02-05-2025, 04:09 PM
(This post was last modified: 02-05-2025, 09:33 PM by PANU DAA. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
অফিসের মিষ্টি প্রেম, পর্ব -৪
" তুমি চাইলে আমাকে একরকম ভাবেই খেতে পারো। আমাকে মেরে কাঁচা মাংস চিবিয়ে খেতে পারো কিংবা রান্না করেও খেতে পারো। কিন্তু চিবিয়েই খেতে হবে। মাংসের মধ্যে লেগে থাকা মশলা চুষে খাওয়া যায় কিংবা চেটে খাওয়া যায়, কিন্তু মাংসকে তো চিবিয়েই খেতে হয়। আর কোন উপায় নেই।
" গুরুজনেরা বলে বুদ্ধি থাকলে উপায়। তোমার তো অনেক বুদ্ধি সত্যমদা। চেষ্টা করলে তুমি নিশ্চয়ই অনেক উপায় বের করে ফেলবে। " সানা বলল।
" কি অদ্ভুত! তুমি খাবে আমাকে, আর আমাকেই বলছ উপায় বের করতে। মানে কুরবানীর পশুকে বলছো যাও চাকু নিয়ে আসো। " আমি বললাম।
" ব্যাপারটা কিন্তু বেশ মজার। " সানা বলল।
" ঠিকই বলেছ। দুনিয়াতে সব পুরুষ মানুষেরা বলি হচ্ছে আর মেয়েরা মজা লুঠছে। " বললাম।
"কি বললে সত্যম দা? " সানা জিজ্ঞেস করল।
" কিছু না বাদ দাও।" আমি বললাম।
"আমি কিন্তু শুনে ফেলেছি।" সানা বলল।
আমরা কথা বলতে বলতে সিনেমা হলের সামনে চলে এলাম। টিকিট কাউন্টারে গেলাম। কাউন্টারের সামনে অনেক ভিড়। শুনলাম বেশ কয়েকদিন হাউসফুল চলছে। কর্তৃপক্ষ নাইট শো চালু করেছে।
সানাকে বললাম, "কোন খানে টিকিট কাটি বলতো?"
"আমি তো কিছু বুঝিনা.। আচ্ছা সত্যমদা, এই ব্যালকনি, বক্স, এইগুলো কি?" সানা জিজ্ঞেস করল।
আমি বললাম, " ব্যালকনি হলো সেকেন্ড ফ্লোর এ যে সিট্ গুলো আছে। আর বক্স হলো একজোড়া সিট্, কাপলদের জন্য। এখানে সামান্য কাঠের পাটা দিয়ে সামান্য ঘেরা আছে। তবে অন্য জায়গায় অনেক বেশি করে ঘেরা থাকে যাতে কাপলরা ওর মধ্যে কি করছে কেউ দেখতে না পায়। "
"ও তাই বুঝি? তাহলে তুমি বক্সই নাও। টিকিটের টাকা কিন্তু আমি দেব।"সানা বলল।
আমি বললাম, " তা কি করে হয়? আমি দেব।"
" চিন্তা নেই সত্যম দা। তোমার পকেট থেকেও টাকা খসাবো। আমি তো শুধু এখন টিকিটের দামটাই দিচ্ছি। এই নও। " বলে সানা আমার দিকে ৫০০ টাকা বাড়িয়ে দিল।
আমি বললাম, "কিন্তু বক্স কেন?"
"কারণ শুধু আমরা দুজনেই এসেছি। আমাদের সঙ্গে তো আর কেউ নেই।" সানা বলল।
আমি আর কথা বাড়ালাম না। বক্সের রেট ২৫০ টাকা করে লেখা রয়েছে। আমি টিকিট কেটে আনলাম ওকে ফাঁকা দেখে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রেখে। তাড়াতাড়ি চলে এলাম। কারণ বক্সের লাইনে তেমন একটা ভিড় ছিল না।
সানা জিজ্ঞেস করল, " সত্যম দা, এখানে নাইট শো দেখলাম ৯টা থেকে। এত রাত পর্যন্ত মানুষ সিনেমা দেখে? "
" ওটা সব সময় হয় না। যখন পাবলিকের খুব প্রেসার থাকে কোন সিনেমা বেশি হিট হয়, তখন পাবলিকের চাপ কমানোর জন্য কিংবা পাবলিকের ডিমান্ডে নাইট শো চালু করতে হয়। সাধারণত সিনেমা হলে তিনটে শো হয়। ১২ টায় নুন শো, ৩ টায় মাটিনি শো, ৬ টায় ইভিনিং শো। জানো সানা, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন একটা বাংলা সিনেমা রিলিজ করেছিল, "নাগ পঞ্চমী"। সেই সময় সিনেমাটা এতো হিট করেছিল যে দাসপুরে মল্লিকা সিনেমা হলে ৪১ সপ্তাহ চলেছিল। আমি ঠাকুমার সঙ্গে ওখানে পিসি বাড়ি থেকে গিয়েছিলাম ১২ টার নুন শো দেখতে। কিন্ত হাউস ফুল থাকায় ৯ টার নাইট শোর টিকিট পেয়েছিলাম। সিনেমা দেখে বাড়ি ফিরতে রাত্রি একটা বেজে গিয়েছিলো। কারণ এতো রাত্রে কোনো গাড়ি ছিলো না, পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই সময় প্রচুর ব্লাকে টিকিট বিক্রি হতো। এমনকি কর্তৃপক্ষকে সকাল ৯টায় মর্নিং শো চালু করতেও হয়েছিল কিছু সপ্তাহের জন্য।" আমি বললাম।
সানা তো শুনে অবাক। ও বলল, " এরকম ও হয়। "
" আসলে তখন গ্রামে তখনো তেমনভাবে টিভি ঢোকেনি। আমাদের গ্রামে শুধু সামই বাড়িতে একটাই টিভি ছিল। তাও সাদাকালো। তখন রঙিন টিভির রমরমা তেমন শুরু হয়নি। গ্রামের সবাই রবিবার 'বাংলা ছায়াছবি' দেখতে যেত। আর কোনো মনোরঞ্জনের তেমন কোনো উপায় ছিল না। শুধু যখন কোনো মেলা হত তখন যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হত, তখন সবাই মিলে যেত। এইজন্য যখন কোনো ভালো বাংলা সিনেমা হিট হতো, সবাই গিয়ে ভিড় করতো।" বললাম।
"তোমার কত অভিজ্ঞতা!"সানা বলল।
আমরা বক্সে গিয়ে বসলাম। সানা আমার বাম দিকে বসল। আমি একটু আনকমফোর্ট ফিল করছিলাম, কিন্ত সানাকে দেখলাম বেশ খুশি। সামনে, পাশে আরও যারা বক্সে বসেছিল তাদের শুধু মাথা দেখা যাচ্ছে। কিছুক্ষন পর হঠাৎ হলের সব লাইট বন্ধ হয়ে গেল। সানা হালকা ভয় পেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
জিজ্ঞেস করলাম," কি হলো সানা ভয় পেলে? "
ও উত্তর দিল, " হঠাৎ সব লাইট বন্ধ হলো কেন? "
"সিনেমা শুরু হবে তাই। লাইট জ্বললে তো পর্দার ব্রাইটনেস কমে যাবে, ঝাপসা দেখাবে।"বললাম।
একটু একটু করে চোখ সয়ে এলো। এখন হালকা ভাবে সবকিছু দেখা যাচ্ছে। সামনের বক্সে যারা বসে আছে তাদের শুধু মাথা দুটো কালো কালো দেখাচ্ছে। সানা এবার বোধহয় হালকা লজ্জা পেয়ে আমাকে ছেড়ে দিল। সিনেমা শুরু হলো।
আমি সানার কানে কানে বললাম,"শুনেছি সানা এই সিনেমাতে অনেক খারাপ দৃশ্য আছে, সইতে পারবে তো? নাহলে চলো এখনই পালিয়ে যাই।"
"ঘুরিয়ে বলো তুমি সইতে পারবেনা। চুপ করে বসো।" সানা বলল।
যাইহোক, আমি বলেদিলাম। পরে ও আমায় আর দোষ দিতে পারবেনা।
যাই হোক, সিনেমা শুরু হলো। বিদ্যা বালনের অনেক খোলা মেলা দৃশ্য রয়েছে। অনেক অশ্লীল নাচ রয়েছে। একজায়গায় বিদ্যা নাসিরুদ্দিনকে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চুমু খাচ্ছে, একটা পাসিভ সেক্স সিন্ দেখানো হয়। ঐ দেখে সামনের বক্সের কপোত কোপতি নিজেরাও শুরুকরে দুয়েছে কিস। ওদের হালকা কালো মাথা দেখা যাচ্ছে। বুঝলাম সানাও দেখে ফেলেছে। ও আমার বাম হাত জড়িয়ে ধরল।
আমি আস্তে করে জিজ্ঞেস করলাম, " কিছু বলবে সানা? "
"কিছু না। আমার একটু কেমন লাগছে, মনে হচ্ছে ভয় করছে। একটু কাছে এসে আমায় জড়িয়ে ধরবে সত্যমদা?" সানা বলল।
ও আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আঁকড়ে জড়িয়ে ধরল।
"আর সিনেমা দেখার দরকার নেই সানা। চলো আমরা বেরিয়ে পড়ি। আমার খুব একটা সিনেমার স্টোরি ভালো লাগছে না।" আমি বললাম।
" আমারও স্টোরি ভালো লাগছে না। কিন্তু যাবোনা। সিনেমা শেষ করেই যাবো। আমরা সিনেমা দেখবোনা কিন্ত গল্প করবো। " সানা বলল।
"পাগল হয়েছো সানা? এখানে গল্প করলে পাবলিক আমাদের শান্তিতে থাকতে দেবে? তাদের ডিস্টার্ব হবে না? এটা সিনেমা দেখার জায়গা গল্প করবার নয়।" আমি বললাম।
"তাহলে আমি তোমাকে জড়িয়ে থাকি? আমার খুবই ভালো লাগছে।" সানা বলল।
"আমার খিদে পেয়েছে সানা, চলো আমরা বাইরে থেকে কিছু খেয়ে আসি।" বললাম।
"না, কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। আজ অফিসে তুমিও লাঞ্চ করোনি, আর আমিও করিনি। আমার পুরো টিফিনটাই রয়েছে। চলো দুজনে শেয়ার করে খাই। সানা বলল।
" না তুমিই খাও। " বললাম।
" এক যাত্রায় পৃথক ফল হবে কেন?" সানা বলল।
সানা আমার ডান দিকে এসে বসলো। ব্যাগ থেকে রুটি আর তরকারি বের করল। এক টুকরো রুটি তরকারি মেখে আমার দিকে বাড়িয়ে দিল।
আমি বললাম "কি ব্যাপার? তুমি খাও সানা।"
সানা বলল , " আমিও খাব, সত্যম দা তোমাকে আর হাত করতে হবে না। আমি খাইয়ে দিচ্ছি তোমাকে। "
আমি বললাম, " না না সানা, এটা কেমন যেন দেখায়। আমি নিজেই খেয়ে নিতে পারব। "
" আমার হাতে কি সমস্যা। আমি '. তাই। " সানা অভিমানের সুরে বলল।
"ছিঃ ছিঃ এসব কি বলছো সানা। সেরকমই যদি ভাবতাম তাহলে তো আমি তোমার সঙ্গে আসতামই না।" আমি বললাম।
" তাহলে আমার হাতে খেতে কি সমস্যা? " সানা জানতে চাইল।
" কোন সমস্যা নেই। দেখো তোমার হাতে খেলে কেমন একটা অন্যরকম লাগবে। আমরা তো আর কোন প্রেমিক-প্রেমিকা নই। " বললাম।
" বুঝেছি!" সানা ছোট করে বলল।
"কি বুঝেছো?" জিজ্ঞেস করলাম।
" যেটা বললাম সেটাই। '. না বলে প্রেমিক-প্রেমিকার উপর দিয়ে চালিয়ে দিলে "। অভিমানের সুরে সানা বলল।
" এই তুমি আমায় বিশ্বাস করো, সানা। " বললাম।
" তাহলে আমার হাতে খাবে না কেন? " সানা বলল।
" দেখো সানা তুমি যে সুন্দরী, শুধু তোমার হাতে নয় পুরো তোমাকেই আমি খেয়ে ফেলতে পারি। তাতে * '. কিছু যায় আসে না। নেহাত আমি ভদ্র পোলা। " আমি বললাম।
সানা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলে, "কি!!!!!!!??"
চলবে.......