Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica উত্তরণ না অবতরণ ( Remastered )
#27
তৃতীয় পর্ব

পরেরদিন ঘুম ভাঙতে একটু দেরি হয়। ঋতব্রত সাধারণত ছটার সময় উঠে পড়ে। কিন্তু আজকে আটটা বেজে গেল। গতকাল ওর ঘুম এসেছে প্রায় রাত দুটোর সময়।

ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসে । ঋতব্রত যে ঘরে আছে সেই ঘরের ব্যালকনি থেকে সামনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কে উপভোগ করার মত অপরূপ দৃশ্য বর্তমান। যতদূর চোখ যায় পাহাড় আর পাহাড় আর সেই পাহাড়ের কোলে মেঘের আনাগোনা। ওর ঘর থেকে বেরিয়ে একটা করিডোর সেই করিডোর সোজা গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে ডাইনিং রুমে। ডাইনিং এ গিয়ে ঋতব্রত দেখে সুমনা আর রনিত বসে ব্রেকফাস্ট করছে।

ওকে দেখে রনিত হাত বাড়িয়ে দেয় “আয়রে বসে পড়। তোর বৌদির হাতের খাবার দুর্দান্ত। একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছা করবে”
ঋতব্রত হেসে বসে পড়ে ।
“বসো তুমি! তোমার জন্য ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসছি”
“নানা আপনি আগে খেয়ে নিন তারপরে”
“আবার আপনি! এবারে রনিত বলে, “তোর এই স্বভাবটা আর যাবে না বল্”
ঋতব্রত মৃদু হাসে ।সুমনা উঠে যায় ঋতব্রতর খাবার নিয়ে আসার জন্য। 

“দেখ ভাই” রনিত বলে “আমি আগে থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, তোকে এখানে ঘোড়াবো বলেছিলাম। কিন্তু আমার অফিসে আজকে একটা জরুরী কাজ পড়ে গেছে। আমাকে এক্ষুনি বেরিয়ে যেতে হবে!”
“ও ঠিক আছে! আমি নয় লেখার কাজে ব্যস্ত থাকবো”
“নারে! তোকে আমার বউ ঘুরিয়ে দেখাবে এখানে। চা বাগান গুলো খুব সুন্দর”
ঋতব্রতর মনে হালকা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
তবুও সে বলে “কালকেও তো ঘোরাতে পারতিস”
“নারে, এই কাজটা যেটার জন্য আমাকে ডেকেছে মনে হচ্ছে এটা বেশ কয়েকদিন আমাকে ভোগাবে”
“এনিথিং সিরিয়াস?”
“না না শুধু রুটিন কাজ মাঝেমধ্যে এরকম চাপ এসে যায়”
“ওকে”, ঋতব্রত আর কথা বাড়ায় না ।
 
ব্রেকফাস্ট সেরে রনিত বেরিয়ে যায় ।

“চলো বেরিয়ে পড়া যাক!”
“এত তাড়াতাড়ি স্নান সেরে বেরোলে ভালো হতো না?”
“এসে করে নেবে আগে চলো ঘুরে আসি, পাহাড়ি এলাকা হলেও বেশি রোদ চলে গেলে কষ্ট হবে”
বেরিয়ে পড়ে দুজনে । সকালের নরম রোদে ঋতব্রতর বেশ ভালোই লাগে। রনিত ওদের জন্য একটা গাড়ি রেখে গেছে। সুমনা নিজেই ড্রাইভ করতে পারে তাই ড্রাইভার নিল না।

“বিয়ের প্রথম প্রথম আমরা এই চা বাগান গুলোতে খুব ঘুরেছি”, সুমনা বলে চলে।
“তাহলে সেরকমই একটা চা বাগানে নিয়ে চলুন”
“কেন?”
এই প্রশ্ন শুনে ঋতব্রত একটু থতমত খেয়ে যায়। “না মানে আমি ঠিক সেই ভাবে বলিনি....”
সুমনা খিলখিলিয়ে হাসতে থাকে, “আরে আমি তোমার লেগপুলিং করছি তুমি এত সিরিয়াস!”
ঋতব্রত চুপ থেকে মৃদু হাসে।

“আচ্ছা চলো তোমাকে এখানকার সব থেকে সুন্দর চা বাগানে নিয়ে যাচ্ছি”
পাহাড়ি রাস্তা এঁকেবেঁকে উঠেছে, একদিকে পাহাড় অন্যদিকে ঢালু জমি, গাড়ি যদি একটু বেসামাল হয় তাহলে সেই ঢালু জমি দিয়ে গড়িয়ে যাবে। সুমনা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে গাড়ি ড্রাইভ করে নিয়ে চলল।
“এত সুন্দর ভাবে আপনি ড্রাইভ শিখলেন কি করে ? আপনি কি পাহাড়ের বাসিন্দা?”
“না না”, সুমনা হাসে রনিতই আমাকে শিখিয়েছে।
“ও আচ্ছা”
“বিয়ের পরপর আমরা এমন এডভেঞ্চার করেছি যা তুমি কল্পনা করতে পারবে না ! তুমি জানো এই ড্রাইভিং শেখানোর সময় রনিত আমাকে কোলে বসিয়ে রাখতো”, বলে সুমনা হাসতে থাকে।
ঋতব্রত লজ্জা পেয়ে যায়। শুধু একটু ম্যানেজ দেওয়ার জন্য বলে “কেয়ারিং হাসব্যান্ড এন্ড লাভিং টু”
সুমনার হাসিটা মিলিয়ে যায়, আর কিছু সে বলে না সে। এতে ঋতব্রত একটু অবাক হয় সেও চুপ করে যায়। হয়তো ভুল কিছু বলে ফেলেছে।

পনেরো কুড়ি মিনিট বাদে ওরা একটা চা বাগানের পাশে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে নেমে চারিদিকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে ঋতব্রত হতবাক হয়ে যায়। কোন জায়গা যে এত সুন্দর হতে পারে তা ওর কল্পনার মধ্যে ছিল না । সুমনার উপস্থিতি সেই সৌন্দর্যকে উত্তরোত্তর আরো বৃদ্ধি করেছে। যত দূর অব্দি দৃষ্টি যায় পাহাড় আর পাহাড়, পাহাড়ের কোলে চা বাগান সেই চা বাগানে উপর ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘ।

“এই চা বাগানেই রনিত আমাকে প্রথম নিয়ে এসেছিল”
“কি সুন্দর!”
ঋতব্রতর কথায় সুমনা জিজ্ঞাসা করে “কোনটা?”
“মানে?”
“মানে চা বাগানটা সুন্দর না আমি?”
ঋতব্রত আবার উত্তর হাতরাতে থাকে আর সুমনা খিল খিল করে হাসে। আজকে সুমনাকে দেখতে গতকালের থেকেও সুন্দরী লাগছে ,একটা  লাইট পিঙ্ক শাড়িতে সুমনার সৌন্দর্য যেন ফেটে বেরোচ্ছে।

“আমরা এখানে কত ছবি তুলেছি!”  
ঋতব্রত আর নিজেকে সামলে রাখতে পারে না বলে ওঠে “তাহলে আবার কিছু ছবি তোলা যাক”
“কথাটা খারাপ বলোনি, এত সুন্দর জায়গায় এসে ছবি না তুললে হয়!”
ঋতব্রত নিজের ফোনটা বার করে ,সুমনা মুখ টিপে হাসে।
“কি হলো?”
“আমার ছবি বুঝি তোমার মোবাইলে ধরে রাখতে চাও?”
এই কথায় ঋতব্রত খুবই লজ্জায় পড়ে যায়, “না না মানে আমি....”
“থাক থাক আমি ইয়ার্কি মারছিলাম আর উত্তর দিতে হবে না”
হাফ ছেড়ে বাঁচে ঋতব্রত ।

“দাঁড়াও আমি এই জায়গাটা আগে যাই”, বলে সুমনা দুটো চা ঝোপের মাঝে দাঁড়ায়, “নাও তোলো এবার” ঋতব্রত নিজের মোবাইলে শাটার ক্লিক করে।
এবারে সুমনা, একটা ঝোপের দিকে মুখ করে গাছের গায়ে হাত রাখে যেন তাতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। সেই রকম ভাবে ঋতব্রত আবার একটা ছবি তোলে। ছবি তোলার সময় লক্ষ্য করে সুমনার পেট শাড়ির ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে। একটা উত্তেজনা অনুভব করে ও । তার ইচ্ছা করছে সেই নরম পেটের উপর হাত বুলাতে। এরকমভাবে বেশ কিছু পোজে ছবি তোলা হয় ।

“আমার তো অনেক ছবি তুললে।  এবারে তোমার ছবি তুলি”
ঋতব্রত খানিকটা উদাস স্বরে বলে, “আমার আর কিসের ছবি তুলবে?”
“কেন বৌদি দেখবে”
ঋতব্রত কিছু বলে না, চুপ করে থাকে। সুমনা এগিয়ে গিয়ে ঋতব্রতর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নেয় ,”দেখিতো! হ্যাঁ ওই  ঝোপের পিছনে দাঁড়াও”
সুমনার কথা মত ঋতব্রত কাজ করে, ওর বেশ কয়েকটা স্ন্যাপ নিয়ে সুমনা বলে “চলো এবারে দুজনে একসঙ্গে কিছু সেলফি তোলা যাক”
“সেলফি?”
“হ্যাঁ, কেন কোনদিন সেলফি তোলো নি?”
“না আমি ওই সেলফিটা তুলতে ঠিক অভ্যস্ত নয়”
“আরে তোমাকে তুলতে হবে না আমি তুলবো!”
“ঠিক আছে”
“কিন্তু তোমার ফোনে নয়, আমার ফোনে”, মিটিমিটি হাসে সুমনা ।

ঋতব্রতকে ফোনটা ফেরত দিয়ে সুমনা ওর সামনে গিয়ে এমন ভাবে দাঁড়ায় যাতে ওর পেছনটা আর ঋতব্রতর সামনেটা মুখোমুখি থাকে।
“মুখে কিন্তু একটু হাসি আনতে হবে, না হলে কিন্তু সেলফি ভালো ওঠে না!”
ঋতব্রত একটু জোর করে হাসে ।
“না না হাসিটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না! তোমায় কি আমায় কাতুকুতু দিতে হবে হাসানোর জন্য?”
“অ্যাঁ মানে?”
সুমনা ঋতব্রতর দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর হাতে সুরসুরি দেয়। ঋতব্রত হেসে ফেলে আর তখনই সুমনা দুজনের সেলফিটা তুলে ফেলে।
এবারে সুমনা ঋতব্রত গা ঘেঁষে দাঁড়ায় দিয়ে আরেকটা সেলফি তোলে, ঋতব্রতর গা দিয়ে শিহরণ বয়ে যায় ওর পুরুষ অঙ্গ জাঙ্গিয়ার ভেতরে হালকা নাড়াচাড়া করতে শুরু করে।
এত দূর অব্দি তাও ঠিক ছিল এরপর সুমনা যা করল সেটা ঋতব্রত কল্পনাও করতে পারেনি। ওর এক হাত জড়িয়ে ধরে একটা সেলফি তোলে। ঋতব্রতর বাহুর পাস সুমানার বক্ষকে ছুঁয়ে থাকে। সুমনার  কিন্তু সেদিকে কোনো হেলদোল নেই।

ঋতব্রতর অস্বস্তি হচ্ছে আবার ভালোও লাগছে। এরকম ভাবে কোন নারীর স্পর্শ সে পাইনি। সুমনা আর ওর হাতের করতল মিলে আছে। ওর পৌরুষ আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে।  
“এবারে ছাড়ো আমাকে!”
ঋতব্রত হকচকিয়ে গিয়ে হাতটা ছেড়ে দেয়, “ও সরি সরি!”
“এমনভাবে ধরে ছিলে যেন কত দিনের পুরনো প্রেমিকা আমি!” বলে খিল খিল করে হাসতে থাকে সুমনা ।
ঋতব্রতর মুখ এবারে লাল হয়ে যায় লজ্জায়। সুমনা আবার ওর হাতটা ধরে বলে “ওহ তুমি ইয়ার্কিও বোঝোনা! রনিত ঠিকই বলেছিল”
ঋতব্রত কি বলতে কি  বলবে ভেবে পায় না শুধু মুখ বার করে বোকার মত হাসে ।

সুমনা, ঋতব্রতর হাতটা ধরেই থাকে, তারপর দুজনে গাড়িতে ওঠে, এখানে ওদের বেশ কিছুটা সময় চলে গেছে ছবি তুলতে ঘুরে বেড়াতে।

“বেলা তো বাড়ছে চলো ফিরে যাই, দুপুরে লাঞ্চ তো করতে হবে”
“আচ্ছা চলো!”
সুমনা হেসে ওঠে।
“কি হলো আবার?”
“তোমার প্রমোশন হয়েছে!”
“মানে?”
“এটলিস্ট আপনি থেকে তুমিতে উঠেছো”
ঋতব্রত খেয়ালই করেনি ।
“ও নানা সরি!”
“এই সরি বলার অভ্যাসটা বন্ধ করো তো আর হ্যাঁ, আর একবারও যেন আমি আপনি না শুনি তোমার মুখ থেকে!”

গাড়িতে ফিরতে ফিরতে সুমনা হঠাৎ বলে ওঠে, “জানো যখন রনিতকে বিয়ে করেছিলাম প্রথমদিকে আমাকে কত ভালোবাসতো!”
ঋতব্রত কিছু বলে না চুপচাপ ওর দিকে চেয়ে থাকে।এবারে সুমনার চোখটা একটু ছল ছল করে ওঠে। চোখ দিয়ে ওর জল গড়িয়ে পড়ে।

“একি সুমনা তুমি কাঁদছো?”
“আগেকার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে, আমাকে ও কত ভালবাসতো জানো! কিন্তু…”, চুপ করে যায় সুমনা।
“কিন্তু কি?”, ঋতব্রত উদগ্রীব শোনার জন্য। ওর মনেও যেন হালকা বেদনা অনুভব হচ্ছে সুমনার জন্য, যেন কোথাও মিল খুঁজে পাচ্ছে।
“না কিছু নয়”
“প্লিজ বলো!”, সুমনার এক হাত হালকা করে চাপ দেয় ঋতব্রত।

“ও আর আমাকে সেরকম ভাবে ভালোই বাসেনা!”, এবারে কান্নায় ভেঙে পড়ে সুমনা ।
ঋতব্রত কি করবে ভেবে পায় না। ওর মনও সুমনার জন্য কেঁদে ওঠে, এত সুন্দর স্ত্রী থাকতে কে তাকে না ভালোবেসে থাকতে পারে!
“সুমনা!”
সুমনা আর তখন কোন হোঁশ নেই ,ওর চোখ দিয়ে অঝোরে জল পড়ছে।  
“প্লিজ গাড়ি দাড় করাও!”

সুমনা গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেয়। ওর কাঁধে হাত রাখে ঋতব্রত, “তুমি এমন করে কেঁদোনা প্লিস! আমি রিকোয়েস্ট করছি”  
এই কান্নার মাঝেও সুমনা মৃদু হাসে , “আমার কষ্ট তুমি কি করে বুঝবে?”  
এবারে ঋতব্রত চোখটাও চিক চিক করে ওঠে। 

“সুমনা তুমি আমার স্ত্রীর কথা বলেছিলে না, সেও…”, খানিকটা থামে ঋতব্রত ,এভাবে একজন মহিলার কাছে তার মনের কথা বলতে অভ্যস্ত নয় ও। কোনদিনই বলেনি। আজকে নিজের মান সম্মান বজায় রাখার কোন চিন্তাই  তার মাথায় আসে না, স্বীকার করে সে সুমনার সামনে, “আমার স্ত্রী নীলিমা আমাকেও কোনদিন ভালোবাসেনি তুমি জানো! আমাদের ছয় মাস হলো বিয়ে হয়েছে। একদিনের জন্য ও আমাকে ওর কাছে আসতে দেয়নি। সব সময় আমাকে দূরে রেখেছে”
 
সুমনা চেয়ে থাকে ঋতব্রতর দিকে আর ঋতব্রত সুমনার দিকে । কখন যে দুজনের ওষ্ঠ একে অপরের সঙ্গে মিলে গেছে তা কারোর খেয়াল নেই। দুজনে পাগলের মত একে অপরকে চুম্বন করে যাচ্ছে। কোন খেয়ালই নেই কারোর। ওদের নিঃশব্দ প্রেমালাপে ভঙ্গ হয় পিছনের গাড়ির হর্নে।
দুজনেই বিচ্ছিন্ন হয়। সুমনা অপ্রস্তুত ,ঋতব্রত কি বলবে ভেবে পায় না। 

ম্যানেজ করার জন্য সুমনা বলে, “রাস্তার মাঝে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিয়েছি ভুল করে!” বলে গাড়িতে স্টার্ট দেয়। পরে আর দুজনের মধ্যে কোন কথা হয়না। 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: উত্তরণ না অবতরণ ( Remastered ) - by domis - 08-05-2025, 09:03 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)