14-06-2025, 08:05 PM
পর্ব ২:
বিয়ের দিনের পরে বেশ কিছুদিন কেটে গেছে। মদনবাবু ফুলশয্যার পরের দিনেই মধুমিতার জন্য নিচের একটা ঘরকে ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যদিও কাজের বুড়ি আপত্তি তুলেছিল। যতই হোক তারা এখন স্বামী-স্ত্রী, এক ঘরে থাকবে না। এটা কেমন কথা ! কিন্তু মদনবাবু বোঝালেন বুড়িকে। এখন মধুমিতার মনের অবস্থা সেই জায়গায় নেই। এখন মেয়েটাকে ধাতস্ত হতে দিতে চাই। বুড়ি আর বেশি কথা বাড়াইনি। তবে এইসব কথাবার্তা মধুমিতার সামনেই হয়েছিল। মধুমিতা তাদের কথা শুনলেও কোন মতামত জানায়নি। সে চুপ করেছিল। বুড়ি এই ব্যবস্থা যেন মনে মনে মেনে নিতে পারল না। তাই কয়েকদিন পরেই সে শরীরের অজুহাত দিয়ে কাজ ছাড়ার কথা জানাল। যেদিন এই প্রস্তাব বুড়ি দিয়েছিল তা শুনে মদনবাবু অবাক হয়েছিলেন। মুখেও বললেন - কিন্তু বুড়িমা তোমার শরীর তো ঠিক আছে দেখছি। আর কটা দিন না হয় একটু কষ্ট করে করে দাও। ছোটবৌ তো একা পারবে।
কিন্তু বুড়ি নাছোড়। সেও স্পষ্ট কথাই বলল - নাগো দাদাবাবু, শরীর ভালো নয়। আর তোমার বৌ বেশ শক্ত। ঠিক পারবে।
মধুমিতা এই প্রথম মদনবাবুর সাথে সরাসরি কথা বলল। সে মদনবাবুকে উদ্দেশ্য করে বলল - বুড়িমা যখন চাইছে না তখন কেন জোর করছেন। ওনার শরীর খারাপ তো হতেই পারে। শুধু একটা অনুরোধ করব আপনাকে ?
মধুমিতা যে এতদিন পরে তার সাথে কথা বলেছে এটাতেই মদনবাবু খুবই খুশি হয়েছিলেন। তাই তিনি বললেন - অনুরোধ কেন বলছো ছোটবৌ, তোমার কথা আমি ফেলতে পারি। বল।
মধুমিতা মৃদু গলায় বলল - বুড়িমার মাস মাইনেটা দয়া করে বন্ধ করবেন না।
বুড়ি চমকে কিছু বলতে গেলে মধুমিতা বুড়িকে থামিয়ে দিয়ে বলল - এই কথাটা আমার রাখতেই হবে বুড়িমা। না করতে পারবেন।
মদনবাবুও মধুমিতার কথায় সাই দিয়ে বললেন - না বুড়িমা, ছোটবৌকে কথা দিয়েছি, তোমার আপত্তি তো শুনবো না। তুমি মাসে মাসে তোমার মাইনে পেয়ে যাবে।
বুড়ি আর কিছু না বলে বিদেয় হল। তবে মনে মনে খুশি হল বুড়ি। বরফ না গললেও গলার পরিস্থিতি সে তৈরী করতে পেরেছে। আগুন আর ঘি পাশাপাশি থাকবে আর জ্বলবেনা তা কি কখনো হতে পারে।
বুড়ি বিদেয় হবার পরে আরো কিছুদিন কেটে গেল। মধুমিতা বাধ্য হল মদনবাবুর সাথে কথা বলতে। টুকটাক প্রয়োজনের কথা। কিন্তু কথাবার্তা শুরু হল। মদনবাবু একদিন সন্ধ্যেয় মধুমিতার সঙ্গে আলোচনা শুরু করলেন। প্রথম প্রথম জড়তা থাকলেও তা কাটতে বেশি সময় লাগল না। মদনবাবু যখন দেখলেন মধুমিতা এখন বেশ সহজ হয়ে গেছে, তখন একদিন সন্ধ্যেবেলায় কথাটা পারলেন। সন্ধ্যের চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে মদনবাবু বললেন - ছোটবৌ তোমার হাতে সময় থাকলে একটু বসতে পারবে। কিছু কথা ছিল তোমার সাথে।
মধুমিতা দাঁড়িয়েই বলল - বলুন না। আমি শুনছি।
- না আগে বসো। তবেই বলবো।
মধুমিতা কথা না বাড়িয়ে পাশের একটা কাঠের তুলে বসে পড়ল। মধুমিতা বসলে মদনবাবু বললেন - দেখ ছোটবৌ, আমি যা বলব তা মন দিয়ে শুনবে। তোমার মতামত খুব দরকার আমার।
একটু থেমে বললেন - জানি, আমাদের বয়সের পার্থক্য অনেক। তা মানিয়ে নেওয়া সহজ নয়। তাও আচমকা এই ঘটনা ঘটেছে। আসলে আমি সেদিন চাইনি তোমার কোন বিপদ হোক। আমি তোমাকে দয়াও করতে চাইনি। আমি শুধু তোমার উপকার করতে চেয়েছিলাম। আমি শুধু চাই তুমি তোমার মত করে বাঁচো। তুমি এই গ্রামেরই মেয়ে। তোমার ওপর কি অত্যাচার হতো তা সব না জানলেও কানাঘুঁষো শুনতাম। আমি আবারও বলছি তোমাকে দয়া করতে চাইনা ছোটবৌ। তুমি যদি আমাকে স্বামী হিসাবে না মানো তাতেও আমার কোনো আপত্তি নেই। তুমি চাইলে আমি ডিভোর্সের ব্যবস্থা করে দিতে পারি। আবার চাইলে তারপরে তোমার পছন্দমত কোনো ছেলের সাথে বিয়েও দিতে পারি। মোদ্দা কথা আমি তোমার মনের ইচ্ছাটা জানতে চাই ছোটবৌ।
মধুমিতা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল - আপনি আমার জন্য অনেক করেছেন। আমি সত্যি কৃতজ্ঞ। আমি অন্য্ কিছু নিয়ে ভাবছি না। শুধু আমার দিক থেকে চেষ্টা করছি মানিয়ে নেবার। আর বিয়ের কথা যদি বললেন, যা হয়ে গেছে তা হয়ে গেছে। আমার ভাগ্যে আপনার সাথে বিয়ে ছিল, তাই হয়েছে। এতে আমার দুঃখ নেই। আমার কষ্ট শুধু আমার জন্য আপনাকেও অপমানিত হতে হল।
- ওসব নিয়ে ভেবো না ছোটবৌ। পরের কথা শুনলে বেশিরভাগ সময় মনে কষ্টই লাগে। পরের কথা বাদ দিলে কষ্ট কমে যাবে। আমি শুধু চাই তুমি তোমার মত করে বাঁচো। তোমার মন যা চাই তাই করো। এই বাড়িতে তোমাকে না বলার কেও নেই। এটা তোমারও বাড়ি। তাই সেই ভাবেই থাকো ছোটবৌ।
- চেষ্টা তো করছি।
- চেষ্টা নয়। তুমি যেমন তেমন হয়ে থাকো। এতে চেষ্টার কি আছে। তুমি স্বাভাবিক হলেই আমার সুখ।
মধুমিতা তাও ঘাড় নেড়ে বলল - বেশ তাই থাকার চেষ্টা করব।
মদনবাবু আর জোর করলেন না। সেদিনের মত কথাবার্তা মুলতুবি করে উঠে পড়লেন। তবে লক্ষ করলেন মধুমিতা অনেকটাই স্বাভাবিক হচ্ছে ঐদিনের পর থেকে। মদনবাবুর সাথে অনেক স্বাভাবিক ভাবেই কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে। যদিও টুকটাক খেতে দিয়েছি বা বাজার থেকে এই কটা জিনিস নিয়ে আসবেন ফুরিয়ে গেছে। এইধরণের কথাবার্তা। কিন্তু তাও আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক ভাবেই। মধুমিতাকে স্বাভাবিক হতে দেখে একদিন সন্ধ্যেয় মদনবাবু কথায় কথায় বললেন - আচ্ছা ছোটবৌ, তোমার ব্রেসিয়ার যেটা আজকে শুকাতে দিয়ে ছিলে সেটাতে চোখ পড়ল। ওটাতো প্রায় ছিঁড়ে গেছে। বাজার গিয়ে কিনে আনতে পারতে তো। আমি টাকা দিয়ে দিতাম। বা আমাকে বললেই পারতে। আমি নাহয় এনে দিতাম।
স্বাভাবিক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে এইধরণের কথাবার্তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে তো নয়। মধুমিতা মদনবাবুর কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেল। কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। মধুমিতার লজ্জা দেখে মদনবাবু বললেন - জানি ছোটবৌ তোমার লজ্জা পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আমি সম্পর্কে তোমার স্বামী। তোমার খেয়াল রাখাটাও তো আমার দায়িত্ব।তবে তুমি চাইলে আমি না হয় আর বলবো না।
মধুমিতা পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য বলল - না না তা নয়। আপনি আমার খেয়াল রাখছেন দেখে ভালো লাগল। কিন্তু আপনি তো গুরুজন তাই আপনাকে মুখ ফুটে বলতে লজ্জা করতো।
মধুমিতার উত্তরে মদনবাবু খুশি হলেন। যাক একটা হলেও বাধা তো টপকানো গেছে। একটা ছোট ছিদ্র তো বার করা গেছে। এখন এই ছিদ্রকেই কাজে লাগাতে হবে। মদনবাবু তাই বললেন - গুরুজন তো কি ছোটবৌ। তোমার দরকারের জিনিস তা বলে বলবে না। তোমার অধিকার আছে ছোটবৌ। আমি বরং তোমার হাতে কাল টাকা দিচ্ছি তুমি গিয়ে কিনে নিও। কেমন।
মধুমিতা একটু চুপ থেকে কি যেন ভাবলো। শেষে বলল - টাকা নিয়ে কি করবো। একা একা তো সেরকম কিছু চিনি না। তার থেকে আপনিই বরং কিনে এনে দিন।
মদনবাবু একটু ভেবে বলল - তার থেকে বরং চলো কাল তোমাকে নিয়ে বাজারে যাই। আমিও ঐসব জিনিস কোনোদিন কিনিনি ছোটবৌ। ভালোমন্দ বুঝতে পারবো না। তার থেকে তুমি পছন্দ করে কিনে নিও। অসুবিধা নেই তো।
মধুমিতার হ্যাঁ বলা ছাড়া তো উপায় নেই। তবে লজ্জার মাঝেও মধুমিতার ঠোঁটে এক চিলতে দুস্টুমীর হাঁসির রেখাও ফুটে উঠেছিল। যা মদনবাবুর শ্যোন দৃষ্টিতে ঠিক ধরা পরে গেল। বুঝলেন খেলা শুরু হয়েছে অবশেষে। মদনবাবু তাই আবার বললেন - চিন্তা করো না ছোটবৌ, তোমাকে কথা দিয়েছি তোমার অমতে আমি তোমায় স্পর্শও করবো না। তাই নিশ্চিন্তে থাকো।
এইবলে মদনবাবু উঠে চলে গেলেন।
আসলে এই কদিন মধুমিতা তার সাথে মদনবাবুর সম্পর্কটা নিয়ে। মনে মনে সে অনেকটাই মেনে নিয়েছে। বয়স হলেও সে লক্ষ করেছে, বয়সের ছাপ যেন মদনবাবুর শরীরে পড়েনি। শুধু কগাছা সাদা চুল ছাড়া মনেই হবে না মদনবাবুর এতো বয়স। অমন টানটান শক্তপোক্ত শরীর। মধুমিতা লুকিয়ে হলেও দেখে। এমন শক্তিশালী পুরুষাকার দেখতে কোন মেয়ের না ভালো লাগবে। আর মনে মনে মধুমিতা দুর্বল হতে শুরু করেছে মদনবাবুর প্রতি। আর একটা কারণও আছে। তাকে নরক থেকে তুলে আনার জন্যও সে মদনবাবুর প্রতি দুর্বল হচ্ছিল। সাথে এই কদিন কাছ থেকে মদনবাবুকে দেখে বুঝেছে, মানুষটা সৎ। অন্তত তার প্রতি। কিন্তু নিজে থেকে সে কি করে এগোয়। মেয়েলী লজ্জায় সে নিজেকে পিছিয়ে আনে। মদনবাবু তার স্বামী, সেই বা কেন এগিয়ে আসবে না।
যাইহোক, পরেরদিন মধুমিতাকে নিয়ে মদনবাবু বাইকে করে বাজারে নিয়ে গেলেন দুপুর বেলায়। বাজারটা পাশের গ্রামে। দুপুরবেলা যাবার কারণ লোকজন এইসময় কম থাকে। অসমবয়সী তুই নারী-পুরুষকে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে দেখলে অনেকের অহেতুক কৌতূহলী চোখ তাদেরকে দেখতো। তা থেকে বাঁচার জন্য। বাজারে একটা ফাঁকা দেখে গার্মেন্টসের দোকান দেখে দুজনে দাঁড়াল। দোকানদার ছাড়া কেও ছিল না। দোকানদার তাদের বাবা-মেয়ে ভাবছে দেখে মদনবাবু মধুমিতাকে রেখে একটু দূরে সরে গেলেন যাতে দোকানদারের বেশি সন্দেহ না হয়। মধুমিতা বেশি সময় নিল না। মদনবাবু টাকা মিটিয়ে বেরিয়ে এলেন। মধুমিতার ঠোঁটে লাজুক হাঁসি দেখে মদনবাবু বললেন - ওনার আর কি দোষ, উনি কি করে জানবেন যে আমরা স্বামী-স্ত্রী। তা ছোটবৌ তুমি আবার এমন কিছু ভাব নাতো আমাকে ?
মধুমিতা লজ্জায় লাল হয়ে বলল - আপনি খুব অসভ্য। খালি আজেবাজে কথা।
মদনবাবু হেঁসে বললেন - বেশ, তা চলো একটু রেস্টুরেন্টে বসি। হাতে তো অনেক সময় আছে। চলো একটু আইসক্রিম খাবে ?
মধুমিতা আপত্তি করল না। পাশের একটা ছোটখাটো রেস্টুরেন্টে ঢুকে মদনবাবু আইসক্রিমের অর্ডার দিলেন। আইসক্রিম খেতে খেতে মদনবাবু বললেন - তারপর কেমন লাগছে বোলো ছোটবৌ। একটু বাড়ির বাইরে বেরিয়ে।
মধুমিতা লাজুক হাঁসি দিয়ে মাথা নেড়ে নিজের ভালো লাগা প্রকাশ করল। তা দেখে মদনবাবু বললেন - তাহলে তো মাঝে মাঝে তোমাকে নিয়ে বেরোলে তোমার আপত্তি নেই বলছো।
মধুমিতা লাজুক হাঁসি বজায় রেখে বলল - আপত্তি কেন হবে। বাইরে বেরোতে কার না ভালো লাগে। আপনার কাজের অসুবিধা না হলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
- বেশ বেশ। তা আর কি ভালো লাগে তোমার। না মানে কিছুই তো বোলো না। আর না বললে কি করে বুঝবো বোলো।
এইরকম টুকটাক কথাবার্তা বলতে লাগল। বেশিরভাগ সময় মদনবাবুই কথা বললেন। তবে মধুমিতা সারা দিচ্ছিল। আইসক্রিম শেষ করে মদনবাবু মধুমিতাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। সেদিনের মত আর কিছু হলো না। পরেরদিন মদনবাবু নিজে থেকে এগুবেন ঠিক করলেন। সেইমত মদনবাবু দুপুরে নিজেই ছাদ থেকে কাপড়জামা তুলে আনলেন। এসে মধুমিতার হাতে দিয়ে বললেন - ছোটবৌ তুমি কিন্তু দেখছি সেই পুরোনো ব্রেসিয়ার আর প্যান্টিই পড়ছো। ওগুলো বাতিল করে দাও। শুধু শুধু ছেঁড়া জিনিস কেন পড়ছো।
এই বলে মদনবাবু ওই ছেঁড়া ব্রেসিয়ার আলাদা করে মধুমিতার চোখের সামনে তুলে ধরে বললেন - দেখ তো কেমন ছিঁড়ে গেছে। এটাকে কেও পরে।
মধুমিতা মদনবাবুর হাতে নিজের পরণের অন্তর্বাস দেখে লজ্জা পেল। তবে এখন একটু সামলে নিল। মুখে বলল - ঠিক আছে, আপনি বলছেন যখন আমি আজকেই ফেলে দোব।
মদনবাবু আর কিছু না বলে জামাকাপড় মধুমিতার হাতে দিয়ে চলে গেলেন। পরেরদিন মধুমিতা নিজেই মদনবাবুকে বললেন ছাদের জামাকাপড়গুলো তুলে আনার জন্য। মদনবাবু তুলে আনলে মধুমিতা আজকে নিজের আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল - আজকে কোনো পুরোনো ব্রেসিয়ার পাননি তো আপনি। আমি আপনার কথামত ওগুলো বাতিল করে দিয়েছি।
মদনবাবু বুঝলেন মধুমিতা কি উদ্দেশ্যে ওনাকে আজকে জামাকাপড়গুলো তুলতে পাঠিয়েছিল। তিনি হেঁসে বললেন - না ছোটবৌ। আজকে নতুন ব্রেসিয়ারই দেখলাম। তবে মাঝে মাঝে একটু সাজগোজ করতে পারোতো। এই তো বয়স তোমার। এখন সাজবে নাতো কবে সাজবে।
মধুমিতা জড়তা কাটিয়েছে। তাই বলল - কি হবে শুধু শুধু সাজগোজ করে। তার থেকে এই ভালো আছি।
মধুমিতার চোখে চোখ রেখে মদনবাবু মাথা নায়ের ভঙ্গিতে নেড়ে বললেন - না না ছোটবৌ। বার বার কি দরকার বলে এড়িয়ে যেও না। তোমার অধিকার আছে সাজগোজ করার। শুধু শুধু তুমিই বা কেন নিজের সখ-আল্লাদ বিসর্জন দিচ্ছ। নিজেকে কেন শাস্তি দিচ্ছ। শাস্তি পাবার কেও থাকলে তারা তোমার মামা-মামী আর আমি। তোমার তো কোনো দোষ নেই।
মধুমিতা মদনবাবুর হাত থেকে জামাকাপড়গুলো নিয়ে বলল - দোষ আমার মামা-মামীর থাকতে পারে, কিন্তু আপনার কেন দোষ থাকবে। আপনি তো কোন দোষ করেননি। বরং আপনি আমাকে গলায় দড়ি দেওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন।
মদনবাবু মধুমিতার কথা শুনে জোর গলায় এবার বললেন - আর কখনো যেন তোমার মুখ থেকে এমন কথা না শুনি ছোটবৌ।
এইবলে মদনবাবু আর কিছু না বলে বড় বড় পা ফেলে চলে গেলেন।
বিয়ের দিনের পরে বেশ কিছুদিন কেটে গেছে। মদনবাবু ফুলশয্যার পরের দিনেই মধুমিতার জন্য নিচের একটা ঘরকে ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যদিও কাজের বুড়ি আপত্তি তুলেছিল। যতই হোক তারা এখন স্বামী-স্ত্রী, এক ঘরে থাকবে না। এটা কেমন কথা ! কিন্তু মদনবাবু বোঝালেন বুড়িকে। এখন মধুমিতার মনের অবস্থা সেই জায়গায় নেই। এখন মেয়েটাকে ধাতস্ত হতে দিতে চাই। বুড়ি আর বেশি কথা বাড়াইনি। তবে এইসব কথাবার্তা মধুমিতার সামনেই হয়েছিল। মধুমিতা তাদের কথা শুনলেও কোন মতামত জানায়নি। সে চুপ করেছিল। বুড়ি এই ব্যবস্থা যেন মনে মনে মেনে নিতে পারল না। তাই কয়েকদিন পরেই সে শরীরের অজুহাত দিয়ে কাজ ছাড়ার কথা জানাল। যেদিন এই প্রস্তাব বুড়ি দিয়েছিল তা শুনে মদনবাবু অবাক হয়েছিলেন। মুখেও বললেন - কিন্তু বুড়িমা তোমার শরীর তো ঠিক আছে দেখছি। আর কটা দিন না হয় একটু কষ্ট করে করে দাও। ছোটবৌ তো একা পারবে।
কিন্তু বুড়ি নাছোড়। সেও স্পষ্ট কথাই বলল - নাগো দাদাবাবু, শরীর ভালো নয়। আর তোমার বৌ বেশ শক্ত। ঠিক পারবে।
মধুমিতা এই প্রথম মদনবাবুর সাথে সরাসরি কথা বলল। সে মদনবাবুকে উদ্দেশ্য করে বলল - বুড়িমা যখন চাইছে না তখন কেন জোর করছেন। ওনার শরীর খারাপ তো হতেই পারে। শুধু একটা অনুরোধ করব আপনাকে ?
মধুমিতা যে এতদিন পরে তার সাথে কথা বলেছে এটাতেই মদনবাবু খুবই খুশি হয়েছিলেন। তাই তিনি বললেন - অনুরোধ কেন বলছো ছোটবৌ, তোমার কথা আমি ফেলতে পারি। বল।
মধুমিতা মৃদু গলায় বলল - বুড়িমার মাস মাইনেটা দয়া করে বন্ধ করবেন না।
বুড়ি চমকে কিছু বলতে গেলে মধুমিতা বুড়িকে থামিয়ে দিয়ে বলল - এই কথাটা আমার রাখতেই হবে বুড়িমা। না করতে পারবেন।
মদনবাবুও মধুমিতার কথায় সাই দিয়ে বললেন - না বুড়িমা, ছোটবৌকে কথা দিয়েছি, তোমার আপত্তি তো শুনবো না। তুমি মাসে মাসে তোমার মাইনে পেয়ে যাবে।
বুড়ি আর কিছু না বলে বিদেয় হল। তবে মনে মনে খুশি হল বুড়ি। বরফ না গললেও গলার পরিস্থিতি সে তৈরী করতে পেরেছে। আগুন আর ঘি পাশাপাশি থাকবে আর জ্বলবেনা তা কি কখনো হতে পারে।
বুড়ি বিদেয় হবার পরে আরো কিছুদিন কেটে গেল। মধুমিতা বাধ্য হল মদনবাবুর সাথে কথা বলতে। টুকটাক প্রয়োজনের কথা। কিন্তু কথাবার্তা শুরু হল। মদনবাবু একদিন সন্ধ্যেয় মধুমিতার সঙ্গে আলোচনা শুরু করলেন। প্রথম প্রথম জড়তা থাকলেও তা কাটতে বেশি সময় লাগল না। মদনবাবু যখন দেখলেন মধুমিতা এখন বেশ সহজ হয়ে গেছে, তখন একদিন সন্ধ্যেবেলায় কথাটা পারলেন। সন্ধ্যের চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে মদনবাবু বললেন - ছোটবৌ তোমার হাতে সময় থাকলে একটু বসতে পারবে। কিছু কথা ছিল তোমার সাথে।
মধুমিতা দাঁড়িয়েই বলল - বলুন না। আমি শুনছি।
- না আগে বসো। তবেই বলবো।
মধুমিতা কথা না বাড়িয়ে পাশের একটা কাঠের তুলে বসে পড়ল। মধুমিতা বসলে মদনবাবু বললেন - দেখ ছোটবৌ, আমি যা বলব তা মন দিয়ে শুনবে। তোমার মতামত খুব দরকার আমার।
একটু থেমে বললেন - জানি, আমাদের বয়সের পার্থক্য অনেক। তা মানিয়ে নেওয়া সহজ নয়। তাও আচমকা এই ঘটনা ঘটেছে। আসলে আমি সেদিন চাইনি তোমার কোন বিপদ হোক। আমি তোমাকে দয়াও করতে চাইনি। আমি শুধু তোমার উপকার করতে চেয়েছিলাম। আমি শুধু চাই তুমি তোমার মত করে বাঁচো। তুমি এই গ্রামেরই মেয়ে। তোমার ওপর কি অত্যাচার হতো তা সব না জানলেও কানাঘুঁষো শুনতাম। আমি আবারও বলছি তোমাকে দয়া করতে চাইনা ছোটবৌ। তুমি যদি আমাকে স্বামী হিসাবে না মানো তাতেও আমার কোনো আপত্তি নেই। তুমি চাইলে আমি ডিভোর্সের ব্যবস্থা করে দিতে পারি। আবার চাইলে তারপরে তোমার পছন্দমত কোনো ছেলের সাথে বিয়েও দিতে পারি। মোদ্দা কথা আমি তোমার মনের ইচ্ছাটা জানতে চাই ছোটবৌ।
মধুমিতা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল - আপনি আমার জন্য অনেক করেছেন। আমি সত্যি কৃতজ্ঞ। আমি অন্য্ কিছু নিয়ে ভাবছি না। শুধু আমার দিক থেকে চেষ্টা করছি মানিয়ে নেবার। আর বিয়ের কথা যদি বললেন, যা হয়ে গেছে তা হয়ে গেছে। আমার ভাগ্যে আপনার সাথে বিয়ে ছিল, তাই হয়েছে। এতে আমার দুঃখ নেই। আমার কষ্ট শুধু আমার জন্য আপনাকেও অপমানিত হতে হল।
- ওসব নিয়ে ভেবো না ছোটবৌ। পরের কথা শুনলে বেশিরভাগ সময় মনে কষ্টই লাগে। পরের কথা বাদ দিলে কষ্ট কমে যাবে। আমি শুধু চাই তুমি তোমার মত করে বাঁচো। তোমার মন যা চাই তাই করো। এই বাড়িতে তোমাকে না বলার কেও নেই। এটা তোমারও বাড়ি। তাই সেই ভাবেই থাকো ছোটবৌ।
- চেষ্টা তো করছি।
- চেষ্টা নয়। তুমি যেমন তেমন হয়ে থাকো। এতে চেষ্টার কি আছে। তুমি স্বাভাবিক হলেই আমার সুখ।
মধুমিতা তাও ঘাড় নেড়ে বলল - বেশ তাই থাকার চেষ্টা করব।
মদনবাবু আর জোর করলেন না। সেদিনের মত কথাবার্তা মুলতুবি করে উঠে পড়লেন। তবে লক্ষ করলেন মধুমিতা অনেকটাই স্বাভাবিক হচ্ছে ঐদিনের পর থেকে। মদনবাবুর সাথে অনেক স্বাভাবিক ভাবেই কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে। যদিও টুকটাক খেতে দিয়েছি বা বাজার থেকে এই কটা জিনিস নিয়ে আসবেন ফুরিয়ে গেছে। এইধরণের কথাবার্তা। কিন্তু তাও আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক ভাবেই। মধুমিতাকে স্বাভাবিক হতে দেখে একদিন সন্ধ্যেয় মদনবাবু কথায় কথায় বললেন - আচ্ছা ছোটবৌ, তোমার ব্রেসিয়ার যেটা আজকে শুকাতে দিয়ে ছিলে সেটাতে চোখ পড়ল। ওটাতো প্রায় ছিঁড়ে গেছে। বাজার গিয়ে কিনে আনতে পারতে তো। আমি টাকা দিয়ে দিতাম। বা আমাকে বললেই পারতে। আমি নাহয় এনে দিতাম।
স্বাভাবিক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে এইধরণের কথাবার্তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে তো নয়। মধুমিতা মদনবাবুর কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেল। কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। মধুমিতার লজ্জা দেখে মদনবাবু বললেন - জানি ছোটবৌ তোমার লজ্জা পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আমি সম্পর্কে তোমার স্বামী। তোমার খেয়াল রাখাটাও তো আমার দায়িত্ব।তবে তুমি চাইলে আমি না হয় আর বলবো না।
মধুমিতা পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য বলল - না না তা নয়। আপনি আমার খেয়াল রাখছেন দেখে ভালো লাগল। কিন্তু আপনি তো গুরুজন তাই আপনাকে মুখ ফুটে বলতে লজ্জা করতো।
মধুমিতার উত্তরে মদনবাবু খুশি হলেন। যাক একটা হলেও বাধা তো টপকানো গেছে। একটা ছোট ছিদ্র তো বার করা গেছে। এখন এই ছিদ্রকেই কাজে লাগাতে হবে। মদনবাবু তাই বললেন - গুরুজন তো কি ছোটবৌ। তোমার দরকারের জিনিস তা বলে বলবে না। তোমার অধিকার আছে ছোটবৌ। আমি বরং তোমার হাতে কাল টাকা দিচ্ছি তুমি গিয়ে কিনে নিও। কেমন।
মধুমিতা একটু চুপ থেকে কি যেন ভাবলো। শেষে বলল - টাকা নিয়ে কি করবো। একা একা তো সেরকম কিছু চিনি না। তার থেকে আপনিই বরং কিনে এনে দিন।
মদনবাবু একটু ভেবে বলল - তার থেকে বরং চলো কাল তোমাকে নিয়ে বাজারে যাই। আমিও ঐসব জিনিস কোনোদিন কিনিনি ছোটবৌ। ভালোমন্দ বুঝতে পারবো না। তার থেকে তুমি পছন্দ করে কিনে নিও। অসুবিধা নেই তো।
মধুমিতার হ্যাঁ বলা ছাড়া তো উপায় নেই। তবে লজ্জার মাঝেও মধুমিতার ঠোঁটে এক চিলতে দুস্টুমীর হাঁসির রেখাও ফুটে উঠেছিল। যা মদনবাবুর শ্যোন দৃষ্টিতে ঠিক ধরা পরে গেল। বুঝলেন খেলা শুরু হয়েছে অবশেষে। মদনবাবু তাই আবার বললেন - চিন্তা করো না ছোটবৌ, তোমাকে কথা দিয়েছি তোমার অমতে আমি তোমায় স্পর্শও করবো না। তাই নিশ্চিন্তে থাকো।
এইবলে মদনবাবু উঠে চলে গেলেন।
আসলে এই কদিন মধুমিতা তার সাথে মদনবাবুর সম্পর্কটা নিয়ে। মনে মনে সে অনেকটাই মেনে নিয়েছে। বয়স হলেও সে লক্ষ করেছে, বয়সের ছাপ যেন মদনবাবুর শরীরে পড়েনি। শুধু কগাছা সাদা চুল ছাড়া মনেই হবে না মদনবাবুর এতো বয়স। অমন টানটান শক্তপোক্ত শরীর। মধুমিতা লুকিয়ে হলেও দেখে। এমন শক্তিশালী পুরুষাকার দেখতে কোন মেয়ের না ভালো লাগবে। আর মনে মনে মধুমিতা দুর্বল হতে শুরু করেছে মদনবাবুর প্রতি। আর একটা কারণও আছে। তাকে নরক থেকে তুলে আনার জন্যও সে মদনবাবুর প্রতি দুর্বল হচ্ছিল। সাথে এই কদিন কাছ থেকে মদনবাবুকে দেখে বুঝেছে, মানুষটা সৎ। অন্তত তার প্রতি। কিন্তু নিজে থেকে সে কি করে এগোয়। মেয়েলী লজ্জায় সে নিজেকে পিছিয়ে আনে। মদনবাবু তার স্বামী, সেই বা কেন এগিয়ে আসবে না।
যাইহোক, পরেরদিন মধুমিতাকে নিয়ে মদনবাবু বাইকে করে বাজারে নিয়ে গেলেন দুপুর বেলায়। বাজারটা পাশের গ্রামে। দুপুরবেলা যাবার কারণ লোকজন এইসময় কম থাকে। অসমবয়সী তুই নারী-পুরুষকে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে দেখলে অনেকের অহেতুক কৌতূহলী চোখ তাদেরকে দেখতো। তা থেকে বাঁচার জন্য। বাজারে একটা ফাঁকা দেখে গার্মেন্টসের দোকান দেখে দুজনে দাঁড়াল। দোকানদার ছাড়া কেও ছিল না। দোকানদার তাদের বাবা-মেয়ে ভাবছে দেখে মদনবাবু মধুমিতাকে রেখে একটু দূরে সরে গেলেন যাতে দোকানদারের বেশি সন্দেহ না হয়। মধুমিতা বেশি সময় নিল না। মদনবাবু টাকা মিটিয়ে বেরিয়ে এলেন। মধুমিতার ঠোঁটে লাজুক হাঁসি দেখে মদনবাবু বললেন - ওনার আর কি দোষ, উনি কি করে জানবেন যে আমরা স্বামী-স্ত্রী। তা ছোটবৌ তুমি আবার এমন কিছু ভাব নাতো আমাকে ?
মধুমিতা লজ্জায় লাল হয়ে বলল - আপনি খুব অসভ্য। খালি আজেবাজে কথা।
মদনবাবু হেঁসে বললেন - বেশ, তা চলো একটু রেস্টুরেন্টে বসি। হাতে তো অনেক সময় আছে। চলো একটু আইসক্রিম খাবে ?
মধুমিতা আপত্তি করল না। পাশের একটা ছোটখাটো রেস্টুরেন্টে ঢুকে মদনবাবু আইসক্রিমের অর্ডার দিলেন। আইসক্রিম খেতে খেতে মদনবাবু বললেন - তারপর কেমন লাগছে বোলো ছোটবৌ। একটু বাড়ির বাইরে বেরিয়ে।
মধুমিতা লাজুক হাঁসি দিয়ে মাথা নেড়ে নিজের ভালো লাগা প্রকাশ করল। তা দেখে মদনবাবু বললেন - তাহলে তো মাঝে মাঝে তোমাকে নিয়ে বেরোলে তোমার আপত্তি নেই বলছো।
মধুমিতা লাজুক হাঁসি বজায় রেখে বলল - আপত্তি কেন হবে। বাইরে বেরোতে কার না ভালো লাগে। আপনার কাজের অসুবিধা না হলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
- বেশ বেশ। তা আর কি ভালো লাগে তোমার। না মানে কিছুই তো বোলো না। আর না বললে কি করে বুঝবো বোলো।
এইরকম টুকটাক কথাবার্তা বলতে লাগল। বেশিরভাগ সময় মদনবাবুই কথা বললেন। তবে মধুমিতা সারা দিচ্ছিল। আইসক্রিম শেষ করে মদনবাবু মধুমিতাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। সেদিনের মত আর কিছু হলো না। পরেরদিন মদনবাবু নিজে থেকে এগুবেন ঠিক করলেন। সেইমত মদনবাবু দুপুরে নিজেই ছাদ থেকে কাপড়জামা তুলে আনলেন। এসে মধুমিতার হাতে দিয়ে বললেন - ছোটবৌ তুমি কিন্তু দেখছি সেই পুরোনো ব্রেসিয়ার আর প্যান্টিই পড়ছো। ওগুলো বাতিল করে দাও। শুধু শুধু ছেঁড়া জিনিস কেন পড়ছো।
এই বলে মদনবাবু ওই ছেঁড়া ব্রেসিয়ার আলাদা করে মধুমিতার চোখের সামনে তুলে ধরে বললেন - দেখ তো কেমন ছিঁড়ে গেছে। এটাকে কেও পরে।
মধুমিতা মদনবাবুর হাতে নিজের পরণের অন্তর্বাস দেখে লজ্জা পেল। তবে এখন একটু সামলে নিল। মুখে বলল - ঠিক আছে, আপনি বলছেন যখন আমি আজকেই ফেলে দোব।
মদনবাবু আর কিছু না বলে জামাকাপড় মধুমিতার হাতে দিয়ে চলে গেলেন। পরেরদিন মধুমিতা নিজেই মদনবাবুকে বললেন ছাদের জামাকাপড়গুলো তুলে আনার জন্য। মদনবাবু তুলে আনলে মধুমিতা আজকে নিজের আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল - আজকে কোনো পুরোনো ব্রেসিয়ার পাননি তো আপনি। আমি আপনার কথামত ওগুলো বাতিল করে দিয়েছি।
মদনবাবু বুঝলেন মধুমিতা কি উদ্দেশ্যে ওনাকে আজকে জামাকাপড়গুলো তুলতে পাঠিয়েছিল। তিনি হেঁসে বললেন - না ছোটবৌ। আজকে নতুন ব্রেসিয়ারই দেখলাম। তবে মাঝে মাঝে একটু সাজগোজ করতে পারোতো। এই তো বয়স তোমার। এখন সাজবে নাতো কবে সাজবে।
মধুমিতা জড়তা কাটিয়েছে। তাই বলল - কি হবে শুধু শুধু সাজগোজ করে। তার থেকে এই ভালো আছি।
মধুমিতার চোখে চোখ রেখে মদনবাবু মাথা নায়ের ভঙ্গিতে নেড়ে বললেন - না না ছোটবৌ। বার বার কি দরকার বলে এড়িয়ে যেও না। তোমার অধিকার আছে সাজগোজ করার। শুধু শুধু তুমিই বা কেন নিজের সখ-আল্লাদ বিসর্জন দিচ্ছ। নিজেকে কেন শাস্তি দিচ্ছ। শাস্তি পাবার কেও থাকলে তারা তোমার মামা-মামী আর আমি। তোমার তো কোনো দোষ নেই।
মধুমিতা মদনবাবুর হাত থেকে জামাকাপড়গুলো নিয়ে বলল - দোষ আমার মামা-মামীর থাকতে পারে, কিন্তু আপনার কেন দোষ থাকবে। আপনি তো কোন দোষ করেননি। বরং আপনি আমাকে গলায় দড়ি দেওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন।
মদনবাবু মধুমিতার কথা শুনে জোর গলায় এবার বললেন - আর কখনো যেন তোমার মুখ থেকে এমন কথা না শুনি ছোটবৌ।
এইবলে মদনবাবু আর কিছু না বলে বড় বড় পা ফেলে চলে গেলেন।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)