সাল ১৮২৫
ঘন জঙ্গলের ভেতর গমগম করে উঠলো ঘোড়ার গাড়ির চাকা। পূর্ণিমার নিঃশব্দ আলো গাছপালার ফাঁক গলে নেমে এসেছে – যেন কোনও অভিশপ্ত রাজ্যের দরজায় দাঁড়িয়ে গেছে সময়। গাড়ির চারদিকে মশালের লেলিহান শিখা, জঙ্গলের নিঃসঙ্গ গাছে গাছে কেমন এক অভিশপ্ত নিস্তব্ধতা— যেন শতবর্ষ পুরনো কোনো গোপন কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করছে তারা।
ঘোড়ার গাড়ি থামতেই নেমে এলেন রাজপোশাক পরিহিত এক মধ্যবয়সী দম্পতি— নিঃশব্দ, নিঃস্পন্দ। তাদের চোখে যেন কেবল একটাই উদ্দেশ্য— তন্ত্র, ক্ষমতা, এবং শাশ্বত লালসার চূড়ান্ত রূপ। চোখে লুকনো ভয়, আর তলহীন চাহনি।
তারা এগোতে থাকলো, আর হঠাৎ... সেই ভয়াল কণ্ঠস্বর—যেটা যেন আকাশ ফুঁড়ে এল, কিন্তু মাটির নিচ থেকে গর্জে উঠলো।
"আবার ফিরে এলি? বলেছিলাম তো—অভিশাপকে জাগাবি না।
লালসার জন্য যদি তন্ত্রে হাত বাড়াস—তবে মনে রাখিস, আত্মা খোওয়াতে হবে, শরীর নয়।
তুই রাজা হতে চাস... কিন্তু এতো সহজ নয়।"
জঙ্গলের গায়ে ছায়া নামে, লম্বা চুলে ঢাকা এক অবয়ব ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়—কিন্তু তার চোখ নেই, মুখ নেই।
রাজপোশাক পরা পুরুষটি ধীরে বলে ওঠে—
“আমি প্রস্তুত। আমার সব চাই... আমার সিংহাসন, আমার ভাগ্য— আমি সমস্ত বিলিয়ে দেবো, যদি তুই আমাকে তা দিস।”
ছায়ামানব হেসে ওঠে।
“তাহলে শুন... আমি তোকে দিলাম, কিন্তু সাবধান! যদি সামান্যতম ভুল করিস, এই তন্ত্র তোর রক্তে বিষ ছড়াবে। তোর বংশ, ঘর, নারী—সব ছাই হবে। সব ভালোবাসা হবে বিশ্বাসঘাতকতা। তোর উত্তরপুরুষেরা বহন করবে এই অভিশাপ, যতদিন না রক্ত শেষ হয়...”
গভীর, নিরব, মায়াবী পূর্ণিমা রাতে...চারদিকে ঝিঁঝিঁর থেমে থাকা—আকাশে থমকে থাকা জ্যোৎস্না, যেন শ্বাসরোধ করে বসে আছে।
ছায়ামানব,দীর্ঘ কাঞ্চনবর্ণ কাপড়ে মোড়া এক নারীকে নিয়ে এগিয়ে এল এক নিষিদ্ধ মণ্ডলের দিকে।
তার চোখ দুটো আলো নয়—সেই চোখে শুধুই আগুন-পোড়া ইতিহাস।
ছয় ছায়ামানব একসাথে বলে উঠল—
“শুধু রক্ত নয়… আত্মার ছায়াও জ্বালাতে হয়…”
চুপচাপ আকাশ কেঁপে উঠল।
পৃথিবী যেন ঠিক সেই মুহূর্তে নিঃশ্বাস আটকে রাখল।
জ্যোৎস্নার অন্ধকারে, সপ্তচক্রের মাঝখানে আঁকা হল এক মণ্ডল—কালি নয়, লাল নয়, গরূড় নাভির অগ্নিমেখলা দিয়ে আঁকা হল সেই তন্ত্রচিহ্ন, যেখানে শব্দের চেয়ে নিঃশব্দ বড়ো, আর মৃত্যুর চেয়ে ভয়ানক এক অশরীরী অপেক্ষা করে।
পূর্বদিকে রাখা হল একটি শিশুর দাঁত,
পশ্চিমে—এক বিধবার চোখের জল
উত্তরে—এক পতিতা নারীর চুল
দক্ষিণে—এক রাজপুরুষের রক্তমাখা সোনার আংটি।
আর মাঝে...একটি আয়না, যার পেছনে নিজেকে দেখা যায় না।
এই ছিল আহ্বানের শর্ত। তন্ত্রমণ্ডলের চারপাশে আগুনের রেখা, আর সেই রেখা পার করেই দাঁড়াল সেই পুরুষ ও তার নারী।
তাদের কপালে আঁকা এক কুণ্ডলিত চিহ্ন, যা বলে—“ভবিষ্যৎ আর আমাদের নয়, আমরা ভবিষ্যতের।"
চোখ স্থির, নিঃশ্বাস ভারী।
তাদের ঠোঁট ছুঁয়ে বেরোল এক শীতল ফিসফিসানির তন্ত্রমন্ত্র:
“সার্পিণী কুল কান্তা
যাহার দৃষ্টি বেঁধে রাখে রক্তে,
আমি তাহার দাসত্ব স্বীকার করিলাম।
“হে অদৃশ্যা,
তুমি আমার ভয়, আমার লালসা, আমার শূন্যতা।
তুমি যদি আমাকে গ্রহণ করো, আমি আগেই তোর।
তুমি যা দেবে, সে হবে আমার ভাগ্য।
আমি যদি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করি,
তবে—
আমার বংশভাগ্যে রাখো ছায়ার চিহ্ন,
যাতে কেউ আর আলোয় দাঁড়াতে না পারে।
আমার ঘর হোক তোর গর্ভগৃহ,
যেখানে জন্ম নেবে অন্ধকার।
আমার রমণী হোক তোর অর্ঘ্য,
যার নিঃশ্বাসে বাজবে তোর নাম।
আর আমার আত্মা—
হোক তোর ছায়ার তেল,
যা তুই জ্বালাবি, যখনই আমি ভুল করব।”
এরপর নিঃশব্দে নিভে গেল একটি মশাল—আর জ্বলে উঠল অন্য এক আলো—যেটা আগুন নয়, আলো নয়, বরং অভিশপ্ত স্মৃতির তেজ,যা একদিন এক সাদা দেওয়ালের গায়ে লেখা থাকবে... চিরকাল।
সাল ২০২৫
Chapter 1 – আয়নার ঘর
মহানগরীর রবিবার মানেই—ঘড়ির কাঁটা একটু ঢিলে, জানলার পর্দায় একটু বেশি রোদ, আর শরীরজুড়ে অলস একটুখানি আরাম।
এই শহরের বুকজোড়া অভিজাত এক ফ্ল্যাটে আজকের সকালটা যেন আরও একটু ধীর, আরও একটু কোমল।
ঘড়িতে তখন সকাল আটটা।
পর্দার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলতো আলো বিছানার সাদা চাদরে এসে পড়েছে। আলোটা ধীরে ধীরে গড়িয়ে পড়ছে শুয়ে থাকা এক নারীর চোখে—শ্রেয়া।
চোখ খুলেই একটু কুঁচকে ওঠে সে, তারপর ক্লান্তির মত পাশ ফিরে তাকায়।
অরুণ এখনো গভীর ঘুমে ডুবে আছে—গতরাতটা ছিল একটু আলাদা। অনেকদিন পর ওর শরীর ছুঁয়েছিল অরুন, গত রাত্রে অরুণের স্পর্শ বন্য ছিল, আদর ছিল, ছোঁয়া ছিল… কিন্তু কোথাও যেন শ্রেয়ার ভেতরটা ঠিক জেগে ওঠেনি। একটা শূন্যতা থেকে গিয়েছিল, তবু অরুণকে আজ বিরক্ত লাগছে না।
বিছানায় বসে কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে থাকে।
তারপর ধীরে ধীরে উঠে যায় বাথরুমে।
জল যখন তার গায়ে নামে, তার ভেতরের ক্লান্তি ধুয়ে যায় ধীরে ধীরে।
ভেজা চুল কাঁধে লেপ্টে থাকে, ঠোঁট দুটো আলতোভাবে আধ-ভেজা, আর শরীরটা জলের ফোঁটায় মোড়া এক অদ্ভুত ঘোরে থাকে।
বাথরুম থেকে বেরিয়ে তার গায়ে তখন শুধু একটা বড় সাদা তোয়ালে। ভেজা ত্বকের উপর জল গড়িয়ে পড়ছে—বুকের ভাঁজে থেমে থেকে নাভির দিকে নামছে, আর তাতে যেন আলো-ছায়ার নাচ লেগে আছে।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের দিকে তাকায়। আজ তার নিজের শরীরটাকে কেমন অচেনা লাগে...এই শরীরই তো, প্রতিদিনের। তবু কেন আজ এত স্পর্শকাতর, এত আলো-মাখা মনে হচ্ছে?
তার বুকের ভেতর কি কোথাও ধীরে ধীরে জেগে উঠছে এক নিঃশব্দ কামনা।
ড্রেসিং টেবিলের দিকে গিয়ে আজ একটু বেশি ভাবনা করে। সাতসকালে এই সাজ?—হয়তো ঠিক না। তবু শরীরটা আজ একটু আদরে মোড়াতে ইচ্ছে করে।
সে তুলে নেয় এক টুকরো লাল স্যাটিনের ব্রা—চারপাশে সাদা লেইসের কারুকাজ। আঙুল ছুঁয়ে গেলে মনে হয় যেন মোলায়েম চুমু। সাথে হালকা পাতলা সাদা প্যান্টি—যেটার ইলাস্টিকে কোমরের ত্বক একটু কেঁপে ওঠে।
তারপর পিচ রঙের টাইট ব্লাউজ—যেটাতে স্তনযুগলটা যেন একটু বেশি স্পষ্ট হয়ে থাকে, একধরনের অচেনা আকর্ষণে। গোলাপি রঙা সিল্কের পেটিকোট, আর তার উপর তুলে নেয় পাতলা, ময়ূরনীল এক সুতির শাড়ি।
এই শাড়ির প্রতিটা ভাঁজ যেন তার শরীরের ঢেউ ছুঁয়ে যায়—কোনো গোপন তৃষ্ণা জেগে ওঠে সেই ভাঁজে ভাঁজে।
বিছানার দিকে একবার ফিরে তাকায়—অরুণ এখনো বিছানায় গা এলিয়ে ঘুমোচ্ছে।
সে রান্নাঘরের দিকে যায়—নাস্তা বানাবে বলে।
শ্রেয়া ঘর থেকে বেরোনোর পরই অরুণ চোখ মেলে তাকালো জানালার দিকে। জানালার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো বিছানায় পড়েছে, ঠিক যেন কারও অনিচ্ছাসত্ত্বেও ফাঁস হয়ে যাওয়া এক গোপন দৃশ্য। মোবাইলটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইল। কাল রাতের কথা মনে পড়তেই শরীরটা কেমন শিউরে উঠল। কাল রাতে সে যে ছিল— এক পশুর মতো। ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শ্রেয়ার উপর, যেনো সব লজ্জা, কুণ্ঠা ছিঁড়ে ফেলে আদিম উন্মাদনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। কিন্তু উত্তেজনার সেই আগুনে, তার নিজেরই দাবানল এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে বিস্ফোরণ আগে হয়ে যায়— শ্রেয়ার শরীর তখনও সেই আগুনে পুড়ছে।
শ্রেয়ার তলপেটটা যেন ভীষণ কেঁপে কেঁপে উঠছিল, শরীরটা কাঁপছিল, নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠছিল। যেনো শ্রেয়ার অনেক লুকোনো কাম সেদিন হঠাৎ করে বের হয়ে আসছিল কিন্তু অরুণ জানে, সেদিন সে তাকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেনি— সেখানে শুধু একটা অপূর্ণতা রেখে গেছে।
আজ সকালে তাই যখন তোয়ালে জড়ানো শ্রেয়াকে দেখল— তার স্ত্রীর চোখে আজ যেন অন্য আলো, অন্য এক জ্যোতি। মনে হচ্ছিল, যেন ওর ভিতরে কেউ ঘুম থেকে জেগে উঠেছে— যাকে অরুণ চেনে না। সে যেন অন্য কারোর স্ত্রী! তাই বিছানায় শুয়ে আধ বোজা চোখে শ্রেয়ার সৌন্দর্য উপভোগ করছিল ,ভাবতে ভাবতে অরুণ ধীরে ধীরে বিছানা ছেড়ে উঠে বাথরুমে চলে গেল।
রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে আছে শ্রেয়া। নিজের কাজে ব্যাস্ত, পাতলা শাড়িটা কোমরের কাছে এমনভাবে বাঁধা যে তার গোল ও টানটান নিতম্বদুটি যেন শাড়ির আঁচলের ছায়া ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে। একটা অদ্ভুত শিরশিরে অনুভব হচ্ছিল— কেউ যেন পেছন থেকে চুপচাপ তাকিয়ে আছে, নিঃশব্দে তার শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছে চোখ দিয়ে। সে হঠাৎ পেছন ফিরে দেখে— দরজার ফ্রেমে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ব্রিজেশ রায়। শ্রেয়ার শ্বশুর, কিন্তু সেই মুহূর্তে তার চোখে ছিল না কোনও পিতৃত্বের স্নেহ— ছিল একরাশ বিস্ময়, লালসা, আর স্মৃতির গন্ধ।
চোখে চোখ পড়তেই তিনি ধীরে ধীরে এগিয়ে এলেন, চোখ নামালেন না একবারও—
“বৌমা, আজ তোমাকে বড়ো অন্যরকম লাগছে। তোমার শাশুড়িও... একসময় এরকমই সেজে থাকতো। আজ অনেক বছর পর তোমার মধ্যে যেন তাকে দেখলাম।”
শ্রেয়া একটা ঠোঁট টিপে হেসে বলল,
“বাবা, আপনি বসুন। আমি একটু চা নিয়ে আসছি।” — গলা স্বাভাবিক রাখলেও, শরীরে একটা শিহরণ ছড়িয়ে পড়ল। সে জানে, এই প্রশংসা নিছক স্মৃতিচারণ নয়।
তার ঠাণ্ডা চাহনির মাঝে ছিল এক ধরনের নিষিদ্ধ উষ্ণতা— একটু আগে যেভাবে তার পাছার দিকে তাকিয়ে ছিল, সেটা কি নিছক ভ্রান্তি? নাকি এটা শুরু?
ব্রিজেশ রায় আস্তে হেঁটে এসে ওর গায়ের পাশে দাঁড়ালেন— খুব কাছাকাছি। তারপর নরম গলায় বললেন,
“আমি ডাইনিংয়ে বসছি, বৌমা। চা দিও।”
তারপর চলে গেলেন, কিন্তু সেই চোখদুটো যেন দরজার ফাঁক দিয়ে এখনও ওর পেছনে গেঁথে রইল।
শ্রেয়া জানে, ডাইনিং রুমে সোফায় যদি কেউ বসে রান্না ঘরের দিকে তাকায় , তাহলে সেই শ্রেয়ার উন্নত পাছার দৃশ্য উপভোগ করতে পারবে — আর সেই ভঙ্গিমা, সেই শরীরী ভাষা... একটা পুরুষের চোখকে যতটুকু উসকাতে পারে, তার সবটুকুই তখন ঘটবে।
রান্নাঘরের ধোঁয়াটে আলোয় নরম আলোড়ন তুলে দাঁড়িয়ে ছিল শ্রেয়া।
সে অনুভব করছিল—এক জোড়া অসভ্য, নোংরা, অশ্লীল চোখ , ধীরে ধীরে গলে পড়ছে তার শাড়িতে মোড়ানো নিতম্বের ওপর। পেছন না ফিরেও সে বুঝে যায়, ওই চোখ দুটো কার—শ্রেয়ার শ্বশুর, ব্রিজেশ রায়।
একসময় সেই চোখেই ছিল স্নেহের নরম ছোঁয়া, পুত্রবধূর প্রতি অভিভাবকের গর্ব। আর আজ... সেই চোখেই আজ জানোয়ারের কোনো নোংরা কামনায় লালসায় ভরা পশুর , এক নিষিদ্ধ, বন্য ক্ষুধা।
শ্রেয়ার বুকের ভিতরটা ধকধক করে ওঠে—লজ্জায়, অপমানে, আবার... কোথাও যেন একটুখানি শিহরণে।
তার মনে পড়ে যায় করোনার সেই নিঃশব্দ রাতগুলোর কথা।
যখন হঠাৎ একরাতে মারা গেলেন তার শাশুড়ি—একদম সুস্থ, রক্তে মাংসে ভরা, প্রাণবন্ত এক নারী। শুনেছিল হার্ট অ্যাটাক... কিন্তু সত্যিটা কি সত্যিই তাই ছিল?
ব্রিজেশ তখন গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে আসতে চাইছিল না, কিন্তু পুত্র অমর জোর করে নিয়ে এসেছিল তাকে। তারপর? সেই বৃদ্ধ আর ফেরেনি—প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে এই বাড়িতেই তার আশ্রয়।
চা তৈরি হয়, শ্রেয়া ধাতস্থ হতে চেষ্টা করে।
সে একটা সাদা কাপে চা ঢালে—তপ্ত, সুবাসিত, তার শরীরের ঘামের মতো গাঢ়। তারপর প্লেটে রেখে বেরিয়ে আসে রান্নাঘর থেকে।
ব্রিজেশ চোখ বন্ধ করে সোফায় হেলান দিয়ে বসে, যেন একটা বিশ্রামরত বাঘ। শ্রেয়া এগিয়ে গেলে চোখ খুলে তাকায় সে।
“উফ্... কী যে সুন্দর গন্ধ...” — ব্রিজেশের গলা নেমে আসে গা ঘিনঘিনে কাঁপুনিতে।
শ্রেয়া মুহূর্তে চমকে ওঠে। সে কি চায়ের গন্ধ বলছে? নাকি... তার শরীরের?
তবু নিজেকে সামলে নিয়ে চা রাখে টেবিলে। কিছু না বলে ধীরে ধীরে পা ফেলতে থাকে—শ্বশুরের ঘরের দিকে। তার চলার ছন্দে শাড়ির আঁচল সরে যায় এক পলক, আর ঘরের বাতাসে মিলিয়ে যায় তার শরীরের নরম সুবাস।
পেছন থেকে ব্রিজেশের দৃষ্টি ধরা পড়ে দরজার কাচে...
চোখদুটো এখন আর মানুষী নয়—সেই চোখে আছে হিংস্র এক কামনা, আর শ্রেয়া... থেমে থেমে শ্বশুরের ঘরের দিকে এগিয়ে যায়........
ঘন জঙ্গলের ভেতর গমগম করে উঠলো ঘোড়ার গাড়ির চাকা। পূর্ণিমার নিঃশব্দ আলো গাছপালার ফাঁক গলে নেমে এসেছে – যেন কোনও অভিশপ্ত রাজ্যের দরজায় দাঁড়িয়ে গেছে সময়। গাড়ির চারদিকে মশালের লেলিহান শিখা, জঙ্গলের নিঃসঙ্গ গাছে গাছে কেমন এক অভিশপ্ত নিস্তব্ধতা— যেন শতবর্ষ পুরনো কোনো গোপন কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করছে তারা।
ঘোড়ার গাড়ি থামতেই নেমে এলেন রাজপোশাক পরিহিত এক মধ্যবয়সী দম্পতি— নিঃশব্দ, নিঃস্পন্দ। তাদের চোখে যেন কেবল একটাই উদ্দেশ্য— তন্ত্র, ক্ষমতা, এবং শাশ্বত লালসার চূড়ান্ত রূপ। চোখে লুকনো ভয়, আর তলহীন চাহনি।
তারা এগোতে থাকলো, আর হঠাৎ... সেই ভয়াল কণ্ঠস্বর—যেটা যেন আকাশ ফুঁড়ে এল, কিন্তু মাটির নিচ থেকে গর্জে উঠলো।
"আবার ফিরে এলি? বলেছিলাম তো—অভিশাপকে জাগাবি না।
লালসার জন্য যদি তন্ত্রে হাত বাড়াস—তবে মনে রাখিস, আত্মা খোওয়াতে হবে, শরীর নয়।
তুই রাজা হতে চাস... কিন্তু এতো সহজ নয়।"
জঙ্গলের গায়ে ছায়া নামে, লম্বা চুলে ঢাকা এক অবয়ব ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়—কিন্তু তার চোখ নেই, মুখ নেই।
রাজপোশাক পরা পুরুষটি ধীরে বলে ওঠে—
“আমি প্রস্তুত। আমার সব চাই... আমার সিংহাসন, আমার ভাগ্য— আমি সমস্ত বিলিয়ে দেবো, যদি তুই আমাকে তা দিস।”
ছায়ামানব হেসে ওঠে।
“তাহলে শুন... আমি তোকে দিলাম, কিন্তু সাবধান! যদি সামান্যতম ভুল করিস, এই তন্ত্র তোর রক্তে বিষ ছড়াবে। তোর বংশ, ঘর, নারী—সব ছাই হবে। সব ভালোবাসা হবে বিশ্বাসঘাতকতা। তোর উত্তরপুরুষেরা বহন করবে এই অভিশাপ, যতদিন না রক্ত শেষ হয়...”
গভীর, নিরব, মায়াবী পূর্ণিমা রাতে...চারদিকে ঝিঁঝিঁর থেমে থাকা—আকাশে থমকে থাকা জ্যোৎস্না, যেন শ্বাসরোধ করে বসে আছে।
ছায়ামানব,দীর্ঘ কাঞ্চনবর্ণ কাপড়ে মোড়া এক নারীকে নিয়ে এগিয়ে এল এক নিষিদ্ধ মণ্ডলের দিকে।
তার চোখ দুটো আলো নয়—সেই চোখে শুধুই আগুন-পোড়া ইতিহাস।
ছয় ছায়ামানব একসাথে বলে উঠল—
“শুধু রক্ত নয়… আত্মার ছায়াও জ্বালাতে হয়…”
চুপচাপ আকাশ কেঁপে উঠল।
পৃথিবী যেন ঠিক সেই মুহূর্তে নিঃশ্বাস আটকে রাখল।
জ্যোৎস্নার অন্ধকারে, সপ্তচক্রের মাঝখানে আঁকা হল এক মণ্ডল—কালি নয়, লাল নয়, গরূড় নাভির অগ্নিমেখলা দিয়ে আঁকা হল সেই তন্ত্রচিহ্ন, যেখানে শব্দের চেয়ে নিঃশব্দ বড়ো, আর মৃত্যুর চেয়ে ভয়ানক এক অশরীরী অপেক্ষা করে।
পূর্বদিকে রাখা হল একটি শিশুর দাঁত,
পশ্চিমে—এক বিধবার চোখের জল
উত্তরে—এক পতিতা নারীর চুল
দক্ষিণে—এক রাজপুরুষের রক্তমাখা সোনার আংটি।
আর মাঝে...একটি আয়না, যার পেছনে নিজেকে দেখা যায় না।
এই ছিল আহ্বানের শর্ত। তন্ত্রমণ্ডলের চারপাশে আগুনের রেখা, আর সেই রেখা পার করেই দাঁড়াল সেই পুরুষ ও তার নারী।
তাদের কপালে আঁকা এক কুণ্ডলিত চিহ্ন, যা বলে—“ভবিষ্যৎ আর আমাদের নয়, আমরা ভবিষ্যতের।"
চোখ স্থির, নিঃশ্বাস ভারী।
তাদের ঠোঁট ছুঁয়ে বেরোল এক শীতল ফিসফিসানির তন্ত্রমন্ত্র:
“সার্পিণী কুল কান্তা
যাহার দৃষ্টি বেঁধে রাখে রক্তে,
আমি তাহার দাসত্ব স্বীকার করিলাম।
“হে অদৃশ্যা,
তুমি আমার ভয়, আমার লালসা, আমার শূন্যতা।
তুমি যদি আমাকে গ্রহণ করো, আমি আগেই তোর।
তুমি যা দেবে, সে হবে আমার ভাগ্য।
আমি যদি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করি,
তবে—
আমার বংশভাগ্যে রাখো ছায়ার চিহ্ন,
যাতে কেউ আর আলোয় দাঁড়াতে না পারে।
আমার ঘর হোক তোর গর্ভগৃহ,
যেখানে জন্ম নেবে অন্ধকার।
আমার রমণী হোক তোর অর্ঘ্য,
যার নিঃশ্বাসে বাজবে তোর নাম।
আর আমার আত্মা—
হোক তোর ছায়ার তেল,
যা তুই জ্বালাবি, যখনই আমি ভুল করব।”
এরপর নিঃশব্দে নিভে গেল একটি মশাল—আর জ্বলে উঠল অন্য এক আলো—যেটা আগুন নয়, আলো নয়, বরং অভিশপ্ত স্মৃতির তেজ,যা একদিন এক সাদা দেওয়ালের গায়ে লেখা থাকবে... চিরকাল।
সাল ২০২৫
Chapter 1 – আয়নার ঘর
মহানগরীর রবিবার মানেই—ঘড়ির কাঁটা একটু ঢিলে, জানলার পর্দায় একটু বেশি রোদ, আর শরীরজুড়ে অলস একটুখানি আরাম।
এই শহরের বুকজোড়া অভিজাত এক ফ্ল্যাটে আজকের সকালটা যেন আরও একটু ধীর, আরও একটু কোমল।
ঘড়িতে তখন সকাল আটটা।
পর্দার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলতো আলো বিছানার সাদা চাদরে এসে পড়েছে। আলোটা ধীরে ধীরে গড়িয়ে পড়ছে শুয়ে থাকা এক নারীর চোখে—শ্রেয়া।
চোখ খুলেই একটু কুঁচকে ওঠে সে, তারপর ক্লান্তির মত পাশ ফিরে তাকায়।
অরুণ এখনো গভীর ঘুমে ডুবে আছে—গতরাতটা ছিল একটু আলাদা। অনেকদিন পর ওর শরীর ছুঁয়েছিল অরুন, গত রাত্রে অরুণের স্পর্শ বন্য ছিল, আদর ছিল, ছোঁয়া ছিল… কিন্তু কোথাও যেন শ্রেয়ার ভেতরটা ঠিক জেগে ওঠেনি। একটা শূন্যতা থেকে গিয়েছিল, তবু অরুণকে আজ বিরক্ত লাগছে না।
বিছানায় বসে কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে থাকে।
তারপর ধীরে ধীরে উঠে যায় বাথরুমে।
জল যখন তার গায়ে নামে, তার ভেতরের ক্লান্তি ধুয়ে যায় ধীরে ধীরে।
ভেজা চুল কাঁধে লেপ্টে থাকে, ঠোঁট দুটো আলতোভাবে আধ-ভেজা, আর শরীরটা জলের ফোঁটায় মোড়া এক অদ্ভুত ঘোরে থাকে।
বাথরুম থেকে বেরিয়ে তার গায়ে তখন শুধু একটা বড় সাদা তোয়ালে। ভেজা ত্বকের উপর জল গড়িয়ে পড়ছে—বুকের ভাঁজে থেমে থেকে নাভির দিকে নামছে, আর তাতে যেন আলো-ছায়ার নাচ লেগে আছে।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের দিকে তাকায়। আজ তার নিজের শরীরটাকে কেমন অচেনা লাগে...এই শরীরই তো, প্রতিদিনের। তবু কেন আজ এত স্পর্শকাতর, এত আলো-মাখা মনে হচ্ছে?
তার বুকের ভেতর কি কোথাও ধীরে ধীরে জেগে উঠছে এক নিঃশব্দ কামনা।
ড্রেসিং টেবিলের দিকে গিয়ে আজ একটু বেশি ভাবনা করে। সাতসকালে এই সাজ?—হয়তো ঠিক না। তবু শরীরটা আজ একটু আদরে মোড়াতে ইচ্ছে করে।
সে তুলে নেয় এক টুকরো লাল স্যাটিনের ব্রা—চারপাশে সাদা লেইসের কারুকাজ। আঙুল ছুঁয়ে গেলে মনে হয় যেন মোলায়েম চুমু। সাথে হালকা পাতলা সাদা প্যান্টি—যেটার ইলাস্টিকে কোমরের ত্বক একটু কেঁপে ওঠে।
তারপর পিচ রঙের টাইট ব্লাউজ—যেটাতে স্তনযুগলটা যেন একটু বেশি স্পষ্ট হয়ে থাকে, একধরনের অচেনা আকর্ষণে। গোলাপি রঙা সিল্কের পেটিকোট, আর তার উপর তুলে নেয় পাতলা, ময়ূরনীল এক সুতির শাড়ি।
এই শাড়ির প্রতিটা ভাঁজ যেন তার শরীরের ঢেউ ছুঁয়ে যায়—কোনো গোপন তৃষ্ণা জেগে ওঠে সেই ভাঁজে ভাঁজে।
বিছানার দিকে একবার ফিরে তাকায়—অরুণ এখনো বিছানায় গা এলিয়ে ঘুমোচ্ছে।
সে রান্নাঘরের দিকে যায়—নাস্তা বানাবে বলে।
শ্রেয়া ঘর থেকে বেরোনোর পরই অরুণ চোখ মেলে তাকালো জানালার দিকে। জানালার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো বিছানায় পড়েছে, ঠিক যেন কারও অনিচ্ছাসত্ত্বেও ফাঁস হয়ে যাওয়া এক গোপন দৃশ্য। মোবাইলটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইল। কাল রাতের কথা মনে পড়তেই শরীরটা কেমন শিউরে উঠল। কাল রাতে সে যে ছিল— এক পশুর মতো। ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শ্রেয়ার উপর, যেনো সব লজ্জা, কুণ্ঠা ছিঁড়ে ফেলে আদিম উন্মাদনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। কিন্তু উত্তেজনার সেই আগুনে, তার নিজেরই দাবানল এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে বিস্ফোরণ আগে হয়ে যায়— শ্রেয়ার শরীর তখনও সেই আগুনে পুড়ছে।
শ্রেয়ার তলপেটটা যেন ভীষণ কেঁপে কেঁপে উঠছিল, শরীরটা কাঁপছিল, নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠছিল। যেনো শ্রেয়ার অনেক লুকোনো কাম সেদিন হঠাৎ করে বের হয়ে আসছিল কিন্তু অরুণ জানে, সেদিন সে তাকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেনি— সেখানে শুধু একটা অপূর্ণতা রেখে গেছে।
আজ সকালে তাই যখন তোয়ালে জড়ানো শ্রেয়াকে দেখল— তার স্ত্রীর চোখে আজ যেন অন্য আলো, অন্য এক জ্যোতি। মনে হচ্ছিল, যেন ওর ভিতরে কেউ ঘুম থেকে জেগে উঠেছে— যাকে অরুণ চেনে না। সে যেন অন্য কারোর স্ত্রী! তাই বিছানায় শুয়ে আধ বোজা চোখে শ্রেয়ার সৌন্দর্য উপভোগ করছিল ,ভাবতে ভাবতে অরুণ ধীরে ধীরে বিছানা ছেড়ে উঠে বাথরুমে চলে গেল।
রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে আছে শ্রেয়া। নিজের কাজে ব্যাস্ত, পাতলা শাড়িটা কোমরের কাছে এমনভাবে বাঁধা যে তার গোল ও টানটান নিতম্বদুটি যেন শাড়ির আঁচলের ছায়া ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে। একটা অদ্ভুত শিরশিরে অনুভব হচ্ছিল— কেউ যেন পেছন থেকে চুপচাপ তাকিয়ে আছে, নিঃশব্দে তার শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছে চোখ দিয়ে। সে হঠাৎ পেছন ফিরে দেখে— দরজার ফ্রেমে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ব্রিজেশ রায়। শ্রেয়ার শ্বশুর, কিন্তু সেই মুহূর্তে তার চোখে ছিল না কোনও পিতৃত্বের স্নেহ— ছিল একরাশ বিস্ময়, লালসা, আর স্মৃতির গন্ধ।
চোখে চোখ পড়তেই তিনি ধীরে ধীরে এগিয়ে এলেন, চোখ নামালেন না একবারও—
“বৌমা, আজ তোমাকে বড়ো অন্যরকম লাগছে। তোমার শাশুড়িও... একসময় এরকমই সেজে থাকতো। আজ অনেক বছর পর তোমার মধ্যে যেন তাকে দেখলাম।”
শ্রেয়া একটা ঠোঁট টিপে হেসে বলল,
“বাবা, আপনি বসুন। আমি একটু চা নিয়ে আসছি।” — গলা স্বাভাবিক রাখলেও, শরীরে একটা শিহরণ ছড়িয়ে পড়ল। সে জানে, এই প্রশংসা নিছক স্মৃতিচারণ নয়।
তার ঠাণ্ডা চাহনির মাঝে ছিল এক ধরনের নিষিদ্ধ উষ্ণতা— একটু আগে যেভাবে তার পাছার দিকে তাকিয়ে ছিল, সেটা কি নিছক ভ্রান্তি? নাকি এটা শুরু?
ব্রিজেশ রায় আস্তে হেঁটে এসে ওর গায়ের পাশে দাঁড়ালেন— খুব কাছাকাছি। তারপর নরম গলায় বললেন,
“আমি ডাইনিংয়ে বসছি, বৌমা। চা দিও।”
তারপর চলে গেলেন, কিন্তু সেই চোখদুটো যেন দরজার ফাঁক দিয়ে এখনও ওর পেছনে গেঁথে রইল।
শ্রেয়া জানে, ডাইনিং রুমে সোফায় যদি কেউ বসে রান্না ঘরের দিকে তাকায় , তাহলে সেই শ্রেয়ার উন্নত পাছার দৃশ্য উপভোগ করতে পারবে — আর সেই ভঙ্গিমা, সেই শরীরী ভাষা... একটা পুরুষের চোখকে যতটুকু উসকাতে পারে, তার সবটুকুই তখন ঘটবে।
রান্নাঘরের ধোঁয়াটে আলোয় নরম আলোড়ন তুলে দাঁড়িয়ে ছিল শ্রেয়া।
সে অনুভব করছিল—এক জোড়া অসভ্য, নোংরা, অশ্লীল চোখ , ধীরে ধীরে গলে পড়ছে তার শাড়িতে মোড়ানো নিতম্বের ওপর। পেছন না ফিরেও সে বুঝে যায়, ওই চোখ দুটো কার—শ্রেয়ার শ্বশুর, ব্রিজেশ রায়।
একসময় সেই চোখেই ছিল স্নেহের নরম ছোঁয়া, পুত্রবধূর প্রতি অভিভাবকের গর্ব। আর আজ... সেই চোখেই আজ জানোয়ারের কোনো নোংরা কামনায় লালসায় ভরা পশুর , এক নিষিদ্ধ, বন্য ক্ষুধা।
শ্রেয়ার বুকের ভিতরটা ধকধক করে ওঠে—লজ্জায়, অপমানে, আবার... কোথাও যেন একটুখানি শিহরণে।
তার মনে পড়ে যায় করোনার সেই নিঃশব্দ রাতগুলোর কথা।
যখন হঠাৎ একরাতে মারা গেলেন তার শাশুড়ি—একদম সুস্থ, রক্তে মাংসে ভরা, প্রাণবন্ত এক নারী। শুনেছিল হার্ট অ্যাটাক... কিন্তু সত্যিটা কি সত্যিই তাই ছিল?
ব্রিজেশ তখন গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে আসতে চাইছিল না, কিন্তু পুত্র অমর জোর করে নিয়ে এসেছিল তাকে। তারপর? সেই বৃদ্ধ আর ফেরেনি—প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে এই বাড়িতেই তার আশ্রয়।
চা তৈরি হয়, শ্রেয়া ধাতস্থ হতে চেষ্টা করে।
সে একটা সাদা কাপে চা ঢালে—তপ্ত, সুবাসিত, তার শরীরের ঘামের মতো গাঢ়। তারপর প্লেটে রেখে বেরিয়ে আসে রান্নাঘর থেকে।
ব্রিজেশ চোখ বন্ধ করে সোফায় হেলান দিয়ে বসে, যেন একটা বিশ্রামরত বাঘ। শ্রেয়া এগিয়ে গেলে চোখ খুলে তাকায় সে।
“উফ্... কী যে সুন্দর গন্ধ...” — ব্রিজেশের গলা নেমে আসে গা ঘিনঘিনে কাঁপুনিতে।
শ্রেয়া মুহূর্তে চমকে ওঠে। সে কি চায়ের গন্ধ বলছে? নাকি... তার শরীরের?
তবু নিজেকে সামলে নিয়ে চা রাখে টেবিলে। কিছু না বলে ধীরে ধীরে পা ফেলতে থাকে—শ্বশুরের ঘরের দিকে। তার চলার ছন্দে শাড়ির আঁচল সরে যায় এক পলক, আর ঘরের বাতাসে মিলিয়ে যায় তার শরীরের নরম সুবাস।
পেছন থেকে ব্রিজেশের দৃষ্টি ধরা পড়ে দরজার কাচে...
চোখদুটো এখন আর মানুষী নয়—সেই চোখে আছে হিংস্র এক কামনা, আর শ্রেয়া... থেমে থেমে শ্বশুরের ঘরের দিকে এগিয়ে যায়........


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)