14-05-2025, 05:35 AM
(This post was last modified: 14-05-2025, 05:36 AM by Rubya. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব-২
রুমন বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে গুলশানের অফিস থেকে বের হলো রাত ৮ টার দিকে। অফিসে ইদানীং কাজের অনেক চাপ। গাড়ীর স্টিয়ারিং এ হাত রেখে রাস্তার জ্যাম বুঝার চেষ্টা করছিল। কানে হেড ফোন লাগিয়ে বন্ধু ফয়সাল কে কল দিলো। ফয়সাল তার বাল্যকালের বন্ধু। সাভারে ফয়সালের একটা কৃষিখামারের বিজনেস আছে। ওখানে থাকার জন্য সুন্দর একটা কটেজ ও আছে। মাঝেমধ্যে ফ্যামিলি নিয়ে তারা ঘুরতে আসে এখানে। কথায় কথায় রুমন ফয়সালকে মিথিলার সাথে চ্যাটিং এর বিষয় টা বললো। রুমন হেসে বললো, "দাঁড়া আগে মাছ টা কে বড়শি তে গাঁথি তারপর না রান্না করে তোকে খাওয়াবো"। বলেই দুইজনে হা হা হা করে হাসিতে ফেটে পড়লো।
রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় টুং করে একটা মেসেজ আসার শব্দ হলো। মিথিলা বালিশের পাশ থেকে মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখলো রুমনের মেসেজ এসেছে। রাত বাজে সাড়ে বার টা। পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখলো আরিফ ঘুমিয়ে পড়েছে। মিথিলা আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নেমে পা টিপে টিপে দরজা খুলে পাশের রুমে গেল। বিছানায় বসতেই মহিমা এসে বললো, " কি ব্যাপার আম্মু তুমি হঠাৎ আজ এই ঘরে ঘুমাতে এলে যে?" মিথিলা একটু অপ্রস্তুত হয়ে জবাব দিলো " না মানে ঘুম আসছে না তাই ভাবলাম ফেসবুকে রিলস দেখি। ঐ ঘরে তোর আব্বু ঘুমাচ্ছে। রিলস এর আওয়াজে ঘুমের অসুবিধা হবে। তাই এই ঘরে চলে এলাম "। মহিমা অবাক হয়ে মিথিলার দিকে তাকিয়ে থাকলো। যেভাবে হড়বড় করে আম্মু কথাগুলো বললো তাতে মনে হলো লুকিয়ে লুকিয়ে খারাপ খারাপ ভিডিও দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে গেছে! মহিমা ইচ্ছা করে চোখ নাচিয়ে হেসে বললো " এতো রাতে কি রিলস দেখবা আম্মু যে এই ঘরে আসতে হলো! তেমন কিছু না রে। যা না তুই তোর ঘরে। কাল ক্লাস নাই তোর? আছে তো! কিন্তু আমার মিষ্টি আম্মুটা এতো রাতে আব্বুর চোখ ফাঁকি দিয়ে কি এমন দেখছে তা জানতে খুব ইচ্ছে করছে। ঠিক সেই সময় পরপর দুইবার টুং টুং করে মেসেজ আসার শব্দ হলো। মিথিলার চোখ মুখ কেমন হয়ে গেল সাথে সাথে। মহিমা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মা'য়ের দিকে তাকালো। মিথিলা মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখলো, তারপর মেয়েকে বললো, "তোর খালা মেসেজ দিয়েছে"। মহিমা খুবই বুদ্ধিমতী মেয়ে। তার মনে সন্দেহ থাকলেও সে সুন্দর একটা হাসি দিয়ে মায়ের পাশে বসে জিজ্ঞেস করলো কি লিখেছে খালামনি? মিথিলার মুখ মুহূর্তে ফ্যাকাশে রুপ ধারণ করলো। মেয়ের কাছে ধরা খেলে জীবনেও তাকে আর সম্মান করবে না। তাই মিথিলা নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো। খুব ধীরে বললো, বোনদের মধ্যে কত কথা হয়। সব কথা ছোটদের শুনতে নেই রে মা। যা তুই শুয়ে পড়। অনেক রাত হয়েছে। মহিমা মিথিলাকে জড়িয়ে ধরে বললো, আজ তোমার সাথে ঘুমাবো আম্মু। মিথিলা স্নেহময় মমতায় মেয়ের মুখে হাতের স্পর্শে আদর করে বললো, ঠিক আছে মা আয় আমরা একসাথে ঘুমায়। মহিমা বললো, আম্মু তুমি ছোট বেলায় আমাকে ঘুমানোর সময় কত গল্প বলতে! রাজা রানী দৈত্য দানোর গল্প! আমি চোখ বড় বড় করে শুনতাম আর সব বিশ্বাস করতাম। বলেই ফিক করে হেসে দিল মহিমা। মা মেয়ে কথা বলতে বলতে এক সময় ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল। রোজকার মতো কাক ডাকা ভোরে মিথিলার ঘুম ভেঙ্গে গেল। মহিমা তখন গভীর ঘুমে। মিথিলা আড় চোখে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আস্তে করে মোবাইল টা হাতে নিয়ে মেসেঞ্জারে ঢুকলো। রুমনের তিন টা মেসেজ বোল্ড হয়ে আছে।
খুলতেই দেখলো প্রথমে লেখা আছে,
" কি ঘুমিয়ে গেছেন নাকি আপনি?
তারপরের মেসেজ টায় লেখা,
" ঘুম আসছে না আমার"
পরের মেসেজে লেখা,
"কেন জানি খুব মিস করছি আপনাকে"।
অপলোক চোখে মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলো মিথিলা। অদ্ভুত এক ভালো লাগা তার শরীরে অনুভব করলো। মোবাইল টা বুকের সাথে চেপে রেখে চোখ বন্ধ করে ভালো লাগার অনুভূতি অনুভব করতে লাগলো। এরকম হচ্ছে কেন তার! তনু মন সব যেন একত্রিভুত হয়ে যাচ্ছে। দূরে বহু দূরে, কেউ একজন তাকে মিস করছে এটা ভাবতেই মিথিলার মনের মধ্যে এক নিষিদ্ধ সুখের ঢেউ খেলা করতে লাগলো যেন। পরমুহুর্তে চোখ খুলে তাকাতেই দেখলো নিজের বিছানায় শুয়ে আছে সে। পাশে আরিফ নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। ভালো করে চারিদিকে তাকিয়ে দেয়াল ঘড়ির দিকে চোখ পড়লো। ঘড়ির কাঁটা ঠিক সকাল ৬:০৫ মিনিটে স্থির। তখনই মহিমার ঘর থেকে সাউন্ড সিস্টেমের স্পিকারে বেজে উঠলো,
Morning has broken
Like the first morning
Black bird has spoken
Like the first bird
Praise for the singing!
Praise for the morning!
Praise for them springing!
Fresh from the word!
Mine is the sunlight!
Mine is the morning
Born of the one light
Eden saw play!
Praise with elation
Praise every morning
God's recreation
Of the new day!
রুমন বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে গুলশানের অফিস থেকে বের হলো রাত ৮ টার দিকে। অফিসে ইদানীং কাজের অনেক চাপ। গাড়ীর স্টিয়ারিং এ হাত রেখে রাস্তার জ্যাম বুঝার চেষ্টা করছিল। কানে হেড ফোন লাগিয়ে বন্ধু ফয়সাল কে কল দিলো। ফয়সাল তার বাল্যকালের বন্ধু। সাভারে ফয়সালের একটা কৃষিখামারের বিজনেস আছে। ওখানে থাকার জন্য সুন্দর একটা কটেজ ও আছে। মাঝেমধ্যে ফ্যামিলি নিয়ে তারা ঘুরতে আসে এখানে। কথায় কথায় রুমন ফয়সালকে মিথিলার সাথে চ্যাটিং এর বিষয় টা বললো। রুমন হেসে বললো, "দাঁড়া আগে মাছ টা কে বড়শি তে গাঁথি তারপর না রান্না করে তোকে খাওয়াবো"। বলেই দুইজনে হা হা হা করে হাসিতে ফেটে পড়লো।
রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় টুং করে একটা মেসেজ আসার শব্দ হলো। মিথিলা বালিশের পাশ থেকে মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখলো রুমনের মেসেজ এসেছে। রাত বাজে সাড়ে বার টা। পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখলো আরিফ ঘুমিয়ে পড়েছে। মিথিলা আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নেমে পা টিপে টিপে দরজা খুলে পাশের রুমে গেল। বিছানায় বসতেই মহিমা এসে বললো, " কি ব্যাপার আম্মু তুমি হঠাৎ আজ এই ঘরে ঘুমাতে এলে যে?" মিথিলা একটু অপ্রস্তুত হয়ে জবাব দিলো " না মানে ঘুম আসছে না তাই ভাবলাম ফেসবুকে রিলস দেখি। ঐ ঘরে তোর আব্বু ঘুমাচ্ছে। রিলস এর আওয়াজে ঘুমের অসুবিধা হবে। তাই এই ঘরে চলে এলাম "। মহিমা অবাক হয়ে মিথিলার দিকে তাকিয়ে থাকলো। যেভাবে হড়বড় করে আম্মু কথাগুলো বললো তাতে মনে হলো লুকিয়ে লুকিয়ে খারাপ খারাপ ভিডিও দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে গেছে! মহিমা ইচ্ছা করে চোখ নাচিয়ে হেসে বললো " এতো রাতে কি রিলস দেখবা আম্মু যে এই ঘরে আসতে হলো! তেমন কিছু না রে। যা না তুই তোর ঘরে। কাল ক্লাস নাই তোর? আছে তো! কিন্তু আমার মিষ্টি আম্মুটা এতো রাতে আব্বুর চোখ ফাঁকি দিয়ে কি এমন দেখছে তা জানতে খুব ইচ্ছে করছে। ঠিক সেই সময় পরপর দুইবার টুং টুং করে মেসেজ আসার শব্দ হলো। মিথিলার চোখ মুখ কেমন হয়ে গেল সাথে সাথে। মহিমা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মা'য়ের দিকে তাকালো। মিথিলা মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখলো, তারপর মেয়েকে বললো, "তোর খালা মেসেজ দিয়েছে"। মহিমা খুবই বুদ্ধিমতী মেয়ে। তার মনে সন্দেহ থাকলেও সে সুন্দর একটা হাসি দিয়ে মায়ের পাশে বসে জিজ্ঞেস করলো কি লিখেছে খালামনি? মিথিলার মুখ মুহূর্তে ফ্যাকাশে রুপ ধারণ করলো। মেয়ের কাছে ধরা খেলে জীবনেও তাকে আর সম্মান করবে না। তাই মিথিলা নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো। খুব ধীরে বললো, বোনদের মধ্যে কত কথা হয়। সব কথা ছোটদের শুনতে নেই রে মা। যা তুই শুয়ে পড়। অনেক রাত হয়েছে। মহিমা মিথিলাকে জড়িয়ে ধরে বললো, আজ তোমার সাথে ঘুমাবো আম্মু। মিথিলা স্নেহময় মমতায় মেয়ের মুখে হাতের স্পর্শে আদর করে বললো, ঠিক আছে মা আয় আমরা একসাথে ঘুমায়। মহিমা বললো, আম্মু তুমি ছোট বেলায় আমাকে ঘুমানোর সময় কত গল্প বলতে! রাজা রানী দৈত্য দানোর গল্প! আমি চোখ বড় বড় করে শুনতাম আর সব বিশ্বাস করতাম। বলেই ফিক করে হেসে দিল মহিমা। মা মেয়ে কথা বলতে বলতে এক সময় ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল। রোজকার মতো কাক ডাকা ভোরে মিথিলার ঘুম ভেঙ্গে গেল। মহিমা তখন গভীর ঘুমে। মিথিলা আড় চোখে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আস্তে করে মোবাইল টা হাতে নিয়ে মেসেঞ্জারে ঢুকলো। রুমনের তিন টা মেসেজ বোল্ড হয়ে আছে।
খুলতেই দেখলো প্রথমে লেখা আছে,
" কি ঘুমিয়ে গেছেন নাকি আপনি?
তারপরের মেসেজ টায় লেখা,
" ঘুম আসছে না আমার"
পরের মেসেজে লেখা,
"কেন জানি খুব মিস করছি আপনাকে"।
অপলোক চোখে মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলো মিথিলা। অদ্ভুত এক ভালো লাগা তার শরীরে অনুভব করলো। মোবাইল টা বুকের সাথে চেপে রেখে চোখ বন্ধ করে ভালো লাগার অনুভূতি অনুভব করতে লাগলো। এরকম হচ্ছে কেন তার! তনু মন সব যেন একত্রিভুত হয়ে যাচ্ছে। দূরে বহু দূরে, কেউ একজন তাকে মিস করছে এটা ভাবতেই মিথিলার মনের মধ্যে এক নিষিদ্ধ সুখের ঢেউ খেলা করতে লাগলো যেন। পরমুহুর্তে চোখ খুলে তাকাতেই দেখলো নিজের বিছানায় শুয়ে আছে সে। পাশে আরিফ নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। ভালো করে চারিদিকে তাকিয়ে দেয়াল ঘড়ির দিকে চোখ পড়লো। ঘড়ির কাঁটা ঠিক সকাল ৬:০৫ মিনিটে স্থির। তখনই মহিমার ঘর থেকে সাউন্ড সিস্টেমের স্পিকারে বেজে উঠলো,
Morning has broken
Like the first morning
Black bird has spoken
Like the first bird
Praise for the singing!
Praise for the morning!
Praise for them springing!
Fresh from the word!
Mine is the sunlight!
Mine is the morning
Born of the one light
Eden saw play!
Praise with elation
Praise every morning
God's recreation
Of the new day!