02-05-2025, 01:27 PM
সুচরিতার সাথে রাজীবের যোগাযোগ তলায় তলায় ছিল , এবং রাজীবই তাকে বলেছিলো অনুরিমাকে ইন্স্টিগেট করতে যাতে অনুরিমা রাজি হয় ওসব করতে। তলায় তলায় রাজীব সুচরিতার সাথে জটলা পাকিয়ে রেখেছিলো। তবে সুচরিতার প্রাক্তন স্বামী আদিত্য সেনগুপ্ত ইনভল্ভমেন্ট এর মধ্যে ছিলোনা। আসলে সুচরিতা মনে প্রাণে চেয়েছিলো অনুরিমা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ুক। কারণ সমীর সেই কলেজ লাইফ থেকে তাকে নানাভাবে ছোট করে আসতো। তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতো বাকিদের কাছে। সেসব সুচরিতার কানে যেত। সুচরিতা প্রথম থেকেই একটু বেশিই স্বাধীনচেতা ছিল , যার ফলে পুরুষসঙ্গীর কোনো অভাব তার জীবনে ছিলোনা। আর সমীরের এটাই পছন্দ ছিলোনা। সুচরিতা মনে মনে সমীরকে ভালোবাসতো , কিন্তু সমীর চাইতো অনুরিমার মতো শান্ত-শিষ্ট ভদ্র মেয়ে। তাই সমীর অতি সহজেই অনুরিমার প্রেমে পড়ে যায়। ওদিকে সুচরিতা কোনোদিনও তার মনের কথা সমীর বা অনুরিমাকে বলে উঠতে পারেনি। সুচরিতা সমীরকে এতোটা ভালোবাসতো বলেই তার নিজের সম্পর্কে ছড়ানো সমীরের তিরস্কার সে সবসময়ে মুখ বুজে সহ্য করে নিয়েছিলো। মনে মনে সে তার বান্ধবী অনুরিমাকে খুব হিংসে করতো। তাই খুব চেষ্টা করতো অনুরিমাকে বিপথে চালিত করার , যাতে সমীরের মন ওর উপর থেকে উঠে যায়। কিন্তু অনুরিমা ভালো মেয়ের মতো সবকথা সমীরের সাথে শেয়ার করতো , ফলে সমীর জানতে পারতো যে সুচরিতা কিভাবে অনুরিমার মাথা খেয়ে ওকে নিজের মতো করার চেষ্টা করছে। ফলে সুচরিতার উপর সমীরের ক্ষোভ আরো বেড়ে যেতে লাগলো। যার ফলে ভালোবাসা তো দূর সুচরিতা কোনোদিনও সমীরের বন্ধুত্বটুকুও পায়নি। সমীরের অহংকার ছিল অনুরিমা। সে নিজেকে গর্বিত অনুভব করতো অনুরিমার মতো আদর্শ সৎ চরিত্রা লয়াল একজন মেয়েকে নিজের প্রেমিকা হিসেবে পেয়ে। সুচরিতা সমীরের এই অনুরিমাকে নিয়ে তৈরী হওয়া গুমোট-টা ভাঙতে চেয়েছিলো। মনে মনে প্রার্থনা করতো যে এমন দিন যেন আসে যেদিন অনুরিমাও তার মতোই সমীরের চোখে বারোভাতারী মেয়েতে পরিণত হয়। অনেক বছর পর যখন তার সাথে ফের একবার অনুরিমার দেখা হলো , এবং সে শুনলো সমীরের মনে গজিয়ে উঠেছে এমন উদ্ভট ফ্যান্টাসি তখন সে এই সুযোগটা ছাড়তে চাইলো না। প্ল্যান করে সে রাজীবকে প্লান্ট করলো অ্যাস্ আ সেক্সওলজিস্ট। সাথে নিজের প্রাক্তন স্বামীকেও লেলিয়ে দেওয়ার প্রয়াস করতে শুরু করলো। আদিত্য অবশ্য সুচরিতার ইভিল প্ল্যান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলোনা। কিন্তু সুচরিতা জানতো তার প্রাক্তন স্বামী আদিত্যর দূর্বলতা। সে আটকায় সুন্দরী নারীতে। তাই সুচরিতা কনফিডেন্ট ছিল যে অনুরিমাকে দেখে আদিত্যর পা পিছলবেই। এই ভাবে প্রথমে রাজীব তারপর আদিত্যর দ্বারা অবৈধ সম্পর্কে ফাঁসিয়ে সমীরের স্ত্রীকে অসতী করে সে নিজের অপমান ও ভালোবাসার নীরব প্রত্যাখানের বদলা নেবে। এটাই ছিল সুচরিতার মাস্টার প্ল্যান। আসলে রাজীব কোনো সেক্সওলজিস্ট ছিলোনা। সব সাজানো ছিল। রাজীব সুচরিতার সাথেই থিয়েটার করতো। ভালো ও দক্ষ অভিনেতা ছিলো , তাই রাজীবের চরিত্রে নিজেকে ভালোই মানিয়ে নিয়েছিলো। হাজরার সেই ক্লিনিক , নার্স , এমনকি কয়েকজন পেশেন্টের ক্লিনিকের বাইরে অপেক্ষা সব ফেক ছিলো, সাজানো , তারা সবাই জুনিয়র আর্টিস্ট ছিল যাদেরকে টাকা দিয়ে অ্যাপয়েন্ট করা হয়েছিলো। এমনকি প্রথম রিহার্সাল যখন মানি স্কোয়ারে করবার প্ল্যান ছিল তখন সুচরিতাই হলের সামনের পেছনের প্রায় বেশিরভাগ টিকিট নিজের বিভিন্ন লোকেদের মোবাইল থেকে বুক মাই শো তে বুক করে রেখেছিলো যাতে হল এর অধিকাংশ সিট ফাঁকা থাকে। অড্ টাইমের শো হলেও সুচরিতা কোনো রিস্ক নিতে চাইনি। রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য সে মুড়ি মুড়কির মতো টাকা খরচা করেছিলো। বলা হয়না যে , যাকে মানুষ সবথেকে বেশি ভালোবাসে তার কাছ থেকে আঘাত পেলে সেই মানুষটাই হয়ে যায় নিজের ভালোবাসার মানুষের সবচেয়ে বড়ো থ্রেট। সুচরিতার ব্যাথা এতে যত হয়নি যে সমীর তার বদলে অনুরিমাকে বেছে নিয়েছিলো , যতোটা কষ্ট তার হয়েছিলো অনবরত সমীরের তার প্রতি তীর্যক মন্তব্য শুনে। সে সবসময়ে সবার কাছে অনুরিমার চরিত্রকে সুপিরিওর হিসেবে দেখাতো আর সুচরিতাকে কাইন্ড অফ চরিত্রহীনা হিসেবে প্রজেক্ট করতো। তাই আজ সে অনুরিমার মতো ভালো মেয়েকে সেই লেভেলে এনে নামালো যেই লেভেলের মেয়ে সমীর সুচরিতাকে ভাবতো। সুচরিতা অতোটাও খারাপ মেয়ে ছিলোনা যতোটা সমীর তার সম্পর্কে ধারণা পোষণ করতো।
-----------------------------------------------------------------------
এই portion টা আমি গত বছর জানুয়ারিতে অর্থাৎ ২০২৪ এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে লিখে রেখেছিলাম। ধীরে ধীরে ক্লাইম্যাক্স উন্মোচন হতো, কিন্তু কি আর করা যাবে। যতটুকু গল্পের স্বাধ পেয়েছেন ততটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন।
-----------------------------------------------------------------------
এই portion টা আমি গত বছর জানুয়ারিতে অর্থাৎ ২০২৪ এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে লিখে রেখেছিলাম। ধীরে ধীরে ক্লাইম্যাক্স উন্মোচন হতো, কিন্তু কি আর করা যাবে। যতটুকু গল্পের স্বাধ পেয়েছেন ততটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন।