Thread Rating:
  • 6 Vote(s) - 3.5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
HORROR কালো কুয়াশার ছায়া
#5
রুদ্রনাথের যুদ্ধের পর গ্রামে কিছুদিন শান্তি ফিরে এসেছিল, কিন্তু কামিনীর ফিসফিস আর সেই মিষ্টি গন্ধ আবার ফিরে এল। 

গ্রামের মানুষের মুখে নতুন গল্প শুরু হল—কামিনী আর শুধু কুয়াশা নয়, সে এখন একটা নতুন রূপ নিয়েছে। এবার তার আকৃতি আরো ভয়ঙ্কর, আরো প্রলোভনময়।

কামিনীর দানবীয় রূপ যেন অন্ধকারের গভীরতম অতল থেকে উঠে আসা এক দুঃস্বপ্নের প্রতিচ্ছবি। যখন তার মোহময় মুখোশ খসে পড়ে এবং রাগ বা ক্ষুধায় তার প্রকৃত সত্তা প্রকাশ পায়, তখন তার সৌন্দর্য পুড়ে ছাই হয়ে যায়, আর তার জায়গায় আবির্ভূত হয় এক ভয়ঙ্কর, অমানুষিক অস্তিত্ব।
তার শরীর, সাত ফুট লম্বা, যেন কোনো দেবীমূর্তির ছায়া, তবু তার প্রতিটি অঙ্গে রয়েছে এক অপার্থিব প্রলোভন। তার রক্তলাল শাড়ি, পাতলা এবং স্বচ্ছ, বাতাসে দোলে, আর তার শরীরের প্রতিটি রেখা—নিখুঁত স্তনের বক্রতা, সরু কোমরের মোচড়, লম্বা পায়ের ধারালো গড়ন—যেন জীবন্ত শিল্পকর্ম। শাড়ির স্বচ্ছতায় তার শরীরের খাঁজগুলো এমনভাবে প্রকাশ পায় যে, দৃষ্টি সরানো অসম্ভব। তার পা মাটি ছোঁয় না; সে যেন কালো কুয়াশার ওপর ভেসে চলে, আর তার পায়ের কাছে জমে থাকা সেই কুয়াশা মাঝেমধ্যে ঘূর্ণি পাকিয়ে ওঠে, যেন তার রাগ বা ক্ষুধার সংকেত।
তার শরীর, যা একসময় নিখুঁত ভাস্কর্যের মতো ছিল, তা এখন বিকৃত ও ভাঙাচোরা। তার সাত ফুট লম্বা দেহ আর মসৃণ নয়; ত্বক ফেটে ফেটে শুকিয়ে গেছে, যেন শতাব্দী ধরে পোড়া মাটির ওপর পড়ে ছিল। তার হাড়গুলো অস্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে আছে, বিশেষ করে কাঁধ আর পাঁজরের কাছে, যা দেখলে মনে হয় তার শরীরের ভেতরের কঙ্কাল বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। তার রক্তলাল শাড়ি এখন ছিন্নভিন্ন, ঝুলে থাকে তার দেহের ওপর, আর তার ফাঁক দিয়ে দেখা যায় তার ত্বকের কালো, পোড়া দাগ আর ফাটল, যেখান থেকে মাঝেমধ্যে কালো ধোঁয়া বেরিয়ে আসে, যেন তার ভেতরে কোনো অগ্নিকুণ্ড জ্বলছে।তার মুখ, যা একসময় মোহনীয় হাসি আর জ্বলন্ত লাল চোখে ভরা ছিল, এখন একটা ভয়ঙ্কর মুখোশ। তার চোখ দুটো আর লাল নয়; সেগুলো এখন গভীর, কালো গর্ত, যেন অনন্ত অন্ধকারের দুটো প্রবেশপথ। সেই গর্তে তাকালে মনে হয় নিজের আত্মা টেনে নেওয়া হচ্ছে। তার মুখের ত্বক শুকিয়ে হাড়ের ওপর টানটান হয়ে গেছে, যেন কেউ চামড়া টেনে হাড়ের সঙ্গে সেলাই করে দিয়েছে। তার ঠোঁট ফেটে রক্তাক্ত, আর যখন সে হাঁ করে, দেখা যায় তার ধারালো দাঁতগুলো আরো লম্বা, কালো এবং অনিয়মিত, যেন কোনো হিংস্র জন্তুর দাঁত। তার জিভ, লম্বা এবং কালো, মাঝেমধ্যে সাপের মতো বেরিয়ে আসে, আর তার শ্বাসে পচা মাংস আর ছাইয়ের গন্ধ।তার চুল, যা একসময় ঝড়ের মতো ছড়িয়ে থাকত, এখন আরো বন্য এবং অস্বাভাবিক। সেগুলো আর শুধু চুল নয়; মনে হয় অন্ধকারের সুতো দিয়ে তৈরি, যেগুলো নিজে থেকে কিলবিল করে এবং মাঝেমধ্যে শিকারের দিকে ছুটে যায়, যেন জীবন্ত দড়ি। তার হাতের নখ, যা আগে লম্বা এবং ধারালো ছিল, এখন আরো বড় এবং বাঁকা, যেন কোনো শিকারী পাখির নখর। তার আঙুলগুলো অস্বাভাবিকভাবে লম্বা এবং হাড়ের মতো শক্ত, আর যখন সে হাত বাড়ায়, বাতাসে একটা তীক্ষ্ণ শিসের শব্দ হয়।তার পায়ের কাছে জমে থাকা কালো কুয়াশা এখন আরো ঘন এবং বিষাক্ত। সে যখন চলে, কুয়াশা তার পায়ের সঙ্গে ঘূর্ণি পাকায়, আর যে তার কাছে যায়, তার পায়ে সেই কুয়াশা জড়িয়ে যায়, যেন তাকে টেনে নামিয়ে নিতে চায়। তার গলার স্বর, যা একসময় মধুর ছিল, এখন একটা গর্জনের মতো—গভীর, কর্কশ, আর এমন একটা শব্দ যা শুনলে হৃৎপিণ্ড থেমে যেতে চায়। মাঝেমধ্যে তার চিৎকারে পুরো জঙ্গল কেঁপে ওঠে, আর পাখিরা ভয়ে উড়ে পালায়।তার শরীর থেকে বেরিয়ে আসা কালো ধোঁয়া তার দানবীয় রূপের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক। এই ধোঁয়া শুধু দৃশ্যমান নয়, এর মধ্যে একটা অস্বাভাবিক শক্তি আছে। যখন সে রেগে যায়, ধোঁয়া তার শরীর থেকে ছড়িয়ে পড়ে, চারপাশের গাছের পাতা ঝরিয়ে দেয়, আর যে এর মধ্যে পড়ে, তার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। এই ধোঁয়ার মধ্যে মাঝেমধ্যে অস্পষ্ট মুখের ছায়া দেখা যায়—যেন তার শিকারদের আত্মা তার মধ্যে বন্দী।কামিনীর এই দানবীয় রূপ শুধু ভয়ঙ্কর নয়, এটি একটা অমোঘ শাস্তির প্রতীক। তার উপস্থিতিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে, আর চারপাশে একটা অস্বাভাবিক নীরবতা ছড়িয়ে পড়ে। যে তার এই রূপ দেখে, সে আর ফিরে আসে না—কারণ এই রূপ কামিনীর প্রকৃত সত্তা, একটা অতৃপ্ত, হিংস্র শক্তি, যা শুধু ধ্বংস করতে জানে। গ্রামের লোকেরা বলে, এই রূপ দেখার পর কেউ বাঁচে না, কারণ কামিনীর দানবীয় রূপ শুধু শরীর নয়, আত্মাকেও গ্রাস করে।

গ্রামের লোকেরা বলে, এই রূপ কামিনীর নতুন ফাঁদ। সে এখন শুধু পুরুষদের নয়, মেয়েদেরও প্রলোভন দেখায়। 
তার সৌন্দর্য এমন যে, যে কেউ তার কাছে গেলে নিজের ইচ্ছা হারিয়ে ফেলে। কিন্তু তার সৌন্দর্যের পিছনে লুকিয়ে আছে একটা দানবীয় রূপ—যখন সে রেগে যায়, তার শরীর থেকে কালো ধোঁয়া বেরোয়, আর তার মুখ বিকৃত হয়ে হাড় আর ছাইয়ের মতো হয়ে যায়।



রাত তখন গভীর। আকাশে চাঁদের আলো ম্লান, কুয়াশায় ঢাকা। গ্রামের শেষ প্রান্তে, জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষের কাছে মালতী, এক তরুণী, একা এসে দাঁড়িয়েছিল। মালতী, গ্রামের সবচেয়ে সাহসী আর সুন্দরী মেয়ে, কামিনীর গল্প শুনেছিল—গ্রামের বুড়োরা ফিসফিস করে বলত, কীভাবে কামিনী তার অলৌকিক সৌন্দর্য আর মোহময় কণ্ঠ দিয়ে মানুষকে ফাঁদে ফেলে। কিন্তু মালতী এসব কুসংস্কার বলে হেসে উড়িয়ে দিত। “ভূত-প্রেত কোথায় থাকে? এসব বুড়োদের গাঁজাখুরি গল্প,” সে বলত। সেদিন রাতে, কৌতূহল আর একটু দুঃসাহসের বশে, সে জমিদার বাড়ির দিকে পা বাড়াল। বাড়িটা, যেখানে কামিনী কথিত আছে বাস করে, বছরের পর বছর ধরে পরিত্যক্ত, ভাঙাচোরা দেয়াল আর ঝুলন্ত লতায় ঢাকা।মালতী যখন জমিদার বাড়ির ফটকের কাছে পৌঁছাল, বাতাসে একটা অদ্ভুত শীতলতা ছড়িয়ে পড়ল। গাছের পাতা নড়ছিল না, তবু একটা মৃদু শিসের শব্দ কানে এল। সে থমকে দাঁড়াল। তার বুকের ভেতর একটা অজানা উত্তেজনা জাগছিল, কিন্তু সে নিজেকে বলল, “এসব মনের ভুল।” সে আরেক পা এগিয়ে গেল। হঠাৎ, বাতাসে একটা মিষ্টি গন্ধ ভেসে এল—যেন রাতরানির ফুল, কিন্তু তাতে মিশে ছিল কিছু অপরিচিত, প্রায় নেশার মতো একটা আকর্ষণ। মালতী থমকে দাঁড়াল। তার কানে একটা মৃদু সুর ভেসে এল—মধুর, কোমল, যেন কেউ দূরে গান গাইছে। সুরটা তার মনের গভীরে ঢুকে পড়ল, তার পা নিজে থেকেই এগোতে শুরু করল।জমিদার বাড়ির ভেতরে পা রাখতেই মালতী দেখল, ধ্বংসাবশেষের মাঝে একটা অদ্ভুত আলোর ঝিলিক। সে এগিয়ে গেল, আর তখনই সে তাকে দেখল—কামিনী। সাত ফুট লম্বা, তার শরীর যেন কোনো অলৌকিক ভাস্কর্য। রক্তলাল শাড়ি তার শরীরের প্রতিটি বক্রতা প্রকাশ করছিল, পাতলা কাপড়ের ফাঁক দিয়ে তার নিখুঁত স্তন, সরু কোমর, আর লম্বা পা স্পষ্ট। তার চুল, কালো আর ঝড়ের মতো ছড়ানো, মাঝেমধ্যে সাপের মতো নড়ে উঠছিল। তার চোখ, জ্বলন্ত লাল, মালতীর দিকে তাকিয়ে ছিল, আর সেই দৃষ্টিতে এমন এক মায়া যে মালতী চোখ ফেরাতে পারল না। কামিনীর ঠোঁটে একটা মন জুড়ানো হাসি, কিন্তু মালতী যখন কাছে এগোল, সে দেখল তার দাঁত—ধারালো, রক্তমাখা।

 রাতের অন্ধকারে, সে একটা গান গাইছিল, যখন হঠাৎ তার পিছনে একটা ছায়া পড়ল। মালতী ঘুরে দেখল—কামিনী, সাত ফুট লম্বা, তার শরীর থেকে একটা অলৌকিক আলো বেরোচ্ছে। 
"মালতী," কামিনী ফিসফিস করল, "তুই এত সুন্দর কেন? আমার সঙ্গে আয়, আমি তোকে আরো সুন্দর করে দেব।

"মালতীর হৃৎপিণ্ড দ্রুত চলছিল, কিন্তু তার পা যেন মাটিতে আটকে গেছে। কামিনী এগিয়ে এল, তার হাত মালতীর গালে রাখল। 
সেই স্পর্শে মালতীর শরীরে একটা অদ্ভুত উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ল। তার মনে হল, সে কামিনীর সঙ্গে চলে যেতে চায়, তার সবকিছু দিয়ে দিতে চায়। 
রাত তখন গভীর, জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষের মাঝে কুয়াশা আর অন্ধকারের এক অলৌকিক নৃত্য চলছে। মালতী, গ্রামের সবচেয়ে সাহসী তরুণী, কামিনীর মোহময় উপস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে। তার শরীর কাঁপছে, তবু তার চোখে ভয়ের পাশাপাশি এক অদ্ভুত আকর্ষণ। কামিনী, সাত ফুট লম্বা, তার রক্তলাল শাড়িতে ঢাকা নিখুঁত দেহ যেন রাতের অন্ধকারে জ্বলছে। তার সরু কোমর, বক্র স্তন, আর ধারালো লম্বা পা মাটি না ছুঁয়ে ভেসে আছে, আর তার চারপাশে কালো কুয়াশা ঘূর্ণি পাকাচ্ছে। তার কালো চুল ঝড়ের মতো ছড়িয়ে, মাঝেমধ্যে সাপের মতো নড়ে উঠছে। তার জ্বলন্ত লাল চোখ মালতীর দিকে তাকিয়ে, আর ঠোঁটে একটা মিষ্টি, বিপজ্জনক হাসি।কামিনী তার লম্বা, কালো নখওয়ালা হাত মালতীর গালে রাখল। সেই স্পর্শে মালতীর শরীরে এক অদ্ভুত উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ল—যেন আগুন আর বরফ একসঙ্গে তার রক্তে মিশে গেল। তার মন ঝাপসা হয়ে এল, তার ভেতর একটা অপ্রতিরোধ্য ইচ্ছা জাগল—সে কামিনীর সঙ্গে চলে যেতে চায়, তার সবকিছু তাকে দিয়ে দিতে চায়। মালতীর চোখ আধবোজা, তার শ্বাস ভারী, আর তার শরীর নিজে থেকে কামিনীর দিকে ঝুঁকে পড়ল।হঠাৎ, কামিনী হুশ করে বাতাসের বেগে মালতীর পিছনে চলে এল। তার গতি এত দ্রুত যে মালতী কিছু বোঝার আগেই কামিনীর শক্তিশালী হাত তার শরীর জড়িয়ে ধরল। এক হাত মালতীর কাঁধের ওপর দিয়ে, আরেক হাত তার বগলের নিচ দিয়ে গিয়ে তার দুধ দুটি শক্ত করে চেপে ধরল। মালতীর শরীরে একটা শিহরণ খেলে গেল—ভয়, আনন্দ, আর এক অজানা উত্তেজনার মিশ্রণ। সে একটা আ--হ-হ ধ্বনি করে উঠল, তার কণ্ঠে ভয়ের পাশাপাশি একটা অদ্ভুত তৃপ্তি। কামিনীর স্পর্শে তার শরীর যেন জেগে উঠেছে, তার মন তার নিয়ন্ত্রণে নেই।কামিনী মালতীকে আদর করতে শুরু করল। তার হাত, শক্ত কিন্তু অদ্ভুতভাবে কোমল, মালতীর শরীরের ওপর দিয়ে বুলিয়ে দিচ্ছিল। হঠাৎ, কামিনী তার লম্বা পা দিয়ে মালতীর কোমর জড়িয়ে ধরল, আর এক ঝটকায় তাকে শূন্যে তুলে নিল। মালতী ভেসে উঠল, তার পা মাটি ছেড়ে গেল, আর তার চারপাশে কামিনীর কালো কুয়াশা ঘূর্ণি পাকাচ্ছিল। মালতীর কোনো হুশ নেই—সে শুধু কামিনীর স্পর্শের মধ্যে হারিয়ে গেছে। কামিনী হুশ করে বাতাসের বেগে তার পিছনে চলে এলো এবং এক হাত কাঁধের উপর দিয়ে আর এক হাত বগলের নিচে দিয়ে মালতির দুই দুধ চেপে ধরল। 

মালতি ভরে আনন্দে শিহরণে আ--হ-হ আওয়াজ করে উঠলো
কামিনী মালতির দুই দুধ নিয়ে খেলা করতে থাকলো আর পিছন থেকে নিচে দুই পা দিয়ে জড়িয়ে আদর করতে লাগল




 শূন্যে ভেসে, পিছন থেকে কামিনীর আদরে সে যেন এক অলৌকিক স্বপ্নের মধ্যে ডুবে আছে। তার শরীর কাঁপছে, তার শ্বাস দ্রুত, আর তার মুখে একটা অর্ধেক হাসি।কামিনী আবার হুশ করে বাতাস হয়ে মালতীর সামনে চলে এল। তার গতি অমানুষিক, যেন সে শুধু একটা ছায়া। সে এক হাতে মালতীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল, আর তার আরেক হাত মালতীর যোনিতে আলতো করে স্পর্শ করল। তার লম্বা, কালো নখ মালতীর ত্বকে হালকা আঁচড় কাটছিল, আর সেই স্পর্শে মালতীর শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল। কামিনীর হাত ধীরে ধীরে তার যোনিতে বুলিয়ে দিচ্ছিল, প্রতিটি স্পর্শে মালতীর শরীর আরো উত্তপ্ত হচ্ছিল। মালতী, উত্তেজনায় অভিভূত, তার হাত দিয়ে কামিনীকে জড়িয়ে ধরল। তার আঙুল কামিনীর রক্তলাল শাড়ির ওপর দিয়ে তার শরীরের বক্রতা অনুভব করছিল, আর তার মন পুরোপুরি কামিনীর মায়ায় আচ্ছন্ন।আস্তে আস্তে, কামিনী মালতীকে নিচে নামিয়ে আনল। তারা এখন জমিদার বাড়ির ভাঙা মেঝেতে, চারপাশে কুয়াশা আর অন্ধকার। কামিনী মালতীকে আদর করতে করতে তার কাছে ঝুঁকে পড়ল। তার ঠোঁট মালতীর কানের কাছে এল, তার শ্বাস মালতীর গালে লাগছিল—ঠান্ডা, তবু অদ্ভুতভাবে উষ্ণ। “তোর শরীর, তোর আত্মা... আমার হবে,” কামিনী ফিসফিস করে বলল। তার কণ্ঠ মধুর, কিন্তু তাতে একটা অমোঘ হুমকি। মালতীর শরীর কাঁপল, তার চোখে ভয় আর আকর্ষণের এক অদ্ভুত মিশ্রণ। সে কামিনীর জ্বলন্ত লাল চোখের দিকে তাকাল, আর তার মনে হল সে আর ফিরতে পারবে না।কামিনীর চারপাশে কালো ধোঁয়া ঘনিয়ে উঠছিল, তার চুল আরো বন্য হয়ে নড়ে উঠল। মালতী তার মায়ায় পুরোপুরি ডুবে গিয়েছিল, কিন্তু কোথাও তার মনের গভীরে একটা সতর্কতা ঝলক দিচ্ছিল। কামিনীর আদর, তার স্পর্শ, তার কণ্ঠ—সবই মোহময়, কিন্তু তার পিছনে লুকিয়ে ছিল একটা দানবীয় ক্ষুধা, যা মালতীর শরীর আর আত্মা দুটোই গ্রাস করতে চায়।

কিন্তু তখনই মালতীর গলায় তার মায়ের দেওয়া একটা তাবিজ ঝুলছিল। তাবিজটা হঠাৎ গরম হয়ে উঠল, আর মালতীর হুশ এসে চিৎকার করে পিছিয়ে গেল। 


কামিনী সামনে দাঁড়িয়ে, তার রূপ একই সঙ্গে ভয়ঙ্কর এবং অদ্ভুতভাবে মোহনীয়। তার মুখ, যা একসময় হয়তো মানুষের ছিল, এখন বিকৃত—তার ঠোঁট কুঁচকে একটা হিংস্র হাসিতে বাঁকছে, আর তার চোখ থেকে রক্তের ধারা গড়িয়ে পড়ছে, যেন তার ভেতরের আগুন বাইরে ছড়িয়ে পড়ছে। তার চোখ দুটো, রক্তাক্ত হলেও, যেন মালতীর আত্মাকে ছিদ্র করে দেখছে, একটা অমানুষিক ক্ষুধায় জ্বলজ্বল করছে। তার কালো চুল বাতাসে উড়ছে, যেন কুয়াশার সঙ্গে মিশে একটা অন্ধকার পর্দা তৈরি করছে। তার শরীর থেকে একটা গভীর, কম্পমান গর্জন বেরোয়—এটি কেবল শব্দ নয়, এটি মাটিকে কাঁপিয়ে দেয়, মালতীর হৃৎপিণ্ডে একটা অদ্ভুত টান ধরায়। কামিনীর পোশাক, যদি থাকে, তবে তা ছিন্নভিন্ন, তার ফ্যাকাশে ত্বকের উপর দিয়ে কুয়াশার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে। সে যখন চিৎকার করে, "তুই পালাতে পারবি না!" তার কণ্ঠে একটা অদ্ভুত মাদকতা আছে—একই সঙ্গে হুমকি এবং প্রলোভন, যেন সে মালতীকে কেবল ধরতে নয়, তাকে নিজের করে নিতে চায়।

মালতী দৌড়াচ্ছে, তার শরীর ক্লান্তির শেষ সীমায়। তার পেশি ব্যথায় টনটন করছে, তার ফুসফুস জ্বলছে, এবং প্রতিটি শ্বাস যেন তার বুক ছিঁড়ে বেরোচ্ছে। তার পোশাক ঘামে ভিজে শরীরে লেপ্টে আছে, তার ত্বক ঠান্ডা বাতাস আর কুয়াশার স্পর্শে কাঁপছে। তার গলায় মায়ের দেওয়া তাবিজ এখনও গরম, তার বুকে একটা জ্বলন্ত সংবেদন সৃষ্টি করছে, যেন এটি তার শেষ শক্তিকে জাগিয়ে রাখছে। কিন্তু তার শরীর আর মনের মধ্যে একটা যুদ্ধ চলছে—তার ইচ্ছা তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তার শরীর হাল ছেড়ে দিতে চায়। তার মাথা ঘুরছে, চোখের সামনে অন্ধকারের ঢেউ খেলছে, আর তার হৃৎপিণ্ডের ধকধক শব্দ তার কানে বাজছে। মানসিকভাবে, সে ভয়ে পঙ্গু হয়ে গেছে; কামিনীর হাসি, তার রক্তাক্ত চোখ, এবং তার চিৎকার, "তুই পালাতে পারবি না!" তার মনে একটা অন্ধকার ছায়া ফেলেছে। সে জানে, সে যতই দৌড়াক, কামিনীর তাড়া থেকে মুক্তি নেই।অজ্ঞান হওয়ার মুহূর্ত:

মালতী হঠাৎ তার পায়ে একটা শিকড়ে হোঁচট খায়। তার শরীর ভারসাম্য হারায়, আর সে মাটির দিকে পড়ে যায়। তার হাত মাটিতে আঘাত করে, শুকনো পাতা আর কাঁটা তার ত্বকে বিঁধে যায়। সে হাঁপাচ্ছে, তার বুক দ্রুত ওঠানামা করছে, কিন্তু তার শরীর আর সাড়া দিচ্ছে না। তার চোখের সামনে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে, যেন কুয়াশাটি তার মনের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। তাবিজটি এখনও তার বুকে জ্বলছে, কিন্তু এই উত্তাপও তার ক্লান্তিকে ঠেকাতে পারছে না। তার শেষ সচেতন মুহূর্তে, সে কামিনীর হাসি শুনতে পায়—একটা তীক্ষ্ণ, হিমশীতল শব্দ, যা তার মাথার ভেতরে গুঞ্জরিত হচ্ছে। তার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে, তার শরীর মাটিতে নেতিয়ে পড়ে, আর তার মন অন্ধকারের গভীরে তলিয়ে যায়। তার হাত তাবিজটির উপর শিথিলভাবে পড়ে থাকে, যেন এটি তার শেষ আশ্রয়।কামিনীর উপস্থিতি:
মালতী অজ্ঞান হওয়ার মুহূর্তে, কামিনীর উপস্থিতি আরও তীব্র হয়। কুয়াশা ঘনিয়ে আসে, যেন মালতীকে গ্রাস করতে চায়। কামিনীর ছায়া কুয়াশায় ভেসে ওঠে, তার রক্তাক্ত চোখ জ্বলজ্বল করছে, তার মুখে একটা হিংস্র, বিজয়ী হাসি। তার কণ্ঠ, যা এখন প্রায় ফিসফিসের মতো, মালতীর অচেতন মনের গভীরে প্রবেশ করে: "তুই আমার..."। তার গর্জন এখন আর নেই, কিন্তু তার উপস্থিতি মাটিকে কাঁপিয়ে দেয়, বাতাসে একটা অশুভ শক্তি ছড়িয়ে পড়ে। কামিনী মালতীর কাছে এগিয়ে আসে, তার ছায়া মালতীর অচেতন শরীরের উপর দিয়ে পড়ে, যেন সে তার শিকারকে দাবি করতে প্রস্তুত। কিন্তু তাবিজটি হঠাৎ একটা মৃদু আলো ছড়ায়, যা কামিনীকে এক মুহূর্তের জন্য পিছিয়ে যেতে বাধ্য করে।

মালতী অজ্ঞান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, পরিবেশ যেন একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতায় ডুবে যায়। পেঁচার ডাক থেমে যায়, বাতাস স্থির হয়ে যায়, এবং কুয়াশা মালতীর চারপাশে একটা ঘন পর্দা তৈরি করে। গাছের শাখাগুলো আর নড়ে না, যেন তারা মালতীর পতনের সাক্ষী হয়ে নীরব শোক পালন করছে। কিন্তু এই নিস্তব্ধতার মধ্যেও একটা অশুভ শক্তি কাজ করছে—কামিনীর হাসি এখনও কুয়াশায় গুঞ্জরিত হচ্ছে, যেন সে তার বিজয় উদযাপন করছে। তাবিজের মৃদু আলো এই অন্ধকারের মধ্যে একমাত্র আশার বিন্দু, কিন্তু এটি কতক্ষণ কামিনীর শক্তিকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে, তা অনিশ্চিত।
মালতীর অজ্ঞান হওয়া কেবল শারীরিক ক্লান্তির ফলাফল নয়; এটি তার মনের উপর কামিনীর অতিপ্রাকৃত প্রভাবেরও প্রতিফলন। তার অচেতন মনে, কামিনীর ছায়া এখনও তাকে তাড়া করছে, তার হাসি তার স্বপ্নে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। তাবিজটি তার মনের গভীরে একটা সুরক্ষার প্রতীক হিসেবে কাজ করছে, কিন্তু এটি কামিনীর শক্তিকে পুরোপুরি ঠেকাতে পারছে না। মালতীর অজ্ঞান অবস্থা তার শরীরের পতনের প্রতীক, কিন্তু তার আত্মার লড়াই এখনও শেষ হয়নি।
[+] 1 user Likes Abirkkz's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কালো কুয়াশার ছায়া - by Abirkkz - 04-05-2025, 08:21 AM



Users browsing this thread: