27-05-2025, 04:54 PM
অশ্লীল ভূত - ১ম পর্ব
“ গ্রামে আমাদের সামান্য জমিজমা আছে। জায়গাটার নাম নীল মহল । আগে সাহেবরা নীলের চাষ করত। তারপর নীলের চাষ যখন উঠে গেল তখন আমার ঠাকুরদা ওটা কিনেছিলেন। এখন সেখানে ধান হয়, আখ হয়, আম-লিচুর বাগানও আছে। দু-চার ঘর প্রজা আছে। আমাদের সাবেক নায়েব হরিহর দাস সেখানে থেকে সম্পত্তি দেখা-শোনা করেন। কাকা শীতকালে গিয়ে তদারক করে আসেন।
“এ বছর কাকা ম্যালেরিয়া নিয়ে বিছানায় শুলেন। কী করা যায়? ধান কাটার সময়, আখও তৈরি হয়েছে। এ সময় মালিকদের একবার যাওয়া দরকার। হরিহর অবশ্য লোক ভালই, বিপত্নীক নিঃসন্তান মানুষ, চুরি-চামারি করেন না। কিন্তু সম্প্রতি তিনি তাড়ি এবং অন্যান্য ব্যাপারে বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছেন, কাজকর্ম ভাল দেখতে পারেন না, প্রজারা লুটেপুটে খায়। সুতরাং আমাকেই যেতে হল।
“ছেলেবেলায় দু’-একবার নীলমহলে গিয়েছি, তারপর আর যাইনি। স্টেশন থেকে চার-পাঁচ মাইল দূরে; সেখান থেকে একরকম বলদ-টানা গাড়ি আছে, তাতেই চড়ে যেতে হয়। পৌষের মাঝামাঝি একদিন বিকেলবেলা গিয়ে পৌঁছলাম। ওদিকে তখন প্রচণ্ড শীত পড়েছে।
“আগে খবর দিয়ে যাইনি, আগে খবর দিয়ে গেলে জমিদারির প্রকৃত স্বরূপ দেখা যায় না, কর্মচারীরা ধোঁকার টাটি তৈরি করে রাখে। গিয়ে দেখি কাছারি-বাড়ির সামনে তক্তপোশ পেতে হরিহর বাবু রোদ্দুরে বসে আছেন , তাঁর সামনে এক কলসি তাড়ি। রোদ্দুরে তাড়ি গেঁজিয়ে কলসির গা বেয়ে ফেনা গড়িয়ে পড়ছে।
“আমাকে দেখে হরিহর বড়ই অপ্রতিভ হয়ে পড়লেন, তারপর এসে পায়ের ধুলো নিলেন। তিনি আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়, কিন্তু আমি মালিক, তার উপর ',। পায়ের ধুলো নিয়ে আমতা আমতা করে বললেন, ‘আগে খবর দিলেন না কেন? খবর পেলে আমি ইস্টিশনে গিয়ে—’
“মনে মনে ভাবলাম, বোকাচোদা খবর দিলে তাড়ির কলসি দেখতে পেতাম না। ন্যাকা সেজে বললাম, ‘ কাকা আসতে পারলেন না, তাঁর শরীর খারাপ । হঠাৎ আমার আসা স্থির হল।’ তারপর কলসির দিকে আঙুল দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ওটা কী?’
“হরিহর এতক্ষণে সামলে নিয়েছেন, বললেন, ‘আজ্ঞে, তালের রস। শীতটা চেপে পড়েছে, এ-সময় তালের রসে শরীর গরম থাকে। একটু হবে নাকি?’
“বললাম, ‘না। তাড়ি এখনও ধরিনি। আমার জন্যে বরং একটু চায়ের ব্যবস্থা করুন।’
“হরিহর ‘কাঙ্চা’ বলে হাঁক দিলেন। কাছারি-বাড়ির পিছন দিক থেকে কাঙ্চা এসে আমাকে দেখে তাড়াতাড়ি আমার পায়ের কাছে মাটিতে হাত ঠেকিয়ে প্রণাম করল। কাঙ্চাকে চিনি, মাঝে মাঝে ধান বিক্রির টাকা নিয়ে বাড়িতে আসে। বুড়ো লোক, জাতে কাহার কিংবা ধানুক, চোখ দুটো ভারি ধূর্ত। কাছারিতে চাকরের কাজ করে আর বিনা খাজনায় দু-তিন বিঘে জমি চাষ করে।
“হরিহর বললেন, ‘ছোটবাবুর জন্যে চা আর জলখাবার তৈরি কর।’
“কাঙ্চা বলল, ‘চা-জলখাবার! আজ্ঞে— তা— আমি ময়না কে এখুনি ডেকে আনছি। সে সব জানে।’
“কাঙ্চা ব্যস্তসমস্তভাবে বাইরে চলে গেল, বোধ হয় গ্রামে গেল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘ময়না কে?’
“শকাঙ্চাএকটু থমকে বললেন, ‘ময়না — কাঙ্চা নাতনী।’
“হরিহর আমাকে কাছারিতে নিয়ে গিয়ে বসালেন। কাছারি পাকা বাড়ি নয়, পাশাপাশি তিনটে মেটে ঘর, সামনে টানা বারান্দা, মাথায় খড়ের চাল। ভিত বেশ উঁচু, কিন্তু অনাদরে অবহেলায় মাটি খসে খসে পড়ছে। চালের অবস্থাও খারাপ , কতদিন ছাওয়া হয়নি তার ঠিক নেই। তিনটে ঘরের একটাতে দপ্তর, মাঝের ঘরটা হরিহরের শোবার ঘর, তার পাশে রান্নাঘর। তিনটে ঘরের অবস্থাই সমান; মেঝেয় ধুলো উড়ছে, চালে ফুটো। হরিহরের উপর মনটা বিরক্ত হয়ে উঠল। তাড়ি খেয়ে খেয়ে লোকটা একেবারে অপদার্থ হয়ে পড়েছে। নেহাত পুরনো চাকর, নইলে দূর করে দিতাম।
“হরিহর বোধ হয় আমার মনের ভাব বুঝতে পেরেছিলেন, কাঁচুমাচু হয়ে বললেন, ‘আমার বড় চুক হয়ে গেছে। আপনি আসবেন জানলে সব ফিটফাট করে রাখতাম। নিজের জন্যে কে অত করে! যা হোক, এবার ধান কাটা হলেই চালটা ছাইয়ে ফেলব।’
“মনটা একটু নরম হল। কাছারি থেকে নেমে বললাম, ‘চায়ের দেরি আছে, আমি ততক্ষণ চারদিক ঘুরে দেখি। ছেলেবেলায় দেখেছি, ভাল মনে নেই।’
“হরিহর বললেন, ‘চলুন আমি দেখাচ্ছি।’
“দু’জনে বেরুলাম। সত্তর-আশি বিঘে চাষের জমি, তার মাঝখানে বিঘে চারেক উঁচু জায়গা; এদেশে বলে ভিঠ্জমি। এই উঁচু জায়গাটার উপর আমাদের কাছারি। আগে এখানে নীলকর সাহেবদের কুঠি ছিল। মাঝখানে মস্ত একটা পুকুর; এই পুকুরে নীলের ঝাড় পচিয়ে প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড লোহার কড়ায় সেদ্ধ করে নীলের ক্বাথ বার করত। এখন পুকুর মজে গেছে, যেটুকু জল আছে তা পদ্ম আর কলমির দামে ভরা। পুকুরের উঁচু পাড়ের একধারে সারি সারি সাহেবদের কুঠি ছিল, এখন ইটের স্তূপ। পুকুরের আর এক পাড়ে কাতার দিয়ে এক সারি বিরাট উনুন; উনুনের গাঁথুনি পাকা, তাদের ওপরে এখনও কয়েকটা লোহার কড়া বসানো রয়েছে। এই সব কড়ায় নীল সেদ্ধ হত, এখন মরচে ধরে ফুটো হয়ে গেছে। তবু আছে, সাহেবরা যেমন রেখে গিয়েছিল তেমনি পড়ে আছে।
“এই চার-বিঘে জোড়া ভগ্নস্তূপের চারদিকে ঝোপঝাড় জন্মেছে। বড় বড় গাছ গজিয়েছে। একটা বিশাল ঝাউগাছ হাত-পা মেলে পুকুরের ঈশান কোণটাকে আড়াল করে রেখেছে। ধানের খেত, আখের খেত, আম-লিচুর বাগান; বিকেলবেলায় পড়ন্ত রৌদ্রে তার উপর বাতাসের ঢেউ খেলে যাচ্ছে। আম-লিচুর বাগানের কোলে প্রজাদের গ্রাম, মোট কুড়ি-পঁচিশটা খড়ে ছাওয়া কুঁড়ে ঘর। বড় সুন্দর দেখতে।
“কিন্তু দেখতে যতই সুন্দর হোক, ওখানকার আবহাওয়া ভাল নয়। ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে নিজের অগোচরেই একটা কাঁটা আমার মনে বিঁধতে লাগল। কোথায় যেন একটা বিকৃত পচা অশুচিতা লুকিয়ে আছে, ঢাকা নর্দমার চাপা দুর্গন্ধের মতো। নীলকর সাহেবরা শুধু অত্যাচারী ছিল না, পাপী ছিল। এমন পাপ নেই যা তারা করত না। তাদের পাপের ছাপ যেন এখনও ও-জায়গা থেকে মুছে যায়নি। মনে পড়ল, কাকা বলেছিলেন— নীলমহলের বাতাসে ম্যালেরিয়ার চেয়েও সাংঘাতিক বিষ আছে; ওখানে বেশিদিন থাকলে মানুষ অধঃপাতে যায়, অমানুষ হয়ে যায়।
“ফিরে আসতে আসতে হঠাৎ চোখে পড়ল, ঝাউগাছটার আড়ালে একটা পাকা ঘর। আঙুল দেখিয়ে প্রশ্ন করলাম, ‘ওটা কী?’
“হরিহর বললেন, ‘ওটা কোৎঘর।’
“কোৎঘর! সে কাকে বলে?”
“নীলকরদের আমলের ঘর। প্রজারা বজ্জাতি করলে সাহেবরা তাদের ধরে এনে ঐ কোৎঘরে বন্ধ করে রাখত। খুব মজবুত ঘর গড়েছিল, যেন লখীন্দরের লোহার ঘর।’
“চলুন তো দেখি।’
“গিয়ে দেখি ঝাউগাছের আওতায় ছোট একটি ঘর। খুব উঁচু নয়, বেঁটে নিরেট চৌকশ, জগদ্দল পাথরের মতো মজবুত ঘর। চওড়া দেওয়াল, মোটামোটা গরাদ লাগানো জানালার লোহার কবাট খোলা রয়েছে, দরজার লোহার কবাটও খোলা। দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলাম; ইট কাঠ দরজা জানালা কিছুই নষ্ট হয়নি, ষাট-সত্তর বছর ধরে দিব্যি অটুট রয়েছে!
“মনে হল, কোৎঘর কিনা, তাই অটুট আছে। সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে, তার জায়গায় অন্য শাসনতন্ত্র আসে, কিন্তু কারাগার ঠিক খাড়া থাকে। মানুষ যখন সমাজ গড়েছিল তখন কারাগারও গড়েছিল— যতদিন একটা আছে ততদিন অন্যটাও থাকবে।
“দোরের কাছে গিয়ে ভিতরে উঁকি মারলাম। মেঝে শান-বাঁধানো, দেওয়ালের চুনকাম এখনও বোঝা যায়। আমি হরিহরকে বললাম, ‘ঘরটা তো বেশ ভাল অবস্থাতেই আছে। ব্যবহার করেন না কেন? দরজা জানালা কি জাম হয়ে গেছে?’
“হরিহর ‘আজ্ঞে—’ বলে থেমে গেলেন। আমি দরজার কবাট ধরে টানলাম, মরচে ধরা হাঁসকলে ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ হল বটে, কিন্তু বেশ খানিকটা নড়ল। আমি হরিহরের পানে তাকালাম। তিনি উৎকণ্ঠিত ভাবে বললেন, ‘সন্ধে হয়ে এল, চলুন এবার ফেরা যাক।’
“সূর্যাস্ত হয়েছে কি হয়নি, কিন্তু ঝাউগাছতলায় ঘোর ঘোর হয়ে এসেছে। কাছারিবাড়ি এখান থেকে বড় জোর এক শ’ গজ। আমি দরজা ছেড়ে পা বাড়ালাম। ঠিক এই সময় আমার কানের কাছে কে যেন খিসখিস শব্দ করে হেসে উঠল। আমি চমকে ফিরে তাকালাম। কেউ নেই। উপর দিকে চোখ তুলে দেখলাম, ঝাউগাছের ডালগুলো একটা দমকা হাওয়া লেগে নড়ে উঠেছে। তারই শব্দ। কিন্তু ঠিক মনে হল যেন চাপা গলার হাসি।
“পুকুরের পাড় দিয়ে অর্ধেক পথ এসেছি, হরিহর একটু কেশে কেশে বললেন, ‘কোৎঘরের জানালা দরজা বন্ধ করা যায়, কিন্তু বন্ধ থাকে না। আপনা-আপনি খুলে যায়।’
“তার মানে?’ আমি থমকে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
“হরিহর বললেন, ‘সেই জন্যেই ঘরটা ব্যবহার করা যায় না। ওতে সাহেব থাকে।’
“সাহেব থাকে! কোন্ সাহেব?’
“আজ্ঞে, আছে একজন।’ হরিহর একবার ঘাড় ফিরিয়ে পিছন দিকে তাকালেন, বললেন, ‘এখন চলুন, রাত্রে বলব।’
“একটু বিরক্ত হলাম। লোকটা কি আমাকে ভূতের গল্প শুনিয়ে ভয় দেখাতে চায় নাকি! পীরের কাছে মামদোবাজি!
“যা হোক্, কাছারিতে ফিরে এসে দেখলাম, তক্তপোশের উপর কম্বল পাতা, তার উপর ফরাস, তার উপর মোটা তাকিয়া। গদিয়ান হয়ে বসলাম। পশ্চিম আকাশে তখনও বেশ আলো রয়েছে, কিন্তু বাতাস ক্রমেই ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। হরিহর ঘরে গিয়ে একটা বালাপোশ গায়ে জড়িয়ে চৌকির কোণে এসে বসলেন। বোধ হয় এই ফাঁকে শরীর-গরম করা সঞ্জীবনী-সুধা সেবন করে এলেন।
“এই সময় একটা মেয়ে রান্নাঘর থেকে নেমে এল দু’হাতে বড় কাঁসার থালার উপর চায়ের পেয়ালা আর জলখাবারের রেকাবি নিয়ে। চলনের ভঙ্গিতে বেশ একটু ঠমকে আছে, হিন্দীতে যাকে বলে লচক্। উচক্কা বয়স, আনুমানিক পঁচিশ ছাব্বিশ, নিটোল পুরন্ত গড়ন। গায়ের রঙ ময়লা বটে, মুখখানা সুন্দর বলা চলে। পুরু ঠোঁট, চোয়ালের হাড় চওড়া, চোখের দৃষ্টি নরম নয়। কিন্তু সব মিলিয়ে একটা দুরন্ত আকর্ষণ আছে, বুকের উপর বড় বড় বাতাবি লেবুর মতো ম্যানা জোড়া যেনো আহ্বান করছে ' এসো আমাকে চেপো, প্রানভরে চুষো' । তাছাড়া চলার সাথে সাথে বড় বড় তাগড়াই পাছা জোড়া উত্তর দক্ষিণ হচ্ছে।
“কাঙ্চার নাতনী ময়না ।’
“আমার সামনে থালা রেখে আমার মুখের পানে চেয়ে হাসল, সাদা দাঁতগুলো ঝক্ঝক্ করে উঠল। সহজ ঘনিষ্ঠ প্রগল্ভতার সুরে বললে, ‘ছোট মালিককে এই প্রথম দেখলাম।’ ঝোকার জন্য পাতলা কাঁচুলির ফাঁক দিয়ে অর্ধেক স্তন যেনো বেরিয়ে এলো, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কোনোরকমে নিজেকে সামাল দিলাম।
“ মেয়েটির কথার আমি উত্তর দিলাম না। হরিহরের দিকে তাকালাম। তিনি অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে বসে আছেন। জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি চা খাবেন না?’
“হরিহর অস্পষ্ট স্বরে বললেন, ‘আমি খাই না।’
“ময়না আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল, বলল, ‘ছোট মালিক, দেখুন না চায়ে মিষ্টি হয়েছে কি না।’ গলায় এতটুকু সঙ্কোচ নেই। চোখে অদ্ভুত দৃষ্টি, দেখলেই গা শিউরে ওঠে।
“চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম, ‘ঠিক আছে।’
“ ময়না বলল, ‘আর নিমকি? খেয়ে দেখুন না।’
“আমি নিমকিতে কামড় দিয়ে বললাম, ‘ঠিক আছে।’
“ ময়না তবু দাঁড়িয়ে রইল। আমি তার দিকে একবার তাকালাম, সে আমার পানে অপলক চোখ মেলে চেয়ে আছে। মুখে ঘনিষ্ঠ নির্লজ্জ হাসি, পেটের অনেকটাই বেরিয়ে আছে, মসৃণ নাভি ।
“হরিহর তার দিকে না তাকিয়েই একটু অপ্রসন্ন স্বরে বললেন, ' ময়না , দাঁড়িয়ে থেকো না, তাড়াতাড়ি রান্নার কাজ সেরে নাও। বাবু ক্লান্ত হয়ে এসেছেন, সকাল সকাল খেয়ে শুয়ে পড়বেন।’
“ময়না আরও খানিক দাঁড়িয়ে রইল, তারপর অনিচ্ছাভরে একটু বেশীই পোঁদ দুলিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেল।
“আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনার রান্না কি ময়নাই করে?’
“হ্যাঁ।”
“ওর ঘরে কে কে আছে?”
“একটু চুপ করে থেকে হরিহর ম্রিয়মাণ স্বরে বললেন, ‘ও কাঙ্চার কাছেই থাকে। একটা স্বামী ছিল, বছরখানেক আগে ওকে ত্যাগ করে চলে গেছে।’
“ হরিহরের দিকে ভাল করে চেয়ে দেখলাম। এতক্ষণ যা চোখে পড়েনি হঠাৎ তাই দেখতে পেলাম। তাঁর শীর্ণ চেহারা, নিষ্প্রভ চোখ, ঝুলে-পড়া আলগা ঠোঁট— তার সাম্প্রতিক জীবনের সম্পূর্ণ ইতিহাস যেন ঐ মুখে লেখা রয়েছে। বুড়ো বয়সে তিনি শুধু তালরসেরই রসিক হননি, অন্য রসেও মজেছেন। পরকীয়া রস। ময়না ছোট ঘরের স্বৈরিণী মেয়ে, হরিহর তাকে ভোগ করে । কিন্তু ময়না শিকারী মেয়ে, বড় শিকার সামনে পেয়ে সে ছোট শিকারের পানে তাকাবে কেন? ময়নার ভাবভঙ্গি থেকে হরিহর তা বুঝতে পেরেছেন। তাই তাঁর মনে সুখ নেই।
“অথচ যখন বয়স কম ছিল, হরিহর তখন সচ্চরিত্র ছিলেন। লেখাপড়া বেশি না জানলেও মনটা ভদ্র ছিল। পাঁচ বছর আগে পর্যন্ত তিনি আমাদের বাড়ির জমিজমা দেখতেন। কাজকর্মে দক্ষতা ছিল, অবৈধ লাভের লোভ ছিল না। আর আজ নীলমহলে এসে তাঁর এই অবস্থা। এটা কি স্থান-মাহাত্ম্য? ম্যালেরিয়ার চেয়েও সাংঘাতিক বিষ তাঁর রক্ত দূষিত করে দিয়েছে?
“চা-জলখাবার শেষ করে বললাম, ‘চলুন, ভেতরে গিয়ে বসা যাক। বাইরে হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।’
“ কাঙ্চা ঘরে ঘরে লণ্ঠন জ্বেলে দিয়েছে। আমরা দপ্তরের মেঝেয় পাতা গদির ওপর গিয়ে বসলাম। হরিহর মচ্ছিভঙ্গ হয়ে আছেন, মাঝে মাঝে চোখ বেঁকিয়ে আমার পানে চাইছেন; বোধ হয় বোঝবার চেষ্টা করছেন ময়নার দুধ আর পাছার দিকে কতটা আকৃষ্ট হয়েছি।
“জিজ্ঞেস করলাম, ‘রাত্রে শোবার ব্যবস্থা কী রকম? আমার সঙ্গে লেপ বিছানা সব আছে।’
“হরিহর বললেন, ‘শোবার ঘরে আপনার বিছানা পেতে দিয়েছি। আমি এই গদির ওপরেই রাত কাটিয়ে দেব।’
“সিগারেট ধরিয়ে তাকিয়ায় ঠেস দিয়ে বসলাম। বললাম, ‘এবার কোৎঘরের সাহেবের গল্প বলুন।’
“একটু বসুন, আমি রান্নার খবরটা নিয়ে আসি।’ বলে হরিহর উঠে গেলেন।
মিনিট দশ কেটে গেছে, রান্নাঘরের ভিতর থেকে কেমন একটা আওয়াজ এলো, মনে মনে কেমন সন্দেহ হলো, দেখা যাক ব্যাপার কি, উল্টোদিকের একটা চটের বস্তা দিয়ে বোঝানো জানালা দেখেছিলাম, তারেই পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম চুপিচুপি । গিয়ে যা দেখলাম তাতে আমার মাথা ঘোরার জোগাড়। ময়না একটা পিঁড়ি তে বসে উনুনে কিছু রান্না করছে, তার গা ঘেঁষে পিছনে আরেকটা পিঁড়িতে বসে হরিহর। উনুনের হলুন আলোতে দেখতে পাচ্ছি ময়নার কাঁচুলির ভিতরে পিছন থেকে দুটো হাত ঢুকিয়ে ম্যানা জোড়া টিপছে হরিহর, ময়না ছেনালি হাসি দিয়ে উঠে যাওয়ার চেষ্টা করছে, হরিহর জোরে তার স্তন জোড়া চেপে ধরে ময়নার খোলা ঘাড়ে আর পিঠে জিভ দিয়ে চেটে দিচ্ছে। এসব আমার খারাপ অবস্থা, বাঁড়া ঠাটিয়ে কলাগাছ, কোনোরকমে নিজেকে সামলে আবার ঘরে ফিরে এলাম।
মিনিট খানেক পরে ফিরে এসে বসলেন হরিহর । গন্ধ পেয়ে বুঝলুম, শুধু ময়নার ডবকা দুধ টেপাই নয়, শীতের অমোঘ মুষ্টিযোগও তালের তাড়িও বেশ খানিকটা গিলেছন। তাঁর চোখে মুখে সজীবতা ফিরে এসেছে।
চলবে....


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)