Thread Rating:
  • 36 Vote(s) - 2.97 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica তার ছিঁড়ে গেছে কবে
(৪৮)





মামন-পিসির তাড়া খেয়ে ফ্রেস হয়ে বাবার সমাধির সামনে গিয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে প্রণাম করল দুই ভাইবোন। তার পর চোখ মুছে ঘরে ঢুকে দেখল, মামন আর পিসির সঙ্গে গল্প করছে ওদের মা। ওদের দেখে তাড়াতাড়ি উঠে আগে কাপে চা ঢেলে প্লেটে বিস্কিট দিল ঈশিতাই। কোনও কথা না বলে দু’জনে চুপচাপ খেতে লাগল। তার মধ্যেই পিসি হুকুম জারি করল, ‘‘কুট্টি, বাইকে মাকে নিয়ে শান্তিনিকেতন যা। মা ওখানে বেশ কয়েকটা কাজ করবে। যেখানে যাবে, সঙ্গে নিয়ে যাবি। আর হুড়ুম-দুড়ম করে চালাবি না, এই বয়সে পড়ে গেলে কেলেঙ্কারি। ফেরার পথে মায়ের ঘাড়ে সব চাপাবি না, নিজে বইবি। আর এখন দেরি না করে কিছু গিলে উদ্ধার করো সবাইকে।’’ কুট্টি কথাগুলো শুনে ভেঙচে দিল। তার পরেই কাপ রেখে পিসির গলা জড়িয়ে ধরে কানেকানে কী সব বলল, পিসি শুনে উল্টে ওরই কান ধরে ‘বাঁদর ছেলে’ বলে পিঠে একটা চড় মেরে বলল, ভাগ!  ঈশিতা কিছু না বুঝতে পেরে সুভদ্রার দিকে তাকাতেই ও চোখের ইশারায় বলল, পরে বলছি। কুট্টি ঘর থেকে বেরোতেই চা শেষ করে পিছন পিছন গেল মুট্টিও। নিশ্চয়ই কথা বলবে দুই ভাইবোনে পিসির কথাটা নিয়ে। ওরা ঘর ছাড়তেই জয়তী মুচকি হেসে ঈশিতা ও সুভদ্রাকে বলল, ‘‘কুট্টি এখনও দ্বিধা ঝেড়ে ফেলতে পারেনি। আমাকে বলল, মায়ের সঙ্গে তুমিও চলো না! ও একা যাবে, তাও মাকে সঙ্গে নিয়ে, মা মা বলে ডাকতে হবে— সব মিলিয়ে একটা দ্বিধা এখনও ওর আছে। মুট্টিরও তাই। সে কারণেই আজ কুট্টিকে একা পাঠাব। আর তুই ওদের আজ সকালে জলখাবার খাওয়াবি। একটা থালায় খাবার বেড়ে দু’জনকে মুখে তুলে তুলে খাওয়াবি। এটা ওদের ছুটির আব্দার। তবে যেন বুঝতে না পারে, আমরা বলেছি।’’ জয়তীর কথা শেষ হতেই সুভদ্রা বলল, ‘‘আর বড়দি শোন, ওই ডাক ওদের বেরোতে সময় লাগবে। এখন যেটা ডাকবে, সেটা স্বতঃস্ফূর্ত না। নেহাত ডাকের জন্য ডাকা। মন থেকেই ডাকবে এক সময়। তবে খুব দেরি হবে না মনে হল। তোমাকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। আজ সকালে যা বলেছো, ব্যাস! শুধু নিয়ম করে রোজ সকালে তুলবে এই রকম আদর করেই। আর রাতে পারলে যে কোনও একটার খাটে পাশে শুয়ে আদর করে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করবে। কথা বলবে না, গুনগুন করে গান গাইবে। ওদের জড়তা আছে, সেটা তোমাকেই নানা ভাবে কাটাতে হবে। পারলে প্রথম ক’দিন না হোক, পরের দিকে রাতে ওদের পাশে শুয়েই ঘুমোবে। তোমার গলা ভাল, ফলে ওদের ভাল লাগবে। আর ওরা কি খেতে ভালবাসে, সেটা বলে দেব। কলকাতায় গিয়ে একেক দিন একেকটা পদ রাঁধবে। আমি ভুল ধরব, দিদিভাইও ভুল ধরবে। ওরা কী বলে, শুনে যাবে। আমাদের মত না নিয়ে ওদের মতে পরের দিন রাঁধবে। যত কথা বাড়বে, তত সহজ হবে।’’
ওদের এই কথাবার্তার মধ্যেই বুড়ি এসে জানাল, ঈশিতার দুই দিদি-জামাইবাবু ফ্রেস হয়ে চা খাচ্ছেন। এবার জলখাবার খেয়ে বেড়িয়ে যাবেন। ওরা এঘরে আসবেন কি না, জানতে চাইছেন। ঈশিতা শান্ত গলায় বলল, হ্যাঁ আসতে বলো।

দুই দিদিই কয়েক মিনিটের মধ্যে এ ঘরে ঢুকলেন। তিনজনে খাটে বসে চায়ের কাপ নিয়ে গল্প করছে দেখে একটু অবাক হলেও কিছু বললেন না। দু’জনে দুটো চেয়ার টেনে বসে জয়তীকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘হ্যাঁরে, ওরা কাছা পরবে না? বাবার কাজ কবে করবে? কী ভাবে, কোথায় করবে? কাল জিজ্ঞাসা করা হয়নি।’’ সুভদ্রা শান্ত গলায় বলল, ‘‘ওদের বাবা এ সব করতে মানা করে গেছেন। কোনও নিয়ম মানা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সবাইকেই। এমনকি নিরামিষ খেতেও বারণ করেছেন।’’ বলে ঈশিতার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘‘ জানো বড়দি, ও কিচ্ছু মানত না। বলত, সব মানুষের তৈরি ভুলভাল নিয়ম। ওসব না মেনে প্রকৃতিকে ভালবাস, মানুষকে ভালবাস, সব পাবি। কোনও নিয়মে নিজেদের বাঁধবি না।’’ ঈশিতা জানত এগুলো। বুঝল, শেষ দিন অবধি নিজের সিদ্ধান্তেই অটল থেকে গেছিল লোকটা। কী জেদ!  তার পরেই মনে হল, ওই জেদ ছিল বলেই ওই রকম একটা সিদ্ধান্ত ওই মুহূর্তে ঠান্ডা মাথায় নিয়েছিল। অন্য কেউ হলে হাতেনাতে ধরে নানা রকম অশান্তি করত, মারধরও হয়তো করত। ঘটা করে ডিভোর্স দিত, তার পরে আবার বিয়ে করত। কিন্তু ওর মানুষটা একই রকম থেকে গিয়েছিল। অবশ্য ওর নিজের মানুষ বলার মতো জোরটা তো ঈশিতা নিজেই রাখেনি। শুধু মানুষটা না, ছেলেমেয়েদুটোও একদম ওর নিজের হয়ে ওঠেনি, বরং তারা অনেক বেশি অন্যদের আপন হয়ে গিয়েছে। ওর চোখদুটো অজান্তেই জলে ভরে গেল। সুভদ্রা, জয়তী দু’জনেই লক্ষ্য করল, কিন্তু কিছু বলল না।

কিছুক্ষণ পরে বুড়ি জলখাবারের জন্য ডাকল। সুভদ্রার ইশারায় ও ঘরেই বসে রইল। জয়তী দুই দিদি, জামাইবাবুকে নিয়ে উঠে যেতেই পিছন পিছন কুট্টি-মুট্টিও উঠতে গেল। ঈশিতা ছেলেমেয়ের হাত ধরে বলল, ‘‘কোথাও যেতে হবে না। আজ আমার কাছে খাবি তোরা।’’ কিছুটা হতভম্ব দুই ভাইবোনকে ঘরে রেখে নিজে রান্নাঘরে গিয়ে বুড়িকে জিজ্ঞাসা করে দু’জনের মতো খাবার নিয়ে এল। ঘরে ঢুকে দেখল, তখনও দুই ভাইবোন মাটির দিকে তাকিয়ে। ঈশিতা বুঝল, এ দ্বিধা বড় দ্বিধা। ও কিছু না বলে দু’জনের মাঝখানে থালা নিয়ে বসে লুচি ছিঁড়ে তাতে তরকারি দিয়ে দুই ভাইবোনকে খাওয়াতে লাগল। ওর চোখ ফেটে জল আসছে তখন। এই কাজ তো ওরই করার কথা ছিল গত আঠেরো বছর ধরে। ও পারেনি। সুভদ্রার কথায় আজ ও করার সুযোগ পেয়েছে মাত্র। কিন্তু চোখের জল চোখেই জমা রেখে চুপচাপ খাওয়াতে লাগল দু’জনকে। কোনও কথা না বলে দু’জনেই খেতে লাগল। বেচারাদের কাল থেকে সে ভাবে খাওয়াই হয়নি। খুব দ্রুত লুচিগুলো শেষ হয়ে গেলে ও দৌড়ে ফের রান্নাঘরে গিয়ে আরও কয়েকটা লুচি এবং বেশ কিছুটা তরকারি নিয়ে এল। সেটুকুও দু’জনকে খাইয়ে ওখানেই রাখা জলের বোতল থেকে জল নিয়ে দু’জনের মুখ আলতো করে মুছিয়ে কুট্টিকে খুব স্বাভাবিক গলায় বলল, ‘‘তুই রেডি হ। আমি বেরোব।’’ কুট্টি-মুট্টি একসঙ্গেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। ও রান্নাঘরে গিয়ে থালাটা জল দিয়ে ধোওয়ার আগে তাতে লেগে থাকা একটুখানি তরকারি আঙুল দিয়ে জিভে ঠেকাল, যেন প্রসাদ। তার পরে থালা ধুয়ে অনেকটা জল খেয়ে ঘরে ঢুকে শাড়ি বদলে ফোনটা নিয়ে বাইরে এল। জয়তী, সুভদ্রা আর দিদিরা তখন অন্য ঘরে খেতে খেতে গল্প করছে। ও সেখানে গিয়ে দুই দিদি-জামাইবাবুকে প্রণাম করে বলল, ‘‘তোমাদের সঙ্গে কাল থেকে কথাই হল না। কলকাতায় ফিরে দেখা করব, কেমন? সাবধানে যেও’’ বলে সবাইকে টাটা করে দাওয়া থেকে নিচে নেমে দেখল, কুট্টি বাইক নিয়ে রেডি। মাথায় হেলমেট। ও আসতেই কোনও কথা না বলে ওর হাতে একটা হেলমেট তুলে দিল। ঈশিতা একটু হেসে বলল, ‘‘ওটা পড়লে আমার দমবন্ধ লাগবে। তুই হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে নে।’’ বলে বাইকে উঠে একপাশ করে বসে কুট্টির কাঁধে হাত রাখল। বাইক ছাড়ার মুহূর্তে পিছন থেকে জয়তীর গলা শুনল, ‘‘ওকে ভাল করে ধরে বস, না হলে উল্টে পড়ে যাবি।’’ ঈশিতা শুধু হাসল একটু।

বেশিক্ষণ লাগল না রতনপল্লীতে নিজের বাড়িতে আসতে। অভ্যাস মতো পাশের বাড়িটার দিকে আজ তাকাতে গিয়ে চোখ সরিয়ে নিল। ওই বাড়িতে গুঞ্জা ভাড়া থাকে ওর বর আর সন্তানকে নিয়ে। কুট্টিকে নিয়ে চাবি খুলে ঘরে ঢুকে ওকে বসাল। তার পর ওর কাজের দিদিকে ফোন করে আসতে বলল। ফ্রিজ খুলে দেখল, কয়েকটা মিষ্টি আছে। দ্রুত মিষ্টিগুলো কুট্টিকে একটা প্লেটে দিয়ে বলল, ‘‘সকালে লুচি খেয়ে জল খাসনি। মিষ্টিগুলো খেয়ে জল খা। তার পরে চা খাবি,। আমি একগাদা কাজ করব। দরকার হলে তোকে বলব হেল্প করতে। এখন চুপ করে এগুলো খেয়ে নে।’’ বলে ঘরে ঢুকে দ্রুত আলমারি খুলে ব্যাঙ্কের বই থেকে শুরু করে নিজের সব সার্টিফিকেট, আর শাড়ি-ব্লাউজ ভরে নিল। টাকাপয়সা নিজের হাত ব্যাগে রেখে গয়নাগুলোও ব্যাগে ভরল। তার পরে এ ঘরে ঢুকে কুট্টিকে বলল, উপরের ঘরগুলো দেখি, কিছু আছে কিনা। বলে উপরে গিয়ে আরও কিছু জিনিস নিয়ে নীচে এসে চা বসিয়ে একটা প্যাডের পাতা ছিঁড়ে রেজিগনেশন লেটার লিখল। মাঝে ইচ্ছে করেই কুট্টিকে দুটো বানান জিজ্ঞাসা করল। চিঠিটা লেখা হলে কুট্টিকে দিয়ে পড়িয়ে সই করল। কুট্টি লক্ষ্য করল, সইটা ঈশিতা সরকার নামেই করছে মা। তার মানে এত বছরেও বাবার টাইটেলটা ছাড়েনি মা। একটু অবাক হলেও ভাল লাগল ওর। সই করে চিঠিটা একটা খামে ভরল, তবে আঠা দিয়ে সেঁটে দিল না। ওটার জেরক্স করাবে কয়েক কপি, না হলে পরে সমস্যা হতে পারে। ততক্ষণে কাজের দিদি এসে গেছেন। তাঁর কাছে থাকা চাবিটা নিয়ে তাঁকে একবারে তিন মাসের মাইনে দিয়ে বলল, ‘‘আমি কলকাতায় চলে যাচ্ছি। তোমাকে আর আসতে হবে না।’’ বহুদিনের পুরনো লোক, কেঁদে ফেলল। তাকে স্বান্তনা দিয়ে নিজের বেশ কয়েকটা শাড়ি দিয়ে দিল। তিনি চোখ মুছে চলে গেলে মুচকি হেসে কুট্টিকে বলল, ‘‘ভার কমালাম আর কি!’’ সব সেরে একটা বড় ব্যাগে নিজের কিছু অতি প্রিয় আর প্রয়োজনীয় জিনিস ভরে আট বছরের এই বাড়ি ছেড়ে নির্ভার হয়ে বাইরে এসে দরজায় ভাল করে তালা দিল। তার কুট্টিকে বলল, ‘‘একবার ইউনিভার্সিটি যাব, আর পথে একটা সাইবার কাফে পড়বে, সেখানে একটু যাব। চিঠির পাশাপাশি মেলটাও করে রাখতে হবে। ওখানে তুই ঢুকবি আমার সঙ্গে।’’ সাইবার কাফতে ঢুকে একজন কর্মীকে চিঠিটার জেরক্স করিয়ে আনতে বলে কুট্টিকে পাশে নিয়ে রেজিগনেশন মেল করতে শুরু করল। এর মধ্যে ছেলেটা তিন কপি জেরক্স করে দিয়েছে। সেটা হাতে নিয়ে মূল চিঠিটা আঠা দিয়ে সাঁটল ভাল করে। ওটা জমা দেবে ডিপার্টমেন্টে। কাফেটার ছোকরা একজন কর্মী ভালই চেনে ইউনিভার্সিটির দিদিমণিকে। সঙ্গে একটা ছেলেকে দেখে একটু বিস্মিত হয়ে বলল, ‘‘দিদি, ইনি কে?’’

গত ১৮ বছরে এই প্রশ্নটা প্রথম শুনল ঈশিতা। এত বছরে চেনা-অচেনা কেউ ওকে এই প্রশ্নটা করেনি। সুযোগই পায়নি কেউ। চিঠিটা ততক্ষণে লেখা শেষ। পরপর ইমেল অ্যাড্রেসগুলো লিখে মেলগুলো সেন্ড করে চেয়ার ছেড়ে উঠে চোখের জলটা আড়াল করে গলাটা যতটা সম্ভব স্বাভাবিক করে বলল, ‘‘এটা আমার বড় ছেলে গো। আমার যমজ ছেলেমেয়ে। ছেলে সাড়ে তিন মিনিটের বড়, তাই ও বড় ছেলে। ওর নাম অরণ্য সরকার। সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছে। এখন বড় হয়েছে, তাই আমি চাকরি ছেড়ে ছেলেমেয়ের কাছে থাকব বলে চলে যাচ্ছি। তোমাদের সঙ্গে অনেকগুলো দিন থাকলাম। তোমরা ভাল থেকো, কেমন?’’ বলে ছেলের হাত ধরে রাস্তায় নামল। চোখের কোন দিয়ে তখন জল গড়িয়ে পড়ছে। কুট্টি সেটা দেখল, বুঝলও। কিন্তু কিছু বলল না। গলাটা নরম করে বলল, ‘‘ওঠো, তোমার ইউনিভার্সিটির রাস্তাটা চিনিয়ে দিও। আমি চিনি না।’’

কাল সৌমাভর মৃত্যুর পর থেকে এই প্রথম ছেলে সরাসরি ওর সঙ্গে কথা বলল। কিন্তু তাও মা শব্দটা বেরোয়নি ওর মুখ থেকে! ঈশিতার বুকের ভিতরে আনন্দ আর কষ্টের কান্না যেন ঢেউ দিয়ে উঠছে। নিজেকে অনেক কষ্টে সামলে বাইকের পিছনে উঠে বসে ডিরেকশনটা ভাঙা গলায় বলে ছেলের কাঁধে মাথা রাখল। ওর চোখ দিয়ে নিঃশব্দে জল গড়িয়ে ছেলের পিঠটা ভিজিয়ে দিতে লাগল। ঠিক সকালের মতো। ইউনিভার্সিটির অফিসে ঢুকে ওর ডিপার্টমেন্টের এক কর্মীর হাতে চিঠিটা দিয়ে তাঁকেও ছেলে দেখিয়ে একগাল হাসল। তার পর একটা রিসিভড কপি নিয়ে বাইরে এসে ছেলেকে বলল, ‘‘এবার ব্যাঙ্কে যাব। সেখানেও কয়েকটা চিঠি দিতে হবে, ফর্ম নিতে হবে। আজ দুপুরে বাইরে খাবি? এখানে খুব ভাল একটা ভাতের হোটেল আছেl  ব্যাঙ্ক থেকে ঘুরে সেখানে তোকে খাইয়ে বাড়ি ফিরব, কেমন?’’ ব্যাঙ্কে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগল। সঞ্চয়ের টাকা অনেকটাই তুলল। বিভিন্ন সেভিংস কী করে কী করবে, তা জেনে বেশ কয়েকটা নমিনি ফর্ম তুলে বেরোল। আবার একটা কি মনে পড়তে ব্যাঙ্কে ঢুকল। দেখল ছেলে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে কানে নিল।

ব্যাঙ্কের কাজ মিটিয়ে ছেলের বাইকে উঠে বলল, ‘‘চল, তোকে হোটেলটায় নিয়ে যাই।’’ বলে ডিরেকশন দিতে দিতে নিয়ে গেল। পথে একজন চেনা উকিলের কাছ থেকে কয়েকটা কোর্ট পেপার নিয়ে নিল। হোটেলে ঢুকে মাছ-মাংস, মিষ্টি দই মিলিয়ে একগাদা খাবারের অর্ডার দিয়ে ওকে নিয়ে হাত ধুয়ে এসে একটা বড় টেবিলে বসে ফিক করে হেসে বলল, ‘‘আমার পাশে বস। তোকে খাইয়ে দেব। লজ্জা পাবি না তো?’’ তার পর কি মনে হতে হুড়মুড় করে উঠে গিয়ে সাত-আটজনের মতো খাবার ভাল করে ফয়েল প্যাক করতে বলে আর শুধু একপ্লেট মাছভাত আর মিষ্টি দই টেবিলে দিতে বলে এসে বসল।
[+] 5 users Like Choton's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: তার ছিঁড়ে গেছে কবে - by Choton - 21-05-2025, 03:35 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)