায় লজ্জা পেলেও, তার মধ্যে লজ্জা ছাপিয়ে কৌতূহল বেশি জাগল। তাই অবাক হয়ে বলল - মন্দ মানে ?
মদনবাবু বোঝানোর ভঙ্গিমায় বললেন - মন্দ মানে, আমি তোমার অন্তর্বাস নিয়ে যেটা করছিলাম, তাতে ভেবেছিলাম তুমি রেগে যাবে বা ঐরকম কিছু একটা করবে। তাতে অন্তত এটুকু বুঝতাম তুমি ঠিক আছো। কিন্তু তোমার মধ্যে কোন কিছুই দেখলাম না। হ্যাঁ, তুমি লজ্জা পেয়েছিলে। কিন্তু সেটা খুবই স্বাভাবিক একটা জিনিস। যে কেও পাবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি এইভাবে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছো কেন ?
মধুমিতা মাথা নিচু করে নিজের শাড়ির আঁচলের খুঁট নিজের আঙুলে জড়াতে লাগল। মদনবাবু কিছুক্ষন থেমে আবার বললেন - ছোটবৌ আমি তোমাকে খুশি দেখতে চাই। আমি আগেও বলেছি। তোমার মনের কথা যদি বিশ্বাস করে না বোলো, আচ্ছা বিশ্বাস করতে হবে না। ভরসা করে বোলো। কোন ছোটো কিছু কথা, যেটা অন্তত ভরসা করে বলা যায়। তারপর দেখ আমি ভরসা রাখতে পারছি কিনা। তারপরে না হয় বিশ্বাস করে বোলো। আমাকে ভুল বুঝো না ছোটবৌ। আমি কোনো স্বামীর দাবি করছি না তোমার ওপর। আমি শুধু একজন গুরুজন হয়ে তোমাকে বলছি। বাকি তোমার ইচ্ছা।
মধুমিতা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল - আসলে সত্যি বলতে আমি নিজেও বুঝে উঠতে পারছি না, আমি কি করব। আপনি বলছেন বটে কিন্তু আমি যেন কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। আপনি সাজতে বলছেন কিন্তু সেখানেও আবার ভয় লাগে, যদি সেই সাজগোজ আপনার পছন্দ না হয়। আবার বেশি সাজগোজ করলে যদি আমাকে আবার খারাপ মেয়ে ভেবে বসেন। তাই বুঝে উঠতে পারছি না।
মদনবাবু যেন বুঝলেন মধুমিতার সমস্যাটা। সেইরকম ভাবেই বললেন - খারাপ কেন ভাবতে যাব ছোটবৌ। সম্পর্কে আমি তোমার স্বামী, আর সেই হিসাবে আমার সামনে তুমি সেইরকম পোশাকও পড়তে পারো যা তুমি কারোর সামনে পড়তে পারবে না। তাতে তুমি খারাপ কেন হতে যাবে। হ্যাঁ, এটা হতে পারে যে সেই পোশাকে তোমাকে ভালো নাও লাগতে পারে। সেটা হতেই পারে, তাতে তুমি কেন খারাপ হয়ে যাবে !?
মধুমিতা কিন্তু কিন্তু করে বলল - না মানে , এমনি বলছিলাম।
মদনবাবু বোঝানোর গলায় বললেন - দেখ ছোটবৌ, স্বামীরা চাই তাদের স্ত্রীকে সে একটু অন্য্ চোখে দেখতে, মানে যতদূর আমি জানি। যে চোখে অন্যমেয়েদের দেখা উচিত নয়। অবশ্য আমি এটাও বুঝি ছোটবৌ, আমাকে স্বামী হিসাবে মনে মনে ভাবাটা তোমার কাছে সহজ নয়। তারজন্য আমি তোমাকে আগেও যা বলেছি এখনো তাই বলছি। তুমি চাইলে ডিভোর্স করতে পারো। তাতে আমি তোমাকে কোথাও তাড়িয়ে দোব না। তারপরেও তুমি এখানে, এই বাড়িতে নিঃসংকোচে থাকতে পারবে।
মধুমিতা এবার মদনবাবুকে থামিয়ে দিয়ে বললেন - আপনি দয়া করে আর ওই ডিভোর্সের কথা আমার সামনে আর কোনোদিন তুলবেন না। নাহলে আমি কিন্তু এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।
মধুমিতার এই প্রথম এমন জোরালো দাবি শুনে মদনবাবু থমকে গেলেন একমুহূর্তের জন্য। পরক্ষনেই বলে উঠলেন - শাবাস। এইতো চাই। ছোটবৌ তোমার মধ্যে এটাই আমি দেখতে চাই।এইযে নিজের অধিকার দেখাচ্ছ। তবে কথা দিচ্ছি আর কোনোদিন আমি ঐ কথা আমার মুখে আনবো না।
মধুমিতা মৃদু কিন্তু পরিষ্কার গলায় এবার বলল - অধিকার কিনা জানিনা, কিন্তু সত্যি বলছি আমার শুনতে একদম ভালো লাগে না। আপনি যদি তাড়িয়ে দেন সেটা আলাদা। আমি নিজে থেকে আপনাকে ছেড়ে যাব না।
মদনবাবু পরিবেশ হালকা করার জন্য বললেন - আচ্ছা, কেও কাওকে তাড়াবে না। এখন মোদ্দা কথা হল। তুমি কাল থেকে সাজগোজ করবে। ঠিক আছে।
মধুমিতা শুধু হ্যাঁ বাচক একটা ঘাড় নাড়ল। দিয়ে রান্নার কাজ আছে বলে উঠে চলে গেল।
তবে পরেরদিন থেকে মদনবাবু দেখলেন মধুমিতা সাজগোজ না করলেও আগে যেমন একটা ছন্নছাড়া ভাবে থাকতো, যেমন-তেমন করে পোশাক পরে আলুথালু থাকতো, তার থেকে এখন অনেকটাই পরিপাটি হয়ে থাকছে। এই জিনিসটা দু-তিনদিন খেয়াল করে এক সন্ধ্যেবেলায় মদনবাবু আবার কথাটা পারলেন। আসলে এই সন্ধ্যে করে মদনবাবু মধুমিতার সাথে কথা বা গল্প করার চেষ্টা করেন। কারণ সকাল টা ওনার জমি নিয়েই কেটে যাই। দুপুরে বাড়ি এসে খাওয়া-দাওয়া করেন ঠিকই। কিন্তু দুপুরে মধুমিতার বিশ্রামে বাধা হতে চাননি। আর বিকেলে টুকটাক বাজার বা জমি দেখে আসেন। দিয়ে এই সন্ধ্যেবেলায় সময় করে মধুমিতার সাথে কথা বলে আরও মিশতে চান। তা যাই হোক। মদনবাবু বললেন - তা ছোটবৌ কেমন লাগছে বোলো সাজগোজ করতে। আমার কথা আগেই বলে দিচ্ছি, আমার কিন্তু বেশ লাগছে। হ্যাঁ সেরকম সাজগোজ হয়তো করোনি, কিন্তু এই যে পরিপারি হয়ে আছো এটাও দেখতে খুব ভালো লাগছে। তোমার কেমন লাগছে ?
মধুমিতা ছোট্ট করে বলল - ভালো।
- বেশ। তাহলে কাল বাদ পরশু রবিবার। তা ঐদিনকে তোমার অসুবিধা না থাকলে একটু ঘুরে আসি। ভাবছি সিনেমা দেখতে গেলে কেমন হয়। তোমার কি মত বোলো ছোটবৌ ?
মধুমিতা একটু গাঁইগুঁই করলেও মদনবাবু কানে তুললেন না। মধুমিতাও আর বেশি আপত্তি করল না। সিনেমা দেখতে যাবার দিন মধুমিতা একটা মেরুন রঙের কাঞ্জিভরম শাড়ি পড়ল। সাথে মানানসই ব্লাউজ। মধুমিতাকে ওই শাড়িতে অপ্সরা মনে হচ্ছিল। মদনবাবু চোখের দৃষ্টিতেই বোঝালেন মধুমিতাকে দারুন লাগছে। সিনেমা হলে সিনেমা দেখে রাতের খাবার বাইরেই খেয়ে নিলেন মদনবাবু। আসলে বিকেলের শো ছিল তাই অসুবিধা হল না। রেস্টুরেন্টে খেতে খেতে মদনবাবু বললেন - অসাধারণ লাগছে তোমায় ছোটবৌ। সিনেমা দেখতে এলে এমন সাজগোজ করবে জানা হয়ে গেল। এবার তো প্রতি রবিবার সিনেমা দেখা বাঁধা। এই সুযোগে তোমাকে সাজগোজ তো করাতে পারবো।
মধুমিতা আপত্তি করে উঠল। বলল - কি দরকার শুধু শুধু এত টাকা খরচ করার। আমি না হয় বাড়িতেই সাজগোজ করব। শুধু শুধু আপনাকে এত টাকা খরচ করতে হবে না।
- হুম, যদি কথা দাও তাহলে করব না। না হলে তুমি না আসলেও আমি চলে আসবো কিন্তু সিনেমা দেখতে।
মধুমিতা লাজুক গলায় বলল - আচ্ছা বেশ। এবার থেকে প্রতি রবিবার আমি সাজবো।
- শুধু সাজবে নয়, মন খুলে সাজগোজ করবে। বাড়িতে তুমি আর আমি ছাড়া কেও নেই। সেরকম হলে বিকেলের পরে সাজগোজ করবে। দিয়ে আমরা গল্প করবো। সন্ধ্যেবেলায় তো কেও আসার নেই।
মধুমিতা লাজুক হেঁসে মাথা নেড়ে বলল - আচ্ছা বেশ।
পরেরদিন থেকে মদনবাবু একটা জিনিস খেয়াল করলেন, মধুমিতার মুখ শুকনো করে থাকাটা নেই। একটু হলেও যেন মেয়েটা খুশি। সান্ধ্যকালীন গল্পেও মধুমিতা আগের মত চুপ না থাকলেও টুকটাক কথা বলতে লাগল। দেখতে দেখতে পরের রবিবার চলে এলো। মদনবাবু সকালেই মধুমিতাকে মনে করিয়ে দিয়েছিল। সন্ধ্যেবেলায় মদনবাবু মধুমিতাকে দেখে খুশি হল। মধুমিতা একটা হুলুদ রঙের তাঁতের শাড়ি পড়েছিল, সাথে লাল রঙের ঘটিহাতা ব্লাউজ। আর স্বাভাবিক ভাবেই মধুমিতাকে দারুন দেখতে লাগছিল। মধুমিতা ওই পোশাকে চা দিতে এলে, মদনবাবু মধুমিতার হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে মধুমিতাকে পাশের চেয়ারে বসতে বললেন। মধুমিতা বসলে মদনবাবু বললেন - খুব সুন্দর আর খুব মিষ্টি লাগছে তোমাকে ছোটবৌ। তোমার কি মনে হচ্ছে ছোটবৌ ? ভালো লাগছে সাজতে ?
মধুমিতা মাথা নেড়ে বলল - হ্যাঁ ভালো লাগছে। কিন্তু আপনি যেমন বলছেন অতটাও সুন্দর নোই আমি। শুধু শুধু আমার মন রাখার জন্য মিথ্যে কেন বলছেন !
মদনবাবু যেন অবাক হয়েছেন এমন ভাব করে বললেন - মিথ্যে কেন বলবো। তোমাকে সত্যি আমার ভালো লাগছে দেখতে।
তারপর একটু মজা করে মদনবাবু বললেন - লোকে ঠিকই বলে, সুন্দরী মেয়েদের প্রশংসা করলেও তাদের মন ভোরে না।
মধুমিতা ছদ্ম রাগের ভান করে বলল - ধ্যাৎ, খালি ওসব কথা আপনার। আমি মোটেও ঐভাবে বলিনি। আমি শুধু বলেছি, আপনি বেশি বেশি করে আমার প্রশংসা করেন।
এইরকম টুকটাক কথায় পরিবেশটা আরও হালকা হলে মদনবাবু বললেন - আচ্ছা ছোটবৌ, একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো ?
- হ্যাঁ বলুন না।
- তোমার আপত্তি থাকলে নাও বলতে পারো, কোন জোর করছি না কিন্তু।
- ঠিক আছে আপনি বলুন না। আপনার কাছে আমার কেন আপত্তি থাকবে।
- বেশ। আচ্ছা, তোমার কি ধরণের পোশাক পড়তে বেশি ভালো লাগে। এই শাড়ি, না সালোয়ার-কামিজ, না কুর্তি-লেগ্গিংস, না জিন্সের প্যান্ট আর জামা ? কোন ভয় নেই। মন খুলে বলতে পারো। অবশ্য তোমার আপত্তি না থাকলে।
মধুমিতা সহজ ভাবেই বলল - আপত্তি কেন থাকবে। কোনো আপত্তি নেই। ভালো লাগে বেশি কোনটা সেটা ওতো ভাবিনি। বিয়ের আগে তো সালোয়ার-কামিজ আর লেগ্গিংস-কুর্তি পড়েছি। শাড়ি পড়তেও ভালো লাগে। তবে জিন্সের জামা-কাপড় পড়িনি। মানাবে কিনা জানি না। তবে ইচ্ছা আছে একবার পরে দেখার।
- বেশ তো। একদিন না হয় কিনে আনা যাবে। তোমার ইচ্ছা করেছে ব্যাস আমার কোনো আপত্তি নেই।
একটু থেমে মদনবাবু আবার বললেন - আচ্ছা সাহস যদি দাও একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করবো ছোট বৌ ?
মধুমিতা একটু যেন থমকে গেল মদনবাবুর শেষের প্রশ্নটা শুনে। একটু আমতা আমতা করে বলল - হ্যাঁ বলুন না।
মদনবাবু একটু নরম গলায় বললেন - না মানে আমার প্রশ্ন শুনে তুমি উত্তর না দিলেও আমি কিছু মনে করব না।
মধুমিতা কিছু না বলে মদনবাবুর দিকে তাকিয়ে থাকল। মদনবাবু একটু গলা ঝেড়ে নিয়ে বললেন - না মানে , তোমার শাড়ি বোলো বা অন্য্ পোশাক, তা একটু খোলামেলা পড়তে কি ইচ্ছা করে। অবশ্যই এতে কোনো দোষের নেই। এই বাড়ির মধ্যে আমি ছাড়া কেও নেই। আমি শুধু জানতে চাইছি।
মদনবাবু থামলে মধুমিতা মাথা নিচু করে চুপ করে বসেই থাকল। বেশ কিছুক্ষন সময় নিয়ে মধুমিতা বলল - ইচ্ছা তো করে। কিন্তু মামী কথায় কথায় বলতো ঐরকম পোশাক নাকি খারাপ মেয়েরা পরে। তাই। ....
এই বলে মধুমিতা চুপ করে গেল। মদনবাবু একটু সময় নিয়ে বললেন - তাই মনের ইচ্ছা মনে রেখে দিলে। হুম। আমি তোমাকে জোর করবো না। তোমার যদি মন চাই তাহলে তুমি পড়তে পারো ছোটবৌ। আমার কোনো আপত্তি নেই।
মধুমিতা এবার একটা বালিকা সুলভ প্রশ্ন করল - আপনি আমাকে খারাপ মেয়ে ভাববেন নাতো ?
মদনবাবু মধুমিতার এমন প্রশ্নে হেঁসে ফেললেন। হাঁসি মুখেই বললেন - নাহ, আমি তোমাকে খারাপ মেয়ে ভাববো না ছোটবৌ। আর সম্পর্কে তুমি আমার স্ত্রী, সেই হিসাবেই বলছি, তোমাকে ওমন পোশাকে দেখার অধিকার আমার আছে । মানে খারাপ ভাবে নিওনা ছোটবৌ।
মদনবাবুর কথায় মধুমিতা কি উত্তর দেবে ঠাওর করতে পারল না। সে একটু ভেবে বলল - আপনার কোন দোষ নেই, আপনি স্বামী, আপনার অধিকার আছে। আমি কিছু মনে করিনি।
মদনবাবু মধুমিতার কথা শুনে অস্বস্ত্ব হয়ে বললেন - ভয় নেই ছোটবৌ, আমি তোমার সাথে কোন জোর-জবরদস্তি করবো না। এব্যাপারে তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো।
মধুমিতা মাথা নামিয়ে লজ্জা লজ্জা গলায় বলল - আপনার ওপর আমার পুরো বিশ্বাস আছে। আর আপনি চাইলে পরের রবিবার না হয় আমি আপনার সামনে খোলামেলা পোশাক পরেও আসতে পারি। আমার আপত্তি নেই।
- ঠিক তো ছোটবৌ। আমার মন রাখার জন্য বলছো নাতো ?
- না না। মন রাখার জন্য নয়।
- বেশ তো। আমার তো কোনো আপত্তি নেই। তাহলে ঐ কথায় রইলো ছোটবৌ। পরের রবিবার তোমাকে যেন খোলামেলা শাড়িতে দেখি। ঠিক তো।
মধুমিতা লজ্জা পেয়ে উঠে চলে গেল।
সেদিন সন্ধ্যেবেলায় মদনবাবুকে চা দিয়ে মধুমিতা নিজেই কথা বলল। বলল - আজকে দুপুরে আপনাকে অমন কথা বলা আমার উচিত হয়নি। আমি বুঝতে পারিনি আপনি এতটা রেগে যাবেন ।
মদনবাবু মধুমিতাকে থামিয়ে বললেন - আর কখনো বোলো না ছোটবৌ। তা দাঁড়িয়ে কেন বোসো না।
মধুমিতা বসলে মদনবাবু আবার বললেন - আসলে ছোটবৌ, সম্পর্কে তুমি আমার স্ত্রী কিন্তু বয়সে আমি অনেকটাই বড় তোমার থেকে, তাই দুনিয়াদারি তো কম দেখলাম না। সেখানে তোমার এমন কচি বয়সে কোথায় আর পাঁচটা মেয়ের মত সাজবে, গুজবে, অভিমান করবে, তা নয় মুখ গুঁজে যন্ত্রের মত করে কাজ করে যাও। ওটাই দেখতে কষ্ট লাগে। তাই তোমাকে বলা। বলতে দ্বিধা নেই, আমি ইচ্ছা করেই তোমার অন্তর্বাসের দিকে নজর দিয়েছিলাম। মনে করছিলাম ভালোমন্দ কিছু তো তুমি বলবে। অবশ্য মন্দটাই ভেবেছিলাম আগে।
মধুমিতা মদনবাবুর কথায় লজ্জা পেলেও, তার মধ্যে লজ্জা ছাপিয়ে কৌতূহল বেশি জাগল। তাই অবাক হয়ে বলল - মন্দ মানে ?
মদনবাবু বোঝানোর ভঙ্গিমায় বললেন - মন্দ মানে, আমি তোমার অন্তর্বাস নিয়ে যেটা করছিলাম, তাতে ভেবেছিলাম তুমি রেগে যাবে বা ঐরকম কিছু একটা করবে। তাতে অন্তত এটুকু বুঝতাম তুমি ঠিক আছো। কিন্তু তোমার মধ্যে কোন কিছুই দেখলাম না। হ্যাঁ, তুমি লজ্জা পেয়েছিলে। কিন্তু সেটা খুবই স্বাভাবিক একটা জিনিস। যে কেও পাবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি এইভাবে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছো কেন ?
মধুমিতা মাথা নিচু করে নিজের শাড়ির আঁচলের খুঁট নিজের আঙুলে জড়াতে লাগল। মদনবাবু কিছুক্ষন থেমে আবার বললেন - ছোটবৌ আমি তোমাকে খুশি দেখতে চাই। আমি আগেও বলেছি। তোমার মনের কথা যদি বিশ্বাস করে না বোলো, আচ্ছা বিশ্বাস করতে হবে না। ভরসা করে বোলো। কোন ছোটো কিছু কথা, যেটা অন্তত ভরসা করে বলা যায়। তারপর দেখ আমি ভরসা রাখতে পারছি কিনা। তারপরে না হয় বিশ্বাস করে বোলো। আমাকে ভুল বুঝো না ছোটবৌ। আমি কোনো স্বামীর দাবি করছি না তোমার ওপর। আমি শুধু একজন গুরুজন হয়ে তোমাকে বলছি। বাকি তোমার ইচ্ছা।
মধুমিতা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল - আসলে সত্যি বলতে আমি নিজেও বুঝে উঠতে পারছি না, আমি কি করব। আপনি বলছেন বটে কিন্তু আমি যেন কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। আপনি সাজতে বলছেন কিন্তু সেখানেও আবার ভয় লাগে, যদি সেই সাজগোজ আপনার পছন্দ না হয়। আবার বেশি সাজগোজ করলে যদি আমাকে আবার খারাপ মেয়ে ভেবে বসেন। তাই বুঝে উঠতে পারছি না।
মদনবাবু যেন বুঝলেন মধুমিতার সমস্যাটা। সেইরকম ভাবেই বললেন - খারাপ কেন ভাবতে যাব ছোটবৌ। সম্পর্কে আমি তোমার স্বামী, আর সেই হিসাবে আমার সামনে তুমি সেইরকম পোশাকও পড়তে পারো যা তুমি কারোর সামনে পড়তে পারবে না। তাতে তুমি খারাপ কেন হতে যাবে। হ্যাঁ, এটা হতে পারে যে সেই পোশাকে তোমাকে ভালো নাও লাগতে পারে। সেটা হতেই পারে, তাতে তুমি কেন খারাপ হয়ে যাবে !?
মধুমিতা কিন্তু কিন্তু করে বলল - না মানে , এমনি বলছিলাম।
মদনবাবু বোঝানোর গলায় বললেন - দেখ ছোটবৌ, স্বামীরা চাই তাদের স্ত্রীকে সে একটু অন্য্ চোখে দেখতে, মানে যতদূর আমি জানি। যে চোখে অন্যমেয়েদের দেখা উচিত নয়। অবশ্য আমি এটাও বুঝি ছোটবৌ, আমাকে স্বামী হিসাবে মনে মনে ভাবাটা তোমার কাছে সহজ নয়। তারজন্য আমি তোমাকে আগেও যা বলেছি এখনো তাই বলছি। তুমি চাইলে ডিভোর্স করতে পারো। তাতে আমি তোমাকে কোথাও তাড়িয়ে দোব না। তারপরেও তুমি এখানে, এই বাড়িতে নিঃসংকোচে থাকতে পারবে।
মধুমিতা এবার মদনবাবুকে থামিয়ে দিয়ে বললেন - আপনি দয়া করে আর ওই ডিভোর্সের কথা আমার সামনে আর কোনোদিন তুলবেন না। নাহলে আমি কিন্তু এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।
মধুমিতার এই প্রথম এমন জোরালো দাবি শুনে মদনবাবু থমকে গেলেন একমুহূর্তের জন্য। পরক্ষনেই বলে উঠলেন - শাবাস। এইতো চাই। ছোটবৌ তোমার মধ্যে এটাই আমি দেখতে চাই।এইযে নিজের অধিকার দেখাচ্ছ। তবে কথা দিচ্ছি আর কোনোদিন আমি ঐ কথা আমার মুখে আনবো না।
মধুমিতা মৃদু কিন্তু পরিষ্কার গলায় এবার বলল - অধিকার কিনা জানিনা, কিন্তু সত্যি বলছি আমার শুনতে একদম ভালো লাগে না। আপনি যদি তাড়িয়ে দেন সেটা আলাদা। আমি নিজে থেকে আপনাকে ছেড়ে যাব না।
মদনবাবু পরিবেশ হালকা করার জন্য বললেন - আচ্ছা, কেও কাওকে তাড়াবে না। এখন মোদ্দা কথা হল। তুমি কাল থেকে সাজগোজ করবে। ঠিক আছে।
মধুমিতা শুধু হ্যাঁ বাচক একটা ঘাড় নাড়ল। দিয়ে রান্নার কাজ আছে বলে উঠে চলে গেল।
তবে পরেরদিন থেকে মদনবাবু দেখলেন মধুমিতা সাজগোজ না করলেও আগে যেমন একটা ছন্নছাড়া ভাবে থাকতো, যেমন-তেমন করে পোশাক পরে আলুথালু থাকতো, তার থেকে এখন অনেকটাই পরিপাটি হয়ে থাকছে। এই জিনিসটা দু-তিনদিন খেয়াল করে এক সন্ধ্যেবেলায় মদনবাবু আবার কথাটা পারলেন। আসলে এই সন্ধ্যে করে মদনবাবু মধুমিতার সাথে কথা বা গল্প করার চেষ্টা করেন। কারণ সকাল টা ওনার জমি নিয়েই কেটে যাই। দুপুরে বাড়ি এসে খাওয়া-দাওয়া করেন ঠিকই। কিন্তু দুপুরে মধুমিতার বিশ্রামে বাধা হতে চাননি। আর বিকেলে টুকটাক বাজার বা জমি দেখে আসেন। দিয়ে এই সন্ধ্যেবেলায় সময় করে মধুমিতার সাথে কথা বলে আরও মিশতে চান। তা যাই হোক। মদনবাবু বললেন - তা ছোটবৌ কেমন লাগছে বোলো সাজগোজ করতে। আমার কথা আগেই বলে দিচ্ছি, আমার কিন্তু বেশ লাগছে। হ্যাঁ সেরকম সাজগোজ হয়তো করোনি, কিন্তু এই যে পরিপারি হয়ে আছো এটাও দেখতে খুব ভালো লাগছে। তোমার কেমন লাগছে ?
মধুমিতা ছোট্ট করে বলল - ভালো।
- বেশ। তাহলে কাল বাদ পরশু রবিবার। তা ঐদিনকে তোমার অসুবিধা না থাকলে একটু ঘুরে আসি। ভাবছি সিনেমা দেখতে গেলে কেমন হয়। তোমার কি মত বোলো ছোটবৌ ?
মধুমিতা একটু গাঁইগুঁই করলেও মদনবাবু কানে তুললেন না। মধুমিতাও আর বেশি আপত্তি করল না। সিনেমা দেখতে যাবার দিন মধুমিতা একটা মেরুন রঙের কাঞ্জিভরম শাড়ি পড়ল। সাথে মানানসই ব্লাউজ। মধুমিতাকে ওই শাড়িতে অপ্সরা মনে হচ্ছিল। মদনবাবু চোখের দৃষ্টিতেই বোঝালেন মধুমিতাকে দারুন লাগছে। সিনেমা হলে সিনেমা দেখে রাতের খাবার বাইরেই খেয়ে নিলেন মদনবাবু। আসলে বিকেলের শো ছিল তাই অসুবিধা হল না। রেস্টুরেন্টে খেতে খেতে মদনবাবু বললেন - অসাধারণ লাগছে তোমায় ছোটবৌ। সিনেমা দেখতে এলে এমন সাজগোজ করবে জানা হয়ে গেল। এবার তো প্রতি রবিবার সিনেমা দেখা বাঁধা। এই সুযোগে তোমাকে সাজগোজ তো করাতে পারবো।
মধুমিতা আপত্তি করে উঠল। বলল - কি দরকার শুধু শুধু এত টাকা খরচ করার। আমি না হয় বাড়িতেই সাজগোজ করব। শুধু শুধু আপনাকে এত টাকা খরচ করতে হবে না।
- হুম, যদি কথা দাও তাহলে করব না। না হলে তুমি না আসলেও আমি চলে আসবো কিন্তু সিনেমা দেখতে।
মধুমিতা লাজুক গলায় বলল - আচ্ছা বেশ। এবার থেকে প্রতি রবিবার আমি সাজবো।
- শুধু সাজবে নয়, মন খুলে সাজগোজ করবে। বাড়িতে তুমি আর আমি ছাড়া কেও নেই। সেরকম হলে বিকেলের পরে সাজগোজ করবে। দিয়ে আমরা গল্প করবো। সন্ধ্যেবেলায় তো কেও আসার নেই।
মধুমিতা লাজুক হেঁসে মাথা নেড়ে বলল - আচ্ছা বেশ।
পরেরদিন থেকে মদনবাবু একটা জিনিস খেয়াল করলেন, মধুমিতার মুখ শুকনো করে থাকাটা নেই। একটু হলেও যেন মেয়েটা খুশি। সান্ধ্যকালীন গল্পেও মধুমিতা আগের মত চুপ না থাকলেও টুকটাক কথা বলতে লাগল। দেখতে দেখতে পরের রবিবার চলে এলো। মদনবাবু সকালেই মধুমিতাকে মনে করিয়ে দিয়েছিল। সন্ধ্যেবেলায় মদনবাবু মধুমিতাকে দেখে খুশি হল। মধুমিতা একটা হুলুদ রঙের তাঁতের শাড়ি পড়েছিল, সাথে লাল রঙের ঘটিহাতা ব্লাউজ। আর স্বাভাবিক ভাবেই মধুমিতাকে দারুন দেখতে লাগছিল। মধুমিতা ওই পোশাকে চা দিতে এলে, মদনবাবু মধুমিতার হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে মধুমিতাকে পাশের চেয়ারে বসতে বললেন। মধুমিতা বসলে মদনবাবু বললেন - খুব সুন্দর আর খুব মিষ্টি লাগছে তোমাকে ছোটবৌ। তোমার কি মনে হচ্ছে ছোটবৌ ? ভালো লাগছে সাজতে ?
মধুমিতা মাথা নেড়ে বলল - হ্যাঁ ভালো লাগছে। কিন্তু আপনি যেমন বলছেন অতটাও সুন্দর নোই আমি। শুধু শুধু আমার মন রাখার জন্য মিথ্যে কেন বলছেন !
মদনবাবু যেন অবাক হয়েছেন এমন ভাব করে বললেন - মিথ্যে কেন বলবো। তোমাকে সত্যি আমার ভালো লাগছে দেখতে।
তারপর একটু মজা করে মদনবাবু বললেন - লোকে ঠিকই বলে, সুন্দরী মেয়েদের প্রশংসা করলেও তাদের মন ভোরে না।
মধুমিতা ছদ্ম রাগের ভান করে বলল - ধ্যাৎ, খালি ওসব কথা আপনার। আমি মোটেও ঐভাবে বলিনি। আমি শুধু বলেছি, আপনি বেশি বেশি করে আমার প্রশংসা করেন।
এইরকম টুকটাক কথায় পরিবেশটা আরও হালকা হলে মদনবাবু বললেন - আচ্ছা ছোটবৌ, একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো ?
- হ্যাঁ বলুন না।
- তোমার আপত্তি থাকলে নাও বলতে পারো, কোন জোর করছি না কিন্তু।
- ঠিক আছে আপনি বলুন না। আপনার কাছে আমার কেন আপত্তি থাকবে।
- বেশ। আচ্ছা, তোমার কি ধরণের পোশাক পড়তে বেশি ভালো লাগে। এই শাড়ি, না সালোয়ার-কামিজ, না কুর্তি-লেগ্গিংস, না জিন্সের প্যান্ট আর জামা ? কোন ভয় নেই। মন খুলে বলতে পারো। অবশ্য তোমার আপত্তি না থাকলে।
মধুমিতা সহজ ভাবেই বলল - আপত্তি কেন থাকবে। কোনো আপত্তি নেই। ভালো লাগে বেশি কোনটা সেটা ওতো ভাবিনি। বিয়ের আগে তো সালোয়ার-কামিজ আর লেগ্গিংস-কুর্তি পড়েছি। শাড়ি পড়তেও ভালো লাগে। তবে জিন্সের জামা-কাপড় পড়িনি। মানাবে কিনা জানি না। তবে ইচ্ছা আছে একবার পরে দেখার।
- বেশ তো। একদিন না হয় কিনে আনা যাবে। তোমার ইচ্ছা করেছে ব্যাস আমার কোনো আপত্তি নেই।
একটু থেমে মদনবাবু আবার বললেন - আচ্ছা সাহস যদি দাও একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করবো ছোট বৌ ?
মধুমিতা একটু যেন থমকে গেল মদনবাবুর শেষের প্রশ্নটা শুনে। একটু আমতা আমতা করে বলল - হ্যাঁ বলুন না।
মদনবাবু একটু নরম গলায় বললেন - না মানে আমার প্রশ্ন শুনে তুমি উত্তর না দিলেও আমি কিছু মনে করব না।
মধুমিতা কিছু না বলে মদনবাবুর দিকে তাকিয়ে থাকল। মদনবাবু একটু গলা ঝেড়ে নিয়ে বললেন - না মানে , তোমার শাড়ি বোলো বা অন্য্ পোশাক, তা একটু খোলামেলা পড়তে কি ইচ্ছা করে। অবশ্যই এতে কোনো দোষের নেই। এই বাড়ির মধ্যে আমি ছাড়া কেও নেই। আমি শুধু জানতে চাইছি।
মদনবাবু থামলে মধুমিতা মাথা নিচু করে চুপ করে বসেই থাকল। বেশ কিছুক্ষন সময় নিয়ে মধুমিতা বলল - ইচ্ছা তো করে। কিন্তু মামী কথায় কথায় বলতো ঐরকম পোশাক নাকি খারাপ মেয়েরা পরে। তাই। ....
এই বলে মধুমিতা চুপ করে গেল। মদনবাবু একটু সময় নিয়ে বললেন - তাই মনের ইচ্ছা মনে রেখে দিলে। হুম। আমি তোমাকে জোর করবো না। তোমার যদি মন চাই তাহলে তুমি পড়তে পারো ছোটবৌ। আমার কোনো আপত্তি নেই।
মধুমিতা এবার একটা বালিকা সুলভ প্রশ্ন করল - আপনি আমাকে খারাপ মেয়ে ভাববেন নাতো ?
মদনবাবু মধুমিতার এমন প্রশ্নে হেঁসে ফেললেন। হাঁসি মুখেই বললেন - নাহ, আমি তোমাকে খারাপ মেয়ে ভাববো না ছোটবৌ। আর সম্পর্কে তুমি আমার স্ত্রী, সেই হিসাবেই বলছি, তোমাকে ওমন পোশাকে দেখার অধিকার আমার আছে । মানে খারাপ ভাবে নিওনা ছোটবৌ।
মদনবাবুর কথায় মধুমিতা কি উত্তর দেবে ঠাওর করতে পারল না। সে একটু ভেবে বলল - আপনার কোন দোষ নেই, আপনি স্বামী, আপনার অধিকার আছে। আমি কিছু মনে করিনি।
মদনবাবু মধুমিতার কথা শুনে অস্বস্ত্ব হয়ে বললেন - ভয় নেই ছোটবৌ, আমি তোমার সাথে কোন জোর-জবরদস্তি করবো না। এব্যাপারে তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো।
মধুমিতা মাথা নামিয়ে লজ্জা লজ্জা গলায় বলল - আপনার ওপর আমার পুরো বিশ্বাস আছে। আর আপনি চাইলে পরের রবিবার না হয় আমি আপনার সামনে খোলামেলা পোশাক পরেও আসতে পারি। আমার আপত্তি নেই।
- ঠিক তো ছোটবৌ। আমার মন রাখার জন্য বলছো নাতো ?
- না না। মন রাখার জন্য নয়।
- বেশ তো। আমার তো কোনো আপত্তি নেই। তাহলে ঐ কথায় রইলো ছোটবৌ। পরের রবিবার তোমাকে যেন খোলামেলা শাড়িতে দেখি। ঠিক তো।
মধুমিতা লজ্জা পেয়ে উঠে চলে গেল।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)